বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৫

ইউরো ও রুবেলের অবমূল্যায়ন ঘটায় ২৫ ভাগ দরপতন ঘটেছে, হাজার কোটি টাকার বাগদা নিয়ে বিপাকে রফতানিকারকরা

 Image result for bagda chingriImage result for bagda chingri
 
আব্দুর রাজ্জাক রানা : বিশ্ব বাজারে ডলারের বিপরীতে ইউরো ও রুবেলের অবমূল্যায়ন ঘটায় ২৫ ভাগ দরপতন ঘটেছে বাগদা চিংড়িতে। সেই সুযোগে বিশ্ব বাজারে চাহিদা বেড়েছে কমমূল্যের উচ্চ ফলনসীল ভেনামী চিংড়ির। ফলে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে চিংড়ি রফতানিতে। চিংড়ি শিল্পে বিপর্যয় নেমে আসায় প্রায় এক হাজার কোটি টাকার রফতানিযোগ্য বাগদা চিংড়ি নিয়ে বিপাকে পড়েছে খুলনাঞ্চলের ২৩টিসহ দেশের মোট ৪৭টি চিংড়ি প্রক্রিয়াজাত কারখানা। এর মধ্যে শুধুমাত্র খুলনাঞ্চলের চিংড়ি রফতানিকারীদের লোকসান গুণতে হবে প্রায় ৩শ’ কোটি টাকা। এতে করে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে প্রতিবছর বাংলাদেশের চিংড়ি রফতানি করে ৪ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পথ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইউরোপ ও রাশিয়া বাংলাদেশের চিংড়ির বড় বাজার। বাংলাদেশের চিংড়ি রফতানি ধাক্কা খায় ২০০৭-০৮ অর্থবছরের বিশ্বমন্দায়। এ সময় আমদানিকারক দেশগুলোতে চিংড়িকে বিলাসী খাদ্য হিসেবে ধরা হয়। তবে, সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠে এরপরও রফতানি চলছে। মার্কিন ডলারের বিপরীতে রুবেল ও ইউরো দুর্বল হয়ে পড়লে সব শেষ ধাক্কা খায় ২০১৪-১৫ অর্থবছরে। এ সময় ডলারের বিপরীতে প্রায় ৫৫ শতাংশ দরপতন হয় রুবেলের। আর ডলারের বিপরীতে ইউরোর দরপতন হয় প্রায় ২৫ শতাংশ। ফলে আবারো বিলাসী খাদ্যের তালিকায় চলে আসে চিংড়ি। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে চিংড়ি রফতানিতে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বরে বিশ্ববাজারে প্রতি পাউন্ড ১৬/২০ কাউন্টের বাগদার মূল্য ছিল ৯ ডলার বা ৬৯৩ টাকা। সেই থেকে কমতে কমতে বর্তমান বিশ্ববাজারে প্রতি পাউন্ড ১৬/২০ কাউন্টের বাগদার মূল্য এসে দাঁড়িয়েছে ৫ ডলার বা ৩৮৫ টাকায়। এতে করে এক হাজার কোটি টাকার মত অবিক্রীত বাগদা চিংড়ি নিয়ে ব্যাপক লোকসানে পড়েছে বাংলাদেশের ৪৭টি চিংড়ি প্রক্রিয়াজাত কারখানা। যার মধ্যে খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চিংড়ি প্রক্রিয়াজাত কারখানার সংখ্যা ২৩টি।
বিশ্ব বাজারে চিংড়ি রফতানিতে ধাক্কা খাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে বাংলাদেশে চাষীরা সনাতন পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করায় উৎপাদন খরচ বেশি হলেও উৎপাদন হারও কম। যদিও এদেশের বাগদা চিংড়ি আমদানিকারক দেশগুলোতে ব্যাপক জনপ্রিয়। তথাপি মার্কিন ডলারের বিপরীতে রুবেল ও ইউরো দুর্বল হওয়ায় বিদেশীদের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। ফলে বেশি দামের বাগদা চিংড়ি বিলাসী খাদ্য তালিকায় চলে এসেছে। আর নতুন জাতের উচ্চ ফলনসীল ভেনামী নামের চিংড়ি দামে সস্তা হওয়ায় ক্রেতাদের খাদ্য তালিকায় চলে এসেছে। তবে বাংলাদেশে ভেনামী চিংড়ি চাষে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও রফতানিকারক রাষ্ট্র ভারত, থাইল্যান্ড ও চীনে এর ব্যাপক চাষ হচ্ছে। ফলে রোগ বালাই সহনশীল এবং উচ্চহারে ফলনশীল নতুন জাতের ভেনামী চিংড়ি বিশ্বব্যাপী বাগদা চিংড়ি খাতে ধস নামিয়েছে। এতে করে চিংড়ি চাষে ও রফতানিতে পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ। অপরদিকে বাগদা চিংড়ি উৎপাদন ব্যয় বহুল এবং রোগবালাই সহনশীল নয়। ভেনামী চিংড়ির সাথে পাল্লা দিতে বিশ্বব্যাপী মার খাচ্ছে বাগদা চিংড়ি।