রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

ফুল আর শ্রদ্ধায় শহীদ স্মরণ



যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাঙালি পেয়েছিল ভাষার অধিকার, সেইসব শহীদ স্মরণে প্রথম প্রহরে জেগে উঠেছে সব শহীদ মিনার।  'একুশ মানে মাথা নত না করা' এই প্রত্যয়ের প্রতিধ্বনিতে রফিক, জব্বার, সফিউরদের স্মরণ করছে পুরো জাতি।
রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৫২ সালের এই দিনে বাঙালির রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল রাজপথ। রক্তের দামে এসেছিল বাংলার স্বীকৃতি আর তার সিঁড়ি বেয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় স্বাধীনতা।
মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় বাঙালির এই আত্মত্যাগের দিনটি এখন আর বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ নয়; ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে সারা বিশ্বে। বাঙালির ভাষার সংগ্রামের একুশ এখন বিশ্বের সব ভাষাভাষীর অধিকার রক্ষার দিন।  
গর্ব আর শোকের এই দিনটি রোববার বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করবে জাতি, যার সূচনা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে।
একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় একই সময়ে তারা দুজন ফুল দেন।
এরপর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, ওবায়দুল কাদের, মাহবুবুল আলম হানিফসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে শহীদ মিনারে ফুল দেন শেখ হাসিনা।
তাদের পর শহীদ বেদীতে ফুল দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ ও বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ।
পরে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, রাশেদ খান মেনন ও হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনী প্রধান, আইজিপি, অ্যাটর্নি জেনারেল, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও ভাষা সৈনিকরা।
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর্ব শেষ হলে শহীদ মিনার সবার জন্য খুলে দেওয়া হয়।
একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভাষাশহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, “মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ বিশ্বে বিরল ঘটনা। মাতৃভাষার মর্যাদা রাখতে গিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে বাঙালি জাতি যে ইতিহাস রচনা করেছিল, শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্ব আজ তাকে স্মরণ করছে সুগভীর শ্রদ্ধায়।”
ভাষা আন্দোলনকে জাতীয় ইতিহাসে ঐতিহাসিক ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা অভিহিত করে তিনি বলেন, “এ আন্দোলন ছিল আমাদের মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নিজস্ব জাতিসত্তা ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষারও আন্দোলন। অমর একুশের অবিনাশী চেতনা পরবর্তীকালে স্বাধিকার ও স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আমাদেরকে যুগিয়েছে অসীম  শক্তি ও প্রেরণা।”
একুশে ফেব্রুয়ারি এখন বিশ্বজুড়ে নিজস্ব স্বকীয়তা রক্ষার চেতনার উৎস বলে মন্তব্য করেন আবদুল হামিদ।
এই চেতনা ধারণ করে বিশ্বের সব ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর মধ্যে যোগাযোগ, লুপ্তপ্রায় ভাষাগুলোর উজ্জীবন এবং সব জনগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা-সংস্কৃতির বিকাশের প্রত্যাশা করেছেন তিনি।
একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শহীদ দিবসের বাণীতে তিনি বলেন, “অমর একুশে আমাদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতীক।”
একুশের চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ধারণ করে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা ও নিরক্ষরতামুক্ত এবং আধুনিক ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে সরকার দেশের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি আজ সারা বিশ্বের সকল নাগরিকের সত্য ও ন্যায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রেরণার উৎস।
বিশ্বের ২৫ কোটি মানুষের ভাষা বাংলাকে জাতিসংঘের অন্যতম সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতির জন্য উদ্যোগ গ্রহণ এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এই দাবি তোলার কথাও স্মরণ করেছেন তিনি।
শহীদ দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বিবৃতিতে একুশের চেতনায় ‘গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনার’ আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
“দেশ স্বাধীন হলেও নতুন করে ভিন্ন মাত্রায় আধিপত্যবাদী শক্তি এদেশের উপর সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক আধিপত্য কায়েম করে জাতি হিসেবে আমাদেরকে নতজানু করে রাখতে চাচ্ছে। ভিন্ন কায়দায় আমাদের ভাষা সংস্কৃতির ওপর বিদেশি সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চলছে মহল বিশেষের সহযোগিতার জন্য।
“যারা দেশকে তাবেদার রাখতে চান তারাই চক্রান্তজাল বুনে আধিপত্যের থাবাকে বিস্তার লাভ করতে সুযোগ দিয়ে সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক আগ্রাসনকে প্রশ্রয় দিচ্ছে, যাতে আমরা মাথা উচুঁ করে দাঁড়াতে না পারি।আর এইজন্যই এখন মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে আবারও একদলীয় দুঃশাসনের শৃঙ্খলে দেশের মানুষকে আটকে রাখা হয়েছে,” বলেছেন তিনি।
শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে মধ্যরাতে ঘড়ির কাঁটা ১২টা ছোঁয়ার আগেই হাজারো মানুষ হাতে ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে যান শহীদ মিনার অভিমুখী লাইনে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণের অপেক্ষায় দাঁড়ান।
শ্রদ্ধানুষ্ঠান ভাবগাম্ভীর্য ও শান্তিপূর্ণভাবে পালনের লক্ষ্যে শনিবার সন্ধ্যা থেকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ পুরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সাধারণের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা করা হয়।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মিছিলে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর নির্দেশে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান সালাম, রফিক, বরকত, শফিউরসহ নাম না জানা অনেকে।
এরপর বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেয় তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর এক ঘোষণায় ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি পায়।
২১ ফেব্রুয়ারি দেশে সাধারণ ছুটির দিন। ভাষা শহীদদের স্মরণে এদিন জাতীয় পতাকা থাকবে অর্ধনমিত।
ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রামসহ সারা দেশে প্রথম প্রহরেই শহীদ মিনারে শুরু হয়েছে শ্রদ্ধা জানানোর পালা, ফুলে ফুলে ভরে উঠছে স্মৃতির মিনার।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠান হবে। জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশনেও অনুষ্ঠান হবে।
খালি পায়ে প্রভাতফেরির মিছিলে সবার কণ্ঠে থাকবে অমর সেই গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি..।’

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার প্রশ্নে ব্রিটেনে গণভোট ২৩শে জুন

Image copyrightAP
Image captionডাউনিং স্ট্রীটে গণভোটের তারিখ ঘোষণা করছেন ডেভিড ক্যামেরন
ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকবে কিনা এ প্রশ্নে এ বছর জুন মাসের ২৩ তারিখে এক গণভোট অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।
গতকাল রাতে ইইউতে ব্রিটেনের অবস্থান নিয়ে ব্রাসেলসে এক সমঝোতার পর আজ মন্ত্রিপরিষদের এক বৈঠক শেষে মিস্টার ক্যামেরন এ ঘোষণা দিলেন।
তিনি বলছেন, ইইউতে ব্রিটেনের বিশেষ মর্যাদা নিশ্চিত হবার পর তার মন্ত্রিসভা এখন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অংশ হিসেবে থাকার পক্ষে মত দিয়েছে।
শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও মন্ত্রিপরিষদের জরুরী বৈঠক ডেকে যেভাবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে এই গণভোটের তারিখ ঘোষণা করতে হলো, তা থেকেই এর গুরুত্বটা স্পষ্ট।
এর আগে শনিবার মন্ত্রিপরিষদের এরকম জরুরী বৈঠক বসেছিল ১৯৮২ সালে ফকল্যান্ড যুদ্ধের সময়।
ব্রাসেলসের বৈঠক থেকে ফিরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যে সমঝোতায় তিনি পৌঁছেছেন, তা মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে ব্যাখ্যা করেছেন ডেভিড ক্যামেরন।
আর তারপর দশ নম্বর ডাউনিং স্ট্রীটে সাংবাদিকদের সামনে তিনি গণভোটের তারিখ ঘোষণা করেন।
ডেভিড ক্যামেরন বলেন, তিন বছর আগে তিনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এই গণভোটের তারিখ ঘোষণা করছেন। তিনি বলেন, ব্রিটেনের জনগণই এখন ইউরোপের প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নেবেন, এবং জনগণ যে সিদ্ধান্তই নিক, তিনি তা বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবেন।
তিনি আরও বলেন, যদিও জনগণই সিদ্ধান্ত নেবেন, তারপরও তিনি মনে করেন ব্রিটেন যদি ইউরোপীয় ইউনিয়নেই থাকে, সেটাই ব্রিটেনের জন্য ভালো, এবং জনগণের কাছে তিনি সেই সুপারিশই করছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে মিস্টার ক্যামেরন যে সমঝোতায় পৌঁছেছেন, তার ফলে ব্রিটেন তার নিজস্ব মূদ্রা পাউন্ডেই থাকতে পারবে, এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভবিষ্যত রাজণৈতিক একত্রীকরণ থেকে আলাদা থাকতে পারবে।
এছাড়া ইউরোপের অন্য দেশ থেকে আসা অভিবাসীদের জন্য সরকারী সুযোগ সুবিধা সীমিত করে দিতে পারবে।
এখন পর্যন্ত যা খবর, তাতে মন্ত্রিপরিষদের বেশিরভাগ সদস্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে এই সমঝোতা মেনে নিয়েছে। কিন্তু মন্ত্রিপরিষদের অনেক সদস্য এর বিরোধিতাও করছেন।
তারা মনে করছেন, মিস্টার ক্যামেরন ইউরোপীয় ইউনিয়ওেনর কাছ থেকে যে ছাড় আদায় করবেন বলে কথা দিয়েছিলেন, তাতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।
ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি এই প্রশ্নে এখন স্পষ্টতই বিভক্ত।
কিন্তু ডেভিড ক্যামেরনের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন ব্রিটেনের সাড়ে চার কোটি ভোটারকে ইউরোপে থাকার পক্ষে ভোট দিতে রাজী করানো।

