রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

বহিস্কারের ভয়ে আশ্রয়প্রার্থী শিশুকে হাসপাতাল থেকে ছাড়ছেন না অস্ট্রেলিয়ার ডাক্তাররা

Image copyrightReuters
Image captionএক বছরের শিশুটিকে আশ্রয় দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ
অস্ট্রেলিয়ার এক হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে শিশুটির। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেই ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাকে বের করে দেবে অস্ট্রেলিয়া থেকে।
ডাক্তাররা তাই হাসপাতাল থেকে তাকে ছাড়ছে না।
আর শিশুটিকে যেন বহিস্কার করা না হয় সেই দাবিতে হাসপাতালের বাইরে জড়ো হয়েছে শত শত বিক্ষোভকারী।
ব্রিসবেনের লেডি সিলেনটো হাসপাতালের ডাক্তাররা বলছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত এক বছর বয়সী মেয়ে শিশুটির জন্য একটি নিরাপদ থাকার জায়গা খুঁজে পাওয়া না যাচ্ছে ততক্ষণ হাসপাতালেই থাকবে সে।
এক বছর বয়সী মেয়েটির বাবা-মা অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয় প্রার্থী। নাউরু দ্বীপের এক ডিটেনশন সেন্টারে আটকে থাকার সময় মেয়েটি মারাত্মকভাবে আগুনে দগ্ধ হয়।
তারপর তাকে অস্ট্রেলিয়ার এই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় চিকিৎসার জন্য।
অস্ট্রেলিয়া তাদের দেশে আশ্রয়প্রার্থীদের প্রশান্তমহাসাগরীয় নাউরু দ্বীপে আটকে রাখার যে নীতি নিয়েছে, তার তীব্র সমালোচনা হচ্ছে।
ঝুঁকিপূর্ণ নৌকায় করে যারা অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছাতে চায়, তাদের বিরত রাখতে এই ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে বলে দাবি করছে অস্ট্রেলিয়া।

বিশ্বে আরেকটি স্নায়ু যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে!

Image copyrightReuters
Image captionমেডভিয়েডেফ: বিশ্বকে আরেকটি স্নায়ু যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে
পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার দ্বন্দ্ব বিশ্বকে এক নতুন স্নায়ু যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রুশ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেডভিয়েডেফ।
তিনি বলেন, প্রায় প্রতিদিনই রাশিয়াকে সবচেয়ে জঘন্য হুমকি বলে বর্ণনা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে রাশিয়া নাকি নেটো, আমেরিকা এবং ইউরোপের জন্য হুমকি।
তিনি নেটোর প্রধান হেন্স স্টোলটেনবার্গ এবং বিভিন্ন চলচ্চিত্রে কথা উল্লেখ করেন যেগুলোতে দেখানো হয়েছে রাশিয়া পরমাণু যুদ্ধ শুরু করেছে।
“অনেক সময় আমার মনে হয় এটা কি ২০১৬ সাল নাকি আমরা ১৯৬২ সালে আছি।”
উল্লেখ্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে কমিউনিষ্ট সোভিয়েত ইউনিয়নের যে দীর্ঘ কয়েকদশকব্যাপী দ্বন্দ্ব এবং উত্তেজনা চলেছে, তাকে স্নায়ু যুদ্ধ বলে বর্ণনা করা হয়।
রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর সর্বশেষ দফা দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে সিরিয়া নিয়ে।
Image copyrightGetty
Image captionস্নায়ুযুদ্ধের সময় দেয়াল তুলে ভাগ করে ফেলা হয়েছিল বার্লিন নগরী
রাশিয়া সমর্থন করছে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্সসহ নেটো জোট সমর্থন করছে আসাদ বিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে।
সিরিয়ার রুশ বিমান হামলা বেসামরিক প্রাণহানির যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, সেটাও জোর গলায় অস্বীকার করেছেন রুশ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেডভিয়েডেফ।
তবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী জন কেরি রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সিরিয়ায় বিমান হামলার নীতি থেকে সরে আসার জন্য।
তিনি অভিযোগ করেছেন, রাশিয়া বেশিরভাগ হামলাই চালাচ্ছে সিরিয়ার বৈধ বিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে টার্গেট করে।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে আত্মসমর্পনে বাধ্য করা যাবে না।

পাকিস্তানে ভ্যালেন্টাইনস ডে পালন না করতে প্রেসিডেন্টের আহ্বান

Image copyrightEPA
Image captionভ্যালেন্টাইনস ডে উদযাপন পাকিস্তানেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মামনুন হুসেইন ভ্যালেনটাইন’স ডে পালন না করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
পাকিস্তানের ডন পত্রিকা জানাচ্ছে, ইসলামাবাদে এক অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট এই আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, পাকিস্তানের সংস্কৃতির সঙ্গে ভ্যালেনটাইন্স ডে’র কোন সম্পর্ক নেই। কাজেই এটিকে পরিহার করতে হবে।
উল্লেখ্য এর আগে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি জেলায় ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’ উদযাপন নিষিদ্ধ করা হয়।
পেশাওয়ারের কাছে কোহাট জেলার কর্তৃপক্ষ পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন দোকানপাটে যেন ভ্যালেন্টাইন কার্ড এবং কোন রোমান্টিক জিনিসপত্র বিক্রি করা না হয়, তা নিশ্চিত করতে।
কেন তারা এই পদক্ষেপ নিলেন এর কোন কারণ অবশ্য জেলা কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করেননি।
কট্টর ইসলামপন্থীরা কোহাট জেলার ক্ষমতায় আছে।
এর আগে পাকিস্তানের কট্টর ইসলামপন্থীরা ভ্যালেনটাইন’স ডে পালনের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল এই বলে যে, এটি পাকিস্তানী সংস্কৃতির পরিপন্থী।
Image captionভ্যালেন্টাইনস ডে উদযাপন বন্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের প্রতি নির্দেশ
পাকিস্তানেও সম্প্রতি ভ্যালেন্টাইন ডে পালন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ উপলক্ষে দোকানপাটে কার্ড, চকোলেট এবং অনেকধরণের জিনিসপত্র বিক্রি হয়।

ব্যাংকের বুথ থেকে গ্রাহকের টাকা উধাও!


.
একটি বেসরকারি ব্যাংকের এটিএম কার্ডধারী অন্তত ২১ জন গ্রাহকের হিসাব থেকে টাকা উধাও হওয়ার ঘটনায় গতকাল শুক্রবার সব ব্যাংকের জন্য সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিভিন্ন ব্যাংক তাদের নিজস্ব এটিএম বুথ ছাড়া অন্য ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা তোলার সুযোগ সাময়িকভাবে স্থগিত করে। 
বেসরকারি ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) কর্তৃপক্ষ জানায়, গতকাল তাদের ২১টি গ্রাহক হিসাব থেকে অন্য কেউ টাকা তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে তারা দ্রুত বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করে। তারা নিজেদের এটিএম কার্ড সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়। তবে সাইবার সন্ত্রাস, নাকি প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে এই টাকা উধাওয়ের ঘটনা ঘটেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। 
ভুক্তভোগী একজন গ্রাহক অনলাইন পত্রিকা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সহকারী সম্পাদক মাহাবুবা আক্তার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ইবিএল থেকে তিনি ব্যাংকিং সেবা নিয়ে থাকেন। সাধারণত ব্যাংক থেকে টাকা তুললে তিনি মুঠোফোনে খুদে বার্তা পান। গতকাল সকালে ঘুম থেকে উঠেই তিনি মুঠোফোনে এ রকম দুটি খুদে বার্তা পেয়েছেন, যাতে বলা হয় রোকেয়া সরণিতে অন্য একটি ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে দুবারে ৪০ হাজার করে ৮০ হাজার টাকা তোলা হয়েছে। কিন্তু তাঁর এটিএম কার্ডটি বাসাতেই তাঁর কাছে আছে। তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন হয়তো খুদে বার্তাটি ভুলভাবে এসেছে। এরপর ব্যাংক হিসাব পরীক্ষা করে দেখেন সত্যিই ৮০ হাজার টাকা কম। এরপর তিনি ইবিএলের গ্রাহকসেবা বিভাগে অভিযোগ করেন। তখন তাঁকে জানানো হয়, এ রকম ঘটনা আরও কয়েকজনের সঙ্গেই ঘটেছে। গ্রাহকসেবা বিভাগের পরামর্শে সঙ্গে সঙ্গে তাঁর কার্ডে লেনদেন বন্ধ করে দেন মাহাবুবা। 
মাহাবুবা আরও বলেন, ইবিএল থেকে তিনি একসঙ্গে ২০ হাজারের বেশি টাকা তুলতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর হিসাব থেকে দুবারে ৮০ হাজার টাকা তোলা হয়েছে গতকাল। এ বিষয়ে গ্রাহকসেবা বিভাগ তাঁকে বলেছে, ১ হাজার টাকার নোট হলে একবারে ৪০ হাজার টাকা ওঠানো সম্ভব।
যোগাযোগ করা হলে ইবিএলের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান জিয়াউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল ২১ জন গ্রাহক তাঁদের হিসাব থেকে টাকা উধাও হওয়ার অভিযোগ করেছেন। অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এটা সাইবার আক্রমণ, না তাঁদের সিস্টেমের প্রযুক্তিগত সমস্যা—তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। 
জিয়াউল করিম বলেন, অভিযোগগুলো পাওয়ার পরে প্রথমে টাকা উত্তোলনের পরিমাণ (উইথড্র লিমিট) কমিয়ে ২০ হাজার করা হয়। এরপরও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে দুপুরের দিকে অনলাইনে লেনদেনের ব্যবস্থা ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচের (এনপিএস) লিঙ্কটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। নিজস্ব সিস্টেমও বন্ধ করে দেয় ইবিএল। এর ফলে এটিএম বুথগুলো থেকে গ্রাহকেরা আর টাকা তুলতে পারেননি। কয়েক ঘণ্টা এটিএম লেনদেন বন্ধ থাকার পরে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আবারও বুথগুলো চালু করা হয়। তিনি বলেন, যাঁরা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংককে বিষয়টি জানানো হয়েছে। 
আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ জানতে চাইলে জিয়াউল করিম বলেন, একেকটি হিসাব থেকে দিনে এক লাখের বেশি টাকা তোলা যায় না। যার ফলে সব মিলিয়ে খোয়া যাওয়া টাকার পরিমাণটা খুব বেশি হবে না। তিনি দাবি করেন, ইবিএলের বুথ থেকে এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে ইবিএলের কার্ডে ভিসা সুবিধা যুক্ত থাকায় অন্য ব্যাংকের এটিএম বুথেও এই কার্ড ব্যবহার করা যায়। অন্য ব্যাংকের বুথ থেকেই জালিয়াতিটা হয়েছে। 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা প্রথম আলোকে বলেন, এটা সাইবার আক্রমণ, নাকি প্রযুক্তিগত সমস্যা—তা এখনো নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। তদন্ত করে এটা বের করার পরে গ্রাহকের স্বার্থ সংরক্ষণে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করবে এবং সে অনুযায়ী ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেবে। 
শুভঙ্কর সাহা বলেন, দেশে প্রায় ৯০ লাখ এটিএম কার্ডের গ্রাহক রয়েছেন। গতকাল কী কারণে একটি ব্যাংকের গ্রাহকদের এ সমস্যা হলো, তা দেখার বিষয়। যদি ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচে সমস্যা হয়, তাহলে কার কী দায়, তা নির্ধারণের বিষয় রয়েছে। আবার সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ সিস্টেমে কোনো সমস্যা হলে তাও বের করা যাবে। তবে ইবিএলকে অবশ্যই গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
এটা সাইবার আক্রমণ, নাকি প্রযুক্তিগত সমস্যা—এ বিষয়ে শুভঙ্কর সাহা বলেন, না দেখে কিছুই বলে যাবে না।