চট্টগ্রামের বিভিন্ন সড়কে সম্প্রতি টানানো বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবর রহমানের ছবি সম্বলিত একটি ফেস্টুন নিয়ে শহরটিতে বিস্তর বিতর্ক চলছে।
অভিযোগ করা হচ্ছে, ওই ফেস্টুনটিতে যে ছবি রয়েছে তার চেহারা শেখ মুজিবের হলেও দেহটি তার নয়, বরঞ্চ দেহটি চট্টগ্রামের একজন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এম এ লতিফের।
বলা হচ্ছে, কম্পিউটারের ফটোশপ সফটওয়্যার ব্যবহার করে এই ছবি সম্পাদনার কাজ করা হয়েছে।
এই ছবি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে চট্টগ্রামের মানুষ, শহরটি গত কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত হয়ে আছে।
সর্বস্তরেই এই ছবির ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
ছোট খাট দুএকটি বিক্ষোভ প্রতিবাদের ঘটনাও ঘটেছে।
তবে আজ (বুধবার) বিকেলে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং এমপি লতিফের শাস্তির দাবিতে একটি বড়সড় বিক্ষোভ সমাবেশ আহ্বান করা হয়েছে বলে চট্টগ্রাম থেকে স্থানীয় সাংবাদিকেরা জানাচ্ছেন।
চট্টগ্রামের একজন বাসিন্দা এবং 'খেলাঘর' নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা জাহিদ হোসেনের তোলা ওই ফেস্টুনটির ছবিতে দেখা যাচ্ছে, শেখ মুজিবের একটি আপাদমস্তক ছবিরে নিচে একটি বানী লেখা।
এমপি লতিফের বয়ানে সেখানে লেখা রয়েছে "মানব সম্পদ মহাসম্পদ, এতে নেই দ্বিধা, এতেই মোদের দেশ এগুবে, বঙ্গবন্ধুর কথা।"
ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে শেখ মুজিব যথারীতি একটি পাঞ্জাবির ওপর তার বিখ্যাত 'মুজিব কোট' পরে আছেন। নিচে সাদা পাজামা এবং কালো রঙের জুতো বা স্নিকার।
জাহিদ হোসেন বলছেন, "বঙ্গবন্ধু জীবনে কোনদিন স্নিকার পরে ছবি তোলেন নি। বঙ্গবন্ধু কখনো পাকিস্তানি সালোয়ার পরে ছবি তোলেননি।"
মি. হোসেন আরো বলেন, তারা ওই ছবিটির সাথে এমপি লতিফের একটি ছবি মিলিয়ে দেখেছেন এবং দেখা গেছে মাথার অংশ বাদ দিয়ে দুটো ছবিই নিচের দিকে হুবহু একই।
"বঙ্গবন্ধুর শত্রু, সমালোচনাকারী কিংবা যুদ্ধাপরাধীরাও যে কাজ করার দুঃসাহস দেখায়নি, আমাদের এই সংসদ সদস্য সেই দু:সাহস দেখিয়েছে", বলছিলেন জাহিদ হোসেন।
এই নিয়ে ফেসবুকেও অনেকেই কথা বলছেন এবং এই ছবি সম্পাদনার নিন্দা জানাচ্ছেন।
এ নিয়ে এমপি লতিফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক চট্টগ্রাম সফর উপলক্ষে তিনি এই ফেস্টুনগুলো করিয়েছিলেন।
তবে, ফেস্টুনে যে তার শরীরের সাথে শেখ মুজিবের মাথা জুড়ে দিয়ে ছবি ব্যাবহার করা হয়েছে সেটা তার অগোচররেই হয়েছে।
তিনিও ঘটনাটি জেনেছেন তখনই, যখন প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম ঘুরে যাবারও দুদিন পরে এটা নিয়ে কথা উঠেছে।
কোনও একটি পক্ষ স্বার্থ হাসিলের জন্য একাজ করেছে এবং কারা এটা করেছে সেটা খুঁজে বের করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
"আমার বক্তব্য হচ্ছে কোন পক্ষ করেছে, কার মানুষ করেছে এটা ফাইন্ড আউট করতে হবে। এটা আমার দায়িত্ব খুঁজে বের করা", বলছিলেন এম এ লতিফ।