রবিবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৫

‘বিদেশি নাগরিক হত্যা বাংলাদেশের নিরাপত্তায় নতুন মাত্রা’

    japanese killed                  রংপুরে হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।                  

বাংলাদেশে এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে আততায়ীর গুলিতে দুই বিদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের পরপরই অপরাধীদের ধরতে না পারাটা বেশ উদ্বেগের বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
এটি করাটা এখন বাংলাদেশের জন্য খুব দরকারি বলে মনে করছেন, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ড. আব্দুর রব খান।
তিনি বলছেন এতে করে বিদেশি নাগরিকদের আশ্বস্ত করা যেত।
তিনি বলছেন এই হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
মি খান বলছেন, বাংলাদেশকে এখন খুব সাবধানে এগুতে হবে।
যাতে করে কোন ভীতি ছড়িয়ে না পরে সেদিকে নজর রাখতে হবে।
তার মতে পর পর দুটি হত্যার ধরন ও ইসলামিক স্টেটের মতো সংগঠনের এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করাটা বিশেষ করে আরো বেশি উদ্বেগের।
এটি বাংলাদেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে তিনি বলছেন।
বাংলাদেশ ধীরে ধীরে আইএসের জালে জড়িয়ে পড়ছে কিনা সেনিয়ে একটা আশংকা তৈরি হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স ইসলামিক ষ্টেটের অফিসিয়াল টুইটার একাউন্টের বরাত দিয়ে বলছে আইএস হোশি কুনিও নামের জাপানি নাগরিককে হত্যার দায় স্বীকার করেছে।
কয়েকদিন আগে রাজধানী ঢাকায় ইতালির নাগরিক চেজারে তাভেল্লাকে হত্যার পরও আইএস এর নামে একি ধরনের দায় স্বীকারের বিষয়টি গণমাধ্যমে এসেছিলো।
নিহত ইতালীয় নাগরিক ছিলেন আন্তর্জাতিক একটি উন্নয়ন সংস্থার কর্মী। আর অন্যজন জাপানী নাগরিক কৃষি উন্নয়ন কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন।
বাংলাদেশে অনেক বিদেশী নাগরিক বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করছেন।
তাদের মধ্যে এক ধরনের আশংকা তৈরি হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থা এ্যাকশন এইড এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলছেন এই দুটি হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশে যেসব উন্নয়ন সংস্থা রয়েছে তারা তাদের কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন।
কর্মীরা নিজেরাও সাবধান হয়ে চলাফেরা করছেন।
ফারাহ কবির বলছেন উন্নয়ন কর্মীরা তাদের কাজ চালিয়ে যাবে।
তাদের নিরাপত্তা দিতে হবে সরকারকেই এবং যত শীঘ্রই সম্ভব হত্যাকারীদের আইনের আশ্রয়ে নিয়ে আসতে হবে।
রংপুরে জাপানি নাগরিককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পাঁচজন সন্দেহভাজনকে আটক করেছে পুলিশ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিবিসিকে বলেছেন, দুটি হত্যাকাণ্ড একই উদ্দেশ্যে হয়ে থাকতে পারে বলে তারা আশংকা করছেন।
এর আগে বিদেশী নাগরিকদের ওপর হামলার আশংকায় বেশ কয়েকটি দূতাবাস থেকে সতর্কতাও জারি করা হয়েছিল।

''রাজনৈতিক মদত পাচ্ছে বাঘের চোরাশিকারিরা’


    sundarbans_bengal_tiger                 সুন্দরবনে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার                 
বাংলাদেশের পরিবেশমন্ত্রী বলেছেন, সে দেশের সুন্দরবনে বাঘের চোরাশিকারিরা রাজনৈতিক প্রশ্রয় পাচ্ছে আর সে কারণেই বাঘ নিধনের ঘটনা এত বাড়ছে।
বাঘ সংরক্ষণের উপায় নিয়ে সরকারের বন বিভাগ ঢাকায় আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এদিন এক আলোচনাসভার আয়োজন করেছিল, সেখানেই পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ওই মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি ক্যামেরা-ট্র্যাপিং পদ্ধতিতে বাংলাদেশে যে বাঘ গণনার কাজ সম্পন্ন হয়েছে তাতে দেখা গেছে বাংলাদেশ অংশের সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা এখন মাত্র ১০৬টি।
অথচ মাত্র কিছুদিন আগেও ধারণা করা হত বাংলাদেশে প্রায় শচারেক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আছে। সম্প্রতি চোরাশিকারীদের হাতেও বেশ কিছু বাঘ হত্যার প্রমাণ মিলেছে।
এই পটভূমিতেই পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু চোরাশিকারীদের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের যোগসাজশের কথা উল্লেখ করেন।
পরে তিনি বিবিসিকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি নিজে সুন্দরবন এলাকারই লোক। ওখানে সবাই জানে এই চোরাশিকারিরা কাদের প্রশ্রয় পায়। এদের কেউ স্পর্শ করতে পারে না পর্যন্ত!’
royal_bengal_tiger                           
সুন্দরবন এলাকার ডাকাত বা জলদস্যু বলে যাদের বলা হয়, এলাকায় তাতের বেশির ভাগই আসলে অপরিচিত নয় বলে মন্ত্রী দাবি করেন।
এমন কী বন বিভাগের প্রহরীরাও সব জেনেশুনেও ভয়ে এই চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারে না – উল্টে বনরক্ষীদেরই তাদের কথা শুনতে হয় বলে জানান পরিবেশমন্ত্রী।
তবে এই অবস্থা আজকের নয় – সুন্দরবনে বহুকাল ধরেই এ ঘটনা ঘটে আসছে বলে মি হোসেনের দাবি। তাঁর কথায়, ‘বাঘের চোরাশিকার ঠেকাতে র‍্যাব-পুলিশ-বিজিবি এমন কী নৌবাহিনী পর্যন্ত মোতায়েন করা হয়েছে; কিন্তু কাজের কাজ হয়নি কিছুই।’
সরকার ঢাকায় বসে যেই সিদ্ধান্তই নিক, সুন্দরবনের দুর্গম খালবিলের অন্দরে বা জঙ্গলের ভিতরে ‘সম্পূর্ণ অন্য ঘটনা ঘটে যায়’ বলেও স্বীকার করেছেন পরিবেশমন্ত্রী।
যারা চোরাশিকারিদের মদত দেয়, তারা কেউ ‘সুন্দরবনের ধারেকাছেও থাকে না’ বলেও মন্তব্য করেছেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।
পরিবেশমন্ত্রী হিসেবে চোরাকারবার ঠেকাতে সরকারের ব্যর্থতা আর অসহায়তাই কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি, তবে সেই সঙ্গেই বলেছেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা এ ব্যাপারে এবারে কিছু করতে পারবেন বলেই তিনি আশাবাদী।
মি হোসেনের কথায়, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজেও পুরো ব্যাপারটা জানেন। তিনি সম্প্রতি বাঘ চোরাশিকার ঠেকাতে খুব শক্ত অবস্থান নিয়েছেন। তাই আমি আশাবাদী হয়তো এই যোগসাজশ এবার ভাঙলেও ভাঙতে পারে!’
bbc bangla

বাংলাদেশে আইএস তৎপর নয়: শেখ হাসিনা

    sheikh hasina           বাংলাদেশে এক সপ্তাহের কম ব্যবধানে দুই বিদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন এই হত্যাকাণ্ড সুপরিকল্পিত।

তবে দেশে আই-এসের মতো কোন সংগঠন তৎপর নয়।
এই হত্যাকাণ্ডকে আওয়ামী লীগ সরকারের অর্জনকে ছোট করে দেখানোর ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এতে বিএনপি জামাতের মদদ আছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে একটি কলেজে গুলিতে ১০ জনের হত্যাকাণ্ড আর অস্ট্রেলিয়ায় পুলিশের কার্যালয়ের বাইরেই গুলিতে দুজনের মৃত্যুর বিষয়টিতে তারা রেড এলার্ট জারি করেনি।
বাংলাদেশে এরকম ঘটনায় এত উদ্বেগ কেন সেনিয়ে প্রশ্ন করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন সৌদি কূটনীতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচার হয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ডেরও বিচার হবে।
জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদে ভাষণ, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফরের পর দেশে ফিরে সফরের বৃত্তান্ত নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

বিসিসিআই-য়ের নতুন প্রধান শশাঙ্ক মনোহর

    shashank_manohar                 শশাঙ্ক মনোহর                

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বা বিসিসিআইয়ের নতুন প্রেসিডেন্ট বা সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন শশাঙ্ক মনোহর। বোর্ড-প্রধানের পদে বসেই তিনি ভারতীয় ক্রিকেটকে ‘স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত’ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
রবিবার মুম্বইতে বিসিসিআইয়ের বিশেষ সাধারণ সভায় মি মনোহর সর্বসম্মতিক্রমে নতুন বোর্ড সভাপতি নির্বাচিত হন। তার বিরোধিতা করে অন্য আর কেউই প্রার্থী হননি।
গত মাসে কলকাতায় জগমোহন ডালমিয়ার মৃত্যুর ফলেই ভারতীয় বোর্ড-প্রধানের পদে এই নির্বাচন প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। মাত্র কয়েক মাস আগে এ বছরের গোড়ার দিকে মি ডালমিয়া বিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
মি ডালমিয়ার জায়গায় শশাঙ্ক মনোহরের এই প্রত্যাবর্তন বেশ নাটকীয়ই বলা যায়, কারণ নাগপুরের দুঁদে আইনজীবী মি মনোহর ক্রিকেট প্রশাসন থেকে একরকম অবসরই নিয়ে ফেলেছিলেন।
এই নির্বাচনের ফলে আগামী ২০১৭ সাল পর্যন্ত মি মনোহর ভারতীয় বোর্ডের দায়িত্ব সামলাবেন। এর আগে ২০০৮ থেকে ২০১১ সালের মধ্যেও তিনি বোর্ড প্রেসিডেন্টের পদে ছিলেন।
শশাঙ্ক মনোহর ভারতীয় বোর্ড-প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেটে বিতর্কিত এন শ্রীনিবাসনের প্রভাব আরও সঙ্কুচিত হল বলেই ধারণা করা হচ্ছে। মি শ্রীনিবাসন এদিন মুম্বইয়ে বোর্ডের বৈঠকেও যোগ দেননি।
পূর্বাঞ্চলের ছটি ইউনিটই মি মনোহরের নাম একযোগে সভাপতি হিসেবে প্রস্তাব করেছিল। এই সব ইউনিটের অনেকেই অল্প কিছুদিন আগেও ছিলেন মি শ্রীনিবাসনের ঘোষিত ও একনিষ্ঠ সমর্থক।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তাঁর প্রথম সাংবাদিক বৈঠকেই মি মনোহর ঘোষণা করেছেন, ভারতীয় ক্রিকেটকে দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য বিসিসিআই আগামী দুমাসের মধ্যেই বেশ কয়েকটি কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
যেমন ক্রিকেট থেকে ম্যাচ ফিক্সিং বা স্পট ফিক্সিংয়ে ভূত তাড়াতে ক্রিকেটারদের আলাদা করে শিক্ষিত করে তোলা হবে।
প্রতিটি রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার অ্যাকাউন্টস সামলাবেন বাইরে থেকে নিযুক্ত নিরপেক্ষ অফিসাররা, প্রতিটি বড় খরচের হিসেবও ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
কাজেকর্মে স্বচ্ছ্বতা ভারতীয় বোর্ডও তাদের সব তথ্য এবং হিসেবের খুঁটিনাটি নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে।
এছাড়া ভারতীয় বোর্ড নানা ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ বা ‘স্বার্থের সংঘাত’-জনিত অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখতে একজন এথিকস অফিসারও নিয়োগ করবে বলে মি মনোহর জানান।
এই ঘোষণা স্পষ্টত এন শ্রীনিবাসনকে নিশানা করেই, কারণ বোর্ড প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তিনি যেভাবে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি চেন্নাই সুপার কিংসের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন তাতে ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’-এর অভিযোগ উঠেছে বারে বারে।
মি শ্রীনিবাসন এখন ভারতীয় বোর্ডের প্রতিনিধি হিসেবে আইসিসি চেয়ারম্যানেরও দায়িত্ব সামলাচ্ছেন, কিন্তু শশাঙ্ক মনোহরের নেতৃত্বাধীন বোর্ড চাইলে তাঁকে প্রত্যাহারও করে নিতে পারে।
শশাঙ্ক মনোহরের নির্বাচনে যিনি বড় ভূমিকা রেখেছেন, সেই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও ভারতীয় বোর্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট শরদ পাওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন শ্রীনিবাসনকে প্রত্যাহার করার সম্ভাবনা আছে যথেষ্ঠই।
শশাঙ্ক মনোহর একজন সৎ ও কড়া ধাঁচের প্রশাসক হিসেবেই পরিচিত, তার আমলে ভারতীয় ক্রিকেট নানা বিতর্কের কাদা ঝেড়ে ফেলে আবার নতুন ঝলমলে চেহারায় ফিরতে পারে বলে ভারতের ক্রিকেট-অনুরাগীরা অনেকেই আশা করছেন।

জেরুসালেমের ওল্ড সিটিতে ফিলিস্তিনিদের ঢোকা বন্ধ

    old_city_of_jerusalem                                     জেরুসালেমের ওল্ড সিটিতে ফিলিস্তিনিদের প্রতিবাদ (ফাইল চিত্র)                

গত চব্বিশ ঘন্টায় ইসরায়েলিদের ওপর পরপর দুটো হামলার পর ইসরায়েল সরকার জেরুসালেমের ওল্ড সিটি-তে ফিলিস্তিনিদের ঢোকা বন্ধ করে দিয়েছে।
শুধু মাত্র যে ফিলিস্তিনিরা ওল্ড সিটি বা প্রাচীন শহরের চত্বরের ভেতরে থাকেন তারাই সেখানে ঢোকার অনুমতি পাবেন, বাইরে থেকে কোনও ফিলিস্তিনি ওল্ড সিটিতে যেতে পারবেন না।
আপাতত এই নিষেধাজ্ঞা অবশ্য বলবৎ করা হয়েছে মাত্র দুদিনের জন্য।
এর আগে শনিবার রাতেই ওল্ড সিটিতে একজন ফিলিস্তিনি দুজন ইসরায়েলিকে ছুরি মেরে হত্যা করেন। ছুরির আঘাতে আহত হন আরও দুজন।
এর কয়েক ঘন্টা পরেই জেরুসালেমের একটি রাস্তায় একজন ইসরায়েলি কিশোরকে ছুরি মেরে জখম করেন আর একজন ফিলিস্তিনি।
দুটি ঘটনাতেই ইসরায়েলি পুলিশ আক্রমণকারীদের প্রায় সঙ্গে সঙ্গে গুলি করে হত্যা করে।
ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সহিংসতার ঘটনা যেভাবে বাড়ছে, তাতে উদ্বিগ্ন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রবিবার আরও পরের দিকে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসছেন।
জেরুসালেম ও পশ্চিম তীর এলাকায় সম্প্রতি দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা খুবই বেড়েছে।
আল-আকসা মসজিদের আশেপাশে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় সেই উত্তেজনা আরও উসকানি পেয়েছে।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষও অভিযোগ করেছেন ইসরায়েলের প্ররোচনাতেই জেরুসালেম ও পশ্চিম তীরে উত্তেজনা বাড়ছে এবং তারা সেই আচরণের তীব্র নিন্দা করেছেন।
bbc bangla

ভারতে গরু নিয়ে উত্তপ্ত রাজনীতি

 শোভা দে

শোভা দেবিহারের নির্বাচনী উত্তাপকে পেছনে ফেলে ভারতে এই মুহূর্তে সরগরম গরু নিয়ে রাজনীতি। দিল্লি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে উত্তর প্রদেশের নয়ডায় বিসাদা গ্রামে এখন চলছে বিরামহীন ভিআইপি আনাগোনা। গো-হত্যার অভিযোগে হামলায় নিহত ইকলাখের বাড়িতে গতকাল শনিবার যান কংগ্রেস সহসভাপতি রাহুল গান্ধী এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এলাকাটি এখনো উত্তপ্ত। বিরক্ত গ্রামবাসীর একাংশ এদিন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের গাড়ি ভাঙচুর করে। এরই মধ্যে পুলিশ দুই মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ সিং যাদব বলেছেন, অপরাধীদের কঠোর সাজা হবে।
নিছকই এক গুজবকে কেন্দ্র করে গত সোমবার রাতে বিসাদা গ্রামে শতাধিক লোকের আক্রমণে ইকলাখ নিহত হন।
গতকাল যে দুই মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়, তারা স্থানীয় এক মন্দিরের পুরোহিতকে বাধ্য করেছিল প্রতিশোধের ডাক দিতে। এর পরেই ইকলাখের বাড়ি আক্রমণ ও তাঁকে পিটিয়ে খুন করে উত্তেজিত জনতা।
গতকাল পাটনায় সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ বলেছেন, বিজেপি গরুর রাজনীতি হাতিয়ার করে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের খেলায় নেমেছে। এটা ঠিক নয়। বহু হিন্দু আছে যারা গরু খায়। গরু খাওয়ার অপরাধে কাউকে পিটিয়ে মারা অন্যায়। পাটনাতেই লালুর কথার জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, গরু নিয়ে কথা না বলে তিনি বরং বলুন, পনেরো বছরের শাসনে বিহারকে কেন জঙ্গলের রাজত্বে পরিণত করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কিন্তু এই ঘটনা নিয়ে এখনো রা কাড়েননি। এ নিয়ে প্রশ্ন করেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও রাহুল গান্ধী। দুজনেই বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সমালোচনা করেন। বিজেপি-বিরোধী দলগুলো প্রচার শুরু করে দিয়েছে, গরুর রাজনীতির মধ্য দিয়ে তারা দেশে ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা করছে, যাতে ভোটে জেতা সহজতর হয়।
ভারতের ১৮ কোটি মুসলমান ছাড়াও বহু অমুসলিম গরুর মাংস খায়। ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মাংস রপ্তানিকারক দেশ। তবে প্রধানত মহিষের মাংসই রপ্তানি হয় ।
এই বিতর্কের মাঝে বিশিষ্ট লেখিকা শোভা দে ট্যুইট করেন, ‘এখনই গরুর মাংস খেলাম। আসুন আমাকে খুন করুন।’ শোভা মুম্বাইয়ে থাকেন। বিজেপি এই রাজ্যে ক্ষমতায় এসে গো-হত্যা নিষিদ্ধ করেছে।

সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়, নয়াদিল্লি, prothom-alo  

সফলদের স্বপ্নগাথা : মার্ক জাকারবার্গ ও বোনো

মার্ক জাকারবার্গ ও বোনো

মার্ক জাকারবার্গ ও বোনোজাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন উপলক্ষে মার্ক জাকারবার্গ ও বোনো দ্য নিউইয়র্ক টাইমস-এ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ এই লেখাটি লেখেন। মার্ক জাকারবার্গ ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। বোনো নামে খ্যাত পল ডেভিড হিউসন ‘ইউ ২’ ব্যান্ডের প্রধান গায়ক এবং অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ‘ওয়ান’ ও এর অঙ্গসংগঠন ‘রেড’-এর প্রতিষ্ঠাতা।

৭০ বছর আগে যখন জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, তখন তার মূল উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধের বদলে শান্তি ও সহযোগিতাপূর্ণ এক পৃথিবী গড়ে তোলা। মানবজাতি দারিদ্র্য, রোগ-শোক ও সংঘর্ষের মতো ব্যাপারগুলোর বিরুদ্ধে এক হয়ে কাজ করবে, সবার মতামত ও অংশগ্রহণের গুরুত্ব থাকবে। এটিই ছিল পরিকল্পনা।
সেখান থেকে আমরা অনেক পথ পাড়ি দিয়েছি। আমরা প্রাণঘাতী অনেক রোগের মহামারি থামাতে সক্ষম হয়েছি। মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে, একই সঙ্গে আয়ও বেড়েছে। কিছু বড় ধরনের বৈশ্বিক সংঘর্ষ ও দুর্যোগের কবল থেকে আমরা নিজেদের বাঁচাতে পেরেছি। কিন্তু এত উন্নয়নের সুফল সবার কাছে সমানভাবে পৌঁছাতে পারিনি। মানুষের সাফল্যের গল্প এখনো অনেকটাই উন্নত দেশ ও শহরকেন্দ্রিক। বেশির ভাগ মানুষ এখনো এই উন্নয়নের বাইরে।
এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বিশ্বনেতারা কিছু নতুন বৈশ্বিক লক্ষ্য প্রস্তাব করেছেন। আমরা যদি সবাইকে নিয়ে এমন একটি পৃথিবী গড়তে চাই যেখানে সবাই উন্নয়নের অংশীদার হয়ে নিরাপদে জীবন যাপন করতে পারবে, তাহলে আমাদের এখনো অনেক দূর যেতে হবে। জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্রগুলো টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের যে রূপরেখা তৈরি করেছে, তাতে এটিই পরিষ্কার হয়ে ওঠে। এই রূপরেখায় ১৭টি উদ্দেশ্য ও ১৬৯টি লক্ষ্যমাত্রা আছে। এর মধ্যে ৯(গ) লক্ষ্যমাত্রাটি অন্য সব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যা হলো ২০২০ সালের মধ্যে সবার জন্য ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিত করা।
পৃথিবীর অর্ধেক মানুষ এখনো ইন্টারনেট সংযোগের আওতার বাইরে। এটা তাদের জন্য যেমন ভালো নয়, তেমনি বাকি অর্ধেকের জন্যও চিন্তার বিষয়।
এই শতাব্দীতে বৈশ্বিক উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক সংযোগ একে অপরের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। আমরা যদি বিশ্বের মানুষকে ভালোভাবে খেয়েপরে বেঁচে থাকা, শিক্ষা গ্রহণ করা, কর্মসংস্থানের সুযোগ খুঁজে নেওয়ার জন্য সাহায্য করতে চাই তাহলে সবার মধ্যে সংযোগ নিশ্চিত করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। ইন্টারনেট শুধু তিন বিলিয়ন মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। উন্নয়নের এক অপরিহার্য উপকরণ হিসেবে একে বিবেচনা করতে হবে, যা অনেক বড় বড় কাজকে সম্ভব করে তুলতে পারে।
যেমন ইথিওপিয়া ও তানজানিয়ায় কৃষকেরা ফসলের ভালো দাম পেতে, মজুতের সর্বশেষ তথ্য জানতে এমনকি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইনস্যুরেন্সের পেমেন্ট করতে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। নাইজেরিয়ার নাগরিকেরা ‘বাজিট’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করছে, যা সে দেশের সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাজেটের অর্থ ব্যয় করছে কি না তা যাচাই করতে সহায়তা করছে। নারীদের জন্য সম্ভাবনাগুলো আরও বেশি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে নারীদের চেয়ে পুরুষেরা ইন্টারনেটে বেশি সংযুক্ত আছে, তবে নারীরা যখন ইন্টারনেটে সংযুক্ত হয়, তখন তারা এই প্রযুক্তিকে আরও ভালো শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক সুযোগ এবং সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার করে। গুয়াতেমালায় নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করার জন্য মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নারীদের বিভিন্ন তথ্য দেওয়া হচ্ছে। কেনিয়াতেও এম-পেসা ক্ষুদ্রঋণ ব্যবহার করে মোবাইল ফোনে নারীরা বিভিন্ন আর্থিক সেবা গ্রহণ করতে পারছেন।
গত কয়েক সপ্তাহে আমরা দেখেছি শরণার্থীরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাচ্ছে। স্মার্টফোন থাকায় তাদের পক্ষে কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে থাকা প্রিয় মানুষদের সঙ্গে, আত্মীয়-পরিজনদের সঙ্গে সহজেই যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে। তুরস্কের সমুদ্রসৈকতে এক সিরিয়ান শিশুর মৃতদেহের ছবি ইন্টারনেটের মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে গেছে। লাখ লাখ শরণার্থীর প্রতীক হিসেবে সেই ছবি গোটা বিশ্বের মানুষকে কাঁদিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো মানুষের মতামতের প্রতিফলন ঘটানোর পাশাপাশি জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারণ ও পরিবর্তনের ব্যাপারেও অবদান রাখে।
সারা পৃথিবীকে এক সুতোয় গাঁথার স্বপ্ন দেখা সহজ, তবে তার বাস্তবায়ন করাটাই বড় চ্যালেঞ্জ। এর কোনো সরল সমাধান নেই। অনেক অঞ্চলে সংযোগের পূর্বশর্ত হিসেবে জ্বালানি ও বিদ্যুতের নিশ্চয়তা প্রয়োজন। আফ্রিকার গ্রামগুলোতে প্রতি দশজন মানুষের মধ্যে নয়জনের ঘরে বিদ্যুৎ নেই। সরকার এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। এ জন্যই আমরা প্রেসিডেন্ট ওবামার ‘পাওয়ার আফ্রিকা’ পরিকল্পনা, কংগ্রেসের ‘ইলেকট্রিফাই আফ্রিকা অ্যাক্ট’ এবং আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগের মতো কাজগুলোকে সমর্থন করি।
সরকারগুলোর প্রতিষ্ঠিত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে বেসরকারি খাত আরও নানা উদ্যোগ নিতে পারে। বিদ্যমান ডিজিটাল বিভাজন ঘুচিয়ে আনার লক্ষ্যে অনেক সম্ভাবনাময় উদ্যোগ এর মধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় ইন্টেল ফাউন্ডেশন কাজ করছে, মাইক্রোসফট প্রযুক্তি ব্যবহার করে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করেছে, গুগলের প্রজেক্ট লুন প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে। এসব কিছুই প্রমাণ করে প্রযুক্তি ক্ষেত্রের নেতারা কতটা গুরুত্বের সঙ্গে ইন্টারনেটে গোটা পৃথিবীকে সংযুক্ত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। ফেসবুকের ইন্টারনেট ডট ওআরজি উদ্যোগও এর অংশ।
প্রযুক্তি-সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও উদ্যোক্তাদের আরও দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে হবে। সিলিকন ভ্যালিকে নিজের ভৌগোলিক সীমানা ছাড়িয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং শরণার্থী সংকটের মতো বিষয়ের সমাধানে অবদান রাখতে হবে। সবচেয়ে দরিদ্র, অবহেলিত জনগোষ্ঠী, যারা নেটওয়ার্কের বাইরে, তাদের হাতের নাগালে প্রযুক্তি পৌঁছে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা প্রযুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি। বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রার সবগুলোই অর্জিত হতে হবে, কিন্তু সবখানে সবাইকে ইন্টারনেট সংযোগের আওতায় নিয়ে আসতে পারলে তা অন্য লক্ষ্য সফলভাবে অর্জনের দিকে আমাদের দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাবে।

সূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস। ইংরেজি থেকে সংক্ষেপিত অনুবাদ: অঞ্জলি সরকার

কুন্দুজ হাসপাতালে বোমাবর্ষণ 'অপরাধ': জাতিসংঘ

    kunduzআহতদের চিকিৎসা চলছে                

আফগানিস্তানের কুন্দুজ শহরে হাসপাতালের ওপর বোমাবর্ষণকে ক্ষমার অযোগ্য এবং 'সম্ভবত একটি অপরাধ' বলে আখ্যায়িত করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান জায়েদ রাদ আল-হুসেইন।
ওই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা এখন ১৯-এ উঠেছে - যার বেশির ভাগই চিকিৎসাকর্মী - যারা আন্তর্জাতিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান মেদসাঁ সঁ ফঁতিয়ের হয়ে কাজ করতেন। নিহত অন্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী যার মধ্যে শিশুও রয়েছে।
মেদসাঁ সঁ ফঁতিয়ের ৯ জন কর্মী এই হামলায় নিহত হয়েছেন। আরো প্রায় ৩০ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
kunduz                 আক্রান্ত এমসিএফের হাসপাতাল                
মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ্যাশ কার্টার একে 'তীব্র লড়াইয়ের মধ্যে ঘটে যাওয়া একটি শোকাবহ ঘটনা' বলে আখ্যায়িত করে জানিয়েছেন এর তদন্ত চলছে।
আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি বলেছেন, মার্কিন বাহিনী অধিনায়ক তার কাছে ঘটনা ব্যাখ্যা করে দু:খ প্রকাশ করেছেন।
তালিবান-অধিকৃত কুন্দুজ শহরের ওপর মার্কিন বাহিনী বিমান হামলা চালানোর সময় ওই হাসপাতালটি আক্রান্ত হয়।
msf airstrike                 হাসপাতালে বিমান হামলা                
মেদসাঁ সঁ ফঁতিয়ে জানিয়েছে, রাতের বেলা ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে চালানো হয় এই বিমান হামলা হয় যদিও সে সময় বার বার নেটো এবং ওয়াশিংটনে ফোন করা হচ্ছিল।
মেদসাঁ সঁ ফঁতিয়ের আরো ১৯ জন কর্মী সহ মোট ৩৭ জন লোক গুরুতর আহত হয়েছেন।
গত সোমবার কুন্দুজ শহরে তালেবান যোদ্ধারা ঢুকে পড়ার পর থেকেই এর নিয়স্ত্রণ দখলের জন্য তীব্র লড়াই চলছে।
একটি আফগান টিভি চ্যানেলেল সংবাদদাতা বলেছেন, বিক্ষিপ্ত যুদ্ধ এখনো চলছে এবং তালেবান যোদ্ধারা আবাসিক ভবনে আশ্রয় নিয়ে সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা চালাচ্ছে।
শহরের দোকানপাট এখনো পুরোপুরি বন্ধ।

bbc bangla

রংপুরে জাপানি নাগরিক হত্যাকান্ড: চারজন আটক

    bangladesh_rangpur_kaunia_japanese_national_killed                 জাপানী নাগরিক হত্যাকান্ডের জায়গাটিতে পুলিশ। ছবি : এএফপি                

বাংলাদেশের রংপুর জেলার কাউনিয়া থানায় অজ্ঞাত আততায়ীর গুলিতে এক জাপানি নাগরিক নিহত হবার ঘটনায় চার ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, শনিবার সকাল ১১ টার দিকে আলুটারি এলাকায় হোশি কুনিও নামের আনুমানিক ৫০ বছর বয়স্ক ওই জাপানি নাগরিক গুলিবিদ্ধ হন এবং হাসপাতালে নেবার পর মৃত্যুবরণ করেন। গুলি করার পর হত্যাকারীরা একটি মোটরবাইকে করে পালিয়ে যায় বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ।
গুলির শব্দ শুনে আশেপাশের লোকজন এসে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। মি. কুনিওর বুকে, ঘাড়ে এবং কোমরের নিচে তিনটি গুলির চিহ্ন রয়েছে।
এই খুনের ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত প্রত্যক্ষদর্শী রিকশাওয়ালা মুন্নাফ হোসেন, মি. কুনিওর ব্যবসায়িক পার্টনার মো. জাকারিয়াসহ সহ চারজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানিয়েছেন, মি. কুনিও গত ৩-৪ মাস যাবত রংপুর শহরে অবস্থান করছিলেন। তিনি একজন বাংলাদেশির ব্যক্তির সাথে যৌথভাবে আলুটারি এলাকায় উন্নত ধরনের জাপানি ঘাস চাষের একটি প্রকল্প চালাচ্ছিলেন। সেই খামারে যাওয়ার পথেই তিনি গুলিবিদ্ধ হন
        
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, তিনটি মোটর সাইকেলে করে ৬ জন আরোহী এসে রিকশা থামিয়ে মি. কুনিওর পথ রোধ করে। তারা সবাই হেলমেট পরা ছিল এবং হেলমেট রঙিন গ্লাস ছিল। আর যে জায়গাতে খুন করা হয় সেটি গ্রামীণ কাঁচা রাস্তা। ঘাসের খামারটি সেই রাস্তা থেকে ১শ গজের মত দূরত্বে।
এর মাত্র ৫ দিন আগে গত সোমবার রাতে ঢাকার গুলশান এলাকায় একজন ইতালীয় নাগরিককে গুলি করে হত্যা করা হয়। দুটো হত্যার ঘটনাতেই হামলাকারীরা মোটরসাইকেল আরোহী ছিল বলে জানা যাচ্ছে।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, দুটি হত্যাকান্ডই একই ভাবে ঘটানো হয়েছে এবং এগুলো মধ্যে কোন যোগসূত্র আছে কিনা - তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, দুটি ঘটনাই একই উদ্দেশ্যে ঘটানো হয়ে থাকতে পারে। "প্রাথমিকভাবে যেটুকু বুঝতে পারছি - তাতে মনে হচ্ছে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য এবং বিদেশীদের কাছে দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল বলে তুলে ধরার জন্য হয়তো এগুলো করা হচ্ছে।"
রংপুরের এই হত্যাকাণ্ডকারা ঘটিয়েছে সে সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি। পুলিশ বলছে, নিহত ব্যাক্তির কাছ থেকে কোন মূল্যবান দ্রব্য খোয়া যায়নি।
                           
স্থানীয় সাংবাদিক জুয়েল আহমেদ জানান, মাল্টিপল ভিসা নিয়ে তিনি প্রথম বাংলাদেশে আসেন সাত-আট মাস আগে। এর মাঝে তিনি একাধিকবার জাপানে আসা যাওয়া করেছেন। সর্বশেষ ২৮শে আগস্ট তিনি আবারও রংপুরে আসেন। তিনি শহরের একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন এবং জাপানে প্রবাসী একজন বাংলাদেশী ব্যক্তির সাথে যৌথভাবে খামারটি চালাচ্চিলেন।
মি. কুনিও যে বাসায় থাকতেন আরও কয়েকজন বিদেশী ছাত্র ভাড়া থাকেন বলে জানান, সাংবাদিক জুয়েল আহমেদ। প্রায় প্রতিদিন তিনি পরিচিত রিকশায় সেই খামারে যেতেন বলে জানান তিনি।
ওই বাড়ির নৈশপ্রহরী জানিয়েছে, মি. কুনিও প্রতিদিন সকালে বেরিয়ে যেতেন এবং রাতে ফিরতেন।
এদিকে ৫দিনের ব্যবধানে বাংলাদেশে দুজন বিদেশী নাগরিককে হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি।
আজ নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে এ ধরনের ঘটনার পেছনে সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ি করা হয়।
গত সোমবার ঢাকার গুলশানে ইতালির নাগরিক তাভেল্লা সিজারকে গুলি করে হত্যা করা হয় এবং সেখানেও আততায়ীরা মোটরসাইকেল আরোহী ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে।