বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

বাংলাদেশ সরকারের দমননীতি জঙ্গীবাদের বিস্তার ঘটতে পারে

Image copyrightGetty
Image captionজেমস ক্ল্যাপার: বিরোধীদের দমন জঙ্গীবাদের বিস্তার ঘটাবে
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করছেন তাতে করে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা বিস্তৃত হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধান।
বিশ্ব জুড়ে নিরাপত্তা ঝুঁকি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের সেনেটে ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্সের পরিচালক জেমস ক্ল্যাপার যে লিখিত বিবৃতি দিয়েছেন, তাতে তিনি তাঁর এই আশংকার কথা উল্লেখ করেছেন।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশি নাগরিকদের হত্যা এবং তাদের ওপর আরও যেসব হামলা হয়েছে, সরকার সেগুলোকে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর কাজ বলে দাবি করছিল। কিন্তু জেমস ক্ল্যাপার তার বিবৃতিতে এই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
জেমস ক্ল্যাপার বলেছেন, বাংলঅদেশে অন্তত ১১টি বড় ধরণের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট। বিদেশি নাগরিক এবং সংখ্যালঘুদের টার্গেট করে এসব হামলা চালানো হয়।
এছাড়া ‘আনসারউল্লাহ বাংলা টিম’ এবং ‘আল কায়েদা ইন ইন্ডিয়ান সাব কন্টিনেন্ট’ নামের দুটি সংগঠন আরও এগারো জন লেখক ও ব্লগারকে হত্যা করেছে বলে দাবি করে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সম্পর্কে এধরণের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম।
বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, মার্কিন ইনটেলিজেন্স প্রধান হোন আর যেই হোন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এ ধরণের বক্তব্য সৌজন্যমূলক নয়।
তিনি মার্কিন গোয়েন্দা প্রধানের বক্তব্যকে বানোয়াট বলে মন্তব্য করেন।
এইচ টি ইমাম বলেন, "বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কোনভাবেই বিরোধীদের দমন করছেন না। যদি করতেন তাহলে বিএনপি বা এখানে অন্য যেসব বিরোধী দল আছে তারা প্রকাশ্যে সভা-সমাবেশ করতে পারতেন না। নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করতে পারতেন না।"
যুক্তরাষ্ট্রের এই মন্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করে এইচ টি ইমাম বলেন, "আমার কাছে অবাক লাগছে এজন্যে, যে তারা আমাদের সঙ্গে কথা না বলে অপরপক্ষ যা বললেন তাদের কথাটাই তুলে ধরলেন। এই পক্ষপাতিত্ব আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আশা করি না।"
এদিকে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া বার্নিক্যাট গোয়েন্দা প্রধান জেমস ক্ল্যাপারের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সেনেটের আর্মড সার্ভিসেস কমিটির অনুরোধে তিনি বিশ্বজুড়ে নিরাপত্তা হুমকির বিষয়ে একটি পর্যালোচনা তুলে ধরেছেন। এটি পরামর্শমূলক এবং বিশ্লেষণধর্মী একটি বক্তব্য। বাংলাদেেশে যা ঘটেছে এবং সরকারী কর্মকর্তারা যেসব মতামত তুলে ধরেছেন এবং গণমাধ্যমে যা প্রচারিত হয়েছে সেসবের ভিত্তিতে তিনি এই বক্তব্য রেখেছেন।
রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া বার্নিক্যাট আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে যে 'জিরো টলারেন্সের' নীতি নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র তা জোরালোভাবে সমর্থন করে।
রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া বার্নিক্যাট আরও বলেছেন, যেসব গোষ্ঠী বাংলাদেশকে টার্গেট করেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং অন্যান্য মহাদেশের দেশকেও টার্গেট করছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, এর সহনশীলতা এবং শান্তিপূর্ণভাবে ধর্ম পালনের যে ঐতিহ্য তা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একটা শক্ত রক্ষাকবচ।
বাংলাদেশের সম্প্রতি যেসব শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক অভিব্যক্তির প্রকাশ দেখা গেছে, রাষ্ট্রদূত তারও প্রশংসা করেন।

বাংলাদেশে মৃত শিশুকে জীবিত দেখিয়ে ফি আদায় করায় হাসপাতালের জরিমানা


Image copyrightRAB
Image captionমৃত শিশুকে জীবিত দেখিয়ে ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালটির বিরুদ্ধে
রোগী মারা যাওয়ার পরও জীবিত দেখিয়ে চিকিৎসার নামে মোটা অংকের ফি আদায় করার অভিযোগ প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধে মাঝে মধ্যেই শোনা যায়।
এরকম এক ঘটনা হাতে-নাতে ধরা পড়ার পর ঢাকার একটি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ এবং চিকিৎসকের মোটা অংকের জরিমানা করেছে র‍্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত।
ঢাকার ঝিগাতলা এলাকার জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ মেডিক্যাল সার্ভিসেস হাসপাতালে র‍্যাব বুধবার এক অভিযান চালায়।
এই অভিযানের সময় দেখা যায় এক বছর চার মাস বয়সী একটি শিশুকে আইসিইউ-তে রেখে চিকিৎসার নামে পরিবারের কাছ থেকে ফি নেয়া হচ্ছে। অথচ শিশুটি মঙ্গলবার ৯ই ফেব্রুয়ারি মারা যায়।
ভ্রাম্যমান আদালত এই হাসপাতালে আরও অনেক অনিয়ম দেখতে পায় বলে র‍্যাবের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, এই হাসপাতালে অনভিজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে শিশুরোগের চিকিৎসা করা হয়। এছাড়া এখানে কোন বায়োকেমিস্ট নেই, মেডিক্যাল টেকনোলজিষ্টদের কোন সনদপত্র নেই, পর্যাপ্ত ডাক্তার-নার্স নেই।
এরকম নানা অভিযোগে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ এবং ডাক্তার কর্মচারীদের বিভিন্ন অংকের জরিমানা করে ভ্রাম্যমান আদালত।
এ বিষয়ে জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ মেডিক্যাল সার্ভিসেস হাসপাতালের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।