শুক্রবার, ১ জানুয়ারী, ২০১৬

জার্মানিতে ৭০ বছর পর বাজারে আসছে হিটলারের বই

 

mein kampfImage copyrightAFP
Image captionহিটলারের বইয়ের একটি পুরোনো সংস্করণের প্রচ্ছদ
নাৎসী নেতা এডলফ হিটলারের ইহুদিবিরোধী ম্যানিফেস্টো 'মাইন কাম্পফ' ৭০ বছর পর আবার জার্মানির বাজারে কিনতে পাওয়া যাবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানিতে এই বইয়ের পুনর্মুদ্রণ নিষিদ্ধ ছিল।
তবে নতুন যে সংস্করণটি বাজারে পাওয়া যাবে সেটিতে মূল পাঠের সাথে সাথে সমালোচনামূলক টীকা-ভাষ্য যুক্ত থাকবে - যার উদ্দেশ্য হলো, বইটি যে বাজেভাবে লেখা এবং এর বক্তব্য যে অসংলগ্ন - তা তুলে ধরা।
অনেকে মনে করেন 'মাইন কাম্পফ' - যার আক্ষরিক অর্থ 'আমার সংগ্রাম' - একটি 'শক্তিশালী' গ্রন্থ এবং এর বক্তব্য পাঠককে 'মোহিত' করে ফেলে। কিন্তু এ ধারণা যে সত্যি নয় - তা তুলে ধরাই এ নতুন সংস্করণের উদ্দেশ্য।
hitlers_mein_kampfImage copyrightAFP Getty
ইহুদি সংগঠনগুলোও এই নতুন সংস্করণ প্রকাশকে স্বাগত জানিয়েছে, এবং তারা বলছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ইহুদি নিধনযজ্ঞ কেন ঘটেছিল - তা ব্যাখ্যা করতে এটা সহায়ক হবে।
মনে করা হচ্ছে এখন পৃথিবীর অনেক দেশেই বইটির নতুন সংস্করণ প্রকাশিত হবে।
মাইন কাম্পফ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯২৫ সালে - হিটলার জার্মানির ক্ষমতায় আসার আট বছর আগে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্য দিয়ে নাৎসী জার্মানির পতন হয় ১৯৪৫ সালে, এবং হিটলার পরাজয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে তার বাংকারে আত্মহত্যা করেন।
hitlers_mein_kampfImage copyrightPA
এর পর বইটির কপিরাইটের মালিক হয় জার্মানীর দক্ষিণাঞ্চলীয় ব্যাভারিয়ার আঞ্চলিক সরকার। তারা বইটি ঘৃণা ছড়াতে পারে এ আশংকায় এর পুনর্মুদ্রণ নিষিদ্ধ করে। তবে যুদ্ধের সময় বইটি এত ছাপা হয়েছিল যে তার কপি সারা দুনিয়াতেই সহজপ্রাপ্য।
জার্মান আইন অনুযায়ী কপিরাইটের মেয়াদ হচ্ছে ৭০ বছর এবং তা পার হয়ে যাওয়ায় এর পুনর্মুদ্রণে আর বাধা নেই।
অবশ্য জার্মান কর্মকর্তারা বলছেন, তারা এ বইয়ের মূল পাঠ সবাই যেন হাতে না পায়, তার জন্য কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করবেন - কারণ এমন ভয় আছে যে বইটি নব্যনাৎসী মনোভাব উস্কে দিতে পারে।

'রাষ্ট্রপতির ভূমিকায় পরিবর্তন আনার ক্ষমতা শুধু সংসদের'

 

Image captionবাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মনে করেন শপথ নেবার পর থেকে গত প্রায় তিন বছরে তিনি পরিপূর্ণভাবে তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করেছেন।
বঙ্গভবনে বিবিসি বাংলার সাথে এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, সংবিধানে যা আছে তার ভেতরে থেকেই রাষ্ট্রপতিকে দায়িত্ব পালন করতে হয়।
বাংলাদেশে অতীতে রাজনৈতিক কোন সংকটের সময় সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ বা অন্য অনেকেই বলেছেন যে এসব সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির একটা ভূমিকা থাকা দরকার।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, রাষ্ট্রপতির ভূমিকা বিষয়ে যদি কিছু যোগ করতে হয় তাহলে সংসদকেই সে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বর্তমানে এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির পক্ষে আসলে কতটা ভূমিকা রাখা সম্ভব?
সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, সংবিধানেই বলা আছে যে রাষ্ট্রপতি কতটা করতে পারেন, কি হবে তার ভুমিকা।
"সংবিধানে যদি কিছু যোগ করতে হয়, তাহলে সকল দলমত নির্বিশেষে সবার সাথে আলোচনার ভিত্তিতে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা যেভাবে সংবিধানকে দাঁড় করাবে, সে মোতাবেকই রাষ্ট্রপতিকে চলতে হবে" - বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, সংবিধান সংশোধন করতে হলে শুধু রাজনৈতিক দল নয়, সংসদ সদস্যদের দু-তৃতীয়াংশের সম্মতি লাগবে।
তিনি আরো বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া সহ অন্যান্য দল ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দের সাথে তার আলোচনা হয়েছে। তাদের বক্তব্য পরে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনার সময় তাকে জানিয়েছেন।
"অর্থাৎ সাংবিধানিকভাবে যেটুকু দায়িত্ব পালন করা সেখানে আমি কৃপণতা করি নি, আমি বলবো যে সততার সাথেই তা পালন করেছি" - বলেন রাষ্ট্রপতি।

তেল আবিবের পানশালায় বন্দুকধারীর গুলি: নিহত ২

 

tel aviv shootingImage copyrightReuters
Image captionঘটনাস্থলে ইসরায়েলি পুলিশের ছোটাছুটি
ইসরায়েলের তেল আবিব শহরের কেন্দ্রস্থলে এক জনাকীর্ণ পানশালায় এক বন্দুকধারীর গুলিবর্ষণে অন্তত দু'জন নিহত এবং আরো সাত জন আহত হয়েছে।
পুলিশ বলছে, গুলিবর্ষণকারী পালিয়ে গেছে। জানা গেছে, আক্রমণকারী ছিল একজন যুবক এবং তার হাতে একটি এ্যাসল্ট রাইফেল ছিল।
এই হত্যাকান্ডের পেছনে কি উদ্দেশ্য কাজ করেছে তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে গত কয়েক মাসে ইসরায়েলিদের ওপর অনেকগুলো ফিলিস্তিনি আক্রমণ ঘটেছে।
এবার নতুন বছর শুরুর আগে আগে নিরাপত্তা জোরদার করা হলেও সুনির্দিষ্ট কোন আক্রমণের হুমকি ছিল না, বলছে পুলিশ।
তবে তেল আবিবের মেয়র রন হুলদাইকে উদ্ধৃত করে জেরুসালেম পোস্ট পত্রিকা জানাচ্ছে, এটি হয়ত জাতীয়তাবাদ-প্রসূত একটি সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের ঘটনা।
বন্দুকধারীর সন্ধানে এখন ব্যাপক অভিযান শুরু হয়েছে। পুলিশ একাধিক ভবনে তল্লাশি চালিয়েছে। বেশ কিছু রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
তেল আবিবের ডিজেংঅফ স্ট্রিট নামে একটি রাস্তার ওপর অবস্থিত বারটিতে আসা লোকজনের ওপর আক্রমণকারী স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র থেকে গুলিবর্ষণ করে। আহতদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর।
গত ২৩শে ডিসেম্বর পর্যন্ত ফিলিস্তিনিদের ছুরি ও বন্দুক নিয়ে চালানো আক্রমণে ২১ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। আর ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে ১৩১ জন - যাদের বেশিরভাগই আক্রমণ চালাতে গিয়ে বা ইসরাইলি বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে নিহত হয়।

বাংলাদেশে জরায়ুর ক্যান্সার হচ্ছে বছরে ১২ হাজার নারীর

 

cervical cancer
Image captionজরায়ুর ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ
বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১২ হাজার নারী জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে বলে একটি পরিসংখ্যানে বলা হচ্ছে।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাল্যবিবাহ, কম বয়েসে বা ঘন ঘন সন্তান হওয়া, ব্যক্তিগত অপরিচ্ছন্নতা এসবই এর প্রধান কারণ - যা সচেতন হলে অনেকাংশেই প্রতিরোধ করা সম্ভব।
আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে নারীদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের পরেই এই জরায়ুর ক্যান্সারের স্থান।
একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আজ থেকে জরায়ু ক্যান্সার নিয়ে একটি সচেতনতা কার্যক্রম শুরু করেছে। জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন এই উদ্যোগের সাথে জড়িত আছেন।
ডা: রাসকিন বিবিসি বাংলাকে বলেন, বাল্য বিবাহ, অল্প বযেসে সন্তান হওয়া, ঘন ঘন সন্তান হওয়া, ব্যক্তিগত অপরিচ্ছন্নতা - এসবই জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার প্রধান কারণ। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নারীদের মধ্যে এর প্রকোপ বেশি দেখা যায়।
সচেতনতা থাকলেই এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব, বলেন তিনি। তা ছাড়া এই রোগটি আগ্রাসী পর্যায়ে পৌছাতে ২০-২৫ বছর সময় লাগে - ফলে একটি সাধারণ পরীক্ষার মাধ্যমেই এটা ধরা পড়া সম্ভব।
প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে অনেক ক্ষেত্রেই চিকিৎসার মাধ্যমে এর নিরাময় করা যাবে, বলছিলেন ডা. রাসকিন।
তিনি বলেন, এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে জরায়ু কেটে বাদ না দিয়েও এর চিকিৎসা সম্ভব।
ডা. রাসকিন বলছিলেন, সচেতনতা সৃষ্টির জন্য তারা শহর ও গ্রামে প্রচুর পরিমাণ পোস্টার ও লিফলেট বিলি করছেন, র‍্যালি করছেন। এর মাধ্যমে জরায়ুর ক্যান্সারের ঝুঁকি এবং কারণগুলো বাংলাদেশের মানুষের কাছে তুলে ধরা হবে।

রাজনৈতিক সহিংসতায় গত বছর নিহত দেড় শতাধিক

  

bangladesh_bus_petrol_bombImage copyright AP

Image caption পেট্রোল বোমায় পুড়ে যাওয়া বাস

বাংলাদেশে একটি শীর্ষ স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন বলছে, গত বছর রাজনৈতিক সহিংসতায় দেড়শ’র বেশি লোক নিহত এবং প্রায় ছয় হাজার মানুষ আহত হয়েছে।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র আজ প্রকাশিত তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলেছে, এসব ঘটনায় উদ্বেগজনক পরিস্থিতি ছিল, কিন্তু একটি ঘটনাও বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি।
সংগঠনটি বলেছে, ঘটনাগুলোকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের দিকেই বেশি নজর থাকায় মামলা হলেও তা এগোয় না। তবে সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গত বছরের প্রথম তিন মাস বাংলাদেশে ছিল রাজনৈতিকভাবে সহিংস পরিবেশ। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট লাগাতার অবরোধ হরতাল কর্মসূচি নিয়েছিল।

bangla_violenceImage copyright focus bangla

সে সময় সারাদেশে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ এবং পেট্রোলবোমা হামলায় বহু ঘটনা ঘটে। হাসপাতাল অভিমুখে ছিল অগ্নিদগ্ধ মানুষের স্রোত।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র বলেছে, গত বছর রাজনৈতিক সহিংসতায় ১৫১ জন নিহত এবং ছয় হাজারের মতো মানুষ যে আহত হয়েছে। এর বেশিরভাগ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে প্রথম তিন মাসের রাজনৈতিক সহিংসতায়।
কেন্দ্রটির নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল বলেছেন, বছরের পরের অংশে দলগুলোর অভ্যন্তরীণ কোন্দলসহ বিভিন্ন কারণে সহিংস ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের প্রথম তিন মাসের রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনাগুলোকে নিয়ে দু'শতাধিক মামলা হয়েছে। আর সারা বছরে মামলা হয়েছে চারশ’র মতো।

bangla_violenceImage copyright AFP

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মতে, এ ধরণের মামলার প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হবে।
এসব মামলায় অজ্ঞাতনামা হিসেবে হাজার হাজার অভিযুক্ত করা হয়েছে। ফলে অভিযুক্তের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যাবে।
সুলতানা কামাল বলেছেন, ঘটনাগুলো নিয়ে সরকার এবং বিরোধী - দু’পক্ষ থেকেই অনেক রাজনীতি হয়েছে।
কিন্তু একটি মামলাও বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি।

bangla_petrol_bomb_violence_

পুলিশের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, গত বছরের রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ে মামলাগুলোর ৭০টির মতো মামলার চার্জশীট দেয়া হয়েছে।অন্যগুলোর তদন্ত শেষ পর্যায়ে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, সরকার এসব মামলা নিয়ে কোন রাজনীতি করছে না।
বিবিসিকে তিনি বলেন, "কিছু মামলায় চার্জশিট হয়ে গেছে। অন্যগুলোর তদন্ত চলছে। এগুলো দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
তবে এসব তদন্ত রাজনৈতিক প্রভাবের বাইরে সঠিকভাবে হবে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।