মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৫

সাক্ষী সুরক্ষা আইন করার নির্দেশ




বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক এখন কোথায়?

 
                     বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী রবিবারই এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ঢাকা ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি এখন মূল্যায়ন করছে।    
            
পাকিস্তানের সাথে এখন বাংলাদেশের সম্পর্কে বেশ ভাটা চলছে।
বাংলাদেশে সম্প্রতি যুদ্ধাপরাধের দায়ে দুজন শীর্ষস্থানীয় বিরোধী রাজনীতিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের অবস্থান এবং ঢাকা ও ইসলামাবাদে দুই দেশের কূটনীতিবিদদের তলব পাল্টা তলবকে কেন্দ্র করে এখন দু'দেশের সম্পর্কে বেশ তিক্ততা তৈরি হয়েছে।
এরই মধ্যে বাংলাদেশে বিভিন্ন তরফ থেকে দাবি তোলা হচ্ছে, এই সুযোগে বাংলাদেশের উচিৎ পাকিস্তানের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি নামজাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছে তাদের তরফ থেকে পাকিস্তানের সাথে আর কোনও সম্পর্ক রাখা হবে না।
এরকম প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী রবিবারই এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ঢাকা ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি এখন মূল্যায়ন করছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্য আসলেই কি কোনও সত্যিকারের অর্থ বহন করে, নাকি কথার কথা, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষক ড. আব্দুর রব খান।
এই বক্তব্য অবশ্য দু'দেশের মধ্যেকার সম্পর্কের অবনতিকে স্বীকৃতি দেয় বলেই মনে করেন ড. খান।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে দু'দেশের মধ্যে সম্পর্কের কতটা অবনতি হয়েছে? সেটা কি সম্পর্কচ্ছেদ করবার মতো?
এর আগেও এরকম তিক্ততা এসেছে দু'দেশের মধ্যে উল্লেখ করে ড. খান বলছেন, “স্বাধীনতার পর থেকে পাকিস্তানের সাথে মধুর সম্পর্ক কখনোই হয়নি”।
তবে এখনো সম্পর্কের ‘সত্যিকারের অবনতি’ হয়নি বলে মনে করেন।
“যদি বলা যেত যে হাইকমিশনারকে বহিষ্কার করেছে অথবা তারা তাকে প্রত্যাহার করেছে, তাহলে সেটা হবে সম্পর্কের অবনতির সত্যিকারের ইঙ্গিত”।
ড. খান স্মরণ করিয়ে দেন, এর আগেও ঢাকায় এক পাকিস্তানি কূটনীতিক বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনী সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করার পর সম্পর্ক এমন তিক্ততার পর্যায়ে গিয়েছিল যে ওই কূটনীতিককে প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয় ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের কূটনীতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা ঠিক হবে না বলেও মনে করেন ড. খান।
তিনি বলেন, এটা হলে ‘দক্ষিণ এশিয়ায় ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে’।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, ১৯৭১ সালে মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারে বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসির দণ্ড কার্যকরের পর গত ২২শে নভেম্বর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে ঐ বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
এর প্রতিবাদে বাংলাদেশ ২৩শে নভেম্বর ঢাকায় পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে তলব করে প্রতিবাদ জানায়।
জবাবে পাকিস্তানও বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে।

