বুধবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০১৬

৫০ বছরে ফেলুদা:এই চরিত্র জেমস বন্ডের মতো হলো না কেন?


Image captionকলকাতায় প্রকাশনা অনুষ্ঠানে আলোচনা।
প্রদোষ চন্দ্র মিত্রের প্রথম আবির্ভাব হয়েছিল আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগে ছোটদের পত্রিকা সন্দেশে। এই প্রদোষ চন্দ্র মিত্রের ডাকনাম ফেলুদা।
১৯৬৫ সালে জন্ম ফেলুদা চরিত্রটির – একটা ছোট গল্পের মাধ্যমে । এক বাঙালী গোয়েন্দা তিনি সেই সময়ে তার বয়স ছিল ২৭ বছর।
কিন্তু তারপরের ৫০ বছর ধরে একই চেহারা রয়ে গেছে চরিত্রটার। সাধারণ বাঙালী যে সমস্যার সমাধান করতে পারেন না, সেটা একমাত্র পারেন সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা।
এখনও ফেলুদার সিনেমা হাউসফুল হয়ে চলে সপ্তাহের পর সপ্তাহ। বাঙালী পাঠককে দুই জেনারেশনেরও বেশী সময় ধরে মাতিয়ে রেখেছে এই ফেলুদা চরিত্রটি।
অপরাধীদের ধরার জন্য কিভাবে কৌশল অবলম্বন করতে হয় সে বিষয়টি উঠে এসছে ফেলুদা চরিত্রে।
খ্যাতনামা চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের তৈরি করা এই চরিত্র দশকের পর দশক পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের পাঠকদের মন মাতিয়ে রেখেছে। আজ থেকে ৫০ বছর আগে সত্যজিৎ রায় এই চরিত্রটি তৈরি করেন।
Image captionফেলুদা সিরিজের বই পাঠকদের কাছে এখনো জনপ্রিয়।
এই পঞ্চাশ বছর উপলক্ষে কলকাতায় একটি বই প্রকাশ করা হলো। ক্রিকেট ইতিহাসবিদ বোরিয়া মজুমদার এই বইটি লিখেছেন।
কিন্তু পঞ্চাশ বছর পর এই ফেলুদা চরিত্রটি পাঠক এবং দর্শকদের মনে কতটা দাগ কাটতে পারছে?
মি: মজুমদার বলেন এই ফেলুদা হচ্ছে এমন একটি চরিত্র যার সাথে সাধারণ পাঠক নিজেদের মেলাতে পারেন।
ফেলুদা চরিত্রটির চালন-বলন, আচার-ব্যবহার এবং ভাষা – সবকিছুই একজন সাধারণ মধ্যবিত্ত বাঙালীর মতো।
মি: মজুমদার বলছেন জেমস বন্ড বা শার্লক হোমস হচ্ছে স্বপ্নের চরিত্র। তার কাছে মানুষ পৌঁছতে পারেনা। কিন্তু অনেক মানুষ নিজেকে ফেলুদার জায়গায় ভাবতে পারেন।
এই প্রকাশনা উৎসবে প্রায় এক হাজারের মতো লোক জড়ো হয়েছিলেন।
Image copyrightBoria Majumder
Image captionবোরিয়া মজুমদারের প্রকাশনা।
অনুষ্ঠানে আসা একজন দর্শক বলেন, “আমরা যতটা ট্রাই (চেষ্টা) করি আদর্শ মানুষ হবার, ফেলুদা হচ্ছে সেই আদর্শ চরিত্র।”
ফেলুদা চরিত্রটিকে নিয়ে সত্যজিৎ রায় ৩৫টি গল্প লিখেছেন। গল্পের পাশাপাশি ফেলুদা চরিত্রটিকে নিয়ে তৈরি হয়েছে অনেক সিনেমা এবং টেলিভিশন ধারাবাহিক।
কিন্তু ফেলুদাকে নিয়ে একটি হিন্দি টেলিফিল্ম ছাড়া অন্য ভারতীয় ভাষায় কোন সিনেমা হয়নি। এর কারণটা কী?
সত্যজিৎ রায়ের ছেলে এবং চলচ্চিত্র পরিচালক সন্দীপ রায় বলেন, “ ফেলুদা ট্রান্সলেট (অন্য ভাষায়) করা খুব কঠিন। এই গল্পে যে বাঙালিয়ানা আছে সেটাকে অন্যভাষায় অনুবাদ করা যায়না।”
ফেলুদা হচ্ছে এমন একটি চরিত্র যার সাথে প্রযুক্তির কোন সম্পর্ক নেই। তিনি মোবাইল ফোন, ফেসবুক কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন না।
মি: মজুমদার প্রশ্ন তোলেন তাহলে এই প্রজন্মের কাছে ফেলুদা চরিত্রটি কতটা প্রাসঙ্গিক থাকবে? এই চরিত্রটিকে এগিয়ে নিতে কী করা দরকার? এ বিষয়গুলো মি: মজুমদার তার বইতে তুলে ধরেছেন।
Image copyrightGetty
Image captionজেমস বন্ড সিরিজ দুনিয়াজুড়ে ব্যবসাসফল একটি চরিত্র।
পশ্চিমা দেশগুলোতে জেমস বন্ড এবং শার্লক হোমসকে নিয়ে অনেক কাজ হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে সেই চরিত্রগুলোকেও এগিয়ে নেয়া হয়েছে। সেই তুলনায় ফেলুদা চরিত্রটি কি থমকে গেছে?
মি: মজুমদার বলেন জেমস বন্ড এবং শার্লক হোমস শিল্পে পরিণত হয়েছে যেটিকে কেন্দ্র করে ব্যবসা হচ্ছে প্রচুর।
তিনি বলেন, “ যেখানে জেমস বন্ড থিম পার্ক হচ্ছে, সেখানে কেন ঢাকায় বা কলকাতায় ফেলুদাকে নিয়ে মিউজিয়াম হবেনা?”
তিনি বলেন জেমস বন্ড এবং শার্লক হোমসের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হলে ফেলুদা ব্র্যান্ডকে এগিয়ে নিতে হবে।

জিকা ভাইরাস নিয়ে এবার যুক্তরাষ্ট্রেও সতর্কতা


জিকা ভাইরাস নিয়ে এবার যুক্তরাষ্ট্রে সতর্কতা
Image captionসোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আশঙ্কা প্রকাশ করে যে পুরো আমেরিকাজুড়ে মশাবাহিত জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।
দক্ষিণ আমেরিকা থেকে যাতে জিকা ভাইরাস যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে না পড়ে তাই এবার সতর্কতা জারি করলো মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
কোনও নারী যদি গর্ভাবস্থায় জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হন তাহলে ছোট বা বিকৃত মস্তিষ্ক নিয়ে শিশুর জন্ম হতে পারে।
জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আছে এমন সব দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা গর্ভবতী নারীদের বিশেষ পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হবে।
ব্রাজিলে জিকা ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের খবর প্রকাশের পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষ সাবধানবাণীর পর যুক্তরাষ্ট্রও এখন বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ার ঘোষণা দিলো।
যেসব শিশুদের দেখে সন্দেহ হবে যে তারা জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত তাদের কিভাবে পরীক্ষা করা হবে, পাশাপাশি গর্ভবতী নারীদেরও কিভাবে পরীক্ষা করা হবে সে বিষয়েও বিভিন্ন নিয়মাবলী দেয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে স্বাস্থ্যকর্মীদের।
গর্ভবতী নারীরা মশাবাহিত জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা বা তারা বিদেশ থেকে এ রোগ নিয়ে এসেছে কিনা সে বিষয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আমেরিকার ডাক্তারদের গর্ভবতী নারীদের ভ্রমণের বৃত্তান্ত জেনে সেটা নিয়ে গবেষণা করতে বলা হয়েছে।
জিকা ভাইরাস নিয়ে এবার যুক্তরাষ্ট্রে সতর্কতাImage copyrightGetty
Image captionগর্ভবতী নারীরা মশাবাহিত জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা বা তারা বিদেশ থেকে এ রোগ নিয়ে এসেছে কিনা সে বিষয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
ইতোমধ্যে ক্যারিবিয়ান এবং উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার ২১ টি দেশে এ ভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে, সেসব এলাকার নারীদের রক্ত পরীক্ষা করে দেখতে বলা বলা হচ্ছে।
এদিকে জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ২ লাখ ২০ হাজার সেনা মোতায়েন করতে যাচ্ছে ব্রাজিল সরকার।
ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো স্টেডিয়াম মশামুক্ত করার জন্য পুরো স্টেডিয়ামে মশা নিধনের ধোঁয়া দেয়া হয়েছে।
ব্রাজিলের পরিবেশ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা মার্কাস ভিনিশাস ফেরেইরা বলছেন জিকা ভাইরাসের হুমকি মোকাবেলায় সকল চেষ্টাই চলছে।
তিনি এখানে বলেছেন, জিকা ভাইরাসের যে ঝুঁকির কথা বলা হচ্ছে তার অতীতের তুলনায় বড় কিছু নয়। চার বছর আগে সংক্রমণের হার ২.৯ শতাংশে এ বছর সেটি এক শতাংশে এসেছে বলে তিনি জানান।
সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আশঙ্কা প্রকাশ করে যে পুরো আমেরিকাজুড়ে মশাবাহিত জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এরপরই যুক্তরাষ্ট্র এখন বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ার ঘোষণা দিলো।
গর্ভাবস্থায় জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে বিকৃত মাথা নিয়ে জন্ম নিতে পারে শিশু।