বুধবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৫

সাংসদ লিটনকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ, মানববন্ধন

 সাংসদ লিটনকে গ্রেপ্তার ও তাঁর সংসদ সদস্য পদ বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন সংগঠনের মানববন্ধন। ছবি: প্রথম আলোসাংসদ লিটনকে গ্রেপ্তার ও তাঁর সংসদ সদস্য পদ বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন সংগঠনের মানববন্ধন। ছবি: প্রথম আলোসাংসদ মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের সংসদ সদস্য পদ বাতিল, তাঁকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার এবং তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আজ মঙ্গলবার গাইবান্ধায় মানববন্ধন ও মুখে কালো কাপড় বেঁধে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন। এ ছাড়া সুন্দরগঞ্জে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচিও পালিত হয়েছে।
আজ সকাল ১১টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত জেলা শহরের পৌর পার্কের শহীদ মিনার চত্বরে মুখে কালো কাপড় বেঁধে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট গাইবান্ধা জেলা শাখা। অন্যদিকে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত জেলা শহরের ডিবি রোডে মানববন্ধন করেছে গাইবান্ধা সদর উপজেলা মানবাধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, গাইবান্ধা মানবাধিকার নাট্য পরিষদ, মানবাধিকার নারী সমাজ ও যুব মৈত্রী।

অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তৃতা দেন জেলা বাসদের সভাপতি আহসানুল হাবীব ও সাধারণ সম্পাদক মনজুর আলম, সদস্য কাজী আবু রাহেন, জেলা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি নিলুফার ইয়াসমীন ও সাধারণ সম্পাদক বজলুর রহমান ও নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি রোকেয়া খাতুন প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তৃতা দেন জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মারুফ ও সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল হক এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার সংরক্ষণ সমন্বয় পরিষদের সভাপতি কাজী আবদুল খালেক প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, সাংসদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে গড়িমসি করছে। তাঁরা বলেন, মাদকাসক্ত কোনো ব্যক্তির পক্ষে জাতীয় সংসদে বসে আইন প্রণেতার দায়িত্ব পালন করা কোনো ক্রমেই সমীচীন নয়। তাই মঞ্জুরুল ইসলামের সংসদ সদস্য পদ বাতিল করে তাঁকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
এদিকে আজ মঙ্গলবার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শহরের বঙ্গবন্ধু চত্বরে দিনব্যাপী গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বর্তমান সুন্দরগঞ্জ পৌর মেয়র ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন এই কর্মসূচির আয়োজন করেন। সকাল থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত দুই শতাধিক বিভিন্ন পেশার মানুষ শিশুকে গুলি করে হত্যার নিন্দা জানিয়ে সাংসদকে গ্রেপ্তার ও তাঁর বিচারের দাবিতে স্বাক্ষর করেন।
সাংসদকে এখনো গ্রেপ্তার করতে না পারার বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসরাইল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সাংসদ মঞ্জুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। কিন্তু তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
মুখে কালো কাপড় বেঁধে শহীদ মিনার চত্বরে অবস্থান নিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট গাইবান্ধা শাখার নেতা কর্মীরা: ছবি: প্রথম আলো
গত ২ অক্টোবর সুন্দরগঞ্জ-বামনডাঙ্গা সড়কে ছয়টার দিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার গোপালচরণ গ্রামের সাজু মিয়ার চতুর্থ শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে শাহাদাত হোসেনের পায়ে গুলি করেন গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাংসদ মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। পরে শাহাদাতকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে বামনডাঙ্গায় সাংসদের লোকজন শিশুটিকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সও আটকে দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে অ্যাম্বুলেন্সটি ছেড়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে আহত শাহাদাত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের চিকিৎসাধীন আছে। এ ঘটনায় সৌরভের বাবা সাজু মিয়া বাদী হয়ে সাংসদ মঞ্জুরুল ইসলামকে একমাত্র আসামি করে গত ৩ অক্টোবর রাতে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে ৩২৬ ও ৩০৭ ধারায় মামলা দায়ের করেন।

গাইবান্ধা প্রতিনিধি,