বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৫

বাংলাদেশিদের ভ্রমণে চাঙ্গা ভারতের অর্থনীতি


পর্যটন খাত থেকে রাজস্ব আয়ে বড় উল্লম্ফন দেখা গেছে ভারতে, যাতে বড় ধরনের অবদান বাংলাদেশি পর্যটকদের।

ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালের অক্টোবরে পর্যটন খাত থেকে ৯ হাজার ৬১১ কোটি রুপি আয় করেছে দেশটি, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি।
মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এ সময়ে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি পর্যটক ভারত ভ্রমণ করেছেন। আর দেশটি সবচেয়ে কম পর্যটক পেয়েছে পাকিস্তান থেকে।
ব্যুরো অফ ইমিগ্রেশন (বিওআই) এবং ফরেন এক্সচেঞ্জ আর্নিংস (এফইই) থেকে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার (আরবিআই) সংগৃহিত তথ্যের ভিত্তিতে বিদেশি পটর্যটকদের ভ্রমণ সংক্রান্ত এই মাসিক প্রতিবেদন (এফটিএ) তৈরি করেছে মন্ত্রণালয়। 
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে সবচেয়ে বেশি ভারত ভ্রমণ করেছেন ১৫টি দেশের পর্যটক, যার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ।
এসব দেশের মধ্যে বাংলাদেশি পর্যটক ছিলেন ১৫ দশমিক ২২ শতাংশ। এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র (১২ দশমিক ৯৯), যুক্তরাজ্য (১১ দশমিক ৩১)।
এ সময়ে ভারত ভ্রমণ করা পাকিস্তানের পর্যটকের হার ছিল ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের আগের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে মোট ৭ লাখ ৩২ হাজার ১০৫ জন বাংলাদেশি ভ্রমণ করেন, যা দেশটিতে মোট বিদেশি পর্যটকের ১৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
অক্টোবরে যে পরিমাণ বিদেশি ভারত ভ্রমণ করেছেন, তার ৭২ দশমিক ৭৩ শতাংশই বাংলাদেশসহ ১৫টি দেশের।
 মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছরই পর্যটন খাত থেকে ভারতের আয় বাড়ছে।
চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে (জানুয়ারি-অক্টোবর) পর্যটন খাত থেকে ভারতের আয় এক ট্রিলিয়ন রুপি ছাড়িয়ে গেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।
২০১৪ সালের একই সময়ে পর্যটন খাত থেকে ভারতের আয় ছিল ৯৮ হাজার ৯০১ কোটি (৯৮৯.০১ বিলিয়ন) রুপি।
সরকারি ওই কর্মকর্তা জানান, অন অ্যারাইভাল ভিসাপ্রাপ্তি  সহজ করাসহ সরকারের নেওয়া বেশকিছু পদক্ষেপ পর্যটন খাতের আয় বাড়ানোয় বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে। bdnews24

বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট স্থাপনে চুক্তি

 
    প্রস্তাবিত স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশ ছাড়াও অন্য দেশগুলোও সেবা নিতে পারবে (ফাইল ফটো)                
 
পৃথিবীর কক্ষপথে প্রথম একটি বাংলাদেশী স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে সিস্টেম ক্রয়ের একটি চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। এই স্যাটেলাইটটির নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট।
ফরাসি একটি কোম্পানির সঙ্গে করা চুক্তিতে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ওই স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।
এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৯৫১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা। তবে পুরো প্রকল্পটিতে ব্যয় হবে ২ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা। সরকারি-বেসরকারি তহবিল ব্যবস্থাপনায় এই অর্থ যোগাড় করা হবে।
বাংলাদেশকে এখন মূলত বিভিন্ন বিদেশী কোম্পানির স্যাটেলাইট ট্রান্সপন্ডার ভাড়া নিয়ে ব্যবহার করতে হয়।
নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পর বাংলাদেশ এই ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় করতে পারবে, সেই সঙ্গে দেশিয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও স্বল্প খরচে স্যাটেলাইট সুবিধা ব্যবহার করতে পারবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ টেলিকম রেগুলেটরি কমিশনের সচিব মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলছিলেন, এটি মূলত একটি সম্প্রচার এবং যোগাযোগ স্যাটেলাইট। বর্তমানে বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো ১১২কোটি টাকার উপরে প্রতিবছর খরচ করছে। এই পুরো টাকাটাই বিদেশে চলে যায়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটটির মাধ্যমে এসব সেবা দেয়া যাবে।
তিনি বলছিলেন, পুরো বাংলাদেশই এই স্যাটেলাইটের আওতার মধ্যে আসবে। ফলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেয়া সহজ হবে। ইন্টারনেট যোগাযোগ আরো সহজ হয়ে উঠবে।
মি. আলম বলছেন, ইন্দোনেশিয়া থেকে তাজিকিস্তান পর্যন্ত এই স্যাটেলাইটটির আওতা থাকবে। এর মধ্যে অনেক দেশেরই নিজস্ব স্যাটেলাইট নেই। এসব দেশ আমাদের এই স্যাটেলাইট থেকে সেবা নিতে পারবে।
এর আগে প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় আমেরিকা ও রাশিয়ার দুইটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি হয়। bbc

ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে মিশরের শার্ম আল শেখ

 
                     মিশরের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রগুলোর একটি শার্ম আল শেখ    
             
লোহিত সাগরের পাড়ে চমৎকার সমুদ্র তট, পেছনে রুক্ষ পাহাড়ের সারি—সব মিলিয়ে এক মোহনীয় সুন্দর জায়গা মিশরের অবকাশ কেন্দ্র শার্ম আল শেখ । চারিদিকে ক্যাফে, বীচ ক্লাব, হোটেল—দেখে বোঝা যায় এটা পর্যটকদের জন্যই গড়ে তোলা জায়গা।
তবে এই জায়গায় এখন পর্যটকদের সংখ্যা অনেক কমে গেছে।
মিশরের সিনাইতে রুশ পর্যটকবাহী এক বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ২২৪ জন আরোহী নিহত হওয়ার পর দেশটির পর্যটন শিল্প এখন বড় সংকটে।
কারিগরি ত্রুটির কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছিল নাকি মধ্য আকাশে বোমা দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে —তদন্তকারীরা সেই প্রশ্নের মীমাংসা এখনো করতে পারেনি।
কিন্তু এটি একটি সন্ত্রাসবাদী হামলা ছিল, এমন সন্দেহের ভিত্তিতে পর্যটকদের মিশরে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে অনেক দেশ।
আর তার প্রভাব পড়ছে এই শার্ম আল শেখেও।
আহমেদ দাউইশ শার্ম আল শেখের একটি বীচ ক্লাব চালান। কিন্তু তিনি এখন শঙ্কায় আছেন। সন্ত্রাসবাদী হামলাতেই রুশ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে, এমন সন্দেহের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে তার ব্যবসায়। পর্যটক আসায় ভাটা পড়েছে, অনেকেই ভয়ে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
                 পশ্চিমা দেশগুলো থেকে হাজার হাজার পর্যটক মিশরে আসে                 
এর মধ্যেই মিশর থেকে হাজার হাজার নাগরিককে ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে ব্রিটেন আর রাশিয়া।
আহমেদ দাউইশ বলছেন, যদি এ অবস্থা আরও দুমাসের বেশি চলে, আমাদের কিন্তু অনেক লোক কমাতে হবে। অন্তত ৫০ ভাগ কর্মী ছাঁটাই করতে হবে। কারণ পর্যটকের সংখ্যা আশিভাগ কমে গেছে। এ অবস্থায় ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হলে এছাড়া আমাদের উপায় নেই।
উইন্ড বীচে পর্যটকদের জন্য চলছে উদ্দাম পার্টি। কিন্তু সাগর তীরে রোদ পোহানোর জন্য সাজিয়ে রাখা খাটগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। সংকটটা কত বড়, এ থেকেই বোঝা যায়। বছরের এ সময়টাই এখানে পর্যটকে গিজ গিজ করার কথা, কিন্তু সাগরতীরের শূন্যতা ভরাচ্ছে কেবল সঙ্গীত।
তবে অনেকে আশাবাদী, একসময় তারা এই সংকট আবার কাটিয়ে উঠতে পারবেন। একটি বীচ ক্লাবের মালিক আদলি আসমাতাকাউই মনে করেন, তারা এবারও এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
তিনি বলছেন, আমি মোটেই চিন্তিত নই। এর আগেও এরকম সংকটের ভেতর দিয়ে আমরা গেছি। উপসাগরীয় যুদ্ধের সময়, ২০০৫ সালের সন্ত্রাসবাদী হামলার সময়, এবং আরব বসন্তের বিপ্লবের সময়। তখন তো রাস্তায় পুলিশ পর্যন্ত ছিল না। তার মধ্যেও তো আমরা বেঁচে আছি।
আকাশে উড়ে যাওয়া প্রতিটি বিমানে করে এখন পর্যটকরা দলে দলে মিশর ছাড়ছে। নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না দেয়া পর্যন্ত এদের যে ফিরিয়ে আনা যাবে না, সেটা এখন মিশরের সরকারও বুঝতে পারছে। bbc

অনুপ চেতিয়ার 'প্রত্যর্পণ' ভারতের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ

 
                     ১৯৯৭ সাল থেকে বাংলাদেশে কারাবন্দী ছিলেন ভারতের আলফা নেতা অনুপ চেতিয়া                
দীর্ঘ ১৭ বছর বাংলাদেশে কারাবন্দী থাকার পর ভারতের আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী আলফার শীর্ষ নেতা অনুপ চেতিয়াকে ঢাকার জেল থেকে ছেড়ে দেওয়ার কথা ভারত সরকার প্রাথমিকভাবে স্বীকার না করলেও দুপুরে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টুইট করে এর জন্য বাংলাদেশ সরকারকে অভিনন্দন জানান।
তিনটি মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত অনুপ চেতিয়ার সাজার মেয়াদ ২০০৭ সালে শেষ হবার পর ভারত সরকারের তরফ থেকে অনেক চাপ এবং অনুরোধ সত্ত্বেও বাংলাদেশ তাকে এতদিন ফেরত পাঠায়নি।
তবে ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও জানায় নি যে অনুপ চেতিয়াকে কোথা দিয়ে কীভাবে বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে বা তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তবে প্রাথমিকভাবে তাকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
১৭ বছর পরে অনুপ চেতিয়াকে ভারতে ফেরানো হল যখন আলফার সঙ্গে ভারত সরকারের শান্তি আলোচনা একটা গুরুত্বপূর্ণ দিকে এগোচ্ছে।
অনুপ চেতিয়াকে কীভাবে হস্তান্তর করা হল?
ভারতের তরফে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয় নি যে ঠিক কীভাবে অনুপ চেতিয়াকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে দুটি গোয়েন্দা এজেন্সি পৃথকভাবে জানিয়েছে যে পেট্রাপোল স্থলবন্দরের কাছাকাছি কোনও এলাকা দিয়ে মি. চেতিয়াকে সীমান্ত পার করানো হয়েছে।
                 ২০০৯ সালে আলফার চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়া সহ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে বাংলাদেশে আটক করে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়                
সাধারণত যেভাবে বন্দী প্রত্যর্পন হয়, সেভাবে চেক পোস্টের গেট পার করিয়ে বিএসএফের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এটা করা হয় নি। এর কারণ এখনও স্পষ্ট নয়।
আবার আনুষ্ঠানিকভাবে এটাও বলা হয় নি যে মি. চেতিয়াকে সীমান্ত পার করিয়ে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে মনে করা হচ্ছে প্রথমে দিল্লিতেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং পরে তাকে আসামে পাঠানো হবে।
তবে কয়েকদিন ধরেই যে মি. চেতিয়াকে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছিল, দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা চলছিল, সেটা পরিস্কার। দিন দুয়েক আগে তিনি নিজেই আলফার এক ভারত নিবাসী নেতাকে জানিয়েছিলেন এই সম্ভাবনার কথা।
আর মঙ্গলবার রাতে কয়েকটি গোয়েন্দা এজেন্সি জানতে পারে যে বুধবার মি. চেতিয়াকে নিয়ে আসা হবে পেট্রাপোল দিয়ে। কিন্তু গোটা ব্যাপারটা নিয়ে যেভাবে গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়েছে, তার কারণ বোঝা যাচ্ছে না।
ভারতের প্রতিক্রিয়া কী ?
ভারত বুধবার অনেক বেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে জানায় যে অনুপ চেতিয়াকে ফেরত আনা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করেছিলেন এবং যেভাবে সন্ত্রাসবাদের মোকাবেলায় ভারত বাংলাদেশের কাছ থেকে সাহায্য পাচ্ছে, তার জন্য ধন্যবাদ জানান তিনি – অনুপ চেতিয়ার কথাও ওঠে।
পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং-ও বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করেন অনুপ চেতিয়াকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। এছাড়া আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
আলফার যে অংশটি ভারত সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনা চালাচ্ছে, তারাও খুশি যে তাদের নেতা এতবছর বাদে দেশে ফিরেছেন এবং সম্ভবত আলোচনার দিশা নির্দেশ দিতে পারবেন তিনি।
কিন্তু আলফার সামরিক শাখার প্রধান পরেশ বড়ুয়া, যার নেতৃত্বাধীন অংশটি শান্তি আলোচনার ঘোরতর বিরোধী, তিনি এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানান নি।
অনুপ চেতিয়াকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
                 আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠি আলফার সঙ্গে ভারতের শান্তি আলোচনা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে                
অনুপ চেতিয়া ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে আলফার সরাসরি কর্মকান্ডের বাইরে রয়েছেন। তার পরে দেড় দশকেরও বেশি সময় তিনি জেলেই ছিলেন।
২০০৭ সালে জেলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে তিন বার বাংলাদেশে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন জানিয়েছিলেন। প্রতিবারই সেটা খারিজ হয়ে যায়।
কিন্তু ২০০৯ সালে যখন আলফার চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়া সহ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে আটক করে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয় আর ভারত সরকার শান্তি আলোচনা শুরু করে, তখন থেকেই মত বদলাতে থাকেন অনুপ চেতিয়া। নিজেই দেশে ফিরতে চান তিনি।
অন্যদিকে আলফার নেতারাও দাবি করতে থাকেন মি. চেতিয়াকে ফিরিয়ে এনে আলোচনায় বসানো হোক।
আলফার বিদেশ সচিব শশধর চৌধুরী বুধবার বিবিসি বাংলাকে বলেন যে অনুপ চেতিয়ার মতো রাজনৈতিকভাবে বিচক্ষণ নেতা খুব কমই আছেন। সেজন্য মি. চেতিয়াই যাতে শান্তি আলোচনায় নেতৃত্ব দেন, সেটাই অনেক দিন থেকে চাইছিলেন তারা।
তবে শান্তি আলোচনা এখন একেবারে শেষ পর্বে। ২৪ নভেম্বর সরকারের সঙ্গে আলফার যে বৈঠক রয়েছে দিল্লিতে, সেখান থেকেই সম্ভবত অন্তিম পর্ব – অর্থাৎ শান্তি চুক্তি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হবে।
এরকম একটা সময়েই রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত বিচক্ষণ নেতা অনুপ চেতিয়াকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হল।
এছাড়াও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশকে যেভাবে অভিনন্দন জানালেন, তার থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে মি. চেতিয়া এখনও কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভারত সরকার আর আলফা নেতৃত্বের কাছে।

ব্রিটেনের সরকারি নীতির 'ক্ষতিকর প্রভাব' ব্রিটিশ মুসলিমদের উপর

 
   
                 ব্রিটেনে এখন মুসলিমদের সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে বলে গবেষকরা বলছেন
ব্রিটিশ মুসলিমদের উপর ব্রিটেনের সরকারি নীতির 'ক্ষতিকর প্রভাব' পড়ছে বলে একটি সংগঠন দাবি করেছে।
বিশেষ করে ব্রিটিশ সরকারের নিরাপত্তা আর চরমপন্থা সংশ্লিষ্ট নীতিগুলো সেদেশের মুসলিমদের উপর 'নেতিবাচক প্রভাব' ফেলছে বলে তারা জানিয়েছে।
১৭৮২ জনের উপর একটি গবেষণা চালিয়ে ইসলামিক হিউম্যান রাইটস কমিশন নামের এই সংগঠনটি বলছে, এদের মধ্যে ৬০শতাংশের বেশি মানুষ মনে করে, রাজনীতিবিদরা তাদের বিষয়ে কিছুই ভাবেনা।
৫৬ শতাংশ মানুষ কটু মন্তব্যের শিকার হয়েছেন আর ১৮ শতাংশ মুসলিমকে শারীরিক আঘাত করা হয়েছে।
তবে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তর বলছে, মুসলিম বিদ্বেষ বন্ধে তারা সব ধরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রতিবেদনে ঈমান নামের উনিশ বছর বয়সী শ্বেতাঙ্গ ধর্মান্তরিত মুসলিম তরুণীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ঈমান জানিয়েছে, ধর্মান্তরিত হওয়ার পর তার কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে সন্দেহ করতে শুরু করে যে, সে উগ্রপন্থী হয়ে উঠেছে। তারা সন্ত্রাস বিরোধী কর্তৃপক্ষের কাছেও তার বিষয়ে রিপোর্ট করে। পরে কর্মকর্তারা ধর্মাচরণ আর বিশ্বাস নিয়ে তার সঙ্গে কথাও বলেন।
যখন তারা নিশ্চিত হয় যে, সে কোন উগ্রপন্থী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়, তখন তারা তাকে ব্যবহারেরও চেষ্টা করে।
ঈমান বলছেন, এখন পরিস্থিতি এমন যে, একজন মুসলিম হিসাবে অন্যদের মতো আমার স্বাভাবিক জীবনযাপন করার অধিকার নেই। আমাকে হয় উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে, নাহলে নিজেই উগ্রপন্থী হিসাবে চিহ্নিত হতে হবে।
গবেষক আরজু মিরালি বলছেন, এখন এখানে এমন একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে যেখানে মুসলিমরা মনে করেন, তাদের সবসময় সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে এবং তাদের জীবনযাপন দিনে দিনে কঠিন হয়ে উঠছে। bbc

সু চিকে শেখ হাসিনার ফোন


প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের নির্বাচনে এনএলডির জয়ে দলটির প্রধান অং সান সু চিকে টেলিফোনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার বিকালে বাংলাদেশে সরকার প্রধান এই টেলিফোন করেন বলে তার প্রেসসচিব ইহসানুল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
মিয়ানমারে দীর্ঘ সামরিক শাসনের পর প্রথমবারের মতো সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল ঘোষণা না হলেও সু চির দল এনএলডি যে বিপুল ভোটে জিততে চলেছে, তা স্পষ্ট।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষ, তার সরকার, দল ও ছোট বোন শেখ রেহানার পক্ষ থেকে সুচিকে অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, দীর্ঘ সংগ্রাম ও ত্যাগের প্রতিদান হিসাবে সু চি জনগণের এই ম্যান্ডেট পেয়েছেন।
১৯৯১ সালের অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সু চি বিজয়ী হলেও তাকে ক্ষমতায় বসতে দেয়নি মিয়ানমারের জান্তা সরকার। তারপর দীর্ঘ সময় গৃহবন্দি ছিলেন তিনি।
এর মধ্যে শান্তিতে নোবেল জয় করলেও পুরস্কার নিতে তাকে যেতেও দেয়নি সামরিক সরকার। আন্তর্জাতিক চাপ এবং দেশে আন্দোলনের মধ্যে সু চিকে মুক্তি দেওয়ার পর গণতন্ত্র ফেরাতে সম্মত হয় জান্তা।
‘গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি,’ মিয়ানমারের নেত্রী একথা বলার পর শেখ হাসিনাও বলেন, “আমিও গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রাম করছি।”
মিয়ানমারের স্বাধীনতা সংগ্রামী অং সানের মেয়ে যেমন সু চি, তেমনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে শেখ হাসিনা।
সামিরক শাসনের বেড়াজাল ছিন্ন করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় শেখ হাসিনা ও সু চি উভয়কেই দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।
শেখ হাসিনা মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক সরকারের প্রতি সমর্থন জানান। টেলিফোন করার জন্য সু চিও ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের সরকার প্রধানকে।
প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে সবচেয়ে বড় হল রোহিঙ্গা প্রত্যাবসন। ৫ লাখেরও বেশি মিয়ানমারের নাগরিকের ভার দুই ‍যুগের বেশি সময় ধরে বহন করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
এছাড়া অরক্ষিত সীমান্ত, মাদক পাচারের মতো সমস্যাও রয়েছে দুই দেশের মধ্যে।
ভোটে জিতলেও বিদেশি বিয়ে করায় মিয়ানমারের রাষ্ট্র কিংবা সরকার প্রধান হতে পারবেন না সু চি। তবে ক্ষমতার কেন্দ্রে যে তিনিই থাকবেন, তা নিয়ে কারও মনে সন্দেহ নেই।
সু চি নিজেও বলেছেন, দল ভোটে জিতলে তিনি রাষ্ট্রপতির চেয়ে ‘বড়’ কিছু হবেন। bdnews24

প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে বগুড়ায় উৎসাহ-উদ্দীপনা


বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বগুড়ায় জনসভা করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাত বছর পর জেলাটিতে তার আগমন ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে আগ্রহ-উদ্দীপনা।

বৃহস্পতিবার সকালে হেলিকপ্টারযোগে বগুড়ায় পৌঁছে প্রথমে সেনানিবাসের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর বিকেলে শহরের আলতাফুন্নেচ্ছা খেলার মাঠে জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি।
বগুড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে ১৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ১৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিথ্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন শেখ হাসিনা।
Bogra-Hasina-02.jpg

প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে নানা বর্ণে সেজেছে বগুড়া। প্রবেশ পথ চাঁন্দাইকোনা থেকে বগুড়া শহর পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার মহাসড়কে ধাপে ধাপে সাঁটানো হয়েছে ব্যানার, ফেস্টুন; তৈরি করা হয়েছে বড় বড় তোরণ।
শহরের প্রবেশদ্বার বনানী থেকে জনসভাস্থল আলতাফুন্নেচ্ছা খেলার মাঠ সাজানো হয়েছে নানা রঙে।  এছাড়া ব্যানার, তোরণ আর ফেস্টুনে ছেঁয়ে গেছে পুরো শহর।
প্রধানমন্ত্রীর আগমনে বগুড়াবাসীর দীর্ঘদিনের দাবিগুলো পূরণের পথ খুলবে বলে আশা করছেন স্থানীয়রা। এতে এলাকায় রাজনৈতিক পরিবর্তনের সূচনা হতে পারে বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।
বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আখতারুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখানকার জনগণ দীর্ঘদিন এলাকায় প্রধানমন্ত্রীকে দেখেনি। প্রধানমন্ত্রী বগুড়ায় উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করার পাশাপাশি আরও উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিস্থাপন করবেন।
“বগুড়াবাসী প্রত্যাশা করছেন, এর বাইরেও তিনি আরো উন্নয়ন প্রকল্পের ঘোষণা দেবেন। স্বাভাবিকভাবেই জনগণের মধ্যে এর প্রভাব সৃষ্টি হবে এবং স্থানীয়দের মধ্যে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা আরো বৃদ্ধি পাবে।”
জেলা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) সভাপতি আইনুল হক সোহেল বলেন, “বগুড়া শিল্প নগরী হিসেবে পরিচিত ছিল। প্রধানমন্ত্রী বগুড়াকে শিল্প জোন ঘোষণা করবেন-এ প্রত্যাশা রয়েছে স্থানীয়দের।”
প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে স্বাগত জানিয়ে শহরের সাতমাথার ফল ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আসছেন-এটা আমাদের জন্য সুখবর। উনি বগুড়াবাসীকে বড় কিছু দিয়ে যাবেন বলে আশা করছি।”
প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রত্যাশা তুলে ধরে শহরের চেলোপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল লতিফ বলেন, “বগুড়ার মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা বগুড়া সিটি করপোরেশন ঘোষণা এবং এখানে রেললাইন নির্মাণ। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে ঘোষণা দেবেন বলে আমরা আশা করছি।”

Bogra-Hasina-03.jpg

প্রধানমন্ত্রী সর্বশেষ ২০০৮ সালে বগুড়ায় এসেছিলেন বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণার সময় বগুড়া সার্কিট হাউজে একটি মতবিনিময় সভায় অংশ নেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জেলা বগুড়ার রাজনীতিতে বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর আধিপত্য রয়েছে।
২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সাতটি আসনের মধ্যে দুটিতে জয় পায় আওয়ামী লীগ জোট।
তবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বিএনপি বর্জন করায় এই জেলার সাতটি আসনই এখন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের।
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়ের পর দেশের যেসব সহিংস ও নাশকতা হয় তার উল্লেখযোগ্য অংশ ঘটে বগুড়ায়।
এরপর চলতি বছরের শুরুতে বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধেও বগুড়ায় গাড়িতে পেট্রাল বোমা নিক্ষেপসহ অন্যান্য নাশকতার ঘটনা ঘটে।
এ প্রেক্ষাপটের মধ্যেই বগুড়ায় নানা উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও নতুন প্রকল্পের ভিত্তিস্থাপন করতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন নিয়ে সারিয়াকান্দি-সোনাতলা আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দীর্ঘদিন পর প্রধানমন্ত্রী বগুড়ায় আসছেন, এজন্য বগুড়াবাসী আনন্দিত এবং তাদের প্রত্যাশাও অনেক বেশি।”
বগুড়ায় সিটি করপোরেশন ঘোষণা, সিরাজগঞ্জের সঙ্গে রেলপথ নির্মাণ, ফুটবল স্টেডিয়ামসহ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প বাত্তবায়ন করা গেলে বগুড়ার রাজনীতিতে পরিবর্তন ঘটবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক এই সাংগঠনিক সম্পাদক।

রিয়াজুল বাশার ও জিয়া শাহীন, বগুড়া থেকে, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

আফগানিস্তানের গজনিতে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ


আফগানিস্তানের গজনিতে হাজারা সম্প্রদায়ের সাতজনকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে প্রায় ২ হাজার মানুষ।

বিবিসি বলছে, নিহতদের মধ্যে চারজন পুরুষ, একজন নারী ও দুইজন বালিকা রয়েছেন।
নিহতদের কারো কারো গলা কাটা ছিল।
তবে কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় জাবুল প্রদেশে নিহতদের লাশগুলো পাওয়া যায়। ওই অঞ্চলে তালেবান গোষ্ঠীর বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে কিছুদিন ধরে সহিংসতা বেড়েছে। তালেবানের একটি পক্ষ তাদের প্রতিপক্ষ গোষ্ঠীর ওপর বিরল আত্মঘাতী হামলার দাবিও করেছে।
বিক্ষোভকারীরা কফিন নিয়ে গজনিতে প্রতিবাদ মিছিল করে। তারা তালেবান ও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে স্লোগান দেয় এবং সরকারের কাছে নিরাপত্তার দাবি জানায়।
গজনিতে সংখ্যালঘু হাজারা সম্প্রদায়ের অনেক মানুষ বাস করেন। হাজারারা মূলত শিয়া মুসলিম। কিন্তু এরপরও প্রতিবেশি পাকিস্তানে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিয়ারা সুন্নি মুসলিম জঙ্গিদের হামলার শিকার হচ্ছে।
নিহতদের লাশ পরবর্তী সময়ে রাজধানী কাবুলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে শত শত মানুষ পরবর্তী প্রতিবাদ-বিক্ষোভের জন্য অপেক্ষা করেছিল।
তালেবান গোষ্ঠীর দুটি বিবদমান পক্ষের লড়াই শেষে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফলে এখনো পরিষ্কার নয় কোন পক্ষ এই অপহৃতদের হত্যার জন্য দায়ী।
কোনো কোনো প্রতিবেদনে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য বিদেশি জঙ্গি বিশেষ করে উজবেকিস্তান থেকে আসাদের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। এই জঙ্গিরা তালেবানের দলছুট একটি অংশে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু ওই দলছুট অংশের উপপ্রধান এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন।
অবশ্য সাতজনকে হত্যার দুদিন পর অপহৃত আটজন হাজারাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
মুক্তি পাওয়া একজন হাজারা জানিয়েছেন, তাদের বিদেশি যোদ্ধারা বন্দি করে রেখেছিল। আর ওই যোদ্ধারা উজবেক ভাষায় কথা বলতো।
আর এই তথ্য সাতজন হাজারা হত্যায় বিদেশি যোদ্ধাদের সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টির দিকেই ইঙ্গিত করে।

সিরিয়া শান্তি পরিকল্পনা দিয়েছে রাশিয়া


রাশিয়া সিরিয়ার সংবিধান সংস্কারের একটি প্রস্তাব দিয়েছে। যেখানে ১৮ মাস পর দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আয়োজনের কথা বলা হয়েছে।

জাতিসংঘে দেওয়া রাশিয়ার ওই নথিতে সংবিধান সংস্কারকালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ক্ষমতায় থাকবেন কি-না সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

শনিবার ভিয়েনায় এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। প্রায় ২০টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠন আলোচনায় অংশ নেবে। আলোচনার মূল লক্ষ্য সিরিয়ায় চার বছরের বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধেরঅবসান। রাশিয়ার প্রস্তাবে বলা হয়, সিরিয়ার সুনির্দিষ্ট বিরোধী দলগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশ নিতে হবে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, শনিবারের বৈঠকের আগে এটি নিশ্চিত করতে হবে যে, সিরিয়ার বিরোধী দলগুলোর মধ্যে কোনগুলোকে সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ করা হবে এবংকোন দলগুলোকে সংন্ত্রাসীদের সংগঠন হিসেবে বাদ দেয়া হবে।

রাশিয়ার ওই প্রস্তাবে আটটি বিষয় উল্লেখ করা হয়। যেখানে আসাদকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
যদিও আসাদ বিরোধীদের দাবি, আসাদকে রাজনীতিতে রেখে সিরিয়ার শান্তি ফেরানো অসম্ভব।

বেশ কয়েকটি  বার্তা সংস্থা ফাঁস হওয়া ওই নথির বরাত দিয়ে জানায়, “প্রস্তাবিত নতুন সংবিধানে সিরিয়ার জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট দেশটির সশস্ত্রবাহিনীর প্রধান হবেন এবং বিশেষ বাহিনী ওবৈদেশিক নীতি তার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।”

“যদিও সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়ার নেতৃত্বে আসাদ থাকবেন না। তবে সব পক্ষ থেকেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ থাকবে।”

‘অনেক বড় বোলারের রেকর্ড ভাঙবে মুস্তাফিজ’


আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুতেই সাফল্যে উদ্ভাসিত মুস্তাফিজুর রহমান। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার বিশ্বাস, রেকর্ডের পাতায় এক সময় কীর্তিমান বোলারদেরও ছাপিয়ে যাবেন মুস্তাফিজ।

 
গত জুনে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক ওয়ানডেতেই ৫ উইকেট নিয়েছিলেন মুস্তাফিজ। পরের ম্যাচে ৬ উইকেট নিয়ে গড়েছিলেন নতুন রেকর্ড। প্রথম ২ ওয়ানডেতে ১১ উইকেট ছিল না আর কারও। পরে টেস্ট অভিষেকেও ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়ে গড়েছিলেন আরেকটি রেকর্ড। ওয়ানডে ও টেস্ট, দুটিতেই অভিষেকে ম্যাচ সেরা হতে পারেননি ক্রিকেট ইতিহাসে আর কেউ।
৯টি ওয়ানডেতে ৩ বার ৫ উইকেট, আরও দুইবার ৩ উইকেট। বুধবার ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে দলের তরুণ পেসারকে নিয়ে মাশরাফির রসিকতা, “মুস্তাফিজ তো পণই করেছে যে ৩ উইকেট নেবে অথবা ৫ উইকেট নেবে। অন্য কিছু নয়!’
শুধু রসিকতাই নয়, মুস্তাফিজকে নিয়ে অধিনায়ক শোনালেন স্বপ্নের কথাও।
“আমাদের শেষ তিনটি সিরিজে যেভাবে বোলিং করেছে মুস্তাফিজ, অনেক বড় অবদান আছে আমাদের সাফল্যে। আমি বিশ্বাস করি, অনেক বড় কোনো বোলারের রেকর্ড সে ভাঙবে।”

আবার হোয়াইটওয়াশের তৃপ্তি বাংলাদেশের


তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অর্ধশতকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে লড়াইয়ের পুঁজি গড়া বাংলাদেশ সহজ জয়ই পেয়েছে। মুস্তাফিজুর রহমানের দারুণ বোলিং আর বোলার পরিবর্তনে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার বুদ্ধিমত্তা ও দুরদর্শিতায় অতিথিদের ৬১ রানে হারিয়েছে তারা।

এই জয়ে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। এই জয়ে আইসিসি ওয়ানডে র‍্যাংঙ্কিংয়ে একটি পয়েন্ট পেল তারা।
চলতি বছর এনিয়ে দুটি ওয়ানডে সিরিজে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ। এর আগে পাকিস্তানকে ৩-০ ব্যবধানে হারায় তারা। সর্বশেষ বাংলাদেশ সফরেও ওয়ানডে সিরিজে সব ম্যাচ হেরেছিল জিম্বাবুয়ে। গত বছর নভেম্বরে তাদের ৫-০ ব্যবধান হারায় মাশরাফিরা।
বুধবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেট ২৭৬ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ৪৩ ওভার ৩ বলে ২১৫ রানে অলআউট হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি জিম্বাবুয়ের। দ্বিতীয় বলেই চামু চিবাবাকে হারায় তারা। মুস্তাফিজুর রহমানের দারুণ এক বলে বোল্ড হয়ে যান চার দিয়ে শুরু করা চিবাবা।
সপ্তম ওভারে আবার আঘাত হানেন মুস্তাফিজ। এই বাঁহাতি স্পিনারের স্লোয়ার কাটারে নাসির হোসেনকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান অন্য উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান রেগিস চাকাভা।
নবম ওভারটি করতে যাচ্ছিলেন মুস্তাফিজ। তাকে থামিয়ে আল আমিন হোসেকে খুঁজেছিলেন অধিনায়ক। তখন মাঠে ছিলেন না আল আমিন। তিনি মাঠে এলেও সিদ্ধান্ত পাল্টে নাসিরকে দিয়ে ওভারটি করান মাশরাফি।
অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান চতুর্থ বলেই দেন নাসির। তার বলে এলবিডব্লউর ফাঁদে পড়েন পাল্টা আক্রমণে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করা ক্রেইগ আরভিন।
৪৭ রানে প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে হারানো জিম্বাবুয়ে প্রতিরোধ গড়ে শন উইলিয়ামস ও চিগুম্বুরার ব্যাটে। উইকেট ধরে রাখার সঙ্গে দ্রুত রানও তোলেন এই দুই জন।
আগের ম্যাচে ২৪২ রানের লক্ষ্য থাকায় সাব্বির রহমান-মাহমুদউল্লাহকে বোলিংয়ে আনেননি মাশরাফি। এবার পৌনে তিনশ রানের পুঁজি থাকায় জুটি ভাঙতে লেগ স্পিনার সাব্বিরকে আক্রমণে আনেন অধিনায়ক। চিগুম্বুরাকে বোল্ড করে বিপজ্জনক হয়ে উঠা চতুর্থ উইকেটে ৮০ রানের জুটি ভাঙেন সাব্বিরই।
ম্যালকম ওয়ালারের সঙ্গে উইলিয়ামসের ৫৯ রানের আরেকটি জুটি জয়ের পথেই রাখে জিম্বাবুয়েকে। এই জুটিও ভাঙে মাশরাফির দুরদর্শিতায়। ৩৬তম ওভারটি করতে প্রথমে বল দিয়েছিলেন নাসিরকে। শেষ মুহূর্তে তাকে সরিয়ে আল আমিনকে বোলিংয়ে আনেন অধিনায়ক।
আগের ম্যাচে চিগুম্বুরা-সিকান্দার রাজার প্রতিরোধ ভাঙা আল আমিন এবারও হতাশ করেননি অধিনায়ককে। তার দারুণ এক বলে নাসিরের চমৎকার এক ক্যাচে পরিণত হয়ে ফিরে যান ওয়ালার।
জিম্বাবুয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখা উইলিয়ামসকে ফেরান মাশরাফি। তার বলে সাব্বিরকে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে সর্বোচ্চ ৬৪ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
ইনিংসের শুরুতে জিম্বাবুয়েকে বড় ধাক্কা দেওয়া মুস্তাফিজ অতিথিদের শেষ আশাটুকুও নিভিয়ে দেন পরপর দুই বলে রাজা ও লুক জংউইকে ফিরিয়ে। দুটি ক্যাচই নেন সাব্বির। রাজাকে ফেরান দুর্দান্ত এক ডাইভিং ক্যাচে। জংউই বিদায় নেন সহজ এক ক্যাচ দিয়ে।
মুস্তাফিজের হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেন গ্রায়েম ক্রেমার। পরের ওভারে ফিরে টিনাশে পানিয়াঙ্গারাকে ফেরান মুস্তাফিজ। এ নিয়ে ৯ ম্যাচের ছোট্ট ক্যারিয়ারে তৃতীয়বার পাঁচ উইকেট নিলেন ২০ বছর বয়সী এই পেসার।
মুস্তাফিজের ছয় উইকেটের আশায় পাঁচটি স্লিপ ও দুটি গালিসহ ভীষণ আগ্রাসী ফিল্ডিং সাজান। কিন্তু চারটি বল কোনোমতে কাটিয়ে দেন টাওরাই মুজারাবানি। বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানিকে তিনি ফিরতি ক্যাচ দিলে বছরের ত্রয়োদশ জয়টি পেয়ে যায় বাংলাদেশ।
৩৪ রানে ৫ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার মুস্তাফিজ।
এর আগে তামিম-ইমরুলের প্রথম শতরানের উদ্বোধনী জুটিতে শুরুটা ভালো হয় বাংলাদেশের। দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান শুরুর দিকে প্রান্ত বদল করে খেলতে পারেননি। এই সময়ে চার-ছক্কায় দলের সংগ্রহ এগিয়ে নেন তারা। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রান্ত বদল করে খেলা শুরু করেন তামিম-ইমরুল।
রানের দিক থেকে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সেরা উদ্বোধনী জুটি তাদেরই। কিন্তু এই জুটি কখনও তিন অঙ্কে পৌঁছাতে পারেনি। এবার সেই আক্ষেপ দূর করলেন তামিম-ইমরুল। আগের সেরা ৮০ রানের জুটিকে ছাড়িয়ে ১৪৭ রানে গিয়ে থামেন তারা। টানা দুই ম্যাচে অর্ধশতক পাওয়া ইমরুল সিকান্দার রাজার বলে স্টাম্পড হলে ভাঙে ২৯.৩ ওভার স্থায়ী জুটিটি।
৭৩ রান করা ইমরুলের ৯৫ বলের ইনিংসটি ৬টি চার ও চারটি ছক্কা সমৃদ্ধ। ওয়ানডেতে এটি তার দ্বাদশ অর্ধশতক।
ব্যক্তিগত ৭৩ রানে ফিরে যান অন্য উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিমও। লেগ স্পিনার গ্রায়েম ক্রেমারের বলে স্টাম্পড হন তিনি। ৭টি চার ও একটি ছক্কায় সাজানো ৯৮ বলের এই ইনিংস খেলার পথে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে দুই হাজার রানের মাইলফলক অতিক্রম করেন তামিম।
শেষ পর্যন্ত সাকিব আল হাসানকে (দুই হাজার ৫০) ছাড়িয়ে দুই হাজার ৫৬ রানে থামেন তামিম।
তিন নম্বরে নামা মুশফিকও এদিন শের-ই-বাংলায় দুই হাজার রান পূর্ণ করার পথে ছিলেন। ২৫ বলে ২৮ রান করে তিনিও স্টাম্পড হলে সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেননি তিনি। মিরপুরে মুশফিকের রান এখন ১ হাজার ৯৮৮।
রানের জন্য লড়াইয়ে থাকা লিটন দাস ফেরেন বদলি ফিল্ডার ওয়েলিংটন মাসাকাদজার দারুণ এক ক্যাচে।
এরপর লুক জংউইয়ের এক ওভারে সাব্বির রহমান ও নাসির হোসেন ফিরে গেলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। সাব্বির-নাসির ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্রেমারের তালুবন্দি হন। ৩ উইকেটে ২২২ থেকে ২২৬ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন মাহমুদউল্লাহ ও অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।
৪৫তম ওভারের শেষ বলে রান আউট হয়ে যেতে পারতেন মাহমুদউল্লাহ। শট খেলেই রানের জন্য দৌড় শুরু করেছিলেন তিনি। অন্য প্রান্তে থাকা মাশরাফি সারা দেননি। সরাসরি থ্রো স্টাম্প ভাঙার আগেই উইকেটরক্ষক চাকাভার গ্লাভসে লেগে বেল পড়ে যায়।
আউট হয়েছেন ভেবে প্যাভিলিয়নের দিকে হাঁটা শুরু করেন মাহমুদউল্লাহ। ততক্ষণে ভুল বুঝতে পেরে স্টাম্প তুলে নেন চাকাভা। কিন্তু বল আগেই ‘ডেড’ হয়ে যাওয়ায় বেঁচে যান সে সময় ২৫ বলে ৩২ রান করা মাহমুদউল্লাহ।
দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের গড়ে দেওয়া ভালো ভিতের সুবিধা কাজে লাগাতে পারেননি পরের দিকের ব্যাটসসম্যানরা। তাই আরও বড় সংগ্রহের সম্ভাবনা জাগিয়েও পৌনে তিনশ’ রানে থেমে যায় স্বাগতিকদের ইনিংস।
মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৪ ওভারে ৩৭ রানের জুটিতে দলের সংগ্রহ আড়াইশ’ পার করে ফিরে যান মাশরাফি। আগের দুই ম্যাচে রান না পাওয়া মাহমুদউল্লাহ দারুণ এক অর্ধশতকে দলকে ভালো সংগ্রহ এনে দেন।
এক বল বাকি থাকতে রান আউট হয়ে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। ৪০ বলে খেলা তার ৫২ রানের ইনিংসটি গড়া ৫টি চার ও একটি ছক্কায়।
জিম্বাবুয়ের জংউই ও ক্রেমার দুটি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৭৬/৯ (তামিম ৭৩, ইমরুল ৭৩, মুশফিক ২৮, লিটন ১৭, মাহমুদউল্লাহ ৫২, সাব্বির ১, নাসির ০, মাশরাফি ১৬, আরাফাত ৩*, মুস্তাফিজ ১; পানিয়াঙ্গারা ১০-১-৪৯-১, মুজারাবানি ৪-১-২১-০, জংউই ৯-০-৫০-২, চিগুম্বুরা ৬-০-২৯-০, রাজা ৮-১-৪৮-১, ক্রেমার ১০-০-৫৩-২, ওয়ালার ৩-০-২৪-১)
জিম্বাবুয়ে: ৪৩.৩ ওভারে ২১৫ (চিবাবা ৪, চাকাভা ১৭, আরভিন ২১, উইলিয়ামস ৬৪, চিগুম্বুরা ৪৫, ওয়ালার ৩২, রাজা ৯, জংউই ১১, ক্রেমার ৫*, পানিয়াঙ্গারা ৩, মুজারাবানি ০; মুস্তাফিজ ৮-০-৩৪-৫, মাশরাফি ৯-০-৪০-১, নাসির ৭-০-৩৬-১, আল আমিন ৮-০-৪৪-১, আরাফাত ৯.৩-০-৪৭-১, সাব্বির ২-০-১২-১)
ফল: বাংলাদেশ ৬১ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: তামিম ইকবাল

''বাংলাদেশে ভাইবার ও হোয়াটসঅ্যাপ সাময়িক বন্ধ করা হতে পারে''

 
                     জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজনে মোবাইল অ্যাপস বন্ধের ঘোষণা দেন।   
             
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বুধবার জানিয়েছেন, সন্ত্রাস বন্ধে এবং জঙ্গী দমনে তাঁর সরকার প্রয়োজন হলে ভাইবার এবং হোয়াটসঅ্যাপের মত মোবাইল ফোন অ্যাপসগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেবে।
বুধবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, যোগাযোগ প্রযুক্তির ভালো দিক যেমন আছে, তেমনি অপরাধীরাও এই প্রযুক্তির সুযোগ নিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনে ভাইবার এবং হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করে দেয়ার পরিকল্পনা সরকারের আছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের সুফল বাংলাদেশের মানুষ পাচ্ছে। কিন্তু জঙ্গীদের খুঁজে বের করতে যখন প্রয়োজন হবে তখন এসব অ্যাপ কিছুদিনের জন্য সরকার বন্ধ রাখবে।
''এসব বন্ধ রেখেই সন্ত্রাসী এবং জঙ্গীদের ধরার চেষ্টা আমরা করব।"
তবে সরকার কখন এই অ্যাপস্গুলো বন্ধ রাখবে তা জানানো হয়নি।
সন্ত্রাসী ও জঙ্গী কর্মকান্ডে জড়িতদের ধরিয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সব নাগরিক ও গণমাধ্যমগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ভাইবার এবং হোয়াটসঅ্যাপ বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অনেকে দেশেই মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের কাছে খুবই জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম।
                 ভাইবার এবং হোয়াটসঅ্যাপ বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অনেক দেশেই মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের কাছে খুবই জনপ্রিয় যোগাযোগ প্রযুক্তি।                
তবে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি খাতের একজন বিশেষজ্ঞ আবু সাঈদ খান বলছেন এগুলো মূলত পাবলিক অ্যাপস্‌ এবং এগুলো মোটেও নিরাপদ অ্যাপস্‌ নয়।
বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন এই অ্যাপসগুলোর ব্যবহার যেহেতু ব্যাপক এবং বিশেষ করে বাংলাদেশের মত দেশের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে এখানে ট্যাপ করা যেহতু বেশ কষ্টকর তাই বাংলাদেশ সরকার হয়ত চিন্তাভাবনা করছে যাতে অপরাধীরা এধরনের অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করতে না পারে।
মি: খান মনে করছেন ''এভাবে একধরনের বাধা বা বিঘ্ন অবশ্যই সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। কিন্তু এতে যে পুরোপুরি সফল হওয়া যাবে এমন কথা কেউই বলছে না- সরকারও বলছে না।''
তিনি বলছেন সরকারের জন্য এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পুলিশ বাহিনীর ওপর বিনিয়োগ করা।
''পুলিশের প্রশিক্ষণ, পুলিশের নৈতিক মনোবল, প্রতিষ্ঠান হিসাবে পুলিশকে আরও সুদক্ষভাবে তার দায়িত্ব পালনের ব্যবস্থা করে দেওয়া - এটা হচ্ছে সবচেয়ে জরুরি।''
তার মতে পুলিশ বাহিনীর মধ্যে নজরদারি করার দক্ষতা আগের তুলনায় কিছুটা কমে গেছে।
তিনি বলছেন বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোতে যথেষ্ট মেধাবী অফিসাররা আছেন এবং তারা ঠিকভাবে কাজ করলে এবং উপযুক্ত রসদ সামগ্রী পেলে তারা কার্যকরভাবে এগুলো রোধ করতে পারবে বলে তিনি মনে করেন।
''অতীতেও দেখা গেছে বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধীদের শনাক্ত করা হয়েছে, তাদের অবস্থান নিশ্চিত করা এবং তাদের ধরাও হয়েছে।''
তাই এসব অ্যাপস বন্ধ করেই যে শুধু সন্ত্রাসী বা জঙ্গীদের ধরা যাবে তা নয়, আবু সাঈদ খানের ব্যাখ্যায় এর পাশাপাশি মানবসম্পদ ও প্রযুক্তিসম্পদকে কাজে লাগিয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীকে একটা কার্যকর ভূমিকায় নামার সুযোগ সরকারকে করে দিতে হবে। bbc

মিয়ানমারে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে এনএলডির মধ্যে উদ্বেগ

 
                     তিনদিন পরেও মাত্র চল্লিশ শতাংশ আসনের ফল প্রকাশিত হয়েছে যার ৯০ শতাংশই জিতেছে এনএলডি   
             
মিয়ানমারের নির্বাচনে বিরোধী নেত্রী অং সান সু চির দল এনএলডির বিরাট সাফল্যকে দেশটির প্রেসিডেন্টের একজন মুখপাত্র অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এই নির্বাচনের ফল প্রকাশে ইচ্ছে করে দেরি করা হচ্ছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা নাকচ করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্টের এই মুখপাত্র।
নির্বাচনে এ পর্যন্ত যে চল্লিশ শতাংশ আসনের ফল প্রকাশিত হয়েছে, তার নব্বই শতাংশই জিতেছে এনএলডি।
অং সান সু চি ইতোমধ্যে জাতীয় সমঝোতার লক্ষ্যে সামনের সপ্তাহে বৈঠকের বসার জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন।
সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর প্রেসিডেন্ট আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।
মিয়ানমারে নির্বাচন হয়েছে রোববার। কিন্তু তিনদিন পর এসে মাত্র ৪০ শতাংশ আসনের ফলাফল ঘোষণা হয়েছে। কেন এত দেরি হচ্ছে, তা নিয়ে একদিকে যেমন অধৈর্য্য হয়ে পড়ছে মিস সু চির সমর্থকরা, তেমনি ক্ষমতা হস্তান্তর কতটা মসৃণ হয় তা নিয়ে উদ্বেগও তৈরি হচ্ছে। রাজধানী ইয়াংগুনের রাস্তায় মং শোয়ে টুন নামে এক পথচারী বলছেন ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে তিনি কিছুটা উদ্বিগ্ন।
                 নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় হয়েছে বুঝতে পেরেও অং সান সু চি সতর্কভাবে এগুচ্ছেন।                
''১৯৯০ নির্বাচনের পর অভিজ্ঞতা ভালো ছিল না। এবারও সেই উদ্বেগ হচ্ছে এবং সেটা সহজে যাবে না।''
জনগণের এই উদ্বেগের কথা বুঝেই হয়তো মিয়ানমারের সেনা সমর্থিত সরকারের পক্ষ থেকে আজ বুধবার পরোক্ষাভাবে অং সাং সু চিকে নির্বাচনী সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানানো হয়েছে। প্রেসিডেন্টর মুখপাত্র ইয়ে টুট বিবিসিকে বলেন, প্রেসিডেন্ট ইউ থেন সেইন একটি শান্তিপূর্ণ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য মিয়ানমারের জনগণকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন। একইসাথে, প্রেসিডেন্ট মিস সু চির দল এনএলডিকেও তাদের সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানাতে চান। প্রেসিডেন্ট আশা করেন এনএলডি ভবিষ্যতে যেন মানুষের আশা আকাঙ্খা মেটাতে পারে।
কিন্তু জাতীয় ঐক্যমত্য নিয়ে একটি আলোচনায় বসার জন্য সরকারকে লেখা অং সান সু চির একটি লিখিত প্রস্তাবে সরকার সাড়া দেয়নি।
প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র বলেছেন, নির্বাচনের পুরো পলাফল পাওয়ার পরেই সে ধরণের আলোচনার প্রশ্ন আসতে পারে, এখন নয়।
পর্যবেক্ষকরাও বলছেন, নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় হয়েছে বুঝতে পেরেও অং সান সু চি সতর্কভাবে এগুচ্ছেন। কথা বেশি বলছেন না।
কারণ ১৯৯০ এর নির্বাচন নিয়ে খুবই তিক্ত অভিজ্ঞতা ছিল তার। তখনও এন এলডি জিতেছিল, কিন্তু সেনা-সমর্থিত সরকার তা বাতিল করে তাকে গৃহবন্দী করেছিল।
বিবিসির একজন সংবাদদাতা বলছেন, ইচ্ছে করেই মিস সু চি নিজেকে এখনই বিজয়ী ঘোষণা করছেন না বরঞ্চ পরাজয় হজম করে নেওয়ার জন্য বর্তমান সরকারকে তিনি সময় দিচ্ছেন। bbc