২০১৫-১৬ সালের অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বাংলাদেশের অর্থনীতির সার্বিক চিত্র তুলে ধরে আজ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করবে গবেষণা সংস্থা সিপিডি।
সংস্থাটি বলছে, রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অর্থবছরের প্রথমার্ধে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
রপ্তানি ছাড়া এই অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত অন্যান্য লক্ষ্যমাত্রার কতটা অর্জিত হয়েছে?
সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তাফিজুর রহমান বিবিসিকে বলছিলেন – অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে উচ্চমাত্রায় নিয়ে যাবার জায়গাটিতে একটা বড় চ্যালেঞ্জ দেখা যাচ্ছে।
মি: রহমান বলেন “সাধারণত রেডিমেড গার্মেন্টসের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা যা থাকে সে তুলনায় কম রাখা হয়েছে। রেডিমেড গার্মেন্টসের বাইরের অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি অনেকটাই কমে গেছে। প্রথম মাঁচ মাসে প্রত্যাশিতভাবে ওগুলোর রপ্তানি হয়নি”।
“আমদানি ব্যয় কমেছে, তবে তার একটা বড় কারণ বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমে যাওয়া। উন্নত বিশ্বের অর্থনীতিও শ্লথ হওয়ার কারণে রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণের যে লক্ষ্য সেটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ।
তাছাড়া এডিপি বাস্তবায়নের গতিও খুব ধীর”- রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পিছিয়ে থাকার কারণ হিসেবে এ বিষয়গুলো উল্লেখ করেন মুস্তাফিজুর রহমান।
এ অর্থবছরের প্রথমার্ধে বেসরকারী বিনিয়োগ তেমন দেখা যাচ্ছেনা বলে জানান সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক।
এমনকি বাংলাদেশে বিদেশী যে বিনিয়োগ হয় সেখানেও বড় ধরনের কোন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছেনা বলে জানান মি: রহমান।
তবে মুস্তাফিজুর রহমান বলছেন- “যেসব অবকাঠামো এখন হচ্ছে সেগুলো যদি সময়মতো সাশ্রয়ীভাবে করা যায়, ইকোনোমিক জোন যদি তাড়াতাড়ি করা যায় তাহলে হয়তো পরিবর্তন আসবে, বিদেশী বিনিয়োগও বাড়বে এমন আশা করা যায়”।
সউদি আরবে শিয়া নেতা আল-নিমরের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার পর ইরান থেকে লেবানন পর্যন্ত যে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আরো একবার উঠে এসেছে শিয়া সুন্নি দ্বন্দ্ব।
ইসলাম ধর্মের বহু শতাব্দী-প্রাচীন এই দ্বন্দ্ব আজও মধ্যপ্রাচ্যের বহু সংঘাতের পেছনে অন্যতম একটি কারণ।
সিরিয়া বা লেবানন থেকে ইরাক বা পাকিস্তান পর্যন্ত মুসলিম বিশ্বের বহু সাম্প্রতিক সংঘাতের পেছনেই রয়েছে এই গোষ্ঠীগত বিভক্তির ইতিহাস - যা এসব অঞ্চলের বহু সম্প্রদায়কে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলেছে।
ইরাক এবং সিরিয়ায় বর্তমানে যে সংঘাত চলছে, তার ওপর শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্বের গভীর প্রভাব রয়েছে। দুটি দেশেই তরুণ সুন্নিরা বিদ্রোহী গ্রুপগুলোতে যোগ দিয়েছে, যার অনেকগুলোই আল-কায়দা বা এর সমগোত্রীয় আদর্শের অনুসারী।
অন্যদিকে শিয়া তরুণদের দেখা যাচ্ছে সরকারি বাহিনীর হয়ে বা তাদের সমর্থনে যুদ্ধ করছে।
