পশ্চিমবঙ্গে কলকাতার উপকণ্ঠে কামদুনি গ্রামে এক কলেজ ছাত্রীকে গণধর্ষণ করে খুনের দায়ে তিনজনকে আজ ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে।
দোষী সাব্যস্ত হওয়া বাকি তিনজনকে আমৃত্যু কারাবাসের আদেশ দিয়েছে কলকাতা নগর দায়রা আদালত।
বৃহস্পতিবার এই ছয়জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক সঞ্চিতা সরকার।
২০১৩ সালের ওই নৃশংস ঘটনায় মোট নয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
একজন অভিযুক্ত বন্দীদশাতেই মারা যান, অন্য দুজনকে প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস করে দেয় আদালত।
অভিযোগ উঠছে শাসক দলের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় খালাস পাওয়া দুজনের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ যোগাড় করেন নি তদন্তকারীরা।
এদের খালাসের আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আপীল করা হবে।
দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে দুদিন ধরে সাজা নিয়ে সওয়াল জবাব চলে সরকার ও দোষীদের আইনজীবীদের মধ্যে।
তারপরেই আজ বিকেলে সাজা ঘোষণা করা হয়।
সইফুল আলি, আনসার আলি আর আমিন আলি – এই তিনজনের ফাঁসির আদেশ হয়েছে।
আমিনুর ইসলাম, ভোলা নস্কর, এমানুল ইসলাম – এদের আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
২০১৩ সালের ৭ই জুন দুপুরে কলেজ থেকে হেঁটে গ্রামের বাড়ির দিকে যাওয়ার সময়েই ওই ছাত্রীকে একটি পরিত্যক্ত কারখানায় নিয়ে যায় দোষীরা।
সেখানে তাকে গণধর্ষণ করে প্রমাণ লোপাটের জন্য পা চিরে দিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনাকে বিরলতম আখ্যা দিয়ে বিচারক তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আজ।
দোষীদের সর্বোচ্চ সাজার দাবিতে গত আড়াই বছর ধরেই আন্দোলন করে আসছেন ওই ছাত্রীর গ্রামের দুই বান্ধবী আর তার ছোটবেলার স্কুলের শিক্ষক।
দোষীদের শাস্তির দাবিতে রাষ্ট্রপতির কাছেও গিয়েছিলেন তারা।
ঘটনার দশ দিন পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী কামদুনি গ্রামে গেলে নির্যাতিতার ওই দুই বন্ধু যখন তাকে প্রশ্ন করেন, তখনই মিজ. ব্যানার্জী তাদের মাওবাদী আখ্যা দিয়েছিলেন।
তবে তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্ব গ্রামবাসীদের ওই প্রতিবাদ আন্দোলনকে অনেকটাই স্তিমিত করে দিতে সক্ষম হয়।
নির্যাতিতার পরিবারকে গ্রাম থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, তার ভাইকে সরকারি চাকরি দেওয়া হয়।
আন্দোলন থেকে সরে গেলেও নির্যাতিতার পরিবার দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তিই চেয়েছিল।