বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০১৬

'শূকরের চামড়ায় মুড়ে শূকরের বিষ্ঠায় ফেলা হোক'

 

tathagataত্রিপুরার রাজ্যপালের বিতর্কিত সেই টুইট

“সন্ত্রাসীদের মৃতদেহগুলোকে শূকরের চামড়ায় মুড়ে উপুড় করে শূকরের বিষ্ঠার মধ্যে ফেলে দেওয়া হোক যাতে তাদের ভাগ্যে হুর না জোটে।"
পাঠানকোটের বিমানঘাঁটিতে হামলা নিয়ে এই বিতর্কিত টুইটটি করেছেন ভারতের ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায়।
এই সাংবিধানিক পদে যোগ দেওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী বিজেপি-র একজন শীর্ষ নেতা ছিলেন।
ত্রিপুরার রাজ্যপাল টুইট করে যা লিখেছেন তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বিবিসি-কে বলেছেন, ফিলিপিন্সে ১৯১০ সাল নাগাদ আর রাশিয়াতে চেচেন বিদ্রোহ দমন করতে এভাবেই শূকরের চামড়ায় বিদ্রোহীদের মৃতদেহ মুড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে, যাতে জঙ্গী এবং সশস্ত্র বিদ্রোহীদের মধ্যে মৃত্যুভয় তৈরি করা যায়।
গভর্নর রায় বলেন, "ওই উপায় যথেষ্ট কার্যকর হয়েছিল সেই সময়ে" – এমনই দাবী মি. রায়ের ।
তিনি বলেন, যারা ভারতে বারে বারে সশস্ত্র হামলা চালাচ্ছে, তাদের মধ্যেও মৃত্যু ভয় তৈরি করতে হবে, "আর শূকর বিষ্টার মধ্যে দেহ ফেলে দিলে যে হুর পাবে না তারা জন্নাতে গিয়ে, সেটাও মাথায় ঢুকিয়ে দিতে হবে।"
যে ধর্মের আশ্রয় নিচ্ছে ওই নরপশুরা, তাদের ধর্মীয় উপায় দিয়েই মৃত্যুভয় দেখানোর এর থেকে আর ভাল কোনও উপায় নেই – এই উপদেশটাই তিনি একজন সাংবিধানিক পদে আসীন ব্যক্তি হিসাবে দিতে চেয়েছেন বলেই বিবিসি-কে বলেন তথাগত রায়।
তথাগত রায়রাজ্যপাল হওয়ার আগে বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতা ছিলেন তথাগত রায়

কিন্তু মি. রায়ের এই টুইট নিয়ে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক।
পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম মুসলিম নেতা মৌলানা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলেন, “তথাগত রায় একজন মুসলমান বিদ্বেষী নাগরিক। কিন্তু একজন রাজ্যপালের কাছ থেকে ফুটপাতের মানুষে মতো কথা শোনাটা ভাল দেখায় না।‘
“যারা এই উগ্রতা করছে, তাদের সঙ্গে ইসলাম ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই – এটা সারা বিশ্ব জানে। তবুও ওই হামলার পরে শূকরের প্রসঙ্গ টেনে আনা হল – ভাবাবেগে আঘাত দেওয়া হল। তবে এসব করে হিন্দু মুসলমানের মধ্যে যে ভাব-ভালবাসা আছে, তা ভাঙ্গা যাবে না,” মন্তব্য মৌলানা চৌধুরীর।
ত্রিপুরার ক্ষমতাসীন দল সি পি আই এমের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক কমিটি পলিটবুরোর সদস্য মুহম্মদ সেলিম বলছিলেন, “তথাগত রায় শুধু যে আগে কট্টর হিন্দুত্ববাদী নেতা ছিলেন তা তো নয়। সাংবিধানিক পদে যোগ দেওয়ার পরেও তিনি আরএসএস কর্মীর মতোই কাজ করছেন – রাজভবনকেও সেভাবে ব্যবহার করছেন আর এরকম সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে লেখা টুইট করছেন তাঁর ব্যক্তিগত একাউন্ট থেকে।“
ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি বলছে, মি. রায় এখন আর তাদের দলে নেই, তাই ওই টুইট নিয়ে তারা কোনও মন্তব্য করবে না।
তবে দলের পশ্চিমবঙ্গ শাখার সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চ্যাটার্জী জানাচ্ছেন, “আপনার নিজের ভাই, ছেলে বা আত্মীয় যদি ওই হামলায় মারা যেত, তাহলে বোঝা যেত যে মুখ দিয়ে ভাল কথা কত বেরয়।“

