সোমবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৫

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী, বিদেশি হত্যায় বিএনপি ও জামায়াতের মদদ আছে

গণভবনে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা l ছবি: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়গণভবনে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা l ছবি: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়* দেশে রাজনৈতিক সংকট নেই। বিদেশি রাষ্ট্রনায়কেরাও সরকারের বৈধতা কিংবা নির্বাচনের বিষয়ে প্রশ্ন করেননি
* এতই যদি রাজনৈতিক সংকট থাকত, তাহলে বাংলাদেশ এলডিসির নেতৃত্ব কীভাবে পেল?

ইতালি ও জাপানের নাগরিক হত্যাকাণ্ডে বিএনপি-জামায়াতের হাত থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি মনে করেন, এ ঘটনায় সরকারের সব অর্জন ম্লান হয়ে যায়নি। বিদেশি নাগরিকদের হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিত করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিয়ে দেশে ফেরার পর গতকাল রোববার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপি-জামায়াতের যোগসূত্র বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ ঘটনার পেছনে নিশ্চয়ই তাদের মদদ আছে। আমাদের অর্জনগুলো ম্লান করার জন্য এ ঘটনাগুলো ঘটানো হয়। এটার পেছনে নিশ্চয়ই একটা উদ্দেশ্য আছে। তাদের হাত আছে।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘দুজন বিদেশি নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে। তাঁদের হত্যার স্টাইলটা একই রকম। ইতালির নাগরিককে চারটি গুলি মারা হয়েছে। একটা গুলিও মিসফায়ার হয়নি। চারটা গুলিই লাগল। এটা সুপরিকল্পিত। আমি স্মরণ করাতে চাই এর আগে বিএনপির এক নেতার বক্তব্য। এরপর তাঁর রি-অ্যাকশন। সেগুলো যদি মিলিয়ে দেখেন, তাহলে জিনিসটা খুব স্পষ্ট হয়ে যায়।’ তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে। তারাই পঁচাত্তরের পর ২১ বছর ক্ষমতায় ছিল। আজকে তাদের যখন বিচার হচ্ছে, কিছু রি-অ্যাকশন তো হবেই। এখানে কিছু গণসচেতনতা দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন শুরু করেন বেলা সাড়ে ১১টায়। প্রথমে তিনি লিখিত বক্তব্যে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭০তম অধিবেশনে যোগদান, বিভিন্ন বৈঠকে অংশ নেওয়া এবং সরকারের নানা অর্জন তুলে ধরেন। এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।
প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গেই বলেন, দেশে কোনো রাজনৈতিক সংকট নেই। বিদেশি রাষ্ট্রনায়কেরাও সংকটের কথা বলেননি। সরকারের বৈধতা কিংবা নির্বাচনের বিষয়েও কেউ তাঁকে প্রশ্ন করেননি। প্রধানমন্ত্রী বেতন ও মর্যাদার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলনের ব্যাপারে বিরক্তি প্রকাশ করেন এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নষ্ট না করার আহ্বান জানান।
বড় অর্জন বাদ দিয়ে ছোট দুর্ঘটনা নিয়ে বেশি সংবেদনশীল না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানেই থাকি, এখন তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। যখন যে ঘটনা ঘটছে খবর পাচ্ছি। ইনস্ট্রাকশন দিচ্ছি। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। কাজেই আমি আপনাদের বলব, সব অর্জন একেবারে ধ্বংস হয়ে গেল এ ঘটনায়; এই যদি আপনাদের চিন্তাভাবনা হয়, তাহলে আমার মনে হয়, ওই বিএনপি-জামায়াত রাজাকারদের যে উদ্দেশ্য, সেটাই সফল।’
প্রধানমন্ত্রী অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট দল না আসার প্রসঙ্গে বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট দল যে এল না, অস্ট্রেলিয়ায় কী ঘটল? সেখানেও সঙ্গে সঙ্গে দুজনকে গুলি করে মারল। আমি জানি না, আমাদের মিডিয়াগুলো হাইলাইট করেছে কি না। অস্ট্রেলিয়া কী জবাব দেবে? যেসব দেশ বাংলাদেশে একজন হত্যার পর রি-অ্যাকশন দেখাল, তারা অস্ট্রেলিয়ার এই হত্যাকাণ্ড এবং আমেরিকার স্কুলে গুলি করে হত্যার পর কী করল? তারা কি সেখানে ঘোষণা দিয়ে দিয়েছে, এখানে রেড অ্যালার্ট হয়ে গেছে? আমরা একটা ঘটনা ঘটলে বেশি সেনসেটিভ হয়ে যাই। অর্জনগুলো যেন শ্যাডো হয়ে গেল। অর্জনগুলো হারিয়ে গেল। আমরা এত মানসিক দৈন্যে কেন ভুগি?’
গবেষণায় এসেছে, সরকার ও দলের চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বেশি জনপ্রিয়। দল, সরকার ও ব্যক্তি শেখ হাসিনার মধ্যে এই পার্থক্য কেন—এ প্রশ্ন করা হলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা গাছ যখন বেড়ে ওঠে, সেই গাছের শিকড় থাকে। আপনি গাছটা দেখেন, ফুলটা দেখেন, ফলটা দেখেন। কিন্তু শিকড়টা দেখেন না। আমার রেটিং যাই হোক না কেন, আমার শিকড় হচ্ছে আমার দল। দলের সহযোগিতা আছে, সমর্থন আছে বলেই আমি এত দূর উঠতে পেরেছি।’
বাংলা নববর্ষে উৎসব ভাতা চালু করা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে এই উৎসবে সবাই যোগ দেয়। সর্বজনীনভাবে এই উৎসব পালিত হয়। সেটা বিবেচনায় নিয়ে পয়লা বৈশাখে উৎসব বোনাস দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমসহ মন্ত্রিপরিষদের বেশ কয়েকজন সদস্য, আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
দেশে সংকট নেই, বিদেশিদের আগ্রহ উন্নয়ন: বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা, মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে বিদেশি সরকারপ্রধানদের মনোভাবের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, নেদারল্যান্ডসের রানি, সুইডেন ও বেনিনের প্রধানমন্ত্রী—কেউ এসব বিষয়ে কোনো প্রশ্ন তোলেননি। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান, মন্ত্রী যাঁদের সঙ্গে দেখা হয়েছে, কেউ বাংলাদেশে সংকট বা নির্বাচন বিষয়ে আলোচনাই করেননি। বরং বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকেই তাঁরা সাধুবাদ জানিয়েছেন।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন এলডিসির নেতৃত্বে বাংলাদেশ। এতই যদি রাজনৈতিক সংকট থাকত, তাহলে বাংলাদেশ এলডিসির নেতৃত্ব কীভাবে পেল? সংকট দেশের বাইরে না, দেশের ভেতরের কিছু মানুষের মনের সংকট চলছে। বনের বাঘে খায় না, মনের বাঘে খায়। বাইরে কোনো সংকটের কথা কেউ বলেননি, দেখিওনি।’
বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের সময় মানুষ পুড়িয়ে মারার ঘটনাকে বিদেশিরা ভালোভাবে নেয়নি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা-ওটা ঘটনা তো ঘটতেই থাকবে এবং তারা চুপ করে তো বসে থাকবে না। আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করব আর তারা চুপ করে বসে থাকবে, এটা আপনারা আশা করেন কী করে? তারা তো প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করতেই থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি দরকার জনসচেতনতা। আমাদের সচেতন হতে হবে। হ্যাঁ, তাদের লবিস্ট আছে, টাকাপয়সা আছে। হয়তো লবিস্ট নিয়োগ করে কিছু কথা বলাতে পারে, লেখাতে পারে, এটা ঠিক। কিন্তু বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাটা আমরা রাখতে পেরেছি।’
আইএস নেই: দুজন বিদেশি নাগরিক হত্যায় আইএসের মতো জঙ্গি সংগঠনের সংশ্লিষ্টতার খবর সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইতালির নাগরিককে হত্যার পর শিকাগো থেকে সোশ্যাল স্ট্যাটাস আসে—আইএস এর সঙ্গে জড়িত। তার সম্পৃক্ততা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। ঘটনা তো তদন্ত করতে হবে। এখানকার গোয়েন্দারা কোনো সূত্র এখনো পায়নি। তখন কে একটা স্ট্যাটাস দিয়ে দিল, তা আমাদের গ্রহণ করতে হবে? কেন করতে হবে?’
জঙ্গি মোকাবিলায় বর্তমান সরকার নতুন কোনো কৌশল নিয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম ও সীমানা নেই। কেউ জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দেবে না। দেশে কেউ কোথাও এ ধরনের কোনো খবর পেলে সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানান। তারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
সাংসদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে: গাইবান্ধার আওয়ামী লীগের সাংসদ মন্জুরুল ইসলামের গুলিতে শিশু রক্তাক্ত হওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটা বিশাল সংগঠন, সেই সংগঠনে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। কিন্তু আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি কি না, সেটাই বড় কথা। আমরা কিন্তু ঘটনা ধামাচাপা দিই না, প্রশ্রয়ও দিই না। কাল আসার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এটা নিয়ে আলাপ করেন। সঙ্গে সঙ্গে আমি বললাম, এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের রাজনৈতিক অবস্থা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সুন্দরগঞ্জে জামায়াতের উৎপাত আছে। ওখানে সংগঠন টিকিয়ে রাখাই কঠিন। কারণ, ওখানে জামায়াতে ইসলামী খুন-খারাবি করছে। সেখানে আওয়ামী লীগের নেতাদের হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করতে হবে। তবে সরকার সাংসদের অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করেছে, মামলা দেওয়া হয়েছে।
দেশের সমস্যা দেশেরই সম্পদ দিয়ে মোকাবিলা করছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা করছি, শুরু করেছি। বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। হাত পেতে চলা আর দাও দাও করা, এটা চাই না। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। বিজয়ী জাতি। মাথা উঁচু করে চলতে চাই। যদি আমাদের নুন-ভাতও খেতে হয়, নিজের উপার্জনে খাব। ধার করা টাকা দিয়ে বিরিয়ানি খেতে রাজি না।’
আওয়ামী লীগেও দেশপ্রেমিক ব্যক্তি আছেন, ভবিষ্যতে সরকার গঠন করলে তাঁদের নিয়েই দেশ পরিচালনা করা হবে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লন্ডনে এমন বক্তৃতা করেছেন বলে একজন সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি কী বললেন? উনি আওয়ামী লীগে প্রেমিক খুঁজে পেয়েছেন? উনি আওয়ামী লীগে প্রেমিক কীভাবে খুঁজে পেলেন, আমি জানি না। উনি যদি আওয়ামী লীগে দেশপ্রেমিক খুঁজে পান, খুব ভালো কথা।’
নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতের বিক্ষোভে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাঁর ব্যাপারে আমার কমেন্ট করার কিছু নাই। যার যে আপন জায়গা খুঁজে পেয়েছে। দেশবাসী বিচার করুক।’
prothom alo

বিজেপি-আরএসএস ভারতকে হিন্দুরাষ্ট্র বানাতে চায়’


ইকলাখ-কাণ্ড নিয়ে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) জাতিসংঘের দ্বারস্থ হতে চলেছে। উত্তর প্রদেশ সরকারের মন্ত্রী ও সমাজবাদী পার্টির শীর্ষ নেতা আজম খান আজ সোমবার লখনৌয়ে বলেছেন, ন্যায়বিচারের আশায় তিনি জাতিসংঘের দ্বারস্থ হবেন। সে জন্য ইতিমধ্যেই তিনি জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল বান কি মুনের কাছে সময় চেয়েছেন।
দিল্লির লাগোয়া উত্তর প্রদেশের নয়ডায় বিসাদা গ্রামে গত সপ্তাহে একটা বাছুর জবাইয়ের গুজবের বলি হন মুহম্মদ ইকলাখ। সেই ঘটনায় তাঁর ছোট পুত্র দানিস গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
গো-হত্যার অভিযোগে ইকলাখ-খুনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতি সেই থেকে সরগরম। আজম খান এই ঘটনাকে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সঙ্গে তুলনা করে সোমবার বলেন, বিজেপি ও আরএসএস ভারতকে হিন্দুরাষ্ট্রে পরিণত করতে চলেছে। ইকলাখ হত্যা তারই একটা ধাপ। তিনি বলেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষ ভারত যদি হিন্দুরাষ্ট্র হয়ে যায়, তা হলে এ দেশে মুসলমানদের ভূমিকা কী হবে?’ তিনি বলেন, জাতিসংঘে তাঁরা এটাই জানতে চাইবেন।
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ সিং যাদব ইতিমধ্যেই ইকলাখের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের সবরকমের সুবিধার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ৪৫ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও বলেছেন তিনি। দানিসের চিকিৎসার দায়িত্বও সরকার নিয়েছে। রাজ্য বিজেপি নেতারা আবার এই সিদ্ধান্তে ক্ষিপ্ত। তাঁরা বলছেন, রাজ্য সরকার মুসলিম-তোষণের রাজনীতি শুরু করেছে। স্থানীয় বিজেপি নেতাদের আরও ক্ষোভ, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ৭ জনই বিজেপি পরিবারের সদস্য। মুজফফরনগরের দাঙ্গায় অন্যতম অভিযুক্ত জামিনে মুক্ত বিজেপির বিধায়ক সঙ্গীত সোম বিসাদা গ্রামে গিয়ে অভিযুক্তদের পরিবারের সঙ্গে গতকাল রোববার দেখা করেন। সেখানে তিনি বলেছেন, নির্দোষ যুবকেরা শাস্তি পেলে দল তার উপযুক্ত জবাব দেবে।
গো-হত্যা ও নরহত্যা নিয়ে রাজনীতির এই চাপান-উতোরের মধ্যেই হতে চলেছে বিহারের নির্বাচন এবং সেখানেও উন্নয়নের স্লোগানকে পেছনে ফেলে সামনে চলে এসেছে গরুর রাজনীতি। বিজেপি জিতলে যাঁর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি, সেই সুশীল কুমার মোদি বলেছেন, দল বিহারে সরকার গড়লে গোটা রাজ্যে গো-হত্যা নিষিদ্ধ করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, ক্ষমতায় এসে নরেন্দ্র মোদি গরু পাচার বন্ধ করে দিয়েছেন। বিসাদা গ্রামের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী এখনো কিন্তু মুখ খোলেননি। ভোটের মুখে লালু প্রসাদ তাই মোদিকে কটাক্ষ করে বলেছেন, উনি অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র।
ইকলাখের পরিবার আপাতত বিসাদা গ্রামে নেই। গোটা তল্লাট পুলিশে সয়লাব। গ্রামবাসীরা চাইছেন না এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি হোক। তাঁরা এ-ও চাইছেন না নিহত ইকলাখের পরিবার গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যাক। স্থানীয় হিন্দুরা ইকলাখের পরিবারকে এ নিয়ে ‘অনুরোধ’ও করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে ইকলাখের বড় পুত্র মুহম্মদ সরতাজ এক বেসরকারি টিভির অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বলেছেন, ‘এমনটা ঘটতে পারে কখনো ভাবিনি। গ্রামের অধিকাংশ মানুষই ভালো। সবাই সব সময় মিলেমিশে থেকেছি। দুচারজন খারাপ হয়তো এই কাজ করেছে। কিন্তু গ্রামবাসীরাই সবাইকে আগলে রাখছে।’ সরতাজ ভারতীয় বিমানবাহিনীর কর্মী। ঘটনার দিন চেন্নাইয়ে ছিলেন। রাজনীতিবিদদের প্রতি তাঁর আবেদন, দয়া করে এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করবেন না। এটা রাজনীতি করার সময় নয়।
prothom alo

মিনায় নিহত বাংলাদেশী হাজির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৫১ জনে

    মিনায় নিহত বাংলাদেশি হাজির সংখ্যা বেড়ে দাড়ালো ৫১ জনে             হজ্জের সময় ভিড়ে চাপা পড়ে সেসময় নিহত হন ৭৬৯ জন। (ফাইল ছবি)                

সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ বিবিসিকে জানিয়েছেন, মিনায় পদদলিত হয়ে নিহত বাংলাদেশী হাজির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫১ জনে।
তবে এখনও পর্যন্ত ১৩০ জন বাংলাদেশী হাজি নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
নিখোঁজদের খোঁজে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ।
দূতাবাসের কর্মকর্তারা বিভিন্ন হাসপাতালে যেয়ে খোঁজখবর চালাচ্ছেন।
সৌদি কর্তৃপক্ষ নিহত হাজিদের ছবি ধাপে ধাপে প্রতিদিন প্রকাশ করছে।
নিখোঁজ বাংলাদেশী হাজিদের স্বজনদের মিনার পাশের এলাকা মুয়াইসামে যেয়ে সেখানে প্রকাশিত ছবি যাচাই করতে বলেছে দূতাবাস।
গত ২৪শে সেপ্টেম্বর মক্কার নিকটবর্তী মিনায় হজ্জের সময় শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়তে যাওয়ার পথে হুড়োহুড়িতে সাড়ে সাতশোরও বেশি মানুষ নিহত হয়।
bbc bangla

বান্দরবানে দুইজন পর্যটকসহ ৩ জন নিখোঁজ

   

 
বান্দরবানের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বিবিসিকে জানিয়েছেন ঢাকা থেকে বান্দরবানে বেড়াতে যাওয়া দুইজন পর্যটক ও তাদের সঙ্গে থাকা স্থানীয় একজন গাইডকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা বলে তারা খবর পেয়েছেন।
নিখোঁজদের খুঁজতে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
তবে স্থানীয় সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, মুন্না ও জুবায়ের নামে দুজন পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দা মানসাই ম্রোকে একদল অস্ত্রধারী ধরে নিয়ে গেছে বলে জেনেছেন তারা।
মি: ইসলাম জানান, স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন সশস্ত্র অপহরণকারী দলের পোশাক দেখে মনে হয়েছে তারা মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সদস্য।
মনিরুল ইসলাম জানাচ্ছেন, পর্যটক দু'জন গত ২৮শে সেপ্টেম্বর থেকে বান্দরবানে ছিলেন।
গত ৩রা অক্টোবর শনিবার রুমা উপজেলার শেষ সীমায় বিলাইছড়ির নতুনপুকুর এলাকায় ছিলেন তারা, সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা মানসাই ম্রো।
মনিরুল ইসলাম জানাচ্ছেন, ওই জায়গা থেকেই অস্ত্রধারীরা তাদের অপহরণ করে নিয়ে যায় বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা এবং তারা মনে করছেন এই তিনজনকে অপহরণ করে সশস্ত্র দলটি ভারত সীমান্ত দিয়ে পার হয়ে গেছে।
এরপর থেকে আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছেনা ওই তিনজনের।
স্থানীয়ভাবে মনে করা হচ্ছে গত আগস্ট মাসে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়েছিল বলে এর প্রতিশোধ নিতে ওই সংগঠনটি এমন করেছে।
ঘটনাটি ৩রা অক্টোবর ঘটলেও গত দুইদিনে তিনজনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা বলে বিলাইছড়ি উপজেলার বরথলি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পুলিশকে ঘটনা সম্পর্কে জানিয়েছেন।

চিকিৎসাবিদ্যায় নোবেল তিন বিজ্ঞানীর

    nobel_medicina_premios_anuncio                 পুরস্কার প্রাপকদের নাম ঘোষণা করছে নোবেল কমিটি                

