শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫

ঝাড়ু হাতে রাস্তায় টানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট

 
    রাস্তায় ময়লা পরিস্কারে ব্যস্ত প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলি।                 রাস্তায় ময়লা পরিস্কারে ব্যস্ত প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলি।        
        
পূর্ব আফ্রিকার দেশ টানজানিয়ার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির আরেক নাম দ্যা বুলডোজার।
কারণ তিনি তার কাজ নিয়ে ধানাইপানাই করে না। কথা বলেন সরাসরি। দেশ থেকে দুর্নীতি উৎখাতের জন্য প্রতিজ্ঞা করেছেন জনগণের কাছে।
ক্ষমতা গ্রহণ করেই মি. মাগুফুলি কলমের এক খোঁচায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের জাকঁজমকে কাটছাঁট করেছেন। বাতিল করে দিয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর কুচকাওয়াজ আর গানের কনসার্ট।
তিনি বলছেন, অপব্যয় করার মতো অর্থনৈতিক অবস্থা তার দেশের নেই।
তিনি বলেন, দেশ যখন কলেরা প্রাদুর্ভাবে পর্যুদস্ত কথকন এত অর্থ ব্যয় করার কনো যুক্তি নেই।
আড়ম্বরের পরিবর্তে তিনি যেটা করেছেন তা খুবই চমকপ্রদ।
স্বাধীনতা দিবসে তিনি ঝাড়ু হাতে বেরিয়ে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ থেকে।
নিজের হাতে পরিস্কার করেছেন রাস্তাঘাটের ময়লা।
তার সাথে এই শুদ্ধি অভিযানে যোগ দিয়েছেন রাজধানী দার এস সালামের হাজার হাজার মানুষ।
প্রেসিডেন্ট মাগুফুলি দায়িত্বভার গ্রহণ করেন গত অক্টোবর মাসে।
এরপরই সরকারি ব্যয় সংকোচনের লক্ষ্যে তিনি বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা করেন।

আমেরিকার মুসলমানরা কি আতঙ্কে বসবাস করছেন

 
                                
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি বলেছেন আমেরিকায় মুসলমানদের প্রবেশ বন্ধ করে দেয়া উচিত।
কিন্তু এই বক্তব্যকে আমেরিকার মুসলমানরা কিভাবে দেখছেন?এখন তারা কী ভাবছেন?
বাসিম আব্বাসি নামের একজন বলছেন আমেরিকানরা ট্রাম্পের চেয়ে ভালো।
অন্যদিকে সারাহ আলী নামের আরেকজন আমেরিকান মুসলিম বলছেন আমেরিকা হচ্ছে শ্বেতাঙ্গ ধনী মানুষের জন্য স্বাধীনতা।
অনেকে এই বক্তব্যকে হালকাভাবে নিলেও এর সম্ভাব্য প্রভাবের আশংকায় বেশ আতঙ্কগ্রস্ত।
আধুনিক আমেরিকায় একজন রাজনীতিকের মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য অনেকে রীতিমতো চমকে উঠেছেন।
শফিক খান নামের একজন আমেরিকানের মতে , “ আমেরিকার ৬০’র দশকে ফিরে যাচ্ছে।”
মি: ট্রাম্পের বক্তব্যের পরও অনেকেই জোর গলায় বলছেন তারা নিজেদের মুসলমান পরিচয় নিয়ে গর্বিত। কেউ কেউ তার মুসলমান ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে কোন শঙ্কিত নন।
অনেকে তার ধর্মীয় পরিচয়কে আরো সামনে আনছেন।
একজন বলেন, “ আমি আগে মুসলমান তারপরে আমেরিকান।” মুসলমান বিদ্বেষী বক্তব্যের পরেও আমেরিকা ছেড়ে যাওয়ার ইচ্ছা তাদের নেই।
                 ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য বিতর্ক তৈরী করেছে।                
এদিকে আমেরিকায় মুসলমানদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার বিষয়ে মি: ট্রাম্পের বক্তব্য মার্কিন নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে আশংকা তৈরি হয়েছে।
পেন্টাগন সতর্ক করে দিয়েছে যে এইধরনের বক্তব্য মধ্যপ্রাচ্য-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটকে উসকে দিতে পারে।
তবে মি: ট্রাম্প দাবী করছেন তিনি কোন উগ্রপন্থী নন। “ এই দেশে সত্য কথাটি বলতে হবে। ”
উত্তর আমেরিকায় ইসলাম-বিরোধী মনোভাব নতুন কোন ঘটনা নয়।
আমেরিকা এবং কানাডার রাজনীতিতে ইসলাম-বিরোধী মনোভাব মাঝে-মধ্যেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। কানাডার নির্বাচনে মুসলিম-বিরোধী বক্তব্য বেশ জোরালো হয়ে উঠেছিল।
আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করেও সেটি আবার দানা বাঁধছে।
গত সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকার আইওয়া অঙ্গরাজ্যে এক জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে সেখানকার রিপাবলিকান সমর্থক এক-তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করে ইসলামকে নিষিদ্ধ করা উচিত।
প্যারিস এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় হামলার পর সেটি আরো ঘনীভূত হয়েছে।

কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে 'বেওয়ারিশ' জেটবিমান

 
    বিমানগুলোর মালিক পাওয়া না গেলে বিমানগুলো বেচে দেওয়া হবে।       
         
মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে দেশটির প্রধান বিমানবন্দরে পড়ে থাকা বেওয়ারিশ তিনটি বোয়িং ৭৪৭ বিমানের মালিককে খুঁজে পেতে বিমানবন্দর কর্মকর্তারা সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন।
বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে ''বিমানের মালিকরা ১৪ দিনের মধ্যে বিমানগুলোর মালিকানা দাবি না করেন, তাহলে বিমানগুলো হয় বেচে দেওয়ার নয়ত সেগুলো ধ্বংস করে ফেলার ব্যাপারে আমাদের অধিকার প্রয়োগ করতে আমরা বাধ্য হব।''
নোটিশে আরও বলা হয়েছে বিমানগুলোর ল্যান্ডিং এবং সেখানে পার্কিং বাবদ যা খরচ হচ্ছে তাও মালিককে মিটিয়ে দিতে হবে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলেছে এই বিমানগুলোর মালিক হিসাবে তাদের কাছে শেষ যে তথ্য জানা ছিল সে অনুযায়ী তারা তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে।
''জানি না কেন তারা কোনো উত্তর দিচ্ছে না। কারণ হয়ত অনেক থাকতে পারে। হয়ত তাদের বিমান চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ নেই,'' বলেন মালয়েশিয়া বিমানবন্দরের জেনারেল ম্যানেজার জায়নুল মোহম্মদ ইশা।
তিনি বলেন গত এক দশকে বেশ কয়েকটি বিমান মূলত ছোট বিমান এভাবে ফেলে রেখে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এর মধ্যে ১৯৯০ এর দশকে এভাবে ফেলে দেওয়া একটি বিমান কিনে নিয়ে সেটিকে কুয়ালালামপুরে একটি রেস্তোরাঁয় পরিণত করা হয়েছিল।
কর্মকর্তারা বলেছেন ২১শে ডিসেম্বরের মধ্যে বিমানের মালিকরা বকেয়া অর্থ দিতে এগিয়ে না এলে বিমান তিনটিকে নীলামে বেচে দেওয়া হবে অথবা বকেয়া দেনা পরিশোধ করতে সেগুলো ভাঙা লোহালক্কড় হিসাবে বেচে দেওয়া হবে।

``বাক স্বাধীনতা সংকুচিত হওয়ায় মানুষ ভেবে চিন্তে কথা বলছে।``

 
    আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস ঢাকায় এক র‍্যালির নেতৃত্বে ছিল এই হাতিটি।                 আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস ঢাকায় এক র‍্যালির নেতৃত্বে ছিল এই হাতিটি।      
          
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে বাংলাদেশের মানবাধিকার কর্মীরা অভিযোগ করছেন, ভিন্নমতের বিরুদ্ধে চরম অসহিষ্ণু অবস্থান নিয়ে সরকার কথা বলার স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে সংকুচিত করেছে।
তারা আরও বলছেন, সরকারের নানা পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশে এমন এক ভয়ের সংস্কৃতি চালু হয়েছে, যেখানে অনেকেই মুক্তভাবে তাদের মনের কথা বলতে পারছেন না।
ঢাকার শাহবাগ এলাকায় আজিজ মার্কেটে সৃজনশীল প্রকাশকদের বইয়ের দোকানগুলোকে ঘিরে তরুণ লেখকদের আড্ডা থাকে সারাদিনই।
এমনই একটি আড্ডায় তরুণ লেখক এবং প্রকাশক রুবিন আহসানের সাথে কথা হয়।
সরকার গত তিন সপ্তাহ ফেসবুক যে বন্ধ করে রেখেছিল, তাতে তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন।
মি: আহসান বলছিলেন, ``ফেসবুক এখন আমাদের মতা প্রকাশের একটা বড় প্লাটফরম হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গণজাগরন মঞ্চসহ অনেক সামাজিক আন্দোলন এই ফেসবুকের মাধ্যমে গড়ে উঠেছিল। সেটা তিন সপ্তাহ বন্ধ রেখে সরকার আমাদের মত প্রকাশের ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করেছিল।”
যদিও ফেসবুক বন্ধ রাখার ক্ষেত্রে সরকারের পদক্ষেপগুলো দৃশ্যমান ছিল। কিন্তু এখন গণমাধ্যমের কাজে বাধা বেশি আসছে এবং তা দৃশ্যমান নয়।
এটি আরও বেশি ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেন দ্য নিউজ টুডে পত্রিকার সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, “এখন দুর্বল গণতন্ত্রের কারণে অদৃশ্য যে বাধা আসছে, তাতে ভয় থেকে প্রিন্ট এবং ইলেকট্রোনিক মিডিয়ায় সেলফ সেন্সরশীপ তৈরি হয়েছে।”
এখনকার পরিবেশ নিয়ে অনেকটা একই ধরণের মূল্যায়ণ দেশের শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সুলতানা কামালের। তিনি বলছিলেন, “বাক স্বাধীনতার ক্ষেত্র সংকুচিত হওয়ায় মানুষ এখন ভেবে চিন্তে কথা বলছে। পরিস্থিতির কারণে মানুষ নিজেরাই নিজেদের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করছে।”
একই সাথে সুলতানা কামাল বলেন, কিছু লিখলে বা কোন কথা বললে কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগ উঠবে কিনা, এটিও এখন বড় শঙ্কার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি ব্লগার, লেখক, প্রকাশকদের হত্যার ঘটনাগুলোকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল ৭/৮ বছর ধরে বেসরকারি টেলিভিশনগুলোতে টকশোতে নিয়মিত অংশ নিয়ে আসছেন। কিন্তু তিনি বলছিলেন, এক বছর ধরে তাকে ডাকা হয়না। এর কারণ তিনি জানতে পারেননি।
তিনি বলছিলেন, সব সরকারের সময়ই বাক স্বাধীনতা সংকুচিত করার চেষ্টা হয়েছে। এখন সেই চেষ্টাটা ভিন্ন ধরণের বলে তিনি মনে করেন।
“আগের সরকারগুলো সমালোচক পত্রিকার সরকারি বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দিতো। এই সরকারের সময় দেখা গেলো, দেশের প্রধান দু’টি পত্রিকায় একসঙ্গে বড় টেলিফোন কোম্পানিগুলো, ব্যাংক এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দিয়েছে কয়েকমাস আগে। এটা সরকারের হস্তক্ষেপ ছাড়া সম্ভব নয়।”
তিনি উল্লেখ করেন, তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় সামাজিক নেটওয়ার্কে বা এর বাইরে কারও মন্তব্য নিয়ে যে কোন অজুহাতে তাকে আটক করে রাখা যায় এবং অহরহ এ ধরণের ঘটছে।
আসিফ নজরুলের ধারণা, ৫ই জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের পর সরকার নজিরবিহীনভাবে বাক স্বাধীনতার ওপর আঘাত করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন শিক্ষক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলামও মনে করেন,এই মেয়াদের আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলের ওপর চাপ সৃষ্টির পাশাপাশি সবক্ষেত্রেই অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে।
তিনি বলেন, “এখন মানুষ খোলামেলাভাবে সরকারের সমালোচনা করতে সাহস পায় না। বিরোধীদলগুলোর ওপর অনেক ধরণের নির্যাতন নেমে আসছে। গণমাধ্যমের ওপর পরোক্ষ চাপ রয়েছে। সমালোচনা ধ্বংসাত্নক রাজনীতিকে উস্কে দিতে পারে, এমন চিন্তা থেকে হয়তো সরকার একটা অবস্থান নিতে পারে।কিন্তু সেটা ভুল।”
বিশ্লেষকরা এটাও বলেছেন, খোলা মনে কথা বলার বা মুক্ত চিন্তার পরিবেশ তৈরি করা না হলে, সেটা সরকার, রাষ্ট্র এবং গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

