রবিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৫

বহিস্কারের হুমকিতেও অটল বহু আওয়ামী বিদ্রোহী

 
     bd electionনির্বাচনী প্রচারণা দিন দিন তুঙ্গে উঠছে (ফাইল ফটো)   
             
বাংলাদেশে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে বিপাকে রয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।
বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের হিসেবে ২৩৪ টি পৌরসভার মাঝে ৬৯ টিতে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
সাংগঠনিক ব্যবস্থা হিসেবে এরই মধ্যে এই প্রার্থীদের দল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে আওয়ামীলীগ এবং পরবর্তীতে তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে বলেও হুশিয়ারি দেয়া হচ্ছে।
নির্বাচনে বিরোধী দল বিএনপিরও কিছু বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলেও এর সংখ্যা তুলনামুলকভাবে বেশ কম।
বেশ কিছু বিদ্রোহী প্রার্থী প্রচারণা থেকে সরে মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন - এমন কথা বললেও বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচনে দলের জন্য যে সমস্যার তৈরি করছে তা স্বীকার করছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ।
“যেসব এলাকায় এখনো বিদ্রোহী প্রার্থীরা আছেন সেখানে কিছুটা হলেও আমাদের প্রার্থীকে সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তবে আমরা আশা করছি সকল নেতা-কর্মীরাই দলের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষেই কাজ করবেন।”
তিনি বলছেন, যে নেতা-কর্মীরা বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কিন্তু এসব হুশিয়ারি দিয়েও অনেক এলাকায় দমানো যাচ্ছে না বিদ্রোহীদের। এদের অনেকেই শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবেই নির্বাচনে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
পোস্টার                 বহু শহরের দেয়ালে দেয়ালে এখন শুধু নির্বাচনী পোস্টার                
সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভায় আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আমিনুল ইসলাম মনে করছেন, তার এলাকায় দলের বিদ্রোহী প্রার্থী প্রচারণায় শক্তিশালী থাকলেও, ভোটের ক্ষেত্রে সেটি খুব একটা সমস্যার সৃষ্টি করবে না।
“মানুষ কিন্তু চায় এখন উন্নয়ন। মানুষ চায় বাস্তবে কে কাজ নিয়ে আসতে পারবে। এজন্যে ভোটাররা তাদের মতামত নৌকা প্রতিকে দেবে বলেই আমি শতভাগ আশাবাদী।”
কলারোয়ায় দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছেন আওয়ামী লীগ নেতা আরাফাত হোসেন। তিনি বলছেন, দলের মনোনীত প্রার্থী জিততে পারবেন না এমন বিশ্বাস থেকেই তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তবে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার হলেও তিনি আশাবাদী জয়ী হলে ক্ষমাপ্রার্থনা করে তিনি দলে আবার ফেরার সুযোগ পাবেন।
দলের উচ্চপর্যায় থেকে কোন চাপ নেই বললেও তার অভিযোগ, এলাকায় দলের মনোনিত প্রার্থীই তার প্রচারণায় নানা সমস্যার সৃষ্টি করছেন।
“এমন কথাও বলা হচ্ছে যে নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন, আমাকে পাশ করানোর দায়িত্ব নেত্রীর। এসব অভিযোগ নিয়ে অনেক মানুষের সাক্ষর আমার কাছে আছে,” বলেন মি. হোসেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করছেন আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম মনে করছেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের কারণে নির্বাচনের ফলাফলে আওয়ামী লীগের ওপর অনেক বড় প্রভাব হয়তো পড়বে না। কিন্তু কিছু বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে গেলে তার ফলে দলের প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠবে।
“তখন প্রশ্ন উঠবে যে জনপ্রিয় প্রার্থীদেরই কেন মনোনয়ন দেয়া হলোনা। তখন দেখা যাবে যে স্থানীয় অনেক প্রভাব সেখানে কাজ করছে"।
তবে বিদ্রোহী প্রার্থীদের স্থায়ী বহিষ্কারের যে কথা বলা হচ্ছে সেটিকে একটি ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ প্রক্রিয়া হিসেবেই দেখছেন অধ্যাপক ইসলাম। জয়ী বিদ্রোহী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের এই অবস্থান ধরে রাখাটা কঠিন হবে বলেই তিনি মনে করছেন।

