শুক্রবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৫

'যুদ্ধাপরাধী সাকার পক্ষে বিবৃতিতে জামায়াতের সঙ্গে পার্থক্য মুছে ফেলেছে বিএনপি'

ইমরান এইচ সরকার (ফাইল ছবি)
ইমরান এইচ সরকার (ফাইল ছবি)

আইএসের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে ফ্রান্সের রেজোলিউশন

   paris                 ফ্রান্সে শুক্রবার আরোপ করা জরুরী অবস্থার মেয়াদ আরো অন্তত তিন মাস বাড়তে চলেছে    

             
ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াই এ বিশ্ব নেতৃত্বের সমর্থন চেয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে খসড়া রেজোলিউশন পেশ করেছে ফ্রান্স।
বলা হচ্ছে, একটি শক্তিশালী আন্তর্জাতিক জনমত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এটি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁল্যাদ্যের কৌশলের একটি অংশ।
এদিকে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে সামরিক সহযোগিতা দেবার আহ্বান জানিয়ে পৃথক আরেকটি প্রস্তাব পেশ করেছে রাশিয়া।
ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালস বলেছেন, প্যারিস হামলায় জড়িতদের কেউ কেউ ইউরোপে শরণার্থীদের প্রবেশের সুবিধা নিয়ে কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে ফ্রান্সে ঢুকে পড়েছিল।
কর্তৃপক্ষ বলছে, হামলার পরপরই তারা জানতে পেরেছে যে হামলার মূল হোতা আবদেলহামিদ আবাউদ সিরিয়া থেকে গ্রীস হয়ে ফ্রান্সে প্রবেশ করেছিল।
তবে, ঐ ব্যক্তি শরণার্থী ছিল কি না তা জানা যায়নি।
এদিকে, ফ্রান্সে শুক্রবার সন্ত্রাসী হামলার প্রধান ষড়যন্ত্রকারী বলে যাকে সন্দেহ করা হচ্ছে সেই আব্দেলহামিদ আবাউদ মারা গেছে।
ফরাসী সরকার জানাচ্ছে গতকাল প্যারিসের স্য দেনি এলাকায় পুলিশ অভিযানে নিহত দুজনের একজন ছিল ঐ ব্যাক্তি।
ওদিকে শুক্রবার আরোপ করা জরুরী অবস্থার মেয়াদ আরো অন্তত তিন মাস বাড়তে চলেছে ফ্রান্সে। bbc

ফাঁসির দন্ডের আদেশ কারাগারে পৌঁছেছে


                               
বাংলাদেশে বিএনপি নেতা সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী এবং জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির দন্ডের আদেশ কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছেছে।
এর আগে বিচারকরা চুড়ান্ত রায়ের নথি স্বাক্ষরের পর তা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
সরকারের এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বিবিসি বাংলাকে এখবর নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, "এই দুজনের ফাঁসির রায়ের নথিতে আদালত ইতোমধ্যে স্বাক্ষর করেছেন। আজকেই এই নথি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠানো হবে। সেখান থেকে এই নথি যাবে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে"।
কারা কর্তৃপক্ষের কাছে ফাঁসির দন্ডের আদেশ পৌঁছানোর পর সরকার যে কোন সময় এই আদেশ কার্যকর করতে পারে।
bbc                 জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ (ফাইল ছবি)                
উল্লেখ্য আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির আদেশ বহাল রেখেছে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ গতকালই তাদের চুড়ান্ত রায় ঘোষণা করে। বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে তাদের এই দন্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।
দুজনের তরফ থেকেই এই রায় পুর্নবিবেচনার আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু আপীল বিভাগ দুটি আবেদনই খারিজ করে দেয়।
এদিকে সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের সঙ্গে আজ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে দেখা করেছেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরা।
দুই পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কারা কর্তৃপক্ষ তাঁদের এই সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেন।
প্রথমে সকালে মিস্টার চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী ও ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীসহ পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য কারাগারে যান।
তবে দেখা করে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কোনও কথা বলেননি তারা।
ফাঁসির দণ্ড পাওয়া সালাউদ্দীনকা চৌধুরীকে গতকাল কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে আসা হয়।
bbc
                 সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী (ফাইল ফটো)
এরপর মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ড পাওয়া জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের পরিবারের সদস্যরাও তার সঙ্গে দেখা করতে যান।
এই দুটি রায় ঘোষণার আগে থেকে ঢাকা শহরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
ঢাকার কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ সহ প্রধান প্রধান সড়কে রাস্তার দুপাশে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বাংলাদেশে ফেসবুক, ভাইবার সহ বিভিন্ন মেসেজিং অ্যাপ বন্ধ করে দিয়েছে সরকার।
bbc