প্যারাসাইট বা পরজীবী-জনিত সংক্রমণের মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য চিকিৎসাবিদ্যায় এ বছরের নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন মোট তিনজন বিজ্ঞানী।
রাউন্ডওয়ার্ম বা গোলকৃমি প্যারাসাইট থেকে যে সব সংক্রমণ হয় তার মোকাবিলায় নতুন একটি ওষুধ আবিষ্কার করে পুরস্কারের অর্ধেকটা পেয়েছেন উইলিয়াম সি ক্যাম্পবেল ও সাতোশি ওমুরা।
নোবেল পুরস্কারের বাকি অর্ধেক পাচ্ছেন ইউইউ তু – ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাঁর উদ্ভাবিত থেরাপির জন্য।
নোবেল পুরস্কার কমিটি বলেছে, এই তিন বিজ্ঞানীর কাজ কোটি কোটি মানুষের জীবনই পাল্টে দিয়েছে – যারা এই সব প্যারাসাইটজনিত সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন।
সবচেয়ে বড় কথা, এই সব মানুষের বেশির ভাগই বাস করেন পৃথিবীর দরিদ্রতম দেশগুলোতে।
নোবেলজয়ী উইলিয়াম সি ক্যাম্পবেলের জন্ম আয়ার্ল্যান্ডে, আর তাঁর সহকর্মী সাতোশি ওমুরা জাপানের লোক। মিস তু একজন চীনা নাগরিক।
ম্যালেরিয়ার মতো মশা-বাহিত রোগে প্রতি বছর সারা পৃথিবীতে সাড়ে চার লক্ষেরও বেশি মানুষ মারা যান – আরও শত শত কোটি মানুষ এই সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকেন।
বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশই প্যারাসাইটিক ওয়ার্ম থেকে বিপদের মুখে পড়তে পারেন। এই ধরনের কৃমি থেকে রিভার ব্লাইন্ডনেস বা লিম্ফেটিক ফিলারায়াসিসের মতো নানা ধরনের অসুখ হতে পারে।
প্রসঙ্গত, চীনের ইউইউ তু হলেন ত্রয়োদশ মহিলা, যিনি চিকিৎসাবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পেলেন।

bbc  bangla

আইএস-কে ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশেই’


             মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট  
              
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেছেন, বিদেশি নাগরিক হত্যার প্রশ্নে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আইএস যে দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এখন তা খতিয়ে দেখছে।
ঢাকায় কূটনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ডিকাব-এর এক অনুষ্ঠানে মিস বার্নিকাট বলেন, আইএস-এর উত্থান ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশেই রয়েছে।
গত সপ্তাহে বাংলাদেশে ইতালি ও জাপানের দু'জন নাগরিককে হত্যার ঘটনার পর বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে।
ওদিকে নিরাপত্তরা কারণ দেখিয়ে তৈরি-পোশাক শিল্পের বিদেশী ক্রেতারা আজ ঢাকায় তাদের একটি নির্ধারিত বৈঠকও স্থগিত করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে বলেছেন, দুজন বিদেশী নাগরিককে হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশ সহযোগিতা চাইলে যু্ক্তরাষ্ট্র সে জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
ইসলামিক স্টেট বা আইএস এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছে। বাংলাদেশের সরকার বলেছে, আইএস এর দাবির পক্ষে তথ্যপ্রমাণ এখনও মেলেনি।
তবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মিস বার্নিকাট বলছিলেন, “আইসিস এবং অন্যান্য সন্ত্রাসী সংস্থা যে সকল দাবি করছে ,সেগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি এবং আমরা যদি এসব দাবির বিষয়ে নিশ্চত হতে পারি তবে আপনাদের সরকার এবং আমাদের সরকার কে জানাব।”
“সহিংস উগ্রপন্থা মোকাবেলায় অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে আমরা যৌথ প্রচেষ্টা নেবো। বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্বে আইএস-এর উত্থান মোকাবিলার জন্য যা করা প্রয়োজন, তা সবই আমাদের আছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন”, বলেন তিনি।
bangladesh_japanese_killed_ap                 এক জাপানি নাগরিকের হত্যাকান্ডের পর বাংলাদেশে পুলিশি তৎপরতা                
মার্কিন রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেছেন, সন্ত্রাস এবং উগ্রপন্থা দমনে বেশ কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশ অভিজ্ঞতা বিনিময় করে আসছে এবং অংশীদারিত্বের থেকে দু’দেশই অঙ্গীকার জোরালো করেছে। নিরাপত্তার স্বার্থে দুই দেশ একসাথে কাজ করবে বলেও তিনি মনে করেন।
গত ২৮শে সেপ্টেম্বর ঢাকায় কূটনীতিক এলাকায় ইতালির এক নাগরিককে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্র তাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে সতর্কতার পরামর্শ দেয়।
একই সাথে অস্ট্রেলিয়া এবং ব্রিটেনও সতর্কতা পরামর্শ দিয়েছিল। পশ্চিমা দেশগুলোর এমন অবস্থানের সমালোচনা করেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেছেন, “আমরা সতর্কতার যে পরামর্শ দিয়েছি, তাতে আমরা বাংলাদেশে আসতে নিষেধও করিনি এবং নিশ্চয়ই বাংলাদেশ ছেড়ে যেতেও বলিনি । আমাদের পরামর্শে যা বলে তা হলো ‘দয়া করে সতর্কতা মেনে চলুন’। আমরা বিশ্বাসযোগ্য তথ্যে ভিত্তিতে বাংলাদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের ভ্রমণ বিষয়ক সতর্কতা আমরা হালনাগাদ করেছি। যাতে করে তারা আতঙ্কিত না হয়ে বরং আরো বিচক্ষণ হয়।”
ইতালির নাগরিককে হত্যার কয়েকদিন পর জাপানের নাগরিককে হত্যার ঘটনা বাংলাদেশে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এবং দাতা সংস্থাগুলোতে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, পোশাক শিল্পে বিদেশী ক্রেতারা ঢাকায় তাদের সোমবারের নির্ধারিত বৈঠক স্থগিত করেছে। পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-র নেতাদের অনেকে বলেছেন, নিরাপত্তা প্রশ্নে বৈঠকটি স্থগিত করা হয়েছে বলে তারা ধারণা করছেন।
অস্ট্র্রেলিয়ার ক্রিকেট কর্তৃপক্ষের বাংলাদেশ সফর স্থগিত করার পর দক্ষিণ আফ্রিকার নারী দলও এখন ঢাকায় আসছে না।আগামী ১৫ই অক্টোবর তাদের ঢাকায় আসার কথা ছিল।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান বলেছেন, ৯ই অক্টোবর আইসিসির বৈঠকে তিনি যাচ্ছেন। সে সময় তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার নারী দলের ঢাকা সফরের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করে নতুন তারিখ নির্ধারণের চেষ্টা করবেন।

সন্দেহভাজন পাচারকারীরা র‍্যাবের হাতে আটক

    rab_traffickers_detained                                সন্দেহভাজন পাচারকারীরা র‍্যাবের হাতে আটক                

বাংলাদেশের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী র‍্যাব ঢাকায় অভিযান চালিয়ে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য সন্দেহে মোট আটজনকে আটক করেছে ।
কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই ব্যক্তিদের আটক করা হয়। তবে র‍্যাবের এই অভিযোগের প্রশ্নে আটক ব্যক্তিদের কোন বক্তব্য জানা যায়নি।
র‍্যাব বলছে, আটককৃতদের কাছ থেকে বিভিন্ন দেশের জাল ভিসা ও জাল ভিসা স্ট্যাম্প দেওয়ার নানা উপকরণ ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
র‍্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, আটক ব্যক্তিরা যে আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য তার প্রচুর সাক্ষ্যপ্রমাণ তারা পেয়েছেন।
র‍্যাবের দাবি, গোপন সূত্রে তারা খবর পেয়েছিল রাজধানীর মতিঝিল থানা এলাকার কমলাপুরে মানব পাচারকারী চক্রের দুজন সদস্য একটি হোটেলে আশ্রয় নিয়েছে।
এরপর রোববার সন্ধ্যায় ইনসাফ হোটেল নামে ওই হোটেলটিতে হানা দিয়ে তারা মোহাম্মদ মতিন মিয়া ও জাহাঙ্গীর আলম বাবু নামে দুজনকে আটক করে।
তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন দেশের মোট ৫১টি জাল ভিসা উদ্ধার করা হয় বলেও র‍্যাব সূত্রে জানানো হয়েছে।
ধৃত দুজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাতভর অভিযান চালিয়ে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ওই চক্রের সঙ্গে যুক্ত সন্দেহভাজন আরও ছজনকে আটক করা হয়।
এদের মধ্যে একজন মোহাম্মদ নূর ইসলামের কাছ থেকে পাওয়া যায় লিবিয়ার ৩০টি জাল ভিসা।
আবুল হোসেন নামে ধৃত আর এক ব্যক্তির কাছ থেকে পাওয়া গেছে মোট ৫৯৫জনের পাসপোর্ট।
র‍্যাব বলছে, ধৃত ব্যক্তিরা জেরার মুখে স্বীকার করেছে তারা বহুদিন ধরেই তারা জাল ভিসার স্ট্যাম্প মেরে বাংলাদেশী নাগরিকদের অবৈধভাবে বিদেশে পাঠিয়ে আসছে।
এই চক্রটি বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় দালালদের পাঠিয়ে বিশেষ করে দরিদ্র শ্রেণীর মানুষদের তাদের নিশানা করত।
বিদেশে উন্নত জীবনের লোভ দেখিয়ে তারপর মোটা টাকার বিনিময়ে তাদের বেআইনিভাবে মালয়েশিয়া, লিবিয়া বা থাইল্যান্ড-সহ বিভিন্ন দেশে পাঠানোর চেষ্টা করা হত।

bbc bangla

৩৮ বছরের রেকর্ড ভাঙল ‘কচ্ছপদের বোল্ট’

    ৩৮ বছরের রেকর্ড ভাঙল ‘কচ্ছপদের বোল্ট’  কচ্ছপের দুনিয়ায় সবচেয়ে দ্রুততম জীব হিসেবে রেকর্ড বুকে জায়গা করে নিয়েছে বার্টি, যাকে কচ্ছপদের ‘উসেইন বোল্ট’ নামেও ডাকা যেতে পারে!

বার্টি ইংল্যান্ডে কাউন্টি ডারহ্যামের অ্যাডভেঞ্চার ভ্যালির বাসিন্দা, আর সে মাত্র ১৯.৫৯ সেকেন্ডে ১৮ ফিট দৌড়ে কচ্ছপদের স্প্রিন্টে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়েছে।
এর আগে কচ্ছপদের ১৮ ফিট স্প্রিন্টে বিশ্বরেকর্ড ছিল ৪৩.৭ সেকেন্ড, যা ১৯৭৭ সাল থেকে কেউ ভাঙতে পারেনি।
বার্টি অবশ্য গত বছরের জুলাই মাসেই এই সময় করেছিল, তবে অতি সম্প্রতি তা গিনেস বুক অব রেকর্ডসের নতুন সংস্করণে জায়গা করে নিয়েছে।
বার্টির মালকিন জেনিন ক্যালজিনি জানিয়েছেন, স্বভাবেও সে একদম উসেইন বোল্টের মতো – তার দৌড় যে বহু লোক উপভোগ করছে সেটা সে খুব পছন্দ করে, লোকজনের সঙ্গে মিশতে ভালবাসে।
বার্টি থাকে তার বান্ধবী শেলি-র সঙ্গে। তবে শেলি আবার ভীষণ লাজুক প্রকৃতির, লোকজন দেখলেই সে লুকিয়ে পড়ে।
বার্টি তার বিশ্বরেকর্ডের দৌড়ের আগে শুধু স্ট্রবেরি খেয়ে ছিল। এখন তার বয়স হবে দশ বছরের মতো।
বার্টি যে ‘লেপার্ড টরটয়েজ’ গোত্রের কচ্ছপ, তারা সাধারণত ৮০ থেকে ১০০ বছর পর্যন্ত বাঁচে। মিসেস ক্যালজিনি মনে করেন, সংবাদমাধ্যমের সামনে বার্টি হয়তো পরবর্তীতে আরও দ্রুত দৌড়নোর ক্ষমতা রাখে।
বার্টি জন্ম থেকে যার কাছে ‘মানুষ’ হয়েছে, সেই দম্পতি বছরচারেক আগে বিদেশে চলে যান। যাওয়ার আগে তারা তাকে অ্যাডভেঞ্চার ভ্যালির হাতে তুলে দেন, যে পার্কটি মিসেস ক্যালজিনি ও তার স্বামী মার্কো মিলে চালান।
তবে স্প্রিন্টার বা দৌড়বীর হিসেবে বার্টি-র প্রশিক্ষণ শুরু এই পার্কেই, এখন কচ্ছপ জগতের উসেইন বোল্ট হিসেবে বিখ্যাত হওয়ার পর পার্কে তার ও শেলির জন্য আলাদা একটি বড়সড় এনক্লোজারও বরাদ্দ হয়েছে।
এই মুহুর্তে মানুষদের ১০০ মিটার দৌড়ের বিশ্বরেকর্ড বোল্টের দখলে – আর সেটা হল ৯.৫৮ সেকেন্ড।
বার্টি যে গতিতে তার বিশ্বরেকর্ডের দৌড় দৌড়েছে, সেই একই গতিতে ১০০ মিটার দৌড়তে পারলে বার্টির ৫ মিনিট ৫৭ সেকেন্ড সময় লাগবে বলে হিসেব করে দেখা গেছে।

শিক্ষকদের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন না প্রধানমন্ত্রী

জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগদান নিয়ে আজ রোববার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা


জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগদান নিয়ে আজ রোববার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলাশিক্ষকদের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কিছু নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
শিক্ষকদের বেতন ও মর্যাদা বৃদ্ধির আন্দোলন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকবে কেন? আমার এখানে হস্তক্ষেপ করার কিছু নেই। ৯১ শতাংশ বেতন বাড়িয়েছি। কেউ কি কখনো কল্পনা করেছে, এই শিক্ষকদের জিজ্ঞাসা করেন। কখনো কেউ চিন্তা করেছে? আমি মনে হয়, একটু বেশি দিয়ে ফেলেছি। কমিয়ে দেওয়াই বোধ হয় ভালো ছিল।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁদের চাকরির বয়স ৬৫ বছর আর সরকারি চাকরিজীবীদের বয়স ৫৯ বছর। এগুলো তো বিবেচনায় নিতে হবে। আজকে যেটা নিয়ে আলোচনা করছে, সেটা নিয়ে আমারই তো প্রস্তাব ছিল। পিএসসির একটা আলাদা ইউনিট করে আমরা চাচ্ছিলাম... কিন্তু ওনারা আন্দোলন করছেন। তার মানে যে বেতন বাড়িয়েছি, নিশ্চয় তাঁরা বর্ধিত বেতন গ্রহণ করবেন না। যতক্ষণ পর্যন্ত সমাধান না হয়।’
শিক্ষকদের উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওনারা সচিবদের সঙ্গে তুলনা করছেন। আচ্ছা সচিবরা কী কী সুবিধা পাচ্ছেন আর ওনারা কী কী ভোগ করছেন তার একটা তুলনামূলক চিত্র লেখেন না। কোনো সচিব কিন্তু অন্য কোথাও চাকরি করতে পারেন না। সেটা জানেন ভালো করে। কিন্তু আমাদের শিক্ষকেরা পারেন। কোন ইউনিভার্সিটির কত শিক্ষক কোন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে চাকরি করেন সে হিসাব কিন্তু আমার কাছে আছে।’
শিক্ষকদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কথা নাই বার্তা নাই ওনারা ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করে দেবেন। কেন পড়াশোনা বন্ধ করবেন? শিক্ষকরা আন্দোলন করতে যাবেন, কীসের জন্য? আর যদি করতে হয়, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করার রাইট তো তাঁদের নাই। এই ছেলেমেয়েদের কী অবস্থা হবে! কতগুলি ক্লাস নষ্ট হচ্ছে। ক্লাসগুলি তো তাদের ঠিকমতো নিতে হবে। আর আমরা যেটা নিজেরাই চিন্তা-ভাবনা করছি, এটা নিয়ে তাদের আন্দোলন করার দরকার ছিল না। আন্দোলন যখন করছে, করতে থাকুক। এখানে আমার হস্তক্ষেপের কিছু নেই।’
তিনি বলেন, ‘তাঁরা আন্দোলন করছেন। বিষয়টি অর্থমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী দেখবেন। কমিটি করে দেওয়া হয়েছে, কমিটি দেখবে। কিন্তু আমি ওনাদের অনুরোধ করব—ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করবেন না।’

প্লুটোর চাঁদ শ্যারনের ছবি দেখে 'চাঁদের হাসি' পৃথিবীর ঠোঁটে

 

প্লুটোর চাঁদ শ্যারনের ছবি দেখে 'চাঁদের হাসি' পৃথিবীর ঠোঁটে
ওয়েব ডেস্ক: আহা। বেশ বেশ! এ ছবি কি শুধুই ছবি? সৌরজগতের জ্ঞাত ইতিহাসে নবতম আবিষ্কার প্লুটোর উপগ্রহ শ্যারনের ছবির প্রেমে পড়েছে পৃথিবী। নাসার স্পেস ক্রাফট নিউ হরিজনে ধরা পড়ল প্লুটোর উপগ্রহ শ্যারনের ছবি। সেই ছবির সৌন্দর্যে মোহিত গোটা বিশ্ব।      
নাসার স্পেস ক্রাফট নিউ হরিজনের ক্যামেরা MVIC (/Multispectral Visual Imaging Camera) ফ্রেম বন্দি করেছে শ্যারনের গায়ের ওপরের লীলাভ ও লাল রঙের আভা। প্লুটোর মত বৈচিত্র শ্যারনে নেই। তবে উত্তর মেরু অঞ্চল শ্যারনের লাল রঙ সবচেয়ে আকর্ষণীয়। নাসা যার নামকরণ করছে মর্ডর দাগ (Mordor Macula)। শুধু শ্যারনের রঙই নয়, ছবিতে এমন কিছু চিহ্ন দেখা গিয়ছে যা দেখে নাসার বিজ্ঞানীরা মনে করছেন সেখানে কিছু দিন আগেই হয়ত কোনও রকম ভৌগলিক কার্যকলাপ হয়েছে। ওই চিহ্ন গুলো নিয়ে ইতিমধ্যেই গবেষণা শুরু করেছে নাসা। 

বিশ্বের দীর্ঘতম কাঁচের সেতু বানিয়ে ঝলকে চিন

 

বিশ্বের দীর্ঘতম কাঁচের সেতু বানিয়ে ঝলকে চিন


ওয়েব ডেস্ক: কাঁচের সেতু। ঠিকই শুনেছেন। বিশ্বের দীর্ঘতম কাঁচের সেতু। ভাঙার ভয় নেই। কাটার ভয় নেই। চিনের হুনানে একটি কাঠের ব্রিজকে পাল্টে কাঁচের ব্রিজ বানানো হয়। এখন সেটি পৃথিবীর বুকে জ্বলজ্বল করছে বিশ্বের দীর্ঘতম কাঁচের ব্রিজ হিসাবে।
ভিডিও দেখুন
চিনের হুনান প্রদেশের শিনিউজহাই জিওপার্কে অবস্থিত দীর্ঘতম কাঁচের ব্রিজটি ৩০০ মিটার লম্বা। মাটি থেকে ১৮০ মিটার উঁচুতে রয়েছে। সেতুটি ২৪ মিলিমিটার দুটি কাঁচের স্তর মিলিয়ে তৈরি হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এই কাঁচের স্তর ২৫ গুণ মজবুত সাধারণ জানালার কাঁচ থেকে।
চিনের বুদ্ধ পাহাড়ের দুটি চূড়ার সংযোগস্থলে রয়েছে এই সেতুটি। ১১ জন ইঞ্জিনিয়ার মিলে রাতারাতি কাঠের ব্রিজকে বদলে কাঁচের সেতু তৈরি করে। পায়ে হাঁটা এই সেতুটি এখন "হিরো সেতু" নামে পরিচিত চিনের আম জনতার কাছে।