হিন্দু মন্দিরে বোমা ও গুলি। আহত ২

 
    ঢাকার ইসকন মন্দির। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইসকনের মন্দিরে হামলা হয়েছে।                 ঢাকার ইসকন মন্দির। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইসকনের মন্দিরে হামলা হয়েছে।  
              
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা দিনাজপুরে একটি ইসকন মন্দিরে বোমা বিস্ফোরণ ও গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, এই হামলার ঘটনায় দু’জন আহত হয়েছেন।
তবে হামলাকারী সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, কাহারোল উপজেলায় হিন্দু ধর্মের অবতার কৃষ্ণের ভক্তদের একটি মন্দিরে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার কিছু পরে হামলার ঘটনাটি ঘটে। সে সময় মন্দিরটিতে ধর্মসভা চলছিল।
অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিরা সেখানে প্রথমে গুলি বর্ষণ করে এবং এরপর হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।
পুলিশ জানিয়েছে, হামলার ঘটনায় দু’জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং পরে হামলাকারী সন্দেহে একজনকে হাতবোমা সহ আটক করা হয়েছে।
দিনাজপুরে একটি উপজেলা ইসকন সভাপতির ওপর সম্প্রতি গুলিবর্ষণ করা হয়েছিল।
আর মাত্র কয়েকদিন আগে কাহারোলেই কান্তজিউ’র মন্দির প্রাঙ্গণে যাত্রা প্যান্ডেলে বোমা বিস্ফোরণে পাঁচজন আহত হন।
দিনাজপুর শহরে সম্প্রতি একজন ইতালীয় যাজকের ওপর হামলা হলেও তিনি প্রাণে বেঁচে যান।

তবুও মুসলিমদের ঘৃণা করি না: ব্রিটিশ সৈন্য

 
    ক্রিস হার্বাট
                 ক্রিস হার্বাট
``হ্যা, একজন মুসলমানের পাতা বোমাতেই আমার পা উড়ে গিয়েছে।`` ক্রিস হার্বাট এভাবেই শুরু করেছেন ফেসবুকে তার পোস্ট।
ইংল্যান্ডের বন্দর নগরী পোর্টস্‌মাউথের বাসিন্দা মি. হার্বাট ব্রিটিশ সেনাদলের সদস্য হয়ে যখন ইরাকের বন্দর নগরী বসরায় মোতায়েন ছিলেন তখন রাস্তার পাশে পেতে রাখা এক বোমায় গুরুতরভাবে আহত হন।
এবং তার একটি পা কেটে ফেলতে হয়।
সুস্থ হওয়ার পর বিভিন্ন ইসলাম-বিরোধী সংগঠন দলে টানার জন্য তাকে নানাভবে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করে। কিন্তু তা কোন ফল হয়নি।
নিজের ফেসবুক পাতায় লেখা ঐ পোস্টে ক্রিস হার্বাট লিখেছেন, যদিও তার আহত হওয়ার জন্য দায়ী একজন মুসলমান, তবুও এজন্য সব মুসলিমকে এ জন্য তিনি দোষ দেন না।
কারণ? তিনি লিখছেন, ``আমার সাথে ব্রিটিশ বাহিনী উর্দি পরা একজন মুসলিম সহযোদ্ধাও সেদিন বোমা বিস্ফোরণে তার একটি হাত হারিয়েছেন, যে হেলিকপ্টারে করে আমাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল তার মেডিকেল কর্মকর্তা ছিলেন একজন মুসলিম, হাসপাতালে অপরেশন করে যে আমার জীবন রক্ষা করেছেন সে একজন মুসলমান ডাক্তার। দেশে ফেরার পর আমাকে স্বাভাবিক হতে সাহায্য করেছিলেন যারা তাদের মধ্যে একজন নার্স ছিলেন মুসলমান।``
``আমি জানি কাকে আমার ঘৃণা করা উচিত, আর কাকে নয়,`` তিনি লিখছেন, ``দায়েস (জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট) কিংবা তালেবানের কর্মকান্ডের জন্য সব মুসলমানদের দায়ী করার অর্থ হলো (বর্ণবাদী সংগঠন) কেকেকে`র জন্য সব খ্রিস্টানদের দায়ী করা। তাই আপনার দৃষ্টিভঙ্গী আমার ওপর চাপিয়ে দেবেন না।``
এই পোস্টে একই সাথে মি. হার্বাট বর্ণনা করেন, কিছু কিছু শ্বেতাঙ্গের কাছ থেকে কিভাবে তিনি নিজেও নানা ধরনের গালাগালির শিকার হয়েছেন।
পোর্টস্‌মাউথের সৈকতে ক্রিস হার্বাট                 পোর্টস্‌মাউথের সৈকতে ক্রিস হার্বাট                

খুললো ফেসবুক: বাংলাদেশে স্বস্তির হাওয়া

 
    ফেসবুক কর্মকর্তাদের সাথে বাংলাদেশ সরকারের বৈঠক। (ফাইল ফটো)
                 ফেসবুক কর্মকর্তাদের সাথে বাংলাদেশ সরকারের বৈঠক। (ফাইল ফটো)
বাংলাদেশে গত ১৮ই নভেম্বর থেকে ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটস্‌অ্যাপসহ সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যম বন্ধ করে দেয়া হয়।
যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের আপীলের রিভিউর রায় সুপ্রিম কোর্ট যেদিন ঘোষণা করেছিল, সেই দিন থেকে বাংলাদেশের মানুষ সহজ পথে ফেসবুক ব্যবহার করতে পারছিলেন না।
আজ বিবিসি বাংলার তরফ থেকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, কেমন কেটেছে তিন সপ্তাহ ব্যাপী ফেসবুকবিহীন জীবন? জবাবে যেসব পোস্ট এসেছে সেখানে ইউজারদের মধ্যে অনেকেই স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলেন।
যেমন, নাসরিন প্রভা মন্তব্য করেন: ভীষন মন খারাপ ছিল। মনে হচ্ছিল সব যোগাযোগ, আন্তরিকতা, সামাজিকতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছি। আজ যেন সবার সাথে নতুন করে হবে ভাব বিনিময়। তাই মনে জাগে খুশির জোয়ার।
রাশেদ খান মনির বলছেন, ফেসবুকে লগ-ইন করলে মনে আমার মনে হতো বাংলাদেশে যুদ্ধ চলছে অথবা এই মাত্র যুদ্ধ শেষ হয়েছে। যারা বেঁচে আছে শুধু তারাই ফেসবুক ইউজ করছে।
ফাতেমা ইসলাম রেখা মন্তব্য করেছেন: ফেসবুক ছাড়া মনে হতো আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হয়েছে। প্রতিটা মুহূর্ত একটা বছর মনে হতো।কিন্তু এখন মনে হয়ছে প্রান ভরে নি:শ্বাস নিতে পারছি।
ফুয়াদ পাশা পোস্ট করেছেন: ফেসবুক খুলে দেওয়ায় নিজেকে আর চোর মনে হচ্ছে না। সদ্য জামিন প্রাপ্ত আসামি মনে হচ্ছে।
এইচ এম আনিস আহমেদ বলছেন: প্রেমিকাবিহীন থাকা সম্ভব। কিন্তু ফেইসবুকবিহীন থাকা অসম্ভব। তাই আমি একটা দিনও ফেইসবুকবিহীন ছিলাম না।
ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রকাশের পাশাপাশি ফেসবুক ইউজাররা সরকারের সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করেন।
মো. আনোয়ার বলেন: সরকার ফেসবুককে মনে করেছিল এটা বাংলাদেশের একটা প্রতিষ্ঠান। তাদের ভুল ভেঙ্গেছে। গায়ের জোরে সবকিছু হয় না।
ফাহিম রহমান পোস্ট করেন: মাথা ব্যথার কারণে মাথা কেটে ফেলা কোন সমাধান হতে পারে না। মাথা কেন ব্যথা হয় সেটার কারণ বের করতে হবে। ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, ভাইবার ও হোয়াটসঅ্যাপ-এর মত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো বন্ধ রেখে আর যাই হোক ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না। প্রযুক্তিকে এড়িয়ে নয়, বরং আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে প্রযুক্তিকে সঙ্গে নিয়ে।