যুদ্ধজাহাজ থেকে শাঁ করে ছুটে যাচ্ছে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। লক্ষ্যবস্তুতে গিয়ে আঘাত হানছে। আধুনিক যুদ্ধবিমানগুলো সবেগে উড়ে গিয়ে দূরের নিশানায় ফেলছে বোমা। সিরিয়ায় এভাবে হাত-পা ছেড়ে নিজের জারিজুরি প্রকাশ করছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ভাবগতিকে বোঝা যাচ্ছে, নবশক্তিতে রাশিয়ার পুনরুত্থান ঘটেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, সিরিয়ার ওপর দিয়ে পশ্চিমা শক্তির সঙ্গে টক্কর দেওয়াটাই তাদের লক্ষ্য।
এ বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সিরিয়ায় রাশিয়ার পেশিশক্তি প্রদর্শন শুরু। এর তেজে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী কোণঠাসা। নিষ্ফল আক্রোশে ফুঁসছে ওয়াশিংটন ও তার মিত্ররা।
রাশিয়ার রাজনৈতিক বিশ্লেষক গ্রেগরি মেলামেদভ বলেন, কাস্পিয়ান সাগর থেকে এত দূরে গিয়ে বিমান হামলা চালানোর যৌক্তিকতা নেই। এটা আসলে পেশি প্রদর্শন। কাকে? ইসলামপন্থীদের? মোটেও না। এটা আসলে যুক্তরাষ্ট্রকেই দেখানো হচ্ছে।
সিরিয়ায় আধুনিক ও সেকেলে মিলিয়ে যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। তাদের সঙ্গে স্থল অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে সিরিয়ার সেনারা। এসব হামলায় ‘সন্ত্রাসী’দের প্রশিক্ষণকেন্দ্র ও নিয়ন্ত্রণ চৌকি ধ্বংস হয়েছে বলে দাবি করছে মস্কো।
তবে রাশিয়া পশ্চিমাদের সঙ্গে ‘অস্ত্র প্রতিযোগিতা’ করছে—এমন ধারণা নাকচ করেছেন পুতিন। তিনি বলেন, ‘এটা অস্ত্রের প্রতিযোগিতা নয়, তবে বাস্তবতা হলো আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র উন্নত ও আগের চেয়ে বদলে গেছে। অন্যান্য দেশেও এটা হয়েছে, রাশিয়ার চেয়ে দ্রুতই হয়েছে। এ কারণে উন্নততর অস্ত্র তৈরির ধারা আমরাও বজায় রেখেছি।’
সিরিয়ায় হামলার পর পুতিন আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছেন। চমক দেখিয়ে যাচ্ছেন একের পর এক। পশ্চিমাদের নাক সিটকানোকে যেন এক ফুঁয়ে উড়িয়ে দিয়েছেন পুতিন। রাশিয়ার রাজনৈতিক বিশ্লেষক আলেকসান্দর বাউনভ বলেন, পুতিন কোণঠাসা হয়ে থাকতে চান না। নিজের দেশকে তিনি নির্বান্ধবও করতে চান না। তিনি পশ্চিমা বিশ্বের ওপর ঝাল ঝাড়তে চান। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়াকে আলাদা করাটা ছিল তাঁর কড়া জবাব।
সিরিয়ায় রাশিয়ার হামলা নিয়ে ভাবনার শেষ নেই পশ্চিমা বিশ্বের। তাদের অভিযোগ, মস্কো সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে মদদ দিয়ে যাচ্ছে। কারণ আসাদের বিরোধী পক্ষের অবস্থান লক্ষ্য করেই তারা হামলা চালাচ্ছে। এত দিন অস্বীকার করে এলেও গত রোববার অনেকটা সরাসরি পুতিন তা স্বীকার করে নিয়েছেন। পুতিন বলেছেন, সিরিয়ায় রুশ অভিযানের লক্ষ্য হলো, দেশটির বৈধ কর্তৃপক্ষকে স্থিতিশীল করা এবং একটি রাজনৈতিক সমঝোতা খুঁজে পাওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি করা। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুতিন এ কথা বলেন।
সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট পুতিন জানান, সিরিয়ায় স্থল অভিযান চালাবে না মস্কো। দেশটিতে স্থলসেনা মোতায়েনও করা হবে না।
তবে পুতিন যা-ই বলুন না কেন, বিশ্লেষকেরা বলছেন, আইএস জঙ্গিদের উৎখাত করার নামে সিরিয়ায় হামলা করে রাশিয়া আসলে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে লড়াই করতে চায়। পশ্চিমা বিশ্বকে ভয় দেখাতে চায়।
ওয়াশিংটনভিত্তিক কেনান ইনস্টিটিউটের পরিচালক ম্যাথিও রোজনস্কি বলেন, সিরিয়া বা আইএস নিয়ে বিতর্কের চেয়ে রাশিয়ার হামলা এখন আন্তর্জাতিক ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। খোদ রাশিয়াতেই এর কী প্রভাব পড়ছে, তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়ে গেছে। হামলা চালিয়ে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে রাশিয়া। কেন তারা এভাবে সামরিক শক্তি ব্যয় করছে, এটিও প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পশ্চিমা অবরোধের কারণে রাশিয়া এমনিতেই কিছুটা অর্থনৈতিক সংকটের মুখে। রাশিয়ায় তেলের দাম খুবই কম। এর মধ্যে সামরিক শক্তি বাড়ানোয় দেশটির জনগণ অনেকটাই উদ্বিগ্ন। বিশ্লেষকেরা সতর্কতা জারি করে বলেছেন, রাশিয়ার এই পাগলামি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের মর্যাদাকে ধূলিসাৎ করে দেবে। একধরনের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
অর্থনৈতিক দুর্দশা সত্ত্বেও ক্রেমলিন সেনাশক্তি বাড়ানোকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এ বছরের বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাজেট বাড়ানো হয়েছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, সিরিয়ায় দীর্ঘ মেয়াদে অভিযান চালালে মস্কো অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়বে। রাশিয়ার সরকার সেই ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত। পশ্চিমা বিশ্বকে একহাত নিতে এই ঝুঁকি নিচ্ছে তারা। এএফপি অবলম্বনে
এ বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সিরিয়ায় রাশিয়ার পেশিশক্তি প্রদর্শন শুরু। এর তেজে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী কোণঠাসা। নিষ্ফল আক্রোশে ফুঁসছে ওয়াশিংটন ও তার মিত্ররা।
রাশিয়ার রাজনৈতিক বিশ্লেষক গ্রেগরি মেলামেদভ বলেন, কাস্পিয়ান সাগর থেকে এত দূরে গিয়ে বিমান হামলা চালানোর যৌক্তিকতা নেই। এটা আসলে পেশি প্রদর্শন। কাকে? ইসলামপন্থীদের? মোটেও না। এটা আসলে যুক্তরাষ্ট্রকেই দেখানো হচ্ছে।
সিরিয়ায় আধুনিক ও সেকেলে মিলিয়ে যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। তাদের সঙ্গে স্থল অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে সিরিয়ার সেনারা। এসব হামলায় ‘সন্ত্রাসী’দের প্রশিক্ষণকেন্দ্র ও নিয়ন্ত্রণ চৌকি ধ্বংস হয়েছে বলে দাবি করছে মস্কো।
তবে রাশিয়া পশ্চিমাদের সঙ্গে ‘অস্ত্র প্রতিযোগিতা’ করছে—এমন ধারণা নাকচ করেছেন পুতিন। তিনি বলেন, ‘এটা অস্ত্রের প্রতিযোগিতা নয়, তবে বাস্তবতা হলো আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র উন্নত ও আগের চেয়ে বদলে গেছে। অন্যান্য দেশেও এটা হয়েছে, রাশিয়ার চেয়ে দ্রুতই হয়েছে। এ কারণে উন্নততর অস্ত্র তৈরির ধারা আমরাও বজায় রেখেছি।’
সিরিয়ায় হামলার পর পুতিন আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছেন। চমক দেখিয়ে যাচ্ছেন একের পর এক। পশ্চিমাদের নাক সিটকানোকে যেন এক ফুঁয়ে উড়িয়ে দিয়েছেন পুতিন। রাশিয়ার রাজনৈতিক বিশ্লেষক আলেকসান্দর বাউনভ বলেন, পুতিন কোণঠাসা হয়ে থাকতে চান না। নিজের দেশকে তিনি নির্বান্ধবও করতে চান না। তিনি পশ্চিমা বিশ্বের ওপর ঝাল ঝাড়তে চান। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়াকে আলাদা করাটা ছিল তাঁর কড়া জবাব।
সিরিয়ায় রাশিয়ার হামলা নিয়ে ভাবনার শেষ নেই পশ্চিমা বিশ্বের। তাদের অভিযোগ, মস্কো সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে মদদ দিয়ে যাচ্ছে। কারণ আসাদের বিরোধী পক্ষের অবস্থান লক্ষ্য করেই তারা হামলা চালাচ্ছে। এত দিন অস্বীকার করে এলেও গত রোববার অনেকটা সরাসরি পুতিন তা স্বীকার করে নিয়েছেন। পুতিন বলেছেন, সিরিয়ায় রুশ অভিযানের লক্ষ্য হলো, দেশটির বৈধ কর্তৃপক্ষকে স্থিতিশীল করা এবং একটি রাজনৈতিক সমঝোতা খুঁজে পাওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি করা। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুতিন এ কথা বলেন।
সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট পুতিন জানান, সিরিয়ায় স্থল অভিযান চালাবে না মস্কো। দেশটিতে স্থলসেনা মোতায়েনও করা হবে না।
তবে পুতিন যা-ই বলুন না কেন, বিশ্লেষকেরা বলছেন, আইএস জঙ্গিদের উৎখাত করার নামে সিরিয়ায় হামলা করে রাশিয়া আসলে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে লড়াই করতে চায়। পশ্চিমা বিশ্বকে ভয় দেখাতে চায়।
ওয়াশিংটনভিত্তিক কেনান ইনস্টিটিউটের পরিচালক ম্যাথিও রোজনস্কি বলেন, সিরিয়া বা আইএস নিয়ে বিতর্কের চেয়ে রাশিয়ার হামলা এখন আন্তর্জাতিক ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। খোদ রাশিয়াতেই এর কী প্রভাব পড়ছে, তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়ে গেছে। হামলা চালিয়ে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে রাশিয়া। কেন তারা এভাবে সামরিক শক্তি ব্যয় করছে, এটিও প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পশ্চিমা অবরোধের কারণে রাশিয়া এমনিতেই কিছুটা অর্থনৈতিক সংকটের মুখে। রাশিয়ায় তেলের দাম খুবই কম। এর মধ্যে সামরিক শক্তি বাড়ানোয় দেশটির জনগণ অনেকটাই উদ্বিগ্ন। বিশ্লেষকেরা সতর্কতা জারি করে বলেছেন, রাশিয়ার এই পাগলামি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের মর্যাদাকে ধূলিসাৎ করে দেবে। একধরনের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
অর্থনৈতিক দুর্দশা সত্ত্বেও ক্রেমলিন সেনাশক্তি বাড়ানোকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এ বছরের বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাজেট বাড়ানো হয়েছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, সিরিয়ায় দীর্ঘ মেয়াদে অভিযান চালালে মস্কো অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়বে। রাশিয়ার সরকার সেই ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত। পশ্চিমা বিশ্বকে একহাত নিতে এই ঝুঁকি নিচ্ছে তারা। এএফপি অবলম্বনে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন