বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ, ২০১৬

মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নেই সুচি

Image copyrightGetty
Image captionমিয়ানমারের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তবে সেই তালিকায় সুচির নাম নেই
মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী তালিকায় নেই অং সান সুচি।
মিয়ানমারে সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দল, ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) প্রেসিডেন্ট পদে তাদের দুজন প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করেছে। তবে তাদের মধ্যে সুচির নাম নেই।
বার্মা হিসাবেও পরিচিত এই দেশটির তৃতীয় একজন প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করবে সামরিক বাহিনী।
আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই দেশটির পার্লামেন্ট তাদের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করবে। তিনজনের মধ্যে পরাজিত বাকি দুজন ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হবেন।
Image copyrightReuters
Image captionসংবাদদাতারা বলছেন, প্রার্থীদের একজন, সুচির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত হাথিন কিয়াউ- এর জয়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি
সংবাদদাতারা বলছেন, প্রার্থীদের একজন, সুচির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত হাথিন কিয়াউ- এর জয়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি। কারণ পার্লামেন্টে এনএলডির সংখ্যাগরিষ্ঠতাই বেশি।
মিয়ানমারের বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী, বিদেশীকে বিয়ে করার কারণে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করতে পারবেন না সুচি। যদিও এই ধারা বিলোপের বিষয়ে আলোচনা চলছে।
যদিও সুচি আগেই ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি প্রেসিডেন্টের উপরে থাকবেন।

সুন্দরবনের কাছে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে উদ্বেগ কেন?

Image captionসরকারি হিসেবে বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা থেকে প্রকল্পের দূরত্ব ৬৯ কিলোমিটার।
সুন্দরবনের কাছে বাগেরহাটের রামপালে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক চলছে।
দু'টি ইউনিটে ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার এ বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হলে সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন অনেকে।
অন্যদিকে সরকার এবং বাংলাদেশ ভারত যৌথ কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের দূষণ হবে সামান্য যা সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি করবে না।
Image captionরামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য প্রতিদিন প্রয়োজন হবে ১২ হাজার টন কয়লা।
সুন্দরবনের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকা ১৪ কিলোমিটার দূরে।
সরকারি হিসেবে বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা থেকে প্রকল্পের দূরত্ব ৬৯ কিলোমিটার।
সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, সুন্দরবনের নিকটে থাকার কারণেই রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে তাদের আপত্তি।
“এই ইকো সিস্টেম যদি আপনার নষ্ট হয় কোনো কারণে এবং সেটা দেখা যায় না, সেটা বিশেষজ্ঞরা বুঝতে পারেন। যে কারণে ওয়ার্ল্ড হেরিটেইজ বিশেষজ্ঞ দিয়ে এটাকে মূল্যায়ন করতে ইউনেস্কো গুরুত্ব দিয়েছে। যদি কোনো কারণে বিঘ্ন হয় তাহলে দেখা যায় সেই পরিবেশে হয়তো বাঘ বেঁচে থাকতে পারবে না, সেই পরিবেশে হয়তো কুমির বেঁচে থাকতে পারবে না”
Image captionসুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, সুন্দরবনের নিকটে থাকার কারণেই রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে তাদের আপত্তি।
মিস্টার আলম মনে করেন, কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে যত উন্নত প্রযুক্তিই ব্যবহার করা হোক সেটি সুন্দরবনের ক্ষতি মোকাবেলায় যথেষ্ট হবে না।
আর এ প্রকল্পের জন্য পরিবেশগত প্রভাব নিরুপণ প্রতিবেদনটিও বিশেষজ্ঞমহলে গ্রহণযোগ্য হয়নি।
তিনি বলেন, “যে সিম্যুলেশন রেজাল্ট দেখানো হয়েছে ওই রেজাল্ট যে বাস্তবে কার্যকর বা বাস্তবসম্মত সেটাও তারা প্রমাণ দেখাতে পারেনি। একটা অংক করে তার রেজাল্ট পাওয়া গেলে সেই রেজাল্ট যে বাস্তবে প্রমাণসিদ্ধ বা বাস্তবে যে যথোপযুক্ত সেটা যতক্ষণ পর্যন্ত প্রমাণিত না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত সেই রেজাল্টের ভিত্তিতে কোনো ডিজাইন কোনো ড্রইং ইম্পলিমেন্টেশনে যাওয়া যায় না”।
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য প্রতিদিন প্রয়োজন হবে ১২ হাজার টন কয়লা।
সুন্দরবনের ভেতর নদী পথে এই কয়লা পরিবহন এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনাও ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়।
জীব বৈচিত্র্য গবেষক ডক্টর আনিসুজ্জামান খানের মতে সুন্দরবনের টিকে থাকার বিশেষ শক্তি আছে কিন্তু বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়বে বলে তিনি মনে করেন।
“এই মুহূর্তে যেটি দরকার, সেটি হচ্ছে ওয়ার্ল্ড হেরিটেইজ সাইট তার যে ক্রাইটেরিয়া অনুযায়ী ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান সেটা ডেভেলপ করা। রামসার সাইট তার ক্রাইটেরিয়া অনুযায়ী আরেকটা ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান এবং ওয়াইল্ড লাইফ স্যানচুয়ারি যেটা বাংলাদেশ ওয়াইল্ড লাইফ অ্যাক্ট তার আলোকে এই ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান তৈরি করা এবং ইমপ্লিমেন্ট করা। তাহলেই এই সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য লংটার্মে সাসটেইন করবে”।
Image captionজীব বৈচিত্র্য গবেষক ডক্টর আনিসুজ্জামান খানের মতে সুন্দরবনের টিকে থাকার বিশেষ শক্তি আছে কিন্তু বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়বে
রামপাল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি।
কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দূষণ কমাতে ১৩টি ধাপে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে কয়লার দূষণ সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখা হবে।
কোম্পানির চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম বলেন, সুন্দরবনের ক্ষতি যেন না হয় সেজন্য বাড়তি বিনিয়োগও করা হচ্ছে।
“সব রকমের যতটুকু মেজারস নিলে পরে সুন্দরবনের কোনোই ক্ষতি হবে না এবং আমাদের স্টাডি তাই বলে, আমাদের এনভাইরনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম তাই বলে এবং আমাদের স্ট্রং কমিটমেন্ট, আমরা মনে করি যে সুন্দরবন নিরাপদ থাকবে। যে ইমপ্যাক্টগুলো হবে এটা ম্যক্সিমাম নেগলিজিবল ইমপ্যাক্ট এবং এটা ১.৬ কিলোমিটার রেডিয়াসের মধ্যে থাকবে। সুন্দরবনতো অনেক নিরাপদ দূরত্বে। কাজেই এখানে দুশ্চিন্তার কোনো কারণই নেই”।
Image captionবাংলাদেশের বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম বলেন, সুন্দরবনের ক্ষতি যেন না হয় সেজন্য বাড়তি বিনিয়োগও করা হচ্ছে।
যারা এ প্রকল্পের বিরোধিতা করছেন তাদেরকে দিনাজপুরের নিম্ন মানের কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কী ক্ষতি হয়েছে তা দেখার পরামর্শ দেন মিস্টার ইসলাম।
“বড়পুকুরিয়া আমাদের যে ২৫০ মেগাওয়াট একটা সাব ক্রিটিক্যাল কোল বেইজড পাওয়ার প্ল্যান্ট আজ থেকে দশ বছর আগে করেছি। আপনার সেখানে গিয়ে দেখে আসেন না কেন সেটাতে কী ধরনের ইমপ্যাক্ট পড়েছে, সেখানে কয়টা মানুষ মারা গেছে, কয়টা পশুপাখি মারা গেছে, কয়টা গাছপালা জ্বলে গেছে, সেখানে কি ফসল হয় না, সেটা কি মরুভূমি হয়ে গেছে?
বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে বলা হচ্ছে এ প্রকল্পের কারণে সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষতি হবে এটি যেমন ঠিক নয় তেমনি আবার একেবারে কোনো ক্ষতিই হবে না সে দাবিও ভিত্তিহীন।
Image captionবুয়েটের অধ্যাপক ডক্টর ইজাজ হোসেন বলেছেন, তারা যদি সর্বশ্রেষ্ঠ টেকনোলজি ব্যবহার করে তাহলে দূষণটা খুবই সামান্য হবে।
বুয়েটের অধ্যাপক ডক্টর ইজাজ হোসেন বলেন, “সরকার যেখানে করতে চাচ্ছে সেখানে না করলেই ভাল হতো, আমার মতে আরো দূরে করলে ভাল হতো, কিন্তু যেহেতু তারা করে ফেলেছে তারা করতে চায়"।
"আমি টেকনিক্যালি যেটা বলতে পারি সেটা হচ্ছে তারা যদি সর্বশ্রেষ্ঠ টেকনোলজি ব্যবহার করে তাহলে দূষণটা খুবই সামান্য হবে এবং সেই দূষণে সুন্দরবনের ক্ষতি হবে না।
কিন্তু অবশ্যই সেখানে দ্বিতীয় পাওয়ার প্ল্যান্ট ঐ সাইজের করা ঠিক হবে না এবং অবশ্যই ঐখানে পশুর নদীর ধারে যে প্রাইভেট সেক্টর ডেভলপমেন্ট হচ্ছে ওগুলো বন্ধ করা দরকার”।
Image captionবিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা ব্যবহারের হার যেখানে মাত্র দুই শতাংশ সেটিকে ৫০ ভাগে নেয়ার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে
সরকারি হিসেবেই এখনো বাংলাদেশে ২৫ শতাংশ মানুষ সম্পূর্ণভাবে বিদ্যুৎ সুবিধার বাইরে আছে।
বলা হচ্ছে ২০৪১ সাল নাগাদ বিদ্যুতের চাহিদা দাঁড়াবে প্রায় ষাট হাজার মেগাওয়াট।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা ব্যবহারের হার যেখানে মাত্র দুই শতাংশ সেটিকে ৫০ ভাগে নেয়ার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে।
এ বাস্তবতায় মহেশখালী, পটুয়াখালী এবং রামপালে তিনটি বড় কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে।
যদিও বিতর্কের কারণে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের বাস্তবায়ন প্রায় তিন বছর পিছিয়ে গেছে।
আবুল কালাম আজাদ বিবিসি বাংলা, ঢাকা

ফিদেল ক্যাস্ট্রোর সঙ্গে দেখা করবেন না ওবামা

fidel_castro_barack_obamaImage copyrightGetty
Image captionফিদেল ক্যাস্ট্রোর বদলে মি. ওবামা দেশটির ভিন্নমতাবলম্বী রাজনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন
এ মাসের শেষে ঐতিহাসিক এক সফরে কিউবা যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
রাষ্ট্রীয় নানা কর্মসূচীতে অংশ নিলেও এ সময় তিনি দেশটির কিংবদন্তী নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রোর সঙ্গে বৈঠক করবেন, সে সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে হোয়াইট হাউজ।
বরং কিউবার প্রেসিডেন্ট রাউল ক্যাস্ট্রোর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে, মি. ওবামা দেশটির ভিন্নমতাবলম্বী রাজনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্টের একজন নিরাপত্তা উপদেষ্টা।
১৯২৮ সালের পর এই প্রথম দায়িত্বে থাকা অবস্থায় একজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট কিউবা সফরে যাচ্ছেন।
স্নায়ু যুদ্ধের সময়ে সৃষ্ঠ বৈরিতা কাটিয়ে, মাত্র গত জুলাইতেই দুই দেশ সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেয়।
বলা হচ্ছে, এটি প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও তার স্ত্রীর বৃহত্তর লাতিন অ্যামেরিকা সফরেরই একটি অংশ।