বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

ব্রিটেনে খালেদার সফর নিয়ে ঠাণ্ডা লড়াই শুরু



বাংলাদেশের বিরোধী দল বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার লন্ডনে এসে নামার কথা বুধবার সকালে।
তবে এই সফরকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের রাজনৈতিক মহলে ঠাণ্ডা লড়াই শুরু হয়েছে।
সোমবার ইউকে আওয়ামী লীগ এক বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সফরের সময় খালেদা জিয়া যেখানে থাকবেন, যেখানে যাবেন, সেখানেই তারা বিক্ষোভ করবে। বিএনপি নেত্রীকে কালো পতাকা দেখানো হবে।
ইউকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক বিবিসি বাংলাকে বলেন, "সম্প্রতি সরকার বিরোধী আন্দোলনে বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছেন তিনি। আমরা তার প্রতিবাদ জানাবো। আগুন সন্ত্রাসী হিসাবে তাকে কালো পতাকা দেখাবো।"
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লন্ডন সফরের সময় বিএনপির করা বিক্ষোভ নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ রয়েছে। খালেদা জিয়ার সফরের সময় তারা বদলা নেওয়ার চেষ্টা করবে।
তবে ইউকে বিএনপির প্রেসিডেন্ট আব্দুল মালেক সাবধান করেছেন, তার নেত্রীকে হেনস্তা করার যে কোন চেষ্টা তারা প্রতিরোধ করবেন।
বিবিসিকে তিনি বলেন, "আওয়ামী লীগ আমাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি করলে, আমরা বসে থাকবো না। আওয়ামী লীগের বোঝা উচিৎ পরিস্থিতি ব্যক্তিগত পর্যায়ে গড়াতে পারে।"
মি মালেক বলেন, তাদের বিক্ষোভ ছিল একজন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে, ব্যক্তি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ছিলনা। "খালেদা জিয়া এখন বিরোধী দলীয় নেত্রীও নন, এমনকি এমপিও নন।"

গোপন রাখা হচ্ছে খালেদার কর্মসূচি
খালেদা জিয়া কখন এসে নামবেন, কোথায় থাকবেন, কোনও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করবেন কিনা তা নিয়ে এমনকি বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যেও বিভ্রান্তি রয়েছে।
নেত্রীকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানানোর কোনো আনুষ্ঠানিক কর্মসূচিও বিএনপি নেয়নি।
আব্দুল মালেক অবশ্য বলেন, খালেদা জিয়া তার ছেলে তারেক রহমানের বাড়িতে থাকবেন না।
"আমি এটা নিশ্চিত করতে পারি, তিনি ছেলের বাড়িতে থাকবেন না। তিনি হোটেলে থাকবেন।"
বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, খালেদা জিয়া লন্ডনে অবস্থানকালে একাধিক জায়গায় থাকতে পারেন।
মি মালেক বলেন, বিএনপি নেত্রী আসছেন প্রধানত চিকিৎসার জন্য। "কোনো সভা সমিতি হবে কিনা তা নেত্রীর আসার পর পরিস্থিতি বুঝে ঠিক করা হবে।"
তবে তিনি জানান, ঈদুল আযহার দিনে দলের স্থানীয় নেতা-কর্মী, সাংবাদিক এবং কম্যুনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে খালেদা জিয়ার একটি সৌজন্য সাক্ষাতের পরিকল্পনা করেছেন তারা।
খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান গত বছর সাতেক ধরে লন্ডনে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন।

সিরিয়ায় বিমান ঘাঁটি তৈরি করছে রাশিয়া?

 সিরিয়ার লাতাকিয়া বিমান ঘাঁটিতে রুশ কার্গো বিমান

সিরিয়ার লাতাকিয়া শহরের কাছে রাশিয়ার সামরিক তৎপরতা বেড়ে যাওয়া নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে তীব্র সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
পশ্চিমাদের বক্তব্য সিরিয়ার উপকূলীয় এই এলাকায় সম্প্রতি রুশ সমরাস্ত্র এবং লোকজনের গতিবিধি বেড়ে গেছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন খোলাখুলি বলছে রাশিয়া লাতাকিয়ায় একটি বিমান ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করছে।
পেন্টাগনের মুখপাত্র জেফ ডেভিস বলেছেন, "আমাদের কাছে খবর আছে রাশিয়া লাতাকিয়া এবং আশপাশে বহু সমরাস্ত্র, রসদ এবং মানুষজন মোতায়েন করেছে। মনে হচ্ছে সেখানে তারা বিমান হামলা পরিচালনার জন্য একটি ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।"
সিরিয়ার ভেতর ক্রমবর্ধমান রুশ সামরিক গতিবিধির খবর এমন সময় আসছে যখন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার পশ্চিমা মিত্ররা সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে।
সিরিয়ায় ভেতরে সৈন্য মোতায়েনের প্রস্তাব নিয়েও ভেতরে ভেতরে আলোচনা চলছে।
পেন্টাগনের মুখপাত্র জেফ ডেভিস খোলাখুলি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রুশ সামরিক তৎপরতার কারণে পশ্চিমাদের সাথে সেখানে সংঘর্ষ বেঁধে যেতে পারে।
লাতাকিয়া উপকূলে রুশ যুদ্ধ জাহাজ।
নিউইয়র্ক থেকে বিবিসির সংবাদদাতা বারবারা প্লেট বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ভয় পাচ্ছে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াইতে কোণঠাসা প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদের সাহায্যে রাশিয়া হয়তো এখন হয়তো সরাসরি মাঠে নামছে।
সম্প্রতি সিরিয়ার সরকার বিদ্রোহীদের কাছে নতুন করে বেশ কিছু অঞ্চল হারিয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিমান ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণও সরকারি সৈন্যরা হারিয়েছে।
এর পরই মালবাহী দুটো রুশ বিমান লাতাকিয়ায় এসে নামায় যুক্তরাষ্ট্রের ভেতর সন্দেহ তৈরি হয়।
তবে রাশিয়া এবং সিরিয়ার সরকার বলছে, শরণার্থীদের জন্য তাঁবু এবং অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী আনা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র এই ব্যাখ্যা বিশ্বাস করছে না এবং এ ব্যাপারে তাদের মিত্রদের সতর্ক করছে।
সম্প্রতি বুলগেরিয়ার সরকার রুশ সামরিক বিমানকে তাদের আকাশপথ ব্যবহার করতে দিকে অস্বীকার করেছে ।
গত সপ্তাহে মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে রয়টরস সংবাদ সংস্থা জানায়, রাশিয়া সিরিয়ার উপকূলীয় শহর টারটুসে তাদের নৌ ঘাঁটিতে দুটো ট্যাংক বহনকারী জাহাজ নিয়ে গেছে। একদল রুশ নৌ সেনাকেও মোতায়েন করা হয়েছে।
রাশিয়া সিরিয়ার বর্তমান সরকারের সমর্থক। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র বাসার আসাদ সরকারের পতন চাইছে।
bbc

হাঙ্গেরিতে ঢুকলেই গ্রেপ্তার, অনশনে অভিবাসীরা

 
কাঁটাতারের বেড়া গলে অনেক অভিবাসী সার্বিয়া থেকে হাঙ্গেরিতে ঢুকে পড়ছে
ইউরোপ অভিমুখে শরণার্থীদের স্রোত ঠেকাতে হাঙ্গেরি তার দক্ষিণ সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে জরুরী অবস্থা জারী করেছে।
আজ (মঙ্গলবার) থেকে যারা এই সীমান্ত অবৈধভাবে পার হওয়ার চেষ্টা করবে তারা ফৌজদারি অপরাধী হিসেবে বিবেচিত হবে। শাস্তি হিসেবে কারাদণ্ড অথবা তাকে ফেরত পাঠানো হবে।
জরুরী অবস্থা জারীর কয়েক ঘণ্টা ঘণ্টা আগে সার্বিয়ার সীমান্ত পার হয়ে অভিবাসীরা যাতে দেশটিতে ঢুকতে না পারে সেজন্যে একটি কঠোর আইন করা হয়।
আইনটিতে শরণার্থী ঠেকাতে পুলিশকে বিশেষ কিছু ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সৈন্যও মোতায়েন করার কথাও বলা হয়েছে।
হাঙ্গেরির পুলিশ বলছে সীমান্তের কাঁটাতার পেরিয়ে অবৈধ ভাবে আসার চেষ্টা করছিল এমন ৬০ জন অভিবাসীকে ইতিমধ্যে আটক করেছে তারা।
এর আগে সোমবার মধ্যরাতে আইনটি কার্যকর হওয়ার পর সার্বিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে যে রেললাইন ক্রসিং পয়েন্ট দিয়ে হাজার হাজার মানুষ হাঙ্গেরিতে ঢুকছিল সেটি বন্ধ করে দেয় পুলিশে।
কাঁটাতার দেওয়ার পাশাপাশি সীমান্তে টহল বাড়িয়েছে হাঙ্গেরি
অভিবাসীদের ঠেকাতে অশ্বারোহি পুলিশ সীমান্ত এলাকাতে টহল দিচ্ছে।
গত এক বছরে হাঙ্গেরিতে সব মিলিয়ে দুই লক্ষের বেশি অভিবাসী ঢুকেছে। তাদের সিংহভাগই অবশ্য অস্ট্রিয়া হয়ে জার্মানি সহ ইউরোপের অন্যান্য কয়েকটি দেশে চলে গেছে।
প্রতিবাদে সার্বিয়া-হাঙ্গেরি সীমান্তে দুশরও বেশি অভিবাসী অনশন ধর্মঘট শুরু করেছে। হাঙ্গেরিতে ঢুকতে না দেওয়া পর্যন্ত তারা খাবার - পানীয় স্পর্শ করবে না বলে হুমকি দিয়েছে।
ইউরোপ নিয়ে জার্মানির ক্ষোভ
ওদিকে, অভিবাসন সঙ্কট নিয়ে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল ইউরোপীয় ইউনিয়নের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের নিয়ে একটি জরুরী শীর্ষ বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন।
আশ্রয়প্রার্থীদের ইউরোপ জুড়ে ভাগাভাগি করে নেওয়ার এক প্রস্তাবে মধ্য ইউরোপের দেশগুলো সোমবার আটকে দেয়। তারপর জার্মান চ্যান্সেলর এই আহ্বান জানান।
শরণার্থী প্রার্থীদের দায়ভাগ নিতে অস্বীকৃতির জন্য তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জার্মানি।
জার্মান ভাইস চ্যান্সেলর সিগমার গ্যাব্রিয়েল মন্তব্য করেন, ইউরোপের জন্য এটা লজ্জার ব্যাপার।
bbc