রবিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৫

সাকিবের বোলিংয়ের উত্তর পাচ্ছে না জিম্বাবুয়ে

বল হাতে নিয়ে সাকিবের জাদু। ছবি: ফাইল ছবিব্যাটিংয়ে দারুণ শুরুটা টেনে নিয়ে যেতে পারেননি। বেশি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েছেন। তাতে কিছুটা দুর্ভাগ্যের ছোঁয়াও আছে। এভাবে আউট হওয়াটা যে পছন্দ হয়নি, সেটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। তবে সাকিব আল হাসানের সবচেয়ে বড় সুবিধা, অন্য দিক দিয়ে হতাশাটাকে আনন্দে রূপ দেওয়ার সুযোগ থাকেই। ব্যাটের হতাশা বোলিংয়ে ভুলতে চাইছেন হয়তো।
সাকিবের জোড়া আঘাতে বেশ ঝামেলায় পড়ে গিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। প্রায় এক বছর পর জাতীয় দলের হয়ে খেলতে নামা আল-আমিন তুলে নিয়েছেন আরেক উইকেট। আবার আক্রমণে ফিরে সাকিব তুলে নিয়েছেন আরও একটি উইকেট। এরপর মাশরাফিও দুই উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়েকে নিয়ে গেছেন খাদের কিনারায়।
এই প্রতিবেদন লেখার সময় ৩০ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের স্কোর ছিল ১০২/৬। লুক জঙ্গুয়ে ৩৯ করে আউট হয়েছেন, এলটন চিগুম্বুরা অপরাজিত আছেন ৩৩ রানে। বাকিরা দুই অঙ্কই ছুঁতে পারেননি। জয়ের জন্য আরও ১৭২ করতে হবে জিম্বাবুয়েকে।
ওভার প্রতি রান তোলার চাহিদাটা সাড়ে ছয় পেরিয়ে গেছে। বাংলাদেশের বোলাররা শুরু থেকেই চাপের মুখে ঠেসে ধরেছে জিম্বাবুয়েকে। মুস্তাফিজুর রহমান নামের সেই বিস্ময়কে এবারই প্রথম খেলছে চিগুম্বুরার দল। উইকেট না পেলেও শুরু থেকে জিম্বাবুয়ে ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাস টলিয়ে দিয়েছেন ৪ ওভারে ১৪ রান দেওয়া এই বাঁ হাতি পেসার। শুরুতেই আক্রমণে নিয়ে আসার আস্থার প্রতিদান দিয়ে ৭ ওভারে ১৯ রান দিয়েছেন আরাফাত সানি।
৫ ওভারে ১৫ রান দিয়ে জঙ্গুয়ের উইকেটটা তুলে নিয়েছেন আল আমিন। ৮ ওভারে ৪০ রান দিয়ে ৩ উইকেট সাকিবের। আর এই তিন উইকেটে আবদুর রাজ্জাকের আরও কাছাকাছি চলে গেলেন। বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডের সর্বোচ্চ উইকেটের মালিকের রেকর্ডটা ধরতে আর তিনটি উইকেট চাই সাকিবের।

বাংলাদেশের কাছে জিম্বাবুয়ের শোচনীয় পরাজয়




জয়ের তিন নায়ক। আজ ম্যাচ শেষে। ছবি: শামসুল হক
 








পাকিস্তান পাত্তা পায়নি। ভারত নয়। এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকাও। শুধু এই তিন বড় দলের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে বলেই নয়; বাংলাদেশ সিরিজ জিতেছে দাপটের সঙ্গেই। প্রস্তুতি ম্যাচে জিম্বাবুয়ের চোখ রাঙানি ছিল বটে, তবে আসল লড়াইয়ে পাত্তা পেল না এলটন চিগুম্বুরার দলও। সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ১৪৫ রানের বড় ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ।
 