দুই ভবনের আধাআধি জোড়া দিয়ে অদ্ভূত স্থাপত্য

 
    china_strange_building_hybrid                           
চীনে পৃথিবীর অনেক দেশেরই বিখ্যাত স্থাপত্যকীর্তি বা ভবনের হুবহু নকল তৈরির একটা ঝোঁক আছে।
মিশরের পিরামিডের পাশের স্ফিংক্স, লন্ডনের টাওয়ার ব্রিজ, অস্ট্রিয়ান আলপাইন গ্রাম হালস্টাটান্ড, ইতালির ভেনিস শহরের চীনা সংস্করণ - এরকম অনেক হুবহু নকল তৈরি হয়েছে চীনের নানা শহরে। বেশ দর্শকও টানে এগুলো।
তবে সবশেষ এ তালিকায় যা যোগ হয়েছে তা অতি বিচিত্র।
চীনের উত্তরে শি জিয়াঝুয়াং বলে একটি শহর আছে সেখানে তৈরি হয়েছে একটি অদ্ভূত ভবন - যা দেখে মনে হবে দুটি ভবনের দুটি টুকরোকে যেন একসাথে জোড়া দেয়া হয়েছে।
এই ভবনটির এক অংশ বেজিংএর বিখ্যাত টেম্পল অব হেভেনের আদলে, আর অপর অংশ যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনের স্টেট ক্যাপিটল বা কংগ্রেস ভবনের আদলে।
পুরো ভবনটি চারতলা সমান উঁচু।
বেজিং-ওয়াশিংটন হাইব্রিড এই ভবনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।
এজন বলেছেন, এটা একটা সৃষ্টিশীল নিরীক্ষা । আরেকজনের মতে, এটি চীন -মার্কিন বন্ধুত্বের প্রতীক।
আরেকজন মন্তব্য করেছেন, এটি হচ্ছে দুই ডিজাইনারের ঝগড়ার পরিণতি।

চরমপন্থার বিরুদ্ধে যুদ্ধ, আমেরিকা বনাম ইসলামের যুদ্ধ নয়: ওবামা

 
   
                 ওভাল অফিসে এই ভাষণটি দেন প্রেসিডেন্ট ওবামা।
ক্যালিফোর্নিয়ায় গত সপ্তাহে যে হামলায় চৌদ্দ জন নিহত হয়েছে, সেটিকে সন্ত্রাসবাদ বলে অভিহিত করে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, ওই হামলাকারীরা যে সংগঠনের সমর্থক বলে দাবী করেছেন সেই ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠীকে ধ্বংস করে দেয়া হবে।
তবে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে যুদ্ধকে আমেরিকা ও ইসলাম ধর্মের মধ্যেকার লড়াই হিসেবে দেখাটা উচিৎ হবে না বলে মন্তব্য করেন মি. ওবামা।
কট্টর পন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমেরিকার মুসলমানদের অংশ নেবারও আহ্বান জানান তিনি।
সরকারি কর্মকর্তাদের এক ক্রিসমাস পার্টিতে চালানো ওই হামলাটির প্রতিক্রিয়ায় ওভাল অফিসে বসে বিরল এই ভাষণটি দেন প্রেসিডেন্ট ওবামা।
গত বুধবার বন্দুকধারী এক বিবাহিত দম্পতি হামলাটি চালিয়ে চৌদ্দ জনকে হত্যা করে।
সৈয়দ রিজওয়ান ফারুক ও তাশফিন মালিক নামের ওই দম্পতি পরে পুলিশের হাতে নিহত হয়।
পরে জানা যায়, তাশফিন মালিক তার ফেসবুক পাতায় দেয়া পোস্টে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট জঙ্গি সংগঠনের কাছে আনুগত্য স্বীকার করার কথা লিখেছিল।
মি. ওবামা অবশ্য তার ভাষণে বলেন, হামলাটি সংগঠিত করবার পেছনে কোনও বিদেশী শক্তি বা গোষ্ঠীর হাত রয়েছে এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

পশ্চিমা জোটের হামলায় সিরিয়ার সরকারি সৈন্য নিহত

 
                               
সিরিয়ার একটি সেনা ক্যাম্পে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিমান হামলায় প্রেসিডেন্ট আসাদ সরকারের অন্তত তিনজন সৈন্য নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আহত হয়েছে ১০ জনেরও বেশি সৈন্য।
দেশটির পূর্বাঞ্চলে দেইর আল জোর প্রদেশে চালানো অভিযানের সময় এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
সিরিয়ার সরকার এই অভিযানের নিন্দা করে বলেছে, এটা তাদের দেশের বিরুদ্ধে বড়ো ধরনের আগ্রাসন।
সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, চারটি যুদ্ধবিমান থেকে একটি সেনা ক্যাম্পের ওপর রবিবার সন্ধ্যায় ন’টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে।
তারা বলছে, এই হামলায় তিনটি সামরিক যান, ভারী মেশিনগান এবং বহু গোলাবারুদ ধ্বংস হয়ে গেছে।
তবে অ্যামেরিকার নেতৃত্বে পশ্চিমা জোট বলছে, তাদের কোনো জঙ্গি বিমান কোনো সামরিক ঘাটিতেই আক্রমণ করেনি।
                           
জোটের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ওই এলাকাতেই তাদের বিমান হামলা করেনি।
এই প্রদেশের বড়ো অংশই তথাকথিত ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের দখলে।
এই খবরটি সত্য হলে সিরিয়ার সরকারি সো ক্যাম্পের ওপর এই হামলা হবে অভিযান শুরু হওয়ার পর প্রথম কোনো হামলা।
পশ্চিমা জোট গত বছর থেকে প্রেসিডেন্ট আসাদ সরকারের সাথে কোনো ধরনের সমন্বয় ছাড়াই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়ে আসছে।
গত সপ্তাহে সামরিক অভিযান শুরু করেছে ব্রিটেন।
আর সবশেষ জার্মানিও তাদের জঙ্গি বিমান, যুদ্ধ জাহাজ ও বারোশ সৈন্য পাঠাতে যাচ্ছে।

বাংলাদেশে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বাড়াতে ব্রিটেনের তাগাদা

                                
বাংলাদেশের বিমান বন্দরগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করতে বাংলাদেশ সরকারকে তাগাদা দিয়েছে ব্রিটেন।
মিশরের শার্ম আল শেখ থেকে উড়ে যাওয়া একটি রুশ বিমান সিনাইয়ে বিধ্বস্ত হওয়ার পর ব্রিটেনের পরিবহন দপ্তর বাংলাদেশসহ বিশ্বের সবকটি দেশের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে এই তাগাদা দিয়েছে।
বলা হচ্ছে, বিমানের ভেতরে রাখা একটি বোমার বিস্ফোরণে ওই রুশ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়, যাতে ২২৪ জন নিহত হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের বিমান বন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের একটি দল ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর পরিদর্শন করেছেন। এবিষয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার কথা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথেও।
এয়ারপোর্টের নিরাপত্তার ব্যাপারে তারা বাংলাদেশকে কিছু সুপারিশও করেছেন।
বেসরকারি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বিবিসিকে বলেছেন, এয়ারপোর্টগুলোতে নিরাপত্তার জন্যে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কীনা সেটাই তারা খতিয়ে দেখছেন। তারা যাত্রী ও মালবাহী বিমানগুলোর ফ্লাইটের নিরাপত্তার ব্যাপারেও জানতে চেয়েছেন।
তিনি বলেন, বিমানটি যে এয়ারপোর্ট থেকে উড়ে যায় ওই বিমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সেদেশের।
                 সিনাই এ রুশ বিমান বিধ্বস্ত হেল ২২৪ জন নিহত হয়েছে। বলা হচ্ছে, বিমানের ভেতরে রাখা বোমার বিস্ফোরণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে                
ব্রিটিশ কর্মকর্তারা বলছেন, বিমানবন্দরে লোকজনের যাওয়া আসা, বিস্ফোরক চিহ্নিত করার ব্যবস্থা ও বিমানে খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় নিরাপত্তার প্রক্রিয়ার মতো বিষয়ে তারা পরামর্শ দিয়েছেন।
মি. মেনন বলেন, নিরাপত্তার সব ব্যবস্থাই বাংলাদেশের বিমান বন্দরগুলোতে নেওয়া হয়েছে। তারপরেও সেটা আরো জোরদার করা হয়েছে।
তিনি জানান, যাত্রীদের চেক ইনের সময়েও এই নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। আগে তাদেরকে বেল্ট, ঘড়ি বা জুতো খুলতে হতো না। কিন্তু এখন সেটা চালু করা হয়েছে।
পরিবহন পরীক্ষা করে দেখার জন্যে স্ক্যানিং যন্ত্রসহ বিস্ফোরকের সন্ধানে মোতায়েন করা হয়েছে ডগ স্কোয়াড।
ব্যাগেজ হ্যান্ডলিং এর সাথে যারা জড়িত তাদের ব্যাপারে গোয়েন্দা ও পুলিশের ক্লিয়ারেন্সও নেওয়া হচ্ছে।
মি. মেনন বলেছেন, সাধারণ যাত্রীদের জন্যে যতোটা অসুবিধা হয় তারচেয়েও বেশি অসুবিধা হয় মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা ভিভিআইপিদের জন্যে।
দেখা গেছে, তাদেরকে বিদায় ও স্বাগত জানাতে বিমান বন্দরে প্রচুর লোকজন ঢুকে পড়ে। তিনি বলেন, “তাদেরকে অভ্যর্থনা জানাতে অনেক সময় একশো দেড়শো লোকও হাজির হয়।”
ব্রিটেনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার এই তাগাদা দেওয়া হলেও আরো যেসব দেশের এয়ারলাইন্স বাংলাদেশে যাতায়াত করে সেসব দেশের পক্ষ থেকে ঢাকাকে কিছু বলা হয়নি।

নদীতে জাল দিয়ে মাছ নয়, টাকা আর টাকা!

