বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

খালি প্লেনে রাজার হালে সফর করলেন একমাত্র যাত্রী

খালি বিমানের একমাত্র যাত্রী মিস ঝ্যাং।
Image captionখালি বিমানের একমাত্র যাত্রী মিস ঝ্যাং।
চীনের একজন মহিলা খালি বিমানের একমাত্র যাত্রী হিসেবে সফর করেছেন।
চীনা নববর্ষের ছুটিতে মিস ঝ্যাং যাচ্ছিলেন গুয়াংঝুতে তার গ্রামের বাড়িতে।
কিন্তু সে সময় চীনের উহান অঞ্চলে ধেয়ে আসছিল তুষার ঝড়।
উহান বিমানবন্দরে অপেক্ষমাণ যাত্রীরা ঝড়ে আটকা পড়ে যেতে পারেন এই আশঙ্কায় বিমান কোম্পানি যাত্রীদের কাছে জানতে চায় তারা আগের একটি ফ্লাইটে যেতে রাজি কি না।
বেশির ভাগ যাত্রীই এতে সায় দেয়।
কিন্তু মিস ঝ্যাং জানান যে তিনি নিয়মিত ফ্লাইটেই সফর করতে চান।
শেষ পর্যন্ত তার ফ্লাইটের সময় হলে বিমানে চড়ে তিনি দেখতে পান যে বিমানে তিনিই একমাত্র যাত্রী।
যাত্রার পুরো সময়টিতে মিস ঝ্যাংকে রাজকীয় সেবা দেয়া হয়।
বিমানের সব ফ্লাইট স্টুয়ার্ড তার খাবার, পানীয়, আরাম আয়েশের দিকে বিশেষ নজর দেন।
এমনকি এক পর্যায়ে বিমানের পাইলটও এসে তার সাথে দেখা করেন।
মহা খুশী মিস ঝ্যাং চীনের মাইক্রো ব্লগ সাইট ওয়েইবোতে এ নিয়ে একটি পোস্ট লেখেন।
সেখানে নববর্ষের মহা-ভাগ্যবতী হিসেবে অনেকেই তাকে অভিনন্দন জানালেও বেশ ক`জন বলেন, শুধু একজন যাত্রী নিয়ে আকাশে না উঠে বিমান কোম্পানির উচিত ছিল আরো যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করা।
এতে অপব্যয় হয়েছে বলে তারা মন্তব্য করেন।

ভারতে বিদেশি ছাত্রীকে নগ্ন করে নির্যাতন: পাঁচ জন গ্রেফতার

Image captionশুধু গাড়ি পুড়িয়ে শান্ত হয়নি বিশৃঙ্খল জনতা।
আফ্রিকার দেশ তানজানিয়া থেকে ভারতে পড়তে আসা এক ছাত্রীকে প্রায় নগ্ন করে নির্যাতন চালানোর অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
দক্ষিণ ভারতের বেঙ্গালুরু শহরে রবিবার রাতে ওই ঘটনা ঘটে। তাঁর পোষাক খুলে নিয়ে ধাওয়া করে জনতা।
ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এই ঘটনায় দু:খ প্রকাশ করে কর্ণাটক সরকারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন। অন্যদিকে ভারতে নিযুক্ত তানজানিয়ার রাষ্ট্রদূত এটিকে সরাসরি বর্ণাবাদী আক্রমণ বলে বর্ণনা করেছেন।
রবিবার রাতে কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরু শহরে একটি গাড়ী দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই ঘটনার সূত্রপাত। সুদান থেকে আসা অন্য এক ছাত্র মদ্যপ অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দা এক নারীকে গাড়ি চাপা দেয়। তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। ওই গাড়িচালককে মারধর করা হয় গাড়িটিতে আগুন দেওয়া হয়।
প্রায় আধঘন্টা পরে ওই জায়গা দিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে যাচ্ছিলেন তানজানিয়ার ছাত্রীটি। আফ্রিকার অধিবাসী দেখেই এই ছাত্রীটি ও তাঁর বন্ধুদের ওপরে চড়াও হয় বাসিন্দারা।
Image captionআফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক শিক্ষার্থী ভারতে আসে।
বেঙ্গালুরুর আফ্রিকান স্টুডেন্টস ইউনিয়নের আইনী পরামর্শদাতা বসকো কাওয়েসি সংবাদমাধ্যমকে ওই ছাত্রীটির অভিযোগ জানিয়ে বলেন, “এই তরুণীটি স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে গায়ের জোরে পেরে ওঠে নি। তার পোষাক টেনে খুলে দেওয়া হয়। তিনি তখন চেষ্টা করেছিলেন একটা খালি বাসে উঠতে – যাত্রীরা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। তারপরে একটা অটোরিক্সাও তাঁকে উঠতে দেয় নি। তিনি যখন দৌড়ে বেড়াচ্ছেন রাস্তায়, তখন তাঁর গায়ে কিছু ছিল না এতকিছুর পরে যখন এরা পুলিশের কাছে যায়, তখন তাদের বলা হয় ওই ঘাতক গাড়ির চালক সুদানি ছাত্রটিকে নিয়ে এলে তবেই অভিযোগ নেওয়া হবে।“
পুলিশও স্বীকার করছে যে ওই ছাত্রীটির উর্ধাঙ্গে কোনও পোষাক ছিল না। কর্নাটক পুলিশের মহানির্দেশক ওম প্রকাশ জানাচ্ছিলেন, “ছাত্রীটি যখন বুধবার লিখিত অভিযোগ জানান, সেখানে তিনি লেখেন যে তাঁর উর্দ্ধাঙ্গের পোষাক খুলে নেওয়া হয়েছিল – ছেঁড়া হয় নি। উলঙ্গ করে রাস্তায় হাঁটানোর অভিযোগও তিনি করেন নি। স্থানীয় পুলিশ কেন প্রথমেই ব্যবস্থা নিল না, সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।“
এই ঘটনাটিকে সরাসরি বর্ণবাদী বা রেসিস্ট অ্যাটাক বলে বর্ণনা করছেন ভারতে নিযুক্ত তানজানিয়ার রাষ্ট্রদূত জন ডব্লিউ এইচ কাজাজি।
সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে মি. কাজাজি বলছেন, “গোটা ঘটনাটি জেনে আমার ব্যক্তিগত মত হল দুটি ব্যাপারই হয়েছে এখানে – একটা যেমন জনরোষ – আর অন্যটা বর্ণবিদ্বেষ। গাড়ি দুর্ঘটনার জায়গাটির অনেকটা দূর দিয়ে যাচ্ছেন একজন – তাঁকে কেন আক্রমণ করা হল – যে ব্যক্তি দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে, তার মতোই এই মেয়েটিও কালো বলে?”
কর্নাটক সরকার এটিকে অবশ্য বর্ণবাদী আক্রমন বলতে নারাজ। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বরণের কথায়, “এটি কখনই বর্ণবাদী হামলা নয়। ওই সুদানী ছাত্রের ঘটানো দুর্ঘটনার প্রতিক্রিয়ার ফলে এটা হয়েছে। বেঙ্গালুরুর এই ধরণের মানসিকতা নেই।“