জ্যোতির নাবালক ধর্ষক মুক্ত, ভারতে তোলপাড়

 
    india rape
                 বয়সের কারণে জ্যোতি সিং ধর্র্ষণ ও হত্যা মামলায় অন্যতম আসামী (মুখ ঢাকা) মুক্তি পেয়েছে (ফাইল ফটো)
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে তিন বছর আগে একটি চলন্ত বাসে জ্যোতি সিং-য়ের গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দোষীদের মধ্যে যে নাবালক ছিল, সে আজ তিন বছরের সাজার মেয়াদ শেষে সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে।
তার আইনজীবী এই মুক্তির খবর নিশ্চিত করলেও এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছুই জানানো হয়নি – কারণ এই যুবকের মুক্তির বিরুদ্ধে গত কয়েকদিনে ভারতে তীব্র জনমত গড়ে উঠেছে।
ধর্ষিতার বাবা-মাই তার মুক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
তার মুক্তি আটকানোর জন্য শেষ মুহুর্ত অবধি চেষ্টা চালিয়ে গেছেন জ্যোতি সিংয়ের বাবা-মা। রাজধানী দিল্লির ইন্ডিয়া গেটে তারা এদিন বিক্ষোভ মিছিলের পরিকল্পনা করেও শেষ মুহুর্তে পুলিশের বাধায় তা থেকে পিছিয়ে এসেছেন।
তবে আগামিকাল (সোমবার) সুপ্রিম কোর্টে এই যুবকের মুক্তি বাতিল করার জন্য একটি আবেদনেরও শুনানি আছে।
ওই তরুণীর মা আশা সিং এদিন বলেছেন, তাদের মেয়ের একজন ধর্ষণকারী মাত্র তিন বছরের শেষেই সমাজে ফিরে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে স্রেফ আইনের সীমাবদ্ধতার সুযোগ নিয়ে, অথচ সরকার কিছুই করতে পারল না।
জ্যোতি সিংয়ের বাবা বদ্রিনাথ পাশ থেকে যোগ করেন, যে দেশে মধ্যরাতের পর সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা কোর্ট খুলিয়ে জঙ্গীদের ফাঁসি কার্যকর করার নির্দেশ দিতে পারেন, সেখানে কেন মাঝরাতের পর এই ধর্ষণকারীকে জেলে আটকে রাখার নির্দেশ দেওয়া গেল না – সেটা তার বোধগম্য নয়।
রবিবার বিকেলে যখন তারা এই শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ততক্ষণে দিল্লি বা তার আশেপাশে কোনও অজানা স্থান থেকে মুক্তি দিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই কিশোর ধর্ষণকারীকে। ঘটনার সময় তার বয়স ছিল সতেরো বছর নয় মাস।
তার আইনজীবী এ পি সিং এই মুক্তির খবর নিশ্চিত করলেও কোথায় কীভাবে সে মুক্তি পেল, সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে কোথায় গেল সে সব কিছুই জানাননি।
ধর্ষণ                 ধর্ষণ দিল্লিতে বড় ধরনের হুমকি (ফা্‌লি ফটো)                
সরকারও এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ নীরবতা বজায় রেখেছে – যদিও সরকারি সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে তাকে কখনই রাডারের বাইরে যেতে দেওয়া হবে না, বরং কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মারফত তাকে সমাজের মূল স্রোতে ফেরানোর চেষ্টা চলবে।
ওদিকে এখনও তার মুক্তি বাতিল করার ব্যাপারে হাল ছাড়ছেন না দিল্লি মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান স্বাতী মালিওয়াল।
মিস মালিওয়াল, যিনি গত রাতে এই মুক্তি আটকাতে রাত দুটোয় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, বলছেন সোমবার সকালে শীর্ষ আদালত এই আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন – ফলে সব আশা এখনও শেষ হয়নি।
তার কথায়, ‘‘সুপ্রিম কোর্টই এখন শেষ ভরসা – কারণ গোটা দেশ এর মুক্তির বিরুদ্ধে হলেও জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট বা নাবালকদের জন্য আইনই যেন সবার হাত-পা বেঁধে রেখেছে।’’
জ্যোতি সিংয়ের মা, যিনি মাত্র দু-তিনদিন আগেই প্রথমবার তার মেয়ের আসল নাম জনসমক্ষে প্রকাশ করেছেন – তিনি অবশ্য এটাকে স্রেফ লোকদেখানো বলেই মনে করছেন। তিনি পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেন, সবাই তো জানত তিন বছর পরেই ওই ছেলেটি মুক্তি পাবে, তাহলে তা ঠেকানোর জন্য কেউ এতদিন কিছু করেনি কেন?
আশা সিংয়ের প্রশ্ন, ‘‘আমি জানতাম ও ছাড়া পাবে, সবাই জানত। তারপরও কেউ একবারও ভাবেনি, এই রকম একজন অপরাধী তিন বছরের মধ্যে জেল থেকে বেরিয়ে এলে সমাজে কী প্রভাব পড়বে? না কি ওকে মুক্তি দিয়ে আমরা আসলে এটাই প্রমাণ করছি আমাদের আইনকানুন সবই আসলে ফাঁপা, বাইরে গিয়ে আমাদের মেয়েদের ধর্ষণ কর, হত্যা কর – আমরা কিছুই করব না!’’
ধর্ষিতার মা যখন এই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন, তখন ভারতে নৃশংস অপরাধের ক্ষেত্রে নাবালকের বয়সসীমা আঠারো থেকে ষোলোতে নামিয়ে আনার জন্য প্রস্তাবিত বিল পার্লামেন্টে আটকে আছে।
আর নাম-পরিচয় প্রকাশিত না-হওয়া, এখন একুশ বছর ছুই ছুই ওই ধর্ষণকারী সমাজে তার নতুন জীবনের প্রস্তুতি শুরু করছেন – যদি না সুপ্রিম কোর্ট তাতে আবার বাদ সাধে!

ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের মেয়েরা

 
    bd woman football                 কাঠমান্ডুতে মেয়েদের এএসি অনূর্ধ্ব ১৪ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দল (ছবি - এএফসি)  
              
কিশোরীদের আন্তর্জাতিক এক ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ।
কাঠমাণ্ডুতে এই টুর্নামেন্টের ফাইনালে আজ স্বাগতিক নেপালকে একমাত্র গোলে হারিয়ে 'এএফসি-অনূর্ধ্ব ১৪' শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ দল।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের অবস্থান যেখানে খুবই দুর্বল সেখানে কিশোরীদের এই দলটি এরকমই এক টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়ে আজ সন্ধ্যায় দেশে ফিরেছে।
এই টুর্নামেন্টে খেলেছে ভারত ও ইরানের মতো শক্তিশালী দলও।
ফাইনাল হওয়ার কথা ছিলো গত এপ্রিল মাসে কিন্তু সেদিনই ভয়াবহ ভূমিকম্পের কারণে ম্যাচটি পিছিয়ে যায়।
ঢাকায় নামার পরপরই বিমানবন্দর থেকে টেলিফোনে দলের কোচ গোলাম রব্বানী বিবিসি বাংলাকে বলেন, আশাতীত ফল করেছে মেয়েরা।
"গতবারও ভারতের কাছে আমরা পাঁচ গেলে খেয়েছি, ইরানের কাছে পাঁচ গোল খেয়েছি। এবার আমরা চ্যাম্পিয়ন।"
তিনি বলেন, "দেশে মহিলা ফুটবলের জাগরণ হচ্ছে, তৃণমূলে অনেক প্রতিভাধর মেয়েরা ফুটবল খেলছে।"
এরা কতদিন ফুটবল খেলবে?
এই কিশোরী মেয়েরা আরো কয়েক বছর ফুটবল খেলবে- তার গ্যারান্টি কি?
বিবিসির এই প্রশ্নে গোলাম রাব্বানি বলেন, তা নির্ভর করবে বাংলাদেশে ফুটবল ফেডারেশনের ভূমিকা এবং পৃষ্ঠপোষকতার ওপর।
ধর্মীয় এবং সামাজিক রক্ষণশীলতার বাস্তবতাও অস্বীকার করেননি মি রাব্বানি। "আমি নিজেই দুজন গোলকিপার হারিয়েছি। দু'বছর তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর ১৬ বছরে তাদের বিয়ে হয়ে যায়।"
তারপরও, তিনি বলেন, তৃণমূল স্তরে কিছু ফুটবল পাগল মানুষ মেয়েদের ফুটবলের জন্য ভালো কাজ করছেন।
কিন্তু বিজয়ী দলে যেখানে ময়মনসিংহের একটি গ্রামেরই দশজন মেয়ে খেলছে, সেখানে দেশে মহিলা ফুটবলের বিস্তৃতি হচ্ছে তা কি বলা যায়?
উত্তরে কোচ রাব্বানি বলেন, "পাইপলাইনে নানা জায়গায় অনেক প্রতিভাবান মেয়ে রয়েছে।"
তিনি বলেন, ফুটবলে মেয়েদের ধরে রাখতে চাকরি এবং নিয়মিত অন্যান্য আর্থিক সুবিধের ব্যবস্থা করতে হবে।
"তারা যখন নিজেেদের পরিবারের দেখোশোনা করতে পারবে, তখন ফুটবলে থাকবে।।"
সম্প্রতি বাংলাদেশ আনসার এবং বাংলাদেশে জুট মিলস্‌ কর্পোরেশন (বিজেএমসি) ৪০ জন মহিলা ফুটবলারকে চাকরি দিয়েছে। "আমরা এই দুটো প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানাই, এরকম আরো সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে।"

