ভারতের কলকাতার পার্ক স্ট্রিটে তিন বছর আগের এক গণধর্ষণের ঘটনায় তিন দোষীকে আজ দশ বছর করে জেল আর এক লক্ষ টাকা জরিমানার সাজা দেওয়া হয়েছে।
২০১২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী কলকাতার পার্ক স্ট্রীট অঞ্চলের একটি নাইট ক্লাব থেকে বেরুনোর পরে সুজেট জর্ডন নামে ৩৫ বছরের এক মহিলাকে চলন্ত গাড়িতে গণধর্ষণ করা হয়েছিল।
পর দিন ভোরে তাকে গাড়ি থেকে ফেলে দেয় দোষীরা।
জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয়মাসের কারাবাস করতে হবে তিনজনকে।
এই জরিমানার টাকা নির্যাতিতার পরিবারকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বুধবার কলকাতার নগর দায়রা আদালত সুমিত বাজাজ, রূমন খান আর নাসির খান – এই তিনজনকে দোষী বলে সাব্যস্ত করা হয়েছিল।
তিন জন গ্রেপ্তার হলেও এখনও মূল অভিযুক্ত কাদের খান ও মুহম্মদ আলি ধরা পড়ে নি।
অন্যদিকে মেনিঞ্জো-এনসেফেলাইটিস রোগে ভুগে এবছর ১৩ মার্চ হাসপাতালে মৃত্যু হয় নির্যাতিতা সুজেট জর্ডনের।
কাহারোলের আক্রান্ত ইসকনের মন্দির। ছবি: নাজমুল ইসলাম নয়ন
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় দিনাজপুর জেলার একটি মন্দিরে বৃহস্পতিবারের বোমা ও গুলির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আজ আরো এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
কাহারোল উপজেলায় হিন্দু ধর্মের অবতার কৃষ্ণের ভক্তদের সংগঠন ইসকনের ওই মন্দিরে আক্রমণের সময় একটি ধর্মসভা চলছিল। এ ঘটনায় দুজন আহত হন এবং পৃলিশ হামলাকারী সন্দেহে গতকালই একজনকে আটক করে।
এর পর আজ বীরগঞ্জ উপজেলার সিংড়া গ্রাম থেকে আটক করা হয় মোজাম্মেল হক নামে আরেক ব্যক্তিকে।
পুলিশ বলছে, আজ সিংড়ার শালবনের পাশে একটি বাড়িতে মোজাম্মেল হক আশ্রয় চাইলে বাড়িওয়ালা ও স্থানীয় লোকেরা তাকে সন্দেহবশত নানা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে থাকে। এক পর্যায়ে মোজাম্মেল হক দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে গ্রামবাসীরা তাকে ধাওয়া করে।
এসময় মোজাম্মেল হক আগ্নেয়াস্ত্র বের করে গ্রামবাসীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়, তাতে একজন আহত হয়।
এর পর গ্রামবাসী মোজাম্মেল হককে ইটপাটকেল মেরে আহত করে তাকে ধরে ফেলে। পরে পুলিশ এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায়।
কাহারোল থানার ওসি মনসুর আলি সরকার বিবিসি বাংলাকে বলেন, আটককৃত মোজাম্মেল হকের বাড়ি লালমনিরহাট এবং তার কাছ থেকে একটি ছোট এসএমজি উদ্ধার করা হয়েছে। আটক যুবককে পুলিশ তাদের হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
ওসি মনসুর আলি সরকার বলছেন, আটক সন্দেহভাজন দু’জনই দিনাজপুরের বাইরে থেকে আসা এবং সে কারণে তারা এই হামলাকে পরিকল্পিত বলে মনে করছেন।
তিনি বলেন, আটক দুই ব্যক্তিই আহত এবং তাদের এখন চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের একটি সংগঠন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের স্থানীয় নেতাকর্মীরা এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা প্রকাশ করে কাহারোলে এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে। ঢাকাতেও বিক্ষোভ হয়েছে।
দিনাজপুরে সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের ওপর কয়েকটি আক্রমণের ঘটনার মধ্যে এটি সর্বশেষ।
কয়েকদিন আগে দিনাজপুরে একটি উপজেলার ইসকন সভাপতির ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়।
এ ছাড়া কাহারোলেই কান্তজিউ’র মন্দির প্রাঙ্গণে যাত্রা প্যান্ডেলে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে কয়েকদিন আগে - যাতে পাঁচজন আহত হন।
সম্প্রতি একজন ইতালীয় যাজকের ওপর হামলা হয় দিনাজপুর শহরে, তবে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। কাদির কল্লোলবিবিসি বাংলা, ঢাকা
চীনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের একজন কুও গুয়াংচ্যাং-কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
তার কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
এই রহস্যজনক নিখোঁজ হবার ঘটনার পর জল্পনা চলছে যে হয়তো পুলিশ তাকে আটক করেছে। গত আগস্ট মাসে মি. কুওকে একটি দুর্নীতির মামলায় জড়িত করা হয়।
মি. কুও-র বয়েস মাত্র ৪৮, কিন্তু তার ব্যবসার সাম্রাাজ্য এর মধ্যেই সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।
ফোর্বস ম্যাগাজিনের অনুমান, তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৭০০ কোটি ডলার, এবং তিনি ফরাসী হলিডে ফার্ম ক্লাবমেডও নিয়ন্ত্রণ করেন।
তাকে বলা হয় চীনের ওয়ারেন বাফেট - বিনিয়োগের প্রতি তার উৎসাহের জন্য।
চীনের একটি সাময়িকী বলছে, মি. কুওর কোম্পানি ফোসুন ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, তারা বৃহস্পতিবারের পর থেকে তার সাথে কোন যোগাযোগই করতে পারে নি।
কোম্পানিটি শুক্রবার হংকং স্টক এক্সচেঞ্জকে বলেছে তারা যেন ফোসুম কোম্পানির শেয়ার বেচাকেনা বন্ধ রাখে।
বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতার হুমকি মোকাবেলায় মসজিদের ইমামদের জঙ্গীবাদ-বিরোধী বয়ান দিতে পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ।
একজন কর্মকর্তা বলছেন, এ ক্ষেত্রে মসজিদ-মাদ্রাসা ও ইমামদের যুক্ত করাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে দেশটির নিরাপত্তা সংস্থাগুলো।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মনে করছে দেশে জঙ্গি কার্যক্রমের হুমকি মোকাবেলায় এই মসজিদগুলো ভূমিকা রাখতে পারে।
সম্প্রতি পুলিশ প্রধান এ কে এম শহিদুল হক মসজিদের ইমামদের সাথে এ নিয়ে একটি বৈঠকও করেছেন। ইসলামের ধর্মের নাম ব্যবহার করে কেউ যাতে জঙ্গিবাদের দিকে আকৃষ্ট না হয়, সেজন্যই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানালেন পুলিশ প্রধান।
তিনি বলেন, “ইসলামের খন্ডিত ব্যাখ্যা দিয়ে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এর বিপরীতে সঠিক ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে হবে, সেজন্য জুম্মার নামাজের সময় বা নানা ধরনের ইসলামিক জলসায় জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বয়ান দিতে আহবান জানিয়েছি।”
প্রশ্ন হলো, এ কৌশল কতটা কাজে দেবে?
বাংলাদেশে অনেকের কাছেই ঢাকা মসজিদের শহর হিসেবে পরিচিত। প্রতিটি পাড়া মহল্লায অসংখ্য মসজিদ। সম্প্রতি ঢাকাসহ পুরো দেশের মসজিদগুলো আবারো আলোচনায় এসেছে।
মানবাধিকার কর্মীদের হিসেব অনুযায়ী বাংলাদেশে গত পাঁচ বছরে বছরে গড়ে একশো জন ব্যক্তিকে জঙ্গি কর্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ততার অবিযোগে আটক করা হয়েছে। যাদের অনেকেই আবার জামিনে বেরিয়ে এসেছেন।
নতুন নতুন জঙ্গি সংগঠনের নামও শোনা যাচ্ছে। গোয়েন্দা সংস্থা সম্প্রতি মুজাহিদ অব বাংলাদেশ নামের একটি নতুন জঙ্গি সংগঠনের কথা জানিয়েছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষক শাহেদুল আনাম খান বলছেন জঙ্গিবাদের বিপদ সম্পর্কে সরকার অনুধাবন করতে পেরেছে বলে তার মনে হয়।
সেজন্য মসজিদের ইমামদের সম্পৃক্ত করার বিষয়টিকে তিনি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন। মি. খান বলেন, যে ধরনের সন্ত্রাসবাদের মুখোমুখি আমরা হচ্ছি, সেটাকে মোকাবেলা করতে হলে দু’ভাবে করতে হবে। মতাদর্শিকভাবে মোকাবেলা করাটা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এই মুহুর্তে বাংলাদেশে ৪০টির মতো জঙ্গি সংগঠন রয়েছে। তবে সবচেয়ে সক্রিয় এবং আলোচিত জঙ্গি সংগঠনগুলোর মধ্যে আনসারউল্লাহ বাংলা টিম এবং জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ। অনেকে আবার পুরনো নাম বাদ দিয়ে নতুন নাম ধারণ করছে।
ব্লগার হত্যার জন্য আনসারউল্লাহ বাংলা টিম এবং অন্যান্য নাশকতামূলক কর্মকান্ডের জন্য জামাতুল মুজাহিদিনকে সন্দেহ করা হচ্ছে। সরকার মনে করে জঙ্গি সংগঠনগুলো যে নামেই থাকুক না কেন তাদের পেছনে রাজনৈতিক মদদ রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন জঙ্গিবাদের বিষয়টিকে শুধু মসজিদ মাদ্রাসায় নয় বয়ানের মাধ্যমেই নয়, সরকার এটিকে রাজনৈতিকভাবেও মোকাবেলা করছে ।
মি: ইমাম বলেন, এই জঙ্গিবাদ মোকবেলার জন্য আমারা ইমামদের বহু টাকা খরচে করে ইমামদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করেছি। তাছাড়া রাজনৈতিক দল হিসেবে আমারা নানা ধরনের কর্মসুচী করছি ।”
তবে মসজিদ বা মাদ্রাসায় জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রচারনার যে কৌশল সরকার নিয়েছে সেটি কতটা কাজে দেবে সরকারের এই উদ্যোগ?
মোহাম্মদপুরের একটি মসজিদের ইমাম মো: ইসমাইল হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন. "আমার প্রশ্ন হইল, মসজিদে যারা আসে তারা তো ভালো মনুষ। যারা জঙ্গি কাজ করে তারা তো মসজিদে আসেনা।"
বাংলাদেশে জঙ্গি কার্যক্রমের অভিযোগে বিভিন্ন সময় মাদ্রাসার ছাত্রদের যেমন আটক করা হয়েছে, তেমনি যারা মাদ্রাসায় পড়াশুনা করেননি সে রকম অনেক ব্যক্তিকেও আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত।
এমন অবস্থায় শুধু মসজিদ বা মাদ্রাসা ভিত্তিক প্রচারনা কতটা কাজে আসবে সেটি নিয়েও অনেকের প্রশ্ন আছে।
পুলিশ প্রধান এ কে এম শহিদুল হকও সে কথা মানছেন। তিনি বলছেন মাদ্রাসার বাইরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেউ কেউ জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকছে বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। সেদিকে তারা নজর রাখছেন।
সরকারের দিক থেকে জঙ্গি কার্যক্রমের বিরুদ্ধে মসজিদের ইমামদের ব্যবহারের কথা বলা হলেও এসব কথাবার্তা বেশিরভাগ ঢাকা শহর-কেন্দ্রিক। গ্রামাঞ্চলের বহু মসজিদ-মাদ্রাসায় সরকারী উদ্যোগ সম্পর্কে তেমন কোন সচেতনতা নেই।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক শাহেদুল আনাম খান বলছেন, সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে নানা চিন্তা থাকলেও মাঠ পর্যায়ে সিটি কতটা বাস্তবায়ন হচ্ছে সেটিও মূল্যায়ন করতে হবে।
মি: আনাম বলেন , গ্রামে-গঞ্জে এনিয়ে সচেতনতা তৈরী করতে হবে। কিন্তু সেটা কতটা হচ্ছে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সম্প্রতি ইসলামী চিন্তাবিদদের সাথে পুলিশ প্রধান যে বেঠক করেছেন সেখানে স্যাটেলাইট চ্যানেল পিস টিভি’র বাংলাদেশে সম্প্রচার বন্ধ করার দাবী জানিয়েছেন কেউ কেউ।
তাদের সেখানে ড: জাকির নায়েক যে ধরনের বক্তব্য দেন, সেটি অনেক সময় পরোক্ষভাবে জঙ্গিবাদ প্রতি উৎসাহিত করতে পারে বলে তাদের ধারণা।
এনিয়ে ইসলামী চিন্তাবিদদের মধ্যেও মতভেদ রয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশে মসজিদের ইমাম কিংবা মাদ্রাসার শিক্ষকদের মধ্যেও বিভিন্ন ধারা আছে। সেজন্য সমন্বিত উপায়ে আদর্শিকভাবে জঙ্গিবাদ মেকাবলা করা সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম বলছেন শিক্ষানীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে সরকার এ বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করেছে । আমরা কর্মমুখী শিক্ষার দিকে জোর দিয়েছি। মাদ্রাসার ছাত্ররা যাতে কিছু করে খেতে পারে।”
কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন বাংলাদেশ যে ধরনের জঙ্গিবাদের হুমকি মোকাবেলা করছে সেটি এখন আর আগের মতো নেই।
অনলাইন ভিত্তিক বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নতুন একটি চ্যালেঞ্জ তৈরী করেছে। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের অস্তিত্ব নিয়ে এখন কারো মনে কোন সংশয় নেই।
তবে পৃথিবীজুড়ে জঙ্গিবাদের যে ধারা তৈরী হয়েছে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য আরো বেশি চ্যালেঞ্জ তৈরী করবে বলে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করেন। আকবর হোসেনবিবিসি বাংলা, ঢাকা
বাংলাদেশে ফেসবুকে 'মজা লস?' নামে জনপ্রিয় একটি গ্রুপের অ্যাডমিনকে গ্রেফতারের পর দেশটিতে রাজনৈতিক বিষয়ে ব্যঙ্গবিদ্রূপের সীমা কোথায় হওয়া উচিত তা নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে।
ফেসবুকের ওই গ্রুপের একজন অ্যাডমিনকে সরকার গতকাল আটক করে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণার অভিযোগে।
কিন্তু এ ঘটনার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় এরকম সাইটগুলোতে যারা যান, তারা অনেকেই আশংকা করছেন, বাংলাদেশে নির্দোষ ব্যঙ্গবিদ্রূপের স্বাধীনতাও সরকার হরণ করতে চলেছে।
তবে প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা বলেছেন, ব্যঙ্গবিদ্রূপ অনেকে ক্ষেত্রেই শালীনতার মাত্রা ছাড়িয়ে রাজনৈতিক প্রচারণায় পরিণত হচ্ছে, সেটা গ্রহণযোগ্য নয়।
ফেসবুকের 'মজা লস?' নামে ফেসবুকের এই পেজটিতে হাস্যরস্যাত্বক ব্যঙ্গবিদ্রূপ করা হয় স্ট্যাটাস, ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে। সমসাময়িক নানা বিষয় ছাড়াও রাজনৈতিক ইস্যু এবং নেতানেত্রীদের ব্যঙ্গ করেও পোষ্ট ও ছবি দেয়া হয় সেখানে।
এধরণের বেশ কয়েকটি পেজ ফেসবুকে দেখা আয়। আসিফ ইন্তাজ রবি এসব পেজ এবং ওয়েবসাইটগুলো নিয়মিত পাঠক।
আসিফ ইন্তাজ বলছিলেন, "দিন শেষে তার কাছে এই পেজগুলো পড়াটা নির্ভেজাল বিনোদনের মত। বিশ্বের নানা দেশে - সেসব দেশের সমসাময়িক বিষয় নিয়ে হাস্যরসাত্মক অনুষ্ঠান, ও পত্রিকা বের হয়ে থাকে। মাঝে মাঝে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের অবতারণা করা হলেও প্রকাশ ভঙ্গি মজাদার হওয়ায় এক অর্থে সহজ ভাবে নেয়া হয় এসব পোষ্টকে।"
তাহলে বাংলাদেশে এ ধরণের ব্যঙ্গবিদ্রূপের ক্ষেত্রে আটকের মত ঘটনা কেন হচ্ছে?
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলছিলেন, ব্যঙ্গ করার নামে যদি শালীনতার বাইরে চলে যায় সেক্ষেত্রে সেটি উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা বলা হয়। জনগণের নিরাপত্তার খাতিরে সরকার এই পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে তিনি জানান।
ফেসবুক বন্ধ করা নিয়ে সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে হাস্যরস্যাত্বক পোষ্ট দেয় এই মজা লস পেজটি। মজা লসের এডমিনকে আটক করা হয় রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে ।
বাংলাদেশে চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী - যিনি রনবী নামে খ্যাত এবং রাজনৈতিক বিভিন্ন ইস্যুতে কার্টুন আঁকেন - বলছিলেন, ব্যঙ্গ কার্টুন করার ক্ষেত্রে তাকে সেল্ফ-সেন্সরশিপ করতে হয়। তিনি বলছিলেন, বাংলাদেশের সামাজিক অবস্থা ও সহনশীলতার বিষয়টি মাথায় রাখতে হয়।
রনবী মনে করেন ব্যঙ্গ করার ক্ষেত্রে যদি বিষয়টি সরাসরি বক্তব্য হয় তাহলে তা ব্যঙ্গের পর্যায়ে থাকে না। এদিকে ফান পেজের যারা নিয়মিত ফলো করেন বা পরেন তারা, 'মজা লস?' পেজের এডমিনকে আটক করারর ঘটনায় নিজের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
'মজা লস?' ছাড়াও 'কইয়া দিমু টেলিভিশন', 'রেডিও মুন্না', 'মতিকন্ঠ' নামে ওয়েবসাইট ও পেজ রয়েছে যেখানে সমসাময়িক ইস্যু ছাড়াও রাজনৈতিক বিষয়ে ব্যঙ্গবিদ্রূপ করা হয়।
তাদের লাইকের সংখ্যা প্রায় সাত লাখের কাছাকাছি। আর দৈনিক মতিকন্ঠের ফেসবুক পাতায় প্রায় দুই লক্ষ লাইক। ফারহানা পারভীনবিবিসি বাংলা, ঢাকা
কাঁচা পাট রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাংলাদেশকে অনুরোধ জানিয়েছে ভারত।
ভারতে এবার কাঁচাপাটের উৎপাদন ১৫ থেকে ২০% কম হয়েছে। তাই এবছর ভারতের চটকলগুলি চালু রাখার জন্যই বাংলাদেশের কাঁচা পাট প্রয়োজন বলে সরকারীভাবে জানানো হচ্ছে।
ভারতের পাট ব্যবসায়ীদেরও এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ব্যবসায়িক ক্ষতি হতে চলেছে।
অন্যদিকে কাঁচামালের যোগান কম থাকা স্বত্ত্বেও যাতে চটকলগুলি পরবর্তী ফসল না ওঠা পর্যন্ত চালু রাখা যায়, তার জন্য উৎপাদন কম করা, কাঁচামাল মজুত রাখার নতুন সীমানির্ধারন সহ বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা নিয়েছে ভারত সরকার।
বলা হচ্ছে, এইসব ব্যবস্থা না নিলে মার্চের পরে হয়তো অনেক চটকলই বন্ধ হয়ে যাবে সাময়িকভাবে।
ভারতের জুট কমিশনার সুব্রত গুপ্ত বিবিসি-কে বলছিলেন, “কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রক ঢাকায় আমাদের দূতাবাসকে জানিয়েছে যাতে তারা বাংলাদেশকে কাঁচাপাট রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে অনুরোধ করে।
বাংলাদেশের নিষেধাজ্ঞা ভারতের চটশিল্পের ওপরে একটা বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন শিল্পপতি সঞ্জয় কাজারিয়া।
মি. কাজারিয়ার কথায়, “এটা দেশের পাটশিল্পের ওপরে একটা বড় ধাক্কা। এবছর দুই দেশেই ফসল মার খেয়েছে, কাঁচাপাটের উৎপাদন কম হয়েছে। সেজন্যই বাংলাদেশকে রপ্তানির ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হয়েছে যাতে তাদের দেশের চটকলগুলি চালু রাখা যায়।
তিনি অবশ্য বলেন, যদিও ভারত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে অনুরোধ করেছে, সেটা কতটা মানবে বাংলাদেশ - তাতে সন্দেহ রয়েছে।
আর এক শিল্পপতি ঘণশ্যাম সারদা অবশ্য মনে করেন, “বাংলাদেশ যেমন নিজেদের শিল্পকে বাঁচানোর জন্য কাঁচাপাট রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে, শুধু তৈরী বস্তাই তারা রপ্তানী করতে চায়, তেমনি ভারতেরও উচিত বাংলাদেশ থেকে চটের বস্তা আমদানির ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা।"
"অন্তত এরকম ব্যবস্থা তো করা যেতেই পারে, যে পরিমান কাঁচাপাট তারা দেবে, সেই পরিমান চটের বস্তা ভারতে ঢুকতে দেওয়া হবে।“ বলেন তিনি।
ফসল মার খাওয়ার বছরেও যাতে চটকলগুলি পরবর্তী ফসল না ওঠা পর্যন্ত খোলা রাখা যায়, তার জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ জানানোর সঙ্গেই আরও কতগুলি ব্যবস্থা নিয়েছে।
ভারতে মোট ৮৪টি চটকল রয়েছে – যার মধ্যে ৬৪টি-ই পশ্চিমবঙ্গে। এই শিল্পের সঙ্গে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ শ্রমিক সরাসরি যুক্ত আর পাট চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় চল্লিশ লক্ষ মানুষ।
সারাদেশে পাটশিল্পের প্রধান ক্রেতা ভারত সরকার – মূলত খাদ্য সরবরাহের জন্যই চটের বস্তা কিনে নেয় তারা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই গোটা শিল্পে কাঁচামালের যোগান হঠাৎ কমে গেলে তার প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী। অমিতাভ ভট্টশালীবিবিসি বাংলা, কলকাতা
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা দিনাজপুরে গতকাল এক হিন্দু মন্দিরে হামলার পর এখন পর্যন্ত দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। রংপুর এবং দিনাজপুরে গত কিছুদিনের মধ্যে সংখ্যালঘু ও বিদেশীদের ওপর একের পর এক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
দিনাজপুরের কাহারোলে ইসকন মন্দিরে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলার সময় হামলাকারিদের গুলিবর্ষণ ও বোমায় দু’জন আহত হয়।
এর আগে অক্টোবরের শেষে রংপুরে এক জাপানি নাগরিককে হত্যা করা হয়। এর পর নভেম্বর মাসে দিনাজপুরে এক ইটালিয়ান খ্রীষ্টধর্ম যাজকের ওপর হামলা হয়, সপ্তাহখানেক আগে বোমা হামলা চালানো হয় দিনাজপুরে কান্তজিউর মন্দিরে।
আগেকার ঘটনাগুলোর সাথে জঙ্গী সংগঠনের সংশ্লিষ্টতার কথা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল।
এখন এ প্রশ্ন অনেকের মনেই দেখা দিয়েছে যে হঠাৎ করে ওই অঞ্চলে সংখ্যালঘু বা বিদেশীদের টার্গেট করে এধরণের হামলা বেড়ে যাওয়ার কারণ আসলে কি।
রংপুর বিভাগের পুলিশের ডিআইজি হুমায়ুন কবির বলছেন, ঘটনাগুলোর মধ্যে একটা যোগসূত্র আছে বলে তারা ধারণা করছেন।
পুলিশ বলেছে, ইসকন মন্দিরে এ হামলাকে পরিকল্পিত বলেই মনে করছে তারা, কারণ আটক সন্দেহভাজন দু’জনই দিনাজপুরের বাইরে থেকে আসা।
আটক মোজাম্মেল হক লালমনিরহাটের এবং এর আগে আটককৃত শহীদুলের বাড়ি গাইবান্ধা বলে পুলিশ বলছে।
কাহারোলে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনসুর আলি সরকার বলছেন, তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, "ওইখানে কোন থ্রেট ছিল না। হঠাৎ করে পরিস্থিতিতে অস্বাভাবিক করার জন্যই তারা এ ঘটনাটা ঘটিয়েছে।"
স্থানীয় সংখ্যালঘু নেতারা বলছেন, এ অঞ্চলে এধরণের আক্রমণ আগে কখনো ঘটেনি। তাদের মধ্যে এ ঘটনার পর উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
পুলিশ বলছে, তারা পুরো এলাকাতেই ঘটনার পর নিরাপত্তা জোরদার করেছে। কাদির কল্লোলবিবিসি বাংলা, ঢাকা
হুমকি পাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটিতে তল্লাশী শুরু করে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে মুসলিম একটি শীর্ষ প্রতিষ্ঠানে আসা একটি চিঠিতে হিংসাত্মক বার্তা আর সাদা পাউডার পাওয়ার পর আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
কাউন্সিল অন আমেরিকান ইসলামিক রিলেশন্স নামের ওই প্রতিষ্ঠানটিতে আসা বার্তায় লেখা ছিল, ''মুসলিমরা, তোমাদের কষ্টকর মৃত্যু হোক।''
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা নাগাদ (বাংলাদেশ সময় রাত ১টা) এ ঘটনার পরপরই পুরো কার্যালয়টি খালি করে ফেলা হয়।
চিঠির সঙ্গে থাকা পাউডারে বিষাক্ত জীবাণু থাকতে পারে, এই আশংকায় দুইজন কর্মীকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হলেও, পরে আশংকাজনক কিছু পাওয়া যায়নি।
ওই চিঠিটি পরীক্ষা করতে শুরু করেছে সেদেশের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই।
সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান বার্নাডিনোয় সন্ত্রাসী হামলার পর, মুসলিম বিরোধী মনোভাবের বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
আমেরিকার মুসলিম নেতারা বলছেন, এ ধরণের হুমকি নতুন নয়, কিন্তু প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার পর এই প্রবণতা আরো বেড়েছে।