রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

বাংলাদেশে পেট্রোপণ্য রপ্তানির প্রস্তাব ভারতের


Image copyrightbbc delhi
Image captionভারতের পারাদীপ শোধনাগার
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ রোববার ওড়িশার পারাদীপে বৃহৎ একটি তেল শোধনাগারের উদ্বোধন করেছেন, যেখানকার উৎপাদনের একটা বড় অংশ বাংলাদেশে রফতানির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক ইলাহী চৌধুরী নিজেও আজ ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, এবং ভারতের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রীর সঙ্গে তার আলোচনায় ভারত থেকে বাংলাদেশে আবার পেট্রোরিয়ামজাত পণ্য রফতানি শুরু করা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানিগুলি বাংলাদেশে শুধু রফতানিই করবে না, সেখানে একটি পুরোদস্তুর ‘বিপণন অবকাঠামো’ গড়ে তুলবে বলেও জানা যাচ্ছে।
ওড়িশার বন্দর-শহর পারাদীপে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের যে বিরাট তেল শোধনাগারের উদ্বোধন করেছেন, ভারতের পেট্রোলিয়াম খাতে এত বড় মাপের লগ্নি সাম্প্রতিক কালের মধ্যে হয়নি।
প্রায় ৩৫ হাজার কোটি রুপি খরচ করে তৈরি এই প্রকল্পে প্রতি বছর তৈরি করা যাবে ১৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের পেট্রোপণ্য।
কিন্তু পূর্ব ভারতে বঙ্গোপসাগরের তীরে এই শোধনাগারটির মোট যা উৎপাদন, দেশের ভেতরের চাহিদা মিটিয়েও তার অনেকটা উদ্বৃত্ত থাকবে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন। আর সে জন্যই কাছের দেশ বাংলাদেশে এর একটা বড় অংশ রফতানি করতে চাইছে ভারত।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক ইলাহী চৌধুরীকে পারাদীপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুধু সে জন্যই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল – প্রধানমন্ত্রী মোদিও তাকে মঞ্চে বিশেষভাবে সম্ভাষণ জানিয়েছেন।
এই অনুষ্ঠানের আগেই অবশ্য ভারতের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করেন মি চৌধুরী। সেই বৈঠকে মি প্রধান সরাসরি জানান, ইন্ডিয়ান অয়েল, ভারত পেট্রোলিয়াম বা হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়ামের মতো ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি সংস্থাগুলো বাংলাদেশে পেট্রোলিয়াম খাতে লগ্নি করতে ও একটা মার্কেটিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার গড়তে ভীষণ উৎসাহী।
আর এই সহযোগিতার সূত্রপাত হতে পারে পারাদীপে উৎপাদিত পরিশোধিত তেল সমুদ্রপথে বাংলাদেশে রফতানির মধ্যে দিয়ে।
Image copyrightbbc delhi
Image captionভারতের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক ইলাহী চৌধুরী
ওই বৈঠকের বিষয়ে ভারতের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াই কে বাওয়েজা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ‘সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলার বদলে বলা ভাল জ্বালানি খাতে দুই দেশের সহযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপারে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।’
‘পারাদীপ থেকে তেল রফতানিই শুধু নয়, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এলপিজি রফতানির জন্য বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার বা ট্রানজিটের সুবিধাও চাওয়া হয়েছে। ভারতীয় সংস্থাগুলি যে বাংলাদেশে তেল-গ্যাসের অনুসন্ধান করতে চায়, শোধনাগারের সম্প্রসারণ ঘটাতে চায় জানানো হয়েছে সেটাও’, বলছিলেন ওই মুখপাত্র।
এই বৈঠকের পর তৌফিক ইলাহী চৌধুরীও ভুবনেশ্বরে সাংবাদিকদের বলেছেন, জ্বালানি খাতে দুই দেশের সহযোগিতায় তারা কয়েকটি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে চান।
বস্তুত এই পরিকল্পনা দিনের আলো দেখলে ভারত থেকে বাংলাদেশে শুধু পেট্রোপণ্যই যাবে না, সে দেশের রাস্তায় হয়তো অচিরেই দেখা যাবে ইন্ডিয়ান অয়েল বা ভারত পেট্রোলিয়ামের পেট্রল পাম্প।
ভারত আরও মনে করছে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর তুলনায় কাছের পারাদীপ থেকে তেল আমদানি করলে বাংলাদেশের খরচও কম পড়বে।
নরেন্দ্র মোদি আজ পারাদীপের উৎপাদন ক্ষমতার বিশদ বিবরণ দিয়ে দাবি করেছেন – তেল রফতানির ক্ষেত্রে বিদেশের ওপর ভারতের যে নির্ভরশীলতা, তা অনেকটাই কমাতে সাহায্য করবে এই শোধনাগার।
আর শুধু তাই নয়, নেপালকে বাদ দিলে বিদেশে প্রথমবারের মতো ভারতের পরিশোধিত তেল রফতানিরও সূচনা হতে পারে এই পারাদীপ থেকে – যে পেট্রোপণ্যের গন্তব্য হবে বাংলাদেশ।

বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনা সত্ত্বেও 'পঞ্চম পরমাণু পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে উত্তর কোরিয়া'



Image copyrightReuters
Image captionরকেট নিক্ষেপ প্রত্যক্ষ করছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন

উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর সারা বিশ্বজুড়ে তার সমালোচনা হচ্ছে।
প্রতিবেশী দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক গেন হি এই ‘উস্কানিমূলক’ কাজের জন্যে পিয়ং ইয়ং কর্তৃপক্ষের কঠোর সমালোচনা করেছেন। একইভাবে সমালোচনা করেছে জাপান, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র।
উত্তর কোরিয়ার এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা এমন এক সময়ে এলো যখন মাস-খানেক আগেই ঐ দেশটি সফল পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছে।
এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা বিভাগ বলছে, পঞ্চমবারের জন্যে পরমাণু পরীক্ষা চালাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে উত্তর কোরিয়া।
সবশেষ পরীক্ষা
স্থানীয় সময় সকাল ন'টার দিকে উত্তর কোরিয়ার সোহে মহাকাশ কেন্দ্র থেকে রকেটটি ছোঁড়া হয়।
পিয়ং ইয়ং জানিয়েছে, রকেটটি দশ মিনিটের মাথায় কোয়াংমিয়ংসং নামে একটি স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ নিয়ে মহাকাশের কক্ষপথে প্রবেশ করে।
তাদের দাবি, এই রকেট নিক্ষেপ নেহাতই কক্ষপথে পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইট পাঠানোর জন্য, এর সাথে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কোনো সম্পর্ক নেই।
কিন্তু উত্তর কোরিয়ার প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং তাদের সামরিক মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এই রকেট নিক্ষেপ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

Image copyrightAP
Image captionদক্ষিণ কোরিয়ার একটি রেল স্টেশনে লোকজন উত্তর কোরিয়ার চালানো পরীক্ষার খবর দেখছেন

তাদের ভয়, উত্তর কোরিয়ার এই রকেট নিক্ষেপ আসলে সামরিক মহড়া।
তারা বলছে, পিয়ং ইয়ং দেখালো যে তারা এখন পারমানবিক বোমাবাহী দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে সক্ষম, যেটা দক্ষিণ কোরিয়া ছাড়াও, জাপান এমনকি যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিঞ্জো আবে বলেছেন, বার বার অনুরোধের পরও এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি বলেন, ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে উত্তর কোরিয়া জাতিসংঘের প্রস্তাব ভঙ্গ করেছে।
জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে নিরাপত্তা পরিষদ আজ রোববার জরুরী এক বৈঠকে বসছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার একজন সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে হুমকি মোকাবেলায় ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিক আলোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Image copyrightReuters
Image captionউত্তর কোরিয়ার ছোঁড়া রকেট

দক্ষিণ কোরিয়ায় টিএইচএএডি বা থাড নামে মার্কিন এই ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ব্যবস্থা নিয়ে চীনের প্রবল আপত্তি রয়েছে।
মহাকাশে উত্তর কোরিয়ার রকেট নিক্ষেপ নিয়ে চীন এখনো পর্যন্ত কোনো নেতিবাচক কথা বলেনি।
উত্তর কোরিয়ার এই রকেট নিক্ষেপের ঘটনা গতকাল যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টে মনোনয়ন প্রার্থীদের এক টিভি বিতর্কেও উঠে আসে ।
ডোনাল্ড ট্র্যাম্প বলেন, তিনি বিষয়টি সমাধানে চীনের ভূমিকা দেখতে আগ্রহী।
কিন্তু জেব বুশ বলেন, প্রয়োজনে উত্তর কোরিয়ায় সামরিক অভিযানেও তিনি পিছপা হবেন না।

বাংলাদেশে ক্রিকেটভক্তদের সমালোচনার মুখে আবারো রমিজ রাজা


তামিম ইকবাল
Image copyrightAFP
Image captionতামিম ইকবালকে ভাষা নিয়ে প্রশ্ন করে রোষানলে পড়েছেন রমিজ রাজা
পাকিস্তান ক্রিকেট লীগের পুরস্কার বিতরণীকে কেন্দ্র করে আবারো বাংলাদেশী ক্রিকেটভক্তদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন পাকিস্তানি ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজা।
শনিবার পিএসএলের ম্যাচ শেষে তামিম ইকবালকে ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হিসেবে সাক্ষাতকার নেবার সময় তিনি প্রশ্ন বলেন, "আমি তোমার ভাষা জানি না, তুমি কি ইংরেজিতে বলবে নাকি..."
রমিজ রাজার এই প্রশ্নে চটেছেন বাংলাদেশী ক্রিকেটভক্তরা। এই ঘটনার ভিডিও শেয়ার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর কড়া সমালোচনা করছেন অনেকে।
অনেকে ধারণা করছেন, তামিম ইংরেজি কিংবা উর্দুতে কথা বলবেন কিনা সেটিই জানতে চেয়েছিলেন রমিজ রাজা। তবে এর আগেও রমিজ রাজা বিভিন্ন সময় তামিম ইকবালের সাক্ষাতকার নিয়েছেন এবং সেই ম্যাচেও এর আগে তামিমের সাক্ষাতকার নিয়েছিলেন। তারপরও এধরণের প্রশ্ন করাটা অবাক করেছে অনেককে।
টুইটারে তারিফ নামের একজন লিখেছেন "তামিম রমিজ রাজা থেকে ভালো ইংরেজি বলে, এমন বোকাভাবে তামিম ইকবালকে প্রশ্ন করা দেখে আমি অবাক।"
তবে তামিম ইকবাল হাসিমুখেই বলেন তিনি ইংরেজিতে কথা বলবেন এবং সাক্ষাতকারটিও তিনি ইংরেজিতেই দেন।
এর আগের দিন করাচি কিংসের হয়ে ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হন বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান। সেদিনও ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হিসেবে প্রথমে লেন্ডন সিমন্সের নাম ঘোষণা করেন রমিজ রাজা।
পরে শুধরে নিয়ে ঘোষণা করেন সাকিব আল হাসানের নাম।
বিব্রত সিমন্স মঞ্চ ত্যাগ করলে সাকিব আল হাসান পুরস্কার গ্রহণ করেন।
রমিজ রাজার এই কাণ্ডকে মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় উপস্থাপক স্টিভ হার্ভির ভুলের সাথে তুলনা করে ব্যঙ্গ করছেন কেউ কেউ।
রমিজ রাজা এর আগেও বাংলাদেশী ক্রিকেটভক্তদের রোষানলে পড়েছেন।
২০১৫ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের সময় বাংলাদেশ দল নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করায় বাংলাদেশী ক্রিকেটভক্তরা তার সমালোচনা করেন। সেসময় মি. রাজার কুশপুত্তুলিকাও দাহ করা হয় ঢাকায়।