'সেনাবাহিনীর মধ্যে জঙ্গিদের ছাঁকনি দিয়ে বের করার সময় এসেছে'

 
   
সেনাবাহিনীর মধ্যে জঙ্গীবাদে যারা উদ্বুদ্ধ হচ্ছে তাদের খুঁজে বের করা এখন খুবই জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক এক সেনা কর্মকর্তা। (ফাইল চিত্র)                
বাংলাদেশের চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর এক সুরক্ষিত ঘাঁটির ভেতর মসজিদে বোমা হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে যে একজনকে এ পর্যন্ত আটক করার কথা স্বীকার করা হয়েছে বলা হচ্ছে সে নৌবাহিনীরই একজন কর্মচারী।
শুক্রবার পুলিশ জানিয়েছিল এই হামলার সময় স্থানীয় মুসল্লিরা মিজান নামে নৌবাহিনীর একজন ‘ব্যাটম্যানকে’ আটক করে পুলিশে দিয়েছিল।
সে ভূয়া শিক্ষাসনদ দেখিয়ে নৌবাহিনীতে চাকরি নিয়েছিল বলেও জানিয়েছিল পুলিশ ।
সুরক্ষিত সামরিক এলাকায় এধরণের হামলার ঘটনাকে নজিরবিহীন বলে বর্ণনা করছেন অনেকেই।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এবং গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট অব কনফ্লিক্ট, ল এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের পরিচালক মেজর জেনারেল আবদুর রশিদ বলছেন সামরিক বাহিনীরই একজন কর্মচারী সুরক্ষিত সেনা এলাকায় হামলার সঙ্গে জড়িত বলে যে অভিযোগ উঠেছে, সেটি নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক, যদিও সন্দেহভাজন হামলাকারী ইউনিফর্ম পরা সেনা কর্মচারী নয়।
তিনি বলছেন এই ব্যক্তি অনেকদিন ধরেই নৌবাহিনীতে কর্মরত ছিল এবং যতদূর জানা যাচ্ছে সে প্রায় বছর তিনেক ধরে নৌবাহিনীতে কাজ করেছে। মিঃ রশীদ বলছেন তাকে যে জঙ্গীবাদে দীক্ষা দেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
‘‘তবে এই তিন বছরের মধ্যে তার জঙ্গীবাদে উদ্বুদ্ধ হওয়ার বিষয়টা যে ধরতে পারা গেল না – সেটা অবশ্যই চিন্তার কারণ।’’
তিনি বলছেন ওই ব্যক্তি নৌবাহিনীতে যোগ দিয়েছিল প্রায় তিন বছর আগে। যে কাজে সে যোগ দিয়েছিল তার জন্যে সে ছিল ‘ওভারকোয়ালিফায়েড’।
‘‘সেক্ষেত্রে একজন ওভারকোয়ালিফায়েড ব্যক্তি যখন সেখানে স্বেচ্ছায় যোগদান করেছে – সেটাকে আমি গোয়েন্দা পরিভাষায় বলব – একধরনের ‘অনুপ্রবেশ’।’’
সামরিক বাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে যে ‘ভেটিং’ বা যাচাই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়া রয়েছে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আবদুর রশিদ বলছেন তার মতে সেটা এক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। তবে তিনি একথাও বলেছেন যে সাধারণত যারা ফাঁকি দেওয়ার কাজ করে তারা জানে কীভাবে এসব তথ্য সাজালে তা নিয়োগকারীদের চোখ এড়িয়ে যেতে পারে।
নৌবাহিনীর ঘাঁটির ভেতর মসজিদ হামলার অভিযোগে যাকে আটক করা হয়েছে সে নৌবাহিনীতে ভূয়া যোগ্যতা দেখিয়ে কাজ করছিল প্রায় তিন বছর।                
যেহেতু এখন দেখা যাচ্ছে সামরিক বাহিনীকে টার্গেট করে তার ভেতরেও ‘ইনফিলট্রেশন’ বা ঢোকার একটা চেষ্টা শুরু হয়েছে তাই মিঃ রশীদ মনে করছেন আগের তুলনায় এই যাচাই বাছাই প্রক্রিয়া আরও শক্ত হাতে করা প্রয়োজন বিশেষ করে নিচের তলার গ্রেডগুলোতে।
‘‘আমার মনে হয় এই নিচের তলার কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্যগুলো আর হাল্কা করে দেখার সুযোগ এখন আর নেই।’’
‘‘এছাড়াও যারা বর্তমানে চাকরি করছে, তাদের বিষয়ে আবার নতুন করে খতিয়ে দেখতে হবে যে এরকম ফাঁকফোঁকর দিয়ে কতজন লোক এসে গেছে- আমার মনে হয় সময় এসেছে নতুন করে আবার ছাঁকনি দেবার।’’
অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আবদুর রশীদ মনে করছেন সামরিক বাহিনীকে টার্গেট করার পেছনে একটা কারণ আন্তর্জাতিকভাবে একটা চাঞ্চল্য সৃষ্টি করার বিষয়। তিনি বলছেন একটা সুরক্ষিত এলাকার ভেতরে কোনো হামলা করতে পারলে চিরাচরিতভাবে তারা জানে তারা সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারবে।
তবে তিনি বলছেন জঙ্গীরা এধরনের হামলার মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শনের ক্ষমতা বোঝানোর চেষ্টা করলেও তিনি মনে করেন না যে তারা এখনই এতটা শক্তিশালী হয়ে উঠেছে যে তারা এভাবে সরকারের পতন ঘটাতে পারবে।

