মঙ্গলবার, ১ মার্চ, ২০১৬

দুটি পত্রিকা আমার বিরুদ্ধে অনবরত লিখেছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গণমাধ্যমের জন্য তাঁর চেয়ে বেশি সুযোগ আর কেউ সৃষ্টি করেননি, এত সুযোগ আর কখনো কেউ দেননি। কিন্তু দুটি পত্রিকা ২০ বছর ধরে তাঁর বিরুদ্ধে অনবরত লিখে গেছে। তিনিই গণমাধ্যমের সবচেয়ে বেশি শিকার (ভিকটিম) হয়েছেন। 
আজ সোমবার দশম সংসদের নবম অধিবেশনের সমাপনী বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে বন্দী অবস্থা থেকে মুক্ত হওয়ার পর থেকে এ দুটি পত্রিকা পড়েন না। আর সরকারপ্রধান হওয়ার পর একেবারেই পড়েন না। এরা সব সময় এমনকি একটা ভালো কথা লিখলেও শেষ বেলায় গিয়ে একটা খোঁচা দেবে। আর এ খোঁচা খেয়ে হয়তো আত্মবিশ্বাস হারাবেন। তিনি বলেন, ‘তো দরকারটা কী আমার পড়ার। কারণ, আমি তো জানি তারা কী লিখবে। আমার বিরুদ্ধে লিখবে। তবে সত্য কখনো চাপা থাকে না।’
‘ডেইলি স্টার’-এর সম্পাদক মাহফুজ আনামের নাম না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিছুদিন আগে একজন সম্পাদক টক শো করতে করতে, আলোচনা করতে করতে একজনের প্রশ্নের উত্তরে সে বাধ্য হয়েছে বলতে যে, আমাকে দুর্নীতিবাজ বানাবার জন্য তার পত্রিকা দিন-রাত যত লেখা লিখেছে এই লেখা নাকি ডিজিএফআই তাকে সাপ্লাই (সরবরাহ) দিয়েছে। ওই পত্রিকার ওপরে লেখা থাকে নির্ভীক সাংবাদিকতা। ইংরেজি ও বাংলা। অর্থাৎ ডেইলি স্টার ও প্রথম আলো। নামগুলি সুন্দর। একেবারে ডেইলি স্টার মানে আকাশের তারা। দিনের বেলায়ও দেখা যায়। আরেকটা হলো প্রথম আলো মানে আলো ফুটেই বের হয়। আর তাদের কাজ হলো অন্ধকারের কাজ। অন্ধকারের কাজটা কী, ডিজিএফআইয়ের লেখা ছাপানো। আমার প্রশ্ন এখানে, এ লেখাগুলো যে ছাপালো, কই সে লেখায় তো সূত্র লেখা নাই। মানুষ তথ্য যদি পায় তো একটি সূত্র লিখে দেয় যে এ সূত্র থেকে আমি তথ্য পেয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাশেখ হাসিনা বলেন, ‘বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে আমাকে গ্রেপ্তার করলো, আমার বিরুদ্ধে মামলা দিল। এই মামলা দেওয়া এবং গ্রেপ্তারের আগে ওই পত্রিকা সমানে আমাকে দুর্নীতিবাজ বানানোর জন্য মিথ্যা কথাগুলো লিখে গেছে, অসত্য তথ্য লিখে গেছে। আর সেই অসত্য তথ্যের সাপ্লাইয়ার কে? ডিজিএফআই। ডিজিএফআইয়ের দুই অফিসার একজন ব্রিগেডিয়ার আমিন, আরেকজন ব্রিগেডিয়ার বারি। এরা প্রত্যেকের ওপরই অত্যাচার করেছে।’ তিনি বলেন, ‘মাহফুজ আনামের কাছে প্রশ্ন, সে কী তার উত্তর দিতে পারবে? বা প্রথম আলোর মতিউর রহমান কি উত্তর দিতে পারবে? যারা এত করেছে সেই ডিজিএফআইয়ের সঙ্গে এত সখ্যতা কেন?’ তিনি বলেন, ‘এ কারণে প্রশ্ন জাগে, হয় এরা ডিজিএফআইয়ের সঙ্গে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়ন করার জন্য বা রাজনীতি থেকে চিরতরে বিদায় করে দেওয়ার জন্য অথবা নির্ভীক সাংবাদিকতা না ডিজিএফআইয়ের এজেন্ট হিসেবেই কাজ করেছে তারা। তাদের কাছ থেকে টাকা খেয়ে করেছে অথবা তাদের সাথে দূতিয়ালি করেছে অথবা তাদের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। অবশ্যই ষড়যন্ত্রেই তো লিপ্ত ছিল। ষড়যন্ত্রে লিপ্ত না থাকলে এ ধরনের মিথ্যা, অসত্য তথ্য তারা ছাপাবে কেন? যাদের দ্বারা সবাই অত্যাচারিত, তাদের দ্বারা এই দুজন লালিত-পালিত। এদের চেষ্টাই হলো সব সময় বাংলাদেশে একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি হয়। অসাংবিধানিক পন্থায় যেন এ দেশ চলে। তাহলে তাদের গুরুত্ব বাড়ে। তারা গণতন্ত্র চায় না।’