বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুবিধার জন্য সরকার প্রথমবারের মত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে পাঁচ শতাধিক কোরবানির জায়গা ঠিক করে দিলেও তাতে সাড়া মেলেনি খুব একটা; নগরজুড়ে যত্রতত্র পশু জবাই হয়েছে আগের মতই।
শুক্রবার ঈদুল আজহার দিন দুপুর পর্যন্ত ঢাকার কয়েকটি এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
যেসব স্থানে সরকার কোরবানির পশু জবাই করতে নগরবাসীকে অনুরোধ করেছিল, তার মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে পড়েছে ২০৮টি; আর ৩৩০টি দক্ষিণে।
ঈদের নামাজের পর থেকে দুপুর পর্যন্ত দশটি জায়গা ঘুরে নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি দেওয়ার খুব একটা উৎসাহ স্থানীয়দের মধ্যে দেখা যায়নি।
এর মধ্যে আটটি স্থানে দেখা গেছে, নির্ধারিত জায়গায় যে ক’টি পশু জবাই হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি কোরবানি ও মাংস কাটার কাজ চলছে আশেপাশের রাস্তায় বা বাড়ির সামনে।
অনেকেই বরাবরের মত বাড়ির পাশে রাস্তা, গলি এবং ভবনের গ্যারেজে কোরবানির যাবতীয় কাজ সেরেছেন। আশেপাশের পথঘাট সয়লাব হয়ে গেছে রক্ত মেশা পানি আর পশুর বর্জ্যে।
যারা নির্ধারিত স্থানে যাননি, তাদের অনেকেই বলেছেন, দূরে কোরবানি দেওয়ার পর তারা টানাটানির ঝামেলায় যেতে চাননি। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ যথাযথ প্রচার চালায়নি বলেও কেউ কেউ অভিযোগ করেন।
সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রথম বছর তেমন সাড়া না মিললেও ধীরে ধীরে নড়রবাসীকে এ ব্যবস্থায় অভ্যস্ত করা সম্ভব।
শুক্রবার সকাল ৮টায় জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত হলেও তার বিভিন্ন মহল্লার মসজিদে জামাত শুরু হয় সকাল ৭টা থেকে। এর পরপরই শুরু হয়ে যায় পশু কোরবানির আয়োজন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গোড়ান আট নম্বর পানির পাম্পের পাশে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নিজের বাসার সামনের গলিতে গরু জবাই করেন জোবায়ের ইসলাম। সেখানেই চামড়া ছাড়িয়ে হোগলা পাটি পেতে মাংস কেটে পরে বাড়িতে নেওয়া হয়।
জোবায়েরের এলাকায় পশু কোরবানির জন্য সিটি করপোরেশনের ঠিক করে দেওয়া জায়গা ছিল গোড়ান মাঠ।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “অতদূর থেকে মাংস আনা-নেওয়া অনেক ঝামেলার ব্যাপার। আমরা পানি ছিটিয়ে দেব, আর ময়লা পরিষ্কারের জন্য সিটি করপোরেশনের দেওয়া বিশেষ ব্যাগ এনে রেখেছি।”
সকাল ৯টায় খিলগাঁও মোড়ে ঢাকা দক্ষিণের নির্ধারিত পশু জবাইয়ের এলাকায় গিয়ে দেখা যায়- সেখানে তেমন লোকজন নেই। অথচ কয়েকশ গজ দূরে গলির মধ্যে পশু জবাই হয়েছে।
অবশ্য সেগুনবাগিচায় সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থান দুদক কার্যালয়ের সামনে পশু জবাই করতে গেছেন আশেপাশের অনেকেই।
স্থানীয় বাসিন্দা হাবিবুর রহমান জানান, সেখানে দুপুর পর্যন্ত অর্ধশতাধিক গরু ও খাসি জবাই করা হয়েছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সেগুনবাগিচা টাওয়ার, প্রিয় প্রাঙ্গণসহ আরও কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের বাসিন্দারা এখানে কোরবানি দিয়েছেন। অবশ্য আমরা অন্যবছরও একইভাবে কোরবানি দেই।”
নিউ মার্কেট এলাকায় বিশ্বাস বিল্ডার্সের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের নিরাপত্তারক্ষী সঞ্জয় দীপ বলেন, “করপোরেশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ভবনের সামনে অন্তত ৬২টি পশু কোরবানি দেওয়া হয়েছে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ব্যাগ ও ব্লিচিং পাউডার সরবরাহ করা হয়েছে। জবাই শেষে বিল্ডিং কর্তৃপক্ষ পানি ছিটিয়ে রক্ত ও বর্জ্য পরিষ্কার করবে।”
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, আদাবর এলাকায় পশু জবাইয়ের নির্ধারিত স্থান ছিল দশটি। এর মধ্যে দুটি জায়গায় গিয়ে পাশের রাস্তা ও গলিতেই বেশি পশু জবাই হতে দেখা যায়।
রাজধানীর মিরপুর দশ নম্বর গোলচক্কর থেকে মিরপুর ১২ নম্বর পর্যন্ত সড়কে ঘুরেও একই চিত্র দেখা যায়।
মিরপুর-১২ এলাকায় সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থান ছিল ‘বি’ ব্লকের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের অফিসসংলগ্ন মাঠ। ওই এলাকার চা দোকানী হনুফা আক্তার বলেন, “এইখানে কেউ কোরবানি দিতে আসে নাই। সরকারের লোক (সিটি কর্পোরেশন) এইখানে মাইকিং করছে গতকাইল। অনেকে জানেই না।”
অবশ্য সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ ব্যাগ ও ব্লিচিং পাউডার সরবরাহ করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, “ভাই, কোরবানি তো শুধু স্পেস থাকলেই হয় না, আরও অনেক কিছু লাগে। যেমন, পানি না থাকলে চামড়া ছাড়ানো যায় না। গরুর মাংস প্রসেস করতে হলে বালতি বালতি পানি লাগে। সব জায়গায় পানির যোগান রাখে নাই।”
বিকালে সার্বিক পরিস্থিতি জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নির্ধারিত স্থানে পশু জবাইয়ের বিষয়ে এ বছর কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না। যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তাতে তেমন সাড়া মেলেনি।”
তবে ধীরে ধীরে নগরবাসীকে নির্দিষ্ট স্থানে পশু জবাইয়ে অভ্যস্ত করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
bdnews24
যেসব স্থানে সরকার কোরবানির পশু জবাই করতে নগরবাসীকে অনুরোধ করেছিল, তার মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে পড়েছে ২০৮টি; আর ৩৩০টি দক্ষিণে।
ঈদের নামাজের পর থেকে দুপুর পর্যন্ত দশটি জায়গা ঘুরে নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি দেওয়ার খুব একটা উৎসাহ স্থানীয়দের মধ্যে দেখা যায়নি।
এর মধ্যে আটটি স্থানে দেখা গেছে, নির্ধারিত জায়গায় যে ক’টি পশু জবাই হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি কোরবানি ও মাংস কাটার কাজ চলছে আশেপাশের রাস্তায় বা বাড়ির সামনে।
অনেকেই বরাবরের মত বাড়ির পাশে রাস্তা, গলি এবং ভবনের গ্যারেজে কোরবানির যাবতীয় কাজ সেরেছেন। আশেপাশের পথঘাট সয়লাব হয়ে গেছে রক্ত মেশা পানি আর পশুর বর্জ্যে।
যারা নির্ধারিত স্থানে যাননি, তাদের অনেকেই বলেছেন, দূরে কোরবানি দেওয়ার পর তারা টানাটানির ঝামেলায় যেতে চাননি। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ যথাযথ প্রচার চালায়নি বলেও কেউ কেউ অভিযোগ করেন।
গোড়ান এলাকায় তিতাস রোডে চৌরাস্তার ওপরই পশু জবাই করেছেন স্থানীয়রা
গোরান হয়ে বনশ্রীতে ঢোকার মুখে রাস্তার ওপরই কোরবানি।
সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রথম বছর তেমন সাড়া না মিললেও ধীরে ধীরে নড়রবাসীকে এ ব্যবস্থায় অভ্যস্ত করা সম্ভব।
শুক্রবার সকাল ৮টায় জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত হলেও তার বিভিন্ন মহল্লার মসজিদে জামাত শুরু হয় সকাল ৭টা থেকে। এর পরপরই শুরু হয়ে যায় পশু কোরবানির আয়োজন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গোড়ান আট নম্বর পানির পাম্পের পাশে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নিজের বাসার সামনের গলিতে গরু জবাই করেন জোবায়ের ইসলাম। সেখানেই চামড়া ছাড়িয়ে হোগলা পাটি পেতে মাংস কেটে পরে বাড়িতে নেওয়া হয়।
জোবায়েরের এলাকায় পশু কোরবানির জন্য সিটি করপোরেশনের ঠিক করে দেওয়া জায়গা ছিল গোড়ান মাঠ।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “অতদূর থেকে মাংস আনা-নেওয়া অনেক ঝামেলার ব্যাপার। আমরা পানি ছিটিয়ে দেব, আর ময়লা পরিষ্কারের জন্য সিটি করপোরেশনের দেওয়া বিশেষ ব্যাগ এনে রেখেছি।”
সকাল ৯টায় খিলগাঁও মোড়ে ঢাকা দক্ষিণের নির্ধারিত পশু জবাইয়ের এলাকায় গিয়ে দেখা যায়- সেখানে তেমন লোকজন নেই। অথচ কয়েকশ গজ দূরে গলির মধ্যে পশু জবাই হয়েছে।
অবশ্য সেগুনবাগিচায় সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থান দুদক কার্যালয়ের সামনে পশু জবাই করতে গেছেন আশেপাশের অনেকেই।
স্থানীয় বাসিন্দা হাবিবুর রহমান জানান, সেখানে দুপুর পর্যন্ত অর্ধশতাধিক গরু ও খাসি জবাই করা হয়েছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সেগুনবাগিচা টাওয়ার, প্রিয় প্রাঙ্গণসহ আরও কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের বাসিন্দারা এখানে কোরবানি দিয়েছেন। অবশ্য আমরা অন্যবছরও একইভাবে কোরবানি দেই।”
নিউ মার্কেট এলাকায় বিশ্বাস বিল্ডার্সের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের নিরাপত্তারক্ষী সঞ্জয় দীপ বলেন, “করপোরেশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ভবনের সামনে অন্তত ৬২টি পশু কোরবানি দেওয়া হয়েছে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ব্যাগ ও ব্লিচিং পাউডার সরবরাহ করা হয়েছে। জবাই শেষে বিল্ডিং কর্তৃপক্ষ পানি ছিটিয়ে রক্ত ও বর্জ্য পরিষ্কার করবে।”
সেগুন বাগিচায় দুদক কার্যালয়ের সামনে সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি।
রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকার বিশ্বাস বিল্ডার্সের সামনের সড়কে সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থানে চলছে পশু জবাই
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, আদাবর এলাকায় পশু জবাইয়ের নির্ধারিত স্থান ছিল দশটি। এর মধ্যে দুটি জায়গায় গিয়ে পাশের রাস্তা ও গলিতেই বেশি পশু জবাই হতে দেখা যায়।
রাজধানীর মিরপুর দশ নম্বর গোলচক্কর থেকে মিরপুর ১২ নম্বর পর্যন্ত সড়কে ঘুরেও একই চিত্র দেখা যায়।
মিরপুর-১২ এলাকায় সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থান ছিল ‘বি’ ব্লকের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের অফিসসংলগ্ন মাঠ। ওই এলাকার চা দোকানী হনুফা আক্তার বলেন, “এইখানে কেউ কোরবানি দিতে আসে নাই। সরকারের লোক (সিটি কর্পোরেশন) এইখানে মাইকিং করছে গতকাইল। অনেকে জানেই না।”
অবশ্য সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ ব্যাগ ও ব্লিচিং পাউডার সরবরাহ করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, “ভাই, কোরবানি তো শুধু স্পেস থাকলেই হয় না, আরও অনেক কিছু লাগে। যেমন, পানি না থাকলে চামড়া ছাড়ানো যায় না। গরুর মাংস প্রসেস করতে হলে বালতি বালতি পানি লাগে। সব জায়গায় পানির যোগান রাখে নাই।”
বিকালে সার্বিক পরিস্থিতি জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নির্ধারিত স্থানে পশু জবাইয়ের বিষয়ে এ বছর কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না। যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তাতে তেমন সাড়া মেলেনি।”
তবে ধীরে ধীরে নগরবাসীকে নির্দিষ্ট স্থানে পশু জবাইয়ে অভ্যস্ত করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
bdnews24