রবিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৫

প্রশাসন ক্যাডারের ‘খবরদারি’ বন্ধে আল্টিমেটাম

সৌদি রাজপরিবারে বিদ্রোহের আলামত

অনুমতি পাবে কিন্তু সীমান্ত পার হতে হবে সাইকেলে

 
   
 
 
সিরিয়া থেকে শরণার্থীদের সাধারণত নৌকায় কিংবা বাসে বা কখনো কখনো হেঁটে ইউরোপের দিকে আসার দৃশ্য দেখতে এখন কমবেশি সবাই অভ্যস্ত।
কিন্তু রাশিয়ার উত্তর পশ্চিমাঞ্চল হয়ে নরওয়ে ঢোকার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন দৃশ্য।
অপ্রচলিত ও অত্যন্ত নতুন এ পথে শরণার্থীদের ইউরোপ যাত্রার দীর্ঘ পথের মধ্যে মাত্র ১২০ মিটার পথ পাড়ি দেয়ার জন্যে তাদের কিনতে হচ্ছে সাইকেল।
কারণ রাশিয়ার পুলিশের নির্দেশ অনুযায়ী সীমান্তের ওইটুকু পথ হেঁটে পার হওয়া যাবেনা।
নরওয়ের সীমান্ত পুলিশ কর্মকর্তা স্টেইন হানসেন বলছেন, “ফেব্রুয়ারি থেকে এটি শুরু । ছয় জন সীমান্ত অতিক্রম করে বাই সাইকেলে করে। এখানে এসে তারা আশ্রয় প্রার্থনা করে। এটি সীমান্ত অতিক্রমের নতুন পথ। কিন্তু অক্টোবরে এসে আশ্রয় প্রার্থনাকারীদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১০০ জনে।”
মাঝে মধ্যেই দল বেঁধে শরণার্থীরা সীমান্ত পাড়ি দেয় সাইকেল চালিয়ে।
আর মাত্র একশ মিটারের কিছুটা বেশি পথ সাইকেল চালিয়ে এসে নরওয়েতে ঢুকেই তাদের একটি আবেদন করতে হয় আশ্রয়ের জন্যে। একই সাথে ফেলে দিতে হয় সাইকেলটিও।
এভাবে অনেক বাইসাইকেল সেখানে পরিত্যক্ত হয়ে যায়। দু একদিন পরপর ট্রাকে করে সেগুলো আবার সরিয়ে নেয় কর্তৃপক্ষ।
বিবিসির সংবাদদাতা বলছে শরণার্থীদের জন্যে নতুন এ পথটি আস্তে আস্তে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কারণ এখানে সহজেই অনুমতি মিলছে নরওয়ের কর্তৃপক্ষের দিক থেকে।
তিনি বলেন, “গত বছরের পুরো সময়ে মাত্র সাত জন এ পথ পাড়ি দিয়ে ইউরোপে গিয়েছিলো। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। এ পথ পাড়ি দেয়ার শরণার্থীর সংখ্যা পাঁচ হাজারে গিয়ে ঠেকবে বলে মনে করা হচ্ছে। সীমান্ত অতিক্রমের পর শরণার্থীদের আবেদনের পর রাখা হচ্ছে স্থানীয় একটি শহরে। আর এসব শরণার্থীদের বেশিরভাগই আসছে সিরিয়া থেকে।”
সিরিয়া থেকে আসা আহমেদ বলছিলেন তিনি দু সপ্তাহ আগে রাশিয়ায় এসেছেন।
তাকে দুশ ডলার দিয়ে সাইকেল কিনতে হয়েছে শুধুমাত্র সীমান্তটুকু পাড়ি দেয়ার জন্যে।
কিন্তু কেন এ পথে এসেছেন বিবিসি সংবাদদাতার এমন প্রশ্নের জবাবে তার উত্তর ছিল অত্যন্ত সহজ।
“কারণ এটা ভালো ও নিরাপদ পথ। সাগরে পাড়ি দিয়ে যাওয়াটা অত্যন্ত বিপজ্জনক। নরওয়ে যাওয়ার জন্যে এটাই ভালো রুট। গ্রিস বা সার্বিয়ার সীমান্তও ততটা ভালো নয়। অনেক দুর্ঘটনা ঘটছে। সেই তুলনায় এটা অত্যন্ত ভালো পথ।”
ঠাণ্ডা কিংবা দুর্গম পথ কোনটাই তত বিপজ্জনক নয় যতটা বিপদসংকুল জীবন আর পথ পাড়ি দিয়ে তারা ওই সীমান্তে পৌঁছান।
সুমেরু অঞ্চলের এই স্থানটিতে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা, সাথে রয়েছে ঝড়ের প্রকোপ।
তারপরেও কর্তৃপক্ষের ধারণা সামনের দিনগুলোতে এ পথে আরও বাড়বে শরণার্থীর সংখ্যা।

রাষ্ট্রদ্রোহে অভিযুক্ত ও গ্রেপ্তার মালদ্বীপের ভাইস প্রেসিডেন্ট

 
    Maldives vice president                 মালদ্বীপের ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ আধিব ক্ষমতায় আসীন হন মাত্র তিন মাস আগে।               
 
মালদ্বীপের পুলিশ বলছে দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিনকে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে মালদ্বীপের ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ আধিবকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আর এই ঘটনার পর রাজধানী মালেতে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।
গত মাসে মিঃ ইয়ামিনকে বহনকারী একটি নৌযানে চালানো বোমা হামলা থেকে তিনি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান।
একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন মিঃ আধিবের বিরুদ্ধে চরম রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়েছে এবং তাকে একটি কারা দ্বীপে আটক রাখা হয়েছে।
গত মাসের ২৮শে সেপ্টেম্বর হজ থেকে ফিরে প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন তার স্ত্রী স্পিডবোটে করে যখন বিমানবন্দর থেকে রাজধানী মালেতে যাচ্ছিলেন তখন তাদের নৌকার ওপর বোমা হামলা হয়।
প্রেসিডেন্ট আহত না হলেও তাঁর স্ত্রী এবং আরও কয়েকজন আহত হন। বোমাটি রাখা ছিল একটি সিটের নিচে যে সিটে সাধারণত প্রেসিডেন্ট বসেন। কিন্তু ওইদিন তিনি নির্ধারিত ওই সিটে বসেন নি।
কর্মকর্তারা ওই হামলাকে প্রেসিডেন্টকে হত্যার চেষ্টা বলে ব্যখ্যা করেন।
                 সেপ্টেম্বরে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী নৌযান লক্ষ্য করে হামলার পর বরখাস্ত করা হয় দুজন নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে                
ঘটনার পরপরই প্রেসিডেন্ট তাঁর প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে বরখাস্ত করেন এবং দুজন নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এখন গ্রেপ্তার করা হল ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ আধিবকেও এবং তার বিরুদ্ধে চরম রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উমর নাসের।
ভাইস প্রেসিডেন্ট মিঃ আধিব বিদেশ সফর থেকে আজ শনিবার ফিরলে তাকে বিমানবন্দরে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাজনীতিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষমতার দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ                
শনিবার আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে যাদের মধ্যে রয়েছেন মিঃ আধিবের সাবেক একজন নিরাপত্তা কর্মী এবং সেনাবাহিনীর বোমা ইউনিটের একজন সদস্য।
মিঃ আধিব প্রেসিডেন্টকে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পূর্ববর্তী ভাইস প্রেসিডেন্টকে দেশদ্রোহিতার দায়ে বরখাস্ত করার পর মাত্র তিন মাস আগে ভাইস প্রেসিডেন্টের পদে আসীন হন মিঃ আধিব।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মালদ্বীপে রাজনৈতিক অর্ন্তকলহ বেশ প্রকট হয়ে উঠেছে।
প্রেসিডেন্ট পদে মিঃ ইয়ামিনের নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে ভাইস প্রেসিডেন্ট আধিবের গ্রেপ্তারের পর রাজধানী মালেতে বাড়তি নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে শনিবার সকাল থেকেই ট্রাক ভর্তি করে পুলিশ ও সৈন্য শহরের প্রায় সবগুলো রাস্তায় মোতায়েন করতে দেখা গেছে। bbc

বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি কি বিপদজনক বাঁক নিচ্ছে

 
   
                 বাংলাদেশে একের পর এক হামলার ঘটনা কি নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্লেষকদে ভাবাচ্ছে?
বাংলাদেশে শিয়া মুসলিমদের ধর্মীয় উৎসবে হামলার পর দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এর আগে একের পর এক সেক্যুলার ব্লগারদের ওপর হামলা, বিদেশি নাগরিকদের হত্যা, বিভিন্ন আধ্যাত্মিক ধর্মীয় নেতাদের হত্যার পর শিয়াদের এই সর্বশেষ হামলা--- অনেকে এসবের মধ্যে একটি যোগসূত্রও দেখতে পাচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতির অধ্যাপক ডক্টর আলী রীয়াজ বলছেন বাংলাদেশে উগ্র ধর্মীয় মতাদর্শ উৎসারিত সন্ত্রাস, সহিংসতা যেটা আগে অনুপস্থিত ছিল এখন সে পরিস্থিতির একটা পরিবর্তন ঘটছে।
‘‘আগে আহমেদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর কিছু কিছু হামলার ঘটনা ঘটলেও বাংলাদেশের ইতিহাসে সামগ্রিকভাবে সেকটেরিয়ান ভায়োলেন্স বা ধর্মীয় সম্প্রদায়গত সহিংসতার নজির ছিল না।’’
তিনি মনে করছেন আশুরাকে উপলক্ষ করে শিয়া সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রতিক এই হামলা ধর্মীয় সম্প্রদায়গত সহিংসতার ক্ষেত্রে একটা নতুন মাত্রা যোগ করল।
বাংলাদেশে শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা তেমন উল্লেখযোগ্য না হলেও এবং রাজনীতিতে তাদের সরব উপস্থিতি না থাকলেও তাদের টার্গেট করার মূল কারণ তার মতে ‘‘ভিন্ন মত যারা অবলম্বন করছে তাদের ওপর হামলার প্রবণতার বাড়ছে।’’
‘‘দুঃখজনক হচ্ছে রাষ্ট্র যখন কাউকে নিরাপত্তা দিতে পারে না, তখন যারা মনে করে সংখ্যালঘুদের ওপর তারা হামলা চালাতে পারবে, তারা সুযোগটা গ্রহণ করে।’’
তার মতে বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের জঙ্গী সংগঠন বা বিভিন্ন রকম গোষ্ঠি আছে যারা এই ধরনের হামলার সুযোগ খোঁজে এবং যখন তারা দেখছে হামলাটা করে পার পাওয়া সম্ভব তখন তারা হামলাটা করছে। তারা এসব ক্ষেত্রে একটা বার্তা দিতে চায় যে ‘‘তারা এটা করতে পারে’’ এবং সেটাই ডঃ আলী রীয়াজের মতে সবচেয়ে উদ্বেগজনক।
তিনি পাকিস্তানের উদাহরণ টেনে বলছেন পাকিস্তানে শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাতের ইতিহাস এবং সুন্নি গোষ্ঠিগুলোর মধ্যে বিভিন্ন রকম জঙ্গী গোষ্ঠির উত্থানের পেছনে মূল কারণ ছিল সেসময় রাষ্ট্র ক্ষমতায় যারা ছিলেন তারা নিজেদের ক্ষমতার ভিত শক্ত করতে যখন ব্যস্ত ছিলেন তখন সেই সুযোগে ধর্মীয় সম্প্রদায়গত সহিংসতার বীজ বপন হয়েছে।
তবে ঢাকার ইনষ্টিটিউট অব কনফ্লিক্ট ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত আবদুর রশিদ মনে করছেন না যে বাংলাদেশে একটা দুটো এধরনের হামলার ঘটনা দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে বিপদজনক একটা পথে ঠেলে দিচ্ছে বা রাষ্ট্র মানুষকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে ।
ধর্মীয় সম্প্রদায়গত সহিংসতার বিষয়টি পাকিস্তানের সঙ্গে মিলিয়ে ডঃ রীয়াজের বিশ্লেষণের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে মিঃ রশিদ বলছেন বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ঐতিহাসিক।
‘‘এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্যে – তা ভেঙে ফেলার জন্য মূলত যারা কুচক্রী মহল, যারা স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিল, ধর্ম নিয়ে যারা বাংলাদেশে রাজনীতি করে, সামাজিক বিভাজনের সীমানাতেই তারা কিন্তু আঘাত করে। ’’
তিনি মনে করছেন এভাবেই শিয়া সুন্নি বিভাজনে তারা আঘাত করেছে, হিন্দু মুসলমান বিভাজনে তারাই আঘাত করে – এবং উগ্রবাদী ইসলামের চর্চ্চা করতে চায়। তার কথায় জনগণের ভেতরে এসব ব্যাপারে কোনো বিরোধ নেই।
‘‘আমি এটাকে একটা নাশকতা বলব- তারা নাশকতা চালিয়েছে যাতে এই সম্প্রীতির জায়গাটা ভাঙ্গা যায়।’’
সাইট নামে ওয়েবভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান যারা আন্তর্জাতিক জঙ্গী গোষ্ঠিগুলোর তৎপরতার ওপর নজর রাখে তারা বলছে শনিবার বাংলাদেশে শিয়া সম্প্রদায়ের ওপর এই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠি। এর আগে সাইট জানিয়েছিল বাংলাদেশে বিদেশিদের হত্যার দায়ও ইসলামিক স্টেট স্বীকার করেছিল।
ডঃ আলী রীয়াজ বলছেন সাইট আন্তর্জাতিক জঙ্গী তৎপরতা সম্পর্কে বিভিন্ন সময়ে যেসব তথ্য দিয়েছে তার কিছু কিছু অতীতে প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় বাংলাদেশে এসব ঘটনার সঙ্গে আইএসের জড়িত থাকার বিষয়টি নিয়ে একক একটি সূত্রের ওপর নির্ভর করার পক্ষপাতী তিনি নন।
তিনি মনে করেন না যে বাংলাদেশে আইএস বা আল কায়েদা ইন ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট বা একিউআইএস-এর সাংগঠনিক উপস্থিতি আছে। তেমন কোনো তথ্য বা প্রমাণ না থাকলেও তিনি বলছেন ‘‘একিউআইএস বা আইএস-এ যোগদানে ইচ্ছুক বা আকাঙ্ক্ষী জঙ্গী বা সন্ত্রাসী বাংলাদেশে থাকাটা বিচিত্র নয়- সেটা আছে বাংলাদেশে।’’
তিনি বলেন বিভিন্ন সময়ে এধরনের সংগঠনের প্রতি কিছু মানুষের আকর্ষণের প্রমাণ তারা পেয়েছেন। এছাড়া বাংলাদেশে স্থানীয় জঙ্গী সংগঠন আছে যাদের কিছু কিছুর আঞ্চলিক পর্যায়ে যোগাযোগের তথ্যও রয়েছে। কাজেই এদের উপস্থিতিএবং আন্তর্জাতিক জঙ্গী গোষ্ঠিগুলোর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য তাদের আকাঙ্ক্ষা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
ডঃ রীয়াজ আশংকা প্রকাশ করে বলেছেন অদূর ভবিষ্যতে সাংগঠনিক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হলেও অবাক হওয়ার মত কিছু থাকবে না, কারণ স্থানীয় গোষ্ঠিগুলো সাধারণত সুযোগের অপেক্ষাতে থাকে। bbc

'৪০০ বছরের ইতিহাসে প্রথম হামলা'

 
    'তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলা পরিকল্পিত'
                 হোসনি দালান চত্বরে বোমা হামলার জায়গায় হলুদ ফিতা দিয়ে ঘিরে রেখেছে পুলিশ।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার পুরোনো অংশে আশুরা উপলক্ষে শিয়াদের তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতি চলার সময় বোমা হামলায় অন্তত এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে।
এই ঘটনায় ৬০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ঢাকার হোসেনী দালান চত্বরে শুক্রবার দিবাগত রাত দু’টার দিকে এই হামলা ঘটে।
বাংলাদেশে এই প্রথম তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলার ঘটনা ঘটলো।
পুলিশ জানিয়েছে, বোমা হামলায় ঘটনাস্থলেই সাজ্জাদ হোসেন নামের ১৫-বছর বয়সী এক কিশোর নিহত হয়।
তার বাড়ি লালবাগ এলাকায় এবং সে তাজিয়া মিছিলে অংশ নিতে সেখানে এসেছিল।
আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
তাদের চিকিৎসায় বহু মানুষ হাসপাতালে গিয়ে স্বেচ্ছায় রক্ত দিয়েছেন।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহতদের বেশিরভাগই আশঙ্কামুক্ত।
হোসেনী দালান চত্বরে রক্তের ঢল
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, হোসেনী দালান চত্বরে বিভিন্ন জায়গায় হতাহতদের ছোপ ছোপ রক্ত পড়ে আছে।
পুলিশ ঐ জায়গা এবং যেসব জায়গায় বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে সেই জায়গাগুলো নিরাপত্তা কর্ডন করে ঘিরে রেখেছে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি’র সদস্যরা সেখান থেকে আলামত সংগ্রহ করছেন।
হোসেনী দালান চত্বরে সিসিটিভির ফুটেজও পুলিশ সংগ্রহ করেছে বলে কর্মকর্তারা বলছেন।
'তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলা পরিকল্পিত'
ঘটনাস্থল থেকে সিআইডি'র সদস্যরা আলামত সংগ্রহ করছেন।
স্থানীয় চকবাজার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিজুল হক জানিয়েছেন, তাজিয়া মিছিলের জন্য হোসেনী দালান চত্বরে এক হাজারের বেশি শিয়া মুসলিম জড়ো হয়েছিলেন।
তাদের মিছিল শুরু করার প্রস্তুতির সময়ই পর পর তিনটি বোমা বিস্ফোরিত হয়।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহজনক তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
এছাড়া বিস্ফোরিত হয়নি এমন আরো দুটি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ উল্লেখ করেছে, উদ্ধার করা বোমাগুলো কালো স্কচ টেপ দিয়ে প্যাঁচানো ছিল।
এগুলো হাতে তৈরি গ্র্রেনেড বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে।
৪০০ বছরের ইতিহাসে প্রথম হামলা
এই তাজিয়া মিছিলের সংগঠকদের অন্যতম একজন এম. এম. ফিরোজ হোসাইন বিবিসি বাংলাকে বলেন, “আমরা শিয়া মুসলিমরা ৪০০ বছর ধরে ঢাকায় এই তাজিয়া মিছিলের আয়োজন করে আসছি। কখনও আমরা কোন ধরণের হুমকি পাইনি এবং কখনও আমাদের ওপর কোন হামলাও হয়নি।''
''বাংলাদেশে সকলের সাথে ভালো সম্পর্ক এবং সম্প্রীতির পরিবেশ আমরা পেয়েছি।"
তিনি এই হামলাকে ন্যাক্কারজনক ঘটণা বলে বর্ণনা করেন।
মি. হোসাইন বলেছেন, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য এই হামলা করা হয়েছে বলে তারা মনে করছেন।
এদিকে, শনিবার ভোররাতে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
তিনি বিবিসিকে জানান, তাজিয়া মিছিলের জন্য সেখানে পুলিশ, র‍্যাব এবং সাদা পোশাকে পুলিশের ব্যাপক নিরাপত্তা নেয়া হয়েছিল।
এমন নিরাপত্তার মধ্যে বোমা হামলাকারীরা তাজিয়া মিছিলে অংশ নেয়ার সাজ নিয়ে হোসেনী দালান কম্পাউন্ডে প্রবেশ করে ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তারা মনে করছেন।
পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, “এটি কোন জঙ্গী হামলা নয়। দেশে যারা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়, তারাই পরিকল্পিতভাবে এই নাশকতা করেছে।”

মেক্সিকো উপকূলে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী হারিকেন 'প্যাট্রিসিয়া'

 
    মেক্সিকো উপকূলে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী হারিকেন 'প্যাট্রিসিয়া'                           
মেক্সিকো উপকূলে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী হারিকেন 'প্যাট্রিসিয়া'।
হারিকেনের প্রভাবে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে জালিস্কো প্রদেশে ভূমিধসের ঘটনাও ঘটেছে।
এই হারিকেনের গতিবেগ ঘন্টায় ৩০০ কিলোমিটার।
বলা হচ্ছে এটি পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়।
এই হারিকেনের তীব্রতা নির্ধারণ করা হয়েছে ‘ক্যাটাগরি ফাইভ।
মেক্সিকো উপকূলে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী হারিকেন 'প্যাট্রিসিয়া'                 অরক্ষিত এলাকাগুলো থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে মেক্সিকো কর্তৃপক্ষ।                
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মুখপাত্র ক্লেয়ার নালিস বলছেন, এই ঘুর্ণিঝড়ের বাতাসের গতি এতটাই তীব্র যে তা একটি বিমানকে আকাশে তুলে উড়ন্ত অবস্থায় রেখে দিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের হারিকেন সেন্টার বলছে, প্যাট্রিসিয়া খুবই ভয়ংকর এবং পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগর বা আটলান্টিকে এরকম তীব্র মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ের নজির আর নেই।
হারিকেন প্যাট্রিসিয়ার কবলে পড়তে পারে এমন তিনটি রাজ্যে এরই মধ্যে জরুরি অবস্থাও জারি করেছে মেক্সিকো কর্তৃপক্ষ।
আবহাওয়াবিদরা এ ঘূর্ণিঝড়কে ফিলিপাইনের টাইফুন হাইয়ানের সঙ্গে তুলনা করছেন।
২০১৩ সালে ওই টাইফুনে ফিলিপাইনে প্রায় সাত হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল। bbc