বাংলাদেশ যত বড় ব্যবধানে জিতেছে, তত রান বোর্ডে জমাতেই পারেনি জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের ২৭৩ রানের জবাবে ৩৬.১ ওভারে ১২৮ রানে অলআউট জিম্বাবুয়ে। দুর্দান্ত বোলিং করে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন সাকিব। তবে ‘দুর্দান্ত’ বোলিংটা সাকিব একা নন, করেছে সবাই। অধিনায়ক মাশরাফি নিজে যেমন ৬ ওভার বোলিং করে মাত্র ১৩ রানে নিলেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট আল-আমিন ও নাসির হোসেনের।
 
যে দুজন বোলিং শুরু করেছিল, উইকেট পাননি তাঁরাই। কিন্তু তাঁদের অবদানও কি খুব কম? ৭ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়েছেন আরাফাত সানি। মুস্তাফিজুর রহমান ৬ ওভারে দিয়েছেন ২৭। এই দুজন শুরুতেই রাশটা চেপে ধরেছিলেন। বাকিরাও নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছে। এ কারণে পাঁচ উইকেট নিয়ে ম্যাচ শেষে সাকিব বলতে পারলেন, ‘আমি আসলে খুব লাকি।’
 
খেলার ফলাফল নিয়ে আগ্রহটি মিইয়ে গিয়েছিল আগেই। তবু ৩৬তম ওভারের শুরুটা একটু আগ্রহ সৃষ্টি করল। নিজের বোলিং কোটার শেষ ওভার করতে এলেন সাকিব। এর আগেই নামের পাশে ৪টি উইকেট। পঞ্চম উইকেটটি এল শেষ নিজের ওভারের ওভারের পঞ্চম বলে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটালেন সাকিব। অথচ টেস্টে ৫ উইকেট নিয়েছেন ১৪ বার!
 
অস্ট্রেলিয়া সফর বাতিল করার পর তড়িঘড়ি করে আয়োজন করা হয়েছিল এই সিরিজের। কিন্তু সিরিজের শুরুতেই বোঝা গেল, অসম এক লড়াই হয়তো হতে যাচ্ছে।
 
দিনের শুরুতে মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরি আর তামিম ইকবাল ও সাব্বির রহমানের কার্যকরী দুই ইনিংসের ওপর ভর করে ২৭৩ রান তোলে বাংলাদেশ। দলনেতা মাশরাফি বিন মুর্তজার প্রাথমিক লক্ষ্যই ছিল ২৭০-২৮০ এর ঘরে। খারাপ সংগ্রহ নয় মোটেও কিন্তু কিন্তু প্রস্তুতি ম্যাচে ২৭৮ রান তুলে ম্যাচ জিতেছিল জিম্বাবুয়ে। তাই কিছুটা দুশ্চিন্তা ছিলই। সেই শঙ্কা দূর করতে বে​শি সময় নেয়নি বাংলাদেশ।
 
জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের পুরোটা সময় অস্বস্তিতে রেখেও উইকেটের দেখা পাচ্ছিলেন না। এ জন্য মাত্র অষ্টম ওভারেই বোলিংয়ে নিয়ে আসা হয় সাকিবকে। দলনেতার এমন আস্থার প্রতিদান দিতে দেরি করেননি সাকিব। নিজের দ্বিতীয় ওভারেই চামু চিবাবাকে আউট করে শুরু করেছেন। সাত ওভারের স্পেলটি যখন থামল, ততক্ষণে শেষ জিম্বাবুয়ের ম্যাচে ফেরার আশা। সাত ওভারের ওই স্পেলে মাত্র ২৪ রানে তিন উইকেট পেয়েছিলেন সাকিব। এর মাঝে প্রায় এক বছর পড়ে দলে ফেরা আল-আমিন হোসেনও ফিরিয়ে দেন লুক জঙ্গুয়েকে। মাত্র ৯ ওভারের মধ্যেই বিনা উইকেটে ৪০ রান থেকে ৬৫ রানেই ৪ উইকেটে হারিয়ে বসে সফরকারীরা।
 
অধিনায়ক মাশরাফি প্রথমে বল হাতে নেন ২২তম ওভারে। বল হাতে নেওয়ার পর অবশ্য সময় খুব একটা নেননি মাশরাফি। নিজের তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলেই সিকান্দার রাজাকে আউট করে বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে ২০০তম উইকেটটিও পেয়ে গেছেন মাশরাফি। একটু পরেই ম্যালকম ওয়ালারকেও ফিরিয়ে দিয়ে জিম্বাবুয়েকে খাদের কিনারায় নিয়ে গেছেন তিনিই।
 
এর পরই যা একটু প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছেন এলটন চিগুম্বুরা। গ্রায়েম ক্রেমারকে নিয়ে ৩৩ রানের জুটি গড়ে দলকে ১০০ পার করেছেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। এই জুটি ভাঙার দায়িত্বটাও নিজের কাঁধে নিয়েছেন সাকিব। ক্রেমার এবং পানিয়াঙ্গারাকে পরপর দুই ওভারে আউট করে ক্যারিয়ারের প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেট পান তিনি। পরের ওভারের প্রথম বলেই নাসির হোসেনের বলে আউট হয়ে যান চিগুম্বুরা। একতরফা ম্যাচটির সমাপ্তি ঘটে জিম্বাবুয়ের অধিনায়কের উইকেটের পতনের পর পরই। ফিল্ডিংয়ের সময় পাওয়া চোটের কারণে ব্যাট করতে নামেননি রিচমন্ড মুতুম্বামি। তাই প্রায় ১৪ ওভার বাকি থাকতেই বাংলাদেশ ১৪৫ রানের বিশাল ব্যবধানে জিতে যায় সিরিজের প্রথম ম্যাচ।
 
রানের ব্যবধানে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের ছিল এটাই সবচেয়ে বড় জয়। আরও একবার প্রমাণিত হলো, এক সময়ের অগ্রজ থেকে সমশক্তি, তার পর আরও পিছিয়ে জিম্বাবুয়ে এখন বাংলাদেশের তুলনায় খর্ব শক্তিরই। বাংলাদেশ তো ভারত-পাকিস্তান-প্রোটিয়াদের বধ করে আরও ওপরে যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর। বারবার দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানো অতিথিদের সম্মান জানানোর কমতি অতিথি পরায়ণ বাংলাদেশ কখনোই করবে না। তবে একপেশে লড়াই দেখাও ক্লান্তিকর, ​হোক না জয়ী দলটা নিজেরই দল।
 
অবশ্য জিম্বাবুয়ে দাবি করতে পারে, ‘আমরা না হয় এখনো ছোট। কিন্তু একপেশে জয়ের এই ক্লান্তির দায় কি বাকি তিন বড়রও নয়?’

কোরানের অপব্যাখ্যা করে বহুবিবাহ করছেন মুসলমানরা

 
                                
ভারতের একটি আদালত তার রায়ে বলেছে যে কিছু মুসলমান একাধিক বিয়ে করার জন্য কোরানের অপব্যাখ্যা করছেন।
গুজরাত হাইকোর্টের বিচারপতির মন্তব্য একজন স্ত্রীর বর্তমানে অন্য একজনকে বিয়ে করা ভারতীয় সংবিধান বিরোধী। ভারতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করা উচিত বলেও মন্তব্য গুজরাত হাইকোর্টের।
একটি পারিবারিক মামলার রায় দিতে গিয়ে গুজরাত হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা বলেছেন মুসলমান পুরুষেরা একাধিক বিয়ে করার জন্য কোরানের ভুল ব্যাখ্যা করছেন। বহুবিবাহের যে সংস্থান কোরানে রয়েছে, তাকে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
গুজরাতের এক বাসিন্দা জাফর আব্বাস মার্চেন্টের দায়ের করা আবেদনের রায় দিতে গিয়েই বিচারপতি এই রায় দিয়েছেন।
ওই ব্যক্তির স্ত্রী ভারতীয় দন্ডবিধি অনুযায়ী পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন যে বে আইনী ভাবে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন মি. মার্চেন্ট।
সেই অভিযোগ খারিজের আবেদনে মি. মার্চেন্ট আদালতকে বলেছিলেন মুসলিম ব্যক্তিগত আইন অনুযায়ী তাঁর চারটি পর্যন্ত বিয়ে করার সুযোগ রয়েছে।
ভারতের মুসলমানদের মধ্যে এই রায় নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
                                        মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কোরান
দেওবন্ধের দারুল উলুম ঘনিষ্ঠ মৌলানা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর কথায়, “কোরানের অনেক ব্যাখ্যা চালু আছে। কিন্তু যে ব্যাখ্যাটা সর্বজনগ্রাহ্য, তা অনুযায়ী মুসলমানেরা চারটি পর্যন্ত বিবাহ করতে পারেন। তবে প্রত্যেক স্ত্রীকে সমমর্যাদা দিতে হবে, প্রত্যেকের দিকে একইভাবে খেয়াল রাখতে হবে।“
গুজরাত হাইকোর্ট অবশ্য আরও বলেছে যে কোরানে বহুবিবাহের কথা একবার উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু সেটা শর্তসাপেক্ষে করা যেতে পারে। আর যে যুগে বহুবিবাহের কথা বলা হয়েছে, সেই সময়ের হয়তো উপযোগী ছিল, কিন্তু বর্তমান সময়ে সেটার সুযোগ নিচ্ছেন কিছু মুসলমান পুরুষ।
মুসলমান নারীদের সংগঠন ভারতীয় মুসলিম মহিলা আন্দোলনের নেত্রী নূরজেহান সাফিয়া নিয়াজও মনে করেন যে অপব্যাখ্যা হচ্ছে কোরানের।
মিজ. নিয়াজের কথায়, “সত্যিই কোরানের অপব্যাখ্যা করা হয় বহুবিবাহের জন্য। একই সঙ্গে কোরানের বেশ কিছু অংশকে উপেক্ষাও করেন পুরুষমানুষেরা – নিজেদের সুবিধার জন্য। কোরানে বলা হয়েছে একাধিক বিয়ে করে যদি সব স্ত্রীকে সমানভাবে দেখভাল না করা যায়, তাহলে একাধিক বিয়ে যেন কেউ না করেন।"
সেই যুগের জন্য হয়তো বহুবিবাহ প্রয়োজনীয় ছিল – যুদ্ধের কারনে অনাথ হয়ে যাওয়া বা স্বামী হারা নারীদের সাহায্যের জন্যই ওই প্রথার কথা কুরানে বলা হয়েছে, কিন্তু এইসব ব্যাখ্যাগুলো তুলে ধরা হয় না, যে কেউ নিজেদের সুবিধা মতো ব্যাখ্যা করে নেন কোরানকে, মন্তব্য ভারতীয় মুসলিম মহিলা আন্দোলনের নেত্রী নূরজেহান সাফিয়া নিয়াজের।
বিচারপতি পার্দিওয়ালা তাঁর রায়ে লিখেছেন বহুবিবাহ এবং একতরফা তালাক ভারতীয় সংবিধান বিরোধী।
মুসলমান নারীদের এই বৈষম্য দূর করার জন্য রাষ্ট্রের উচিত মুসলমান ব্যক্তিগত আইনের বদলে অভিন্ন দেওয়ানী বিধি চালু করা।
                           
এই অতি স্পর্শকাতর বিষয়টি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো আগে ব্যপকভাবে প্রচার করলেও এই রায়ের প্রেক্ষিতে তা নিয়ে ফের বিতর্ক শুরু হয়েছে।
মৌলানা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলছেন, “অভিন্ন দেওয়ানী বিধি চালুর কথা বলার অর্থ আগুন নিয়ে খেলা করা।“
মুসলমান নারীদের সংগঠনগুলিও চায় না ভারতে অভিন্ন দেওয়ানী বিধি চালু হোক।
ভারতীয় মুসলিম মহিলা আন্দোলন বলছে সব ধর্মের মানুষদের মতোই মুসলমানদেরও তাদের ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী চলার স্বাধীনতা রয়েছে।
কিন্তু মুসলমান মহিলার চান তাঁদের পারিবারিক আইনকে লিখিত ও বিধিবদ্ধ করা হোক।

ক্রিকেট বিশ্বকাপের জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেবে বাংলাদেশ

 
                               
আগামী বছরের শুরুতে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য অনুর্ধ ১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কার মধ্যে দেশটির সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে টুর্নামেন্টের জন্যে সব ধরণের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল বা আইসিসি’র প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসন আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা বৈঠক করলে তাকে এই আশ্বাস দেয়া হয়।
নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কারণে অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ বাংলাদেশে হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় থাকলেও বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তারা আশাবাদী যে টুর্নামেন্টটি শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশেই হবে।
আইসিসি’র প্রধান নির্বাহী ডেভিড রিচার্ডসন বাংলাদেশ সফর করছেন অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টের নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে।
আইসিসি’র সর্বশেষ বৈঠকে বিশ্বকাপ আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশকেই ঠিক রাখা হয়েছিল, তবে বলা হয়েছিল চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে সন্তুষ্ঠ হওয়ার পর।
মি. রিচার্ডসন তাঁর বাংলাদেশ সফরে এরই মধ্যে সরকারী নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন, খতিয়ে দেখেছেন নিরাপত্তা নিয়ে বাংলাদেশের পরিকল্পনার বিভিন্ন দিক। কিন্তু বাংলাদেশে নিরাপত্তা নিয়ে আইসিসি’র মূল উদ্বেগের বিষয়টি আসলে কী?
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বা বিসিবি’র পরিচালক জালাল ইউনুস বলেন, “তাদের উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে এখানে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এর আগে অস্ট্রেলিয়া আসেনি। ওরা জানতে চাইছে আমাদের নিরাপত্তার আয়োজন সম্পর্কে। নিরাপত্তা সম্পর্কে তাদের আমরা আশ্বস্ত করেছি যে বিদেশি রাষ্ট্রীয় অতিথিদের যে পর্যায়ের নিরাপত্তা দেয়া হয় সেই পর্যায়ের নিরাপত্তা তাদের দেয়া হবে।”
আইসিসি’র প্রধান নির্বাহী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও দেখা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের কর্মকর্তারা বিবিসিকে বলেছেন যে শেখ হাসিনা অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপের জন্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
একই রকম প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, যখন মি. রিচার্ডসন তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, “তাদের আমরা বলেছি এই টুর্ণামেন্টকে প্রোটেকশন দেয়ার জন্য আমরা তৈরি। আমি বিশ্বাস করি এই খেলাটি সময়মত হবে এবং সবাই আসবে।”
২০১৪ সালে বাংলাদেশে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপ হয়েছিল, আর তখন নির্বাচনের কারণে বাংলাদেশে এক ধরণের অনিশ্চয়তার পরিবেশও বিরাজ করছিল।
তবে মার্চে শুরু হওয়া ঐ টুর্নামেন্ট কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই শেষ হয়। চলতি বছরে অবশ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বলে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল বাংলাদেশ সফরে আসেনি।
এর পরপরই বাংলাদেশে দুজন বিদেশী নাগরিক খুন হন, আর এর দায়-দায়িত্ব স্বীকার করে ইসলামিক স্টেট জঙ্গী গোষ্ঠী। তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইশফাক ইলাহী চৌধুরী মনে করেন, অনুর্ধ ১৯ টুর্নামেন্টের ক্ষেত্রে ঝুঁকি তেমন নেই ।
তিনি বলেন, “এর চেয়ে অনেক বেশি ঘটনা অন্যান্য দেশে হচ্ছে। আমাদের থ্রেট লেভেল এখনো অনেক অনেক কম। আমার মনে হয় যারা আসবে তাদের নিরাপত্তা দেয়ার ক্ষমতা সরকারের আছে।”
অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ জানুয়ারির ২২ তারিখে শুরু হয়ে ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখে শেষ হওয়ার কথা। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কক্সবাজার হলো বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোর ভেন্যু। bbc

তাইওয়ান কি চীনের অংশ নাকি স্বাধীন কোন দেশ

 
                                
তাইওয়ান কি চীনের অংশ ? নাকি চীন থেকে আলাদা?
এ নিয়ে সংশয় আছে অনেকের মধ্যে। এমনকি তাইওয়ানকে কি নামে ডাকা হবে তা নিয়েও।
চীন আর তাইওয়ানের নেতারা দীর্ঘ ছয় দশক পর এই প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসার পর এ সব প্রশ্ন আবার সামনে এসেছে।
খুব সহজ ভাবে বললে, চীন মনে করে তাইওয়ান তাদের দেশেরই অংশ। এটি চীন থেকে বেরিয়ে যাওয়া একটি প্রদেশ। যেটি ভবিষ্যতে কোন একদিন চীনের সঙ্গে বিলুপ্ত হবে।
তাইওয়ান নিজেকে কিভাবে দেখে সেটার উত্তর অবশ্য এতটা সরল নয়। সেখানে কোন কোন দল এবং জনগণের একটি অংশ তাইওয়ানকে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে দেখতে চান। কেউ কেউ চীনের সঙ্গে একীভূত হওয়ার পক্ষে।
আর জনগণের একটা বিরাট অংশ এখনো মনস্থির করে উঠতে পারেননি। তারা বরং তাইওয়ান এখন যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থাতেই থেকে যাওয়ার পক্ষে। অর্থাৎ চীনেরও অংশ নয়, আবার চীন থেকে আলাদাও নয়।
বিচ্ছিন্নতার ইতিহাস
                           
চীনের মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন তাইওয়ান মূলত দক্ষিণ চীন সমূদ্রের একটি দ্বীপ।
এক সময় ওলন্দাজ কলোনি ছিল। তবে ১৬৮৩ থেকে ১৮৯৫ সাল পর্যন্ত চীনের রাজারাই শাসন করেছে তাইওয়ান। এরপর জাপানীরা দখল করেছে এই দ্বীপ। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তাইওয়ানের নিয়ন্ত্রণ তুলে দেয়া হয় চিয়াং কাইশেকের নেতৃত্বাধীন চীনা সরকারের হাতে তুলে দেয়া হয় দ্বীপটি।
কিন্তু চীনে মাও জেদং এর নেতৃত্বে কমিউনিষ্ট বাহিনির সঙ্গে যুদ্ধে হারতে থাকে চিয়াং কাইশেকের সরকার। চীনের বেশিরভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণ হারায় তারা। এরপর চিয়াং কাইশেক আর তার কুওমিনটাং সরকারের লোকজন তখন পালিয়ে যায় তাইওয়ানে। সেখানে তারা ‘রিপাবলিক অব চায়না’ নামে এক সরকার গঠন করে। নিজেদেরকে সমগ্র চীনের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার বলেও দাবি করে তারা।
কোন একদিন কমিউনিষ্টদের কাছ থেকে আবার পুরো চীনের নিয়ন্ত্রণ তারা নেবে, এমনটাই ছিল তাদের পরিকল্পনা।
বহুদিন পর্যন্ত জাতিসংঘ থেকে বিশ্বের অনেক দেশ চিয়াং কাইশেকের সরকারকেই চীনের সত্যিকারের সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আজ অনেকের কাছে শুনতে অবাক লাগতে পারে, ১৯৭১ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে কিন্তু তাইওয়ানের সরকারই চীনের প্রতিনিধিত্ব করেছে।
                 চিয়াং কাইশেক                
কিন্তু ১৯৭১ সালে জাতিসংঘ বেইজিং এর সরকারকেই চীনের আসল সরকার বলে স্বীকৃতি দিল। তারপর থেকে একে একে বিশ্বের প্রায় সব দেশই বেইজিং এর পক্ষ নিল, এবং তাইওয়ানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি কমতে থাকলো।
১৯৮০র দশক পর্যন্ত চীন আর তাইওয়ানের মধ্যে চলেছে তীব্র বাকযুদ্ধ। কিন্তু এরপর সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে শুরু করে। ‘এক দেশ, দুই পদ্ধতি’ নামে চীন এক প্রস্তাব দেয়। যেখানে তাইওয়ান মূল চীনে বিলুপ্ত হবে, কিন্তু তাদের স্বায়ত্বশাসন দেয়া হবে। কিন্তু তাইওয়ান সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। অবশ্য এর মধ্যে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকেনি।
২০০০ সালে তাইওয়ানের নুতন প্রেসিডেন্ট হন চেন শুই বিয়ান। ২০০৪ সালে তিনি ঘোষণা দেন যে তাইওয়ান চীন থেকে আলাদা হয়ে সম্পূর্ণ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চায়।
তার এই অবস্থান চীনকে ভীষণ রুষ্ট করে। ২০০৫ সালে চীন তড়িঘড়ি করে এক আইন পাশ করে। যাতে বলা হয়, তাইওয়ান যদি চীন থেকে আলাদা হওয়ার চেষ্টা করে, সেটা ঠেকাতে চীন প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করবে।
তাইওয়ানের অর্থনীতি এখন চীনের ওপর এতটাই নির্ভরশীল যে জনসংখ্যার একটা বড় অংশ এখন আর স্বাধীনতাকে কোন বাস্তবসম্মত বিকল্প বলে ভাবে না।
তাইওয়ানের বড় দুই দলের মধ্যে ‘ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি’ এখনো অবশ্য স্বাধীনতার পক্ষে। অন্যদিকে কুওমিনটাং পার্টি (কেএমটি) চায় মূল চীনের সঙ্গে একত্রীকরণ। bbc

মিশরে বিমান চলাচল স্থগিত করেছে রাশিয়া

 
                     ২২৪জন যাত্রী নিয়ে মিশরের সিনাই উপত্যকায় ভূপাতিত হয় রাশিয়ার বিমানটি          
       
মিশরের সিনাইয়ে দুই শতাধিক যাত্রী নিয়ে রাশিয়ার একটি বিমান ভূপাতিত হওয়ার ঘটনার কারণ পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত সেদেশে সব ধরণের বিমান চলাচল স্থগিত করেছে রাশিয়া।
দেশটি থেকে পঞ্চাশ হাজারের বেশি রাশিয়ান পর্যটককে ফিরিয়ে আনারও নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
কার্গো হোল্ডে থাকা বোমার কারণেই বিমানটি ভূপাতিত হয়েছে, এরকম তথ্য প্রকাশের পর, বিমান চলাচল স্থগিতের এই সিদ্ধান্ত নিল রাশিয়া।
অতিরিক্ত নিরাপত্তার সঙ্গে এর মধ্যেই রাশিয়ার পর্যটকদের ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়েছে।
এর আগে নিজেদের নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নিতে শুরু করে ব্রিটেন।
                 পশ্চিমা অনেক দেশ মিশর থেকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে                 
কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের আলাপে আড়িপাতার পর, ব্রিটেন ও আমেরিকার গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন যে, উড্ডয়নের আগে বিমানটির হোল্ডে হয়তো বোমা রাখা হয়েছিল।
বিমানটি রেকর্ডারে এ ধরণের তথ্য পাওয়ার আভাস দিয়েছে ফ্রান্স। গত শনিবার ২২৪জন যাত্রী নিয়ে মিশরের সিনাই উপত্যকায় বিধ্বস্ত হয় বিমানটি।
যদিও কি কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে, তা এখনো পুরোপুরি পরিষ্কার নয়, তবে এর মধ্যেই অনেক দেশ মিশর ভ্রমণে নাগরিকদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
এর আগে ওই এলাকায় বিমান চলাচল বাতিল করে ব্রিটেন।
মিশরের সঙ্গে বিমান চলাচলে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কড়াকড়ি বাড়িয়েছে আমেরিকাসহ অনেক পশ্চিমা দেশ। bbc