মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৬

জার্মানির লাইপজিগ শহরে মুসলিম-বিরোধী বিক্ষোভ

 

জার্মানির লাইপজিগ শহরে মুসলিম-বিরোধী বিক্ষোভImage copyrightEPA
Image captionকোলনের মূল রেলওয়ে স্টেশন ও ক্যাথেড্রাল সেন্টারে যৌন হেনস্তার ঘটনা ঘটে।
জার্মানির পূর্বাঞ্চলীয় লাইপজিগ শহরে মুসলিম বিরোধী এক বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে হাজার হাজার মানুষ।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ নববর্ষের প্রাক্কালে কোলনে বহু নারীকে যৌন হেনস্তার জন্য দায়ী জার্মানিতে আসা অভিবাসীরা।
জার্মানিতে লাখ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দেবার কারণে দেশটির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেলের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তারা।
ডানপন্থী সংগঠন পেগিডা মুভমেন্ট-এর কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন লাখ লাখ আশ্রয়প্রার্থীকে জার্মানিতে থাকার অনুমতি দিয়ে জার্মানদের জন্মভূমিকে দেশটির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল বিনষ্ট করছেন।
কর্তৃপক্ষ বলছে, নববর্ষ উদযাপনের প্রাক্কালে কোলনে নারীদের উপরে শ’খানেকের বেশি যৌন হামলার ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাদের প্রায় সকলেই অভিবাসী।
তবে, পুলিশ মনে করছে কোলনে রবিবারে বিদেশীদের উপরে যে হামলা হয়েছে তার পেছনে মূলত উগ্রপন্থীরাই দায়ী এবং নববর্ষের উৎসবে নারীদের উপর হামলার জের হিসেবেই এই হামলা করা হয়েছে।
জার্মানীর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টমাস ডি মাইসিয়েরে বলেছেন, বিতর্ক বা দ্বন্দ্বকে সমাজে মেনে নিতে হবে। তবে সেটিকে সীমা অতিক্রম করতে দেয়া যাবে না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, "বিতর্ককে সয়ে নিতে হবে, তা যত কঠিন বিতর্কই হোক না কেন। কিন্তু সেই বিতর্ক যদি ঘৃণা ও সহিংসতায় পরিণত হয় তবে তা ওখানেই শেষ"।
"রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদেরকে যখন বন্য জন্তু বলে গালি দেয়া হয়, যখন তাদের আশ্রয়স্থলে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়, যখন রাজনীতিবিদদের বিশ্বাসঘাতক বলে অসম্মান করা হয়, আর যখন দেশের গণমাধ্যমকে ‘মিথ্যা সংবাদমাধ্যম’ বলে নিন্দ্ করা হয় তখন তা স্পষ্টতই অগ্রহণযোগ্য" বলেন মি:মাইসিয়েরে।
এদিকে এই মাসের শুরু থেকে প্রতিদিনই জার্মানি তাদের অনেক অভিবাসীকে অস্ট্রিয়াতে ফেরত পাঠাচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে।
যাদেরকে অস্ট্রিয়াতে ফেরত পাঠানো হচ্ছে তারা সিরিয় নাগরিক নয়, বরং তারা মূলত আফগানিস্তান, মরক্কো ও আলজেরিয়ার নাগরিক বলে জানা গেছে।

আইএস-এর প্রোপাগান্ডা অস্ত্র: রেডিও থেকে ইন্টারনেট

 

আইএস এথকে প্রকাশিত বহুভাষিক ম্যাগাজিন
Image captionআইএস এথকে প্রকাশিত বহুভাষিক ম্যাগাজিন
নিজস্ব রেডিও স্টেশন, বিভিন্ন ভাষায় লেখা ম্যাগাজিন, ভিডিও, ফটো এবং রিপোর্ট ইত্যাদির মাধ্যমে প্রোপাগান্ডা বা প্রচারণা চালিয়ে জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট এই ধারণাই সবার মনে জাগাতে চায় যে এই সংগঠনটি নিজেই একটা স্বতন্ত্র রাষ্ট্রব্যবস্থা।
বিবিসি মনিটরিং বিভাগের তৈরি এক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, লাইম লাইটে থাকার জন্য আইএস স্তম্ভিত হওয়ার মতো উচ্চ মানের ভিডিও প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং সংবাদের শিরোনামে থাকতে চায়।
তাদের এই প্রচারণার মধ্য দিয়ে তারা একদিকে যেমন নতুন সদস্য এবং সমর্থক জোগাড়ের চেষ্টা করে, একইভাবে এগুলোকে তারা ব্যবহার করে তাদের ব্যর্থতার ঢাকার জন্য এবং মানুষের দৃষ্টি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার কাজে।
বহুভাষিক অপারেশন
২০১৪ সালের মাঝামাঝি যে সময়টিতে আইএস ভূমি দখলের কাজে সফল হতে শুরু করে, তখন থেকেই তারা মিডিয়ায় তাদরে তৎপরতার গতি বাড়িয়ে দেয়।
বিশ্বব্যাপী মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য তারা একাধিক ভাষায় প্রোপাগান্ডা চালানোর কৌশল গ্রহণ করে।
আইএস-এর আল-বায়ান রেডিও স্টেশন।
Image captionআইএস-এর আল-বায়ান রেডিও স্টেশন।
আইএস-এর একটি নিজস্ব রেডিও স্টেশন রয়েছে, যার নাম আল-বায়ান। মূলত ইরাক এবং সিরিয়া থেকে এর সম্প্রচার শোনা যায়। ঐ এলাকায় আইএস যে প্রবল শক্তিশালী সংগঠন এটা প্রমাণ করাই এই স্টেশনের মূল কাজ।
এর আগে আইএস টেলিভিশন স্টেশন চালু করারও চেষ্টা করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই কাজে জঙ্গীদলটি সফল হয়নি। ইন্টারনেট-ভিত্তিক টিভি চালু করা প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে।
আল-বায়ান থেকে প্রতিদিন খবরের যে বুলেটিন প্রচারিত হয়, ছ`টি ভাষায় সেটি তর্জমা করা হয় এবং পডকাস্টের মাধ্যমে সেটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া হয়। ভাষাগুলো হলও: আরবি, ইংরেজি, ফরাসি, রুশ, তুর্কী এবং কুর্দি।
এর পাশাপাশি আইএস চীনা মুসলমানদের জন্য উইঘার ভাষায়, ইন্দোনেশিয়ার বাহাসা এবং বলকান অঞ্চলের ক`টি ভাষাতেও সম্প্রচার করে থাকে।
আইএস-এর তরফে যেসব ম্যাগাজিন প্রকাশ করা হয় তার মূল ভাষা ইংরেজি। এই ম্যাগাজিনের নাম `দাবিক`। প্রথম প্রকাশ ২০১৪ সালের জুলাই মাসে। এর ফরাসি, রুশ এবং তুর্কী সংস্করণও প্রকাশিত হচ্ছে।
আরবি ভাষায় জন্য আইএস-এর রয়েছে একটি আলাদা ম্যাগাজিন। যার নাম আল-নাবা।
শিরোনাম দখলের লড়াই
এসব কিছুর পাশাপাশি আইএস প্রতিদিন নিয়মিতভাবে ভিডিও এবং স্টিল ছবি প্রকাশ করে, যার মধ্য দিয়ে সংগঠনটি দেখাতে চায় যে দেশ শাসনের দক্ষতা তার রয়েছে এবং তার অধীন সামরিক বাহিনী লড়াইয়ের ময়দানে অপরাজেয়।
`নো রেসপাইট` শিরোনামে এই আইএস ভিডিওতে যুক্তরাষ্ট্রকে উপহাস করে বলা হচ্ছে সিরিয়া এবং ইরাকে লড়াইয়ের সৈন্য পাঠাতে।
Image caption`নো রেসপাইট` শিরোনামে এই আইএস ভিডিওতে যুক্তরাষ্ট্রকে উপহাস করে বলা হচ্ছে সিরিয়া এবং ইরাকে লড়াইয়ের সৈন্য পাঠাতে।
এসব প্রচারের মধ্য দিয়ে আইএস তার সম্ভাব্য সমর্থকদের মনে একটি অলীক রাষ্ট্রের ছবি তৈরি করতে চায়।
কোন কোন ভিডিও প্রকাশের আগে আইএস সংবাদমাধ্যমকে আগাম খবর জানায় এবং নানা ভাষায় সেটির সংস্করণ তৈরি করা হয়। কখনও কখনও সেসব ভিডিওতে হলিউডের কায়দায় অডিও-ভিডিও এফেক্টস ব্যবহার করা হয় যেগুলো তরুণ সম্প্রদায়কে খুবই আকর্ষণ করে।
আইএস-এর একটি নতুন কৌশল হলও একই বিষয়ের ওপর একই সাথে একাধিক ভিডিও প্রকাশ করা। এবং একটি বিশেষ বার্তা সবার মনে পৌঁছে দেয়া।
অনলাইনে আধুনিক প্রচারণা
আইএস-এর মিডিয়া বিভাগের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলও কোন ঘটনা ঘটলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া।
এটা তারা করতে পারে কারণ সোশাল মিডিয়াকে তারা খুবই দক্ষতার সাথে ব্যবহার করে। আইএস-এর সমর্থক এবং অনুগামীরা এসব পোস্ট ছড়িয়ে দেয় সারা বিশ্বে।
টুইটার এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে আইএস-এর সাথে সম্পর্কিত অ্যাকাউন্টগুলো বার বার বন্ধ করা হলেও ভিন্ন ভিন্ন পরিচয়ে এই জঙ্গীদলের কন্টেন্ট নিয়মিতভাবেই পোস্ট করা হয়।
প্রোপাগান্ডার মালমসলা গোপনীয়তার সাথে ছড়িয়ে দেয়ার কাজে আইএস সম্প্রতি দক্ষতার সাথে টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করতে শুরু করেছে।

পঞ্চমবারের মতো ব্যালঁঅ ডি'অর জিতলেন লিওনেল মেসি

 

পঞ্চমবারের মতো ব্যালঁঅ ডি'অর জিতলেন লিওনেল মেসিImage copyrightGetty
Image captionইতিহাসের প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে পঞ্চমবারের মতো ব্যালঁঅ ডি’অর জিতলেন লিওনেল মেসি।
আর্জেন্টিনার অন্যতম ফুটবল তারকা লিওনেল মেসির মুকুটে যোগ হলো সাফল্যের আরও একটি পালক।
২০১৫ সালের বর্ষসেরা ফুটবলারের শিরোপা জয় করেছেন বার্সেলোনার এই তারকা।
ইতিহাসের প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে পঞ্চমবারের মতো ব্যালঁঅ ডি’অর জিতলেন লিওনেল মেসি।
এ বছর ব্যালঁঅ ডি’অর এর সম্ভাব্য জয়ী হিসেবে শুরু থেকেই বারবার ঘুরে-ফিরে আসছিলো মেসিরই নাম।
দুনিয়ার নামজাদা সব ফুটবল বিশ্লেষকরাও মেসির সম্ভাবনাকেই দেখছিলেন সবচেয়ে বেশি। আর হলোও তাই। এই নিয়ে পঞ্চমবারের মতন এই খেতাব পেলেন কোটি ফুটবলভক্তের প্রিয় এই খেলোয়াড়।
পঞ্চমবারের মতো ব্যালঁঅ ডি'অর জিতলেন লিওনেল মেসিImage copyrightAFP
Image captionপুরস্কার নেবার পর মেসির প্রতিক্রিয়া।
এ বছর ব্যালঁঅ ডি’অর-এর সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্য যে দু’জনের নাম খুব জোরে-শোরে শোনা গেছে তাদের একজন হলেন রিয়াল মাদ্রিদের তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্দো, এবং অন্যজন মেসিরই সতীর্থ নেইমার জুনিয়ার।
এবারের ব্যালঁঅ ডি’অরে যেনো বার্সেলোনারই জয়-জয়কার।
একদিকে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেয়েছেন বার্সার লিওনেল মেসি।
অন্যদিকে বর্ষসেরা কোচ-এর পুরস্কারটাও গেছে বার্সেলোনার ঘরেই। বর্ষসেরা কোচ হিসেবে এবারের ব্যালঁঅ ডি’অর জয় করেছেন বার্সা কোচ লুই এনরিকে।
এছাড়া এই বছর বর্ষসেরা নারী ফুটবলার হিসেবে ব্যালঁঅ ডি’অর পেয়েছেন মার্কিন মিডফিল্ডার কার্লি লয়েড।

মাদায়ায় পৌঁছেছে জাতিসংঘের খাদ্যবাহী কনভয়

 

madaya_aidImage copyrightAFP
Image captionঅনাহারে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত মাদায়ায় মারা গেছেন কয়েকজন
সিরিয়ার অবরুদ্ধ শহর মাদায়ায় মাসখানেকের খাবার, ওষুধ এবং শীতের কাপড় নিয়ে পৌঁছেছে জাতিসংঘের ত্রাণবাহী কনভয়।
গত বছরের অক্টোবর থেকে সরকারি বাহিনীর অবরোধের মুখে ৪০ হাজার মানুষের এই শহর মাদায়ায় খাদ্য সঙ্কট চরমে পৌঁছেছে।
অনাহারে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ঐ শহরে কিছু লোক মারাও গেছে বলে খবর বেরিয়েছে।
জাতিসংঘের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মাদায়ায় পৌঁছে তারা অপুষ্টিতে ভোগা অভুক্ত শিশুদের দেখতে পেয়েছেন।
মাদায়া ছাড়াও সিরিয়ার সরকারি বাহিনী নিয়ন্ত্রিত আরো দুটি শহরে জাতিসংঘের ত্রাণ বিতরণ করা হবে।

গ্রীসের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বাংলাদেশী শ্রমিকেরা

 

greece_bd
Image captionষ্ট্রবেরি খামারে গুলিবিদ্ধ হওয়া বাংলাদেশী শ্রমিকদের ৩০জন মিলে এই মামলাটি করেছেন---ফাইল ফটো
২০১৩ সালে গ্রীসে ষ্ট্রবেরি খামারে বকেয়া বেতন চাইতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ বাংলাদেশী শ্রমিকেরা এবার দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটসে মামলা করেছে।
এ মাসের কুড়ি তারিখের পর শুনানির তারিখ পড়ার কথা রয়েছে।
গ্রীসের বাংলাদেশ সমিতির প্রেসিডেন্ট জয়নাল আবেদিন, বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন ইউরোপিয়ান কনভেনশন অব হিউম্যান রাইটসের একটি অনুচ্ছেদ, যেখানে দাসত্ব ও জোরপূর্বক শ্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেই অনুচ্ছেদ লঙ্ঘনের দায়ে প্রথমবারের মতো গ্রিসের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে।
ষ্ট্রবেরি খামারে গুলিবিদ্ধ হওয়া শ্রমিকদের ৩০জন মিলে এই মামলাটি করেছেন।
strawberry
Image captionক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের পাওনা বেতন বা কোন ক্ষতিপূরণ দেয়নি গ্রীসের ঐ আদালত
২০১৩ সালের এপ্রিলে গ্রিসের পেলোপন্নেসিয়ান গ্রামের এক স্ট্রবেরি খামারে শ্রমিকেরা তাদের ছয়মাসের বকেয়া বেতনের দাবি জানাতে গেলে সেখানকার একজন সুপারভাইজার তাদের ওপর গুলি চালায়।
ঐ ঘটনায় ৩২ জন বাংলাদেশী শ্রমিক আহত হয়।
এরপর খামার মালিক ও সংশ্লিষ্ট সুপারভাইজারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কিন্তু পরবর্তীতে ঐ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রীসের আদালত খামার মালিক ও সুপারভাইজারকে নির্দোষ বলে রায় দেয়।
এছাড়া গ্রীসের ঐ আদালত ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের পাওনা বেতন পরিশোধ বা কোন ক্ষতিপূরণও দেয়নি বলে জানিয়েছেন মি. আবেদিন।
সেকারণেই এখন মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ক্ষতিপূরণের আশায় গুলিবিদ্ধ হওয়া শ্রমিকেরা এই মামলা দায়ের করেছেন।
তবে, মি. আবেদিন বলছেন দেশটির সরকার ঐ শ্রমিকদের প্রতিবছর নবায়নের শর্তে সেদেশে কাজের অনুমতি দিয়েছে।
গ্রীসের বাংলাদেশ সমিতির প্রেসিডেন্ট আরো জানিয়েছেন, ঐ ঘটনার পর সেখানকার অভিবাসী শ্রমিকদের বেতন পরিশোধে ব্যপারে সচেতন হয়েছে অর্থনৈতিক মন্দা ও শরণার্থী সমস্যায় ভোগা গ্রীসের মালিকেরা।
এ নিয়ে সেখানে নিয়মিত আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশী ও অন্যান্য দেশের অভিবাসী শ্রমিকেরা।

ট্যানারি স্থানান্তর: সরকারের প্রস্তুতি কতটা?

 

bd_tannery_hazaribaghImage copyrightbbc
Image captionকেন্দ্রীয় সংশোধনাগার বা সিইটিপি এখনো সেখানে চালু হয়নি
হাজারীবাগের ট্যানারিগুলোকে সাভারের বলিয়াপুর ইউনিয়নে চামড়া শিল্প নগরীতে স্থানান্তরের জন্য সরকার সময়সীমা বেঁধে দিলেও, সেখানে এখনো সব ট্যানারি তাদের অবকাঠামো নির্মানের কাজ শেষ করেনি।
গ্যাস, বিদ্যুৎ আর পানির বন্দোবস্ত থাকলেও প্লট বরাদ্দ পাওয়া অনেকেই অবকাঠামো নির্মানে ব্যর্থ হওয়ায় পাননি সেসবের সংযোগ।
চামড়া শিল্পনগরীর কর্মকাণ্ড শুরু করতে আবশ্যক বিষয় কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার বা সিইটিপি এখনো সেখানে চালু হয়নি।
বিসিক চামড়া শিল্প নগরীর প্রকল্প পরিচালক আব্দুল কাইয়ুম বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার বা সিইটিপি এখনো চালু হয়নি।
মূলত এ কাজের জন্য ইন্টারন্যাশনাল টেন্ডার পেয়েছে যে প্রতিষ্ঠান তারা কাজ শুরু করতে দেরী করায় এখনো সিইটিপি চালু করা সম্ভব হয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন।
মি. কাইয়ুম জানিয়েছেন সিইটিপির যন্ত্রপাতি এখন ইন্সটলেশন চলছে।
৩১ শে জানুয়ারি থেকে শুরু হবে এর পরীক্ষামূলক কার্যক্রম।
bd_tannery
Image captionপরিবেশের ক্ষতি ঠেকাতে হাজারীবাগ থেকে ট্যানারিগুলোকে সরিয়ে নিতে প্রায় দুই দশক আগে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট---ফাইল ফটো
পুরোপুরি কার্যকর করতে আরো সময় লাগবে বলে জানান তিনি।
পরিবেশের ক্ষতি ঠেকাতে হাজারীবাগের ট্যানারি বা চামড়ার কারখানাগুলোকে সরিয়ে নিতে প্রায় দুই দশক আগে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট।
এরপর সরকার এ শিল্পকে সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করে।
আর সেজন্য ১২১টি ট্যানারিকে সরকার ক্ষতিপূরণও দেয়া শুরু করেছে।
কিন্তু ক্ষতিপূরণের অর্থ নেবার পরেও কারখানা স্থানান্তরের কাজ শুরু করেনি ২৮টি ট্যানারি।
আর তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতেই শিল্পমন্ত্রী ৭২ ঘণ্টার সময়সীমার মধ্যে তাদের সাভারে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরুর আল্টিমেটাম দিয়েছেন বলে জানান মি. কাইয়ুম।
তবে, স্থানান্তর করলেই সেখানে উৎপাদন শুরু করতে পারবেনা ট্যানারিগুলো।
বরং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণ শেষ করতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে আজ দুপুরে শিল্প মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবে ট্যানারি মালিক এবং চামড়া রপ্তানীকারকদের সংগঠন।

কুয়েতে দুই 'ইরানি গুপ্তচরের' মৃত্যুদণ্ড

 

kuwaitImage copyrightAFP
Image captionকৃুয়েত সিটি। ইরানের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে মঙ্গলবার দুজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে কুয়েতের এক আদালত।
ইরানের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে কুয়েতের একটি আদালত দুই ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।
এদের একজন কুয়েতি নাগরিক, অন্যজন ইরানি।
ইরানি এই নাগরিককে তার অবর্তমানে সাজা দেওয়া হয়েছে।
এই দুজন ছাড়াও একই অপরাধে আরও ২০ জনকে পাঁচ থেকে পঁচিশ বছর মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তারা সবাই কুয়েতি নাগরিক।
শিয়া এক ধর্মীয় নেতার শিরোচ্ছেদের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সৌদি-ইরান বিরোধে সৌদি আরবের পক্ষ নিয়ে তেহরান থেকে তাদের দূতকে প্রত্যাহার করেছে কুয়েত।
তার কিছুদিন বাদেই গুপ্তচর বৃত্তির দায়ে সাজা দেওয়ার এই ঘটনা।
কুয়েতের সরকারি আইনজীবীরা বলছেন ২৬ জনের একটি "সন্ত্রাসী সেল" ইরান এবং লেবাননের শিয়া গোষ্ঠী হেযবোল্লার পক্ষ হয়ে কুয়েতের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছিল।
তাদের কাছ থেকে বিস্ফোরক, অস্ত্র এবং আড়ি পাতার বিভিন্ন যন্ত্র পাওয়া গেছে বেলে দাবি করা হয়েছে।

ভারতের সাগরতটে ঝাঁক বেঁধে তিমির আত্মহত্যা?

 

তিমি
Image captionসাগর তীরে মৃত একটি তিমি দেখছেন তুতিকোরিনের পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন
ভারতের তামিলনাডুতে তুতিকোরিন শহরের কাছে সমুদ্রতটে প্রায় পঞ্চাশটির মতো তিমি সৈকতে এসে আছড়ে পড়ে মারা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও মৎস্যজীবীরা কয়েকটি তিমিকে ঠেলে সমুদ্রে ফেরত পাঠাতে পারলেও অনেকগুলোই আবার সৈকতে ফিরে এসেছে। বাঁচানো যায়নি তাদের বেশির ভাগকেই।
তিমির ঝাঁকের এই রহস্যময় আচরণ কেন, তা নিয়ে এখনও কোনও স্পষ্ট উত্তর মেলেনি।
তবে বিশেষজ্ঞদের অনেকে ধারণা করছেন খাবারের সন্ধানে সৈকতের কাছে অগভীর সমুদ্রে এসে পড়েই ওই তিমিগুলো আটকে পড়েছিল।
ভারতের দক্ষিণতম প্রান্তে তুতিকোরিনের কাছে যে তিরুচেন্দুর সৈকত, সেখানেই সোমবার রাত থেকেই আছড়ে পড়তে থাকে প্রায় একশো তিমির একটি ঝাঁক।
জেলেরা সেই তিমিগুলোকে ঠেলে সাগরের জলে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করেন। কাছের মানাপাড গ্রামের লোকজনও তাতে হাত মেলান।
কিন্তু বেশির ভাগ তিমিই আবার সৈকতে ফিরে আসে। সকালে দেখা যায় বেলাভূমিতে পড়ে আছে প্রায় পঞ্চাশটি তিমির নিস্পন্দ লাশ।
তিমির ঝাঁকের এই ধরনের প্রবণতা – যাকে বলে ‘বিচিং’ – তা অবশ্য নতুন কোনও ঘটনা নয় বলেই বলছেন ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের জুলিয়া ওয়াইল্ড।
india_whaleImage copyrightAP
Image captionতুতিনকোরিনের জেলেরা চেষ্টা করেছিলেন তিমিগুলোকে সাগরে ঠেলে পাঠিয়ে দিতে

তিমিদের 'বিচিং' অ্যারিস্টটলকেও ভাবিয়েছিল
তার কথায়, "তিমিদের ঝাঁকে ঝাঁকে বিচিং সেই অ্যারিস্টটলের যুগেও ঘটেছে, তবে ওই গ্রীক দার্শনিকও তার পেছনের কারণটা খুঁজে পাননি।
কিন্তু এই যুগে বিজ্ঞানীদের ধারণা, অনেক সময় শিকার খুঁজতে গিয়ে সাগরের ভাঁটায় পড়ে তিমিদের ওই হাল হয়। সৈকতে পড়ে থাকা তিমিদের লাশে দেখা গেছে তাদের অনেকেরই পেট খালি থাকে।
তা ছাড়া তিমি ভীষণ সামাজিক জীব, ঝাঁকের কেউ পথ হারালে অন্যরাও তাকে রক্ষা করতে সৈকতের দিকে তারা চলে আসে এবং আটকা পড়ে।
তবে তুতিকোরিনের ঘটনায় তিমিগুলো খাবারের সন্ধানেই মাঝসমুদ্রের গভীর জল থেকে সৈকতের কাছে অগভীর জলে চলে এসেছিল বলে বিশেষজ্ঞরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন।
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স, এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের মেরিন বায়োলজিস্ট পুণ্যশ্লোক ভাদুড়ী বিবিসিকে বলছিলেন বঙ্গোপসাগরে সমুদ্রস্রোতের ‘সার্কুলেশন প্যাটার্ন’ পাল্টাচ্ছে – ফলে তিমিরা মাঝসমুদ্রে যথেষ্ট পরিমাণে খাবার পাচ্ছে না বা ঠিক সময়ে সেটা পাচ্ছে না।
"এই কারণেই তারা খাবারের সন্ধানে সৈকতের কাছে অর্থাৎ অগভীর জলের দিকে চলে আসছে – এবং সেখানে খাবার পাক বা না-পাক, জলটা অগভীর হওয়ার কারণে অনেক সময়েই আটকা পড়ছে"।
১৯৭৩ সালেও প্রায় দেড়শো তিমি এই তামিলনাডুর উপকূলে এসে মারা গিয়েছিল। ড: ভাদুড়ীর মতো বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির জেরে পুরো বঙ্গোপসাগরের তটরেখা জুড়ে এই ধরনের ঘটনা আরও বাড়বে।
তবে আসামের জাটিঙ্গা গ্রামে যেমন পাখিদের আলোয় ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করতে দেখা যায়, তিমিদের এই বিচিং-কে ঠিক আত্মহত্যা বলতে রাজি নন ড ভাদুড়ী।
তবে এটাও ঠিক যে তুতিকোরিন সৈকতে অনেক তিমিকে সাগরে ঠেলে দেওয়ার পরেও তারা ফিরে এসেছিল।
 

'বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল'- শেখ হাসিনা

 

পাঁচই জানুয়ারির নির্বাচনের পর তার ক্ষমতা গ্রহণের দ্বিতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে রেডিও, টিভিতে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রায় ৩০ মিনিটের ভাষণে তিনি মূলত তার সরকারের উন্নয়নমূলক কাজগুলোর বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেছেন। সেই সাথে ছিল বিরোধীদের সমালোচনা।
শেখ হাসিনা বলেন, গত সাত বছরে তার সরকার দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করা, ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে বিভিন্ন ফ্লাইওভার নির্মাণ এবং দেশের বিভিন্ন মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার বিষয়টি তুলে ধরেন।
এছাড়া বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ানো এবং বিভিন্ন খাতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ বর্ণনা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন , “ বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। বিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল।”
বাংলাদেশে সম্প্রতি দু’জন বিদেশী নাগরিককে হত্যার জন্য তিনি আবারো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দায়ী করেন।
শেখ হাসিনা বলেন তার সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়ে পিছ পা হবেনা ।
তবে ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশ যে বিতর্ক অব্যাহত আছে সে বিষয়ে কিছু বলেননি প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীদের দাবী অনুযায়ী আগাম নির্বাচন নিয়ে তার সরকারের কী চিন্তা রয়েছে সে বিষয়ে কোন কিছু উল্লেখ করা হয়নি প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে।
কোন পরিস্থিতিতে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেটি আবারো মনে করিয়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনকে প্রতিহত করতে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী সারাদেশে সহিংসতা করেছিল। সে সময় ৩৪ দিনের সহিংসতায় ১৩৫ জন মানুষ নিহত হয়েছিল বলে তিনি মনে করিয়ে দেন। তিনি বলেন ৫৮২টি স্কুল কলেজ পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল।