শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

সজীব ওয়াজেদ: 'এটা গণমাধ্যমের ওপর আঘাত নয়'

Image copyrightfacebook
Image captionসজীব ওয়াজেদের শুক্রবার দেওয়া ফেসবুক স্ট্যাটাস
ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে সারা দেশে মামলা দায়ের করাকে গণমাধ্যমের ওপর আঘাত নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা ও তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।
সজীব ওয়াজেদ তাঁর ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘‘এটা গণমাধ্যমের ওপর আঘাত নয়। এটা ফৌজদারি মামলাও নয়। এটা হলো দেওয়ানি মামলা। আধুনিক আইনি ব্যবস্থাসম্পন্ন সব দেশেই এটা ঘটে।”
বাংলাদেশের “সুশীল সমাজ”এর কিছু অংশ এবং কিছু সংবাদপত্রের সম্পাদক মাহফুজ আনামের স্বীকারোক্তির পর তার বিরুদ্ধে হওয়া দেওয়ানি মানহানির মামলাগুলোর যে সমালোচনা করছেন তার সমালোচনা করে মিঃ ওয়াজেদ লিখেছেন ‘‘আমাদের সরকার তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের করেনি। মামলাগুলো সবই দেওয়ানি প্রকৃতির, যা খেসারত এবং আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবিতে দায়ের করা।”
তিনি প্রশ্ন করেছেন, ‘‘তাই আমি জানতে চাই, যা কিছু ঘটেছে তাতে গণমাধ্যমকে দায়মুক্তি দেয়া যায় কিনা?”
‘‘মাহফুজ আনাম স্বীকার করেছেন কেবল একটিই নয়, এসব মিথ্যা কাহিনী ধারাবাহিকভাবে তিনি আমার মায়ের বিরুদ্ধে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা এবং একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে চালিয়েছেন। তার কর্মকাণ্ডের ফলে আমার মা তার এই বয়সে ১১ মাস জেলে কাটিয়েছেন। এত সবকিছুর পর তিনি বলেন, “ওহহো, আমার ভুল হয়েছে!” এবং আমাদের সেসব ভুলে যেয়ে এগুতে হবে? আমার মা, আমার পরিবার এবং আমাদের দল আওয়ামী লীগের পক্ষে কোনই বিচার থাকবে না? সেখানে কোনই জবাবদিহিতা থাকা উচিৎ না?”
আজ শুক্রবার তার ফেসবুক পেজে দেওয়া স্ট্যাটাসে সজীব ওয়াজেদ আরও মন্তব্য করেন, ‘‘আপনি যদি কারও ক্ষতি করেন, সংক্ষুব্ধ পক্ষের আপনার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ মামলা করার সবধরনের অধিকার রয়েছে। মাহফুজ আনাম যদি হয়রানি বোধ করেন, মিথ্যা অভিযোগে ১১ মাস জেলে কাটানোর অনুভূতি কেমন সম্ভবত তা তার জানা উচিৎ।”
‘‘রাজনীতিকদের আইন মেনে চলতে হবে নয়তো জেলে যেতে হবে, পুলিশকে আইন মেনে চলতে হবে নতুবা জেলে যেতে হবে, কিন্তু মিথ্যা কাহিনী লেখার জন্য কোন আইন থাকবে না। দেওয়ানি আইনে রাজনীতিক এবং বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের একমাত্র আশ্রয় হচ্ছে ক্ষতিপূরণ চাওয়া। অন্য কিছু যদি নাও হয়, শুধুমাত্র উকিল খরচ এবং আদালতে যাওয়ার সময় বিবেচনায় একজন সাংবাদিককে মিথ্যা ছাপানো এবং অন্যের সুনাম ক্ষুণ্ণের আগে ২য় বার ভাবানো উচিৎ। যদিও, এই গোত্রের লোকেরা এটুকু স্বল্পমাত্রার জবাবদিহিতাও চায় না। তার বদলে তারা একে গণমাধ্যমের উপর আঘাত আখ্যা দিয়ে কাঁদা ছোড়াছুড়ি করতে চায়,” বাংলায় এবং ইংরেজিতে লেখা এই স্ট্যাটাসে মন্তব্য করেছেন সজীব ওয়াজেদ।
সম্প্রতি এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই-এর দেয়া তথ্য যাচাই না করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে খবর প্রকাশ করার বিষয়ে ভুল স্বীকার করেছেন।
এনিয়ে বিতর্কের মধ্যে মি: আনামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও মানহানির অভিযোগে এ পর্যন্ত সত্তরটির বেশি মামলা হয়েছে।

বিদেশ থেকে শ্রমিক নেয়ার সিদ্ধান্তে মালয়েশিয়ার ইউ-টার্ন

Image copyrightAFP
Image captionবাংলাদেশ থেকে ১৫ লাখ শ্রমিককে মালয়েশিয়া নেওয়া হবে বলে বৃহস্পতিবারই দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছিল।
মালয়েশিয়া সরকার বিদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়া বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ হামিদি বলেছেন, মালয়েশিয়ার কতো বিদেশি শ্রমিক প্রয়োজন সেবিষয়ে সঠিক তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত বিদেশি শ্রমিক নেওয়া স্থগিত থাকবে।
বাংলাদেশ থেকে আগামী পাঁচ বছরে ১৫ লাখ শ্রমিক নেওয়ার ব্যাপারে দুটো দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই মালয়েশিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হলো।
মালয়েশিয়ায় ন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা বলছেন, বিদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ায় অনিয়ম ও প্রতারণার অভিযোগে সমালোচনার মুখেই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে ১৫ লাখ শ্রমিক নেয়ার জন্য মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ বিষয়ক মন্ত্রী দু’দিন ঢাকা সফর করেছেন।
Image copyrightAFP
Image captionমালয়েশিয়ায় এখন প্রায় সাড়ে ২১ লাখ বিদেশি শ্রমিক বৈধভাবে কাজ করছে আর অবৈধভাবে রয়েছে ৪০/৫০ লাখের মতো বিদেশি শ্রমিক
ঢাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার শ্রমিক নেওয়ার ব্যাপারে মালয়েশিয়া বাংলাদেশের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে।
কিন্তু পরদিনই মালয়েশিয়ার উপ প্রধানমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ হামিদি বিদেশি কর্মী নেয়া স্থগিত করার ঘোষণা দেন। তার এই ঘোষণা দেশটির গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে।
মালয়েশিয়ার শ্রমিকদের জাতীয় ফোরাম ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের সেক্রেটারি জেনারেল গোপা ক্রিসম্যান জানিয়েছেন, তাদের দেশের উপ প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্পে বৈঠকের পর বিদেশি শ্রমিক নেয়া স্থগিতের ঘোষণা দেন।
তিনি আরও জানিয়েছেন, “বিদেশী শ্রমিক নেয়া স্থগিত করার কারণ হিসেবে মালয়েশিয়া সরকার বলেছে, কতো শ্রমিক প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহের পর পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে। সেই সময় পর্যন্ত বিদেশি কর্মী নেয়া স্থগিত থাকবে।”
অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়ে মালয়েশিয়ায় কাজ করে কারাম নামে একটি সংগঠন। এর সমন্বয়কারী হারুন আল রশিদ বলছিলেন, বিদেশী শ্রমিক নেয়ার ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ায় দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ এখন সামনে আসছে। এসব অভিযোগ নিয়ে শ্রমিক সংগঠনগুলোর প্রতিবাদ এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার মধ্যে বিদেশি শ্রমিক নেয়া স্থগিত করা হলো।
Image copyrightAFP
Image captionবাংলাদেশসহ জনশক্তি রপ্তানিকারক দেশগুলো থেকে কর্মী আনার ব্যবসা মালয়েশিয়ায় লোভনীয় ব্যবসায় পরিণত হয়েছে বলছে মালয়েশিয়ার ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস।
মালয়েশিয়ার ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের নেতা গোপা ক্রিসম্যান জানিয়েছেন, তাদের দেশে এখন প্রায় সাড়ে ২১ লাখ বিদেশি শ্রমিক বৈধভাবে কাজ করছে আর অবৈধভাবে রয়েছে ৪০/৫০ লাখের মতো বিদেশি শ্রমিক।
গোপা ক্রিসম্যান উল্লেখ করেছেন, অবৈধভাবে থাকা শ্রমিকদের বেতন কম দেয়াসহ নানাভাবে প্রতারণা করা হচ্ছে। এই শ্রমিকদের বৈধভাবে কাজের সুযোগ সৃষ্টির বিষয়কে অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য তারা সরকারের সাথে আলোচনা করছিলেন।
মালয়েশিয়ার এই ট্রেড ইউনিয়ন নেতা আরও বলেছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মুখেই সরকার শ্রমিক আনা স্থগিত করেছে।
“বাংলাদেশসহ জনশক্তি রপ্তানিকারক দেশগুলো থেকে কর্মী আনার ব্যবসা এখানে লোভনীয় ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। এই ব্যবসায় একটা গোষ্ঠী রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাচ্ছে। এরসাথে মালয়েশিয়া সরকারের কারও কারও জড়িত থাকার অভিযোগ উঠছে।এই অভিযোগ নিয়ে আমাদের প্রতিবাদের মুখে সরকার এখন বিদেশি কর্মী নেয়া স্থগিত করলো।”
এদিকে, বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ১৫ লাখ শ্রমিক নেয়ার সমঝোতার পরদিনই মালয়েশিয়ার ভিন্ন ঘোষণায় বাংলাদেশ অবাক হয়েছে।
বিষয়টাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত জানার পরই বাংলাদেশ বক্তব্য দেবে। তবে বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার সাথে আলোচনা অব্যাহত রাখবে।

বাংলাদেশে আর থাকতে চায় না অনেক রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু


Image copyrightBBC Bangla
Image captionঅনেক রোহিঙ্গা ভাবছেন বাংলাদেশে তাদের অবস্থা ফিরবে, অনেকেই চাইছেন নিজের দেশে ফিরে যেতে।

বাংলাদেশে যখন রোহিঙ্গা গণনা শুরু হতে যাচ্ছে তখন মিয়ানমারে নতুন গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। এ বাস্তবতায় বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা ভবিষ্যত সুদিনের স্বপ্ন দেখছেন।
বাংলাদেশে তাদের পরিস্থিতি আরো ভাল হবে এমন প্রত্যাশা যেমন আছে তেমনি অনেকেই চান নিজের দেশে ফিরে যেতে।
টেকনাফের লেদা নামে অনিবন্ধিত এক রোহিঙ্গা শিবিরে সরকারি লোকজন দেখে আগ্রহ নিয়ে ছুটে আসে রোহিঙ্গা শিশু। এদের পূর্বপুরুষ সবাই মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বহু বছর আগে। এ শিবিরে চার হাজার পরিবারে আনুমানিক ৩০ হাজার জনগোষ্ঠীর বসবাস করছে। বাংলাদেশ সরকারের শুমারির উদ্যোগকে ইতিবাচক ভাবেই নিয়েছেন এখানকার রোহিঙ্গারা।
এই প্রতিবেদনের ভিডিও ইউটিউবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

Image copyrightBBC Bangla
Image caption২০০৩ সালে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন আব্দুল মোতালেব। মিয়ানমারে তিনি সক্রিয় রাজনীতি করতেন।

ছয় সন্তান স্ত্রী ফেলে রেখে ২০০৩ সালে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন আব্দুল মোতালেব। মিয়ানমারে তিনি সক্রিয় রাজনীতি করতেন। অং সাং সুচির দল এনএলডির কর্মী এবং সংগঠকও হিসেবেও কাজ করতেন মোতালেব। তিনি বলছেন পরিস্থিতির উন্নতি হলে, নাগরিকত্ব পেলে তারা দেশে ফিরতে চায়।
মিয়ানমারে প্রায় দুই হাজার বিঘা জমি, স্ত্রী সন্তান ফেলে ২০০৪ সালে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন আব্দুল জব্বার। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি কর্মসূচীর অধীনে স্কুলে শিক্ষকতা করতেন তিনি। বলছিলেন, ‘‘আমরা তো এখন যে সাগরে পরি গেছি। বাংলাদেশে সহযোগিতা করলে যাইত পারি, অ্যাডে রাখিলে থাইকতে পারি। বাংলাদেশের পর নির্ভর।’’


লেদা ক্যাম্পের সভাপতি দুদু মিয়া দশ সন্তানের জনক। যার ৮জনই বাংলাদেশে জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আশা করি অং সাং সূচির উপর, যদি আমাদেরকে রহম করে তইলে, আমাদের মানিয়া লইলে আমরা চলি যাইবো। যদি মানিয়া না লয় আমরা কোতায় যাইবো?’
ক্যাম্পের বাইরেও অনেক রোহিঙ্গা সাধারণ বাংলাদেশিদের সাথে মিশে গেছে। কক্সবাজারে মায়ের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকেন সখিনা। দেশ ছেড়ে আসার কথা জানতে চাইলে আবেগপ্রবণ হয়ে বলছিলেন, মিয়ানমারেই তারা ফেরত যেতে চান।
‘‘আমাদের অনেক জাগা জমিন ছিল, স্বর্ণর দোকান ছিল, আমার আব্বু মরার পর সব নিয়া নিছে ওরা।’ সখিনা জানান তার মা বলেছে পরিস্থিতি ভাল হলে দেশে ফেরত যাবে।

Image copyrightBBC Bangla
Image captionসখিনা :''এদেশে কোনো দাম নাই, কতার লগে বলে বার্মাইয়া। চলে যাও। মারলে কোনো বিচার নাই, কুত্তার মতো মারি ফেলি রাখলেও কোনো বিচার হয়না এখানে।''

‘‘এদেশে কোনো দাম নাই, কতার লগে বলে বার্মাইয়া। চলে যাও। মারলে কোনো বিচার নাই, কুত্তার মতো মারি ফেলি রাখলেও কোনো বিচার হয়না এখানে।’’
রোহিঙ্গা শুমারির জন্য প্রতিটি বাড়িকে আলাদা করে চিহ্নিত করা হয়েছে। কক্সবাজারে সবচেয়ে বেশি রোহিঙ্গা থাকলেও তিন পার্বত্য জেলা এবং পটুয়াখালীকে শুমারির আওতায় আনা হয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন মার্চ মাস থেকে ৬টি জেলায় রোহিঙ্গা শুমারি শুরু হবে। বাংলাদেশে কোথায় কত সংখ্যক মিয়ানমারের নাগরিক আছে তার সঠিক সংখ্যা নিরূপণ মূল উদ্দেশ্য হলেও এর মধ্য দিয়ে প্রত্যাবাসনের জন্য কূটনীতিক তৎপরতাও চালাতে পারবে সরকার।

Image copyrightBBC Bangla
Image captionমার্চ মাস থেকে বাংলাদেশে ৬টি জেলায় রোহিঙ্গা শুমারি শুরু হবে।

কক্সবাজার জেলা পরিসংখ্যান অফিসের উপপরিচালক মো. ওয়াহিদুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে সরকারের কাছে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নাই। এই মুহূর্তে উখিয়ার কুতুপালং এবং টেকনাফের নয়াপাড়া ক্যাম্পে নিবন্ধিত ৩২ হাজার রোহিঙ্গা আছে। তবে অনিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা আনুমানিক তিন থেকে ৫ লাখ।
তিনি বলেন, ‘‘আমরা যখন ফাইনাল সেনসাস করবো ওদের ছবিও নিয়ে যাবো ওরা যারা মিয়ানমার থেকে এদেশে চলে এসেছে যদি কোনো জমির দলিল বা ডকুমেন্ট থাকে সেগুলো নিয়ে যাব। সরকার চাচ্ছে ওদের (মিয়ানমার) সাথে যদি কথা বলতে হয় ডকুমেন্ট নিয়ে, ড্যাটা নিয়ে, ইনফরমেশন নিয়ে জোর দিয়ে কথা বলতে পারে।
এদিকে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্ত পথে অবৈধভাবে প্রতিদিনই বাংলাদেশে ঢুকছে রোহিঙ্গারা। বিজিবির হিসেবেই গড়ে ১৫-২০জনকে প্রতিদিন আটক করে ফেরত পাঠানো হয়। কক্সবাজার বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল এস এম আনিসুর রহমান জানান ২০১৫ সালে ৬ হাজার ১৩১ জনকে পুশব্যাক করা হয়েছে। শুমারিকে সামনে রেখে অনেকেই ঢুকে পড়তে পারে বলে সন্দেহ আছে।

Image copyrightBBC Bangla
Image captionশুমারিকে সামনে রেখে অনেকেই ঢুকে পড়তে পারে এমন সন্দেহ আছে বলে বলছেন কক্সবাজার বিজিবির সেক্টর কামান্ডার কর্নেল এস এম আনিসুর রহমান।

‘‘তারা এ সুবিধাটা নিতে পারে এবং আসার সংখ্যাটা বেড়ে যেতে পারে, এদিকে আমাদের নজর আছে।’’

Image copyrightBBC Bangla
Image captionবাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্ত পথে অবৈধভাবে প্রতিদিনই বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা ঢুকছে বলে দাবি করছে বিজিবি।

কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করে আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থা আইওএম বলছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন একটি দীর্ঘমেয়াদী জটিল প্রক্রিয়া। সংস্থাটির কর্মকর্তা আসিফ মুনীর বলছেন অতীতে প্রত্যাবাসনের পর তাদের অনেকে আবার বাংলাদেশে ফেরত এসেছে।
‘‘রিপ্যাট্রিয়েশনের ব্যাপারটা জটিল। সেখানে যদি তারা যেটাকে তাদের নিজেদের দেশ মনে করে মায়ানমারে যে অধিকার বা যেভাবে তারা থাকতে চান বা জাতিগতভাবে দাঙ্গার সম্মুখীন যেন তারা না হন। এ ধরনের কিছু পরিস্থিতি, মানে তাদের সকল অধিকার নিয়ে থাকার মতো সংবেদনশীল পরিবেশ পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তাহলে সেখানে গিয়ে তারা স্বাচ্ছন্দ বোধ করবেন না বরং এই প্রবণতাটি থেকে যাবে।’’
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশের জন্য একটা বড় সমস্যা হিসেবে দেখা হয়। শুমারির পর এদের পরিচয় এবং প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত হবে সেটি এখনো পরিষ্কার নয়।