শিশুকে পিটিয়ে হত্যার আসামি কামরুল ইসলামকে সৌদি আরব থেকে আনা হলেও সাত খুনের আসামি নূর হোসনকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে এখনও কোনো অগ্রগতি নেই।
কামরুলকে নিয়ে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে ফেরেন পুলিশের তিন কর্মকর্তা। তিন মাস আগে শিশু সামিউল আলম রাজনের হত্যাকাণ্ডের পর পালিয়ে গিয়েছিলেন সৌদি প্রবাসী এই বাংলাদেশি।
কামরুলের আগে এভাবে গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন দেশ থেকে আরও ১০ জন অপরাধীকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) নজরুল ইসলাম।
বিকালে কামরুলকে নিয়ে তিন পুলিশ কর্মকর্তা ঢাকা শাহজালাল বিমানবন্দরে নামার পর তিনি সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অপরাধীদের কয়েকটি দেশ থেকে এভাবে আনা হয়েছিল।
এর মধ্যে উত্তর কোরিয়া থেকে শিমুল মাহমুদকে, মালয়েশিয়া থেকে তারেক আহমেদ, নুরুল ইসলাম, আব্দুর রহিমকে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে নাজমুল মাকসুদ মুরাদকে, ভারত থেকে তাজ, লম্বু সেলিম, ইমন, মুকুলকে আনা হয়।
এআইজি বলেন, আইনগত প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে দেশবাসীর চাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে আসামি কামরুলকে ফেরত আনা হয়েছে।
“সৌদি আরবের সঙ্গে আমাদের কোনো বন্দি বিনিময় চুক্তি ছিল না। তারপরও আমরা তাকে আলোচনার ভিত্তিতে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনেছি।”
সিলেটে রাজন হত্যাকাণ্ডের পর তা নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনার মধ্যে কামরুল পালিয়ে গেলে গত ১২ জুলাই সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাকে আটক করে।
এরপর সেখানে বাংলাদেশের দূতাবাস কর্মকর্তারা কামরুলকে সৌদি পুলিশের হাতে তুলে দেন। এরপর তাকে ফেরত আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে উদ্যোগী হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সৌদি কর্তৃপক্ষ কামরুলকে দিতে রাজি হওয়ার পর গত সোমবার তিন পুলিশ কর্মকর্তা যান সৌদিতে, তিন দিনের মধ্যে আসামিকে নিয়ে ফেরত আসেন তারা।
সাড়ে তিন মাসের চেষ্টায় কামরুলকে আনতে সফল হলেও ভারত থেকে নূর হোসেনকে আনার ক্ষেত্রে অগ্রগতি এখনও দেখা যায়নি; যদিও দুই বছর ধরে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, প্রক্রিয়া চলছে।
এআইজি নজরুল এই বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেন, “বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে কিছু রীতি-নীতি অনুসরণ করা হয়। এক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে।”
নুর হোসেনকে আনতে এত সময় লাগছে কেন- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নূর হোসেনের বিষয়ে অন্য ব্যাপার আছে। কিন্তু ফরমালিটিজ আছে, হয়ে যাবে।”
এই বছরের মধ্যে আনা সম্ভবপর হবে কি না- প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “আনা হবে। ফরমালিটিজ শেষেই আনা হবে।”
সম্প্রতি পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মামলা থাকায় নুর হোসেনকে এখন ফেরত দিচ্ছে না ভারত।
২০১৩ সালে নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের পর ভারতে পালিয়ে গিয়ে কলকাতায় ধরা পড়েন নুর হোসেন। তখন তার বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলা হয়। ওই মামলা চলছে কলকাতার আদালতে।
আইজিপি গত অগাস্টে বলেছিলেন, “ওই মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে দিতে চাচ্ছে না ভারত। যা যা আদালতের কাগজপত্র দরকার তা তাদেরকে দেওয়া হয়েছে। কূটনৈতিক পর্যায়ে, ইন্টারপোলের মাধ্যমেও দেওয়া হয়েছে।”
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার খন্দকার মুহিদ উদ্দিন বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সেখানকার (ভারত) বিচারিক প্রক্রিয়ার কারণে নূর হোসেনকে আনার বিষযটি আটকে আছে। তারা যে কাগজপত্র চেয়েছিল তা যথাসময়েই ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র রাত জেগে নিজে অনুবাদ করা ছাড়াও নোটারি করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, নূর হোসেনের বিরুদ্ধে সেখানে করা মামলার বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।”
তবে সাত খুনের মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন মনে করেন,আসামি নূর হোসেনকে ফেরত আনার বিষয়টি সরকারের ‘সদিচ্ছার’ উপর নির্ভর করে।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকারের সদিচ্ছা ছিল বলেই সৌদি আরব থেকে কামরুলকে ফেরত আনা গেছে। কিন্তু নূর হোসেন আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় তাকে আনা হলে অনেক রাঘব বোয়ালের নাম চলে আসবে। এ কারণে সরকারের সদিচ্ছা না থাকায় তাকে আনা সম্ভব হচ্ছে না।”
নূর হোসেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ছিলেন, ছিলেন থানা আওয়ামী লীগের নেতাও। খুনের মামলার আসামি হওয়ার পর দুই পদই হারান তিনি।
লিটন হায়দার, কামাল তালুকদার ও গোলাম মুজতবা ধ্রুব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
কামরুলের আগে এভাবে গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন দেশ থেকে আরও ১০ জন অপরাধীকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) নজরুল ইসলাম।
বিকালে কামরুলকে নিয়ে তিন পুলিশ কর্মকর্তা ঢাকা শাহজালাল বিমানবন্দরে নামার পর তিনি সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অপরাধীদের কয়েকটি দেশ থেকে এভাবে আনা হয়েছিল।
এর মধ্যে উত্তর কোরিয়া থেকে শিমুল মাহমুদকে, মালয়েশিয়া থেকে তারেক আহমেদ, নুরুল ইসলাম, আব্দুর রহিমকে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে নাজমুল মাকসুদ মুরাদকে, ভারত থেকে তাজ, লম্বু সেলিম, ইমন, মুকুলকে আনা হয়।
এআইজি বলেন, আইনগত প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে দেশবাসীর চাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে আসামি কামরুলকে ফেরত আনা হয়েছে।
“সৌদি আরবের সঙ্গে আমাদের কোনো বন্দি বিনিময় চুক্তি ছিল না। তারপরও আমরা তাকে আলোচনার ভিত্তিতে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনেছি।”
সিলেটে রাজন হত্যাকাণ্ডের পর তা নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনার মধ্যে কামরুল পালিয়ে গেলে গত ১২ জুলাই সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাকে আটক করে।
এরপর সেখানে বাংলাদেশের দূতাবাস কর্মকর্তারা কামরুলকে সৌদি পুলিশের হাতে তুলে দেন। এরপর তাকে ফেরত আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে উদ্যোগী হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সৌদি আরবে থেকে ফেরত আনা কামরুল ইসলাম
সৌদি কর্তৃপক্ষ কামরুলকে দিতে রাজি হওয়ার পর গত সোমবার তিন পুলিশ কর্মকর্তা যান সৌদিতে, তিন দিনের মধ্যে আসামিকে নিয়ে ফেরত আসেন তারা।
সাড়ে তিন মাসের চেষ্টায় কামরুলকে আনতে সফল হলেও ভারত থেকে নূর হোসেনকে আনার ক্ষেত্রে অগ্রগতি এখনও দেখা যায়নি; যদিও দুই বছর ধরে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, প্রক্রিয়া চলছে।
এআইজি নজরুল এই বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেন, “বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে কিছু রীতি-নীতি অনুসরণ করা হয়। এক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে।”
নুর হোসেনকে আনতে এত সময় লাগছে কেন- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নূর হোসেনের বিষয়ে অন্য ব্যাপার আছে। কিন্তু ফরমালিটিজ আছে, হয়ে যাবে।”
এই বছরের মধ্যে আনা সম্ভবপর হবে কি না- প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “আনা হবে। ফরমালিটিজ শেষেই আনা হবে।”
সম্প্রতি পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মামলা থাকায় নুর হোসেনকে এখন ফেরত দিচ্ছে না ভারত।
২০১৩ সালে নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের পর ভারতে পালিয়ে গিয়ে কলকাতায় ধরা পড়েন নুর হোসেন। তখন তার বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলা হয়। ওই মামলা চলছে কলকাতার আদালতে।
আইজিপি গত অগাস্টে বলেছিলেন, “ওই মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে দিতে চাচ্ছে না ভারত। যা যা আদালতের কাগজপত্র দরকার তা তাদেরকে দেওয়া হয়েছে। কূটনৈতিক পর্যায়ে, ইন্টারপোলের মাধ্যমেও দেওয়া হয়েছে।”
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার খন্দকার মুহিদ উদ্দিন বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সেখানকার (ভারত) বিচারিক প্রক্রিয়ার কারণে নূর হোসেনকে আনার বিষযটি আটকে আছে। তারা যে কাগজপত্র চেয়েছিল তা যথাসময়েই ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র রাত জেগে নিজে অনুবাদ করা ছাড়াও নোটারি করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, নূর হোসেনের বিরুদ্ধে সেখানে করা মামলার বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।”
তবে সাত খুনের মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন মনে করেন,আসামি নূর হোসেনকে ফেরত আনার বিষয়টি সরকারের ‘সদিচ্ছার’ উপর নির্ভর করে।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকারের সদিচ্ছা ছিল বলেই সৌদি আরব থেকে কামরুলকে ফেরত আনা গেছে। কিন্তু নূর হোসেন আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় তাকে আনা হলে অনেক রাঘব বোয়ালের নাম চলে আসবে। এ কারণে সরকারের সদিচ্ছা না থাকায় তাকে আনা সম্ভব হচ্ছে না।”
নূর হোসেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ছিলেন, ছিলেন থানা আওয়ামী লীগের নেতাও। খুনের মামলার আসামি হওয়ার পর দুই পদই হারান তিনি।
লিটন হায়দার, কামাল তালুকদার ও গোলাম মুজতবা ধ্রুব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন