সোমবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

মস্কোতে শিশুর কাটা মাথা হাতে এক নারী গ্রেফতার

Image copyrightRen TV
Image captionএই স্টেশনের কাছ থেকেই ওই নারীকে আটক করে পুলিশ
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে হাতে করে শিশুর কাটা মাথা বহন করে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ এক নারীকে গ্রেফতার করেছে।
ধারণা করা হচ্ছে ওই মহিলাটি শিশুটির একজন আয়া। পুলিশ সন্দেহ করছে যে সে ওই শিশুটিকে হত্যা করেছে।
পুলিশ বলছে, শিশুটির পিতামাতার বাড়িতে আগুন দেওয়ার পর ওই মহিলা পালিয়ে যাচ্ছিলো।
সিসিটিভিতে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হিজাব পরিহিত এই নারী শিশুর মাথাটি হাতে নিয়ে একটি মেট্রো স্টেশনের দিকে হেঁটে যাচ্ছে।
তখন একজন পুলিশ তাকে হাতেনাতে আটক করেছে।
ওই মহিলার মানসিক অবস্থা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। দেখা হচ্ছে তিনি যে কাজটি করেছেন সেটি তিনি কতোটা বুঝতে পারছিলেন।
ওই শিশুটির বয়স তিন থেকে চার বছর। শিশুটির পুড়ে যাওয়া ফ্ল্যাট থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ওই মহিলা মধ্য এশিয়ার কোনো দেশের নাগরিক।
Image copyright
Image captionরাশিয়ার মানচিত্রে রাজধানী মস্কো
পুলিশ ধারণা করছে, শিশুটির পিতামাতা ও বড় ভাই ফ্ল্যাট থেকে চলে যাওয়ার পর ওই মহিলা শিশুটিকে হত্যা করেছে। পরে ফ্ল্যাটে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
কিন্তু শিশুটিকে হত্যার কারণ সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায়নি।
রাশিয়ার কোনো কোনো সংবাদ মাধ্যমে বলা হচ্ছে, ওই নারী উজবেকিস্তানের।
আরেকটি সংবাদপত্রে বলা হয়েছে, পুলিশ যখন ওই নারীর পরিচয় জানতে চায় তখন তিনি একটি ব্যাগ থেকে শিশুটির কাটা মাথা একটি ব্যাগ থেকে বের করে নিজের শরীরে বেঁধে রাখা বোমার বিস্ফোরণের ঘটাবেন বলে হুমকি দিতে থাকেন।
কিন্তু গ্রেফতারের পর তার শরীরে কোনো বিস্ফোরক পাওয়া যায়নি।
একজন রুশ সাংবাদিক এই ঘটনাটি দেখেছেন। তিনি বলছেন, তিনি মেট্রো স্টেশনে যাওয়ার সময় ওই মহিলাকে দেখতে পান কারণ তিনি তখন ‘আল্লাহু আকবর’ বলে চিৎকার করছিলেন।
“আমি দেখতে পাচ্ছিলাম তার হাতে ধরা রক্তাক্ত একটি মাথা। কিন্তু আমি ভাবিনি এটা আসল,” বলেন তিনি।

হিমাচলে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে কংগ্রেসের আপত্তি

Image copyrightAFP
Image captionভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার একটি ম্যাচ, ফাইল ফটো
আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ধরমশালাতে যে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচটি হওয়ার কথা রয়েছে – তা হিমাচল প্রদেশ থেকেই সরিয়ে নেওয়ার দাবি তুলেছে রাজ্যে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস দল।
দলের নেতারা বলছেন, হিমাচল থেকে আসা ভারতীয় সেনাবাহিনীর বহু সদস্য পাকিস্তানি জঙ্গিদের হামলায় শহীদ হয়েছেন এবং সেখানে পাকিস্তান খেলতে আসলে তাদের অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া হবে।
এই যুক্তিতে হিমাচল রাজ্যের প্রাক্তন সৈনিকরা আগেই ধরমশালাতে ম্যাচ বাতিল করার দাবি তুলেছেন।
এখন রাজ্যের কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী নিজে এবং বিজেপিরও একাংশ সেই দাবিতে সামিল হয়েছেন।
শিবসেনার বাধায় মুম্বইসহ মহারাষ্ট্রের কোথাও পাকিস্তানের ম্যাচ আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না, এখন এই দাবি মানা হলে হিমাচলেও পাকিস্তানের খেলা বাতিল হয়ে যাবে।
বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, হিমাচলের কাংড়া জেলার প্রায় প্রত্যেকটি গ্রাম থেকেই অসংখ্য মানুষ সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে আসছে।
ওই কাংড়া জেলায় প্রাক্তন সৈনিকদের একটি সংগঠনের প্রেসিডেন্ট বিজয় সিং মানকোটিয়া বলেছেন, গত এক দেড় মাসেই পাঠানকোট বিমান ঘাঁটি ও কাশ্মীরে পাকিস্তানি জঙ্গিরা যেভাবে ভারতীয় সৈন্যদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদেরকে হত্যা করেছে তাতে এখনই এই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হতে পারে না।
Image copyrightAP
Image captionপাঠানকোটে 'পাকিস্তানি জঙ্গিদের' বিরুদ্ধে ভারতীয় সৈন্যদের অভিযান
তিনি বলেছেন, এসব হামলায় শুধু কাংড়া জেলা থেকেই ৭ থেকে ৮ জন সৈনিক শহীদ হয়েছেন।
তিনি বলছেন, “ফলে এই আঘাতটা এখনও টাটকা। ক্ষত এখনও শুকায়নি। তাই হিমাচলে এখনই ম্যাচের আয়োজন করাটা ঠিক হবে না।”
কংগ্রেস থেকে

রাষ্ট্রধর্ম: আটাশ বছর আগের রিটের শুনানি শুরু

Image copyrightweb
Image captionসুপ্রিম কোর্ট
বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে অন্তর্ভুক্তির বিধানের বিরুদ্ধে ২৮ বছর আগে যে রিট আবেদন করা হয়েছিল, এখন সেই আবেদনের ওপর হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়েছে।
পনেরো জন আবেদনকারী মধ্যে যে পাঁচজন বেঁচে আছেন তাদের একজন শিক্ষাবিদ আনিসুজ্জামান বলেছেন, অনেক দেরিতে হলেও তাদের আবেদন শুনানিতে এসেছে, সেজন্য তারা খুশি।
আইনজীবীরা বলেছেন, ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক।
এটিই রিট আবেদনের মূল বক্তব্য এবং এই ইস্যুটি এখনও বহাল থাকায় দীর্ঘদিন পর হলেও তা শুনানিতে এসেছে।
রিট আবেদনটি শুনানির জন্য উঠেছে হাইকোর্টের তিনজন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর বেঞ্চে।
এই রিট আবেদনটির শুনানির জন্যই এই বেঞ্চটি গঠন করা হয়েছে।
জেনারেল এরশাদের আমলে ১৯৮৮ সালে অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে এই পরিবর্তন আনা হয়েছিল।
তখন এর বিরুদ্ধে রিট আবেদনে আদালত কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করলেও শুনানি হয়নি।
পরে ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়ে পঞ্চদশ সংশোধনীতে অন্যান্য ধর্মের সমঅধিকারের কথা বলা হলেও ইসলামকেই রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে বহাল রাখা হয়।
সেই প্রেক্ষাপটে আগের রিট আবেদনকারীদের পক্ষ থেকে পঞ্চদশ সংশোধনীর ঐ বিধান চ্যালেঞ্জ করে সম্পূরক আবেদন করা হয়েছিল।
Image copyrightDaily Star
Image captionরিট আবেদনকারীদের একজন আনিসুজ্জামান
তখন আদালত আইনি পরামর্শের জন্য ১৪জন সিনিয়র আইনজীবীকে এমিকাস কিউরি নিয়োগ করলেও তাদের বক্তব্য শোনা হয়নি।
রিট আবেদনের পক্ষের একজন আইনজীবী জগলুল হায়দার বলেছেন,ইস্যুটি বহাল থাকায় অনেক বিলম্বে হলেও শুনানি শুরু হলো।
১৯৮৮সালে রিট আবেদন করেছিলেন লেখক সাহিত্যিক, সাবেক বিচারপতি, শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ পনেরো জন বিশিষ্ট নাগরিক।
তাদের মধ্যে সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, বিচারপতি দেবেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য,কবি সুফিয়া কামাল, ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদসহ দশজন মারা গেছেন।
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এবং বদরুদ্দীন উমরসহ যে পাঁচজন এখন বেঁচে রয়েছেন, তাদের মধ্যে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলছিলেন, বিষয়টা নিয়ে এগুনোর ক্ষেত্রে তারা একসময় দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়েছিলেন।
“আমাদের দিক থেকেও একটু গাফিলতি ছিল। এই বিষয়ে কতটা এগুনো যাবে তা নিয়ে আমাদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল। আমাদের আশা ছিল, রাষ্ট্রধর্ম প্রবর্তন সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থী বলে বিবেচিত হবে। এখন আমরা এর একটা ফয়সালা চাই।”
জেনারেল এরশাদ সরকারের পতনের পর বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ পালাক্রমে ক্ষমতায় থেকেছে কিন্তু কোন দলই বিষয়টাতে হাত দেয়নি।
এমনকি আওয়ামী লীগের সময় পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অনেক পরিবর্তন আনা হলেও ইসলামকেই রাষ্ট্রধর্ম রাখা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ দাবি করে, তাদের সময়ে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পাশাপাশি বাহাত্তরের সংবিধানের মূলনীতি ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
পঞ্চদশ সংশোধনীতে ইসলাম ধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম বহাল রাখার বিরুদ্ধে ২০১১ সালে দায়ের করা রিট আবেদনের মূল বক্তব্য ছিলো- এই বিষয়টি পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আনা বক্তব্যের সাথেও সাংঘর্ষিক।
এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, “সাংবিধানিক কোন বিষয়ে মামলা হলে তাতো ঝুলিয়ে রাখা যাবে না। আর আদালত যেহেতু আবেদনের ওপর কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছে। সেজন্য দেরিতে হলেও শুনানি হচ্ছে।”
বিষয়টিতে শুনানির পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭শে মার্চ।

যুদ্ধবিরতি: সিরিয়ার জন্যে ভালো সুযোগ?

Image copyrightReuters
Image captionযুদ্ধবিরতির সুযোগে ত্রাণ যাচ্ছে সিরিয়ায়
যুদ্ধবিরতির সুযোগে সিরিয়ায় ত্রাণ তৎপরতা বাড়িয়েছে জাতিসংঘ।
অবরুদ্ধ বেশ কয়েকটি শহরে খাবার, পানি এবং ওষুধ ভর্তি করে ত্রাণের ট্রাক নেওয়া হচ্ছে।
আগামী পাঁচদিনে দেড় লাখ লোকের কাছে ত্রাণ পৌঁছানোর টার্গেট করা হয়েছে।
সিরিয়ার বিভিন্ন শহর ও গ্রামে ১৫ লাখ মানুষ বহুদিন ধরে অবরুদ্ধ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। আগামী মাসে এরকম কিছু শহরে বিমান থেকে ত্রাণ ফেলার পরিকল্পনা নিয়েছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘ চাইছে যুদ্ধবিরতি বলবত থাকতে থাকতে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যেই অবরুদ্ধ হাজার হাজার মানুষের কাছে খাদ্য ও অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিতে।
জাতিসংঘ আশা করছে মার্চ মাসে তারা এই কর্মসূচি সম্প্রসারিত করে বিমান থেকেও সাহায্য ফেলতে পারবে।
দামেস্ক থেকে জাতিসংঘের সমন্বয়কারী ইয়াকুব এল হিলো বলেছেন ,লড়াইয়ের জন্য যেসব এলাকায় আগে যাওয়া যেতো না সেখানেও এখন ত্রাণ দেয়া সম্ভব হচ্ছে।
প্রতি মাসেই লক্ষ লক্ষ লোককে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে কিন্তু অবরুদ্ধ এলাকাগুলোতে পৌঁছানো খুব কঠিন ছিল।
Image captionযুদ্ধবিরতির মধ্যেই হামলা চলছে
সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতি এখনো মোটামুটি বহাল আছে, যদিও প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সরকার, এবং পশ্চিমা-সমর্থিত বিরোধী গোষ্ঠীগুলো - এই দু’দিক থেকেই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অনেকগুলো অভিযোগ তোলা হয়েছে।
এসব অভিযোগের মধ্যে আলেপ্পোতে বিমান হামলার কথাও বলা রয়েছে।
তবে সেই বিমান হামলার লক্ষ্য আল কায়েদার মিত্র আল নুসরা ফ্রন্ট ছিল কিনা তা স্পষ্ট নয়।
যদি তা হয়ে থাকে -তাহলে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ হয়েছে বলে ধরা যাবে না - কারণ আল নুসরা এবং ইসলামিক স্টেট এই যুদ্ধবিরতির আওতার বাইরে।
বিদ্রোহীদের একজন মুখপাত্র কোথাও কোথাও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের কথা বলেছেন তবে স্বীকার করছেন অবস্থা আগের চাইতে অনেক ভালো।
মস্কো থেকেও কিছু ঘটনা নিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে তবে সার্বিকভাবে যুদ্ধবিরতি পালিত হচ্ছে বলেই বলা হচ্ছে ।
জাতিসংঘের সমন্বয়কারী বলছেন, গত পাঁচ বছরের মধ্যে সিরিয়ার জনগণের জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতার এটাই সবচেয়ে ভালো সুযোগ।
মোটের ওপর যুদ্ধবিরতি গত দু’দিন ধরে টিকে আছে এটাও অনেকে আশা করেন নি, কিন্তু পুরো দু’সপ্তাহ এটা টিকবে কিনা এ নিয়ে অনেকের মনেই গভীর সংশয় রয়েছে।