সোমবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৫

বিল গেটসের খামার

বিল গেটসের খামারে আছে ঘোড়দৌড়ের ট্র্যাক
মেয়ে জেনিফার ক্যাথরিন গেটসের সঙ্গে বিল গেটসমেয়ে জেনিফার ক্যাথরিন গেটসের সঙ্গে বিল গেটসবিল গেটসের খামারে আছে ঘোড়দৌড়ের ট্র্যাকপ্রতিদিন ১০ লাখ ডলার খরচ করলেও ২১৭ বছর লেগে যাবে তাঁর মোট সম্পদ ফুরাতে! এমন পিলে চমকানো পরিসংখ্যান কেবল শীর্ষ সফটওয়্যার নির্মাতা মাইক্রোসফট করপোরেশনের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের বেলাতেই খাটে। একটু খামখেয়ালি খরুচে স্বভাবের হলে তাই কীই-বা এসে যায় তাঁর! গত বছরের কথাই ধরা যাক। মেয়ের শখ মেটাতে ১ কোটি ৮০ লাখ ডলারে কিনে নেন ঘোড়ার এক খামার। বিল গেটস এই খামার কেনেন বিখ্যাত ওজন কমানোর প্রশিক্ষক জেনি ক্রেইগের কাছ থেকে। শুরুতে কিন্তু তিন কোটি ডলারে বিক্রির কথা ভেবেছিলেন জেনি। এক ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছিলেন। তবে ২০১২ সালের শেষের দিকে তা মুছে ফেলেন। মুছে ফেলার যথেষ্ট কারণও অবশ্য ছিল। অনেকে খামারটি কিনে আবাসিক প্রকল্প করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জেনি চেয়েছিলেন এমন একজনের কাছে বিক্রি করতে যিনি ঘোড়া ভালোবাসেন, যিনি জায়গাটি ঘোড়ার জন্যই রাখবেন। ‘র্যাঞ্চো
প্যাসিয়ানা’ নামের এই খামার যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার র্যাঞ্চো সান্টা ফেতে।
২২৮ একর সমতলভূমির বিশাল এই খামারে পৌনে একআস্তাবল মাইলের একটা ঘোড়দৌড়ের ট্র্যাক আছে। আরও আছে পাঁচটি গোলাঘর, যার চারটিতে ৩০টি করে এবং পঞ্চমটিতে ২১টি ঘোড়া জায়গা করে নিতে পারে। অদূরেই সবুজ গাছের সারি আর শান্ত নীল জলরাশি খামারটিকে দিয়েছে চমৎকার চেহারা।
গেটস পরিবার খামারটি কী কাজে ব্যবহার করবে, সেটা তো তাঁরাই ভালো জানেন। যতটুকু জানা গেছে, তাতে পারিবারিক কাজে, হয়তো অবকাশযাপনে ব্যবহার করতে পারেন। অন্যদিক থেকে দেখলে, বিল গেটসের বড় মেয়ে জেনিফার ক্যাথরিন গেটস প্রায়ই ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। একদম নিজেরই একটা রেস-ট্র্যাক থাকলে ক্ষতি কী!
খামারটিতে দুটি বাড়ি আছে। সেগুলোকে অতিথিশালাও বলা যায়। দুই শয়নকক্ষের একটি, অপরটি এক শয়নকক্ষের। দুটি বাড়ি থেকেই রেস-ট্র্যাক এবং চারণভূমির পুরোটা দেখা যায়।
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য প্রতিটি অশ্বশালার পরেই কোয়ার্টার আছে। কোয়ার্টারগুলোতে কামরার সংখ্যা সব মিলিয়ে ৩২। এ ছাড়া অফিস আছে দুটি। যার একটি ঘোড়াগুলোর প্রশিক্ষণ এবং প্রতিযোগিতার জন্য ব্যবহার করা হয়। খামারে প্রবেশদ্বারের সংখ্যা চারটি।
চারণভূমি যেমন আছে, তেমনই পানি, খড় ও জ্বালানি সংরক্ষণের পৃথক পৃথক জায়গা, জলপাই বাগান, গ্রিনহাউস এমনকি মেরামতের দোকানও আছে। রেস-ট্র্যাকটি যেকোনো ধরনের ঘোড়দৌড়ের জন্যই উপযুক্ত।
তথ্যসূত্র ও ছবি: ফোর্বস ও বিজনেস ইনসাইডার

রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি সীমান্তে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলি



রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি সীমান্তে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। এতে স্থানীয় গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক সদস্য নিহত ও যৌথ বাহিনীর দুই সদস্য আহত হয়েছেন। রাঙামাটির পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান হতাহতের খবর নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয় সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, গত ৩রা অক্টোবর রাঙামাটির বিলাইছড়ি থেকে দুই পর্যটক এবং তাদের দুই গাইড নিখোঁজ হন। এখনও তাদের খোঁজ মিলেনি। তাদের উদ্ধারে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে যৌথ বাহিনী। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার ভোরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গোলাগুলির পর আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। রোববার দুপুরে পর্যটকদের উদ্ধারে যৌথবাহিনীর অভিযানের সময় গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এসময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপজাতীয় সদস্য মেসন মুরুং। যৌথবাহিনীর আহত দুই সদস্যকে চট্টগ্রামের সামরিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
voa

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর সাথে জার্মানীতে দেখা করবেন

Kerry Harvard
                                                     
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, তিনি এ সপ্তাহে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহুর সাথে জার্মানীতে দেখা করবেন। এরপর তিনি ফিলিস্তিনী নেতা মাহমুদ আব্বাসের সাথেও সাক্ষাৎ করবেন। ইজরায়েলী এবং ফিলিস্তিনীদের মধ্যে দুই সপ্তাহের বেশী সময় ধরে ভয়াবহ সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে এই সাক্ষাৎ হতে যাচ্ছে। শনিবার ফিলিস্তিনী কিশোর এবং ইজরায়েলী পুলিশের মধ্যে অধিকৃত পশ্চিম তীরবর্তী শহর হেব্রন এবং জেরুজালেমে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ বলছে, একটি ১৬ বছরের মেয়েসহ অন্তত: চারজন ছুরি বহনকারী ফিলিস্তিনী আলাদা আলাদা ঘটনায় নিহত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলেছে, হামলার ঘটনায় ইজরায়েলের কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মী আহত হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহের পথ সহিংসতায় অন্তত: ৪০ জন ফিলিস্তিনী এবং সাত জন ইজরায়েলী নিহত হয়েছে।
voa

পরিবহন শ্রমিক-মালিক অবরোধে অচল রাজধানী ॥ চরম জনদুর্ভোগ

অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও গাড়ির কাগজপত্র না থাকার অভিযোগে মিরপুর সিএনজি লেগুনা ও বাসকে জরিমানা করায় ঐ রুটসহ বেশ কয়েকটি রুটে চলাচলরত সব গণপরিবহন বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা। শ্রমিকদের আকস্মিক অবরোধে বিপাকে পড়ে হাজারো যাত্রী। গতকাল রোববার তোলা ছবি -সংগ্রাম

 কোনো প্রকার পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই আচমকা এক তরফাভাবে রাজধানীর বিভিন্ন রুটে গণপরিবহন বন্ধ করে দেয় মালিক-শ্রমিক পক্ষ। যাত্রী সাধারণকে পণবন্দী করে মওকা তুলে নেয়ার ঐতিহ্যগত কসরত মালিক-শ্রমিক পক্ষ একদমও ভুলে যায়নি। গতকাল রোববার সেই কসরতের মহড়ায় নগরজুড়ে পরিবহনের যে সঙ্কট শুরু হয়, তা দিনভর ভুগিয়ে তোলে রাজধানীবাসীকে। কয়েক ঘণ্টার খামখেয়ালীপনা শেষে কোনো কোনো রুটে হাতেগোনা কিছু পরিবহন চলতে শুরু করলেও ভোগান্তির মাত্রা বিন্দু পরিমাণও কমেনি। প্রয়োজনের তাগিদে যাদেরকে ঘরের বাইরে বের হতে হয়েছে, তাদেরকে পদে পদে ভোগান্তি নিয়েই গন্তব্যে পৌঁছতে হয়েছে। কাজ শেষে ঘরে ফিরতেও সে সব ভোগান্তি লেগেই ছিল। গতকাল রোববার সপ্তাহের কর্মদিবসের শুরুতেই এমন দূরাবস্থার সৃষ্টি করে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাজপথজুড়ে জনগণের ভোগান্তি লেগেই ছিল। 
ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও নকল লাইসেন্সের বিরুদ্ধে অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত এক বাস চালককে কারাদ- দেয়ার প্রতিবাদে পরিবহন শ্রমিকরা প্রথম দিকে কয়েকটি রুটে বাস চলাচল বন্ধ রাখে। গতকাল রোববার সকাল ১০টা থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়ে এই অভিযান শুরু করে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। এ অভিযানেই মিরপুরের তালতলা এলাকায় হিমাচল পরিবহনের এক বাসচালককে এক মাসের কারাদ- ও জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এই ঘটনার পরপরই পরিবহন সংশ্লিষ্ট লোকজন ওই এলাকায় জড়ো হতে থাকে এবং পরে সড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। ফলে সড়ক বন্ধ থাকায় ওই এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা লোকজনকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে কয়েকটি বাসের চালককে জরিমানা ও সাজা দেয়ার প্রতিবাদে গতকাল সকালে শুরু করা অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা। বিকাল পাঁচটার পর অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বাস মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ।
তবে অবরোধ প্রত্যাহার হলেও সড়কে গাড়ির সংখ্যা কম। সন্ধ্যার পরও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে শত শত যাত্রীকে গাড়ির অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। ফলে ভোগান্তি প্রলম্বিত হয়েছে রাতে।
গতকাল সকালে মিরপুরের তালতলায় বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত এক চালককে এক মাসের জেল দেয়। একে কেন্দ্র করে চালকরা রাজধানীতে বাস বন্ধ করে দেন এবং বেশ কিছু শ্রমিক মিরপুর-১০ নম্বর, পূরবীতে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
হঠাৎ গণপরিবহন বন্ধ হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়ে মিরপুর-আজিমপুর, গুলিস্তান-মতিঝিল, গাবতলী-উত্তরা-আজিমপুর, গাবতলী-গুলশান-বাড্ডা রুটসহ মিরপুর ১১ নম্বর হয়ে চলাচলরত বিভিন্ন রুটের যাত্রীদের।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মুনতাসিরুল ইসলাম বলেন, সকাল সাড়ে ১০টায় তালতলার কাছে বিআরটিএর একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত এক গাড়িচালককে এক মাসের সাজা দেন। এর প্রতিবাদে বিভিন্ন রুটের চালকরা ডিপোতে তাদের বাস ফিরিয়ে নিয়ে যান। পরে বেশ কিছু শ্রমিক মিরপুর-১০ নম্বর ও পূরবীতে অবস্থান নেন।
বিকালে বাংলাদেশ বাস মালিক সমিতির মহাসচিব বলেন, “সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ও বিআরটিএর চেয়ারম্যানের আশ্বাসে চালক ও শ্রমিকরা অবরোধ প্রত্যাহর করে নিয়েছে। আমাদের দাবি ছিল, যখন-তখন জেল না দিয়ে অন্য কোনো ব্যবস্থা যাতে চালকদের বিরুদ্ধে নেয়া হয়।”
তবে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলেও পর্যাপ্ত গাড়ি রাস্তায় নামেনি। ফলে মিরপুর, গুলিস্তান, শাহবাগ, বাংলামোটর, ফার্মগেট এলাকায় অফিসফেরত বহু যাত্রীকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। পরিবহন সংকটের কারণে ভোগান্তিতে পড়ে রাজধানী ও আশপাশের বিভিন্ন পথের যাত্রীরা।
সকালের ঘটনার পর সারা দিনই পরিবহন সংকটের ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের। বিকালে ভোগান্তি আরও বাড়তে থাকে। বিভিন্ন বাস স্টপেজে অফিসফেরত যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে। ফার্মগেট, গুলিস্তান, মিরপুর ১০ নম্বরে হাজার হাজার যাত্রীর সমাগম ঘটে। কিন্তু গণপরিবহন নেই।  কোথাও বিআরটিসির কোনো বাস এলে তাতে যাত্রীদের হুমড়ি খেয়ে পড়তে দেখা গেছে। সন্ধ্যা নেমে এলে বহু যাত্রীকে হেঁটে গন্তব্যে রওনা দিতে দেখা গেছে। ফলে ফুটপাতে মানুষের মিছিল নামে।
অবরোধের কারণে স্টেডিয়াম ও এশিয়া সিনেমা হলের সামনে রাস্তার পাশে আলিফ পরিবহন, আকিক পরিবহন ও রবরব পরিবহনের শতাধিক বাস থামিয়ে রাখা ছিল।
বেলা ১১টার পর থেকে গুলিস্তান থেকে ঢাকার ভেতরে এবং আশপাশের জেলাগুলোতে কোনো বাস চলেনি। ফলে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জসহ বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা গুলিস্তানে অপেক্ষা করতে হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রমের প্রতিবাদে গণপরিবহনের এ ধরনের ধর্মঘটকে মালিক-শ্রমিকদের দৌরাত্ম্যের প্রমাণ বলে আখ্যায়িত করেছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধরী। নৈরাজ্য থামাতে নিয়মিত এ ধরনের কার্যক্রম চালান প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি। “আইন সব সময় চালু রাখা গেলে আজকের এই অবস্থার সৃষ্টি হতো না। ভ্রাম্যমাণ আদালত সব সময় চালু রাখতে হবে। আইন কখনো শিথিল, কখনও প্রয়োগ করা হলে এ রকম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ তৈরি হয়।”
বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “অতীতেও দেখা গেছে সরকার ও মালিকপক্ষ মিলে সিদ্ধান্ত নেয়ার ফলে যাত্রীরা ভুক্তভোগী হয়েছে। এবারও তাই হয়েছে। এমনিতে যে ভাড়া ছিল তাও বেশি ছিল। এর মধ্যে নতুন করে ভাড়া বৃদ্ধি জনজীবনে দুর্ভোগ নিয়ে এসেছে।” বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারেরও দাবি জানান মোজাম্মেল হক।
বিকেল ৫টার দিকে জানান, মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর এলাকায় স্বল্প পরিসরে দুয়েকটি বাস ও লেগুনা চলাচল করতে দেখা গেছে। বাসের অভাবে সেখানে ফুট ওভারব্রিজের ওপর এবং আশেপাশে অন্তত কয়েক হাজার মানুষকে অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়।
একই চিত্র দেখা গেছে গুলিস্তান, শাহবাগ, বাংলামটর, ফার্মগেইট এলাকায়ও। বাসের অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে অফিস শেষে বাড়ি ফেরার পথের যাত্রীদের।
গুলিস্তানে বাসের জন্য অপেক্ষারত নারায়ণগঞ্জের খলিকুর রহমান জানান, তিনি দুই ঘণ্টা ধরে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। তবে কোনো বাস না থাকায় কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না।
মুন্সিগঞ্জে যাওয়ার বাস না পেয়ে দুই মেয়ে আর এক ছেলেকে নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন সখিনা বেগম। তিনি বলেন, “বেশ কয়েক ঘণ্টা বসে আছি, গাড়ি পাচ্ছি না। আদৌ পাব কীনা বুঝতে পারছি না।”
গুলিস্তানে বাস বন্ধ থাকার কারণ জানতে চাওয়া হলে সিটি বন্ধন পরিবহনের টিকেট বিক্রেতা হেমায়েতুল্লাহ বলেন, “মালিকের নির্দেশে বাস বন্ধ আছে। ছাড়তে না বলা পর্যন্ত বাস চলবে না।” সকাল ১১টার পর থেকে গুলিস্তান থেকে ঢাকার ভেতরে এবং আশপাশের জেলাগুলোতে কোনো বাস চলেনি বলেও জানান তিনি।
গুলিস্তানে রাস্তার দুই পাশে কয়েক হাজার যাত্রীকে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখেছেন শহীদুল ইসলাম।
বিকেল ৪টার দিকেও বিভিন্ন রুটের বাস চলাচল বন্ধ ছিল। তবে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ‘যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে’। বেলা আড়াইটার দিকেও মিরপুর ১১ নম্বরে পূরবী সিনেমা হলের সামনে অবস্থান নেয়া শতাধিক শ্রমিককে বিভিন্ন ধরনের স্লোগানও দিতে দেখা গেছে।
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে তাদের কয়েকজন চালককে জরিমানা ও সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ট্রাফিক পুলিশ ‘নানা অজুহাতে’ নিয়মিতই তাদের হয়রানি করেন বলে অভিযোগ করেন আশফাকুল নামে এক শ্রমিক। তিনি বলেন, “আমরা পেটের দায়ে কাজ করি। প্রতিদিনই নির্দিষ্ট হারে টাকা মালিকের হাতে দিতে হয়, দিতে না পারলে উল্টো আমাদের মজুরি কেটে রাখা হয়। এ অবস্থায় রাস্তায় গাড়ি নামালেই যদি জরিমানা গুণতে হয় তাহলে তো এই কাজ করে ভাত জোটানো সম্ভব না।”
এর আগে বেলা ২টার দিকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা একটি বিআরটিসি বাসসহ কয়েকটি গণপরিবহনের কাচ ভেঙে দেয়।
পূরবী সিনেমা হলের সামনে গাড়ির জন্য অপেক্ষারত কয়েকজন যাত্রী জানান, উত্তরা থেকে এসে অনেকেই সেখানে আটকে গেছেন। শ্রমিকরা যাত্রীদের নামিয়ে বাস ঘুরিয়ে দিচ্ছে। প্রায় একই ভাষ্য মিলল গাবতলী থেকে রবরব নামে একটি বাসে করে আসা যাত্রীদের কাছেও।
রাজিউন ইসলাম নামে একজন ব্যবসায়ী জানান, তিনি তার দোকানের মালপত্র নিয়ে গুলশান যাচ্ছিলেন। পূরবী আসার পর শ্রমিকরা তাদের জোর করে নামিয়ে দিয়েছে।
বাস বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়া অনেক যাত্রীকেই পায়ে হেঁটে যেতে দেখা গেছে।
বাংলাদেশ বাস মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, “প্রতিবার বাস ভাড়া বাড়ানোর পর কিছুটা নিয়ম-অনিয়ম হয়। এবার বাস ভাড়া বৃদ্ধির পর থেকে ম্যাজিস্ট্রেট চলন্ত বাস থেকে চালক ও শ্রমিকদের নামিয়ে কারাদ- দিয়ে দেন। “শ্রমিকরা আগে থেকেই আন্দোলনের হুমকি দিয়ে আসছিল। আজও এরকম একটি ঘটনার পর চালক ও শ্রমিকরা বাস চালানো বন্ধ করে দেয়।” শ্রমিকদের সঙ্গে বসে অবরোধ প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হবে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিএ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কে এম আল আমিন বলেন, তিনি নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে সাড়ে নয়টায় মোবাইল কোর্টের কার্যক্রম শুরু করেন। এক পর্যায়ে তিনি দেখেন সকাল ১০টার পরে কিছুক্ষণের জন্য রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। তিনি দাবি করেন, এর সঙ্গে মোবাইল কোর্টের কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না তা তিনি জানেন না। তিনি জানান, আজ হিমাচল পরিবহনসহ আরও কয়েকটি পরিবহনে বাড়তি ভাড়া আদায়, ভাড়ার তালিকা না থাকাসহ বিভিন্ন অভিযোগে বিভিন্ন পরিবহনের বিরুদ্ধে ১৫ টি মামলা করা হয়েছে ও ১৩ হাজার ৪০০ জরিমানা করা হয়েছে। এ সময় দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও একটি লেগুনা জব্দ করা হয়েছে। হিমাচল পরিবহনের চালকের সহকারীকে এক মাসের কারাদ- দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আগে এর চেয়েও বেশি জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু কোনো হট্টগোল হয়নি।
daily sangram

পশ্চিমা নাগরিকদের ওপর আবারও হামলা হতে পারে এখনো উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র : বার্নিকাট



 
কূটনৈতিক রিপোর্টার: বাংলাদেশে পশ্চিমা নাগরিকদের ওপর আবার সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এমন হামলার ‘নির্ভরযোগ্য তথ্য আছে’ দাবি করে নিজ দেশের নাগরিকদের সতর্ক করেছে দেশটি। শনিবার ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের এক নিরাপত্তা বার্তায় এমন সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় বার্তাটি দূতাবাসের ওয়েবসাইটে হালনাগাদ করা হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক হোটেলগুলোতে আয়োজিত পশ্চিমা নাগরিকদের বড় ধরনের জমায়েতসহ অন্যান্য স্থানে তাদের লক্ষ্য করে হামলা হতে পারে। এ বিষয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য তাদের কাছে আছে। দায়িত্ববোধ থেকেই নিজ দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশে চলাচলে সতর্ক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া ব্লুম বার্নিকাট। যুক্তরাষ্ট্র এখনও উদ্বিগ্ন বলে উল্লেখ করেন তিনি। গতকাল রোববার ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দুই বিদেশী নাগরিক হত্যার সঙ্গে আইএস জড়িত কিনা এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এখনও আসেনি। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কোন নতুন সতর্কতা দেয়নি, শুধুু পূর্বের সতর্কবার্তা হালনাগাদ করা হয়েছে।
মার্কিন দূতাবাসের হালনাগাদ করা বার্তায় বলা হয়, গত ২৮শে সেপ্টেম্বর ইতালির একজন এবং ৪ঠা অক্টোবর জাপানের এক নাগরিককে হত্যার ঘটনার দায় স্বীকার করেছে আইএসআইএল। ভবিষ্যতেও মার্কিন নাগরিকসহ পশ্চিমাদের লক্ষ্য করে হামলা হতে পারে। বাংলাদেশে বিদেশিদের নিরাপত্তা জোরদার করতে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে সন্ত্রাসের হুমকি বাস্তব ও বিশ্বাসযোগ্য হিসেবেই রয়েই গেছে। বার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশে ভ্রমণরত কিংবা অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া, নিজেদের নিরাপত্তার ব্যাপারে সতর্ক থাকা এবং স্থানীয় নিরাপত্তা পরিস্থিতির পরিবর্তনের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বিশেষভাবে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জনসমাগমের স্থলে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে হেঁটে, মোটরসাইকেলে, সাইকেলে কিংবা কোন খোলামেলা বাহনে চলাফেরা করতেও মার্কিন নাগরিকদের নিষেধ করা হয়েছে বার্তায়।
ঢাকায় ইতালিয়ান নাগরিক তাবেলা সিজার ও রংপুরে জাপানি নাগরিক হোশি কোনিও হত্যার পর বাংলাদেশে ভ্রমণে সতর্কতা জারি করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলো। এসব দেশের পক্ষ থেকে এখনও ওই এলার্ট প্রত্যাহার করা হয়নি। ভ্রমণ সতর্কতার কারণে বাংলাদেশে বিদেশী পর্যটক আসা কমে গেছে। একই সঙ্গে পোশাক শিল্পের ক্রেতারাও আসতে স্বস্তিবোধ করছেন না। সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে তাদের নাগরিকদের জন্য এই এলার্ট হালনাগাদ করলো।
daily sangram

নতুন যুগের অফিস

 
অফিস ২০১৬ ছাড়ার অনুষ্ঠানে মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্ত​া সত্য নাদেলা l ছবি: ইউএনটিভিওয়েবঅফিস ২০১৬ ছাড়ার অনুষ্ঠানে মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্ত​া সত্য নাদেলা l ছবি: ইউএনটিভিওয়েবশীর্ষস্থানীয় সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে-বাইরে সবসময় একটা পরিবর্তন চললেও, প্রতি তিন বছর অন্তর নতুন সংস্করণের অফিস নামের গুচ্ছ প্রোগ্রাম বাজারে ছাড়ে মাইক্রোসফট করপোরেশন। এমএস অফিস বিশ্বে অন্যতম জনপ্রিয় সফটওয়্যারই শুধু নয়, প্রতিষ্ঠানটির আয়ের বড় একটা অংশই আসে এই পণ্য থেকে। নতুন অনেক বৈশিষ্ট্য যোগ করে গত ২২ সেপ্টেম্বর বাজারে ছাড়া হয়েছে মাইক্রোসফট অফিস ২০১৬। অফিস ৩৬৫ নামেও এর পরিচিতি আছে।
‘মোবাইল-ফার্স্ট, ক্লাউড-ফার্স্ট’ মন্ত্র জপতে জপতে নতুন এই অফিস প্রোগ্রামটি নিয়ে মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সত্য নাদেলা যেমনটা বলেন, ‘মানুষের কাজ করার ধরন ফোরকাস্ট চার্টফোরকাস্ট চার্টনাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়েছে, আর এ জন্যই মাইক্রোসফট উৎপাদনশীলতা ও ব্যবসায়িক উদ্ভাবন-প্রক্রিয়ার ওপর জোর দিয়েছে। সর্বশেষ আনা নতুন এই পরিবর্তনগুলো অফিসের পরিচিত গণ্ডি থেকে বেরিয়ে সামগ্রিকভাবে একে অন্যের সঙ্গে যুক্ত থেকে আধুনিক কাজ-কারবার করায় সহায়ক হবে।’
বর্তমান সময়টা মুঠোফোন আর সুবিধামতো অনলাইনে থাকা কম্পিউটারের ক্ষমতাকে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করার প্রযুক্তি বা ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের যুগ। অফিস প্রোগ্রামটি নিয়ে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে মাইক্রোসফট তাই এখন অনেক বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়ছে। বিনা মূল্যের গুগল ড্রাইভ সেবা বা উন্মুক্ত অফিস সফটওয়্যারগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে অফিস ২০১৬ সংস্করণে নতুন আর কী কী সুবিধা এনেছে মাইক্রোসফট? কিছু কিছু সুবিধা আগের অনলাইনভিত্তিক অফিস ২০১৩ সংস্করণের সঙ্গেই যুক্ত ছিল, বাকিগুলোও জেনে নেওয়া যাক।
যৌথভাবে লেখা
ওয়ার্ড আর পাওয়ার পয়েন্টের মতো অ্যাপ্লিকেশনগুলোতে নতুন যুক্ত হওয়া যৌথভাবে লেখা বা কো-অথরিং সুবিধাটাই হচ্ছে সম্ভবত সবচেয়ে অনন্য এক সুবিধা। এ সুবিধায় একজনের বেশি ব্যবহারকারী কোনো ফাইল বা ডকুমেন্টে একসঙ্গে কাজ করতে পারবেন। কে কোন যন্ত্র বা অপারেটিং সিস্টেম থেকে এই সম্পাদনার কাজ করছেন সেটা কোনো ব্যাপার না। কে কোথায় কাজ করছেন সেটিও তাৎক্ষণিকভাবে দেখা যাবে।
অফিস স্যোয়ে
অফিস স্যোয়েঅফিস স্যোয়েমাইক্রোসফট এই অ্যাপ্লিকেশনটিকে আগেই আলাদা একটি সেবা হিসেবে পরিচিতি দিয়েছিল, এখন এটি যোগ করা হয়েছে অফিসের সঙ্গে। স্যোয়েই অ্যাপ ব্যবহার করে ভিডিও বা ছবির জমকালো উপস্থাপনা, প্রতিবেদন তৈরি বা ব্যক্তিগত কাহিনী খুব দ্রুত তৈরি করে সেটা আবার ওয়েবসাইটে যুক্ত (এমবেড) করে সহকর্মী, বন্ধু বা পরিবার-পরিজনের সঙ্গে সহজে ভাগাভাগি করে নেওয়া যায়।
টেল মি
পুরান অফিস প্রোগ্রামে একটা পেপার ক্লিপের অবয়বে কাগজে ভেসে আসা সাহায্যকারী ক্লিপির কথা মনে আছে? টেল মি সুবিধাটি হচ্ছে এরই আধুনিক আর চটপটে এক রূপ। কোনো বিষয়ে যে জায়গাটিতে আটকে যাবেন, সেখানে লিখে জানালেই হবে। সাহায্য নিয়ে হাজির হবে টেল মি। ওয়ার্ড, পাওয়ার পয়েন্ট, এক্সেল, আউটলুক, প্রজেক্ট, ভিজিও ও অ্যাকসেসে এ সুবিধা পাওয়া যাবে।
স্মার্ট লুকআপ
অফিস প্রোগ্রামে আগে থাকা অভিধানের কথা ভুলে যান। নতুন অফিসে স্মার্ট লুকআপ সুবিধাটি শব্দ আর বাক্যাংশের যাবতীয় প্রাসঙ্গিক তথ্য সরবরাহ করবে। ওয়ার্ড বা পাওয়ার পয়েন্টসহ যেকোনো অফিস অ্যাপ্লিকেশনে কোনো শব্দ বা বাক্য নির্বাচন করা হলে ডানে পাশেই দেখা যাবে তার শব্দার্থ আর উইকিপিডিয়াসহ বিভিন্ন উৎস থেকে সংগ্রহ করা বিভিন্ন তথ্য।
নতুন সাজ
অবশেষে অফিস প্রোগ্রামে গাঢ় সাজসজ্জার সুবিধা দিয়েছে মাইক্রোসফট। ব্যবহারকারীরা এখন আলোকিত, চকচকে চেহারা পরিবর্তন করে অন্ধকার বা ধূসর চেহারায় অফিস ব্যবহার করতে পারবেন। বিশেষ করে রাতে কাজ করার সময় অন্ধকার সাজটি বেশ কাজে দেবে। এ ছাড়া অন্য আরও অনেক চেহারায় অফিস ব্যবহার করা যাবে।
পূর্বাভাসের লেখচিত্র
বিভিন্ন তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এখন আরও অনেক সহজে পূর্বাভাসের লেখচিত্র তৈরি করা যাবে। শুধু এক্সেলের সেলগুলো নির্বাচন করে দিলেই এক ক্লিকেই ভবিষ্যতের প্রবণতা অনুমান করা যাবে। ডেটা ট্যাবের নিচে ফোরকাস্ট শিট নামে এটি পাওয়া যাবে।
ই-মেইল অগ্রাধিকার
মাইক্রোসফট আউটলুক ব্যবহার করার সময় ই-মেইলের ধরন আর যাঁদের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি বার্তা চালাচালি হয়, তাঁদের ডেটা বিশ্লেষণ করে প্রোগ্রামটি গুরুত্বপূর্ণ মেইলগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সাজিয়ে রাখবে। যেগুলো আসলেই গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলো বাদে বাকি মেইলগুলো আলাদা আরেকটি ফোল্ডারে সাজিয়ে রাখবে।
ওয়ান ড্রাইভ ও স্কাইপ
সমর্থন করে এমন যন্ত্র থেকে যেকোনো অফিস ডকুমেন্টে যেকোনো জায়গা থেকে কাজ করার সুবিধা দেবে মাইক্রোসফটের ক্লাউড সুবিধার ওয়ান ড্রাইভ। আর স্কাইপ দিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলাসহ, অনলাইন বৈঠক অথবা কম্পিউটারের পর্দাও ভাগাভাগি করা যাবে।
প্ল্যানার
নতুন কোনো প্রকল্পে হাত দেওয়ার পর দলীয়ভাবে কাজের জন্য নতুন প্ল্যানার সুবিধাটি বেশ কাজের। এটি দিয়ে ডকুমেন্ট তৈরির কাজ করা যাবে দ্রুত। প্রতিটি ডকুমেন্টের তথ্য সংরক্ষণ, অফিস লেখচিত্র, ই-মেইল-সংক্রান্ত কাজসহ প্রত্যেক ব্যবহারকারীর কাজকর্মের তথ্য জমা রাখার সুবিধা পাওয়া যাবে এতে, অনেকটা অনলাইন সেবা ট্রেলোর মতোই।
উইন্ডোজ ১০ সমর্থন
মাইক্রোসফটের নতুন অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ১০-এর অনেক সুবিধা অফিস ২০১৬-এর সঙ্গে ভালোভাবে কাজ করে। যেমন উইন্ডোজ হ্যালো—একটি বায়োমেট্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, যেখানে কম্পিউটারে প্রবেশ করতে ব্যবহারকারীর চেহারা শনাক্ত করা হয়। সেই সঙ্গে ডিজিটাল সহকারী কর্টানাও অফিস অ্যাপগুলোতে কাজ করতে পারবে। পিসি এবং ম্যাকে কিনে ব্যবহার করতে হলেও ১০ দশমিক ১ ইঞ্চির চেয়ে ছোট পর্দার ট্যাবলেট বা মুঠোফোনে সম্পাদনার সুবিধাসহ অফিস অ্যাপগুলো ব্যবহার করা যাবে বিনা মূল্যেই।

মঈন চৌধুরী | prothom alo

আধিপত্য হারাল ‘খান ও সিদ্দিকী পরিবার’

টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন পর আধিপত্য হারাল ‘খান পরিবার’ ও ‘সিদ্দিকী পরিবার’। আজ রোববার জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ওই দুই পরিবারের বলয়ের বাইরে থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়। 
আজ সকালে টাঙ্গাইল আউটার স্টেডিয়ামে সম্মেলনে ফজলুর রহমান খান ফারুককে সভাপতি এবং জোয়াহেরুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
কৃষক শ্রমিক লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকীকে আওয়ামী লীগ আগেই দল থেকে বহিষ্কার করে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকেও বহিষ্কার করা হয়। অন্যদিকে, টাঙ্গাইলের রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তারকারী সাংসদ আমানুর রহমান খান ও তাঁর ভাইয়েরা নিজ দলের নেতাকে হত্যার অভিযোগের কারণে পলাতক থাকায় এই পরিবারও আধিপত্য হারায়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহারা খাতুন সম্মেলনে প্রথম অধিবেশনের উদ্বোধন করেন। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলমগীর খানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাংসদ আবদুর রাজ্জাক, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন, পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, জেলা আওয়ামী লীগের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান খান প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মতিয়া চৌধুরী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া দেশে হত্যা ও ধ্বংসের রাজনীতি করছেন। এই দেশের শান্তি প্রিয় মানুষের জান মাল রক্ষার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা যা যা করা দরকার, তাই করবেন। তিনি বলেন, ‘এই সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা প্রতিজ্ঞা করি, শেখ হাসিনার অর্জনগুলো বিসর্জনে পরিণত হয়—এমন কাজ কেউ করব না। হাতে গোনা মতলববাজ দুই-এক জন যারা এসব কাজ করে, আসুন আমরা তাদের পরিত্যাগ করি।’
প্রথম অধিবেশন শেষে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বিকেলে সার্কিট হাউসে জেলা কমিটি এবং বিভিন্ন উপজেলা কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতৃবৃন্দ নিয়ে বৈঠকে বসেন। সেখানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) আহম্মদ হোসেন বলেন, ‘সম্মেলনের ব্যাপারে দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। সেই অনুযায়ী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হবে।’
এ সময় দুই-একজন এ ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে ভোটের দাবি জানান। পরে উপস্থিত নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান খান ফারুককে সভাপতি এবং বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়।
ফজলুর রহমান আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা। বিগত কমিটিতে তিনি সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ওই সময় সভাপতি ছিলেন খান পরিবারের সদস্য শামসুর রহমান খান। অবশ্য কয়েক বছর আগে সভাপতি মারা যান। কিন্তু তাঁর চার ছেলেই মূলত আধিপত্য ধরে রাখছিলেন। বিশেষ করে আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে বহিস্কার করার পর খান’রাই জেলার রাজনীতিতে প্রধান শক্তি হয়ে ওঠে। কিন্তু ফজলুর রহমান খান ‘খান পরিবারের’ পক্ষে সেভাবে কখনো অবস্থান নেননি। এ জন্য ‘খান’ পরিবারের পছন্দ ছিল ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলমগীর মেনুকে। তাঁকে দুটি পদের যে কোনো একটিতে নির্বাচিত করতে চেষ্টা ছিল খানদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।
আর কাদের সিদ্দিকী ও লতিফ সিদ্দিকী বহিষ্কারের পর তাদের অনুসারী ও ভাইয়েরাও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সেভাবে প্রভাব রাখতে পারেনি। এমনকি কালিহাতীতে লতিফ সিদ্দিকী আসনে উপনির্বাচনেও তাঁর অনুসারীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
আর সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনীত জোহায়েরুল ইসলাম প্রকাশ্যে খানদের বিরোধী ছিলেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ হত্যার জন্য খানদের দায়ী করে তাদের বিচারের দাবিতে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলেন তিনি

prothom alo

মুক্তবাক, গো-মাংস খাওয়া বেআইনি নয়



মনে হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (আরএসএস) বুঝতে পেরেছে, তারা যদি গরুর মাংস খাওয়ার বিরুদ্ধে কট্টর অবস্থান বজায় রাখে, তাহলে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার অজানা বিপদের মুখে পড়তে পারে। এর ফলে মুসলমানরা আরও নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়বে। আরএসএস সেটা বুঝতে পেরে মুখ বন্ধ করেছে। বেশি দিন আগের কথা নয়, যখন বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা এল কে আদভানি বলেছিলেন, বিজেপি হিন্দুদের সমর্থন নিয়ে লোকসভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করতে পারে, কিন্তু মুসলমানদের সহযোগিতা ছাড়া দেশ পরিচালনা করা কঠিন। তারপরও ব্যাপারটা শুধু কাগজে-কলমে রয়ে গেছে।
সংঘ পরিবার মুসলমানদের সমর্থন লাভের ব্যাপারটা যদি সত্যিই তীব্রভাবে অনুভব করত, তাহলে তারা তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিত। তারা মনে করে, প্রকৃত অর্থে দেশ পরিচালনায় মুসলমানদের ভূমিকা নেই। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার দিকেই লক্ষ করুন, সেখানে শুধু একজন মুসলমান মন্ত্রী রয়েছেন, তা-ও আবার অগুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে।
সম্প্রতি ভারতে এক অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, গরুর মাংস কি নিষিদ্ধ করা উচিত, নাকি উচিত নয়। যে দেশের হিন্দুদের সঙ্গে গরুর আবেগের সম্পর্ক রয়েছে, সেখানে এই প্রশ্ন তোলাটাই ভুল। হিন্দুরা গরু পূজা করে। আসল প্রশ্ন হচ্ছে, একজন মানুষকে গরুর মাংস খাওয়ার অপরাধে মেরে ফেলা হবে কি না। আবার এই অভিযোগটাও তোলা হয়েছে মিথ্যা গুজবের ভিত্তিতে। ব্যাপারটা যেন এমন, হিন্দু চরমপন্থীরা সেই মানুষদের ধর্মবোধ কেমন হবে, তা নির্দেশ করা শুরু করেছে।
গরুর মাংস খাওয়া–বিষয়ক বিতর্কটা বেশি দিন চলেনি, এটা একরকম আশীর্বাদই বটে। এই আলোচনা সমাজকে বিভক্ত করেছে। হয়তো এই উপলব্ধি থেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য হিন্দু-মুসলমানকে একত্র হতে হবে, তাদের একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করা চলবে না। তিনি এক সপ্তাহের মতো নিশ্চুপ ছিলেন, আর জনগণের চাপ না থাকলে হয়তো তিনি এই দ্ব্যর্থবোধক অবস্থান নিতেনও না। আর শেষমেশ তিনি যা বললেন তা এত ঈষদুষ্ণ যে মনে হয়েছে, তিনি স্রেফ অনুশীলন করছেন।
দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যবধান বাড়ছে, সেটা আরও খারাপ ব্যাপার। তাদের মধ্যে যোগাযোগ নেই বললেই চলে। মনে হয়, তারা উভয়ই নিজেদের জগতে বাস করে। এর মুখ্য কারণ হচ্ছে এই ক্রমেই গভীর হওয়া বিভাজন, সংঘ পরিবার উদ্দেশ্যমূলকভাবে যে বিভাজনের গোড়ায় পানি দিয়ে যাচ্ছে।
কয়েকজন বিশিষ্ট সাহিত্যিকের আকাদেমি পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় এই ব্যাপারটি সামনে এসেছে, পুরস্কার ফেরত প্রদানকারীদের মধ্যে আছেন জওহরলাল নেহরুর ভাগনি নয়নতারা সেগাল। কর্তৃপক্ষকে দেওয়া চিঠিতে তাঁরা বলেছেন, ভারতে বাক্স্বাধীনতার ক্ষেত্র ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। হ্যাঁ, তাঁরা ভারতীয় মূল্যবোধের কথাই বলেছেন। যে প্রজন্ম বাক্স্বাধীনতা ও বহুত্ববাদের আবহে বেড়ে উঠেছে, তাদের কাছে বিজেপির এই গেরুয়াকরণ গ্রহণযোগ্য হবে না।
দিল্লির কাছে দাদরিতে যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে, সেখান থেকে সাবেক আরএসএস প্রচারক মোদির শিক্ষা নেওয়া উচিত। একজন মুসলমান গরুর মাংস খেয়েছেন—এই গুজবের ভিত্তিতে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি যদি তা খেয়েও থাকেন, তাতেই বা কী, ভারতে তো এমন কোনো আইন নেই যে গরুর মাংস খাওয়া যাবে না। এটা ঠিক যে দু-তিনটি রাজ্য বাদে সব রাজ্যেই গো-হত্যা নিষিদ্ধ করা হয়েছে, কিন্তু গো-মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করে আইন করা হয়নি।
মোদি যদি এখনো বুঝে না থাকেন, তাহলে তাঁর বোঝা উচিত, বহুত্ববাদ ভারতীয় সমাজের প্রাণ। সংঘ পরিবারের অনেক চরমপন্থী সেটা পছন্দ না-ও করতে পারে, কিন্তু বিপুলসংখ্যক ভারতীয়ের কাছে ভারত হলো গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমতার নামান্তর। সন্দেহ নেই, ভারতের অনেক ছোট ছোট জায়গায় সংখ্যাগরিষ্ঠরা লাগামহীন হয়ে পড়েছে, তারা বহুত্ববাদকে অস্বীকার করে। কিন্তু এটা ভারতের জন্য সার্বিকভাবে প্রযোজ্য নয়। ভারত সংখ্যালঘিষ্ঠদের মুক্তবাকে বিশ্বাস করে, তাদের এই অধিকার সে রক্ষাও করবে।
ওদিকে যাঁরা টিভির পর্দায় গরুর মাংস খাওয়ার ঘোষণা দিচ্ছেন, তাঁরা কিন্তু বহুত্ববাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতার মূল্যবোধকে পুষ্ট করছেন না। ধর্মনিরপেক্ষ বিশ্বাসের কথা বুক চাপড়ে বলতে গিয়ে তাঁরা প্রকারান্তরে এর ক্ষতিই করছেন।
গুরুর মাংস খেয়েছেন—এই গুজবের ভিত্তিতে মোহাম্মদ ইকলাখকে বাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে খুন করা হয়েছে, এ ঘটনাটির প্রতি জাতির দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকা উচিত। সেটা সত্যি হলেও এ প্রশ্ন উঠবে: কোনো মানুষ গো-মাংস খেলেই কি তাঁকে খুন করতে হবে? ভারতের প্রায় সব রাজ্যেই গো-হত্যা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সংবিধানের দিকনির্দেশনামূলক নীতিতে বলা হয়েছে, ‘রাজ্যগুলোকে কৃষি ও প্রাণী পালনের ক্ষেত্রে আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে, আর বিশেষ করে, প্রজাতির সংরক্ষণ ও উন্নয়নে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে, গরু, বাছুর, অন্যান্য দুগ্ধদাত্রী প্রাণী ও মালবাহী পশু হত্যা নিষিদ্ধ করতে হবে।’
গো-মাংসের বিষয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা হয়েছে। আদালত রায়ে বলেছেন, কেউ গো-মাংস খাবেন কি খাবেন না, সেটা তাঁর একান্ত নিজস্ব ব্যাপার, আর তিনি তা খেলে আইনের দৃষ্টিতে অপরাধী হবেন না।
আসল কথা হলো, হিন্দু চরমপন্থীরা নির্বাচনকে সামনে রেখে গো-মাংসের ভিত্তিতে সমাজে মেরুকরণ ঘটিয়েছে। একইভাবে মহারাষ্ট্রভিত্তিক হিন্দু চরমপন্থী সংগঠন শিবসেনার কারণে রাজ্যটির বদনাম হয়েছে। শিবসেনা শুধু ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামোরই মানহানি করেনি, সে ভারতের মুখে কালি লেপ্টে দিয়েছে। শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বাল ঠাকরে বুঝতে পেরেছেন, সহিংসতা করে লাভ নেই। তিনি এর নিন্দাও করেছেন। ফলে শিবসেনা কিছুটা গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে, আর মুখ্যমন্ত্রীর পদের জন্য নিজেদের মানুষকে মনোনীত করেছে।
কিন্তু তা সত্ত্বেও শিবসেনার তরুণ তুর্কিরা গণতান্ত্রিক রীতিনীতি পছন্দ করেন না। শিবসেনা বিজেপি ঘরানার মানুষ ও সম্মানিত সাংবাদিক সুরিন্দর কুলকার্নির মুখে কালি মেখে দিয়েছে, তারা এখন এভাবেই কাজ করে। এই ঘটনার পর যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে, তাতে সংঘ পরিবারের বোঝা উচিত, ভারতের আত্মায় ধর্মনিরপেক্ষতার অধিষ্ঠান।

ইংরেজি থেকে অনুবাদ: প্রতীক বর্ধন, কুলদীপ নায়ার: ভারতীয় সাংবাদিক।

সাগরে গ্যাস অনুসন্ধান , ধীরে চলা বাংলাদেশ মিয়ানমারের পেছনে

অলংকরণ: তুলি

বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয় দেশের পক্ষেই ২০১২ সালের ১৪ মার্চ দিনটি ছিল যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। ওই দিন আন্তর্জাতিক আদালত দুই দেশের মধ্যকার সমুদ্রসীমানা বিরোধ মামলার রায় ঘোষণা করে এবং এর ফলে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের সমুদ্রসীমানা বিরোধের নিষ্পত্তি ঘটে। দেশ দুটিতে এর আগে দীর্ঘদিন ধরে সমুদ্রসীমানা নিয়ে পারস্পরিক অবিশ্বাস ও উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করেছে। এর অন্যতম কারণ হলো স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে দুটি দেশের কাছেই তাদের অর্থনীতি চাঙা করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় জ্বালানি সম্পদ জোগান দেওয়ার চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান এবং উভয় দেশই মনে করে বঙ্গোপসাগরে তাদের সমুদ্রসীমানায় বড় আকারে গ্যাস পাওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। ২০০০ দশকে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যসংলগ্ন সাগরে বড় কয়েকটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার উপরিউক্ত ধারণাকে আরও জোরদার করে তোলে। অতিসম্প্রতি প্রায় একই এলাকায় আরও গ্যাস আবিষ্কার বঙ্গোপসাগরকে দেশি-বিদেশি তেল কোম্পানির কাছে আরও আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে গণ্য করে।
মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমানা নিষ্পত্তির পর বাংলাদেশ তার সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ব্লকগুলোকে পুনর্নির্ধারণ করে ও নতুনভাবে চিহ্নিত করে। ফলে বর্তমানে বাংলাদেশের সমুদ্রে ২৬টি অনুসন্ধান ব্লক নির্ধারিত হয়, যার মধ্যে ১১টি অগভীর সমুদ্র ব্লক ও ১৫টি গভীর সমুদ্র ব্লক। বহুলভাবে প্রচারিত সমুদ্র বিজয় বা ব্লু-ইকোনমি ইস্যুর অন্যতম প্রধান আকর্ষণ সাগরে তেল-গ্যাসসম্পদের সম্ভাবনাকে কার্যকরভাবে উন্মোচন করার ত্বরিত উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা সবাই অনুভব করে। বিষয়টি যেমন বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য, মিয়ানমারের জন্যও তা-ই। প্রকৃতপক্ষে লক্ষ করা যায় যে পারস্পরিক সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তির পর গত তিন বছরে মিয়ানমার যেভাবে ত্বরিত উদ্যোগের মাধ্যমে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, সে তুলনায় বাংলাদেশের উদ্যোগগুলো ধীর, অপ্রতুল এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিতর্কিত।
মিয়ানমার ২০১৩ সালে তার সমুদ্রসীমানায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞাপন প্রচার করে এবং ২০১৪ সালের প্রথমার্ধেই প্রতিযোগী বিদেশি কোম্পানিগুলোর মধ্য থেকে বাছাইপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। সমুদ্রবক্ষে মোট ২০টি অনুসন্ধান ব্লকে ১০টির বেশি বিদেশি কোম্পানিকে উৎপাদনে অংশীদারত্ব চুক্তির অধীনে নিয়োগ দেওয়া হয়, যারা ইতিমধ্যে অনুসন্ধানকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। নিয়োগপ্রাপ্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত তেল কোম্পানি ফ্রান্সের টোটাল, ব্রিটেনের শেল অয়েল, ব্রিটিশ গ্যাস, যুক্তরাষ্ট্রের শেভরন, কনোকোফিলিপস, ইতালির ইএনআই এবং নরওয়ের স্ট্যাট অয়েল অন্তর্ভুক্ত। মিয়ানমার তার চুক্তির শর্তে প্রতিটি বিদেশি কোম্পানিকে তার সঙ্গে একটি দেশীয় (মিয়ানমার) কোম্পানিকে যুক্ত করার বাধ্যবাধকতা দিয়েছে। সামগ্রিকভাবে ২০১২ সালে সমুদ্রসীমানা বিরোধ মীমাংসার পর থেকে মিয়ানমারের তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উন্নয়নে একটি গতিশীল কার্যক্রম লক্ষ করা যায়, যেখানে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর স্পন্দন সুস্পষ্ট।
তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশ গত তিন বছরে কেবল তিনটি সমুদ্র ব্লকে (অগভীর ব্লক নম্বর ৪, ৯ ও ১১) মাত্র দুটি বিদেশি কোম্পানিকে (ভারতের ওএনজিসি এবং অস্ট্রেলিয়ার সান্তোস/ক্রিস এনার্জি) পিএসসি চুক্তির অধীনে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে নিয়োগ করতে সক্ষম হয়। বাকি ২৩টি সমুদ্র ব্লকে, যা কিনা দেশের মোট সমুদ্র এলাকার প্রায় ৮০ শতাংশ, বর্তমানে কোনো কোম্পানির কোনো কার্যক্রম নেই। দেশের মোট সমুদ্র এলাকার এই ৮০ শতাংশ এলাকা অনুসন্ধান কার্যক্রমের বাইরে রেখে কোনো কোনো মহল কর্তৃক বাংলাদেশের সমুদ্র বিজয় ও ব্লু–ইকোনমি নিয়ে বক্তৃতা-বিবৃতির আড়ম্বর যে নেহাতই অসার, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একই সমুদ্রে বাংলাদেশের অংশে আন্তর্জাতিক কোম্পানিদের তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে অনাগ্রহ অথচ সীমানার অন্য পারে মিয়ানমারের অংশে জোরালোভাবে অনুসন্ধানকাজে লিপ্ত হওয়ার বিষয়টি পর্যবেক্ষক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। অনেকে মনে করেন, বাংলাদেশ তার পিএসসি চুক্তি মডেলে অতীতের ধারাগুলোকে ধরে রেখেছে মাত্র এবং তাকে যুগোপযোগী করার যথেষ্ট উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। বাংলাদেশে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ব্যবস্থাপনায় আমলাতান্ত্রিক ধীরগতি ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমলা মহলের অযাচিত হস্তক্ষেপও সামগ্রিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করেছে।
সমুদ্রে সাইসমিক জরিপ কাজ পিছিয়ে গেল: এটি সবাই অনুধাবন করে যে বাংলাদেশ তার সাগরবক্ষে পর্যাপ্ত অনুসন্ধান শুরু করতে যথেষ্ট দেরি করে ফেলেছে এবং কালক্ষেপণ না করে শিগগিরই এ কাজ শুরু করা বাঞ্ছনীয়। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত যোগ্য বিদেশি তেল কোম্পানিগুলোকে প্রতিযোগিতামূলকভাবে বাছাই করে সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে নিয়োগ করা প্রয়োজন। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ এ কাজে বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে পর্যাপ্ত সাড়া পায়নি। বিদেশি তেল কোম্পানিকে সমুদ্রে অনুসন্ধানকাজে নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশের পক্ষে যে দুর্বলতাটি রয়েছে, তা হলো তথ্যের অপ্রতুলতা। সমুদ্র ব্লকগুলোর ওপর নিজের কাছে তথ্য না থাকায় বিদেশি কোম্পানির কাছে তা আকর্ষণীয় করে তুলতে না পারা এ দুর্বলতার একটি অংশ। দ্বিতীয়ত, তথ্যের অভাবে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির টেবিলে বসে বাংলাদেশ দর-কষাকষির ক্ষেত্রে দুর্বল অবস্থানে থাকে।
এ অবস্থায় জাতীয় তেল-গ্যাস কোম্পানি পেট্রোবাংলা সিদ্ধান্ত নেয় যে সমুদ্রে যেসব এলাকা উন্মুক্ত বা খালি রয়েছে, তাতে সাইসমিক জরিপ করে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এর জন্য আন্তর্জাতিকভাবে বিজ্ঞাপন দিয়ে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে যোগ্য সাইসমিক জরিপ কোম্পানিকে নিয়োগ দেওয়া হবে। মাল্টিক্লায়েন্ট সার্ভে নামে পরিচিত এ ব্যবস্থাপনায় নিয়োগপ্রাপ্ত সাইসমিক কোম্পানি সমুদ্রবক্ষে সাইসমিক জরিপ করে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণমাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন তৈরি করে পেট্রোবাংলাকে দেবে। এর জন্য কোম্পানি বাংলাদেশের কাছ থেকে কোনো অর্থ নেবে না বরং এই তথ্য প্যাকেজ বিদেশি তেল কোম্পানির কাছে বিক্রি করে নিজের লভ্যাংশ রেখে বাংলাদেশকে একটি অর্থ অংশ প্রদান করবে।
উপরিউক্ত কাজটি সম্পন্ন হওয়ার পরই বাংলাদেশ প্রতিযোগিতামূলকভাবে বিদেশি কোম্পানিকে নিয়োগ করতে বিডিং প্রক্রিয়া শুরু করবে। যেহেতু সমুদ্রসীমানা বিরোধ মীমাংসার পর প্রায় তিন বছর পার হয়েছে এবং ইতিমধ্যেই সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানের কার্যক্রমে আশাপ্রদ অগ্রগতি হয়নি, সে কারণে এই মাল্টিক্লায়েন্ট সাইসমিক সার্ভে কাজটি শিগগিরই করার প্রয়োজনীয়তা বিচার করে পেট্রোবাংলা এ বছরের প্রথম দিকে সাইসমিক সার্ভে কোম্পানির কাছ থেকে দরপত্র আহ্বান করে। পাঁচটি আন্তর্জাতিক কোম্পানি এ কাজে আগ্রহ প্রকাশ করে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। পেট্রোবাংলা এদের মধ্য থেকে সবচেয়ে যোগ্য কোম্পানিকে বাছাই করার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ মূল্যায়ন কমিটি গঠন করে, যেখানে পেট্রোবাংলার জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই মূল্যায়ন কমিটি যথাসময়ে মূল্যায়ন শেষ করে সুনির্দিষ্টভাবে একটি কোম্পানিকে সর্বাপেক্ষা যোগ্য বিবেচনা করে বাছাই করে। পেট্রোবাংলা তা অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।
সংবাদমাধ্যমের সূত্রে জানা যায় যে মন্ত্রণালয় বেশ দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করার পর মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় এবং পেট্রোবাংলাকে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করে নতুনভাবে বাছাইপ্রক্রিয়া শুরু করতে নির্দেশ দেয়। এ ধরনের নির্দেশের পেছনে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি। বিশেষজ্ঞ মহল মন্ত্রণালয়ের এ ধরনের সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করে প্রশ্ন তুলেছে যে সরকারি আমলা মহল কীভাবে একটি বিশেষজ্ঞ কারিগরি কমিটির মূল্যায়নকে বাতিল করতে পারে? এর পেছনে নিজস্ব স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্যে প্রভাবশালী কোনো স্বার্থান্বেষী মহলের হাত রয়েছে—এমন আশঙ্কার কথা নানা মহল থেকে শোনা যাচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে একাধিক কারণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
প্রথমত, সাইসমিক জরিপের কাজ শুষ্ক মৌসুমে (অক্টোবর-মার্চ) করতে হয় বিধায় এই বছর সাইসমিক জরিপ কাজ শুরুই করা যাবে না বরং পরবর্তী শুষ্ক মৌসুমে তা শুরু হতে পারে। এ জরিপের ফলাফল পূর্ণাঙ্গভাবে পাওয়ার পরই পেট্রোবাংলা বিদেশি তেল কোম্পানিগুলোকে প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে নিয়োগ–প্রক্রিয়া শুরু করবে। অর্থাৎ পেট্রোবাংলা সাগরবক্ষে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য যে বিডিং প্রক্রিয়া শুরু করার পরিকল্পনা করেছিল, তা অন্তত দুই বছর পিছিয়ে যাবে। দ্বিতীয়ত, একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির কারিগরি মূল্যায়নের মাধ্যমে যোগ্যতম বিবেচিত হওয়ার পর কোনো কারণ না দেখিয়ে যোগ্য বিবেচিত কোম্পানিকে নিয়োগ না দিয়ে তা বাতিল ঘোষণা করার ফলে বিদেশিদের মাঝে সরকারি প্রশাসনের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব গড়ে উঠবে, যা কিনা এ দেশে তাদের কাজ করার আগ্রহকে ক্ষুণ্ন করবে। তৃতীয়ত, পেট্রোবাংলা বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে যে মূল্যায়ন কমিটি গঠন করেছিল, তাদের কারিগরি মূল্যায়নকে মন্ত্রণালয়ের আমলা মহল যেভাবে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছে, তা ভবিষ্যতে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে সবাইকে নিরুৎসাহিত করবে। সর্বোপরি তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে দেশীয় স্বার্থান্বেষী মহলের যোগসাজশের যে অভিযোগগুলো বিভিন্ন সময় পাওয়া যায় এবং তার কারণে জনগণের মাঝে সরকারি প্রশাসনের প্রতি যে অবিশ্বাস জন্মে, তা আরও সুদৃঢ় হবে।
পার্শ্ববর্তী মিয়ানমার গত তিন বছরে তার সমুদ্রসীমানায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমকে যেভাবে গতিশীল করেছে, বাংলাদেশ তা পারেনি কেন, এটি বিশ্লেষণের সময় এসেছে। বাংলাদেশকে তার অনুসন্ধানকাজের ব্যবস্থাপনায় ধীরগতি, আমলা মহলের অযাচিত হস্তক্ষেপ ও অস্বচ্ছ প্রশাসনের গণ্ডি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু সরকারি প্রশাসনিক কার্যক্রম নিশ্চিত করা না গেলে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষা করা সহজ হবে না।
ড. বদরূল ইমাম: অধ্যাপক, ভূতত্ত্ব বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

prothom alo

সালমানের বিয়ে আগামী বছর

লুলিয়া ভানটুর,সালমন খানলুলিয়া ভানটুর,সালমন খানবলিউডে সব সময় নানান বিষয় নিয়ে আলোচনায় থাকেন সালমন খান। অমুক নায়িকার সঙ্গে প্রেম করছেন, অমুকের সঙ্গে বাগদান হচ্ছে—এমন খবর হরহামেশাই মেলে। এবারের গুঞ্জন দাবাং তারকা না-কি আগামী বছর বিয়ে করছেন। আজ রোববার ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমসের খবরে এমনটাই বলা হয়েছে।
সালমানের সঙ্গে ঐশ্বর্য রাই বচ্চন ও ক্যাটরিনা কাইফের প্রেমের কথা শোনা গেছে। বারবার বজরঙ্গি ভাইজানের সঙ্গে বলিউড নায়িকাদের সম্পর্কের খবর বেরিয়ে। আবার বারবার সেই প্রেম ভেঙেও গিয়েছে। কিন্তু এবার আগামী বছর বিয়ের খবর বেরোল। সেই মেয়ে কিন্তু আবার বলিউডের নায়িকা নন। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে তাহলে কে সেই সুন্দরী? শোনা যাচ্ছে সেই মেয়ের নাম লুলিয়া ভানটুর।
খবরে বলা হচ্ছে, লুলিয়া রোমানিয়ার টিভি তারকা। লুলিয়ার সঙ্গে সল্লুর প্রেমে জড়ানোর খবর আগেই শোনা গিয়েছিল। এবার আগামী ডিসেম্বরে ৫০-এ পা দেওয়া সালমানের আংটি বদলের খবর শোনা গেল। আগামী বছরই নাকি গাঁটছড়া বাঁধবেন তাঁরা। তবে খবরগুলোতে এ ব্যাপারে সালমানের কোনো বক্তব্য নেই। 
২০১১ সালে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে ‘এক থ্যা টাইগারে’র শুটিংয়ের সময় সামলানের সঙ্গে দেখা করেন লুলিয়া ভানটুর। এরপর ‘দ্য কিক’ তারকা তাঁর ভগ্নিপতির প্রযোজিত একটি ছবিতে লুলিয়া কাজ করেন। শুধু তাই নয় বোন অর্পিতার বিয়েতেও লুলিয়াকে দাওয়াত দেন সালমান
 
prothom alo

মিনায় নিহত বাংলাদেশির সংখ্যা বেড়ে ১৩৭, নিখোঁজ ৫৩

মিনায় নিহত বাংলাদেশির সংখ্যা বেড়ে ১৩৭, নিখোঁজ ৫৩

সৌদি আরবের মিনায় পদদলিত হয়ে নিহত বাংলাদেশি হাজির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৭ জনে। এখনো নিখোঁজ আছেন ৫৩ জন।
সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ আজ রোববার সন্ধ্যায় টেলিফোনে প্রথম আলোকে এ কথা জানিয়েছিলেন।
নিহত হাজির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস ও হজ অফিসের কর্মকর্তারা। কেননা এখনো ৫৩ জন হাজি নিখোঁজ আছেন।
রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, নিহত হাজিদের মধ্যে ৯৬ জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাঁদের মধ্যে ৫৫ জনের লাশ সৌদি আরবেই দাফন করা হয়েছে। ৪১ জনের পরিচয় নিশ্চিত করার কাজ চলছে। যেসব লাশ দেখে পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না, তাঁদের ডিএনএর সঙ্গে আত্মীয়দের ডিএনএ মিলিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করছে সৌদি সরকার। বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে নিখোঁজ হাজিদের সৌদি আরবে থাকা নিকটাত্মীয়দের ডিএনএ নমুনা দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
সম্প্রতি ধর্মসচিব চৌধুরী মো. বাবুল হাসান সৌদি আরব থেকে ফিরে বলেছেন, হাজিদের লাশ বাংলাদেশে আনার ব্যাপারে দেশটির সরকার অনুমতি দেয়নি।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর হজের পরদিন শয়তানকে পাথর মারতে যাওয়ার পথে মিনার ২০৪ নম্বর সড়কে পদদলিত হয়ে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের হাজিরা মারা যান। সৌদি আরব এখন পর্যন্ত ৭৬৯ জন হাজির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। দেশটি বলেছে, এ সময় আহত হয়েছেন আরও আট শতাধিক।
অবশ্য এ ঘটনায় কতজন হাজি মারা গেছেন তা নিয়ে ইতিমধ্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ইরান বলেছে, পদদলিত হয়ে মৃতের সংখ্যা দুই হাজার হবে। ভারত ও পাকিস্তানের কাছে সৌদি সরকারের দেওয়া তালিকায় ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ হাজির মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে।
সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা বলেছেন, দেশটির বিভিন্ন হাসপাতালে আহত বাংলাদেশি হাজিরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। আহত হাজির সংখ্যা এখন ১১। কর্মকর্তারা বলেছেন, নিহত বাংলাদেশি হাজিদের সবার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মরদেহ সৌদি আরবের কেন্দ্রীয় মর্গে রাখা হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছে, এ বছর বাংলাদেশ থেকে হজে যাওয়া ১ লাখ ৬ হাজারের বেশি হাজির মধ্যে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে ১২৯ জনের।

ধোনির ভারতের ৯ ম্যাচে ৭ হার

ভারতকে আবারও হারাল দক্ষিণ আফ্রিকা। ছবি: রয়টার্স            ভারতকে আবারও হারাল দক্ষিণ আফ্রিকা। ছবি: রয়টার্স

পরাজয় আর পরাজয়।
মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে গত কটা মাস সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভারত ব্যর্থতার চোরাবালিতে হাবুডুবুই খাচ্ছে। মার্চে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে শুরু। এর পর সাতটি ওয়ানডে ও দুটি টি-টোয়েন্টি-ধোনির অধীনে খেলা নয় ম্যাচের সাতটিই হারল ভারত। ইন্দোরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জয় ফিরে পেলেও পরের ম্যাচেই আবারও তাদের সেই পরাজয়ের গল্প। আজ রাজকোটে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে ১৮ রানে হেরে সিরিজে ২-১-এ পিছিয়ে পড়ল ধোনির দল।
২৭১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইন্দোরের মতো রাজকোটেও বীরত্বগাথার দারুণ সুযোগ এসেছিল ভারতীয় অধিনায়কের সামনে। আজ নামলেন চারে। পাশে পেয়েছিলেন যোগ্য সঙ্গী বিরাট কোহলিকে। ৬৫ করা রোহিত শর্মা যখন ফিরলেন, ভারতের তখন দরকার ১৬২ বলে ১৫৮। হাতে ৮ উইকেট। তার চেয়ে বড় কথা, ভারতকে আশা দেখাচ্ছেন ধোনি-কোহলি। অধিনায়ক, সহ-অধিনায়কের রসায়নটা জমেও গেল। কী আশ্চর্য, ভারতকে এক অর্থে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিলেন এ দুজনই। ওয়ানডেতে যাঁদের স্ট্রাইকরেট ৯০-এর কাছাকাছি, তাঁরা এগোতে থাকলেন শম্বুক গতিতে।
দুজনের তৃতীয় উইকেটে ১১২ বলে এল ৮০ রান। ওভারপ্রতি ৪.২৮। ৬১ বলে ৪৭ রানের ইনিংসটি খেলে যখন মরনে মরকেলের বলে বিদায় নিলেন ধোনি, দল ভীষণ চাপে। দরকার ৪৯ বলে ৭৮। ভারতকে আরও বিপদে ফেলে ওই মরকেলের বলেই কোহলি বিদায় নিলেন স্বভাববিরুদ্ধ ৯৯ বলে ৭৭ রানের ইনিংস খেলে। এ সময় দরকার ২৯ বলে ৫৫। ২৩ রানের ব্যবধানে হুটহাট ৪ উইকেট হারিয়ে এক প্রকার ম্যাচের লাগামই হাতছাড়া করে ফেলল ভারত।
প্রোটিয়াদের অসাধারণ বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ভারতের রান ৬ উইকেটে ২৫২। ৩৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ভারতীয় ব্যাটিংকে চেপে ধরার মূল কাজটি করেছেন মরকেল। ম্যাচসেরাও তিনি।
এর আগে কুইন্টন ডি ককের ১০৩ ও ফ্যাপ ডু প্লেসির ৬০ রানের কল্যাণে চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে প্রোটিয়ারা। ভালো শুরুর পরও দক্ষিণ আফ্রিকার চ্যালেঞ্জ নিতে পারল না ভারত। ম্যাচ শেষে সঞ্জয় মাঞ্জরেকার যখন জিজ্ঞেস করলেন, কেন এমন ধীরলয়ে এগোনো? ধোনির জবাব, ‘উইকেট নিচু ও মন্থর হয়ে গিয়েছিল। শিশির আমাদের সহায়তা করেনি। বড় শট খেলা কঠিনই হয়ে পড়েছিল।’
আপাতত একটা উত্তর না হয় দিলেন। কিন্তু ব্যর্থতার মিছিলে ক্রমেই যে বাড়ছে প্রশ্ন। ভারত অধিনায়ক এত প্রশ্নের উত্তর দেবেন কী করে?

নওয়াজকে হত্যার চেষ্টা চালাতে পারে ‘র’!


নওয়াজ শরিফনওয়াজ শরিফপাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও জামাতুদ দাওয়ার (জেইউ) প্রধান হাফিজ মোহাম্মদ সাঈদকে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ হত্যার চেষ্টা চালাতে পারে বলে দেশটির পাঞ্জাবের প্রাদেশিক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক করেছে।

পাঞ্জাবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল শনিবার এ ব্যাপারে একটি গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদন পেয়েছে বলে দাবি করেছে।

আজ রোববার পাকিস্তানের ডন পত্রিকার অনলাইন সংস্করণের এক খবরে জানানো হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা গতকাল বলেন, দুই দিন আগে ওই সতর্কবার্তাটি পাওয়া গেছে। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র) প্রধানমন্ত্রী ও জেইউর প্রধানকে হত্যার জন্য তাদের এজেন্টদের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া চিঠি সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানে বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি করতে ‘র’ ‘মহা মূল্যবান শিকার’-এর পরিকল্পনা এটেছে।

প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও হাফিজ সাঈদকে এ সতর্কবার্তার বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, দেশটির গোয়েন্দা বিভাগ বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে জন সমাগমের সময় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা জোরদার করতে নিরাপত্তা রক্ষীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে

prothom alo

সিলেটের আদালতে জনরোষের মুখে কামরুল

 
    bbc
           প্রধান অভিযুক্ত কামরুল আজ আদালতে জনরোষের মুখে পরেন। (ফাইল ফটো)
বাংলাদেশে বহুল আলোচিত সিলেটের শিশু রাজন হত্যা মামলার বাদী পক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ আজ শেষ হয়েছে। আসামি পক্ষের সাফাই সাক্ষ্য গ্রহণের দিন আগামী ২০ অক্টোবর নির্ধারণ করেছেন আদালত।
সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরত আনার পর রাজন হত্যার প্রধান অভিযুক্ত কামরুল ইসলামসহ ১১ জনকে আজ রবিবার সকালে যখন আদালতে আনা হয় তখন আদালত প্রাঙ্গণে কয়েক হাজার মানুষ ভিড় করেন।
তবে এসব মানুষের নজর ছিল কামরুল ইসলামের ওপর। এসময় মি.ইসলামকে দেখে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন।
সিলেটের সাংবাদিক শাকিল হোসেন আদালত চত্বরে ছিলেন। তিনি বলছিলেন উপস্থিত জনতার মধ্যে কেও কেও মি. ইসলামকে লক্ষ্য করে চড়-থাপ্পড় মারার চেষ্টা করেন।
"বিপুল সংখ্যক পুলিশ ছিল কিন্তু তার মধ্যে দিয়েও মানুষ চড় -থাপ্পড় মারার চেষ্টা করে, তারা ফাঁসি ফাঁসি বলেও স্লোগান দেয়।" বলছিলেন মি. হেসেন
গণমাধ্যমে যেসব ছবি আসে সেখানে দেখা যায় হাতকড়া পরা অবস্থায় যখন কামরুল ইসলামকে আদালত কক্ষের দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তখন উৎসুক মানুষ আদালত ভবনে প্রতিটি ফ্লোরে ভিড় করে দেখেন। এর পরেই আদালত কক্ষে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের উপস্থিতিতে সাক্ষ্য গ্রহণ চলে। সেসময় সাধারণ মানুষ বা গণমাধ্যমের কর্মীরা সেখানে ঢুকতে পারেননি।
বিবিসি                 রাজন হত্যার বিচার চেয়ে এর আগে সিলেটে মানববন্ধন হয় (ফাইল ফটো)                
শিশু সামিউল আলম রাজনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ৩৮ জন সাক্ষী তালিকাভুক্ত ছিলেন। এদের মধ্যে ৩৬ নম্বর সাক্ষী হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কর্মকর্তা সুরঞ্জিত তালুকদারের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্যে দিয়ে আজ বাদী পক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হল।
বাদী পক্ষের আইনজীবী এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম বলছিলেন আগামী ২০ তারিখ আসামি পক্ষের সাফাই সাক্ষ্য গ্রহণের নির্ধারণ করেছেন আদালত।
এদিকে কামরুল ইসলামের পক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য তার একজন আইনজীবী আজ প্রথমবারের মত অংশ নেন।
এর আগে রাষ্ট্র পক্ষের নিয়োজিত একজন আইনজীবী তার পক্ষে মামলা পরিচালনা করছিলেন।
তবে কামরুল ইসলামের নতুন আইনজীবী আলি হায়দার ফারুকের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বাকি অভিযুক্তদের যেসব আইনজীবী রয়েছেন তাদের একজন হাবিবুর রহমান বলছিলেন কামরুল ইসলাম পলাতক থাকায় যেসব সাক্ষ্য গ্রহণ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে সেগুলো পুনরায় নেয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেন কামরুল ইসলামের আইনজীবী। তবে আদালত সেটা নামঞ্জুর করেন।
জুলাই মাসে চুরির অভিযোগে ১৩ বছরের শিশু রাজনকে খুঁটির সাথে বেধে পিটিয়ে হত্যা এবং সেদৃশ্য ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পরলে দেশ জুরে ব্যাপক আলোচনা হয়।
এই মামলার দুইজন অভিযুক্ত এখনো পলাতক রয়েছে।


 

ফিলিপাইনে আঘাত হেনেছে বড় আকারের টাইফুন

 
    typhoon koppu                 টাইফুন কপ্পুর বিস্তৃতি ৬৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত এবং বাতাসের গতি ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত           
     
ফিলিপাইনের উত্তরাঞ্চলে টাইফুন কপ্পুর আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হাজার-হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।
দুর্যোগ সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, ঝড়ের ফলে সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় ৪ মিটার (১২ ফুট) পর্যন্ত উঁচু পর্যন্ত ঢেউ দেখা দিয়েছে।
রোববার সকালে বিশালাকৃতির এবং ধীরগতির টাইফুনটি লুজোন দ্বীপের কাছে কাসিগুরান শহরে আঘাত হানে।
কপ্পুর আঘাতের ফলে আগামী তিনদিন মুষলধারে বৃষ্টি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর ফলে বড় ধরণের বন্যা এবং ভূমিধ্বসেরও আশংকা করা হচ্ছে।
সরকারের প্রধান দুর্যোগ সংস্থার প্রধান, আলেক্সান্ডার পামা বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় লুজনে অন্তত ১০,০০০ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। তবে এখনো পর্যন্ত কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ম্যানিলা থেকে বিবিসির বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ডেভিড সুকম্যান বলছেন, দেশটিতে টাইফুন হাইয়ানের পর থেকে সতর্কীকরণ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতির ফলে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার সম্ভাবনা অনেক বেড়েছে।
২০১৩ সালে ফিলিপাইনে সুপার টাইফুন হাইয়ানের আঘাতে ৬.৩০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়।
টাইফুন কপ্পু প্রায় ৬৫০ কিলোমিটার বিস্তৃত এবং ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটার বেগে বাতাস উৎপন্ন করছে। তবে টাইফুনটি এগুচ্ছে খুব ধীরগতিতে (ঘণ্টায় ৩ কিলোমিটার)।
টাইফুনটির ধীরগতির ফলে দীর্ঘসময় যাবত তীব্র বৃষ্টিপাত হবে বলে আশংকা করা হচ্ছে।

bbc bangla

প্রতিবাদের মুখে কিরগিজ এমপিদের চেয়ার কেনা স্থগিত

 
    kyrgyzstan_chair_mps                 কিরগিজ পার্লামেন্ট                
 
কিরগিজস্তানের পার্লামেন্টের সদস্যাদের জন্য বহুমূল্য নতুন চেয়ার কেনার এক পরিকল্পনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক বিরোধিতার মুখে স্থগিত করা হয়েছে।
পার্লামেন্টে দফতর পরিকল্পনা করেছিল, এমপিদের জন্য ১২০টি নতুন চেয়ার কেনা হবে - যার প্রতিটির দাম ধরা হয়েছিল ২৬ লক্ষ কিরগিজ সোম - বা প্রায় ৩৮ হাজার মার্কিন ডলার।
গত মঙ্গলবার এ নিয়ে প্রকাশ্যে টেন্ডার হবার কথা ছিল। কিন্তু একটি নিউজ ওয়েবসাইট এ নিয়ে রিপোর্ট করার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এর পর চেয়ার কেনার প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়।
প্রশাসনিক কর্মকর্তা নূরবেক কাদিরভ বলছিলেন, বর্তমানে যে চেয়ারগুলোতে এমপিরা বসেন - তা ২০১০ সালে কেনা হয়েছিল, এবং সেগুলো অনেক পুরোনো হয়ে গেছে।তাদের পরিকল্পনা ছিল নতুন চেয়ার কেনা হলে পুরোনোগুলো স্কুল ও শিশুসদনে দান করা হবে।
কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবাদ ওঠার পর অনেকেই অনলাইনে নিজেদের কর্মস্থলের পুরোনো বা ভাঙাচোরা চেয়ারের ছবি প্রকাশ করতে থাকেন। তারা প্রশ্ন তোলেন কেন এমপিরা তাদের চেয়ার নিয়ে সন্তুষ্ট নন।
অনেকে দাবি করেন, এমপিদের নতুন চেয়ার কেনার জন্য নির্ধারিত টাকা ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্রে দান করা হোক।
কিরগিস্তানে মাত্র ২৮ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।

bbc bangla

হিজাবের বিরোধিতা: কবিতায় প্রতিবাদ

 
    headscarf_facebook                 হিজাবের সমর্থনে কবিতার সাথে এধরণের কিছু ছবিও জুড়ে দেয়া হচ্ছে                
 
"আমার বিষয়ে অন্যদের নাক গলাতে দেবো না" একটি কবিতার পঙক্তি।
অন্য একটি কবিতায় লেখা "যাদের হিজাব নেই তাদেরকে আমারটা নিয়ে কথা বলতে দেবো না"।
উজবেকিস্তানে হিজাববিরোধী অভিযানের প্রতিবাদকারীরা এভাবেই ভাষা হিসেবে বেছে নিয়েছেন কবিতাকে। এধরণের বেশ কিছু কবিতা ফেসবুকে শত-শত বার শেয়ারও হয়েছে।
"আমার সমালোচনা না করে ফটোশপ দিয়ে তোমার মাথায় একটি কাপড় বসিয়ে দাও/তোমার মাথা ঢেকে ফেলো/ হিজাব পড়া একজন নারীর জন্য স্বাভাবিক বিষয়/ তুমি যদি হিজাব না পরো, আমারটা নিয়ে কিছু বলতে এসো না" একজন অলাইন ব্যবহারকারীর কবিতা। অন্য একটি কবিতায় ইউরোপিয় পোষাকের বিপরীতে 'ইসলামিক পোষাক'-এর গুণগান করা হয়েছে।
হিজাব যদিও উজবেকিস্তানে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ নয়, তবে সম্প্রতি বেশ কিছু হিজাবধারীদের পুলিশের হাতে আটকের ঘটনা ঘটেছে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে তারা হিজাব না খোলা পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার খবর পাওয়া গেছে। দেশটির টেলিভিশন অনুষ্ঠান এবং চলচ্চিত্রে হিজাবকে 'বিদেশী' আরব পোষাক হিসেবে দেখানো হয়।
মধ্য এশিয় দেশগুলোতে হিজাবের ওপর আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, যার মধ্যে বেশ কিছু দেশ স্বৈরতান্ত্রিক এবং মুসলিমপ্রধান।
অঞ্চলটির সরকারগুলো ইসলামপন্থার উত্থান এবং ইসলামিক স্টেটের হুমকি নিয়ে শঙ্কিত। আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ক্রাইসিস গ্রুপের হিসেবে অঞ্চলটি থেকে প্রায় ৪,০০০ মানুষ আইএসে যোগ দিয়েছে।
উজবেকিস্তানে যদিও বিবিসিসহ অন্যান্য বিদেশী সংবাদ সংস্থার ওয়েবসাইট প্রায়সময়ই বন্ধ করে রাখা হয়, তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর সেধরনের নিয়ন্ত্রণ নেই এবং এই মাধ্যমগুলোই প্রতিবাদ প্রকাশের একটি জায়গা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যদিও ফেসবুক, টুইটার এবং রুশ-ভাষার ভিকনটাকটের ব্যবহারকারীর সংখ্যা দেশটিতে খুবই কম। ধারণা করা হয় উজবেকিস্তানে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৩৬০,০০০, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার মোটে ১ শতাংশ।
bbc bangla

শংকায় নই, সতর্ক আছি: পূজা উদযাপন পরিষদ

 
    durga                 রোববার থেকে শুরু হয়ে পাঁচ দিনব্যাপী চলবে দুর্গাপূজা          
      
বাংলাদেশে হিন্দুদের সবচাইতে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা আজ থেকে শুরু হচ্ছে দেবী বোধনের মধ্যে দিয়ে।
পূজা উপলক্ষে বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে প্রায় ত্রিশ হাজারের মতো পূজা মণ্ডপ।
তবে এ বছর দুজন বিদেশী নাগরিকের হত্যাকাণ্ড, ব্লগার এবং ধর্মীয় ভিন্ন মতাবলম্বীদের উপর হামলা ও হত্যার কারণে পূজা উদযাপনের ক্ষেত্রে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে বলে জানাচ্ছে পূজা উদযাপন পরিষদ।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কাজল দেবনাথ বিবিসিকে বলেন, "আমরা শংকায় আছি বলতে চাই না, আমরা অধিকতর সংযত এবং সতর্ক থাকবো।"
তিনি বলেন, আয়োজকেরাও এবার স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা বাড়িয়েছেন এবং স্বেচ্ছাসেবকদের পরিচয়পত্রও দেয়া হয়েছে।
পূজা চলাকালীন সময়ে নিরাপত্তার খাতিরে এমপিদেরও নিজ নিজ এলাকায় থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান মি. দেবনাথ।
তবে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ বলছে এবারও বিভিন্ন স্থানে পূজা মণ্ডপে হামলা ও ভাংচুরের তথ্য তাদের কাছে রয়েছে। তাদের দাবি গতকাল পর্যন্ত পনেরোটির মতো মণ্ডপে এ ধরনের কিছু ঘটনা ঘটেছে।
পাঁচদিনের দুর্গাপূজা আনন্দের সাথেই শেষ করার বিষয়ে তারা আশাবাদী।

bbc bangla

স্লোভেনিয়া সীমান্তে পুলিশের সহায়তায় সেনাবাহিনী

                     স্লোভেনিয়ার সীমান্ত এলাকায় অভিবাসীদের একটি দল                

হাঙ্গেরি ক্রোয়েশিয়ার সাথে তার সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার পর কয়েকশ শরণার্থী ক্রোয়েশিয়া থেকে স্লোভেনিয়ায় প্রবেশ করেছে ।
ইউরোপমুখী এসব শরণার্থীর সংখ্যা আরো বাড়বে বলেই ধারণা করা হচ্ছে ।
অভিবাসী সংকট সামলাতে পুলিশকে দেশটির সেনাবাহিনী সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিরো সেরার।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করে তার বাইরের সীমান্ত রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে ইতোমধ্যেই নিজেদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে হাঙ্গেরি কর্তৃপক্ষ ।
এ অবস্থায় ক্রোয়েশিয়ায় আটকে পড়া শরণার্থীরা স্লোভেনিয়ায় প্রবেশ করতে শুরু করেছে ।
                   বাসে উঠছে অভিবাসীরা                

তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মিরো সেরর বলেছেন তার দেশ ততক্ষণই শরণার্থীদের প্রবেশ করতে দেবে, যতদিন জার্মানি এবং অস্ট্রিয়া শরণার্থীদের গ্রহণ করবে ।
তিনি বলেন সামনের দিনগুলোতে হাজার হাজার শরণার্থীদের আগমন জনিত পরিস্থিতি সামলাতে ইতোমধ্যেই অতিরিক্ত পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে সীমান্তে এবং তাদের সহায়তা করবে দেশটির সেনাবাহিনী ।
ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের এক বৈঠকে অংশ নেয়ার পর মিস্টার সেরর সেনাবাহিনী মোতায়েনের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তিনি বলেন, “স্লোভেনিয়ায় কোন জরুরী অবস্থা জারি করা হয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্যে সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছি আমরা। একি সাথে সীমান্তের কাজগুলো ঠিক মতো করার চেষ্টা হচ্ছে যাতে করে দেশের অন্য অংশের ওপর এর কোন প্রভাব না পড়ে”।
প্রায় দু হাজার সাতশ অভিবাসী শনিবারই স্লোভেনিয়ায় প্রবেশ করেছে এবং এর মধ্যে অন্তত ছয়শ এর মধ্যেই অস্ট্রিয়ায় ঢুকে পড়তে সক্ষম হয়েছে ।

শনিবার রাতে হাঙ্গেরি তার সীমান্ত বন্ধ করে দিলে ক্রোয়েশিয়া অভিবাসীদের স্লোভেনিয়ার দিকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে হাঙ্গেরি সার্বিয়ার সাথেও তার সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছিলো।
মূলত জার্মানি আর অস্ট্রিয়াকে লক্ষ্য করে সিরিয়া থেকে এসব শরণার্থীরা আসছে।
এর আগেও অন্তত তিন হাজার অভিবাসী স্লোভেনিয়া হয়ে ইউরোপের অন্যদেশগুলোতে গেছে বলে জানা গেছে।
এদিকে আরেক খবরে জানা গেছে চারটি শিশু সহ অন্তত ১২ জন অভিবাসী গ্রীসের লেসবস যাওয়ার সময় তুরস্ক উপকুলে ডুবে মারা গেছে।
ধারণা করা হচ্ছে তারা সিরিয়া বা আফগানিস্তান থেকে এসেছিলো।
 
bbc bangla