সিরিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে দলে দলে শরণার্থী ও অভিবাসী ইউরোপে আসতে থাকার প্রেক্ষাপটে আরো বেশ কয়েকটি দেশ তাদের সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করেছে।
যে দেশটি সবচাইতে বেশ অভিবাসীকে আশ্রয় দিচ্ছিল, সেই জার্মানি গতকাল গতকাল তাদের সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করার পরই - তার প্রতিবেশী অন্য ইউরোপীয় দেশগুলোও পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে।
অস্ট্রিয়ার ভাইস-চ্যান্সেলর রেইনহোল্ড মিটারলেহনার বলেছেন, অভিবাসী সংকট সামলাতে তারা দু'হাজারেরও বেশি সৈন্য পাঠাচ্ছেন।
স্লোভাকিয়া ঘোষণা করেছে, সেদেশের সাথে অস্ট্রিয়া ও হাঙ্গেরির যে সীমান্ত রয়েছে - সেখানে প্রহরা জোরদার করা হচ্ছে। এর আগে চেক প্রজাতন্ত্রও একই রকম ব্যবস্থা নেয়।
জার্মানি বলেছে এ বছর তাদের দেশে দশ লাখ শরণার্থী আসবে বলে ধারণা করছে, যদিও এর আগে জার্মানি এই সংখ্যা ৮ লাখ হবে বলে জানিয়েছিল।
অন্যদিকে আজই ইউরোপের স্বরাষ্ট্র ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রীরা এই অভিবাসী সংকট নিয়ে এক বৈঠকে বসছেন।
সিরিয়া এবং ইরিত্রিয়া থেকে আসা ৪০ হাজার শরণার্থীকে বাধ্যতামূলক কোটার ভিত্তিতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশগুলোর মধ্যে ভাগ করে দেবার যে পরিকল্পনা করা হয়েছে - তার ওপর এই বৈঠকে ভোটাভুটি হতে পারে। তবে মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলো এর বিরোধিতা করেছে।
ইইউ বলছে, ২৩টি দেশের মধ্যে মোট ১ লাখ ৬০ হাজার আশ্রয়প্রার্থীকে ভাগাভাগি করে নেবারও কথা হচ্ছে।
অবশ্য অনেক অভিবাসীই গ্রীস বা হাঙ্গেরিতে নিবন্ধিত হতে চায় না। তাদের ভয়, এর ফলে তারা আর জার্মানি বা অন্য ইইউ দেশে আশ্রয় পেতে পারবে না।
ভারতে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া তাদের প্রায় সোয়াশো কেবিন ক্রু বা 'এয়ার হোস্টেস'কে অতিরিক্ত ওজনের কারণে গ্রাউন্ড-ডিউটিতে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে যে সব কেবিন ক্রু বা বিমানসেবিকার ‘বডি মাস ইনডেক্স’ একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের চেয়ে বেশি, তারা আর ফ্লাইটে ডিউটি করতে পারবেন না।
শ্রমিক সংগঠনগুলো এয়ার ইন্ডিয়া-র এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করলেও বেসামরিক পরিবহন খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এয়ার ইন্ডিয়ার ব্র্যান্ডকে আধুনিক করে তুলতে ‘মোটাসোটা’ এয়ারহোস্টেসদের সরিয়ে দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই।
ভারতে এখন আধুনিক মানের অন্তত ছ-সাতটি ঝাঁ-চকচকে বেসরকারি এয়ারলাইনের সঙ্গে নিয়মিত পাল্লা দিতে হয় সরকারি সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়াকে। কিন্তু দেশের একটি বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লায়ার আশিস ধরের অভিজ্ঞতা বলে, এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে উঠলেই বেশির ভাগ সময় মোটাসোটা, বয়স্ক ও ভারিক্কি এয়ারহোস্টেসরাই কেবিনে তাদের স্বাগত জানিয়ে থাকেন।
যাত্রীদের মধ্যে এই ধরনের ক্ষোভ সামাল দিতেই এয়ার ইন্ডিয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সোয়াশোরও বেশি ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট ও এয়ারহোস্টেসকে তারা অন্য কাজে সরিয়ে দেবে।
আশিস ধরের মতে সিদ্ধান্তটা সঠিক, কারণ প্লেনের ভেতর আসলে নড়াচড়ার জায়গাও যে খুব অল্প। তার কথায়, ‘সরু আইলের মধ্যে অনেক সময় যাত্রীদের সাহায্য করতে এয়ারহোস্টেসদের বেশ বেগ পেতে হয়। সেখানে তারা নিজেরাই যদি বিশালবপু হন, তাহলে সেটা তো মুশকিল বটেই!’
কিন্তু দেশের শ্রমিক সংগঠনগুলি ইতিমধ্যেই এয়ার ইন্ডিয়ার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। এর আগে তারা একটা বয়সের বেশি এয়ারহোস্টেসের বসিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল, এখন তাদের বক্তব্য এয়ার ইন্ডিয়া ওজনের অজুহাতেও বৈষম্য করতে চাইছে।
জাতীয় শ্রমিক নেতা ও পার্লামেন্টারিয়ান তপন সেন বিবিসিকে বলছিলেন, ‘এয়ার ইন্ডিয়ার সার্ভিস রুলে ওজনের কারণে কোনও কর্মীর সাথে বৈষম্য করার কোনও সুযোগ নেই। তারপরেও যদি ফিটনেসের প্রশ্ন থাকে, সেখানেও নির্বাচিত ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসে নির্দিষ্ট বিধিমালা তৈরি করে তবেই তা বাস্তবায়ন করতে হবে।’
কিন্তু ট্রেড ইউনিয়নগুলোর এই বক্তব্যকে বিন্দুমাত্র আমল না-দিয়ে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লোকসানে ধুঁকতে থাকা এয়ার ইন্ডিয়াকে চাঙ্গা করতে হলে এ ধরনের কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই হবে – কারণ এয়ারলাইন ইন্ডাস্ট্রিতে এটাই রেওয়াজ।
সেন্টার ফর এশিয়া প্যাসিফিক এভিয়েশনের ডিরেক্টর কপিল কাউলের কথায়, ‘গ্রাহক-পরিষেবা নির্ভর এই শিল্পে বেশি ওজনের কেবিন ক্রু রাখাই যায় না। বেশি ওজনের একজন কেবিন ক্রু পুরো এয়ারলাইনের ফিটনেস বা স্বাস্থ্য সম্পর্কেও মোটেই ভাল বিজ্ঞাপন নয়।’
তিনি আরও বলছেন, ‘ক্রু-দের হতে হবে চটপটে, সপ্রতিভ, সুন্দর দেখতে – আর তা না-হলে সেই এয়ারলাইনকে নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবেই। ফলে মোটাদের সরিয়ে দেওয়া নিয়ে এত হইচইয়ের কিছু আছে বলে আমি মনে করি না।’
তবে বিষয়টি স্পর্শকাতর, এটা অনুধাবন করে এয়ার ইন্ডিয়া এখনও এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও বিবৃতি দেয়নি।
তবে সংস্থার সূত্রগুলো বলছে – বিষয়টা ঠিক ওজনের নয়, বরং বডি মাস ইন্ডেক্সের – এবং এয়ারলাইন শিল্পে কেবিন ক্রু অনেক ধরনের আপদকালীন পরিস্থিতি সামলাতে হয় বলেই তাদের ফিটনেসের সঙ্গে কোনও আপস করা
বাংলাদেশে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টিউশন ফি'র উপর আরোপিত ৭.৫% ভ্যাট প্রত্যাহার করে নিয়েছে সরকার।
সোমবার বিকেলে এক সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, "সরকার কোন মতেই শিক্ষাঙ্গনে কোন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করতে চায় না এবং জনজীবনে অসুবিধারও সৃষ্টি করতে চায় না।"
এতে বলা হয়, "সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করে সরকার ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ওপর যে সাড়ে ৭ শতাংশ মূসক (মূল্য সংযোজন কর) আরোপিত হয় সেইটি প্রত্যাহার করা সিদ্ধান্ত নিয়েছে।"
তবে এর কয়েক ঘন্টা আগেই 'ভ্যাট প্রত্যাহার করে নিচ্ছে সরকার' - এমন খবর ছড়ানোর পর গত ক'দিন ধরে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা আনন্দ-উল্লাস এবং মিষ্টি খাওয়া শুরু করে। ঢাকার রাজপথে ছাত্রদের অবস্থান-অবরোধও এর কিছু পরেই তুলে নেয়া হয়।
ঢাকার ধানমন্ডি, পান্থপথ, রামপুরা এবং মহাখালী ইত্যাদি এলাকায় ছাত্রছাত্রীদের অবরোধ উঠে যাবার পর রাজপথগুলোয় এখন স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে এসেছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কয়েকজন বিবিসি বাংলাকে বলেন, তাদের আন্দোলনের বিজয় হয়েছে।
ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে গত কিছুদিন ধরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করছিলেন, তার প্রেক্ষাপটে গতকালই অর্থমন্ত্রীর কথায় আভাস পাওয়া গিয়েছিল যে সরকার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করছে।
সম্প্রতি বিরোধীদল বিএনপি ছাড়াও এমনকি সরকারি দলের কয়েকজন নেতা এবং সরকার-সমর্থক ছাত্রসংগঠনও এই ভ্যাটের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেয়।
তবে অর্থমন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান আজ বিবিসিকে বলেন, কোন চাপের কারণে নয় বরং জনগণের বৃহত্তর স্বার্থের জন্যই ভ্যাট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আজ মন্ত্রীসভার এক বৈঠকেও এ নিয়ে আলোচনা হয় বলে উচ্চপর্যায়ের কিছু সূত্রে জানা যায়।
আজ সচিবালয়ে মন্ত্রীসভার বৈঠক শেষে সরকারের একজন সিনিয়র মন্ত্রী 'আজই এ ব্যাপারে একটি নির্দেশনা আসার কথা' বিবিসিকে বলেন।
মন্ত্রীসভার ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত সহ সরকারের অন্যান্য মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা এবং তার আশপাশের এলাকার জন্য আগামী ২০ বছরকে সামনে রেখে এক 'কাঠামোগত পরিকল্পনার' খসড়া প্রণয়ন করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা রাজউক।
এনিয়ে গত দুইদিন তারা বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনাও করছেন যেটি আজ শেষ হয়েছে।
অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা ঢাকা মহানগরীকে নিয়ে এর আগেও পরিকল্পনা তৈরী হয়েছিল, কিন্তু এগুলোর অনেক কিছুই বাস্তবায়ন হয়নি বা এর ফলে তেমন কোন পরিবর্তন আসেনি।
নতুন এই পরিকল্পনাতে আগামি ২০ বছরে শহরের বৃদ্ধি কিভাবে তা নির্ধারণ করা থাকবে।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জি এম জয়নাল আবেদীন ভুঁইয়া এই পরিকল্পনার ওপর ভিত্তি করেই আরেক 'ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান' বা ড্যাপ তৈরি করা হবে। এর মধ্যে ড্রেনেজ ব্যবস্থা, নগরবাসীদের বিনোদনের জন্য উন্মুক্ত স্থান, যোগাযোগ ব্যবস্থা - এগুলো থাকবে।
পরিকল্পনা শহরকে গুছিয়ে তুলতে কতটা সহায়তা করবে কিংবা বর্তমান প্রেক্ষাপটে আদেৌ সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব কিনা?
স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, ঢাকার যে 'রিজেনারেশন' হচ্ছে তা একটা কাঠামোর মধ্যে ফেলতে পারলে আমরা আড়াই কোটি লোকে পরিবেশবান্ধব অবস্থায় বসবাসের সুযোগ করে দিতে পারবো।
নতুন এই পরিকল্পনায় ঢাকার আশপাশের সাভার, গাজিপুর এবং নারায়ণগঞ্জকে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
টুইটারে পোস্ট করা দুটি ক্ষুদে বার্তার একটিতে একজন মহিলা বলছেন, 'টেক্সাস ও বোস্টনে তোমাদের ভাইয়েরা যা করেছে, তা অনুসরণ কর, ভয় করোনা, আল্লাহ তোমাদের সাথে আছেন'।
অন্যটিতে আরেক মহিলা লিখছেন, 'হ্যাপি নাইন ইলেভেন, এটি আমার জীবনের সবচাইতে সুখের দিন, আশা করি এমন দিন আরো আসবে, ইনশাআল্লাহ—হ্যাশট্যাগ আইএস'।
সিরিয়া এবং ইরাকে কথিত ইসলামিক স্টেট জঙ্গি সংগঠনের অধিকৃত এলাকা থেকে এসব ক্ষুদে বার্তা টুইটারে পোস্ট করা হয়েছে বলে ধারণা রয়েছে।
পোস্টগুলোর সাথে ছবিও রয়েছে, যাতে যুদ্ধের পোশাক পরিহিত সশস্ত্র মহিলাদের দেখা যাচ্ছে। আর তাদের মনোবাঞ্ছা কি, সেটাতো তাদের বার্তার ভাষাতেই স্পষ্ট।
আইসিস বা আইএস নামের জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিতে যাওয়া পশ্চিমা মহিলাদের অনলাইন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে এমন একটি সংস্থা ইন্সটিটিউট ফর স্ট্রাটেজিক ডায়লগের এরিন সল্টম্যান বলছেন, 'এরা এমনই একদল মহিলা, যারা রাগান্বিত এবং আক্রমণাত্মক ছিল কিন্তু কোনও কার্যকর ভূমিকা পালন না করতে পেরে এখন হতাশ হয়ে পড়েছে। ফলশ্রুতিতে আমরা দেখলাম, এদেরকে হালকা ধরনের সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়া হল। এখন এদের ভূমিকা সময়ের সাথে সাথে বিবর্তিত হবার একটা ব্যাপক সুযোগ অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছে'।
মিজ সল্টম্যান আরো বলছেন, বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর কার্যকলাপ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, মহিলাদের সমর্থক থেকে সক্রিয় হয়ে ওঠার যে কর্মকাণ্ড ও পর্যায়ক্রম তা সবার ক্ষেত্রেই কম বেশি একই।
হেন্ডার সেন্টার ফর স্টাডি অব টেরোরিজম অ্যান্ড পলিটিকাল ভায়োলেন্সের গবেষক রিচার্ড ইংলিশ বলছেন, মহিলারা তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে আরো কার্যকর হাতিয়ারেও পরিণত হয় বৈকি।
সম্ভবত এই বক্তব্যের সবচেয়ে বড় উদাহরণ লায়লা হালাড, যিনি ১৯৬৯ থেকে ৭০ সালের মধ্যে ফিলিস্তিনের একটি মুক্তিকামি সংগঠনের হয়ে বিমান ছিনতাই করতেন।
মেকআপ বাক্সের মধ্যে বিষ্ফোরক লুকিয়ে নিরাপত্তা রক্ষীদের ফাঁকি দিয়ে বিমানে উঠতেন তিনি।
সম্ভবত মহিলা হবার সুবিধাকেই এক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারতেন।
যাই হোক ৭০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আমস্টারডাম থেকে তেল আবিব গামী একটি বিমান ছিনতাইয়ের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় তাদের। মিজ হালাড আহত হয়ে ধরা পড়েন আর তার সহকর্মীরা নিহত হন।
ঘটনাটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দিনের পর দিন শিরোনাম ছিল।
সেসময়কার তরুণ সাংবাদিক এবং এখনকার জনপ্রিয় ব্রিটিশ টিভি উপস্থাপক পিটার স্নো বলছেন, 'সে খুবই আকর্ষণীয় ছিল। অনেকটা নায়িকা সুলভ। তার দারুণ সব ছবি আমরা সংগ্রহ করলাম এবং প্রকাশ করলাম। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি লক্ষ্য করলাম, প্রতিদিন গণমাধ্যমে তার এই উপস্থিতি বিশ্বের দরবারে ফিলিস্তিনের মানচিত্রটিকে প্রতিষ্ঠিত কর দিল এবং এর প্রতিনিধিত্ব করল লায়লা'।
ওই ঘটনার ৪৫ বছর পর এসে, সংবাদমাধ্যমগুলোতে সিরিয়ার ইসলামিক স্টেট গ্রুপে পশ্চিমা মহিলাদের যোগদানের খবর প্রমাণ করছে যে রাজনৈতিক সহিংসতায় মহিলাদের যুক্ত থাকার ঘটনা এখনো আগের মতোই মানুষের মনে সমান অভিঘাত সৃষ্টি করছে।
গত সপ্তাহে জার্মানিতে রেকর্ড সংখ্যক শরণার্থী প্রবেশের পর সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করছে জার্মানি, অষ্ট্রিয়া এবং চেক রিপাবলিক।
জার্মানি-অষ্ট্রিয়া সীমান্তে আসা শরণার্থীদের পরিচয়পত্র যাচাই করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেখানকার কর্মকর্তাদের।
সেই সাথে জার্মানি ও অষ্ট্রিয়ার মধ্যকার রেল যোগাযোগ একদিন বন্ধ রাখা হয়েছে।
যদিও জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এ ব্যবস্থা সাময়িক।
চেক রিপাবলিক বলেছে, অস্ট্রিয়ার সঙ্গে তাদের যে সীমান্ত রয়েছে সেখানে নজরদারী বাড়ানো হবে।
জার্মানিতে যত শরণার্থী আসছে তাদের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ চেক রিপাবলিক-এর দেয়া বিকল্প পথ ধরেই এসেছে।
কড়াকড়ি আরোপের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
শরণার্থীদের সমস্যা নিয়ে সোমবার ইইউ-এর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের যে বৈঠক বসার কথা রয়েছে সেখানে ফলপ্রসূ আলাপের জন্য তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি।
এদিকে, জরুরি ভিত্তিতে সিরিয়ায় শান্তিরক্ষী মোতায়েন করার জন্য জাতিসংঘের কাছে অনুরোধ করেছে অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন।
সংস্থাটি বলছে, শান্তিরক্ষী মোতায়েন হলে সিরিয়ার পরিস্থিতি শান্ত এবং শরণার্থী সমস্যার কিছুটা সুরাহা হতে পারে।
এদিকে, এই মুহূর্তে শরণার্থীদের খাদ্য ও অন্যান্য সাহায্যের চেয়ে নগদ অর্থ বেশি প্রয়োজন বলে মত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন ভিত্তিক দুটি মুক্ত উন্নয়ন সংস্থা।
এই মূহুর্তে শরণার্থীরা যেসব সাহায্য পাচ্ছে, তার মধ্যে মাত্র ছয় শতাংশ অর্থ সাহায্য।
ভারতের মধ্যপ্রদেশে গতকালের যে বিস্ফোরণে ৯০জনেরও বেশি মারা গেছেন, এখন জানা যাচ্ছে সেটি গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে নয় – বরং জিলাটিন স্টিকে আগুন লেগেই ঘটেছিল।
ঝাবুয়াতে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকার মধ্যে খনির কাজে ব্যবহৃত ওই জিলাটিন মজুত করেছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
হতাহতদের দেখতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যখন আজ ঘটনাস্থলে যান, তখন তাকে ঘিরেও মানুষ প্রবল বিক্ষোভ দেখায়।
ঝাবুয়াতে যে প্রচন্ড বিস্ফোরণে প্রায় একশোর কাছাকাছি লোক মারা গেছেন ও আরও শতাধিক মানুষ মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন – প্রথমে ভাবা হয়েছিল স্থানীয় একটি রেস্তোরাঁর গ্যাস সিলিন্ডার ফেটেই ওই অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত।
কিন্তু আজ (রোববার) ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে রাজেন্দ্র কাসওয়া নামে এক ব্যবসায়ীর গুদামে রাখা জিলাটিন স্টিক থেকেই এত বিধ্বংসী বিস্ফোরণ হয়েছে।
ঝাবুয়া এলাকাটি খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ, মি কাসওয়াও খনির ব্যবসাই করেন এবং তার জিলাটিন রাখার লাইসেন্সও আছে। কিন্তু শহরের যে ঘিঞ্জি এলাকায় তিনি সেগুলো মজুত করেছিলেন তা ছিল সম্পূর্ণ বেআইনি।
ঝাবুয়াতে এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই মানুষ প্রতিবাদে ফেটে পড়ে, এমন কী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংয়ের গাড়িবহর ঘিরে ধরেও তারা বিক্ষোভ দেখাতে থাকে।
বিক্ষোভের মুখে মুখ্যমন্ত্রী মি চৌহান গাড়ি থেকে নেমে প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। পরে তিনি ঘোষণা করেন এতগুলো নিরীহ মানুষের মৃত্যুর প্রতিকারে সরকার সব রকম চেষ্টা করবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এই ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি যাতে সাধারণ সরকারি কর্মকর্তারা নন, হাইকোর্টের একজন বিচারপতি দোষীদের চিহ্নিত করতে পারেন। তবে সেই তদন্ত যতিদন না-শেষ হচ্ছে, ততদিনও আমরা চুপ করে বসে থাকব না, অপরাধীদের ধরার জন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতা চলবে। তাদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য যা যা করা দরকার সব করা হবে।’
জনতার দাবির মুখে মুখ্যমন্ত্রী চৌহান আরও ঘোষণা করেন, নিহতদের পরিবার ২ লক্ষ রুপির পরিবর্তে এখন ১০ লক্ষ রুপি করে ক্ষতিপূরণ পাবে।
কিন্তু মূল অভিযুক্ত রাজেন্দ্র কাসওয়া ঘটনার পর থেকেই সপরিবারে পলাতক, পুলিশ এখনও তার সন্ধান পায়নি।
তার প্রতিবেশীরা বলছেন, মি কাসওয়া যে জনপদের মধ্যেই জিলাটিন মজুত করছেন তারা বছরখানেক আগেই সে অভিযোগ করেছিলেন, কিন্তু পুলিশ ও প্রশাসন তাতে কর্ণপাত করেনি।
বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলার যুক্তিতে ২০০২ সালে "অপারেশন ক্নিনহার্ট" অভিযানে জড়িতদের দায়মুক্তি দিয়ে করা আইনকে অবৈধ ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট।
এর ফলে ঐ অভিযানে নিহতদের পরিবার এখন মামলা করতে পারবে।
সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ঐ অভিযানে পঞ্চাশেরও বেশি লোক হেফাজতে মারা যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরকার এবং সেনাবাহিনী সেসব মৃত্যুর কারণ হিসাবে হৃদরোেগ আক্রান্তের ব্যাখ্যা দিত।
বিএনপি নেতৃত্বে তৎকালীন সরকার ২০০৩ সালে ঐ অভিযানের সাথে জড়িতদের দায়মুক্তি দিয়ে সংসদে একটি আইন পাশ করে।
সেই আইনকে চ্যালেঞ্জ করে ২০১২ সালে জেড আই পান্না নামে একজন মানবাধিকার আইনজীবী হাইকোর্টে রিট মামলা করেন। তার যুক্তি ছিল এ ধরনের দায়মুক্তি আইন বাংলাদেশের সংবিধানের পরিপন্থী।
সেই রিট মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই হাইকোর্ট ঐ দায়মুক্তি আইনকে আজ (রোববার) অবৈধ ঘোষণা করলো।
মি পান্না বলেন, এর ফলে অপারেশন ক্নিনহার্ট ক্ষতিগ্রস্তরা এখন মামলা করতে পারবেন।
রিট মামলাটি করতে তিনি দশ বছর কেন অপেক্ষা করেছিলেন--এই প্রশ্নে অ্যাডভোকেট পান্না বিবিসিকে বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপের জন্য অনুকূল পরিস্থিতি প্রয়োজন।
আমাদের সংবাদদাতা আকবর হোসেন বলছেন, এই রিট মামলার বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোনও বিরোধিতা হয়নি বলে মনে হয়েছে।
এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কিনা -- এই প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বিবিসিকে বলেন, তিনি সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করবেন।
তবে একইসাথে মি আলম মন্তব্য করেন, সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক কোনও আইন দেশে থাকতে পারেনা।
"মেরে ফেলে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার ধারনা গ্রহণযোগ্য নয়।"
২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বে জোট সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল।
সে সময় খালেদা জিয়ার সরকার সেনা নেতৃত্বে অপারেশন ক্লিনহার্ট নামে ঐ অভিযান শুরু করে।