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো খুলনা অফিস সূত্র জানায়, গত বছর জুলাইয়ে খুলনাঞ্চল থেকে ৩১ লাখ ৫১ হাজার ৫২৩ কেজি চিংড়ি রফতানি হয়েছে। আর চলতি বছরের জুলাইয়ে রফতানি হয়েছে ২৭ লাখ ৮২ হাজার ৯০৭ কেজি। গত বছর আগস্টে রফতানি হয় ৩৩ লাখ ৫৯ হাজার ১৯৭ কেজি। চলতি বছরের আগস্টে রফতানি কমে দাঁড়ায় ১৮ লাখ ৯৭ হাজার ৬৭০ কেজি। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে রফতানি কমেছে ১৪ লাখ ৬১ হাজার ৫২৭ কেজি।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রতিবেশী দেশ ভারতে প্রতি হেক্টরে চিংড়ি উৎপাদন হচ্ছে ৭০০ থেকে ১ হাজার কেজি। থাইল্যান্ডে ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার এবং ভিয়েতনামে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার কেজি। সেখানে বাংলাদেশে হেক্টরপ্রতি গড় উৎপাদন ২৫০ থেকে ৩০০ কেজি। এ দেশে চিংড়ি উৎপাদন এত কম হওয়ার কারণ হলো, অনেক চাষি সনাতন পদ্ধতিতে চাষ করছে। ব্যাংক ঋণ না পাওয়া এবং ঋণ পেলেও তা সময়মতো না পাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চিংড়ি চাষ হচ্ছে না। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেও চিংড়ি চাষ হ্রাস পাচ্ছে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে বিশ্বের মোট চিংড়ি চাষের মধ্যে ১৪ ভাগ বেড়েছে ভেনামীর চাষ। ফলে বিশ্ব বাজারে দ্রুত বাগদা চিংড়ির স্থান দখল করে নিচ্ছে ভেনামী চিংড়ি। বিশেষজ্ঞদের দেয়া তথ্যমতে ভেনামী হচ্ছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একপ্রকার সাদা চিংড়ি। ২০০০ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই চিংড়ি রিসার্চ সেন্টার ‘মা’ ভেনামী চিংড়ি উৎপাদন করে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়। সম্প্রতি ভারতের চেন্নাইতেও হাওয়াই গ্রুপ একটি রিসার্চ সেন্টার স্থাপন করে ভেনামী ‘মা’ চিংড়ি উৎপাদন করে চলেছে।
২০১৪ সালে ৬০ হাজার বাগদা চিংড়ি উৎপাদন করে চীনের সাথে তৃতীয় স্থানে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু একদিকে ‘ভেনামী’ চাষ নিষিদ্ধ অন্যদিকে শুধু বাগদা নিয়ে থাকায় পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ। রোগবালাই সহনশীল নয় অথচ ব্যয়বহুল হওয়ায় বিশ্বব্যাপী চিংড়ি চাষিরা বাগদা চিংড়ি চাষ ছেড়ে এখন ভেনামী চিংড়ি চাষে ঝুঁকছে বলে জানা গেছে। পাশপাশি বিশ্ব বাজারে ভেনামী চিংড়ি প্রচুর পরিমাণে মজুদ থাকায় বাগদা চিংড়ির দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায়। ক্রেতারা ভেনামীর মূল্য দিয়ে বাগদা ক্রয় করতে চায়। তবে সে দামে বাগদা চিংড়ি চাষিদের পোষায় না।
বিশেষজ্ঞদের মতে ভেনামী চিংড়ি বাংলাদেশের সাগর এবং আবহাওয়ার সাথে অনুকূল নয়। বিচ্ছিন্নভাবে ভেনামীর কালচার নিয়ে আশান্বিত হতে পারছে না চাষিরা। তাদের মতে সরকার পাইলট প্রকল্প নিয়ে ভেনামী চাষের উদ্যোগ নিলে ব্যাপক সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে একাধিক চিংড়ি রফতানি প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, বিশ্ব মন্দাবাজার এবং সরকারের নগদ সহায়তা প্রদানে বৈষম্যের কারণে ছোট-বড় প্রতিষ্ঠান চরম হুমকির মুখে রয়েছে। ইতোমধ্যে খুলনাঞ্চলের এ ধরনের ৩৮টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। বেকার হয়েছেন হাজার হাজার শ্রমিক। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ মাছ শতভাগ কৃষি পণ্য হলেও এর রফতানিতে নগদ সহায়তায় রয়েছে বেশ বৈষম্য। চিংড়ি রফতানির বিপরীতে নগদ সহায়তায় দেয়া হয় ১০ শতাংশ আর মিঠা পানির মাছ বা মৎস্য জাতীয় পণ্যের (শুঁটকি, কাঁকড়া, কুঁচে ইত্যাদি) ক্ষেত্রে ১ দশমিক ১ শতাংশ। এক্ষেত্রে এই নগদ সহায়তার জন্য চিংড়ির সিলিং রেট নির্ধারণ করা হয় প্রতি পাউন্ড ৩ দশমিক ৭৯ ডলার। তাও ২০০২-০৩ অর্থবছরে। যখন এক পাউন্ড চিংড়ির আন্তর্জাতিক মূল্য ছিল ৪-৫ ডলার। গত ১৩ বছরে চিংড়ির দাম দ্বিগুণেরও বেশি হয়। এক বছর আগে ছিল ১০-১১ ডলার। বর্তমান হ্রাসকৃত মূল্যেও ৫ ডলারের বেশি। তবু সমন্বয় হয়নি এ সিলিং। অন্যদিকে মিঠাপানির মাছ বা অন্যান্য মাছের সিলিং রেট হলো প্রতি পাউন্ড ১ দশমিক ১ ডলার। যার প্রতি পাউন্ড রফতানি মূল্য ৫-৭ ডলার। এর মধ্যে যদি ভ্যালু এ্যাড হয় তা ১০ ডলারেরও বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে তাদের নগদ সহায়তার পরিমাণ মাত্র ৫ শতাংশ।
এ ব্যাপারে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো খুলনার পরিচালক মো: জাহিদ হোসেন বলেন, সনাতন পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষে হেক্টরপ্রতি গড় উৎপাদন ২৫০ থেকে ৩০০ কেজি হয়। সেমি ইনটেনসিভ বা আধা নিবিড় পদ্ধতিতে চাষ করে ৪৫০০ কেজি চিংড়ি উৎপাদন এখন প্রমাণিত। এ ক্ষেত্রে তিনি গাজী ফিসারিজ প্রজেক্টের নাম উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, চাষীদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ প্রদান, মাটি ও পানির গুণাগুণ পরীক্ষা করে জমি তৈরি, ভাইরাসমুক্ত সুস্থ চিংড়ি পোনা এবং পরিমিত সুষম খাদ্য দিয়ে আধা নিবিড় চিংড়ি চাষ পদ্ধতির পাশাপাশি উন্নত চিংড়ি চাষের মাধ্যমে রেকর্ড পরিমাণ চিংড়ি উৎপাদন সম্ভব হয়েছে।
এই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বছরের শুরুতে সময়মতো পোনা অবমুক্তকরণ করা গেলে বছরে দু’দফা চিংড়ি চাষ সম্ভব। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্বেও আমাদের চিংড়ি রফতানির পরিমাণ সামান্য। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সেমি ইনটেনসিভ বা আধা নিবিড় পদ্ধতিতে চিংড়ি উৎপাদনের সাফল্য সারাদেশের চিংড়ি চাষীদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে সরকার কাজ করছেন। চাষিদের সহজ শর্তে স্বল্প সুদে ঋণ দিতে সরকার ই.পি.এফ ফান্ড (প্রান্তিক চাষিদের জন্য লোন ফান্ড) চালু করেছে। এছাড়া চুক্তি ভিত্তিক উৎপাদন পদ্ধতি নিয়ে সরকার কাজ করছে। এ ক্ষেত্রে চিংড়ি রপ্তানিকারীদের সাথে প্রান্তিক চাষিদের চুক্তির ভিত্তিতে উন্নত প্রযুক্তির চিংড়ি করা করা যেতে পারে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) খুলনার সহ-সভাপতি শেখ মো: আব্দুল বাকী বলেন, বিশ্বে মন্দাভাব এবং সরকারের নগদ সহায়তায় বৈষম্য থাকায় ইতোমধ্যে খুলনাঞ্চলের ৩৮টি ছোট ও মাঝারি চিংড়ি প্রক্রিয়াজাত কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এখন মাত্র ২৩টি কারখানা চালু রয়েছে। তিনি বলেন, সব ধরনের মাছ রফতানিতে অভিন্ন হারে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেয়ার দাবি আমরা সরকারের কাছে করে আসছি। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সিলিং রেট পুনর্র্নিধারণের দাবিও আমরা জানিয়েছি। না হয় এই বৈষম্য ছোট ও মাঝারি মানের কারখানাগুলোকে রুগ্ন করে তুলবে।

কাইয়ুম :"আমাকে বলির পাঁঠা বানানো হচ্ছে"

 
                     গুলশানে চেজারে তাভেলার হত্যাকান্ডের স্থান        
         
ইতালীয় নাগরিককে হত্যার জন্য বিএনপি'র যে নেতাকে সরকার সন্দেহ করছে সেই আব্দুল কাইয়ুম অজ্ঞাত স্থান থেকে বিবিসির ঢাকা অফিসে ফোন করে বলেছেন সরকার তাকে এবং বিএনপিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়াতে চাইছে।
বিদেশী নাগরিক হত্যার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান তা প্রত্যাখ্যান করেছেন এই বিএনপি নেতা ও সাবেক কমিশনার আব্দুল কাইয়ুম।
অজ্ঞাত স্থান থেকে নিজে থেকে ফোন করে বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন , “এ ঘটনার আমি কিছুই জানিনা। রাজনৈতিক ভাবে আমাকে বলির পাঁঠা বানানোর পাঁয়তারা চলছে।”
বিবিসি বাংলার রাকিব হাসনাত যিনি তার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন তাকে মিঃ কাইয়ুম বলেন, “আমার ছোট ভাইকে গত ১৯ তারিখে নিয়ে গেছে। এলাকার আরও কয়েকজনকে নিয়ে গেছে। বিভিন্ন ভাবে শুনছিলাম যে আমাকে জড়াবে। আমার ভাই-এর দোষ নেই। আমিও বাইরে, বিভিন্ন মামলা আছে।”
মিস্টার কাইয়ুম বলেন এমন নয় যে যাদের ধরা হয়েছে তারাও কোন জবানবন্দী দিয়েছে।
“তারা বড় ভাইয়ের কথা বলছে এবং বলছে তদন্ত চলছে। আর এর মধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলে দিলেন আমার নাম। আমার সন্দেহ যাদের ধরা হয়েছে তাদের দিয়ে আমার নাম বলানো হবে।”
চেজারে তাভেলা হত্যার পরিকল্পনায় জড়িত বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন এটা মূলত তাকে ‘‘বলির পাঁঠা” বানানো ও বিএনপিকে জড়িত করার জন্যেই করা হচ্ছে।
                 চেজার তাভেলা হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে চারজনকে।                
বিএনপিকে জড়াতে হলে দলটির অন্য নেতাদের বাদ দিয়ে সরকার তাকে কেন টার্গেট করবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যেহেতু আমি গুলশান এলাকার রাজনীতির সাথে জড়িত। হয়তো এটা বিশ্বাসযোগ্য করাতে আমাকে জড়ানো হয়েছে। আমি তো দেশের বাইরে অসুস্থ।”
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশে তিনি ওই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে আওয়ামী লীগের নেতারা যে অভিযোগ করছেন তাও প্রত্যাখ্যান করেছেন আব্দুল কাইয়ুম।
লন্ডনে গিয়েছেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন তিনি সেখানে যাননি।
বিদেশী নাগরিক হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠার প্রেক্ষিতে দেশে ফিরে বিষয়টি আইনগতভাবে মোকাবেলা করবেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আইনগত মোকাবেলার তো বিকল্প নেই। কিন্তু আমার ভাই কোথায় আছে জানিনা। সবই তো নীলনকশা। আমার জীবনের কতটুকু নিরাপত্তা আছে বুঝতে পারছিনা। কেন-ই বা আমাকে জড়ালো তাও বুঝতে পারছিনা।” বিবিসি

ইরাক বা রুয়ান্ডার চেয়ে লন্ডনে যক্ষার প্রকোপ বেশি

                     লন্ডনের দরিদ্র এলাকাগুলোতেই যক্ষার প্রকোপ বেশি                

লন্ডনের কোন কোন অংশে যক্ষার প্রকোপ ইরাক বা রুয়ান্ডার চেয়েও বেশি।
লন্ডন এসেম্বলির এক রিপোর্টে এই দাবি করে বলা হচ্ছে লন্ডনের গৃহহীন, মাদকাসক্ত, শরণার্থী এবং অভিবাসী মানুষরাই বেশি যক্ষার ঝুঁকিতে আছেন।
লন্ডন এসেম্বলির এই রিপোর্টে বলা হয়, লন্ডনের এক তৃতীয়াংশ এলাকায় প্রতি এক লক্ষ মানুষের মধ্যে ৪০ জনের বেশি যক্ষায় আক্রান্ত।
আবার লন্ডনের ব্রেন্ট, ইলিং, হ্যারো, হাউন্সলো এবং নিউহ্যামের মত জায়গায় এই হার অনেক বেশি। প্রতি এক লক্ষের মধ্যে সেখানে যক্ষায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দেড়শোর বেশি।
লন্ডনের সব কাউন্সিলেই যক্ষা প্রতিরোধে সব শিশুকে বিসিজি টিকা দেয়ার কথা থাকলেও ২৪টির মধ্যে আটটি কাউন্সিলে তা করা হয় না।
এর মধ্যে নিউহ্যাম কাউন্সিলেই যক্ষার হার সবচেয়ে বেশি।
লন্ডনে যক্ষার হার বেড়ে যাওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞরা এই নগরীর আবাসন সংকটকে দায়ী করছেন।
এর সঙ্গে আছে অপুষ্টির সমস্যাও। লন্ডনে যারা যক্ষায় আক্রান্ত তাদের আশি শতাংশেরই জন্ম অন্য দেশে।
লন্ডনের মেয়র বরিস জনসনের প্রতি যক্ষা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে লন্ডন এসেম্বলি। bbc

ফেনসিডিল নিয়ন্ত্রণে ভারতে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার

 
    bangla cough syrup
                 ভারতে তৈরি কফ সিরাপ 'ফেনসিডিল' বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে নেশার দ্রব্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

কফ সিরাপের উৎপাদন এবং বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে ভারত সরকার। ঔষধ কোম্পানিগুলো এক্ষেত্রে তাদের দেয়া নির্দেশনা মানছে না বলে মনে করছে ভারত সরকার।
কোডেইন মিশ্রিত কফ সিরাপ, যা বাংলাদেশে 'ফেনসিডিল' নামে ব্যাপকভাবে পরিচিত এবং নেশার দ্রব্য হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়, তা নিয়ন্ত্রণে এক বছর আগে সরকার এই নির্দেশনা জারি করে।
ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স বলছে, সরকার এখন এসব নির্দেশনা মানতে ঔষধ কোম্পানিগুলোর ওপর আরও চাপ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারতে যে পরিমান কফ সিরাপের চাহিদা আছে, ঔষধ কোম্পানিগুলো তার চেয়ে অনেক গুণ বেশি কফ সিরাপ উৎপাদন করে বলে ধারণা করা হয়। এর একটি বিরাট অংশই সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাচার হয়।
পাচার হওয়া কফ সিরাপের উৎপাদনকারী এবং পাইকারি বিক্রেতা আসলে কারা, সেটা যাতে নির্ণয় করা যায়, সেজন্যে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ঔষধ কোম্পানিগুলোর ওপর এক গুচ্ছ নির্দেশনা জারি করে।
একটি ব্যাচে খুব বেশি বোতল কফ সিরাপ তৈরি না করার নির্দেশ ঔষধ কোম্পানিগুলো মানলেও অন্যান্য নির্দেশনা তারা মানছে না বলে জানানো হচ্ছে রয়টার্সের এই রিপোর্টে।
যেমন একটি ব্যাচের সব বোতল কেবল একজন বিক্রেতার কাছে সরবরাহের যে নির্দেশনা ছিল, সেই নির্দেশনা পালন করা হচ্ছে না।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা রেশমি ভার্মা জানান, তারা এজন্যে এখন ঔষধ কোম্পানিগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন।
ভারতে কফ সিরাপের বাজার প্রায় দশ কোটি ডলারের। মার্কিন কোম্পানি ফাইজার এবং অ্যাবট ল্যাবরেটরিজ সবচেয়ে বেশি কফ সিরাপ উৎপাদন করে।
উল্লেখ্য বাংলাদেশে ফেনসিডিল সহ সব কোডেইন ভিত্তিক কফ সিরাপ ১৯৮০ সাল থেকে নিষিদ্ধ।
কেবল গত বছরই বাংলাদেশে সাড়ে সাত লক্ষ বোতল কফ সিরাপ জব্দ করে পুলিশ।bbc

নেপালের প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি

 
                     নেপালের প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি        
        
নেপালের ইতিহাসে এই প্রথম কোন মহিলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন।
নেপালের পার্লামেন্ট বুধবার কমিউনিষ্ট নেত্রী বিদ্যা দেবী ভান্ডারিকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে নির্বাচিত করে।
ক্ষমতাসীন মাওবাদী কমিউনিষ্ট পার্টি সিপিন ইউপিএমএল এর ভাইস প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি ৩২৭ ভোট পান।
অন্যদিকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী নেপালি কংগ্রেসের কুল বাহাদুর গুরুং পান ২১৪ ভোট।
আগামীকাল বিদ্যা দেবী ভান্ডারি নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন। তিনি নেপালের প্রথম প্রেসিডেন্ট রাম বরন ইয়াদবের স্থলাভিষিিক্ত হবেন।
বিদ্যা দেবী ভান্ডারীর স্বামীও ছিলেন নেপালের এক সুপরিচিত রাজনীতিক। ১৯৯৩ সালে তাঁর স্বামী কমিউনিষ্ট নেতা মদন ভান্ডারী এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন।
সেসময় অনেকে অবশ্য এই দুর্ঘটনা বলে একটা ষড়যন্ত্র বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন।
নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কৃষ্ণ প্রসাদ ভট্টরাইকে পরাজিত করে বিদ্যা দেবী ভান্ডারি সবার নজরে আসেন।
তিনি এর আগে নেপালের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন। bbc

বিদেশি হত্যার পেছনে কথিত 'বড় ভাই' বিএনপির নেতা?

 
                                 
অনেক জল্পনা-কল্পনার পর অবশেষে ইটালিয়ান নাগরিক চেজারে তাভেলা হত্যাকান্ডের কথিত মূল পরিকল্পনকারী ‘বড় ভাইয়ের’ পরিচয় প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকার।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দাবি করছেন, ঢাকা মহানগর বিএনপির এক নেতা আবদুল কাইয়ুমই এই হত্যার মূল সন্দেহভাজনদের একজন।
উল্লেখ্য এর আগে পুলিশ এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে যে চারজনকে আটক করে, তারা ‘বড় ভাইয়ের’ নির্দেশেই এই হত্যকান্ড ঘটায় বলে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছিল।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী থেকে শুরু করে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গত কদিন ধরে কথিত এই বড় ভাইয়ের ব্যাপারে অনেক কথা বললেও তাঁর পরিচয় প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছিলেন।
কিন্তু বুধবার থেকে সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপি নেতা আবদুল কাইয়ুমের দিকেই অঙ্গুলি নির্দেশ করা হতে থাকে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিবিসির কাছে নিশ্চিত করেছেন যে আবদুল কাইয়ুমই কথিত এই ‘বড় ভাই’। তিনি বলেন মি: কাইয়ুম বিদেশে পালিয়েছেন বলে তারা ধারণা করছেন।
তবে বিএনপি এই ঘটনায় তাদের এক নেতাকে জড়িত করার প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বিএনপি বলেছে, সরকার বিদেশি নাগরিক হত্যার এই তদন্তকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ওয়েবসাইট সাইট আবারও দাবি করেছে, বাংলাদেশে দুই বিদেশী নাগরিক হত্যাসহ সাম্প্রতিক হামলার ঘটনাগুলোর সাথে আন্তর্জাতিক জঙ্গী ইসলামী গোষ্ঠী আইএস জড়িত।

জরায়ু ভাড়া দেয়ার ব্যবসা বন্ধ হচ্ছে ভারতে

 
                      অর্থের বিনিময়ে ভারতে দরিদ্র মহিলারা তাদের জরায়ুতে ধারণ করছে বিদেশি দম্পতির সন্তান                
বিদেশি দম্পতিদের সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য ভারতীয় মহিলাদের গর্ভ ভাড়া দেয়ার রমরমা ব্যবসা বন্ধ করতে চায় ভারত সরকার।
ভারতীয় সুপ্রীম কোর্টে এক শুনানিতে বুধবার ভারত সরকার জানিয়েছে, তারা মাতৃগর্ভ ভাড়া দেয়ার এই ‘ব্যবসা’ সমর্থন করেনা।
বিদেশিদের সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য ভারতীয় মহিলাদের গর্ভ ভাড়া দেয়ার এই ব্যবসা কতটা নৈতিক তা নিয়ে ভারতীয় সুপ্রীম কোর্টে এখন এক আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।
উল্লেখ্য সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রচুর নিঃসন্তান বিদেশি দম্পতি ভারতে যাচ্ছেন তাদের সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য ভারতীয় মহিলার গর্ভ ভাড়া করতে। সাধারণত ‘ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশনের’ (আইভিএফ) মাধ্যমে ল্যাবরেটরিতে বিদেশি দম্পতির সন্তানের ভ্রুণ তৈরি করা হয়। এরপর এই ভ্রুণ ভারতীয় কোন মহিলার জরায়ুতে স্থাপন করা হয়। সন্তান জন্ম দেয়ার বিদেশি দম্পতি তাদের সন্তান নিয়ে ফিরে আসেন। সন্তান ধারণ এবং জন্ম দেয়ার জন্য ভারতীয় সারোগেট মাকে দেয়া হয় কিছু অর্থ।
ভারতের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের অনুমান, ভারতে এই জরায়ু ভাড়া দেয়ার ব্যবসা এখন প্রায় নয়শো কোটি রূপী ছাড়িয়ে গেছে।
কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, প্রয়োজনীয় আইন না থাকায় ভারতে এই ব্যবসার ফাঁদে পড়ে শোষিত হচ্ছে বহু দরিদ্র মহিলা।
বিশ্বের অনেক দেশেই অর্থের বিনিময়ে অন্যের সন্তান ধারণ আইনত নিষিদ্ধ।
ভারতের সুপ্রীম কোর্ট এ মাসের শুরুতে এই ব্যবসা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তা নিয়ন্ত্রণের জন্য ভারত সরকারের ওপর রুল জারি করে।
ভারতে সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান নেয়ার খরচ বিশ্বের অন্য যে কোন দেশের তুলনায় অনেক সস্তা। ১৮ হাজার হতে ৩০ হাজার মার্কিন ডলার খরচ হয় এতে। কিন্তু এর মধ্যে ভারতীয় সারোগেট মাকে সাধারণত ফি হিসেবে দেয়া হয় ৮ হাজার ডলারের কাছাকাছি। bbc