পৌরসভা নির্বাচনে জোটগতভাবে প্রচারণার সিদ্ধান্ত বিএনপির

 
                     ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠকের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ঘোষণা করেছেন বিএনপি জোটগতভাবে পৌরসভা নির্বাচনে প্রচারণা চালাবে।     
           
বাংলাদেশে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে জোটগতভাবে প্রচারণায় অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি ও তার নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।
আজ শনিবার শরীক দলগুলোর সাথে এক বৈঠকের পর বিএনপির পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশে এবারই প্রথম দলীয়ভাবে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন হচ্ছে।
দেশটির ২৩৪টি পৌরসভায় মেয়র ও কাউন্সিলর আসনে ভোটগ্রহণ হবে ৩০শে ডিসেম্বরে।
একসঙ্গে নানা কেন্দ্রে ২০ জোটের প্রার্থী রয়েছে।
সেক্ষেত্রে ঠিক কীভাবে এই প্রচারণা চালানো হবে এ প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন যেহেতু বিএনপির প্রার্থীই বেশি তাই জোটের শরীক দলগুলো তাদের জন্য প্রচারণায় অংশ নেবেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে শনিবার বৈঠকে বসে বিএনপি।                 
যেখানে একইসঙ্গে বিএনপি এবং শরীক দলের প্রার্থী রয়েছে সেখানে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ সিদ্ধান্ত নেবেন কী করা যায়।
বিএনপির অন্যতম মিত্র জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল হওয়ার কারণে এই নির্বাচনে দলীয়ভাবে থাকছে না দলটি। কিন্তু এর সদস্যদের অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিভিন্ন এলাকায় দাঁড়িয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।
জামায়াতের পক্ষে প্রচারণা সম্পর্কে মিঃ আলমগীর বলেছেন সেক্ষেত্রেও স্থানীয় নেতারা সিদ্ধান্ত নেবেন। যেখানে মতের মিল হবে না তারা আলাদা করেই প্রচারণা চালাবেন বলে তিনি জানান।
তিনি বলছেন এ বিষয়ে স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের কাছে নির্দেশনা চলে গেছে।
শনিবার তিনি আরো জানিয়েছেন যে রংপুর ও দিনাজপুরে ইতিমধ্যেই জোটগতভাবে প্রচারণা শুরু হয়ে গেছে।
তবে দিনাজপুরে বীরগঞ্জের একজন স্থানীয় সাংবাদিক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানো জামায়াতে ইসলামির প্রার্থী ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরা আলাদাভাবেই প্রচারণা চালাচ্ছেন।
বাংলাদেশের নানান এলাকায় স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে অনেক এলাকাতে বিএনপি প্রার্থীরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা থাকার কারণে পলাতক রয়েছেন বা অনেকে উৎসাহের অভাবে মাঠে নামেন নি।
তাই সেসব জায়গায় ভোটের আমেজ নেই বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা