শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৫

নৌবাহিনীর মসজিদে বিস্ফোরণে ৫/৬ জন সামান্য আহত: আইএসপিআর

 
                               
 
বাংলাদেশের বন্দর নগরী চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর একটি মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় সামরিক বাহিনীর মুখপত্র আইএসপিআর থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নৌবাহিনীর ঘাঁটি ঈশা খা মসজিদে শুক্রবার দুপুরে জুম্মার নামাজের পর দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে।
এতে ৫/৬ জন সামান্য আহত হয়।
তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়েও দেওয়া হয়েছে।
আন্ত-বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে ওই মসজিদে বা‌ইরে থেকেও মুসল্লিরা নামাজ পড়তে আসেন।
আইএসপিআর বলছে, এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে অবিস্ফোরিত আরও কয়েকটি বিস্ফোরকসহ একজনকে আটক করা হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্ত চলছে।

রুশ যুদ্ধবিমানের ব্ল্যাক বক্স 'ক্ষতিগ্রস্ত' হয়েছে

 
                               
তুরস্কের সামরিক বাহিনী যে রুশ যুদ্ধবিমানটিকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে রাশিয়ার তদন্তকারী কর্মকর্তারা সেই বিমানের ব্ল্যাক বক্সটি আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দিয়েছে।
গতমাসে সিরিয়ার সীমান্তের কাছে রুশ জঙ্গি বিমানটিকে গুলি করে মাটিতে নামিয়ে আনা হয়।
ফ্লাইট রেকর্ডারটি খুলে দেওয়া হয় সাংবাদিক ও কূটনীতিকদের সামনে এবং টেলিভিশনে তা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
রুশ কর্মকর্তারা বলছেন, রেকর্ডারের মেমোরি কার্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই দলের প্রধান বলছেন, রেকর্ডারের ফ্লাইট ইনফরমেশন হারিয়ে গেছে বলেই মনে হচ্ছে।
এই রেকর্ডারে পাওয়া তথ্য এখন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখবেন বিশেষজ্ঞের একটি দল।
এই দলে ব্রিটেন ও চীনের বিশেষজ্ঞরাও রয়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, ফ্লাইট রেকর্ডারের তথ্য থেকে অনেক প্রশ্নের সমাধান পাওয়া যেতে পারে।
রুশ জঙ্গি বিমান ভূপাতিত করায় মস্কোর পক্ষ থেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছিলো।
জবাবে তুরস্কের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছিলো রাশিয়া।
তুরস্ক বলে আসছে, তাদের আকাশ সীমা লঙ্ঘন করায় তাকে বিমানটি গুলি করেছিলো।
তুরস্ক বলছে, বার বার সতর্ক করা সত্ত্বেও রুশ বিমানটি তাদের সীমানায় ঢুকে পড়ে।
তুরস্কের এই বক্তব্য রাশিয়া শুরু থেকেই অস্বীকার করে আসছে।

ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে দিল্লির ধর্ষণকারী কিশোর

 
   
 
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে মেডিকেলের এক ছাত্রীকে চলন্ত গাড়িতে গণ-ধর্ষণ ও পরে হত্যা করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত এক কিশোরের মুক্তি আটকে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে দিল্লির হাই কোর্ট।
ফলে তার মুক্তি আটকে দেওয়ার বিষয়ে আইনি চ্যালেঞ্জও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হলো।
সাজাপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তির আগামী রোববার ছাড়া পাওয়ার কথা রয়েছে।
ধর্ষণের সময় তার বয়স ছিলো ১৮ বছরের নিচে এবং ভারতের আইন অনুসারে ওই অপরাধের জন্যে তার সাজা খাটা হয়ে গেছে।
ভারতীয় আইনে কিশোর অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা হচ্ছে তিন বছরের জেল।
নির্ভয়া নামের ওই ছাত্রীকে ২০১২ সালে গণ-ধর্ষণের ঘটনা সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিলো।
তাকে যাতে মুক্তি দেওয়া না হয় সেজন্যে নির্ভয়ার পিতামাতা দু’জনেই আবেদন জানিয়েছিলেন।
তারপর ভারতে এনিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।
নির্ভয়ার পিতামাতা ও রাজনীতিকদের অনেকেই তার এই সাজা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।
তাদের কথা হচ্ছে, এই ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়া হলে সমাজের জন্যে সে বড়ো ধরনের ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠতে পারে।
কিন্তু শুক্রবার হাইকোর্ট বলছে, তাকে আর কিশোর সংশোধনাগারে রেখে দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ তিন বছরের সাজা সে ইতোমধ্যেই খেটে ফেলেছে।
এই অপরাধের আরো তিনজনকে আদালত মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।

চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর মসজিদে গ্রেনেড হামলা: আহত ৬

 
                               
বাংলাদেশে পুলিশ বলছে, চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর একটি মসজিদে গ্রেনেড হামলায় অন্তত ছ’জন আহত হয়েছে। তাদের একজনের অবস্থা গুরুতর।
পতেঙ্গায় ঈশা খা ঘাঁটিতে আজ শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় এই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
চট্টগ্রাম থেকে পুলিশের একজন কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ হাজারী বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, নামাজ শুরু হওয়ার পর প্রথম রাকাতেই এই হামলা চালানো হয়।
“সুরা ফাতিহা পড়ার পরই দুটো গ্রেনেড ছুঁড়ে এই হামলা চালানো হয়েছে,” বলেনি তিনি।
সেখান থেকে অবিস্ফোরিত তিনটি গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ বলছে, হামলার সময় মসজিদে দুশো জনের মতো মুসল্লি নামাজ পড়ছিল বলে তারা জানতে পেরেছেন।
এই ঘটনায় মিজান নামে নৌবাহিনীর একজন ব্যাটম্যানকে আটক করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
পুলিশ বলছে, তৃতীয় গ্রেনেডটি ছোড়ার সময় স্থানীয় মুসল্লিরাই তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।
বাংলাদেশে সামরিক বাহিনীর ওপর এধরনের হামলার ঘটনা খুবই বিরল।
হারুনুর রশিদ হাজারী বলেন, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা এবং পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তোলার জন্যেই এই হামলা চালানো হয়েছে বলে তারা ধারণা করছেন।
মসজিদটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের বিশেষ বাহিনী র‍্যাব ওই এলাকাটি ঘিরে রেখেছে। সেখানে আলামত সংগ্রহের কাজ চলছে।
পুলিশ বলছে, আটক ওই ব্যক্তি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারের ভুয়া সার্টিফিকেট দেখিয়ে নৌবাহিনীতে চাকরি নিয়েছিলেন।
যে মসজিদটিতে হামলা চালানো হয়েছে সেটি অত্যন্ত সংরক্ষিত একটি এলাকায়। সাধারণ লোকজনের সেখানে প্রবেশাধিকার নেই।
সাধারণত কলোনির লোকেরাই সেখানে নামাজ পড়তে যান।
আহতদেরকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আর যিনি গুরুতর আহত হয়েছেন তাকে হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রামের সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

সেইন্ট হতে চলেছেন মাদার টেরিজা

 
    পোপ                 ক্যাথলিক খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু পোপ ফ্রান্সিস - ফাইল ছবি                
ভ্যাটিকান জানিয়েছে যে মাদার টেরিজার সেইন্টহুড পাওয়ার পথে শেষ বাধাটিও অতিক্রান্ত হয়েছে।
আজ সকালে ভ্যাটিকান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কলকাতার মাদার হাউসে এই খবর জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মাদার টেরিজা প্রতিষ্ঠিত মিশনারিজ অফ চ্যারিটির পক্ষে সিস্টার ক্রিস্টি বিবিসি বাংলাকে এই খবর নিশ্চিত করেছেন।
ভ্যাটিকান জানিয়েছে যে সেইন্টহুড পাওয়ার জন্য যে দ্বিতীয় আশ্চর্যজনক ঘটনাটির দরকার ছিল, তা এখন সত্য বলে তারা প্রমান পেয়েছে।
টেরিজাক্যাথলিক নান মাদার টেরিজা কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মিশনারিজ অব চ্যারিটি। তাঁর কাজের জন্য তিনি নোবেল পুরষ্কার পান ১৯৭৯ সালে - ফাইল ছবি                
ব্রাজিলের এক ব্যক্তি, যাঁর মাথায় একাধিক টিউমার হয়েছিল, তিনি আশ্চর্যজনকভাবে সেরে উঠেছেন – আর তাঁর এই সেরে ওঠাকে মাদার টেরিজার আশীর্বাদ বলেই নিশ্চিত হয়েছে ভ্যাটিকান।
তিন দিন আগে বিশেষজ্ঞদের একটি দল – কজেস অফ দা সেইন্টস – এর বৈঠক বসে ভ্যাটিকান – এ।
তাঁরাই ওই অতি আশ্চর্য ঘটনাটিকে বিশ্লেষণ করার পরে পোপ ফ্রান্সিসের কাছে জানান যে মাদার টেরিজাকে সেইন্টহুড দেওয়া যেতে পারে।
এর আগে ২০০২ সালে ভ্যাটিকান মেনে নিয়েছিল যে মাদার টেরিজার আশীর্বাদের ফলে ১৯৯৮ সালে মনিকা বেসরা নামের এক নারীর পেটের ক্যান্সার সেরে গেছে।
ব্যাসিলিকা                 ভ্যাটিকানের সেইন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকা, ক্যাথলিক খ্রীস্টানদের ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের মূলকেন্দ্র - ফাইল ছবি                
সেইন্টহুড পেতে গেলে অন্তত দুটি আশ্চর্যজনক ঘটনার প্রমাণ পেতে হয়।
মাদার টেরিজার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সুনীতা কুমার বিবিসি বাংলাকে বলেন, “সেইন্টহুড পেতে বহু বছর এমন কি কয়েক শতকও পার হয়ে যায়। কিন্তু মাদার টেরিজা এমনই একজন মহাপ্রাণ ব্যক্তিত্ব, যিনি মৃত্যুর মাত্র ১৮ বছরের মধ্যেই সেইন্টহুড পেতে চলেছেন। আজ সকালে মাদার হাউস থেকে যখন এই খবর জানানো হল, তখন প্রথমে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল – এতটাই আনন্দ হচ্ছিল তখন।“
মাদার টেরিজার জন্ম ম্যাসেডোনিয়াতে। তাঁর বাবা-মা অ্যালবেনিয়ান ছিলেন।
কলকাতার বস্তিবাসী এবং অতিগরীব মানুষদের সাহায্যের জন্য তিনি ১৯৫০ সালে মিশনারীজ অফ চ্যারিটি প্রতিষ্ঠা করেন।
তাঁর কাজের জন্য ১৯৭৯ সালে নোবেল শান্তি পুরষ্কার পান মাদার টেরিজা।
কলকাতাতেই তাঁর মৃত্যু হয় ১৯৯৭ সালে।

ইসলামিক স্টেট'র অর্থের উৎস কোথায়?

 
                     ইরাক ও সিরিয়ার একটি বড় অংশ আইএস'র দখলে রয়েছে।                
জঙ্গি সংগঠন আইএসকে পৃথিবীর সবচেয়ে সম্পদশালীগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
সম্প্রতি এক হিসেবে দেখা যাচ্ছে, আইএস-এর মাসিক আয় ৮০মিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রতিবছর তেল বিক্রি করে আইএস ৫০০ মিলিয়ন ডলার উপার্জন করে।
যার অর্থ প্রতিদিন তারা তেল বিক্রি করে ১৫লাখ ডলার আয় করছে। ইরাক এবং সিরিয়ার অনেক বড় তেল ক্ষেত্রে এখন আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকায়।
এই তেল ক্ষেত্র থেকে প্রতিদিন ৪০ হাজার ব্যারেল তেল উত্তোলন করা হয়। কিন্তু এই তেল কারা কিনছে?
মধ্যপ্রাচ্য-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর হাতে যাতে কোনভাবেই অর্থ না যায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করেতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য ১৫টি দেশের অর্থমন্ত্রীরা এক প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।
১৯৯৯ সালে আল-কায়েদার অর্থের উৎস বন্ধ করতে যে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছিল তার ভিত্তিতেই আইএস-এর বিরুদ্ধে এই প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে।
                 তেল ক্ষেত্র লক্ষ্য করে বিমান হামলাও চলছে।                
কোন উপায়ে যাতে আইএস অর্থ সংগ্রহ করতে না পারে সেজন্য পৃথিবীর সব দেশকে আরো সুনির্দিষ্ট এবং জোড়ালোভাবে কাজ করার আহবান জানানো হয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আইএস-এর অর্থের উৎস কী? মূলত তাদের অর্থ আসে দু’ভাবে। প্রথমত তেল বিক্রি এবং দ্বিতীয়ত লুটকরা পুরাকীর্তি বিক্রি করে।
অভিযোগ রয়েছে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদ দালালদের সহযোগিতায় আইএস’র কাছ থেকে তেল কিনছে।
তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন আইএস’র কাছ থেকে তুরস্ক তেল কিনে ।
মি: পুতিন বলেন আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ তেল তুরস্কে যায় বলে তার কাছে তথ্য রয়েছে।
তবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এরদোয়ান মি: পুতিনকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছেন, আইএস-এর কাছ থেকে তুরস্কের তেল কেনার বিষয়টি যদি রাশিয়া প্রমাণ করতে পারে তাহলে তিনি পদত্যাগ করবেন।
আর যদি প্রমাণ করতে না পারেন, তাহলে কি মি: পুতিন তার পদে থাকবেন? প্রশ্ন করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট মি: এরদোয়ান।
মি: এরদোয়ান স্বীকার করুন আর নাই করুন। আইএস-এর তেল দালালদের মাধ্যমে তুরস্কে পৌঁছে।
আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ৮০ লাখ লোক বসবাস করে। তাদেরও জ্বালানীর প্রয়োজন হয়।
জাতিসংঘের সত্তর বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো নিরাপত্তা পরিষদের সবগুলো দেশের অর্থমন্ত্রীরা কোন বৈঠকে মিলিত হলেন।
আমেরিকা এবং রাশিয়ার উদ্যোগে আনা এই প্রস্তাবে নিরাপত্তা পরিষদের সবগুলো দেশ সর্বসম্মত সমর্থন দিয়েছে।
তারা মনে করে আইএস যাতে কোনভাবেই অর্থ সংগ্রহ করতে না পারে সেজন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।