দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে কুড়িগ্রামের সাবেক ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার বাসিন্দাদের রাষ্ট্রীয় পরিচয় প্রাপ্তিকে আলোর পথের যাত্রা বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আপনারা ফুলকুঁড়ি বা একগুচ্ছ নব প্রস্ফুটিত ফুলের মতো। দীর্ঘ ৬৮ বছর প্রতীক্ষার পর আপনারা একটি দেশ পেয়েছেন। আপনারা দেশের নাগরিক, সেভাবেই নিজেদের বিবেচনা করবেন।’
আজ বৃহস্পতিবার দাসিয়ারছড়া সফরে এসে স্থানীয় এক সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার এই সাবেক ছিটমহলটির নতুন নাম ‘মুজিব-ইন্দিরা দাসিয়ারছড়া ইউনিয়ন’। খবর বাসসের।
ঘড়ির কাঁটায় তখন ১১টা। স্থানীয় জনতার বিপুল হর্ষধ্বনির মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা ফুলবাড়ি থেকে সড়ক পথে দাসিয়ারছড়া সুধী সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছান। আর এর ঠিক চার মিনিট পর বৈদ্যুতিক সংযোগ সুইচে চাপ দিয়ে সাবেক এই ছিটমহলের প্রায় ৭০০ পরিবারের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। তিনি স্থানীয় পাঁচটি পরিবারের সদস্যদের মাঝে তাৎক্ষণিক বৈদ্যুতিক সুবিধা প্রাপ্তির জন্য সৌরবিদ্যুৎ প্যানেলও বিতরণ করেন।
দাসিয়ারছড়ার কালিরহাট বালিকা বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর আগেও আপনাদের মাঝে আসার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু আসতে পারিনি। কেন সেটা আপনারা ভালোই জানেন। কোনো ঠিকানা আপনাদের ছিল না।’
শেখ হাসিনা এখানকার বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আজকে আপনারা মূল ভূখণ্ডের বাসিন্দা। আপনারা ভুলেও কখনো আর নিজেদের ছিটবাসী বলে চিন্তা করবেন না। আপনারা এই দেশের নাগরিক। সেভাবেই নিজেদের বিবেচনা করবেন।’ তিনি বলেন, আপনারা বাংলাদেশের সন্তান, বাংলাদেশের নাগরিক, বাংলাদেশের আপনজন এবং আজকে আপনাদের মাঝে আসতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।
ছিটমহলবাসীরা ৬৮ বছর ‘মানবেতর জীবন যাপন’ করেছেন বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে দাসিয়ারছড়ায় নেওয়া সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের ব্যাপারে জানান। তিনি বলেন, দাসিয়ারছড়ায় স্কুল, সড়ক সংস্কার, বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ চলছে। রাস্তা সংস্কারের কাজও শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, ফুলবাড়ীতে নেমে ১৯ কিলোমিটার রাস্তা তিনি গাড়িতে এসেছেন। কারণ তিনি আসবেন জানলে ওই রাস্তা সংস্কার হবে।
prothom alo
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন