যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচিত ও সমালোচিত রিপাবলিকান মনোনয়ন প্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এবার সমর্থন দিলেন দলের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সারাহ পেলিন।
এই প্রথম কোনও শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন দিলেন।
মিসেস পেলিন বলেন, মি. ট্রাম্প এমন এক ব্যক্তি যিনি মার্কিন সেনা দিয়ে আইএসকে দমনে প্রস্তুত।
মিসেস পেলিন ২০০৮ সালে রিপাবলিকান দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন।
আইওয়ায় এক প্রচার-সমাবেশে আলাস্কার সাবেক গভর্নর মিসেস পেলিন বলেন ট্রাম্প আমেরিকাকে নতুন এক উচ্চ মর্যাদায় নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি যথার্থ ব্যক্তি।
রাজনীতিতে না থাকলেও, মিসেস পেলিনকে এখনো এখনো যথেষ্ট প্রভাবশালী বলে মনে করা হয়।
এক বিবৃতিতে মি. ট্রাম্প বলেছেন মিসেস পেলিনের সমর্থন পেয়ে তিনি গর্ব বোধ করছেন।
মি. ট্রাম্পের মতো মিসেস পেলিনও একজন বিতর্কিত ব্যক্তি।
আলাস্কার গভর্নর থাকাকালে তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে।
ইসলামিক স্টেট জঙ্গী গোষ্ঠী তাদের সদস্য জিহাদি জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।
আইএস জঙ্গী গোষ্ঠীর অনলাইন ম্যাগাজিন 'দাবিক' এক খবরে জানিয়েছে, সিরিয়ায় আইএস জঙ্গীদের শক্তিশালী ঘাঁটি রাকা’য় এক ড্রোন হামলায় ‘জিহাদী জনের মৃত্যু হয়েছে। আইএস যে সকল বন্দীদেরকে শিরশ্ছেদ করতো সেগুলোর ভিডিওচিত্রে মি. জনকে জল্লাদের ভূমিকায় দেখা গেছে।
ইসলামিক স্টেট এর প্রোপাগান্ডা ম্যাগাজিন দাবিক-এ ‘জিহাদী জন’ এর মৃত্যুর খবর জানিয়ে তার জন্য একটি ওবিচুয়ারি বা শোকসংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।
এর আগে গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র-ও দাবী করেছিল যে, ‘যৌক্তিকভাবে তারা নিশ্চিত’ যে ড্রোন হামলায় রাকায় জিহাদী জন নিহত হয়েছে।
দাবিক বলছে, জিহাদী জন বা মোহাম্মেদ এমাওয়াজি যে গাড়িতে ছিল সেটিকে লক্ষ্য করে যখন ড্রোন হামলা করা হয় তখন গত ১২ই নভেম্বরে সে নিহত হয়।
২০১৪ সালে ইসলামিক স্টেট-এর এক ভিডিওতে মুখোশ পড়া অবস্থায় তাকে প্রথম দেখা যায়। সেই ভিডিওটি ছিল মার্কিন সাংবাদিক জেমস ফলেয়-এর শিরশ্ছেদ করার দৃশ্য।
এরপর একে একে মার্কিন সাংবাদিক স্টিভেন সট্লফ, ডেভিড হেইনজসহ আরো বেশ কয়েকজনকে শিরশ্ছেদ করার ভিডিওতে জিহাদী জনকে দেখা যায়।
জিহাদী জন বা মোহাম্মেদ ইমাওয়াজির জন্ম কুয়েতে, ১৯৮৮ সালে।
পরে ১৯৯৪ সালে মাত্র ছয় বছর বয়সে ব্রিটেনে আসা মোহাম্মেদ ইমাওয়াজি কম্পিউটার প্রোগ্রামিং নিয়ে স্নাতক করেছিলেন ।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধে যুক্ত পাকিস্তানি সেনা সদস্যদের ব্যপারে তথ্য সংগ্রহে অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা এ কমিটি গঠন করেছে।
পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটির সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহে সরকারি দলিল, গণমাধ্যম এবং বিভিন্ন জেলা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
এক্ষেত্রে, ১৯৭২ সালে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় দালাল আইনে যেসব পাকিস্তানি সেনাসদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল, তাদের তথ্যও সংগ্রহ করবে এই কমিটি।
এছাড়া ১৯৭৪ সালের বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী যে ১৯৫ জন যুদ্ধবন্দি পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তাকে ফেরত দেয়া হয়েছিল তাদের ব্যপারেও এই কমিটি তথ্য অনুসন্ধান চালাবে বলে জানিয়েছেন মি. খান।
বাংলাদেশের সরকার বলছে, সিঙ্গাপুর থেকে সন্ত্রাসের দায়ে বহিষ্কৃত ২৬ জনের মধ্যে ১৭ জন এখন পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিবিসিকে জানান, এদের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর সরকারের আনা অভিযোগ পুলিশ এখন তদন্ত করে দেখছে।
বাদবাকি নয় জনের ভাগ্য সম্পর্কে এখনই কোন তথ্য জানা সম্ভব হয়নি।
সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মাহ্বুব উজ-জামান বিবিসি বাংলাকে বলেন যে বহিষ্কৃতরা বেশ কিছু দিন ধরে সিঙ্গাপুরের নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারিতে ছিলেন।
এদের আটক করার পর বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রশ্নে সিঙ্গাপুর সরকার তাদের সাথে যোগাযোগ করে।
দেশে ফেরার পর এদের একাংশকে সন্ত্রাস দমন আইনে গ্রেফতার করা হয় বলে তিনি জানান।
এর আগে সিঙ্গাপুরের সরকার জানায় যে সন্ত্রাসী হামলার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার দায়ে তারা ২৬ জন বাংলাদেশিকে বহিষ্কার করে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে।
কর্মকর্তারা বলেন, তবে এই হামলার লক্ষ্য সিঙ্গাপুর ছিল না, অন্য কোন রাষ্ট্রে এই হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল।
কিন্তু সেটি কোন দেশ সে সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ কোন কথা বলছে না।
সিঙ্গাপুর সরকারের অভিযোগ
সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে গোপনে তারা জিহাদি উপকরণ সরবরাহ করতো এবং সাপ্তাহিক বৈঠকে মুসলমানদের নিয়ে জিহাদ চালানোর ব্যাপারে কথা বলতো।
মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, দলের সদস্য সংখ্যা বাড়াতে তারা সচেতনভাবে বাংলাদেশিদের অন্তর্ভুক্ত করতো।
দলে অন্তর্ভুক্ত হওয়া অনেকেই মনে করতো ধর্মের জন্য তাদের সশস্ত্র জিহাদে অংশ নেয়া উচিত।
তাদের অনেকেই যুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার পরিকল্পনা করতো।
তারা শিয়া মতাবলম্বী মুসলমানদের পথভ্রষ্ট আখ্যা দিয়ে তাদের হত্যাকারীদের সমর্থন করতো।
বাংলাদেশে জিহাদ করার পরিকল্পনা
কিছু ইসলামী দল এবং তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ায় বাংলাদেশ সরকারের উপরও তাদের ঘৃণা ছিল।
মন্ত্রণালয় আরও বলছে, সদস্যদেরকে দেশে ফিরে এসে সশস্ত্র জিহাদে অংশ নিতে উৎসাহিত করা হতো।
বাংলাদেশে চরমপন্থি দলগুলোকে অর্থনৈতিক সাহায্যও পাঠাতো তারা ।
সিঙ্গাপুরের স্ট্রেইট টাইমস সংবাদপত্র খবর দিচ্ছে, এসব বাংলাদেশিকে নভেম্বরের ১৬ থেকে ১লা ডিসেম্বরের মধ্যে আটক করা হয়।
খবরে বলা হয়েছে, আটক ব্যক্তিরা আল কায়েদা এবং ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর প্রতি অনুগত।
সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে এই পত্রিকার খবর বলা হয়েছে আটক ২৭ জনের মধ্যে ২৬ জন বাংলাদেশি একটি গোপন ইসলামী শিক্ষা সার্কেলের সদস্য ছিলেন।
এরা আমেরিকান ইয়েমেনি ইসলামী নেতা আনওয়ার আল-আওলাকির মতাদর্শের অনুসারী।
বাংলাদেশে জাতীয় পার্টির নেতা জেনারেল হুসেই মুহাম্মদ এরশাদ বিবিসিকে বলেছেন, সরকারের মন্ত্রীসভা থেকে তার দলকে বের করে তিনি একে বিএনপির বিকল্প একটা শক্তি হিসেবে দাঁড় করাতে চান।
তবে মন্ত্রীসভা থেকে বেরিয়ে আসার প্রশ্নে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন।
সম্প্রতি ছোট ভাইকে দলের কো-চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগ করা এবং দলের মহাসচিবকে বহিষ্কার করে নতুন একজন মহাসচিব নিয়োগে তার সিদ্ধান্ত নিয়ে দলের ভেতর বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে।
স্ত্রী রওশন এরশাদের নেতৃত্ব জাতীয় পার্টির একটি অংশ জেনারেল এরশাদের এই সিদ্ধান্ত খোলাখুলি প্রত্যাখ্যান করেছেন। কিন্তু জেনারেল এরশাদ দাবি করছেন, দলে ভাঙ্গনের কোন সম্ভাবনা নেই।
বিবিসি বাংলার সাথে এক সাক্ষাৎকারে জেনারেল এরশাদ বলেন, “অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য বিএনপিকে মানুষ পছন্দ করে না। আমাদেরকেও মানুষ বলে, জাতীয় পার্টি সরকারে আছে। ফলে তারা লাঙ্গলে কেন, নৌকা মার্কাতেই ভোট দেব। ফলে আমরা জাতীয় পার্টি বিএনপির বিকল্প হিসেবে একটা সত্যিকার বিরোধীদল হিসেবে দাঁড়াতে চাই।”
তবে সরকারের মন্ত্রীসভা থেকে বেরিয়ে আসতে সময়ের প্রয়োজন বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
“আমাকে সম্মান দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ দূত করেছেন। ফলে ওনার সাথে আমার কথা বলতে হবে। উনি যদি রাজি হন, তাহলে আমি বেরিয়ে আসব। আর আমি বেরিয়ে আসলে তখন আমার দলের মন্ত্রীদেরও বেরিয়ে আসতে বলতে পারব। আশা করি, এটা হবে। তবে এখনই নয়, সময় লাগবে।”
২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনে অংশ নেয়া না নেয়ার প্রশ্নে তখন জেনারেল এরশাদ তার বক্তব্য বার বার পরিবর্তন করায় জাতীয় পার্টির বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে পড়ে।
সেই নির্বাচনে গঠিত সংসদে জাতীয় পার্টি বিরোধীদলের আসনে বসলেও দলটির তিনজন নেতা সরকারের মন্ত্রীসভায় রয়েছেন।
জেনারেল এরশাদ নিজেও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে রয়েছেন।
একই সাথে তিনি অনেকদিন ধরেই বলে আসছেন, তারা জোট সরকার থেকে বেরিয়ে আসবেন।
এখন আবার তিনি যখন সরকার থেকে বেরিয়ে আসার কথা বলছেন, তখনই তিনি তার দলের ভিতরে বিদ্রোহের মুখে পড়েছেন।
হঠাৎ করেই তিনি তার ভাই জিএম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেন।
এর পাল্টা হিসেবে তার স্ত্রী রওশন এরশাদের সমর্থকরা বৈঠক করে রওশন এরশাদকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন।
জেনারেল এরশাদ জিয়াউদ্দিন বাবলুকে বহিষ্কার করে রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব নিয়োগ করেন।
রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল জেনারেল এরশাদের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে।
এমনি পাল্টাপাল্টি তৎপরতায় দলটিতে ভাঙ্গনের কথা উঠছে।
তবে জেনারেল এরশাদ দাবি করেছেন, এবার তাদের দলে ভাঙ্গনের কোন সম্ভাবনা নেই।
তিনি বলেন, তার নিজের বয়স ৮৯ বছর এবং তার স্ত্রীর বয়স ৭৯।
ফলে তাদের দুজনের বয়স বিবেচনায় নিয়ে তিনি দলের হাল ধরার জন্য তার ভাই জিএম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যান করেছেন।
জেনারেল এরশাদ দাবি করেন, বিএনপির বিকল্প শক্তি হিসেবে দাঁড়ানোর লক্ষ্য থেকে জাতীয় পার্টিকে গোছানোর জন্য তিনি দলে এসব ব্যবস্থা নিয়েছেন।
৫ই জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের পর রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত হয়ে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার আসনে বসেন।
তার সমর্থক হিসেবে পরিচিত জিয়াউদ্দিন বাবলু হন জাতীয় পার্টির মহাসচিব।
ফলে দলে রওশন এরশাদের নিয়ন্ত্রণ বেড়েছে এবং জেনারেল এরশাদের নিয়ন্ত্রণ কমেছে, এমন একটা আলোচনা ছিল জাতীয় পার্টির ভিতরে।