ঢাকা লিট ফেস্টিভ্যাল: লেখা বন্ধ করা যাবে না

 
   
 
 
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় শুরু হওয়া এক সাহিত্য উৎসবে যোগ দিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা দুশোর বেশি লেখক-সাহিত্যিক।
বাংলাদেশে এই সাহিত্য উৎসব এবছর এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বলে পশ্চিমা অনেক দেশ নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণে সতর্ক করছে।
একই সাথে বাংলাদেশে বেশ কয়েকজন ব্লগার ও একজন প্রকাশক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন সম্প্রতি। নানা দেশ থেকে উৎসবে আসা এসব লেখক, সাহিত্যিকরা কিভাবে দেখছেন বিষয়গুলোকে?
সকালে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরেই শুরু হয়ে যায় লেখক,কবি, সাহিত্যিক, সংবাদকর্মীদের সম্মেলনে আলোচনা। এমনি একটি আলোচনা শেষে আমার কথা হচ্ছিল জার্মান ব্রিটিশ লেখক ও প্রকাশক মেইক যারভোগেল এর সাথে।
অনুষ্ঠানের মাত্র দুদিন আগে এই লেখক তার টুইটার আ্যাকাউন্টে লিখেছিলেন অনেক পশ্চিমা লেখক বাংলাদেশের এই সাহিত্য উৎসবে আসার সিদ্ধান্ত বাতিল করেছেন। কিন্তু তিনি ঠিকই আসবেন। মেইক যারভোগেল কে সামনে পেয়ে তার কাছে জানতে চাইলাম, তার টুইটারের বিষয়বস্তু সম্পর্কে।
"আসলে আমি যেটা জানি সেটা হল কিছু লেখক এই উৎসব থেকে সরে গেছেন নিরাপত্তার কারণে। আমি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সাম্প্রতিক ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, তারপরেও আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কারণ আমি মনে করি এই ধরণের আন্তর্জাতিক মিলন-মেলায় লেখকদের আসা উচিত সৃজনশীল চিন্তা, ও লেখা নিয়ে আলোচনা করার জন্য। তবে হ্যাঁ নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।"
পঞ্চম বারের মত এই সাহিত্য উৎসবটি হচ্ছে দেশে। আগে ‘হে-ফেস্টিভ্যাল’ নাম নিয়ে অনুষ্ঠান হলেও এবারে নাম পরিবর্তন করে ‘ঢাকা লিট ফেস্ট’ নামে।
ঢাকায় এবছরের উৎসব এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন তিনজন বিদেশী নাগরিকের ওপর হামলা হয়েছে পশ্চিমা বেশ কয়েকটি দেশ নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণে সর্তক করেছে। এশিয়া লিটারারি এজেন্সির প্রতিষ্ঠাতা কেলি ফ্যালকোনার বলছিলেন এমন সময়ে ঢাকায় আসার সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন কারণ তিনি মনে করেন একজন লেখক যে যুক্তিকে বিশ্বাস করেন সেটার পাশেই দাঁড়ানো উচিত।
লেখকদের চিন্তার স্বাধীনতা ও তাদের লেখার বিষয় বস্তু নিয়ে কথা হচ্ছে এই উৎসবে। সাথে সাথে বাংলাদেশে কয়েকজন ব্লগার ও একজন প্রকাশক যে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন সে ব্যাপারে ওয়াকিবহাল এই এসব লেখকরা। ভারতের প্রখ্যাত লেখক নয়নতারা সায়গল বলছিলেন বাংলাদেশের সরকারের উচিত লেখক ও প্রকাশকদের প্রকাশ্যে সমর্থন করা উচিত।
"লেখক, প্রকাশক ও অন্যদের জন্য সরকারের উচিত প্রকাশ্যে শক্ত সর্মথন দেয়া, পুলিশেরও উচিত তাদেরকে রক্ষা করা। যাতে লেখকরা মনে করেন সরকার তাদের সাথে আছে, হত্যার হুমকিসহ অন্য হুমকি ব্যাপারে সরকারের যেটা করা দরকার সেটা তারা করছে। অন্যদিকে এসব হুমকির মুখে লেখকদের উচিত হবে না লেখা বন্ধ করে দেয়া। তারা চায় আমাদেরকে থামিয়ে দিতে যেটা আমাদের কোন ভাবেই করা উচিত হবে না।"
ব্লগার ও প্রকাশক হত্যার পর বাংলাদেশের সরকারের তরফ থেকে কিছু বিষয়ে বিশেষ করে ধর্মীয় অনুভূতি আঘাত করে এবং বর্তক সৃষ্টি করে এমন বিষয়ে না লেখালেখি করার জন্য বলা হয়েছে। বাংলাদেশের কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের সাথে উৎসবে এক পর্যায়ে কথা হচ্ছিল।
তিনি বলছিলেন “কতগুলো জিনিস আছে যেগুলো হয়ত সুস্পষ্টভাবে মানুষের মনে আঘাত দেয়, আমি মনে করি না সেটা করা উচিত, কারো ধর্মে যদি লাগে হিন্দু, খ্রিস্টান, মুসলিম, সেটা আমি কিছুতেই অনুমোদন করবো না কিন্তু আমার কথা হল আমি যেভাবে থাকতে চাই, আমাকেও সেভাবে থাকতে দিতে হবে, আমাকে বাধা দেয়া যাবে না”।
আজ থেকে শুরু হয়ে এই লিট ফেস্ট চলবে আরো দুদিন। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়াটা এক উদ্দেশ্যে, বলছেন আয়োজকরা তবে এখানে আসা লেখকরা বলছেন মুক্তচিন্তা ও খোলামেলা আলোচনার জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকির পরেও ঠিক এসময়ে এ আয়োজন দরকার ছিল।

যেসব দেশে মুসলিম মহিলাদের বোরকা পরা নিষিদ্ধ

 
                                
জিহাদি হামলা ঠেকাতে সেনেগালের সরকার সেদেশে মহিলাদের বোরকা পড়া নিষিদ্ধ করার কথা ভাবছে। সরকারের যুক্তি হচ্ছে জিহাদি হামলায় যে ধরণের বোমা বা বিস্ফোরক ব্যবহৃত হয় বোরকার নীচে তা লুকিয়ে রাখা যায় খুব সহজে।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি দেশে বোরকা নিষিদ্ধ করার এই প্রস্তাবে অনেকেই বিস্মিত। বিষয়টি বড় বিতর্ক সৃষ্টি করেছে সেদেশে।
মূলত নাইজেরিয়া ভিত্তিক জঙ্গী গোষ্ঠী বোকো হারামের হুমকির মুখে সেনেগালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আবদুলায়ে দাউদা বোরকা নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছেন। সরকার বলার চেষ্টা করছে, তাদের এই প্রস্তাব কেবলই নিরাপত্তার স্বার্থে, এটাকে ইসলাম বিরোধী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা ঠিক হবে না।
মুসলিম মহিলাদের জন্য বোরকা নিষিদ্ধ করা নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। এর আগে আরও অনেক দেশে বোরকা এবং হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
মধ্য আফ্রিকার তিনটি দেশে বোরকা নিষিদ্ধ। এগুলো হচ্ছে শাড, গ্যাবন এবং কঙ্গো ব্রাজাভাইল।
                 বোরকায় আবৃত একদল আফগান মহিলা                
গত জুলাই মাসে ক্যামেরুনের কেবল উত্তরাঞ্চলে বোরকা নিষিদ্ধ করা হয়। আর তাদের পথ অনুসরণ করে কঙ্গো এবং গ্যাবন একই সিদ্ধান্ত নেয়।
পশ্চিম ইউরোপে বোরকা
২০১০ সালে ফ্রান্স যখন প্রথম ‘মুখ ঢাকা পোষাক’ নিষিদ্ধ করে তখন তা ইউরোপে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি করে। ইউরোপে ফ্রান্সই ছিল প্রথম দেশ যারা এ ধরণের পদক্ষেপ নেয়।
ফ্রান্সে কেবল বোরকা নয়, মুখ ঢাকা যে কোন পোশাক, মুখোশ, বালাক্লাভা, হেলমেট বা হুড – যা পরিচয় গোপন রাখতে সহায়তা করে, তা নিষিদ্ধ।
ফ্রান্সে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ মুসলিম বসবাস করে। পশ্চিম ইউরোপের মধ্যে ফ্রান্সেই সবচেয়ে বেশি মুসলিম। কিন্তু সেখানে মাত্র দু হাজার মুসলিম মহিলা এই আইন হওয়ার সময় বোরকা পড়তো।
সেসময়কার ফরাসী প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি ঘোষণা করেন যে ফ্রান্সে বোরকা পড়া চলবে না। ফ্রান্সের ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শের সঙ্গে এটিকে সংঘাতপূর্ণ বলে বর্ণনা করেন তিনি।
ফ্রান্সে বোরকা পড়লে ৩২ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত জরিমানার বিধান আছে আইনে।
এর বিরুদ্ধে ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত পর্যন্ত গিয়েছিল ফ্রান্সের মুসলিমরা। কিন্তু তাদের চেষ্টা সফল হয়নি।
নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের রাস্তা ধরে হেঁটে যাচ্ছেন এক মুসলিম মহিলা। এ বছরের মে মাসে সেদেশে বোরকা নিষিদ্ধ করা হয়।                
ফ্রান্সের পথ ধরে ২০১২ সালে বেলিজিয়ামে একই ভাবে নিষিদ্ধ করা হয় বোরকা।
নেদারল্যান্ডসের স্কুলগুলোতে ২০০৭ সালে বোরকা বা মুখ ঢাকা নিকাব নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞা পরে অন্যান্য প্রকাশ্য স্থানেও কার্যকর করা হয়েছে।
স্পেনের বার্সেলোনাতেও মার্কেট বা পাবলিক বিল্ডিংগুলোতে বোরকা নিষিদ্ধ।
তবে পশ্চিম ইউরোপে যখন এরকম পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, তখন উল্টো পথে হেঁটেছে আবার অনেক দেশ।
তুরস্কে বহু দশক ধরে বোরকা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু ২০১৩ সালে ক্ষমতাসীন এ কে পার্টি এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।
সিরিয়াতেও বোরকা পড়ার বিরুদ্ধে নানা রকম নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু ২০১১ সালে সেখানে শিক্ষকদের নিকাবে মুখ ঢাকার অনুমতি দেয়া হয়।
তিউনিসিয়াও ২০১১ সালে মাথা এবং মুখ ঢাকার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।
এর আগে পর্যন্ত তিউনিসিয়ায় বোরকা এবং হিজাবের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান ছিল বেশ কঠিন। এমনকি রাস্তায় কাউকে হিজাব পরিহিত অবস্থায় দেখলে পুলিশ তাকে থামিয়ে হিজাব খুলে নেয়ার নির্দেশ দিত। bbc

সন্ত্রাসী হামলার জন্য মুসলিমরা কেন ক্ষমা চাইবে?

 
                               
প্যারিসের সন্ত্রাসী হামলার জন্য একজন মুসলিম হিসেবে আমাকে কেন ক্ষমা চাইতে হবে? এরকম একটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে পাঁচ পাকিস্তানি তরুণের করা এক ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতে শেয়ার করছেন হাজার হাজার মানুষ। এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ লাখ মানুষ এই ভিডিওটি ফেসবুকে দেখেছেন।
প্যারিসে শনিবারের হামলার পর পশ্চিমা দেশগুলোতে আবারও ইসলাম আর সন্ত্রাসবাদের সম্পর্ক নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে। ইউরোপের বিরাট অভিবাসী মুসলিম সম্প্রদায়ের দিকে আবারও সন্দেহ আর অবিশ্বাসের নজর দিতে শুরু করেছে গণমাধ্যম। পাঁচ পাকিস্তানি তরুণ তাদের ভিডিওতে এরই জবাব দেয়ার চেষ্টা করেছেন।
শুরুতেই প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ফরাসী জনগণের সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশ করে তারা বলছেন, ফ্রান্স এখন যে অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে তা পাকিস্তানে প্রায় নিয়মিত ব্যাপার।
গত বছর পেশাওয়ারের এক স্কুলে সন্ত্রাসী হামলায় ১৩০ জনের বেশি শিশু নিহত হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে তারা বলছেন, পাকিস্তানের মানুষকে নিয়মিত এ ধরণের সন্ত্রাসী হামলার মোকাবেলা করতে হয়।
"প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার জন্য আমাদেরকে কেন জবাবদিহি করতে হবে? কয়েকজন মানসিক বিকারগ্রস্থ মানুষের কাজের জন্য আমাদের কেন ক্ষমা চাইতে হবে? ওরা নিজেদেরকে আমাদের মতো বলে দাবি করে বলে?"
"হিটলারের কাজের জন্য কি আপনারা সব জার্মানদের দায়ী করেন? মাও জেদং এর কাজের জন্য সব চীনাকে ? স্ট্যালিনের কাজের জন্য সব রুশকে?"
মুসলিমরাই বিশ্বে এই মূহুর্তে সন্ত্রাসবাদের সবচেয়ে বড় শিকার, একথা জানিয়ে ভিডিওতে তারা বলেন, বিশ্বের যে দশটি দেশে সবচেয়ে বেশি সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছে, তার আটটিই মুসলিম।
“আমরা আপনাদের মতই মানুষ। আপনাদের মতোই সমস্যা আমাদের। বিশ্বাস করুন একজন গড়পড়তা মুসলিম আপনার মতই হতাশ হয়, যখন দেখে তার ‘নাটেলা’ শেষ হয়ে গেছে। ক্রুদ্ধ হয় যখন বিশ্বকাপ ফুটবলে তার দল হারে। বিরক্ত হয় যখন সকালে কফি পান করতে পারে না। আর একটা জিনিসই তারা ছুরি দিয়ে কাটে কিংবা রোস্ট করে, ভালো এবং রসালো এক টুকরো বীফ স্টেক!”
(ফেসবুকে ভিডিওটি দেখতে এই লিংকটি আপনার ব্রাউজারে কপি-পেষ্ট করুন:
https://www.facebook.com/PakistaniComedians/videos/1491396007857238
 bbc

প্যারিস সন্ত্রাসী হামলার "মূল হোতা" অভিযানে নিহত

 
                                
ফ্রান্সে শুক্রবার সন্ত্রাসী হামলার প্রধান ষড়যন্ত্রকারী বলে যাকে সন্দেহ করা হচ্ছে সেই আব্দেলহামিদ আবাউদ মারা গেছে।
ফরাসী সরকার জানাচ্ছে গতকাল প্যারিসের স্য দেনি এলাকায় পুলিশ অভিযানে নিহত দুজনের একজন ছিল ঐ ব্যাক্তি।
ওদিকে শুক্রবার আরোপ করা জরুরী অবস্থার মেয়াদ আরো অন্তত তিন মাস বাড়তে চলেছে ফ্রান্সে।
প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালস তার এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সংসদকে অনুরোধ করেছেন।
কারণ হিসাবে, ফরাসী প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ইসলামিক স্টেট ফ্রান্সের ওপর জীবানু বা রাসায়নিক অস্ত্র দিয়ে হামলা চালাতে পারে।
আব্দেলহামিদ আবাউদকে ধরতে পুলিশের অভিযান                
ফরাসি কৌঁসুলি ঘোষণা করেছেন আব্দেলহামিদ আবাউদের আঙুলের ছাপ মিলিয়ে তারা নিশ্চিত হয়েছেন গতকালের পুলিশী অভিযানে সে নিহত হয়েছে।
পুলিশ যে ফ্ল্যাটবাড়িতে হানা দিয়েছিল সেখানে বুলেট আর বোমায় ছিন্নভিন্ন জিনিষপত্রের মধ্যে তার মৃতদেহ পাওয়া গেছে।
এদিকে ফরাসি সংসদের নিম্নকক্ষে সংসদ সদস্যেদের উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে ফ্রান্সে জারি করা জরুরি অবস্থা আরো তিন মাস বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মিঃ ভাল্‌স বলেছেন ফ্রান্সের আদর্শ ও মূল্যবোধের কারণেই ফ্রান্স সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে।
মি: ভালস্ বলেছেন ফ্রান্সের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখতে, মুক্ত আদর্শকে বাঁচিয়ে রাখতে জরুরি অবস্থা বজায় রাখা দরকার।
তিনি বলেন ফ্রান্সের আইন অনুযায়ী নাগরিকদের রক্ষা করতে ও তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে রাষ্ট্রপ্রধান দেশে অবিলম্বে ব্যতিক্রমী এই পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন।
স্বাধীনতা রক্ষার জন্য নিরাপত্তা অত্যাবশ্যকীয় উল্লেখ করে ফরাসি প্রধানমন্ত্রী বলেন সে কারণেই সাময়িকভাবে জনগণের অন্যান্য স্বাধীনতা খর্ব করা প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। জরুরি অবস্থা বহাল রাখা নিয়ে সংসদে বিতর্কের সময়ে প্রধানমন্ত্রী মানুয়েল ভালস্ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে ভবিষ্যতে সন্ত্রাসী হামলায় রাসায়নিক এবং জীবাণু অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকিও রয়েছে।
               
মিঃ ভালস্ ইউরোপের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যাতে বিমানযাত্রীদের সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য আদানপ্রদানের প্রক্রিয়া চালু করা যায়- এতে সম্মিলিতভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সুযোগ বাড়বে।
ইতিমধ্যে ফরাসি পুলিশকে কর্তব্যে না থাকলেও তাদের অস্ত্র বহন করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে কর্তব্যে না থাকা অবস্থায় তাদের হাতে আর্মব্যান্ড পরতে হবে যাতে মানুষ তাদের পুলিশ বলে বুঝতে পারে।
জরুরি অবস্থা জরির সময়ই পুলিশের প্রতি এই নির্দেশ জারি করা হয়। প্যারিসে রোববার মধ্যরাত পর্যন্ত সভাসমাবেশ ও বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যদিও অবশ্য প্যারিসে যেসব জায়গায় হামলা হয়েছিল সেসব জায়গায় তারা জড়ো হতে পারবে।
এদিকে শুক্রবার প্যারিস হামলার সঙ্গে জড়িতদের খোঁজে বেলজিয়ামে আজ বিভিন্ন জায়গায় হানা দিয়েছে পুলিশ। ফ্রান্সের স্টেডিয়ামের বাইরে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী যে নিজেকে বোমায় উড়িয়ে দিয়েছিল তার সর্ম্পকে তথ্য সন্ধানে এসব অভিযান চালানো হয়েছে। bbc

মুসলিম মহিলার 'পতাকা হিজাব' নিয়ে শোরগোল

 
                               
প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রে ইসলাম-বিদ্বেষ যখন আবার বাড়ছে, তখন এক মুসলিম মহিলা মার্কিন পতাকাকে হিজাব হিসেবে ব্যবহার করে টেলিভিশন অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছেন।
সাবা আহমেদ ফক্স টেলিভিশনে মেগান কেলির নিউজ প্রোগ্রামে হাজির হন তার এই অভিনব হিজাব পরে। তার এই ‘পতাকা হিজাব’ সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল শোরগোল সৃষ্টি করেছে।
সাবা আহমেদ ‘রিপাবলিকান মুসলিম কোয়ালিশন’ নামে এক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা। মেগান কেলির টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তিনি আমেরিকান মুসলিমদের ধর্মপালনের অধিকার নিয়ে কথা বলেন।
বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সাবা আহমেদ বলেছেন, মার্কিন পতাকায় মাথা আবৃত করার আইডিয়াটা আসে একেবারে শেষ মূহুর্তে। তিনি একটি বেগুনি বর্ণের হিজাব পরার পরিকল্পনা করছিলেন। কিন্তু ফক্স টেলিভিশনের কর্মীদের সঙ্গে কথার ভিত্তিতে মার্কিন পতাকাকেই হিজাব হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেন।
দেশপ্রেম এবং ইসলাম ধর্ম পালনের মধ্যে যে কোন বিরোধ নেই সেটা তুলে ধরতেই তিনি এই কাজ করেন।
অনুষ্ঠানে সাবা আহমেদকে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মুখপাত্রের মুখোমুখি হতে হয় তাকে, যিনি যুক্তি দিচ্ছিলেন যে সন্ত্রাসবাদ ঠেকানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রে মসজিদগুলো বন্ধ করে দেয়া উচিত।
সাবা আহমেদ বলেন, আমরা যে বার্তাটা দেয়ার চেষ্টা করছি তা হলো আমরা আমেরিকান, আমরা মুসলিম এবং আমরা রিপাবলিকান। আমাদেরকে জায়গা করে দিতে হবে এবং আমাদের গ্রহণ করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সাবা আহমেদের ‘পতাকা হিজাব’ বিরাট আলোড়ন তুলেছে।
অনেকেই তার হিজাবের প্রশংসা করেছেন। একজন লিখেছেন, আমেরিকান পতাকা হিজাব এ যাবত কালের আমার দেখা সবচেয়ে বেশি আমেরিকান জিনিস’। তবে অনেকে তার সমালোচনা করতেও ছাড়েনিনি। একজনের মন্তব্য, “এই পতাকার জন্য অনেক মার্কিন সেনা মারা গেছে। এটা তোমার হিজাব বানানোর জিনিস নয়।“ bbc

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কেন ব্যক্তিগত জেট বিমান নেই

                                

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট চলেন ‘এয়ারফোর্স ওয়ানে’। বিশ্বের আরও সব ক্ষমতাধর দেশের সরকার আর রাষ্ট্রপ্রধানদেরও আছে নিজস্ব ব্যবহারের জন্য সরকারি জেট। কিন্তু জি-টুয়েন্টিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম ব্রিটেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর প্রাইভেট জেটে চলাচল করবেন- ব্রিটিশরা বরাবরই এটাকে একটা অনাবশ্যক জাঁকজমক এবং বিলাসিতা হিসেবে দেখেছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার একবার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তার ব্যবহারের জন্য দুটি ব্যক্তিগত জেট কেনার। এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়েছিল তখন।
সমালোচকরা কটাক্ষ করে এর নাম দিয়েছিলেন ‘ব্লেয়ার ফোর্স ওয়ান’।
টনি ব্লেয়ারের উত্তরসুরী গর্ডন ব্রাউন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর অবশ্য এই প্রকল্প বাতিল করে দেন।
তবে এবার কনজারভেটিভ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের জন্য আবার ব্যক্তিগত জেট কেনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যমে এ নিয়ে আবারও তির্যক মন্তব্য শোনা যাচ্ছে। এবার এই প্রকল্পকে ‘ক্যাম ফোর্স ওয়ান’ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।
এয়ার ফোর্স ওয়ানে উঠছেন প্রেসিডেন্ট ওবামা                
ব্রিটিশ রাজকীয় বিমান বাহিনীর একটি ভয়েজার এ-থ্রী-হান্ড্রেড-থার্টি বিমানকে প্রধানমন্ত্রীর উপযোগী করে সাজানো হবে। এই বিমানটিতে আকাশে উড়ন্ত অবস্থায় তেল ভরা যায়।
সরকার অবশ্য যুক্তি দিচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এয়ারফোর্স ওয়ানের তুলনায় এটি কিছুই নয়। এতে বরং প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের খরচ কমবে- ইত্যাদি ইত্যাদি।
তবে বিরোধী লেবার পার্টি বলছে, সেটা বলার সময় এখনো আসেনি। প্রকৃত খরচ জানা যাবে যখন বিমানটি তৈরি হয়ে আসবে তখন।
ইউকিপ বলে যে ইমিগ্রেশন বিরোধী কট্টর ডানপন্থী দল, তার এক এমপি ডগলাস কার্সওয়েল বলেছেন, রাজনীতিকরা হয়তো ভাবতে পারেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর এরকম একটা বিমান থাকাটা যুক্তিসঙ্গত। কিন্তু সাধারণ মানুষ ব্যাপারটাকে সেভাবে দেখবে না।
অন্য অনেকের আশংকা, এরকম ব্যক্তিগত বিমান আসলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে আরও বেশি দূরে সরিয়ে দেবে।
সাধারণ মানুষের এই দৃষ্টিভঙ্গীর কারণেই হয়তো এতদিন পর্যন্ত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর জন্য প্রাইভেট জেট কেনার সাহস করেনি কোন সরকার।
bbc