ছয় জঙ্গী সামলাতে কেন চারদিন - ভারতে প্রশ্ন

 

pathankotImage copyrightAFP
পাকিস্তান সীমান্তের কাছে ভারতের পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে জঙ্গী হামলার ঘটনায় চিরুনি তল্লাসি অভিযান অবশেষে আজ (বুধবার) শেষ হয়েছে।
এই প্রাণঘাতী হামলায় মাত্র ছজন হামলাকারির বিরুদ্ধে প্রায় চার দিন ধরে চলা লড়াইতে যেভাবে সাতজন ভারতীয় সেনা সদস্যের মৃত্যু হয়েছে ও আরও ২২জন জখম হয়েছেন – বিশেষজ্ঞরা তার জন্য অদক্ষ নেতৃত্ব আর সমন্বয়ের অভাবকেই দায়ী করছেন।
ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিজেও স্বীকার করেছেন এখানে তাদেরও বেশ কিছু ঘাটতি ছিল – যদিও এই অভিযান মোটেই সহজ ছিল না বলে তিনি দাবি করেছেন।
কিন্তু মাত্র ছজন জঙ্গী মিলে কীভাবে ভারতের একটি সুরক্ষিত বিমানঘাঁটিকে এত লম্বা সময় ধরে অবরুদ্ধ করে রাখতে পারল, এই প্রশ্ন সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলছে।
পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে হামলা হতে পারে, ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের কাছে সে খবর পৌঁছেছিল ১লা জানুয়ারি সকালেই।
তার পরেও এই হামলার মোকাবিলায় ভারত যে চূড়ান্ত অপেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা প্রায় সবাই সে ব্যাপারে একমত।
স্ট্র্যাটেজিক অ্যানালিস্ট রাহুল বেদী বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "ভারতের জবাবকে একটা বিপর্যয়ই বলা যেতে পারে – কারণ অভিযানের কমান্ড ও কন্ট্রালে একাধিক সংস্থা জড়িত ছিল। প্রথমে দায়িত্বে ছিল সেনাবাহিনী, এরপর ন্যাশনাল সিকিওরিটি গার্ড এবং শেষে বিমানবাহিনী। এই ধরনের অভিযানে একটার বেশি কমান্ড সেন্টার কিছুতেই থাকতে পারে না – অথচ তিন-তিনটি সেন্টার মিলে এই বিপর্যয় ডেকে এনেছে!’
তার কথায়, "চীন ও রাশিয়ার পরে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম সেনাবাহিনী ভারতেরই, তাদের বিমানবাহিনীও বিশ্বে পঞ্চম বৃহত্তম। আধুনিক প্রযুক্তিও তাদের হাতে আছে, অথচ তার পরেও মাত্র ৩০০০ একর এলাকার, ২০ কিলোমিটারে ঘেরা একটা বিমানঘাঁটি রক্ষা করতে ছজনের বিরুদ্ধে যেভাবে তারা হিমশিম খেল, সেটা একেবারেই লজ্জাজনক।"
pathankotImage copyrightReuters
Image captionভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিক্কর
প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিক্কর নিজেও কিছু কিছু ফাঁকফোকর ছিল বলে স্বীকার করেছেন – তবে তিনি যুক্তি দিয়েছেন অভিযানটা যেমন সহজ বলে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে আসলে আদৌ ততটা সহজ ছিল না।
তিনি বলছেন, "ঘাঁটির ভেতর যে ধরনের জটিল সব স্থাপনা আছে, যেরকম গাছপালা আছে – আমি নিজে ঘুরে দেখেছি সেখান থেকে কারও পালানোটা ঠেকানো খুব কঠিন।"
"তা ছাড়া ওই এয়ারবেসে তখন বাইরের অন্তত ছটি দেশের ট্রেনি-রাও ছিলেন, তাদের নিরাপত্তার দিকটাও আমাদের ভাবতে হয়েছে। তবে হ্যাঁ, কিছু গাফিলতি আমারও নজরে এসেছে – সেগুলোর ব্যাপারে তদন্ত করা হবে", জানিয়েছেন তিনি।
দিল্লির নামী থিঙ্কট্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড কনফ্লিক্ট স্টাডিজের প্রধান সাবেক মেজর জেনারেল দীপঙ্কর ব্যানার্জি বলছেন সবার আগে তদন্ত হওয়া উচিত নির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্য মেলার পরও কেন তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে এত দেরি হল।
পাঠানকোট ঘাঁটিটা সেনা সদস্যদের হাতের তালুর মতো চেনা – তার পরেও বাইরে থেকে এনএসজি কমান্ডোদের উড়িয়ে এনে কেন অভিযানের দায়িত্ব দেওয়া হল, এই প্রশ্নটাও এর মধ্যেই উঠতে শুরু করেছে।
হামলাকারিদের সবাইকে হত্যা করা সম্ভব হলেও এই সব কারণেই কিন্তু ভারত পাঠানকোট অভিযানের সাফল্য নিয়ে একেবারেই গর্বিত হতে পারছে না।
বরং এই লড়াই শেষ হওয়ার মাত্র চব্বিশ ঘন্টার মাথায় উত্তরের চেয়ে অনেক বেশি প্রশ্নই এখন ভিড় করে আসছে।

 

কূটনীতিক প্রত্যাহারে পাকিস্তানের আলটিমেটাম

 

moushumi rahmanImage copyrightfacebook
Image captionমৌসুমি রহমানকে ইসলামাবাদ থেকে লিসবনে বাংলাদেশ দূতাবাসে নিয়োগ করা হয়েছে (ছবি - ফেসবুক প্রেফাইল)
ইসলামাবাদে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর (রাজনৈতিক) মৌসুমি রহমানকে বৃহস্পতিবার বিকেলের মধ্যে প্রত্যাহার করতে বলেছে পাকিস্তান।
ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক নির্ভরযোগ্য সূত্রকে উদ্ধৃত করে বিবিসি বাংলার কাদির কল্লোল জানিয়েছেন আজই (বুধবার) মৌসুমি রহমানকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।
তিনি পর্তুগালে বাংলাদেশ দূতাবাস যোগ দিতে যাচ্ছেন।
ইসলামাবাদে তার জায়গায় কাকে পাঠানো হবে, সে ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রটি বলছে জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে ঢাকায় পাকিস্তানী মহিলা এক কূটনীতিককে চলে যেতে বলার পর থেকে ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে পাল্টা পদক্ষেপের আশঙ্কা করা হচ্ছিল।
সে কারণে আগে থেকেই তাকে পর্তুগালের দূতাবাসে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
জানা গেছে, গতকাল (মঙ্গলবার) ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাই কমিশনার সোহরাব হোসেনকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে নিয়ে মৌখিকভাবে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মৌসুমি রহমানকে প্রত্যাহারের কথা বলা হয়।
কেন এই প্রত্যাহারের নির্দেশ তার কোন ব্যাখ্যা দেয়নি পাকিস্তান।
পাকিস্তান
Image captionফারিনা আরশাদের বিরুদ্ধে জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগ তোলায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল পাকিস্তান
তবে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রটি জানিয়েছে, তাদের কূটনীতিক ফারিনা আরশাদের বিরুদ্ধে জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগ তোলা নিয়ে পাকিস্তান খুবই নাখোশ ছিল। "একটা টিট-ফর-ট্যাট আসছে আমরা ধরেই নিয়েছিলাম।"
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে মুখ না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ঢাকার কূটনৈতিক সূত্র উল্লেখ করে সংবাদদাতা কাদির কল্লোল জানিয়েছেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক এক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক বর্তমানে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।

সৌদি-ইরান বিরোধে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্ততা

 

saudi iranImage copyrightAP
Image captionনিমর আল নিমরের শিরোচ্ছেদের প্রতিবাদে তেহরানে বিক্ষোভ অব্যাহত
সৌদি এক শিয়া ধর্মীয় নেতার শিরোচ্ছেদ নিয়ে সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যে সৃষ্ট কূটনৈতিক বিরোধ মেটানোর উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি গত কয়দিনে দুই দেশের সিনিয়র নেতাদের সাথে একাধিকবার টেলিফোনে কথা বলেছেন।
সৌদি রাজপরিবারের প্রভাবশালি কজন সদস্যের সাথেও মি কেরির কথা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র তাদেরকে বলার চেষ্টা করেছে এই বিরোধে যেন সিরিয়ার শান্তি প্রচেষ্টা ভেস্তে না যায়।
সৌদি শিয়া নেতা নিমর আর নিমরের শিরোচ্ছেদের পর বিক্ষুব্ধ লোকজন ইরানের দুটো শহরে সৌদি দূতাবাসে হামলা চালায়। প্রতিবাদে রোববার সৌদি আরব ইরানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।
পরে উপসাগরের কয়েকটি দেশ এবং সুদানও তেহরানের সাথে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেয়।
এর পর থেকেই থেকেই যুক্তরাষ্ট্র দু পক্ষকে শান্ত থাকার পরামর্শ দিচ্ছে।
saudi fmImage copyrightAFP
Image captionসৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদের আল জুবেইর। জন কেরি তার সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ রাখছেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জন কারবি জানিয়েছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রী জন কেরি টেলিফোনে কয়েক দফায় ইরান ও পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের সাথে কথা বলেছেন।
মি কারবি ইঙ্গিত দিয়েছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেরি দু পক্ষকে বার বার বলার চেষ্টা করছেন, সিরিয়ার সঙ্কট সমাধানের প্রচেষ্টা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। "ভিয়েনা প্রক্রিয়া (সিরিয়ার শান্তি আলোচনা) যেন কোনোভাবেই বন্ধ না হয় বা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটাই তার (জন কেরি) এজেন্ডার শীর্ষে।"
সৌদি আরব এবং তার কয়েকটি মিত্র দেশের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরান।
ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, সৌদি দূতাবাসে হামলায় সরকারের কোন ভূমিকা ছিলনা।
তবে একইসাথে তিনি বলেছেন, কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে, সৌদি আরব "একজন ধর্মীয় নেতাকে শিরোচ্ছেদ করার অপরাধ লুকোতে পারবে না।"

ক্রিকেটের বিস্ময় বালককে নিয়ে ব্রিটেনে বাজি

 

ladbrokeImage copyrightReuters
ক্রিকেটে এক ইনিংসে এক হাজারের বেশি রান তুলে বিশ্ব রেকর্ড করা ভারতীয় কিশোরকে নিয়ে ব্রিটেনে বাজি ধরা শুরু হয়েছে।
প্রনভ ধনাওয়াড়ে কি ভবিষ্যতে ভারতীয় টেস্ট দলে ঢুকতে পারবেন -- এই প্রশ্নে ১৬/১ রেটে বাজি ধরতে বলছে ব্রিটেনের শীর্ষ বেটিং প্রতিষ্ঠান ল্যাডব্রোক।
অর্থাৎ কেউ যদি কিশোর প্রণভের পক্ষে এক পাউন্ড বাজি ধরেন, বদলে ১৬ পাউন্ড পর্যন্ত জিততে পারেন।
মঙ্গলবার গড়া রনভ ধনাওয়াড়ের এই রেকর্ড হৈ চৈ ফেলে দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
অনেকেই মুম্বাইয়ের এক অটো রিক্সা চালকের ছেলেকে ভবিষ্যতের সচীন তেন্ডুলকার বলে আখ্যা দিতে শুরু করেছেন।
সচীন তেন্ডুলকার নিজে তাকে টুইটারে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, "তোমাকে আরও অনেক উচুঁতে উঠতে হবে"।
Image copyrightPranav Dhanawade
Image captionবিস্ময় বালক প্রনভ ধনাওয়াড়ে (ডানে)
মহেন্দ্র সিং ধোনি লিখেছেন, ধনাওয়াড়ের এই রান কোনও রসিকতার বিষয় নয়।
ব্রিটেনে বিবিসি টিভির মঙ্গলবারের প্রাইম টাইম খবরে ধনওয়ড়াদের ওপর দীর্ঘ রিপোর্ট প্রচার করা হয়েেছ। বুধবারের সমস্ত প্রথম সারির দৈনিকগুলোতে তার ইনিংসটি নিয়ে খবর প্রকাশ করা হয়েছ্
পনের বছর বয়সী প্রনভ ধনাওয়াড়ে মঙ্গলবার মুম্বাইর স্কুল ক্রিকেট টুর্ণামেন্টে ১ হাজার ৯ রান করে আগের বিশ্ব রেকর্ড ভেঙ্গেছেন ।
ক্রিকেটের কোন ইনিংসে এর আগে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি ছিল ১৮৯৯ সালে আর্থার কলিন্সের করা। তিনি করেছিলেন ৬২৮ রান।
মুম্বাই স্কুল ক্রিকেটে প্রণভ ধনাওয়াড়ে খেলেন কেসি গান্ধী স্কুলের হয়ে। মঙ্গলবার তাদের দল আরিয়া গুরুকুল স্কুলের বিপক্ষে ১ হাজার ৪৬৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে।ধনাওয়াড়ে একাই করেন ১ হাজার ৯ রান।
তার এই ইনিংসে ধনাওয়াড়ে ৫৯টি ছক্কা এবং ১২৭টি চার মেরেছেন।
মুম্বাই স্কুল ক্রিকেট ভারতের সবচেয়ে নামকরা স্কুল ক্রিকেট টুর্ণামেন্টগুলোর একটি।
ভারতের ক্রিকেট কিংবদন্তী সচীন তেন্ডুলকার থেকে শুরু করে বর্তমান ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মা- অনেকেই এই টুর্ণামেন্ট খেলেই তৈরি হয়েছেন।
ভারতের হিন্দুস্থান টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রনভ ধনাওয়াড়ে বলেন, “যখন খেলা শুরু করেছিলাম তখন ভাবিনি আমি এরকম একটা রেকর্ড করবো। রেকর্ড করার লক্ষ্য আমার ছিল না। আমি আমার সহজাত খেলাটা খেলেছি।”

রানা প্লাজা চলচ্চিত্র প্রদর্শনে আবারো নিষেধাজ্ঞা

 

Image captionরানা প্লাজা সিনেমার পোস্টার
বাংলাদেশে সাভারের রানা প্লাজা ভবন ধ্বসের ঘটনা ও আলোচিত পোশাক শ্রমিক রেশমা চরিত্রটিকে নিয়ে তৈরি সিনেমা ‘রানা প্লাজা’ প্রদর্শনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার।
সরকারের এক তথ্য বিবরণীতে বলা হয়েছে সেন্সর আপিল কমিটি কর্তৃক জনসম্মুখে প্রদর্শনের উপযোগী নয় বলে বিবেচিত হওয়ায় চলচ্চিত্রটি সেন্সর সনদ বিহীন ঘোষণা করা হয়েছে।
একই সাথে বলা হয়েছে এ চলচ্চিত্রটি দেশের কোথাও প্রদর্শিত হলে ছবি বাজেয়াপ্ত সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সরকারের তথ্য সচিব মরতুজা আহমেদ, যিনি একই সাথে সেন্সর বোর্ডের প্রধান, তিনি বলেছেন সিনেমাটিতে এমন অনেক কিছু আছে যা সংশ্লিষ্ট আইনের সাথে সাংঘর্ষিক।
এ সিনেমাটি ৪ঠা সেপ্টেম্বর মুক্তি পাবার কথা ছিল।
কিন্তু এর আগেই অগাস্ট এর শেষ দিকে এ চলচ্চিত্রটি প্রদর্শনে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত।
এর আগে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড দীর্ঘদিন ধরে ছাড়পত্র দেয়নি এবং এজন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পরিচালক।
আদালতের এক রায়ের প্রেক্ষাপটে তিনি সেন্সর ছাড়পত্র পেলেও আবারো একটি রিট আবেদনের প্রেক্ষাপটে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো আদালত।
পরে উচ্চ আদালত থেকে ছবিটি প্রদর্শনের অনুমতি পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন এর পরিচালক নজরুল ইসলাম খান।
কিন্তু ৫ই জানুয়ারি রাতে দেয়া এক তথ্য বিবরণীতে চলচ্চিত্রটি প্রদর্শনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানানো হয়।
ছবির পরিচালক নজরুল ইসলাম খান বিবিসিকে বলেছেন উচ্চ আদালতে নির্দেশ লঙ্ঘন করেই নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।
এ কারণে তারা এর বিরুদ্ধে আদালতেই যাবেন বলে জানান।

জামায়াত নেতা নিজামীর ফাঁসির আদেশ বহাল

 

Image copyrightAP
Image captionমতিউর রহমান নিজামীকে ২০১৪ সালের অক্টোবরে চারটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডে এবং আরও চারটি অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল- ফাইল ফটো
বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির আদেশ বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর নিজামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। তবে শেষ পর্যন্ত সেটি করা সম্ভব হয়েছে।
নিজামীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন আদালতে যেসব সাক্ষ্য প্রমাণ করা হয়েছে সেখানে পাকিস্তানী আর্মিকে মূল হোতা হিসেবে বর্ণণা করা হয়েছে। সেখানে মতিউর রহমান নিজামীকে সহযোগি হিসেবে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, "আমরা বলেছিলাম মূল অপরাধী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১৯৫জনকে ক্ষমা করে দেয়ার পর তো মতিউর রহামন নিজামীসহ সহযোগীদের মৃত্যুদণ্ড হতে পারেনা"।
মি. নিজামীকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে তার দল জামায়াতে ইসলামী।
দলটির ভারপ্রাপ্ত আমীর মকবুল আহমাদ ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান ই-মেইলে পাঠানো এক যুক্ত বিবৃতিতে হরতাল ঘোষণার কথা জানিয়েছেন।
হত্যা,গণহত্যার অভিযোগের পাশাপাশি বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতা মতিউর রহমান নিজামীকে ২০১৪ সালে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছিলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেছিলো যে তার বিরুদ্ধে আনা ১৬টি অভিযোগের মধ্যে আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
এর মধ্যে চারটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর চারটি অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছিলো।
তবে আপিল বিভাগ তিনটি অভিযোগে মি. নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে।
এর আগে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরেই আপিল করেছিলেন মি. নিজামী।
পরে আপিল বিভাগের এক শুনানিতে বয়স ও অসুস্থতা বিবেচনা করে তার সাজা কমানোর আবেদন করেন তার আইনজীবীরা।
Image captionবাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি বেঞ্চে গত মাসেই মি. নিজামীর আপিল আবেদনের শুনানি ও যুক্তি খণ্ডন শেষ হয়েছিলো।
আপিল শুনানিতে মি. নিজামীর আইনজীবীদের বক্তব্য ছিল যে রাষ্ট্রপক্ষ পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করতে পারেননি।
তাদের দাবি ছিল মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে এসে বুদ্ধিজীবী হত্যার সময় জামায়াত নেতা নিজামী জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংগঠন বা আল-বদর বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেননা।
তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেছিলেন বুদ্ধিজীবী হত্যার সময় মি. নিজামীর হাতেই ছিল আল-বদর বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ।
তাদের মূল বক্তব্য ছিল হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকা কিংবা উস্কানি দেয়া দুটো একই ধরনের অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে মি. নিজামীকে ২০১০ সালের ২৯শে জুন আটক করা হয়।
এর দু’বছর পর তার বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

নিজামীর রায়ের প্রতিবাদে জামায়াতের হরতাল

 

Image copyrightAP
Image captionমতিউর রহমান নিজামী
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির আদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বহাল রাখার পর কাল বৃহস্পতিবার হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলামি।
আপিল বিভাগের রায় ঘোষণার পরপরই ই-মেইলে পাঠানো এক যুক্ত বিবৃতিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত আমীর মকবুল আহমাদ ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি ডা. শফিকুর রহমান।
দলটির ঘোষণা অনুযায়ী কাল সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করবে তারা।
ওই বিবৃতিতে তারা দাবি করেন যে ‘মি. নিজামী ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন’।
পাশাপাশি দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে মি. নিজামী উচ্চ আদালতে রিভিউ আবেদন করবেন।
তারা বলেন, “ রিভিউ আবেদনে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হলে মাওলানা নিজামী অবশ্যই বেকসুর খালাস পাবেন বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি”।
Image copyrightfocus bangla
Image captionট্রাইব্যুনালে নিজামীর রায় ঘোষণার পর সহিংসতা হয়েছিলো দেশের বিভিন্ন স্থানে- ফাইল ফটো