মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫

দিল্লি ধর্ষণ মামলার দোষী কিশোরের মুক্তি নিয়ে বিতর্ক

 
    delhi rape protest                 দিল্লিতে ধর্ষণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ  
              
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে তিন বছর আগেকার চলন্ত বাসে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দোষী এক কিশোরের আসন্ন মুক্তি নিয়ে প্রবল আইনি ও সামাজিক জটিলতা তৈরি হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে নির্ভয়া নামে পরিচিত ওই ধর্ষিতা-র বাবা-মা দাবি তুলেছেন অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় তাকে যেন কারাগারেই আটক রাখা হয়।
বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামীও একই দাবি নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন, তবে আদালত আজ তাদের রায় মুলতুবি রেখেছে।
কিন্তু আইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ওই কিশোরকে তিন বছরের বেশি জেলে আটকে রাখা সম্ভব নয়, উচিতও নয়।
২০১২-র ১৬ ডিসেম্বর রাতে দিল্লির রাজপথে নির্ভয়া নামে পরিচিত যে তরুণীর গণধর্ষণ সারা পৃথিবীতে আলোড়ন ফেলেছিল – সেই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত একজনের তিন বছরের সাজার মেয়াদ ফুরোচ্ছে এ সপ্তাহেই।
ওই ঘটনার সময় তার বয়স আঠারোর কম হওয়ায় তার বিচার হয়েছে জুভেনাইল আদালতে, আর সেখানে সর্বোচ্চ সাজাও মাত্র তিন বছরের। এখন ওই কিশোরের মুক্তির আগে সরকারকে এক জটিল সমস্যায় ফেলে দিয়েছেন নির্ভয়ার বাবা-মা।
delhi rape protest                 ধর্ষণকারী ফাঁসির দাবি করা হয় কিছু বিক্ষোভে                
নির্ভয়ার বাবা বলছেন, ‘প্রশ্নটা নাবালক বা প্রাপ্তবয়স্কর নয়। প্রশ্ন হল, ও যে ধরনের ঘৃণ্য অপরাধ করেছে তাতে সে বাইরে এলে সমাজে ওই বয়সীদের ওপর কী প্রভাব পড়বে সরকার কি তা ভেবে দেখেছে? আমরা তো শুনেছি, সংশোধনাগারের ভেতরেও সে জেহাদি আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েছে।’
পাশাপাশি নির্ভয়ার মা-ও বলেছেন, তাদের বিশ্বাস হাইকোর্ট শেষ পর্যন্ত ওই কিশোরের মুক্তি আটকে দেবে।
এই দাবিতে নির্ভয়া-র বাবা-মার পাশে দাঁড়িয়ে হাইকোর্টে একটি রিটও করেছেন বিজেপি নেতা ও আইনজীবী সুব্রহ্মণ্যম স্বামী।
তাঁর বক্তব্য, দোষী সাব্যস্ত ছ'জনের মধ্যে সবচেয়ে নৃশংস ভূমিকা ছিল এই কিশোরেরই – সেই নির্ভয়ার যৌনাঙ্গ দিয়ে লোহার রড ঢুকিয়ে তার শরীরের অন্ত্র ও নানা অংশ বের করে দিয়েছিল – ফলে এত তাড়াতাড়ি সে ছাড়া পাবে এটা কিছুতেই মানা যায় না।
মি স্বামীর কথায়, ‘এ তো এক পশু – একে রাখা উচিত চিড়িয়াখানায়। নাবালকদের জন্য দেশে যে আইন আছে তার মুশকিল হল সেটা বানানো হয়েছে সাইকেল চুরি বা বেকারি থেকে কেক চুরির জন্য – এরকম ঘৃণ্য ধর্ষণের জন্য নয়। আইনে বলা নেই তিন বছরেও না শুধরোলে এই অপরাধীদের নিয়ে কী করা হবে। আমি চাইব সরকার যেন একে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে ফের জেলে পোরে।’
                                         
অভিনেত্রী এমপি জয়া বচ্চন থেকে ক্যাবিনেট মন্ত্রী মানেকা গান্ধী অনেকেই এই কিশোরের আশু মুক্তির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন – কিন্তু সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা সত্ত্বেও সরকারের ওই কিশোরকে মুক্তি দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই বলেই আইনি বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
দিল্লিতে নাবালকদের পুনর্বাসন নিয়ে কাজ করে প্রয়াস, তার অধিকর্তা বিশ্বজিৎ ঘোষাল মনে করেন একজন নাবালক যত বড় অপরাধই করুক – সমাজে তাদের ফিরিয়ে আনা ছাড়া কোনও রাস্তা নেই।
নির্ভয়ার ধর্ষণকারী ওই কিশোরকে মুক্তির পর কোনও এনজিও-র তত্ত্বাবধানে রাখা যায় কি না, সরকার সে প্রস্তাবও বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে। বিশ্বজিৎ ঘোষাল অবশ্য মনে করেন এই যুবককে নতুন পরিচয় দিয়ে বাঁচতে সাহায্য করা উচিত।
এই ধর্ষণকারীর মুক্তি নিয়ে ভারতে জনমত যে এখন থেকেই দুভাগ হয়ে গেছে সে ইঙ্গিত খুবই পরিষ্কার।
এখন দিল্লি হাইকোর্ট শেষ মুহুর্তে হস্তক্ষেপ না-করলে এ সপ্তাহেই সে জেল থেকে বেরিয়ে আসবে – আর উসকে দেবে সেই পুরনো বিতর্ক, একজন নৃশংস ধর্ষণকারী আদৌ নাবালক হতে পারে কি না।

 

টুইটার, স্কাইপ বন্ধ সাময়িক ব্যবস্থা: তথ্যমন্ত্রী

 
twitter_logo                 ফেইসবুক খুলে দেবার তিনদিন পর টুইটার, স্কাইপ ও ইমো বন্ধ করা হয়েছে                

বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটার এবং ইন্টারনেটে সহজে কথা বলার মাধ্যম স্কাইপ ও ইমো বন্ধ করাকে একটি সাময়িক ব্যবস্থা বলে অভিহিত করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
ফেইসবুক খুলে দেবার তিনদিন পর টুইটার, স্কাইপ ও ইমো বন্ধ করা হয়েছে।
বিবিসি বাংলাকে তথ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কিছু সন্ত্রাসী তৎপরতা মোকাবেলার জন্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল।
তাতে কিছু উপকারও পাওয়া গিয়েছিল।
কিছু উস্কানিদাতাদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বন্ধ রাখা সম্ভব হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী।
skype_logoঅল্প খরচে কথা বলার সুযোগের জন্য স্কাইপ বেশ জনপ্রিয়                 
বাংলাদেশে রোববার রাতে সব মোবাইল ফোন অপারেটর ও ইন্টারনেট সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই সেবাগুলো বন্ধ রাখার জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান বিটিআরসির পক্ষ থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
২২ দিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেইসবুক খুলে দেয়া হয়।
ফেইসবুক বন্ধের একই সময়ে বন্ধ করা হয় মোবাইল ফোনের অ্যাপ ফেইসবুক মেসেঞ্জার, ভাইবার ও হোয়াটসঅ্যাপ।
তবে ফেইসবুক খুলে দিলেও , ভাইবার ও হোয়াটসঅ্যাপ এখনো বন্ধ রয়েছে।
সেসময় নিরাপত্তার স্বার্থে এসব অ্যাপস বন্ধ রাখা হয়েছিল বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল।

রোয়ান্ডায় গণহত্যা: আইসিটিতে ছয় জনের কারাদন্ড

 
    rwanda genocide                 ১৯৯৪ সালে রোয়ান্ডার গণহত্যায় নিহতদের ছবি      
          
রোয়ান্ডায় ১৯৯৪ সালের গণহত্যার সাথে জড়িত থাকার দায়ে একজন মন্ত্রীসহ ছয় ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।
এটিই আইসিটি'র শেষ রায় এবং এর পর এ আদালত ভেঙে দেয়া হবে।
রোয়ান্ডার একজন সাবেক মন্ত্রী পলিন নিরামাসুহুকো সহ ছয় জনকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে এর আগে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়েছিল।
আজ ট্রাইবুনাল তার শেষ রায়ে ওই দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে তাদের করা আপিল খারিজ করে দেয় এবং তাদের দোষী সাব্যস্ত করে।
                            
অভিযুক্ত ছয়জনের মধ্যে তিনজনের দন্ডাদেশের মেয়াদ যাবজ্জীবন থেকে কমিয়ে ৪৭ বছরের কারাদন্ডের রায় দেয় আইসিটি।
রোয়ান্ডার গণহত্যার মূল অভিযুক্তদের বিচারের জন্য তানজানিয়ার আরুশা শহরে এই আদালত বসানো হয়।
গত দু দশকে মোট ৬১ জন লোককে এ অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়। মোট ১৪ জনকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
এক হিসাবে ১৯৯৪ তে রোয়ান্ডান গৃহযুদ্ধের সময় ১০ লাখের মত মানুষ গণহত্যার শিকার হয়েছিলেন।
সংবাদদাতারা বলছেন এই ট্রাইবুনালের অর্জনের প্রশংসা করেছেন অনেকেই, কিন্তু রোয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামে সহ অন্য অনেকে বলেছেন, এ ট্রাইবুনাল আরো বেশি কিছু করতে পারতো।

রাহুল গান্ধীকে 'মন্দিরে ঢুকতে দেয় নি' আরএসএস

 
                     রাহুল গান্ধী 
               
ভারতের কংগ্রেস পার্টির নেতা রাহুল গান্ধী আজ অভিযোগ করেছেন যে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএসের লোকেরা তাকে আসাম রাজ্যের একটি মন্দিরে ঢুকতে দেয় নি।
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী এবং কংগ্রেসের বর্তমান নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর পুত্র রাহুল গত সপ্তাহে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম সফরে যান। ওই রাজ্যে কংগ্রেস পার্টিই ক্ষমতায়।
আজ সকালে দিল্লিতে পার্লামেন্টের বাইরে উত্তেজিত ভঙ্গীতে মি গান্ধী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাকে মন্দিরে ঢুকতে না-দেওয়ার ওরা কে? কিন্তু বিজেপির চিন্তাভাবনার ধরনধারন যে এরকমই!’
কংগ্রেস সূত্রগুলো বলছে, গত সপ্তাহে আসামে রাহুল গান্ধী যখন একটি পদযাত্রায় গিয়েছিলেন, তখন বরপেটা সত্র মন্দিরের সামনে এই ঘটনাটি ঘটে।
কংগ্রেসের পরিকল্পনা ছিল ওই মন্দিরে পূজা দিয়ে রাহুল গান্ধী পদযাত্রার সূচনা করবেন। কিন্তু দলীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, মন্দিরের সামনে মহিলাদের দিয়ে ‘বর্ম’ তৈরি করে তাকে সেখানে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি।
কিন্তু কেন তাকে মন্দিরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হবে, তার কারণটা এখনও স্পষ্ট নয়।
sonia and rahul                 মা সোনিয়ার সাথে রাহুল গান্ধী                
কংগ্রেস নেতারা কেউ কেউ বলছেন, ওই পবিত্র মন্দিরকে উপেক্ষা করে রাহুল বরপেটা সত্রকে অপমান করছেন – এ ধরনের রাজনৈতিক প্রচার চালাতেই রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাকে ঢুকতে বাধা দিয়েছে।
কেউ কেউ আবার মনে করছেন, রাহুল গান্ধীর মা সোনিয়া গান্ধী নিজে একজন রোমান ক্যাথলিক – এবং রাহুল নিজে পুরোপুরি হিন্দু কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে বলেই তাকে মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
ভারতের সিনিয়র ক্যাবিনেট মন্ত্রী ও বিজেপি নেতা ভেঙ্কাইয়া নাইডু অবশ্য রাহুল গান্ধীর অভিযোগকে নস্যাৎ করে দিয়ে বলেছেন, ‘আরএসএস কি মন্দির চালায় না কি? আজগুবি অভিযোগ করাটা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে!’
ভারতের যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যে এই ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগ – সেখানে কিন্তু রাহুল গান্ধীর দল কংগ্রেসই ক্ষমতায় আছে। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্বও তাদের হাতেই।
তা সত্ত্বেও রাহুল গান্ধী কীভাবে মন্দিরে ঢুকতে বাধা পেলেন? রাজ্য পুলিশ তাকে কেন তখন সাহায্য করল না?
এর জবাবে আসামের মুখ্যমন্ত্রীর ছেলে ও কংগ্রেস এমপি গৌরব গগৈ বলছেন, ‘রাহুল গান্ধীর পদযাত্রার সময় সেখানে হাজার হাজার লোক ছিলেন। রাজ্য সরকার বা প্রশাসন চায়নি সে সময় সেখানে কোনও গন্ডগোল বা বিশৃঙ্খলা হোক।’