 
   
অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় দানিউব নদীতে এক ঝাক মাছের মতো ভাসছিলো ইউরোর চকচকে বেশকিছু ব্যাঙ্ক নোট।
অল্প বয়সী এক ছেলে তখন ওই নোটগুলো দেখতে পেয়ে জাল নিয়ে নদীতে নেমে পড়ে এবং সাতার কেটে সেগুলো তীরে নিয়ে আসে।
একশো বা দুশো নয়, গুণে দেখা গেলো ওই ব্যাঙ্ক নোটের মূল্য এক লাখ ইউরোরও বেশি।
হায়রে কপাল, ছেলেটির জন্যে তখনও শিকে ছেড়েনি।
স্থানীয় একটি পত্রিকা বলছে, নদীর পার দিয়ে হেঁটে যাওয়া কয়েকজন লোক প্রথমে মনে করেছিলো ছেলেটি নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছে।
তখন তারা পুলিশকে খবর দেয়।
বিধিবাম!
ছেলেটি যখন ব্যাঙ্ক নোটগুলো বগলদাবা করে তীরে এসে পৌঁছায় ততোক্ষণে সেখানে এসে হাজির হয় পুলিশ।
তারপর সেই টাকা চলে যায় পুলিশের হাতে।
সবগুলোই ৫০০ আর ১০০ টাকার নোট, একেবারেই আনকোরা।
কিন্তু টাকার ব্যাপারে ছেলেটি দমে যায়নি এখনও।
পুলিশের কাছে সে ওই টাকার ভাগ চাইছে। কারণ সে দাবি করছে যে নদীতে ঝাপ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সে এই টাকা উদ্ধার করেছে।
অস্ট্রিয়ায় সাধারণত কেউ যদি অর্থ খুঁজে পান তারপর সেটা পুলিশের কাছে জমা দেন তাহলে তাকে ওই অর্থের ৫ থেকে ১০ ভাগ দেওয়া হয়ে থাকে।
পুলিশ বলছে, এক বছরের মধ্যে যদি টাকার মালিককে খুঁজে না পাওয়া যায় তাহলে শেষ পর্যন্ত পুরোটা টাকাই এই ছেলেটিকে দিয়ে দেওয়া হবে।
পুলিশ এখন এই রহস্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে যে এত্তো ইউরো নদীতে আসলো কিভাবে?
প্রথমে তারা ভেবেছিলেন জাল নোট। কিন্তু পরে তারা পরীক্ষা করে দেখেছেন নোটগুলো আসল।
পুলিশের একজন মুখপাত্র বলছেন, কোনো অপরাধের সাথে তারা এখনও এই টাকার সংযোগ খুঁজে পাচ্ছেন না।
ইউরোর নোটগুলো এখন শুকানো হচ্ছে।

চাকমা রাজা ত্রিদিব রায় ১৯৭১ সালে কেন পাকিস্তানের পক্ষে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ছিলেন?

 
                     পিয়জীত দেবসরকার: 'ত্রিদিব রায় ছিলেন এমন একজন রাজা যিনি ব্যক্তি স্বার্থ-র জন্য তাঁর রাজত্ব হারিয়েছেন'                 
উনিশ্‌শো একাত্তর সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর, বিশেষ করে চাকমাদের ভূমিকা নিয়ে বেশ বিতর্ক আছে। চাকমাদের তৎকালীন রাজা ত্রিদিব রায় পাকিস্তানের পক্ষে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।
কিন্তু ত্রিদিব রায়-এর সিদ্ধান্তের পেছনে কী কারণ ছিল বা কী ধরণের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট সেই সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছিল, সে বিষয়ে গবেষণা খুব বেশি হয়নি।
সম্প্রতি সেই কাজটি করেছেন লন্ডন-ভিত্তিক ভারতীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রিয়জীত দেবসরকার, যার বই ‘দ্য লাস্ট রাজা অফ ওয়েস্ট পাকিস্তান’ গত সপ্তাহে প্রকাশিত হয়েছে।
এই বইতে লেখক উপমহাদেশের বিশাল ক্যানভাসের মধ্যে চাকমাদের ইতিহাসের প্রাসঙ্গিকতার একটি জীবন্ত চিত্র এঁকেছেন। সেই চিত্রে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন কীভাবে একের পর এক চাকমা রাজা নিজেদের রাজত্ব এবং স্বাতন্ত্র্য রক্ষায় এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা চাকমা জাতিগোষ্ঠীকে তাদের প্রতিবেশী বাঙ্গালীদের প্রতিদ্বন্দ্বীতে পরিণত করেছিল।
রাজা ত্রিদিব রায়-এর রাজনৈতিক চিন্তা-ভাবনা ব্যাখ্যা করার জন্যই প্রিয়জীত দেবসরকার তাঁর বই-এর নামে তাঁকে ‘পশ্চিম পাকিস্তানের শেষ রাজা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
মি: দেবসরকারের মতে, ১৯৫৩ সালে সিংহাসনে আরোহণ থেকে শুরু করে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ত্রিদিব রায় নিজেকে পশ্চিম পাকিস্তানের এক জাতিগোষ্ঠীর রাজা হিসেবে দেখেছেন। রাজা ত্রিদিব রায় খুব চিন্তা-ভাবনা করেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
                                রাজা ত্রিদিব রায়: সিংহাসনে আরোহণের দিন।                 
মি: দেবসরকারের গবেষণা মতে, ত্রিদিব রায়-এর সিদ্ধান্ত ছিল আত্মস্বার্থ-কেন্দ্রিক। নিজের রাজত্ব এবং স্বায়ত্তশাসন টিকিয়ে রাখতেই ত্রিদিব রায় পাকিস্তানের সাথে হাত মিলিয়েছিলেন।
“উনি চাইছিলেন তাঁর রাজত্ব এবং রাজ পরিবারের শাসন যেন বজায় থাকে, যদিও অনেক সাধারণ চাকমা তাঁর নীতির বিপক্ষে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন”, মি: দেবসরকার বলেন।
বইটির ভিত্তি হচ্ছে দালিলিক গবেষণা, অর্থাৎ প্রকাশিত বা অপ্রকাশিত দলিল ছিল বইটির মৌলিক উপাদান। গবেষণার কাজ হয়েছে বিশ্বর বিভিন্ন অঞ্চলে – বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি থেকে শুরু হয়ে পাকিস্তানের ইসলামাবাদ, তারপর শ্রী লংকা এবং থাইল্যান্ড হয়ে আর্জেন্টিনার বুয়েনস আয়ার্স।
দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক খেলার মাঠে চাকমা রাজাকে একজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে দেখেছেন লেখক। বইটির মূল লক্ষ্য ছিল সেই বিশ্লেষণের আলোকে রাজা ত্রিদিব রায়-এর কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা এবং ব্যাখ্যা করা।
বই-এর শুরুতে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে, বিশেষ করে আরাকান এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে চাকমাদের আগমন এবং প্রভাব বিস্তারের ইতিহাস। এর পরে এসেছে, দিল্লিতে মোগল বাদশাহদের সাথে চাকমা রাজাদের সম্পর্ক এবং ব্রিটিশ শাসন শেষে পার্বত্য চট্টগ্রামকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অধীনস্থ করার সিদ্ধান্ত।
পার্বত্য চট্টগ্রামে মুসলিমরা সংখ্যালঘু হওয়া সত্ত্বেও এলাকাটি পাকিস্তানের সাথে সংযুক্ত করা হয়। স্যার সিরিল র‍্যাডক্লিফ-এর এই সিদ্ধান্ত অনেককে অবাক করলেও, তৎকালীন চাকমা রাজা নালিনক্সা রায় খুশিই হয়েছিলেন।
ভারতীয় কংগ্রেসের নীতি বেশ সোজা-সাপটা ছিল, বলছেন মি: দেবসরকার। তারা স্বাধীন ভারতে কোন ধরনের স্থানীয় রাজা-রাজকুমার বা রাজকীয় ক্ষুদ্র রাজ্য বরদাশত করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছিল।
কাজেই, চাকমা রাজার পক্ষে ভারতে যোগ দিয়ে রাজত্ব টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হতো।
                 চাকমা রাজা ত্রিদিব রায়কে নিয়ে বিরল একটি গবেষণা।
“আপনি যদি একটু পেছনে যান, আপনি দেখবেন চাকমারা ব্রিটিশ ভারতে সব সময় স্বায়ত্তশাসন উপভোগ করে আসছে। তাদের কিন্তু সব সময় একটি আলাদা রাজত্ব, আলাদা পরিচয় ছিল,” মি: দেবসরকার বলেন।
রাজা ত্রিদিব রায় মনে করেছিলেন পাকিস্তানের সামরিক শাসনই পার্বত্য চট্টগ্রামে চাকমাদের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করবে। শুরু থেকেই তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক এবং বেসামরিক আমলাদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
অন্যদিকে, পূর্ব পাকিস্তানের উদীয়মান জাতীয়তাবাদী আন্দোলন বা স্থানীয় রাজনৈতিক গোষ্ঠীদের সাথে সম্পর্ক স্থাপনকে তিনি কম গুরুত্ব দেন। এমনকি ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা শেখ মুজিবের ব্যাপক বিজয়-এর পরেও তিনি তার অবস্থান পুনর্বিবেচনা করেন নি।
মি: দেবসরকার বলছেন, ত্রিদিব রায় ১৯৭০-এর নির্বাচনের আগে শেখ মুজিবের সাথে দেখা করলে তিনি তাঁকে আওয়ামী লীগ-এর প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবার অনুরোধ জানান। মুজিব ত্রিদিব রায়কে আশ্বাস দেন, যে তাঁর দল বিজয়ী হলে পার্বত্য এলাকার উন্নয়নে তিনি সহায়তা করবেন।
“কিন্তু রাজা ত্রিদিব রায়-এর মূল লক্ষ্য ছিল তাঁর রাজত্বের স্বায়ত্তশাসিত মর্যাদা রক্ষা করা এবং আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে, সে বিষয়ে হয়তো কোন সমস্যা ছিল”, মি: দেবসরকার বলেন।
তবে মি: দেবসরকার মনে করছেন, ত্রিদিব রায় ভেবেছিলেন পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান নির্বাচনের ফলাফলকে কোন না কোন ভাবে নাকচ করে দিতে পারবেন।
“উনি যেহেতু পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সাথে ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং তাদেরকে অনেক উন্নত মানের বাহিনী মনে করতেন, তিনি ভেবেছিলেন যে তাদের বিরুদ্ধে বিদেশী কোন হুমকি কাজ করবে না এবং তারা সব কিছু সামলে নিতে পারবে,” তিনি বলেন।
লেখক তাঁর কাজ ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসেই শেষ করে দেননি, কারণ ত্রিদিব রায়-এর রাজনৈতিক জীবন ১৯৭১-এর পর থেমে থাকে নি।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো ১৯৭৩ সালে রাজা ত্রিদিব রায়কে দেশের প্রেসিডেন্ট হবার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি বৌদ্ধ ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম হতে চাননি বলে পদ গ্রহণ করতে পারেননি।
কিন্তু তারপরও, মি: দেবসরকার তাঁর উপসংহারে লিখছেন, “ত্রিদিব রায় ছিলেন এমন একজন রাজা যিনি শুধুমাত্র ব্যক্তি স্বার্থ-র জন্য তাঁর রাজত্ব হারিয়েছেন”।
চাকমাদের ৫০তম রাজা ত্রিদিব রায়-এর নাম ১৯৭২ সালের দালাল আইনে অভিযুক্তদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তিনি সেই অভিযোগ মোকাবেলা করার জন্য কখনো বাংলাদেশে ফিরে আসেননি এবং ৭৯ বছর বয়সে ২০১২ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত তিনি নির্বাসনে ছিলেন।

দ্য লাস্ট রাজা অফ ওয়েস্ট পাকিস্তান, ১৬১ পৃষ্ঠা। প্রকাশক: কুইনটাস।