লেবাননে ১৯৮০র দশকে গৃহযুদ্ধের সময় হেজবোল্লাহর সামরিক তৎপরতার কারণে শিয়াদের রাজনৈতিক অবস্থা মজবুত হয়।
পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানে তালেবানের মতো কট্টরপন্থী সুন্নি জঙ্গী গ্রুপগুলো অনেকবারই শিয়া মসজিদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে।
দেখা যাচ্ছে, যে সব দেশে সুন্নিরা শাসনক্ষমতায়, সেসব দেশে শিয়ারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অংশ - এবং তারা নিজেদের বৈষম্য আর নিপীড়নের শিকার বলে মনে করে।
সুন্নিদের মধ্যে কিছু উগ্রপন্থী মতাদর্শ আছে যাদের দিক থেকে শিয়াদের ব্যাপারে ঘৃণাসূচক মত প্রচার করতে শোনা গেছে।
ইরানে ১৯৭৯ সালে বিপ্লবের পর এক বিপ্লবী শিয়া ইসলামপন্থী এজেন্ডা প্রচার শুরু হয়, যা বিশেষত উপসাগরের রক্ষণশীল সু্ন্নি শাসকরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখেন।
এ সময় থেকেই ইরান তার সীমান্তের বাইরে শিয়া মিলিশিয়া এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে সমর্থন দিতে শুরু করে, আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে উপসাগরীয় দেশগুলোও সুন্নি সরকার এবং ধর্মীয় আন্দোলনগুলোর সাথে তাদের যোগাযোগ দৃঢ় করতে শুরু করে।
সুন্নি এবং শিয়া উভয় সম্পদ্রায়ের মুসলিমরাই তাদের পবিত্র গ্রন্থ কোরান এবং নবী মুহাম্মদের অনুসারী - কিন্তু তাদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছিল নবী মুহাম্মদের মৃত্যুর পরপরই - তার পরে কে মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব দেবেন, সেই প্রশ্নে মতপার্থক্যকে কেন্দ্র করে।
মূল ধর্মবিশ্বাস ও রীতিনীতি অভিন্ন হলেও দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ধর্মতত্ব, আচার-আচরণ, আইন এবং ধর্মীয় সংগঠনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু তফাৎ আছে। তাদের নেতাদের মধ্যেও দেখা যায় একে অপরের ওপর প্রাধান্য বিস্তারের চেষ্টা।
মুসলিম বিশ্বে সুন্নিরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ, পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ মুসলিমই সুন্নি। অন্যদিকে শিয়াদের সংখ্যা ১২ থেকে ১৭ কোটির মধ্যে - যা মুসলিম জনসংখ্যার দশ শতাংশের মতো।
ইরান, ইরাক, বাহরাইন, আজারবাইজান এবং কারো কারো মতো ইয়েমেনে শিয়ারা সংখ্যাগরিষ্ঠ। তবে মউদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিরিয়া, তুরস্ক, কাতার , লেবানন, কুয়েত, আফগানিস্তান, ভারত এবং পাকিস্তানে বড় সংখ্যায় শিয়া জনগোষ্ঠী রয়েছে।
তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকলেও ব্যতিক্রমও যে নেই তা নয়। কিছুদিন আগে পর্যন্তও ইরাকের শহরগুলোতে শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে বিয়ে খুবই সাধারণ ঘটনা ছিল।
বাঘে-ছাগলের বন্ধুত্বের ভক্ত হয়ে গেছেন অনেকে। তারা রীতিমতো এদের কর্মকান্ড পর্যবেক্ষণ করছেন।
ওয়েবক্যামের মাধ্যমে দর্শনার্থীরা সরাসরি দেখছেন এই বিরল বন্ধুত্বের দৈনিক কর্মকান্ড।
এই দুজনের নামে ফেইসবুক, টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে খোলা হয়েছে অ্যাকাউন্ট।
বিবিসির মস্কো সংবাদদাতা সারাহ রেইনসফোর্ড ওই চিড়িয়াখানার পরিচালক দিমিত্রি মেজেনস্তেভের সাথে কথা বলেছিলেন।
মি: মেজেনস্তেভ বলছিলেন “প্রায় তিন বছর ধরে আমুর এই চিড়িয়াখানায় আছে। সপ্তাহে দুইদিন তাকে ছাগল খেতে দিতে হতো।
আমরা একদিন তাকে তিমুর নামের ওই ছাগলকে খেতে দিই। কিন্তু চারদিন পর দেখি বাঘটি তিমুরকে খায়নি। এটা খুবই বিস্ময়কর একটা ঘটনা”।
“বাঘটা এতটা ক্ষুধার্ত ছিল সে কয়েক সেকেন্ডে তিমুরকে খেয়ে ফেলতে পারতো। কিন্তু এটা তিমুরেরই সাহসিকতা সে বাঘটির সঙ্গে বন্ধুত্ব পেতেছে।
তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে এদেরকে আলাদা করবোনা, একসাথেই রাখবো”-বলেন চিড়িখানার পরিচালক দিমিত্রি মেজেনস্তেভ।
তিনি আরও বলেন “এদের সম্পর্ক দেখে মানুষেরও শেখার কিছু রয়েছে । বিশ্বে যেসব যুদ্ধ হানাহানি চলছে, মানুষ যদি মানবিক হতে শেখে তাহলে নিরীহ প্রাণগুলো বেঁচে যেত”।
সউদি আরবে শিয়া নেতা শেখ নিমর আল-নিমরের মৃত্যুদন্ড কার্যকর হবার পর ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, এ জন্য সউদি আরবকে 'ঐশী প্রতিশোধের' সম্মুখীন হতে হবে।
আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, সউদি কর্তৃপক্ষ এই মৃত্যদন্ড কার্যকর করার মধ্যে দিয়ে অন্যায় ভাবে একজন 'শহীদের রক্ত ঝরিয়েছে।'
গতকাল আল-নিমরের মৃত্যুদন্ড কার্যকরের পর আজ ইরানে বিক্ষোভকারীরা তেহরানে সউদি দূতাবাসে আগুন লাগিয়ে দেয়। এর পর পুলিশ কিছু বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে।
এ ছাড়াও সউদি আরব, বাহরাইন, লেবানন, ইরাক ও ইরানের শিয়া মুসলিমদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
ইরানের বিপ্লবী গার্ড এ ঘটনার 'কঠোর প্রতিশোধ' নেবার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।
একজন ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আহমেদ খামেনি একে এক 'অপরাধ' হিসেবে বর্ণণা করে বলেছেন, এটা সউদি রাজপরিবারের ধ্বংস ডেকে আনবে।
মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় গভীল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর আজ এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ওই অঞ্চলের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা উত্তেজনা কমিয়ে আনতে তাদের প্রয়াস দ্বিগুণ করেন।
পররাষ্ট্র দফতর বলছে, এটা এমন এক সময় যখন উত্তেজনা কমানো দরকার - তবে এই মৃত্যুদন্ড কার্যকর করাটা সম্প্রদায়গত উত্তেজনা বাড়িয়ে দেবার ঝুঁকি তৈরি করেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ ছাড়াও সউদি আরবের প্রতি মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখানো এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে ভিন্নমত প্রকাশ করতে দেবার আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনও বলেছেন, এ ঘটনা তাকে মর্মাহত করেছে এবং তিনি শান্ত ও সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে শেখ নিমরকে শনিবার মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলেও, তার সমর্থকেরা মনে করেন যে, সৌদি রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে সমালোচনার কারণেই তাকে প্রাণদণ্ড দেয়া হয়েছে।
একদল বন্দুকধারীর আক্রমণের পর ভারতের পাঠানকোটে বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে লুকিয়ে থাকা দুই সশস্ত্র ব্যক্তির একজন আজ নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে।
আরেক খবরে দু'জন আক্রমণকারীই রোববার নিহত হয়েছে বলে নিরাপত্তা বাহিনীকে উদ্ধৃত করে জানানো হয়, কিন্তু ভারতীয় সরকার তা নিশ্চিত করে নি।
পাঠানকোটের ওই ঘাঁটিটি পাকিস্তান সীমান্ত থেকে বেশি দূরে নয়। সেখানে আক্রমণের পর সৈন্যদের সাথে লড়াইয়ে গতকালই চারজন বন্দুককারী নিহত হয়।
তখন থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল যে আরো অন্তত দুজন বন্দুককারী পালিয়ে আছে, এবং আজও সেনাদের সাথে তাদের লড়াই হয়।
কর্মকর্তাটি জানান, তারা লুকিয়ে থাকা অবস্থায় থেমে থেমে গুলি চালাচ্ছিল।
তবে লড়াই শেষ হয়েছে কিনা তা এখনো স্পষ্ট নয়। সেখানে একটি তল্লাশী অভিযানও চলছে।
ভারতীয় বাহিনীর একজন কর্মকর্তা বলেছেন, শনিবার জঙ্গী হামলার পর থেকে নিরাপত্তা বাহিনী এবং আক্রমণকারীদের মধ্যে লড়াইয়ে নিহতের সংখ্যা এখন ১১-তে উঠেছে। তিনি জানান আহত কয়েকজন সেনা সদস্য একজন অফিসারের মৃত্যুর ফলে এ সংখ্যাবৃদ্ধি।
এখন পর্যন্ত কোন গোষ্ঠীই এ আক্রমণের দায়িত্ব স্বীকার করে নি। তবে ভারতীয় কর্মকর্তারা বলছেন এ হামলার ধরণের সাথে পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গী গোষ্ঠীগুলোর আগেকার হামলাগুলোর মিল আছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পাকিস্তানের নওয়াজ শরিফে বিতর্কিত কাশ্মীর রাজ্য নিয়ে একটি নতুন শান্তি উদ্যোগ চালু করার কিছুদিনের মধ্যেই এ আক্রমণের ঘটনা ঘটলো।
বাংলাদেশে এখন থেকে ধূমপায়ী বা মাদকাসক্তরা মেডিকেল শিক্ষায় ঢুকতে পারবে না। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলছেন, আগামি শিক্ষাবর্ষ থেকেই এর বাস্তবায়ন শুরু হবে।
এ জন্য শিক্ষার্থীকে ভর্তির সময় ডাক্তারি পরীক্ষা করিয়ে প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম আজ বিবিসি বাংলাকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ২০১৬-১৭ শিক্ষা বর্ষ থেকে এই নিয়ম বাস্তবায়ন শুরু হবে।
ঠিক কেন এই সিদ্ধান্ত, এবং এর বাস্তবায়ন কি ভাবে করা হবে - এ কথা জিজ্ঞেস করা হলে মন্ত্রী বলেন, ধূমপান এবং মাদকাসক্তি নিরুৎসাহিত করতেই এই পদক্ষেপ।
"শুধু ভর্তি পরীক্ষায় পাস করলেই হবে না, তাকে একটি প্রত্যয়ন পত্র দেখাতে হবে যে সে ধূমপায় বা মাদকাসক্ত নয়" - বলেন মোহাম্মদ নাসিম।
তিনি বলেন, এই সার্টিফিকেট হবে বাধ্যতামূলক এবং একজন ডাক্তারকে দিয়ে এটি সত্যায়িত করাতে হবে।
মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হবার পর যদি কেউ ধূমপান শুরু করে তাহলে কি হবে? এ প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী বলেন, সে ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ যাতে তাকে সতর্ক করতে পারে এবং তার পর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে এমন সুযোগ থাকবে।
তিনি আরো বলেন, পুরোপুরি সাফল্য হয়তো উদ্যোগের প্রথমেই পাওয়া যাবে না, তবে এক্ষেত্রে অভিভাবকদেরও ভুমিকা রাখতে হবে।
তবে এ ব্যাপারে কোন আইন হবে কিনা তা স্পষ্ট করেন নি মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ডাক্তাররা যেন ধূমপান না করেন সে কথা তিনি তাদের উদ্দেশ্যে অনেকবার বলেছেন।
বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের তিন পর্বে তৈরি অপুর কাহিনি পঞ্চাশের দশকে চলচ্চিত্র জগতে এক বিরাট আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল।
শিশু অপুর বাল্যজীবন নিয়ে এর প্রথম খন্ড পথের পাঁচালি ছিল সত্যজিৎ রায়ের প্রথম ছবি যা মুক্তি পেয়েছিল ৬০ বছর আগে।
তরুণ অপুকে নিয়ে তৈরি তৃতীয় পর্বের নায়ক সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বিবিসির উইটনেস্ অনুষ্ঠানে কথা বলেছেন সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্র নির্মাণ এবং অপুর ভূমিকায় তাঁর অভিনয় নিয়ে।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাহিনি পথের পাঁচালিতে বাংলার এক অজ পাড়াগাঁয়ে কঠোর দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকা এক পরিবারে শিশু অপুর বেড়ে ওঠার কাহিনিকে পর্দায় যেভাবে মূর্ত করে তুলেছিলেন সত্যজিৎ রায়, তা তাকে বিশ্ব চলচ্চিত্রের দরবারে অন্যতম সবচেয়ে প্রভাবশালী চিত্র পরিচালক করে তুলেছিল। পাশপাশি এই চলচ্চিত্র বিশ্বের মানুষের কাছে সেই প্রথমবারের মত তুলে ধরেছিল সেসময় ভারতের গ্রামীণ জীবনের ছবি।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেছেন কাব্য ও সুরের মধ্যে দিয়ে সবকিছুকে দেখার ও ছোঁয়ার একটা বিশেষ ক্ষমতা সত্যজিৎ রায়ের ছিল যা তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলেছিল ।
পথের পাঁচালি মুক্তি পাবার সময়ে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বয়স ছিল খুবই কম। তার মনে আছে ছবিটি তার ও তার বন্ধুদের ওপর কীধরনের প্রভাব ফেলেছিল।
তিনি বলেছেন, ''আমাদের দেশে কোনো পরিচালক এধরনের ছবি বানাতে পারেন তা আমার ধারণার বাইরে ছিল। আমরা উৎসুক হয়ে রইলাম এরপর উনি কী ছবি করেন তা দেখার জন্য।''
এরপর সত্যজিৎ রায় পথের পাঁচালির পরবর্তী পর্ব ‘অপরাজিত’ তৈরির কাজে হাত দিলেন। বালক অপুর কিশোর হয়ে ওঠার কাহিনি। অপুর ভূমিকায় অভিনয় করার জন্য সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে ডেকে পাঠালেন পরিচালক সত্যজিৎ রায়। সৌমিত্র রীতিমত হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন কারণ তিনি এর আগে কখনও সিনেমায় অভিনয় করেন নি।
অপুর কাহিনির দ্বিতীয় পর্বে কিশোর অপুর ভূমিকায় অভিনয় করার জন্য সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বয়স ছিল বেশি তাই অপরাজিততে অভিনয়ের সুযোগ তার হল না। তবে সত্যজিৎ রায় যখন তৃতীয় ও শেষ পর্ব ‘অপুর সংসার’ তৈরির কাজ হাতে নেন, তখন তিনি নায়কের ভূমিকায় নামান সৌমিত্রকে।
সৌমিত্র বলেছেন নিজের ওপর আস্থার জায়গাটা সত্যজিৎ রায়কে এনে দিয়েছিল আন্তর্জাতিক খ্যাতি। তিন পর্বের অপুর কাহিনি ‘অপুস্ ট্রিলজি’ বিশ্বব্যাপী ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছিল। তার এই ছবিগুলোই ছিল প্রথম ভারতীয় চলচ্চিত্র যা বিশ্ব চলচ্চিত্রে বড়ধরনের একটা আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং বেশ কয়েকটি পুরস্কারে ভূষিত হয়।
বিবিসির এই অনুষ্ঠানে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেছেন সত্যজিৎ রায়ের ছবিগুলো অন্তরকে নাড়া দিত।। তার মনে হয় না আগামী ৫০ বছরে আর একজন সত্যজিৎ রায় বাংলার বুকে জন্ম নেবেন।
১৯৯২ সালে মারা যান সত্যজিৎ রায়। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় তার ১৪টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। এখনও তিনি অভিনয় করে যাচ্ছেন রূপোলী পর্দায় ও মঞ্চে।
ইতিহাসের সাক্ষীর এই পর্ব পরিবেশন করেছেন মানসী বড়ুয়া।