রবিবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৫

আ’লীগ নেতা এমপি লিটনকে গ্রেফতার দাবিতে এলাকায় পোস্টার

                                            
 
হাসপাতালের বেডে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে গুলীবিদ্ধ সৌরভ
 
দুই পায়ে এখনো প্রচন্ড ব্যথা। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে শিশু শাহাদাত হোসেন ওরফে সৌরভ। কখনো শোয়া থেকে উঠে মায়ের বুকে ঠাঁই নিয়ে ব্যথা প্রশমনের চেষ্টা করছে সে। আবার কুঁকড়ে উঠে শুয়ে পড়ছে বিছানায়। তার পায়ের নিচে বালিশ দিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে যাচ্ছেন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মা।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এভাবেই দিন কাটছে গুলীবিদ্ধ শিশু শাহাদাতের। পায়ে ব্যথার কারণে হাঁটতে পারছে না সে। ব্যথা আরও কয়েকদিন থাকবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এদিকে শাহাদাতকে গুলী করার ঘটনায় করা মামলার আসামী গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম  লিটনকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তাকে গ্রেফতারের দাবিতে গতকাল গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শহরের বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। পোস্টারের নিচে লেখা, ‘প্রচারে সুন্দরগঞ্জ এলাকাবাসী’। অন্যদিকে গতকাল সুন্দরগঞ্জের আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা দলীয় এক সভায় সংসদ সদস্য মঞ্জুরুলের সংসদ সদস্য পদ বাতিল করার ও তাকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি করেন।
২ অক্টোবর সকালে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের বাড়ি থেকে হাঁটতে বেরিয়েছিল স্থানীয় স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র শাহাদাত। তখন সংসদ সদস্য মঞ্জুরুলের ছোড়া গুলীতে শাহাদাত গুলীবিদ্ধ হয় বলে তার পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন। ওইদিন শাহাদাতকে রংপুর মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। পরের দিন শনিবার রাতে শাহাদাতের বাবা সাজু মিয়া সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। শাহাদাতের মা সেলিনা বেগম  বলেন, যন্ত্রণায় রাতে ঘুমাতে পারে না সে। খেতেও পারছে না। চিকিৎসকরা তাকে হাঁটানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু হাঁটতে গেলে আরও ব্যথা হয়।
রংপুর মেডিকেলের শিশু সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক বাবুল কুমার সাহা বলেন, শাহাদাতের বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচে মাংসপেশী ভেদ করে গুলী অন্যদিক দিয়ে বেরিয়ে গেছে। গুলীতে ডান পায়ের হাঁটুর নিচে ছিলে গেছে। ক্ষত স্থানে অস্ত্রোপচার হয়েছে। এসব কারণে তার পায়ে এখনো ব্যথা আছে। সেরে উঠতে সময় লাগবে।
এদিকে শাহাদাতের চিকিৎসা করতে গিয়ে পরিবারের আর্থিক সংকটের খবর গণমাধ্যমে আসার পর অনেকেই তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। পাঁচ ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা শাহাদাতের পরিবারকে ৪৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। হাসপাতালের সমাজসেবা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও ওষুধ দেয়া হচ্ছে। শাহাদাতের বাবা সাজু মিয়া ‘যেভাবে মানুষজন খোঁজখবর নিচ্ছে, তাতে আমরা সাহস পাচ্ছি।’
এদিকে সুন্দরগঞ্জ পৌরসভা মিলনায়তনে এক সভায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা মঞ্জুরুলের সংসদ সদস্য পদ বাতিল করার ও তাকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি করেন। নেতারা বলেন, সংসদ সদস্যের কর্মকা-ের দায়িত্ব দল নেবে না। সুন্দরগঞ্জের পৌর মেয়র আব্দুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেন প্রামাণিক, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসরাইল হোসেন  বলেন, ‘সংসদ সদস্যকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছি। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
 
the daily sangram

মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের



 
 আন্তর্জাতিক আইন শুধু ‘সবচেয়ে মারাত্মক অপরাধের’ ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের কথা বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন। তিনি বলেছেন, এর অর্থ দাঁড়ায়, কেবল স্বেচ্ছাখুনের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া  যেতে পারে।
একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, মৃত্যুদণ্ড মাদককংক্রান্ত অপরাধ কমাতে কোনো ভূমিকা রাখে না।
অন্যদিকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কাউন্সিল অব ইউরোপ। তারা বলেছে, মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে অপরাধ নিরুৎসাহিত করার উল্লেখযোগ্য প্রভাবের কোনো প্রমাণ নেই।
১০ অক্টোবর আন্তর্জাতিক মৃত্যুদণ্ড বিরোধী দিবস সামনে রেখে আমেরিকায় দেয়া এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
একইদিন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতিবিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি ফেডেরিকা মোঘারিন ও কাউন্সিল অব ইউরোপের মহাসচিব থোরবোর্ন জাগল্যান্ড এক যৌথ বিবৃতি দেন।
বান কি মুন তার বিবৃতিতে বলেন, সাত দশক আগে মাত্র ১৪টি দেশ মৃত্যুদণ্ডাদেশ বিলুপ্ত করে। বর্তমানে  ৮২ শতাংশ দেশ আইন করে মৃত্যুদণ্ডাদেশ বাতিল করেছে কিংবা মৃত্যুদণ্ডা না দেয়ার চর্চা করছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলো বরাবরই বলে আসছে, মৃত্যুদণ্ড মাদকসংক্রান্ত অপরাধ কমাতে পারছে না। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মাদক নিয়ন্ত্রণ বোর্ডসহ অন্য মাদকবিরোধী সংস্থাগুলো এ সংক্রান্ত অপরাধের ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডাদেশ বাতিলের তাগিদ দিয়েছে।
বান কি মুন বলেন, মৃত্যুদণ্ড মাদকসংক্রান্ত অপরাধ কমায় না কিংবা এটি লোকজনকে মাদকের অপব্যবহার থেকে বিরতও রাখতে পারেনি। মাদক নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি বিচার ব্যবস্থার সংস্কার, গণস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এর প্রতিরোধ ও চিকিৎসাপ্রাপ্তির সুবিধার মধ্যে নিহিত।
তিনি মৃত্যুদণ্ডের বিরেুদ্ধে অবস্থান নিতে সব দেশের প্রতি আহ্বান জানান।
অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কাউন্সিল অব ইউরোপ তাদের বিবৃতিতে বলেছে, মৃত্যুদণ্ড একটি অমানবিক ও অবমাননাকর শাস্তি। এতে অপরাধ নিরুৎসাহিত করার উল্লেখযোগ্য প্রভাবের কোনো প্রমাণ নেই। আর এ ক্ষেত্রে বিচারিক ভুলত্রুটি পাল্টানোর কোনো সুযোগ থাকে না। 
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ইইউ সদস্যরাষ্ট্রগুলোতে ১৮ বছর ধরে কোনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়নি। মৃত্যুদণ্ড রদ করার লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবাধিকার বিষয়ক চুক্তির বিধান অনুমোদন দিতে ইইউভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
বেলারুশে অব্যাহতভাবে মৃত্যুদণ্ডের ব্যবহার নিয়ে নিন্দা জানিয়ে দেশটির কর্তৃপক্ষকে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি লঘু করার জোরালো আহ্বান জানানো হয়। মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি রহিত করার লক্ষ্যে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে অবিলম্বে আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করার আহ্বান জানানো হয় দেশটির প্রতি।
যেসব দেশগুলোতে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তির বিধান রয়েছে এমন কয়েকটি দেশে গত বছর মাদক সংক্রান্ত মামলায় কয়েকটি মৃত্যুদণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কাউন্সিল অব ইউরোপ ও ইউরোপিয় ইউনিয়ন। এসব ক্ষেত্রে অপ্রাপ্তবয়স্কদের মৃত্যুদণ্ডের ঘটনাগুলোতে বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন তারা যা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। ২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে গৃহীত মৃত্যুদণ্ডের ব্যবহার স্থগিতকরণ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে কাউন্সির অব ইউরোপ ও ইইউ।

সংগ্রাম ডেস্ক:

চীন ব্যতীত অন্যসব পরাশক্তি সিরিয়া যুদ্ধে সক্রিয়



 
 ছোট্ট একটি দেশ সিরিয়া। আয়তন ১ লাখ ৮৫ হাজার ১৮০ বর্গকিলোমিটার। অথচ এখন এ দেশটির ওপর চক্কর দিচ্ছে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর জঙ্গিবিমানগুলো। যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের জঙ্গিবিমানগুলো সেখানে হামলা চালাচ্ছে বহুদিন ধরেই। এবার হামলায় অংশ নিচ্ছে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান। এ এক বিরল ঘটনা- দেশটির আকাশসীমায় এখন গর্জে উঠছে চীন ব্যতীত বর্তমান বিশ্বের সামরিক শক্তিধর দেশগুলোর জঙ্গিবিমানগুলো।
ফলে বাগদাদের এখনকার দৃশ্যাবলী নাটকের মতোই মনে হবে। যেমন গত বুধবার সকাল ৯টায় একজন রাশিয়ান জেনারেল মার্কিন দূতাবাসে এসে হাজির। তিনি এসেই আমেরিকাকে শাসিয়ে যান এই বলে যে- সিরিয়ার আকাশ থেকে মার্কিন বিমানগুলো সরিয়ে নিতে হবে। কারণ এখন রাশিয়ার বিমান সিরিয়ায় বোমা হামলা শুরু করবে। তবে আমেরিকা তো আর কারো হুমকিতে কান দেয়ার পাত্র নয়। সিরিয়ার ছোট আকাশসীমায় দ্রুতগতিতে উড়তে থাকা আমেরিকার বিমান ক্রুদের নিরাপত্তা শঙ্কা থাকা সত্ত্বেও কর্মকর্তারা রাশিয়ার হুমকি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
আমেরিকান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার আইএসকে লক্ষ্য করে কমপক্ষে একটি হামলা চালানো হয় এবং এ হামলার স্থান ও সময় কিছুই রাশিয়াকে জানানো হয়নি। আমেরিকার প্রতিরক্ষা সচিব অ্যাশ কার্টার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘যৌথবাহিনী আজকের মতোই ইরাক ও সিরিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে যাবে।’ বস্তুত চীন ব্যতীত অন্যসব পরাশক্তিই এখন সিরিয়ার যুদ্ধে সক্রিয়। ফলে সিরিয়ায় ৪ বছরব্যাপী চলমান গৃহযুদ্ধ এক নতুন রূপ ধারণ করেছে।
সাম্প্রতিককালে সিরিয়ার আকাশ এমনই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে যে একপক্ষ এসে আরেকপক্ষের সাথে আলোচনা করে ঠিক করে কে কখন সিরিয়ার আকাশে উড়তে পারবে এবং বোমাবর্ষণ করতে পারবে। আমেরিকা, বৃটেন, ফ্রান্সের পর সর্বশেষ রাশিয়া সিরিয়া যুদ্ধে যোগ দেয়ার পর থেকে সিরিয়ার আকাশে হরদম যুদ্ধ বিমানের আনাগোনা। মুহুর্মুহু বোমাবর্ষণে প্রকম্পিত পুরো সিরিয়া। নির্বিচারে মারা পড়ছে আদম সন্তানেরা।
সকালে আমেরিকার বিমান সিরিয়ার আকাশ দখল করে বোমা হামলা করলো তো বিকালে রাশিয়ার যুদ্ধবিমানের দখলে সিরিয়ার আকাশ। আবার রাতে হয়তো স্বমহিমায় ফরাসি আর বৃটিশ জঙ্গিবিমানগুলো। সিরিয়ার মাটিতে এখন অহরহই নিক্ষিপ্ত হচ্ছে ভয়ঙ্কর সব মরণাস্ত্র। সারা বিশ্বেরও নজর তাই সিরিয়ার দিকে। রাশিয়া যোগ দেয়ায় যুদ্ধের গতি কোন দিকে মোড় নেয় এখন সেটাই দেখার অপেক্ষায় সবাই।

the daily sangram

উদ্বিগ্ন আঙ্কারা, তুরস্ক থেকে সামরিক স্থাপনা সরাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র



 
তুরস্কের আকাশ সীমা অব্যাহতভাবে লংঘনের প্রেক্ষিতে আঙ্কারার পক্ষ থেকে দেশটিতে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারে ন্যাটোর প্রতি আহবান জানানোর একদিন পরই যুক্তরাষ্ট্র তুরস্ক থেকে তাদের সামরিক সরঞ্জাম প্রত্যাহার শুরু করেছে।
গত শুক্রবার থেকে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র তুরস্কে স্থাপিত তাদের সামরিক স্থাপনাসমূহ হালনাগাদ এবং সিরিয়া থেকে এসব স্থাপনা কতটা হুমকির ঝুঁকিতে রয়েছে সে মাত্রা নির্ণয়ের জন্য সরিয়ে নেয়া শুরু করে।
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের কাছে রাশিয়ার জঙ্গিবিমানের তুরস্কের আকাশসীমা লংঘনের ও বিদ্রোহীদের ওপর বিমান হামলার মধ্যে কৌশলগত কারনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক স্থাপনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত তুরস্কের জন্য বাস্তবিকই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পর্যাপ্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় তুরস্ককে তার সীমান্তবর্তী এলাকা সুরক্ষিত রাখতে কেবল ইউরোপীয় সামরিক জোট ন্যাটোর ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে।
এর আগে ইরাকে সাদ্দাম হোসাইনের আমলে প্রথমবারের মত তুরস্ক নিজ ভূখন্ডে তার সহযোগীদের সামরিক স্থাপনা মোতায়েনের আহবান জানায়। আর এবার সিরিয়ায় আসাদ সরকারের হুমকি মোকাবেলায় দ্বিতীয়বারের মত সহযোগীদের সামরিক স্থাপনা মোতায়েনের আহবান জানালো।
এদিকে তুরস্কের নিরাপত্তায় সবকিছু করতে প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছে ইউরোপের সামরিক জোট ন্যাটো। রাশিয়ার উসকানিমূলক আচরণের বিপরীতে আঙ্কারাকে সুরক্ষা করতে প্রয়োজনে সেনা পাঠাবে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
রুশ জঙ্গিবিমান তুরস্কের আকাশসীমা লংঘনের পর ন্যাটো এ কথা জানায়।
অন্যদিকে রাশিয়া সিরিয়ায় বিমান হামলা চালিয়ে যুদ্ধের তীব্রতা বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করছে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদেশগুলো।
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের কাছে রাশিয়ার জঙ্গিবিমানের তুরস্কের আকাশসীমা লংঘনের ঘটনাটি নিয়ে তুরস্ক ও মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর কর্মকর্তারা যখন উদ্বিগ্ন ঠিক তখনই যুক্তরাষ্ট্র সামরিক স্থাপনা সরিয়ে নেয়া শুরু করলো। 
গত বৃহস্পতিবার ন্যাটোর মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ সাংবাদিকদের বলেন, ন্যাটো যে কোনো হুমকি থেকে তুরস্কসহ সব মিত্রদেশকেই সুরক্ষা দিতে সক্ষম।
রাশিয়ার বিমান এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলাই উদ্বেগের কারণ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তার মতে, সিরিয়ায় রাশিয়ার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন খুব অসহযোগিতামূলক। মস্কোকে অবশ্যই সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে সমর্থন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের মিত্র রাশিয়া সপ্তাহখানেক আগে আইএসের ওপর হামলা শুরু করে। এরই মধ্যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, তারা আসাদবিরোধী পক্ষের ওপর হামলা চালাচ্ছে, যারা সন্ত্রাসী নয়। তবে এ অভিযোগ নাকচ করেছে মস্কো।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, পশ্চিমা দেশগুলো সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘ফ্রি সিরিয়ান আর্মি’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে আইএস ও অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য।

the daily sangram

যুব বিশ্বকাপ নিয়েও শঙ্কা!

 
বাংলাদেশের ক্রিকেটে একটার পর একটা দুঃসংবাদ গত কদিনে। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশ সফর স্থগিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। দক্ষিণ আফ্রিকাও পাঠায়নি তাদের মেয়েদের দল। এখন প্রশ্ন উঠেছে আগামী বছর জানুয়ারিতে বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় যুব বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়েও।
ভারতের দৈনিক মুম্বাই মিরর এ নিয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে গতকাল। পত্রিকাটি জানিয়েছে, নিরাপত্তাজনিত সমস্যার কারণে হুমকির মধ্যেই পড়ে যেতে পারে বাংলাদেশের যুববিশ্বকাপ আয়োজন।
মুম্বাই মিরর এও জানিয়েছে, দুবাইয়ে আইসিসির পরিচালনা পর্ষদের সভায় নীতিনির্ধারকেরা নিরাপত্তার হুমকির কারণে বাংলাদেশ থেকে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ সরিয়ে নেওয়া নিয়ে আলোচনা তুলতে পারেন। সম্ভাব্য বিকল্প ভেন্যু হিসেবে আসতে পারে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নাম। অবশ্য এ ক্ষেত্রে বিসিসিআইয়ের কোনো কর্মকর্তার মন্তব্য জানাতে পারেনি পত্রিকাটি।
আগামী বছরের ২৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়ার কথা ১৬ দলের এই টুর্নামেন্ট।

প্রথম আলো

কূটনৈতিক এলাকায় বিজিবি নেমেছে

 
গুলশানের জাতিসংঘ সড়ক থেকে ছবিটি আজ রাতে তোলা। ছবি: আশরাফুল আলম
 
পাঁচ দিনের ব্যবধানে দুই বিদেশি নাগরিক হত্যার পর রাজধানীর কূটনৈতিক এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করতে বিজিবি নামানো হয়েছে। এর আগে গতকাল শুক্রবার নিরাপত্তা বাড়াতে বিশেষ বাহিনী সোয়াত নামানো হয়। এরা গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে টহল দেবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও স্বরাষ্ট্রসচিব মোজাম্মেল হক প্রথম অলোকে বলেছেন, গুলশান ও বারিধারার বিভিন্ন সড়কে নিরাপত্তার জন্য নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সোয়াত ও বিজিবির টহল দেবে। তারা মূলত পুলিশকে সহায়তা করবে। এ ছাড়া যতভাবে নিরাপত্তা দেওয়া প্রয়োজন বিদেশিদের দেওয়া হবে।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিজিবি ও সোয়াত ছাড়াও কূটনৈতিক পাড়ায় বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারা।কূটনৈতিক এলাকায় বসবাসরত মানুষের নিরাপত্তার জন্য এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।প্রসঙ্গত গতকাল বাংলাদেশে পশ্চিমা নাগরিকদের ওপর আবার হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে এ দেশে অবস্থানকারী পশ্চিমা নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়েছে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর। ব্রিটিশ ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিসের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ সম্পর্কে সর্বশেষ সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ‘সন্ত্রাসবাদের বড় ধরনের হুমকি রয়েছে এখানে। পশ্চিমাদের ওপর নতুন করে নির্বিচারে হামলা হতে পারে।’ এরপরই কূটনৈতিক এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হলো।

প্রথম আলো

খুলনা মেতেছিল নৌকাবাইচের আনন্দে

 
ছবি: সাদ্দাম হোসেন, খুলনাদলনেতার বাঁশি-কাঁসা-করতালের তালে তালে মাল্লাদের বইঠা ফেলা ও ‘হেইও! হেইও!’ শব্দ ছাপিয়ে ভেসে আসছিল রূপসা নদীর দুই পাড়ের জনতার হর্ষধ্বনি। রূপসা নদীর আকাশ কালো করে এগিয়ে যাচ্ছিল শত শত ইঞ্জিন চালিত ট্রলার। সেসব ট্রলারের দর্শনার্থীরাও মেতে উঠেছিল আনন্দ-উল্লাসে।
ছবি: সাদ্দাম হোসেন, খুলনাছবি: সাদ্দাম হোসেন, খুলনানদীর দুই পাড়ের মানুষের ঢল আর নদীর মধ্যে চলে ট্রলারে দর্শনার্থীদের বিনোদন দিয়ে ছুটে চলেছে নৌকা বাইচের নৌকাগুলো। সব মিলিয়ে আজ শনিবার ছিল খুলনাবাসীর জন্য অন্য রকম এক আনন্দ উদ্‌যাপনের দিন।
ছবি: সাদ্দাম হোসেন, খুলনাছবি: সাদ্দাম হোসেন, খুলনাকয়েক বছরের মতো বাইচ শুরুর আগেই রূপসা সেতুসহ নদীর দুই তীর মানুষে ভরে যায়। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এই ভিড় বাড়তে থাকে। জায়গা সংকুলান না হওয়ায় ও আরও ভালোভাবে উপভোগের জন্য হাজারো দর্শনার্থী কয়েক শ ইঞ্জিনচালিত ট্রলার ও বড় কার্গোতে অবস্থান নেন। বেশির ভাগ ট্রলারে উচ্চ শব্দে গান বাজানোর পাশাপাশি চলছিল নানান রকম নাচ। নদীর পাড়ের বড় বড় সরকারি বেসরকারি ভবনে চড়ে এমনকি নদীর পাশে বড় বিলবোর্ডের ওপর চড়েও দর্শনার্থীরা উপভোগ করেছেন নৌকা বাইচ।
ছবি: সাদ্দাম হোসেন, খুলনাছবি: সাদ্দাম হোসেন, খুলনাবেলা দুইটার দিকে রূপসা নদীর এক নম্বর কাস্টম ঘাট থেকে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে খান জাহান আলী সেতু এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। তিনবার করে বাইচালরা তাঁদের প্রদর্শনী দেখান। বাইচের আগে দুপুরে কাস্টম ঘাটে প্রধান অতিথি হিসেবে বাইচের উদ্বোধন করেন খুলনা জেলা পরিষদ প্রশাসক হারুনুর রশিদ।

ছবি: সাদ্দাম হোসেন, খুলনাছবি: সাদ্দাম হোসেন, খুলনাএর আগে বাইচ উপলক্ষে সকাল ১১টায় নগরের ময়লাপোতা মোড় থেকে এক শোভাযাত্রা বের করা হয়।
ছবি: সাদ্দাম হোসেন, খুলনাছবি: সাদ্দাম হোসেন, খুলনাএবারের প্রতিযোগিতায় বড় নৌকা গ্রুপে অংশ নিয়েছে ১৮টি বড় নৌকা এবং ছোট নৌকা গ্রুপে অংশ নিয়েছে আটটি নৌকা।

ছবি: সাদ্দাম হোসেন, খুলনাছবি: সাদ্দাম হোসেন, খুলনাবড় নৌকা গ্রুপের নৌকাবাইচে প্রথম হয়েছে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার মা গঙ্গা, দ্বিতীয় হয়েছে তেরখাদা উপজেলার ময়ূরপঙ্খী ও তৃতীয় হয়েছে একই উপজেলার ভাই ভাই জলপরি। প্রথমকে এক লাখ টাকা, দ্বিতীয়কে ৬০ হাজার ও তৃতীয়কে ৩০ হাজার টাকা পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয়।

ছবি: সাদ্দাম হোসেন, খুলনাছবি: সাদ্দাম হোসেন, খুলনাছোট নৌকা গ্রুপে প্রথম হয়েছে খুলনার কয়রা উপজেলার সোনার তরী, দ্বিতীয় হয়েছে একই উপজেলার ভাই ভাই টাইগার ও তৃতীয় হয়েছে সাতক্ষীরার জয় মা কালি। এই গ্রুপের প্রথমকে ৫০ হাজার, দ্বিতীয়কে ৩০ হাজার টাকাও তৃতীয়কে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
ছবি: সাদ্দাম হোসেন, খুলনাছবি: সাদ্দাম হোসেন, খুলনাগ্রামীণফোনের আর্থিক সহায়তায় এবং খুলনা নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এই বাইচের আয়োজনে করে।
ছবি: সাদ্দাম হোসেন, খুলনাছবি: সাদ্দাম হোসেন, খুলনা
ছবি: সাদ্দাম হোসেন, খুলনা

উত্তম মণ্ডল,  প্রথম আলো

সিরিয়ায় পুতিনের অন্তিম খেলা

 
ভ্লাদিমির পুতিন।ভ্লাদিমির পুতিন।১০ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম পুতিন এলেন জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে। থাকলেন সাত ঘণ্টা। সিরিয়ায় পশ্চিমারা কী ভুল করেছে, সেটা লেকচার দিয়ে দুনিয়ার সামনে দেখালেন। চিনিয়ে দিলেন, আইএস আসলে মার্কিনি ঘাতক-পুতুল। হুমকিও দিলেন, টুইন টাওয়ার ধ্বংসের ‘আসল’ স্যাটেলাইট ভিডিও দেখিয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জারিজুরি ফাঁস করে দেবেন। সাধের ‘আইএস’ ধ্বংসের দর্শক হওয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকল না পেন্টাগনের জেনারেলদের। ইসরায়েল আর কী করবে? আরও কিছু ফিলিস্তিনি বাড়ি ভাঙল, কিছু প্রতিবাদী হত্যা করল। জবাবে আরেকটা ইন্তিফাদার ঘোষণা এল গাজা থেকে।
ওবামার সামনে রইল কেবল আলোচনার টেবিল। পুতিন তাঁকে বলিয়ে ছাড়লেন, আইএস দমনে মার্কিনিরা রাশিয়ার সঙ্গে আছে। আর ইউরোপ? নিজেদের তৈরি করা ভূমধ্যসাগরীয় শরণার্থীদের ধাক্কা সামলাতেই তারা ব্যস্ত। যুদ্ধে জড়ানো মানে ইউরোপীয় দুর্গের দেয়ালে আরও শরণার্থীর ঢল। তুরস্কের হঠাৎ সুলতান এরদোয়ানের উসমানিয়া সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার খোয়াবও খতম। ইয়েমেনের ঈদের জামাতে বোমা ফেলার তৃপ্তিতে ঢেকুর তুলতে গিয়ে হেঁচকি উঠল সৌদি বাদশাহরও। তাঁদের ছড়ানো ওয়াহাবি-সালাফি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে রাশান অ্যান্টিভাইরাস ইজ ইন অ্যাকশন।
সিরিয়ায় রাশিয়ার উদ্দেশ্য কেবল বাশার আল-আসাদকে বাঁচানো না। আইএসকে দিয়ে বৈরী সরকার ও স্বাধীন সীমান্ত ধ্বংস করে পশ্চিমারা যে নতুন মধ্যপ্রাচ্য বানাতে চায়, তাতে রাশিয়া, চীন ও ইরানের ঘোরতর বিপদ। বিশ্বের তেলভান্ডার পশ্চিমা তেলকুবের কোম্পানিদের হাতে চলে গেলে রুশ অর্থনীতি ও চীনের উত্থান থামানো যেতে পারে। একদিকে ন্যাটো দিয়ে ঘেরাও হওয়া অবস্থা, অন্যদিকে রুশবিরোধী নতুন মধ্যপ্রাচ্য রাশিয়াকে থমকে দেবে। তাই ইউক্রেনের পর দ্বিতীয়বারের পশ্চিমাদের নাক কাটতেই হলো তাদের।
অন্যদিকে তুরস্ক চায় রাষ্ট্রহীন উত্তর সিরিয়াকে নয়া তুর্কি সালতানাতের অংশ করতে। ভবিষ্যতে কাজে লাগবে ভেবে লাখো সিরীয় উদ্বাস্তু আশ্রয় দিয়ে রেখেছে তারা। পাশাপাশি দক্ষিণ তুরস্কে মার্কিন ঘাঁটিও আরও বড় হয়েছে, ন্যাটোর মদদ তো আছেই। এমন সময়ে এরদোয়ানের বাড়া ভাতে ছাই দিল রুশ বোমারু বিমান। পরপর তিনবার তুর্কি আকাশসীমা লঙ্ঘন করে বুঝিয়ে দিল, সিরিয়ার দিকে নজর দিলে খবর আছে। যুদ্ধের ঝুঁকি নিতে হবে তুরস্ককে। সিরিয়ার ওপর মার্কিন-তুর্কি নেতৃত্বে নো ফ্লাই জোন করার চিন্তাও বরবাদ। এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে তুরস্কের কুর্দি ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) সিরীয় শাখা। ইতিমধ্যে তারা সিরিয়ার ভেতরে মুক্তাঞ্চল গড়ে নিয়েছে। তুরস্কে অভিযান হলে এখন তারা সিরিয়া থেকে লড়তে পারবে।
মুখ পুড়ল ইসরায়েলেরও। সিরিয়ার পূর্ণ পতনের পরে লেবাননের প্রতিরোধ গুঁড়ানোর ইচ্ছা ছিল তাদের। আইএস নামক ফেউকে সামনে রেখে বৃহত্তর ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার দিকে এগিয়ে যেতে চাইছিল তারা। আর সৌদিরা তো ইয়েমেনকে তছনছ করে ইরানের ডানা ছাঁটছিলই। মোদ্দাকথা, মধ্যপ্রাচ্যকে ভাগ-বাঁটোয়ারা করার পরিস্থিতি তৈরিই ছিল ‘ইসলামিক স্টেট’ লেলিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য। আসল যুদ্ধে নামার আগে পুতিনকে তাই যুক্তির যুদ্ধেও নামতে হলো। বিশ্বদরবারে তিনি বললেন, ‘প্রেসিডেন্ট ওবামা প্রায়ই আইসিসের হুমকির কথা বলেন। ভালো, কিন্তু কে তাদের সশস্ত্র করল? কে এই বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করল? কে ওই এলাকায় অস্ত্র জোগাল? সিরিয়ায় কারা যুদ্ধ করছে, তা আপনারা সত্যিই জানেন না? তাদের বেশির ভাগই ভাড়াটে যোদ্ধা। টাকার বিনিময়ে তারা লড়ে। যে বেশি দেবে, তারা তাদের হয়েই কাজ করবে। আমরা জানি, কত টাকা তাদের দেওয়া হয়েছে...যুক্তরাষ্ট্র বলে, “সিরিয়ার গণতান্ত্রিক সভ্য বিরোধী পক্ষকে আমাদের সাহায্য করা উচিত। ” আর তারা সাহায্য করল, অস্ত্র দিল এবং তারা যোগ দিল আইসিসে। এর থেকে এক ধাপ এগিয়ে ভাবা কি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অসম্ভব? আমরা এ ধরনের কার্যকলাপ সমর্থন করি না। আমরা মনে করি, এগুলো ভুল।’
ইতিহাস এ মুহূর্তে পুতিনের পক্ষে। একদিকে মার্কিন-ইসরায়েলি-সৌদি-তুর্কি জোট, অন্যদিকে রাশিয়া-চীন-ইরান-সিরিয়া-হিজবুল্লাহ জোট। ইরান ও হিজবুল্লাহর যোদ্ধারাও যোগ দিয়েছে আসাদের সেনাদের সঙ্গে। আসাদ বটেই দুঃশাসক, কিন্তু আসাদহীন সিরিয়ার অবস্থা হবে লিবিয়ার মতো, সেটা কারও চাওয়া হতে পারে? গাদ্দাফি হুঁশিয়ারি করেছিলেন, তাঁকে হত্যা করা হলে লিবিয়া দোজখ হবে। হয়েছেও তাই। কার্যত, সভ্যতার সূতিকাগার সিরিয়া ও ইরাক ধ্বংসের দায় যুক্তরাষ্ট্রের। গণতন্ত্র ও বিপ্লব রপ্তানিযোগ্য নয়, হোক তা লিবিয়ায় বা আফগানিস্তান ও চেকোস্লোভাকিয়ায়। মুক্তি কেউ কাউকে দিতে পারে না, তা স্থানীয় জনগণের নিজস্ব অর্জনের বিষয়।
ক্লিনটন ও বুশ মধ্যপ্রাচ্যে ‘সভ্যতার যুদ্ধ’ আর পূর্ব ইউরোপের বলকান অঞ্চলে ‘গণতন্ত্রের যুদ্ধ’ উসকে দিয়েছিলেন। তার ফল যুদ্ধ ও জাতিগত গণহত্যায় লাখো প্রাণের অপচয়। এই দায় পশ্চিমারা এড়াতে পারে না। ইউক্রেনে এলিট বিপ্লব ঘটিয়ে রাশিয়াকে অপদস্থ করতে গেলে পুতিন রুশ ভালুকের থাবা চালালেন। ইউক্রেন থেকে কেটে ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অঙ্গীভূত করলেন। সিরিয়ায়ও তারা দেখাল, তারা যা করে, ভেবেচিন্তে করে। আর তা নিরন্তর ও এবং অব্যর্থ। আফগানিস্তানের ভুল তারা এখানে করছে না, মাটিতে রুশ বুটের পাড়া পড়ছে না। মুফতে রুশ সমরাস্ত্রের বিজ্ঞাপনও করা গেল। অস্ত্র-ব্যবসায় কাজে লাগবে।
যাহোক, নতুন মধ্যপ্রাচ্য পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে দেখে সাবেক মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জবিগনিউ ব্রেজেনিস্কি সামাল সামাল আওয়াজ তুলছেন। বৈশ্বিক মার্কিন আধিপত্য কায়েমে ইসলামি মৌলবাদীদের ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহারের বুদ্ধিটা তাঁরই। এ জন্য তাঁকে বলা হয় জঙ্গিবাদের গডফাদার। গত রোববার পলিটিকো ম্যাগাজিনে তিনি লিখেছেন যে সিরিয়ায় মার্কিন ‘অ্যাসেটে’ রুশ হামলা চলতে থাকলে যুক্তরাষ্ট্র যেন রাশিয়াকে প্রতিশোধের হুমকি দেয়। গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা পরিভাষায় ‘অ্যাসেট’ বলা হয় অন্য দেশে সক্রিয় এজেন্টদের। এ এক দারুণ লুকোচুরি খেলা। সিরিয়ায় কালো মুখোশ পরা জঙ্গিরা মারা পড়ে, উহ্আহ্ করে আমেরিকা!
পুতিন এই প্রক্সি ওয়ার বা ছদ্মযুদ্ধকে সরাসরি করে তুললেন। মার্কিনি রাষ্ট্রের ভূরাজনীতি ধর্মযুদ্ধের মোড়কে আচ্ছাদিত ছিল। মুসলিমদের বিভক্ত ও শাসন করা হচ্ছিল। রুশ হস্তক্ষেপে সবার ছদ্মবেশ মায় গায়ের কাপড় পর্যন্ত খুলে পড়ল। ভালো সন্ত্রাসী আর খারাপ সন্ত্রাসীর মধ্যে তুলনা করার নিষ্ঠুর কৌতুক আর নয়। জেহাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের চাতুরীর ঝালর খসে পড়ার পরে পৃথিবী আর আগের মতো থাকল না। পরাশক্তিদের এই মুখোমুখি অবস্থানে শত্রু-মিত্র নির্ধারণ সহজ হবে বিশ্ববাসীর। জগতের লাঞ্ছিত-ভাগ্যহত মুসলমানদের এখন ভাবতে হবে, মন্দের ভালো নেবে নাকি ভালোর মন্দ? ওয়াহাবি-সালাফি জঙ্গিবাদ ভালো নাকি ইরান‍+হিজবুল্লাহ‍+আসাদ+পুতিন ভালো?
ছাগল তথা জঙ্গিরা নড়ে খুঁটির জোরে। মুক্তিযোদ্ধারা লড়ে জনতার অংশ হয়ে। আর পরাশক্তিরা লড়ে সম্পদ ও ক্ষমতার স্বার্থে। সিরিয়ায় আসাদ সরকার টিকে যাচ্ছে, আইএসের অবসান হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আধিপত্যের যুদ্ধে ধর্মের হিংসাত্মক ব্যবহার শেষ হবে কি?

ফারুক ওয়াসিফ , প্রথম আলো

রাঙ্গামাটিতে অপহৃত পর্যটকদের এখনো সন্ধান মেলে নি

    bangladesh CHT

                 পার্বত্য জেলাগুলো স্থানীয় পর্যটকদের জনপ্রিয় গন্তব্য
বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির সীমান্তবর্তী বিলাইছড়ি থেকে সপ্তাহখানেক আগে অপহৃত দুজন পর্যটক এবং গাইডকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।
শনিবার অপহৃতদের কয়েকজন আত্মীয়স্বজন সেখানকার নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে দেখা করেছেন। তবে কারা তাদের অপহরণ করেছে এবং আদৌ মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে কিনা তা নিয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যাচ্ছে না।
পার্বত্য চট্টগ্রামে সম্প্রতি স্থানীয় বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে এবং বিচ্ছিন্নভাবে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষ দেখা গেলেও পার্বত্য শান্তিচুক্তির পর থেকে গত এক দশকেরও বেশি সময় যাবত পর্যটকদের অপহরণ কিংবা বড় ধরণের হামলার ঘটনা দেখা যায়নি।
কিন্তু গত ৫ই অক্টোবর ঢাকা থেকে ট্রেকিংয়ে যাওয়া দুজন পর্যটক এবং তাদের স্থানীয় গাইড অপহৃত হন রাঙ্গামাটির সীমান্তবর্তী বিলাইছড়ি থানার একটি গ্রাম থেকে।
অপহৃতদের একজন জাকির হোসেনের বন্ধু আরাফাত ইসলামসহ আরো একজন তাদের খোঁজে গেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামে। বান্দরবনের রুমা থেকে তিনি বলছিলেন, ঘটনার ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও তারা এখনো নিশ্চিতভাবে জানেন না অপহৃত দুজনকে কারা নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র থেকে মুক্তিপণ দাবীর কথা জানতে পারলেও অপহরণকারীদের সাথে তাদের সরাসরি কথা হয়নি এবং অপহৃতদের সাথেও তারা কথা বলিয়ে দেয়নি।
অপহৃত মি. হোসেন একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং অপরজন আব্দুল্লাহ জুবায়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বলে জানান মি. ইসলাম। স্থানীয়ভাবে তাদের গাইড ছিলেন মাংসাই ম্রো।
এবিষয়ে জানতে চাইলে রাঙ্গামাটির পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান বলেন, স্থানীয় কোন গোষ্ঠি কিংবা আরাকান লিবারেশন আর্মি এর সাথে জড়িত কিনা তা এখনো নিশ্চিতভাবে তারা বলতে পারছেন না।
তবে এঘটনার পর তারা পর্যটকদের সতর্ক থাকতে বলছেন।
ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর পরিমাণ পর্যটক বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা বান্দরবনে ট্রেকিংয়ের জন্য যান এবং তারা জনপ্রিয় পর্যটন এলাকার বাইরে পর্বতারোহণের দিকেই বেশি আগ্রহী।
এদিকে বাংলাদেশ মাউন্টেনিয়ারিং এবং ট্রেকিং ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আল হক বলছেন, সতর্কবার্তার চাইতে এধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করাটাই বেশি জরুরী।
মি. হক বলেন, তরুণরা যদি পাহাড়ে যেতে ভয় পায়, তবে সেখানকার মানুষদের সাথে তরুণদের যোগাযোগের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে সেটিও হারাতে হবে।

আংকারায় বিস্ফোরণ: নিহতের সংখ্যা ৮৬-তে উঠেছে

    turkey ankara                           
তুরস্কের রাজধানী আংকারায় এক 'শান্তি সমাবেশে' যোগ দিতে আসা লোকের মধ্যে দুটি শক্তিশালী বিস্ফোরণে ৮৬ জন নিহত এবং দু'শতাধিক আহত হয়েছে।
স্থানীয় টিভির খবরে দেখা যায়, আংকারার প্রধান রেল স্টেশনের কাছে রক্তাক্ত সমাবেশস্থলটির মাটিতে হতাহতরা পড়ে আছে। চারদিকে আতংকিত লোকজন ছুটোছুটি করছে।
দুটি বিস্ফোরণের অন্তত একটি ছিল আত্মঘাতী হামলা - এমন কথাও বলা হচ্ছে।
কুর্দি জঙ্গী গ্রুপ পিকেকে-র ওপর সেদেশের সরকারি বাহিনী যে আক্রমণ চালাচ্ছে তার অবসানের দাবি জানাতে এই সমাবেশ-মিছিল ডাকা হয়েছিল। সরকারি কর্মকর্তারা এ বিস্ফোরণের জন্য সন্ত্রাসীদের দাযী করেছেন, তবে কুর্দি সমর্থক এইচডিপি পার্টি অভিযোগ করেছে, এ বিস্ফোরণের পেছনের রাষ্ট্রেরই হাত আছে।
turkey explosion                 বিস্ফোরণে আহত একজন                
বিবিসির মার্ক লোয়েন বলছেন, এ কথার ভেতর দিয়ে প্রকৃতপক্ষে ‘ডিপ স্টেট’ বা ‘রাষ্ট্রের ভেতরে আরেকটি রাষ্ট্রের’ প্রতিই ইঙ্গিত করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বোঝানো হয় তুরস্কের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাসীনদের সমর্থক বিভিন্ন জাতীয়তাবাদী শক্তির জো্টকে। অনেকে বলেন, এরা অতীতেও একাধিক আক্রমণ চালিয়েছে।
এ বছরই জুন মাসে নির্বাচনের আগে এইচডিপির আরেকটি সমাবেশে একই রকম বোমা হামলা হয়েছিল। যেহেতু আর কিছুদিন পরই নতুন ভোটাভুটি হচ্ছে – তাই আবার একটি আক্রমণ হতে পারে - এমন আশংকা অনেকেই করছিলেন।
turkey_ankara                 নিহতদের দেহ পতাকা দিয়ে ঢাকা                
কারণ পিকেকে’র সাথে যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ার পর কুর্দি ও জাতীয়তাবাদীদের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশই বাড়ছিল।
মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমা দেশগুলোর সবচেয়ে বড় মিত্র তুরস্ক এখন অর্থনৈতিক সমস্যা, রাজনৈতিক বিভক্তি, সহিংসতা, পিকেকে ও ইসলামিক স্টেটের দ্বিমুখী হুমকি এবং ২০ লাখ সিরীয় শরণার্থী – এসব বহুমুখী সমস্যায় আক্রান্ত।
এই সংকটজনক সময়েই আংকারায় এই শোকাবহ হামলার ঘটনাটি ঘটলো।
তবে এ বিস্ফোরণের পরপরই পিকেকে নভেম্বরের নির্বাচন পর্যন্ত আর কোন আক্রমণ না চালানোর কথা বলেছে, যদি তাদের ওপর পাল্টা কোন আক্রমণ না করা হয়।
তবে এ নিয়ে সরকারি মন্তব্য এখনো পাওয়া যায় নি।

bbc bangla

'বিদেশী হত্যা' নিয়ে রাজনৈতিক দোষারোপের প্রবণতা

    Bangladesh prime minister Sheikh Hasina                 শেখ হাসিনা       
         
বাংলাদেশে অল্প সময়ের ব্যবধানে দু’জন বিদেশী নাগরিক খুন হওয়ার ঘটনার তদন্তে দৃশ্যত তেমন কোন অগ্রগতি না হলেও এ নিয়ে দেশটিতে সরকার এবং বিরোধী দল পরস্পরকে দোষারোপ করতে শুরু করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ অনেকটা সরাসরিই বিদেশী হত্যার ঘটনার জন্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দায়ী করেছেন।
তবে বিএনপির পক্ষ থেকে এই দাবীকে অর্থহীন কথা বলে বর্ণনা করে বলা হয়েছে যে সরকার ব্যর্থতার দায় এড়াতে এ ধরণের দাবী করছে।
ইতালি আর জাপানের দু’জন নাগরিক খুন হওয়ার পর প্রাথমিকভাবে জঙ্গিরা দায়ী এমনটা মনে করা হলেও সরকারের পক্ষ থেকে এসব ঘটনার জন্যে বিএনপি ও জামায়াতকে দায়ী করার প্রবণতাই এখন বেশী লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগে বলেছিলেন যে বিদেশী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত জড়িত থাকতে পারে।
তবে আজ ঢাকায় আইনজীবীদের এক অনুষ্ঠানে তিনি বিদেশী হত্যাকাণ্ডের জন্যে অনেকটা সরাসরিই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দায়ী করেন।
বিগত সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী দল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এখন লন্ডনে অবস্থান করছেন। তার ছেলে তারেক রহমানও বিগত তত্বাবধায়ক সরকারের সময় থেকেই লন্ডন প্রবাসী।
khaleda zia
                 খালেদা জিয়া
ঢাকায় আজ এক অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, এর আগে তিনি দেশে বসে দেশের মানুষ হত্যা করেছেন। এখন বিদেশে বসে তিনি দেশের মধ্যে বিদেশীদের হত্যা করে আতংক সৃষ্টি করিয়ে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, এটা হচ্ছে তার (খালেদা জিয়ার) 'আন্দোলনের নতুন কৌশল'। দেশ ও সরকারের বদনাম করার জন্য খালেদা জিয়া বিদেশে লবিস্ট রেখেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশে নিরাপত্তা নিয়ে যখন বিশ্বজুড়ে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে, তখন সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে যে ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর কোন কর্মকাণ্ড বাংলাদেশে নেই, যদিও এর আগে আইএস-এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
সাম্প্রতিক বিদেশী হত্যাকাণ্ডের দায়িত্ব আইএস স্বীকার করেছে বলে দাবী করা হলেও এসব ঘটনার জন্যে এখন একেবারে উচ্চ পর্যায় থেকে দায়ী করা হচ্ছে বর্তমানে লন্ডনে অবস্থানরত খালেদা জিয়াকে।
কীসের ভিত্তিতে সরকারের এই দাবী, তা জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, খালেদা জিয়া বিদেশে যাবার পর থেকেই বিদেশীদের ওপর আক্রমণের ঘটনা ঘটছে। তিনি বলেণ, এর আগে দেশের মানুষকে হত্যা করে যখন সুফল পাওয়া যায় নি - তাই এবার বিদেশীদের ওপর হামলা করে সরকারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা হচ্ছে।
মি. হানিফ বলেন, মনে হয় তার এবং তার পুত্রের বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো রয়েছে তার বিচার বাধাগ্রস্ত করা এবং সরকারকে বিব্রত ও হেয় করার জন্যই এটা ঘটানো হচ্ছে।
তবে বিএনপির নেতারা পাল্টা অভিযোগ করছেন যে সরকার বিদেশীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, আর এই ব্যর্থতার দায়ভার এখন চাপাচ্ছে বিএনপির ওপর, যাকে তাঁরা বর্ণনা করছেন, সরকারের পুরানো খেলা হিসেবে।
sheikh hasina                 বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা                
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কোন গোপন সফর নয়, বরং চিকিৎসার জন্যে লন্ডনে রয়েছেন।
"যা খুশি তাই বলা তাদের স্বভাবে অংশ হয়ে গেছে, দেশের মানুষও এসব কথা শুনতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এসব অর্থহীন কথা, যার কোন যুক্তি নেই, প্রমাণ নেই" - বলেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার যে গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে দায়িত্বহীন কথার জন্যই আমরা সারা বিশ্বে একঘরে হয়ে পড়ছি।
কিন্তু বিদেশী হত্যার জন্যে সরকারের পক্ষ থেকে দোষারোপ কি খালেদা জিয়ার দেশে ফেরাকে কঠিন করে তুলতে পারে? – এমন এক প্রশ্নে নজরুল ইসলাম খান বলেন, এভাবে খালেদা জিয়াকে ভয় দেখানো যাবে না।
আওয়ামী লীগের মাহবুব-উল আলম হানিফও মনে করেন, খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ক্ষেত্রে সরকার কোন বাধার সৃষ্টি করবে না, এবং বিএনপি চেয়ারপারসন যেকোন অভিযোগ দেশে ফিরে আইনী পথে মোকাবেলা করবেন বলে তিনি আশা করেন।
শেখ হাসিনা এমন এক সময় এ কথা বললেন, যখন বিদেশী নাগরিক হত্যাকান্ড ছাড়াও, সম্প্রতি দুটি বিদেশী ক্রিকেট দল নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশে খেলতে আসা স্থগিত করেছে।
ঢাকায় কিছু দূতাবাস বিদেশীদের চলাফেরার সময় সতর্কতার পরামর্শ দিয়েছে। সর্বশেষ ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দফতর বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদী হামলার উচ্চ ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে বলেছে, সেখানে পশ্চিমা নাগরিকদের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণের মতো আক্রমণের আশংকা আছে।

'গোহত্যার' গুজবে মুসলিমদের ওপর হামলা, গ্রেফতার ২১

 

    india beef
ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে আবারও গরু জবাইয়ের গুজব ছড়িয়ে দাঙ্গা বাঁধানোর দায়ে ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মৈনপুরী জেলায় গতকাল প্রায় ৫০০ লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে ওই হামলা চালায়।
এতে কেউ হতাহত না হলেও অনেকগুলি দোকান জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, আক্রমণ হয়েছে পুলিশের দুটি গাড়ির ওপরেও। পুলিশ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস ব্যবহার করে।
তবে কর্মকর্তারা বলছেন, আসলে গরুটিকে জবাই করা হয়নি, সেটি আগেই মারা গিয়েছিল এবং তার চামড়া ছাড়িয়ে নেয়া হচ্ছিল।
এর দু সপ্তাহ আগে এরকমই এক গুজব ছড়িয়ে হিন্দুত্ববাদীরা পিটিয়ে হত্যা করেছিল ৫০ বছর বয়সী এক মুসলমান ব্যক্তিকে ওই উত্তরপ্রদেশ রাজ্যেই।
ভারতশাসিত কাশ্মীরেও গরু জবাইয়ের বিরুদ্ধে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি লাগাতার বিক্ষোভ চালাচ্ছে।
অন্যদিকে ভারতে ধর্মীয় সম্প্রীতি ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে আর মুক্ত চিন্তার ওপরে আক্রমণ বেড়ে চলেছে – এই অভিযোগ তুলে গত কয়েকদিনে ৫ জন খ্যাতনামা সাহিত্যিক তাঁদের সরকারী খেতাব ফিরিয়ে দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তো এ নিয়ে অনেকদিন চুপ করে থাকার পরে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার কথা বলেছেন।

bbc bangla

জেরুসালেমে সহিংসতা চলছেই: আরো দুই ফিলিস্তিনি নিহত

    jerusalem                 জেরুসালেমের রাস্তায় ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী                

জেরুসালেমে গত কয়েকদিন ধরে চলতে থাকা সহিংসতা আজও অব্যাহত রয়েছে।
আজ পূর্ব জেরুসালেমে দামাস্কাস গেটের কাছে একজন ফিলিস্তিনি তরুণ দুজন ইসরায়েলিকে ছুরিকাঘাত করার পর ইসরায়েলি পুলিশ তাকে গুলি করে হত্যা করে।
আহত দুই ইসরায়েলি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গত কয়েকদিনে জেরুসালেমে বেশ কয়েকটি ছুরিকাঘাতের ঘটনার পর ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি সহিংসতা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে, এবং জেরুসালেম ও পশ্চিম তীর এলাকায় উত্তেজনা তীব্র আকার নিয়েছে।
jerusalem israel palestine                 একজন ফিলিস্তিনিকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সৈন্যরা                
গত রাতেও পূর্ব জেরুসালেমে সংঘর্ষের সময় গুলিতে একজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়।
তার আগে শুক্রবার গাজা সীমান্তে ইসরায়েলি সৈন্যদের গুলিতে ৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়। আজই আরো আগের দিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, দক্ষিণ ইসরায়েলে ফিলিস্তিনিরা একটি রকেট নিক্ষেপ করেছে।
গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস এই সংঘাতকে 'নতুন ইন্তিফাদা' বলে আখ্যায়িত করেছে।
তবে বিবিসির সেবাস্টিয়ান আশার বলছেন, এটা এখনো কোন গণআন্দোলনের রূপ নেয়নি বা এর কোন সুনির্দিষ্ট নেতৃত্বও চোখে পড়ছে না। তবে তিনি বলছেন, সহিংসতা যেভাবে বাড়ছে তাতে ঘটনাপ্রবাহ যে কোন রকম মোড় নিতে পারে।

bbc bangla

আংকারায় জোড়া বিস্ফোরণ: নিহত ৩০, আহত শতাধিক

    turkey ankara         তুরস্কের রাজধানী আংকারায় এক 'শান্তি সমাবেশে' যোগ দিতে আসা লোকের মধ্যে দুটি শক্তিশালী বিস্ফোরণে ৩০ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছে।

স্থানীয় টিভির খবরে দেখা যায়, আংকারার প্রধান রেল স্টেশনের কাছে রক্তাক্ত সমাবেশস্থলটির মাটিতে হতাহতরা পড়ে আছে। চারদিকে আতংকিত লোকজন ছুটোছুটি করছে।
বিস্ফোরণের পর ক্রুদ্ধ লোকজন নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে।
কুর্দি জঙ্গীদের ওপর সেদেশের সরকারি বাহিনী যে আক্রমণ চালাচ্ছে তার অবসানের দাবি জানাতে রাজধানীতে ট্রেড ইউনিয়নগুলো এই সমাবেশ-মিছিল ডেকেছিল। সমাবেশটি এখন বাতিল করা হয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তারা এ বিস্ফোরণের জন্য সন্ত্রাসীদের দায়ী করেছেন, তবে কুর্দি সমর্থক এইচডিপি পার্টি অভিযোগ করেছে, এ বিস্ফোরণের পেছনের রাষ্ট্রেরই হাত আছে।
ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে, এবং শহরের অন্য প্রধান চত্বরগুলোও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এ বছরই জুন মাসে এইচডিপির আরেকটি সমাবেশে একই রকম বোমা হামলা হয়েছিল।
তুরস্কে আর কিছুদিন পরই পার্লামেন্টারি নির্বাচনের জন্য পুনরায় ভোটগ্রহণ হবার কথা।

bbc bangla

মিনায় নিহত বাংলাদেশী হাজির সংখ্যা বেড়ে ৭৯ হলো

                      হজ্জের সময় পদদলিত হয়ে নিহত হবার ঘটনা এর আগেও হয়েছে।                

হজ্জের সময় মিনায় পদদলিত হয়ে নিহত বাংলাদেশীর সংখ্যা এখন ৭৯ জনে দাঁড়িয়েছে। সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ বিবিসি বাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সর্বশেষ গত ৫ই অক্টোবর মি: মসীহ জানিয়েছিলেন বাংলাদেশীর মধ্যে মৃতের সংখ্যা ৫১জন। চারদিনের ব্যবধানে আরো ২৮ জন বাংলাদেশী হাজির মৃতদেহ সনাক্ত করা হলো।
রাষ্ট্রদূত আশংকা করছেন নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। কারণ এখনো ৯০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
মি: মসীহ বলেন যারা নিখোঁজ ছিলেন এখনো তাদের অনেকের মৃতদেহ সনাক্ত করা হচ্ছে। তিনি জানান মৃতদেহ সনাক্ত করতে সময় লাগছে বলেই ধাপে-ধাপে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে।
                        মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।                
রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন মৃতদেহ সনাক্ত করা এবং সেটি নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ দূতাবাস সৌদি কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় রেখে কাজ করছে।
মি: মসীহ বলছেন যাদের মৃতদেহ সনাক্ত করা হচ্ছে তাদের দাফনের বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের মতামত নিয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
মৃত ব্যক্তিদের বিষয়ে কি করা হবে সেজন্য বাংলাদেশ দূতাবাস সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলোর মতামত জানতে চায়। রাষ্ট্রদূত বলেন পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ দূতাবাস পদক্ষেপ নেয়।
মি: মসীহ বলেন, “সবাই চায় তাদের স্বজনকে যেন মক্কা-মদিনার মতো জায়গায় দাফন-কাফন করা হয়। সে রকম একটা ইচ্ছা দেখা যাচ্ছে।”
তিনি বলেন মৃতদেহ দেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে কোন বিধি-নিষেধ নেই। কেউ যদি তার স্বজনের মৃতদেহ দেশে নিতে চায় তাহলে সৌদি কর্তৃপক্ষ সে ব্যবস্থা করবে।
                 প্রতি বছর ২০ লাখ কিংবা তার চেয়ে বেশি মানুষ হজ্জের জন্য সমবেত হয়।                
নিখোঁজদের খোঁজে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ। সৌদি কর্তৃপক্ষ নিহত হাজিদের ছবি ধাপে ধাপে প্রতিদিন প্রকাশ করছে।
গত ২৪শে সেপ্টেম্বর মক্কার নিকটবর্তী মিনায় হজ্জের সময় শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়তে যাওয়ার পথে পদদলিত হয়ে শত শত হাজি মারা যান।
সৌদি কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, মৃতের সংখ্যা প্রায় সাড়ে সাতশো। কিন্তু বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ করেছে যে মৃতের সংখ্যা ১২শ’র বেশি।

bbc bangla