বৃক্ষমানব আবুল বাজানদারের অপারেশন করা হলো যেভাবে

Image copyrightGetty
Image captionমায়ের সঙ্গে 'বৃক্ষমানব' আবুল বাজানদার
বাংলাদেশে বৃক্ষমানব বলে পরিচিত আবুল বাজানদারের ডান হাতে আজ অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে এ অপারেশনের পর চিকিৎসকরা বলছেন হাতের আঙ্গুল থেকে গাছের শিকড়ের মতো যা হয়েছিলো সেগুলো সফলভাবে অপসারণ সম্ভব হয়েছে।
গত দশ বছর ধরে বিরল ‘ট্রি ম্যান সিনড্রোম’ রোগে ভুগছিলেন আবুল বাজানদার।
গত মাসের শেষ দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে আনার পর নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে আজই প্রথম অস্ত্রোপচার করা হলো তার।
সাড়ে তিন ঘণ্টার এ অপারেশনের বর্ণনা দিয়ে অপারেশন টীমের একজন সদস্য অধ্যাপক কবীর চৌধুরী বলেন এক ধরনের ইলেকট্রিক মেশিনে আঙ্গুলের বাড়তি অংশগুলো কেটে ফেলা হয়েছে যাতে করে রক্তপাত বেশি না হয়।
এছাড়া চামড়ার পুনর্গঠন যাতে হয় আর ইনফেকশন যাতে না হয় সেজন্য বিশেষ ধরনের স্প্রে করা হয়েছে।
মিস্টার বাজানদের অপারেশন টীমের নেতৃত্বে ছিলেন অধ্যাপক আবুল কালাম।
তিনি এ অস্ত্রোপচারের মূল লক্ষ্য ছিলো মিস্টার বাজানদারের হাতের আঙ্গুলগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোকে দৃশ্যমান ও স্বাভাবিক করার সুযোগ তৈরি করা।
তিনি বলেন অনেকগুলা পর্যায়ে সার্জারি চলবে এবং শেষ পর্যন্ত কম অপারেশনেই হাত স্বাভাবিক করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি জানান শুরুতে দু আঙ্গুলে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নিয়েও অপারেশন থিয়েটারে গিয়ে সবগুলো আঙ্গুলেই অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন তারা। আর এ জন্য শুধু ডান হাতকেই অবশ করা হয়েছিলো।
তিনি বলেন অপারেশনটি তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী সফল হয়েছে।
কিন্তু অপারেশনের মাধ্যমে মিস্টার বাজানদারের হাত ও পা পুরোপুরি মুক্ত করা সম্ভব হলেও রোগটি আবার কি ফিরে আসতে পারে তার শরীরে ?
এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আবুল কালাম বলেন এ বিষয়টি পরীক্ষার জন্যেই ডিএনএ ম্যাপিংয়ের জন্যে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে।
ওদিকে অপারেশন শেষ হওয়ার পর মিস্টার বাজানদারের বাবা মা ও স্ত্রীকে নেয়া হয় তার কাছে।
সন্তানকে দেখে এসে মা আমেনা বেগম বলেন তার ছেলে ভালো আছে এবং তার সাথেও কথা বলেছে।
তার স্ত্রী হালিমা খাতুন বলেন তার খুব ভালো লাগছে কারণ দশ বছর পর রোগ থেকে মুক্তি পাবে এবং আবার আগের মতো হবে।
আবুল বাজানদারের অস্ত্রোপচার টীমের সদস্য অধ্যাপক সামন্ত লাল সেন বলেন আবুল বাজানদারের চিকিৎসা বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং চিকিৎসকদের জন্যে একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
আর এ চ্যালেঞ্জের প্রথম ধাপে তারা সফল হয়েছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
চিকিৎসকেরা আরও বলছেন এখন পর্যন্ত পরীক্ষা নিরীক্ষায় মিস্টার বাজানদারের শরীরে ক্যান্সারের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি, সেটিও স্বস্তি এনে দিয়েছে তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে।