শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৫

বাবা-মা'র আশা মৃত শিশুটি ফিরে আসবে

 
    The youngest person to be cryogenically preserved
শিশু ম্যাথেরিন ব্রেইন ক্যান্সারে মারা যাওয়ার পরপরই তার দেহ এবং মস্তিস্ক সংরক্ষণ করা হয়।
থাইল্যান্ডে এ বছরের শুরুর দিকে দুই বছরের একটি শিশুর মৃত্যুর পর থেকে তাকে হিমায়িত করে রাখা হয়েছে সে আবার ফিরে আসবে এই প্রত্যাশায়।
এই শিশুটিকে মনে করা হচ্ছে হিমায়িত সর্বকণিষ্ঠ কোনও রোগী হিসেবে। তার মৃত্যুর কয়েক মুহুর্ত পরেই তার মস্তিষ্ক সংরক্ষণ করা হয় আর দেহ হিমায়িত করে রাখা হয়।
শিশুটির নাম ম্যাথেরিন নাভারাতপং। বিরল ধরনের এক ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে সে এ বছরের ৮ই জানুয়ারি মারা যায়।
তার বা-মা দুজনই স্বাস্থ্য প্রকৌশলী। ব্যাংকক শহর থেকে কিছুটা দূরে নিজেদের বাসভবনে শিশুটির বাবা সাহাতর্ন বলছিলেন, “যেদিন সে প্রথম অসুস্থ হল সেইদিনই আমার মাথায় প্রথম চিন্তাটা এলো। মনে হলো বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে কিছু একটা করতে হবে যাতে করে যতটা সম্ভব মানবিকভাবে তাকে আমাদের মাঝে রাখা সম্ভব হবে। যদিও বিষয়টি নিয়ে আমার মনের ভেতরেই দ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছিল। পরে আমি আমার পরিবারের অন্যদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করি”।
The youngest person to be cryogenically preserved
এই দম্পতি বিশ্বাস করেন তাদের মৃত শিশুটি ভবিষ্যতে অাবার জীবন ফিরে পাবেন।
যে প্রযুক্তিতে ম্যাথেরিনকে হিমায়িত করে রাখা হযেছে তাকে বলা হয় “ক্রাইওনিকস”।
এতে বিশ্বাস করা হয় যে, মৃতদেহ কিংবা মস্তিস্ক ( ম্যাথেরিনের ক্ষেত্রে যেমনটা হয়েছে) মৃত্যুর সাথে সাথে সংরক্ষণ করা হয়।
এরপর একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তা সংরক্ষণ করা হবে। ভবিষ্যতে চিকিৎসা ব্যবস্থার অসাধারণ অগ্রগতির ফলে তাকে আবার পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব হবে।
শাহাতর্ন এবং তার স্ত্রী নারীরাত দম্পতির আরও তিনটি সন্তান রয়েছে। সাহার্তন বলছেন, বৈজ্ঞানিক হিসেবে তিনি শতভাগ আত্মবিশ্বাসী যে, একদিন এমনটা নিশ্চই ঘটবে। তবে কবে তা তারা জানেন না।
অতীতে মনে করা হতো ৪শ থেকে ৫শ বছর সময় লেগে যেত, তবে বতর্মান প্রেক্ষাপটে ৩০ বছর সময় লাগতে পারে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
নাভারাতপং পরিবার অ্যারিজোনা ভিত্তিক অ-লাভজনক প্রতিষ্ঠান অ্যালকোরকে বেছে নিয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে মরদেহ শীতলীকরণ প্রক্রিয়া তদারকির জন্য ওই প্রতিষ্ঠানের একটি কর্মীদল ব্যাংককে এসে ছুটে আসে।
যখনই শিশুটিকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা করা হয় তখন থেকেই কাজ শুরু করে এই দল।
মানবদেহের টিস্যুর বড় ধরনের ক্ষতি ছাড়াই বিশেষ প্রক্রিয়ায় দেহ হিমায়িত করা হয়। এ
মৃত্যুর পর ম্যাথেরিনের দেহ যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় নিয়ে যাওয়ার পর মস্তিস্ক আলাদা করা হয় এবং ১৯৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা হয়।
অ্যালকোরের ইতিহাসে ১৩৪তম রোগী ম্যাথেরিন এবং এখনো পর্যন্ত সর্বকণিষ্ঠ।
বিষয়টি নির্মম এবং অনেকটা সায়েন্স ফিকশনের মত শোনালেও, এই পরিবারটির কাছে তা সন্তান হারানোর গভীর এক বেদনার পরে তাকে ফিরে পাবার অদ্ভূত আকুতি।

online desk

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন