বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

নব্বই শতাংশ বই মানসম্মত নয়- বাংলা একাডেমি

বইমেলা
Image captionএকুশে বইমেলা। প্রতি মেলায় গড়ে তিন হাজার বই প্রকাশিত হয়।
বাংলাদেশ একুশে বইমেলা এখন তুঙ্গে, কিন্তু দোকানগুলোতে থরে থরে সাজানো বইয়ের কতগুলো মানসম্মত তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মেলার আয়োজক বাংলা একাডেমি।
প্রতিবছর একুশে মেলায় গড়ে তিন হাজারের মতো বই প্রকাশিত হয়।
কিন্তু এসব বইয়ের মধ্যে নব্বই শতাংশেই মানসম্মত নয় বলে মনে করে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ। তারা বলছেন, এর একটি বড় কারণ হচ্ছে অধিকাংশ বইয়ের ক্ষেত্রে কোন সম্পাদনা হয়না।
বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্পে সম্পাদনার বিষয়টি দিন দিন গুরুত্ব হারাচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছেন।
মেলায় প্রতিদিন যেসব বই প্রকাশিত হয় সেগুলোর মধ্যে উপন্যাস, গল্প এবং কবিতার সংখ্যা বেশি। অনেক বইয়ের বিজ্ঞাপন এবং মোড়ক দেখতে বেশ আকর্ষণীয়।
বইমেলা
Image captionড বিশ্বজিত ঘোষ। তিনি বলেন, চকমকে মোড়কের আড়ালে বহু বই ভুলে ভরা।
সম্পাদনা হচ্ছেনা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড: বিশ্বজিত ঘোষ বিবিসিকে বলেন, চকচকে মোড়কের আড়ালে অনেক বই ভুলে ভরা। তিনি মনে করেন কোন ধরনের সম্পাদনা ছাড়া বই প্রকাশ হওয়ায় এ ধরনের পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে।
“বাংলাদেশ এই সত্যটাই প্রতিষ্ঠিত হলো না যে বই প্রকাশের জন্য সম্পাদনার প্রয়োজন আছে।”
তিনি বলেন অনেক বইয়ের বানান, বাক্য গঠন এবং বিষয় বিন্যাস একেবারেই মানসম্মত নয়। সাধারণত এই কাজটি একজন সম্পাদক করেন।
অধ্যাপক ঘোষ বলেন, “আমার সীমাবদ্ধতা আমার চোখে ধরা পড়বে না। সেটি আরেকজনের চোখে ধরা পড়বে। সেজন্য প্রত্যেকের বই সম্পাদিত হওয়া উচিত। কারণ কোন মানুষই নির্ভুল নয়। ”
রাখাল রাহা
Image captionসম্পাদক রাখাল রাহা। তিনি বলছেন, সম্পাদিত বইয়ের মান ভালো হতে বাধ্য।
বই সম্পাদনাকে পেশা হিসেবে নেয়া ব্যক্তির সংখ্যা খুব একটা বেশি নয়। গত এক দশক ধরে এ কাজ করেন রাখাল রাহা। বই সম্পাদনার জন্য তার একটি প্রতিষ্ঠানও আছে।
মি: রাহা বলছেন সম্পাদিত বইয়ের মান ভালো হতে বাধ্য।
মি: রাহা বলেন, “পাণ্ডুলিপি হাতে পাওয়ার পরে আমরা দেখার চেষ্টা করি সেটার উন্নতির জায়গা কোথায় আছে। এরপর যে পরামর্শ দেয়া হয় তার ভিত্তিতে লেখক কাজ করেন।”
বাংলা একাডেমি বলছে মেলায় প্রতিবছর ৩০০টির মতো প্রকাশনা সংস্থা অংশ নেয়। কিন্তু হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সম্পাদনা পরিষদ আছে।
এ বিষয়ে প্রকাশকদের এতো অনাগ্রহ কেন?
প্রকাশনা সংস্থা জ্যোৎস্না পাবলিশার্সের কর্ণধার স্বপন দত্ত মনে করেন বিষয়টি মূলত আর্থিক সামর্থ্যের উপর নির্ভর করে।
মি: দত্ত বলেন, বেশিরভাগ প্রকাশক কম পুঁজিতে ব্যবসায় নেমেছে। "বই সম্পাদকদের বেতন দেবার মতো আর্থিক পুঁজি অনেক প্রকাশকের নেই।"
বইমেলা
Image captionবইমেলার একাংশ
'অমর্ত্য সেনের বইও সম্পাদনা হয়'
বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ মনে করে মেলায় অনেক নিম্নমানের বই যে আসছে সে বিষয়টি তারা অবগত।
একডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন অধিকাংশ প্রকাশনা সংস্থা বই সম্পাদনার গুরুত্ব বুঝতে পারছেনা বলে তিনি মনে করেন।
মি: খান বলেন, “অমর্ত্য আমাকে বলেছিলেন তার বই সম্পাদকরা সম্পাদনা করেন। এতো বিখ্যাত লেখকের বই যদি সম্পাদনা হয়, তাহলে এখানকার লেখকের বই কেন সম্পাদনা করা হবেনা।”
মহাপরিচালক বলেন অনেক প্রবাসী বাংলাদেশী প্রকাশকদের টাকা দিয়ে বই ছাপায়। এতে করে বইয়ের গুনগত মান আরো নিচে নেমে যাচ্ছে বলে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক উল্লেখ করেন।
অধ্যাপক বিশ্বজিত ঘোষ মনে করেন বাংলা একাডেমির এমন নিয়ম করা উচিত যাতে সম্পাদনা পরিষদ ছাড়া কোন প্রকাশনা সংস্থা মেলায় আসতে না পারে।

কাশ্মীরের হিমবাহের ভেতর ছয়দিন ধরে ‘অভাবনীয়ভাবে’ বেঁচে আছেন একজন ভারতীয় সৈনিক

Image copyrightAFP
Image captionশূন্যের অনেক নীচের তাপমাত্রায় ছয়দিন ধরে বরফের মধ্যে লড়াই করেছেন ভারতীয় ওই সৈনিক
ছয়দিন আগে সিয়াচেন হিমবাহের একটি ধসের নীচে চাপা পড়েছিলেন ভারতীয় সৈনিক হানামানথাপ্পা।
ছয় হাজার মিটার উপরে, অন্তত আট মিটার গভীর তুষারে নীচে আরো নয়জন সৈনিকের সঙ্গে তিনিও চাপা পড়েন।
অন্যরা সবাই মারা গেছেন। তবে ল্যান্স নায়েক হানামানথাপ্পা জীবিত রয়েছেন বলে নিশ্চিত হয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনী বলছে, তাকে তুষারের নীচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার হিমবাহ থেকে তাকে নামিয়ে আনা হবে।
সেনাবাহিনীর একটি বিবৃতি বলছে, তার অবস্থা খুবই গুরুতর। আমরা আশা করছি, এই 'মিরাকল' (তাকে জীবিত পাওয়া) অব্যাহত থাকবে। আমাদের জন্য দোয়া করুন।
Image copyrightIndian Army
Image captionসিয়াচেন হিমবাহ এলাকা বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু যুদ্ধক্ষেত্র বলে পরিচিত
বুধবার হটাৎ নেমে আসা ধ্বসে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের ওই চৌকিটি পুরোপুরি তুষারের নীচে চলে যায়।
এরপরই ভারতীয় সেনাবাহিনী আর বিমান বাহিনী সৈনিকদের সন্ধানে ‘লাইন অব কন্ট্রোলের’ কাছাকাছি অভিযান শুরু করে। কিন্তু সেনাবাহিনী তখন জানিয়েছেন, সেখানে কাউকে জীবিত উদ্ধারের আশা খুবই কম।
এমনকি দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও একটি টুইটার বার্তায় সৈনিকদের জন্য শোকবার্তা জানিয়েছিলেন।
সিয়াচেন হিমবাহ বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু যুদ্ধক্ষেত্র বলে পরিচিত। এই জায়গার দাবি করছে ভারত ও পাকিস্তান, উভয় দেশ।
ফলে এখানে দুই দেশের সৈন্যরাই টহল দেয়।
গতমাসেও আরেকটি তুষার ধসে চারজন ভারতীয় সৈনিক নিহত হয়েছিল।

মানহানির সাথে জড়িত অনেকেই সরকারি দলে- ইনু

inu
Image captionতথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু
বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বিবিসিকে বলেছেন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার-মানহানির সাথে জড়িত অনেকেই সরকারি দলে রয়েছেন।
তিনি বলেন, মানহানির জন্য বিচারের প্রশ্ন উঠলে তাদেরও বিচার হওয়া দরকার। "যদি মানহানির ঘটনা ঘটেই থাকে শুধু মাহফুজ আনাম কেন?"
২০০৭-০৮ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সেনা গোয়েন্দাদের দেয়া তথ্য ছাপার জন্য আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছাত্রলীগ আজ (মঙ্গলবার) ইংরেজি দৈনিক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে দুটো মানহানির মামলা করেছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, সে সময় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির খবর ছেপে তার মানহানি করা হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী অবশ্য বলেন, সরকার এই সব মামলার পেছনে নেই এবং সে সময়কার ঘটনা নিয়ে সরকার এখন মাথা ঘামাচ্ছে না।
সেনা গোয়েন্দাদের দেয়া তথ্য যাচাই না করে ছাপা নিয়ে ভুল স্বীকারের জন্য তথ্যমন্ত্রী প্রকারান্তরে মাহফুজ আনামের প্রশংসা করেছেন।
anam
Image captionসরকারি দলের তোপের মুখে ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম
"মাহফুজ আনাম স্বীকারোক্তির মাধ্যমে দুঃখ প্রকাশ করেছেন...আমি মনে করি ভুল স্বীকার করে তিনি সাহসের কাজ করেছেন।"
যে সব সেনা গোয়েন্দা কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমে তথ্য দিতেন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা -- এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর এড়িয়ে যান তথ্যমন্ত্রী।
"গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাজের পরিধি খতিয়ে দেখা যেতে পারে, তাদের কর্মপদ্ধতি ঠিক করে দেয়া যেতে পারে।"
বুধবার ডেইলি স্টারের ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকার এক টিভিতে এক প্রশ্নের জবাবে মাহফুজ আনাম বলেন, ২০০৭-০৮ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সেনা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ের দেওয়া বিভিন্ন দুর্নীতির খবর যাচাই না করেই তারা ছেপেছিলেন। মি আনাম বলেন, যাচাই না করে এ ধরণের খবর ছাপা তার সাংবাদিকতা জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল কাজ ছিল।
এই স্বীকারোক্তির পর থেকে সরকারি দলের বহু নেতা মাহফুজ আনামের বিচার দাবি করছেন।

আরব আমিরাতে সুখ-শান্তি দেখতে বিশেষ মন্ত্রণালয়

uae
Image copyright
Image captionপ্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আল মাকতুম আরব আমিরাতের সরকার ঢেলে সাজাতে চাইছেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরকার এবং জাতীয় অনেক নীতি ঢেলে সাজাতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ রশিদ আল মাকতুম।
তার অংশ হিসাবে, তিনি 'সুখ-শান্তি' এবং 'সহনশীলতা' নিয়ে দুটো পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন।
অভিনব এই দুই মন্ত্রণালয়ের জন্য দুজন মন্ত্রী খোঁজার কাজ শুরু হয়ে গেছে।
শেখ মাকতুম, যিনি একই সাথে দুবাইয়ের শাসক, বলেছেন, সুখ-শান্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এমন সব নীতি প্রণয়ন করবে যাতে দেশের জনগণ খুশি থাকে, তৃপ্ত থাকে।
সহনশীলতা বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কে তিনি বলেন, "সহনশীলতাকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মৌলিক মূল্যবোধ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করাই হবে এর কাজ।"
সরকারের অনেক কাজ বেসরকারি খাতের কাছে তুলে দেয়ার পরিকল্পনা করছেন আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী।
"আমরা মন্ত্রীর সংখ্যা নিয়ে আগ্রহী নই। আমরা চাই এমন কিছু মন্ত্রী যারা সমাজের পরিবর্তন অনুধাবন করে সেইমত কাজ করতে পারদর্শী।"
সরকার ও রাষ্ট্র পরিচালনায় তরুণ-যুবকদের অংশগ্রহণ বাড়াতে খুবই আগ্রহী ইউএই প্রধানমন্ত্রী।
২২ বছরেরও কম বয়সী একজন নারী মন্ত্রীকে দিয়ে তিনি একটি যুব কাউন্সিল গঠন করছেন। এই কাউন্সিল বিভিন্ন বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দেবে।

উ. কোরিয়া প্লুটোনিয়াম উৎপাদন করছে: যুক্তরাষ্ট্র

Image copyrightAP
Image captionইয়ংবিন পারমানবিক কেন্দ্রের স্যাটেলাইট চিত্র।
উত্তর কোরিয়া তাদের সম্প্রতি চালু করা একটি পারমাণবিক চুল্লিতে পুনরায় প্লুটোনিয়াম উৎপাদন শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান।
ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক জেমস ক্ল্যাপার সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, পিয়ংইয়ং অচিরেই পারমানবিক বোমা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় প্লুটোনিয়ামের মালিক বনে যেতে পারে।
দেশটি আন্তঃ মহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিরও উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানাচ্ছেন তিনি।
একটি সিনেট কমিটির মুখোমুখি হয়ে মি. ক্ল্যাপার বলেন, এটি একটি একটি প্লুটোনিয়াম রিঅ্যাকটর, যেখান থেকে পারমানবিক বোমার কাঁচামাল পাওয়া সম্ভব।
উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি একটি মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়ানোর পথে রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
দেশটি গত সেপ্টেম্বর মাসেই ইয়ংবিনের প্রধান পারমানবিক চুল্লির কার্যক্রম পুনরায় চালু করে।
আর এর পর গত মাসেই চতুর্থতম পারমানবিক অস্ত্র পরীক্ষাটি চালায়।
কুড়ি কিলোটন সক্ষমতার একটি বোমা তৈরিতে চার কেজির মতো প্লুটোনিয়ামের প্রয়োজন এবং বিশেষজ্ঞদের মতে, পূর্ণ উৎপাদনে থাকলে ইয়ংবিনের চুল্লী থেকে বছরে একটি পারমানবিক বোমা তৈরির কাঁচামাল পাওয়া সম্ভব।