মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

হাতের মুঠোয় প্রাণ নিয়ে মহাসড়ক পারাপার!

পদচারী–সেতু, এমনকি গতিরোধক না থাকায় বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের মহাসড়ক পার হচ্ছেন সেবা নিতে আসা রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা। সম্প্রতি তোলা ছবি l প্রথম আলোবগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফটকের সামনে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে এক দশকেও নির্মিত হয়নি পদচারী-সেতু (ফুটওভারব্রিজ)। নেই কোনো গতিরোধকও।
এতে গত দুই বছরে সেখানে অর্ধশত দুর্ঘটনায় প্রাণ ঝরেছে ছয়জনের। আহত হয়েছেন আরও অর্ধশত। এখনো হাতের মুঠোয় প্রাণ নিয়ে মহাসড়ক পার হন চিকিৎসক-কর্মচারী, মেডিকেল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা।
হাসপাতাল ও কলেজ প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, অন্তর্বিভাগ ও বহির্বিভাগে গড়ে প্রতিদিন আট হাজার রোগী ও তাঁদের স্বজন-দর্শনার্থী, চিকিৎসক-শিক্ষক-নার্স- কর্মচারী এবং মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে আসেন। এ ছাড়া রোগীদের ওষুধ, চিকিৎসাসামগ্রী, পথ্য, পানি ও খাবার আনতে প্রায়ই মহাসড়ক পার হতে হয়।
পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, ৯ ফেব্রুয়ারি অসুস্থ স্বামীকে হাসপাতালে নিয়ে এসে ওষুধ কেনার জন্য মহাসড়ক পারাপারের সময় বাসচাপায় নিহত হন গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বাজিতনগর গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী নুরজাহান বেগম (২৫)।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মেডিকেল কলেজের একজন শিক্ষক প্রথম আলোকে বলেন, গত রোজার মাসে হাসপাতালে ভর্তি অসুস্থ স্বামীর জন্য খাওয়ার পানি আনতে মহাসড়ক পারাপারের সময় বাসের চাপায় প্রাণ হারান এক গৃহবধূ।
জানতে চাইলে মেডিকেল কলেজ ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ শাহ আলম বলেন, পদচারী-সেতু ও গতিরোধক না থাকায় প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা ঘটছে এখানে।
গত দুই বছরে এখানে কমপক্ষে ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া অর্ধশত ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
হাসপাতালের হাড় জোড় বিভাগে চিকিৎসাধীন একজন রোগীর স্বজন তাসলিমা বেগম বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামীর হাত-পা ভেঙেছে। কোনোরকমে গাইবান্ধা থেকে বাসে এসে হাসপাতালের সামনে নেমেছি। অসুস্থ রোগী নিয়ে ব্যস্ত মহাসড়ক খুব কষ্ট করে পার হতে হয়েছে। এখন ওষুধ, খাবার ও পানি কিনতে প্রাণ হাতের মুঠোয় নিয়ে পার হতে হয়।’
শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম আহসান হাবিব বলেন, ‘কলেজ ফটকে মহাসড়ক পারাপার হতে গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর প্রাণ এখন ঝুঁকির মুখে। গতিরোধক ও পদচারী-সেতু চেয়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগে অসংখ্যবার চিঠি দিয়েছি। একাধিক মন্ত্রীর কাছে ধরনা দিয়েছি। কিন্তু কোনো কিছুতেই কাজ হয়নি।’
সওজের বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ওই ফটকের সামনে পদচারী-সেতু কিংবা গতিরোধক নির্মাণের কোনো পরিকল্পনা আপাতত সওজের নেই। মন্ত্রণালয় অনুমোদন ও বরাদ্দ দিলে তা নির্মাণ করা হবে।

বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডার পেলেন সেই আউয়াল

বিসিএস পরীক্ষায় ‘নিষিদ্ধ হওয়া’ সেই আবদুল আউয়াল অনেক নাটকীয়তার পর অবশেষে বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডার পেয়েছেন। আজ সোমবার পিএসসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৯ তম বিসিএস পরীক্ষায় প্রথম হওয়া আবদুল আউয়ালকে পুলিশ ক্যাডারে মনোনীত করা হয়েছে। 
পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আ ই ম নেছারউদ্দিন প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, ‘এ বছরের ১০ জানুয়ারি আদালতের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি কর্ম-কমিশন ওই প্রার্থীকে পুলিশ ক্যাডারের জন্য মনোনীত করেছে। এখন যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাঁর কাগজপত্রের সত্যতা যাচাই ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে।’
২০০৯ সালে ২৯ তম বিসিএস এর প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পরের বছর লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার পর ২০১১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। ওই ফলাফলে সুপারিশকৃতদের মধ্যে আবদুল আউয়ালের রোল নম্বর ছিল না। তবে ২০১২ সালে পিএসসির যে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় তাতে দেখা যায়, আবদুল আউয়াল সবার মধ্যে প্রথম হয়েছেন। এরপর আদালতে যান আউয়াল। ২০১৫ সালের ৩ জানুয়ারি ‘বিসিএসে প্রথম হয়েও চাকরি পাননি আউয়াল’ শিরোনামে প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
পুলিশ ক্যাডারে নিয়োগ পাওয়ার খবরে সন্তুষ্ট আবদুল আউয়াল। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘বিসিএসের ফলাফলে আমার রোল না থাকলেও বার্ষিক প্রতিবেদন দেখে জানতে পারি, আমি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছি এবং পছন্দের পুলিশ ক্যাডার পেয়েছি। তখন আমি একজন আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করি এবং হাইকোর্টে রিট করি। পরে হাইকোর্ট এবং আপিল বিভাগ আমাকে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন।’
আবদুল আউয়ালের বিষয়টি নিয়ে বহু নাটকীয়তা হয়েছে পিএসসিতে। এখনো তা চলছে। জেলার নাম ভুল দেওয়ার অভিযোগে আউয়ালের ২৯ তম বিসিএসের প্রার্থিতাই বাতিল করা হয়েছিল। এ ছাড়া সরকারি চাকরিতে তাঁকে নিষিদ্ধও করেছিল পিএসসি। তবে কেন এবং কী প্রক্রিয়ায় আবদুল আউয়ালের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছিল সেই প্রক্রিয়াটি পুরোটাই গোপন রাখা হয়েছিল। কিন্তু বার্ষিক প্রতিবেদনে নাম চলে আসায় বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। এর জের ধরে পিএসসির প্রধান মনোবিজ্ঞানী রওশন আরা জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতমূলক অপরাধে জড়িত থাকারও অভিযোগ আনা হয়। কিন্তু তিনি হাইকোর্টে গিয়ে তাঁকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করেন। তিনি আদালতকে জানান, কম্পিউটার শাখা থেকে তিনি যে ফলাফল পেয়েছেন, তা-ই হুবহু পিএসসির বার্ষিক প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছে। তাতে দেখা গেছে, আউয়াল পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিএসসির কয়েকজন কর্মকর্তা বলেছেন, পুরো বিষয়টি নিয়ে পিএসসিতে অনেক নাটক চলছে। এই ঘটনার স্বচ্ছ তদন্ত করলে পিএসসির অনেক অনিয়ম প্রকাশিত হয়ে যাবে। তবে আবদুল আউয়াল আপাতত তাঁর নিয়োগের খবরেই খুশি।

'এর পর সাংবাদিকরা ভুল স্বীকারও করতে চাইবে না'

Image captionমাহফুজ আনাম
'বাংলাদেশের ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের আত্মসম্মান থাকলে ডিজিএফআইএর দেয়া খবর প্রচারের জন্য তিনি পদত্যাগ করতেন' - প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন মন্তব্যের জবাবে মি. আনাম বলছেন, তাকে 'আইসোলেট' করার জন্যই এসব বলা হচ্ছে, এসব খবর অন্যরাও ছেপেছিল।
আজ ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মি. আনামের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, 'বিগত সেনা-সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকারের সময় সেনা গোয়েন্দা বিভাগের দেয়া খবর যাচাই না করে প্রকাশ করে তিনি ভুল করেছেন - এমন স্বীকারোক্তির পর আত্মমর্যাদা থাকলে মি. আনাম পদত্যাগ করতেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় বিবিসি বাংলাকে মাহফুজ আনাম বলেন, তাকে বিচ্ছ্ন্নি করার জন্যই এসব কথা বলা হচ্ছে। কারণ সে সময় ওই খবরগুলো অনেক সংবাদমাধ্যমই প্রকাশ করেছিল।
বিবিসি বাংলার মিজানুর রহমান খানকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে সৎ সাংবাদিকতার ওপর একটা বিরাট অন্যায় অভিযোগ আনা হচ্ছে ।
"আমি মনে করেছিলাম যে স্বত:প্রণোদিতভাবে জনসমক্ষে ভুল স্বীকার করে আমি একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করছি। কিন্তু এর প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হচ্ছে যেন ভুল স্বীকার করাটাও আমার একটা ভুল হয়েছে।"
তিনি বলেন, "এর যে ফল হবে তা হলো সাংবাদিকরা নিজের ভুল স্বীকার করার কোন রকম উৎসাহ আর পাবেন না - এই অবস্থা দেখলে।"
মাহফুজ আনাম বলেন, ডিজিএফআইয়ের দেয়া এসব খবর বাংলাদেশের অনেক সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে, টিভিতে এসব রেকর্ডিং বাজিয়ে শোনানো হয়েছে। তার পরও এমন ধারণা তৈরি হচ্ছে যেন ডেইলি স্টার এককভাবেই এগুলো ছেপেছে।
'আত্মসম্মান থাকলে তিনি পদত্যাগ করতেন' প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের জবাবে মি. আনাম বলেন, "আমি মনে করি এটা আমাকে আইসোলেট করে বলা হচ্ছে। ব্যাপারটা আরো ব্যাপক।"
"ওই খবরগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই না করে ছাপানোর ফলে আমি যথাযথ সম্পাদকীয় বিবেচনাবোধের পরিচয় দিতে পারি নি - আমার এই আত্ম-উপলব্ধিমূলক মন্তব্য থেকে সাংবাদিকতার একটা বিরাট দুর্বল জায়গা উন্মোচিত হয়েছে। আমরা যে সেনা গোয়েন্দা সংস্থার চাপে থাকি - সেটা বেরিয়ে এসেছে। ভবিষ্যতে যেন পরিস্থিতি এদিকে না যায় - আলোচনাটা সেদিকে গেলে দেশের সাংবাদিকতার জন্য লাভ হবে।"
"এখনো তো আমরা র‍্যাবের ক্রসফায়ারে মৃত্যুর খবর ওরা যেভাবে দেয় - সেভাবেই ছেপে যাচ্ছি। এটা তো একটা বিরাট ইস্যু - যা গভীরভাবে দেখা দরকার।"
প্রধানমন্ত্রী হাসিনা আজ আরো বলেন, 'ডিজিএফআইয়ের দেয়া তথ্য তারা যেভাবে দিয়েছে সেভাবেই ডেইলি স্টার ছেপে দিয়েছে' এমন কথা 'পাগলেও বিশ্বাস করবে না'।
এর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মাহফুজ আনাম বলেন, তিনি যে ইঙ্গিত করছেন তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ডেইলি স্টার এমন কিছু করে নি - বলেন তিনি।
মাহফুজ আনাম বলেন, মাত্র তিনটি রিপোর্ট নিয়ে কথা হচ্ছে। অথচ তত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় ছিল দু বছর, সেসময় ডেইলি স্টার প্রায় দুশো সম্পদকীয় লিখে নির্বাচন এবং জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলেছে।

শরণার্থী আশ্রয়কেন্দ্রে আগুন, কিছু লোকের 'হর্ষধ্বনি'

germany_migrant_centre_fireImage copyrightunk
Image captionবাউটজেন শহরের আশ্রয়কেন্দ্রটিতে আগুন জ্বলছে
জার্মানিতে আসা শরণার্থীদের জন্য পূর্বাঞ্চলীয় বাউটজেন শহরে একটি বাসভবন তৈরির সময় তাতে আগুন লেগে গেলে সেখানে জড়ো হওয়া লোকজন হর্ষধ্বনি করে বলে পুলিশ বলছে।
ভবনটিতে আগে একটি হোটেল ছিল - যাকে সংস্কার করে একে শরণার্থীদের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত করার কাজ চলছিল। সে সময়ই রোববার ভোরে ভবনটিতে হঠাৎ আগুন ধরে যায়।
পুলিশ বলছে, তখন সেখানে জড়ো হওয়া লোকেরা উল্লাস করে, এবং অনেকে আগুন নেভানোর কাজে বাধা দেবারও চেষ্টা করে।
উল্লাসকারীরা তাদের আনন্দ গোপন করার কোন চেষ্টাই করেনি বলে বলছে পুলিশ। তারা আরো জানায়, তিনজনকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেয়া হয়, আর দুজন তরুণকে 'মাতাল' অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়।
আগুনে ভবনটির ছাদ পুড়ে গেছে। শহরের কর্তৃপক্ষ সন্দেহ করছে যে ভবনটিতে কেউ আগুন লাগিয়ে দিয়ে থাকতে পারে। পুলিশ জানায়, তারা তদন্তে সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখছেন।
স্যাক্সনির মুখ্যমন্ত্রী স্তানিস্লাভ টিলিশ ওই লোকদের 'অপরাধী' বলে বর্ণনা করে বলেছেন, এটা খুবই দু:খজনক ঘটনা।
অগ্নিকান্ডে উল্লাস প্রকাশের ঘটনা এমন জায়গায় ঘটেছে যেখানে কদিন আগেই একদল লোক শরণার্থী বহনকারী একটি বাসের পথরোধ করেছিল।
সিরিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও আফ্রিকার নানা দেশ থেকে জার্মানিতে আসা ১০ লাখেরও বেশি শরণার্থী আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছে।
তাদের ব্যাপারে সাধারণভাবে জনগণের মনোভাব 'ইতিবাচক', তবে একে 'জার্মান সংস্কৃতির প্রতি হুমকি' বলে মনে করে এমন লোকেরা বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করেছে, বলছেন বিশ্লেষকরা।5

আত্বমর্যাদা থাকলে' মাহফুজ আনাম পদত্যাগ করতেন: শেখ হাসিনা

Sheikh HasinaImage copyrightfocus bangla
Image captionবাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেনা গোয়েন্দাদের দেয়া খবর প্রকাশের অভিযোগে দেশটির শীর্ষস্থানীয় ইংরেজী দৈনিক ডেইলী স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
আজ ঢাকায় একুশে ফেব্রুয়ারী উপলক্ষে আয়োজিত একটি সমাবেশে তিনি বলেন, আত্মমর্যাদা থাকলে মি. আনাম পদত্যাগ করতেন।
সাবেক সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সংবিধান লঙ্ঘনকারীদের বিচার করা হবে বলেও হুঁশিয়ারী করেন শেখ হাসিনা।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় 'সেনা-গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই-এর দেয়া সংবাদ যাচাই না করে ছাপিয়ে' তিনি ভুল করেছেন - একটি টিভি অনুষ্ঠানে মাহফুজ আনাম সম্প্রতি এ কথা বলার পরপরই এ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক-আলোচনা শুরু হয় বাংলাদেশে ।
এর পর মাহফুজ আনামকে আটক ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে তাঁর বিচার দাবী করেন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় মি. আনামের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন অনেকে - যাতে শত শত কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়।
তবে শেখ হাসিনা নিজে এতদিন এ নিয়ে কোন কথা বলেন নি। আজই সরাসরি ডেইলী স্টার সম্পাদকের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিলেন তিনি - যার ভাষা ছিল অত্যন্ত কঠোর।
টেলিভিশন টকশো’তে নিজের ভুল স্বীকার করার ব্যাখ্যা হিসেবে মি. আনাম বলেছিলেন যে সাংবাদিকতার নৈতিকতার অবস্থান থেকে তিনি ভুল স্বীকার করেছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "ডেইলি স্টারের মতো একটা পত্রিকা ডিজিএফআইএর একজন কর্মকর্তা যা লিখে দেবে তাই ছাপারে - এটা কোন পাগল বিশ্বাস করবে?"
mahfuz anam
Image captionডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম
শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে যুক্তি দেন যে বিবিসি ব্রিটেনের কোন একজন মন্ত্রী কিংবা এমপি সম্পর্কে ভুল সংবাদ প্রকাশ করার পর প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক পদত্যাগ করেছিলেন।
এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে কিছু না বললেও প্রধানমন্ত্রী মাহফুজ আনামের নিজ পদে থাকার বিষয়েই প্রশ্ন তোলেন।
"তিনি ভুল করেছেন বললেন, কিন্তু তার ভুলের খেসারত বাংলাদেশের জনগণ দিল, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দিল, ব্যবসায়ী মহল, ছাত্রসমাজ দিল, সকলে দিল - আর আমি আমার পরিবার তো দিয়েছিই। কই উনি ভুল স্বীকার করে পদত্যাগ করার সাহস তো দেখাতে পারলেন না? এতটুকু আত্মমর্যাদা থাকলে নিশ্চয়ই তিনি এর পর পদত্যাগ করতেন।"
টিভি টকশোয়ের বক্তব্যের পর মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানির অভিযোগে সারা দেশে প্রায় আশিটির মতো মামলা হয়েছে।
ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে মি. আনামের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হলেও তাঁর নিজের দল আওয়ামী লীগের নেতারা এ বিষয়ে খুব একটা কথা বলেনি বলে অভিযোগ করেন শেখ হাসিনা।
"আমার দু:খ হয়। আমাদের দলে অনেকে এ ব্যাপারে মুখ খুলেছে, অনেকের দেখি এ ব্যপারে মুখ খুলতে কেন যেন তাদের দ্বিধা। সত্য কথা বলতে কেন এত ভয়?" - বলেন তিনি।
ডেইলী স্টার ও নাম না নিয়ে আরেকটি সংবাদপত্রের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন যে এরা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মতই সংবিধান ধ্বংসের বিচার হবে জানান প্রধানমন্ত্রী।

এটিএম বুথে জালিয়াতিতে বিদেশিসহ চারজন গ্রেপ্তার

bangla_atm_boothImage copyrightBBC Bangla
Image captionসম্প্রতি বেসরকারি ব্যাংক ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক এবং সিটি ব্যাংকসহ বেশ ক'টি ব্যাংকের এটিএম বুথে ক্লোন কার্ড ব্যবহার করে অর্থ উত্তোলনের ঘটনা ঘটেছে---ফাইল ফটো
এটিএম বুথে জালিয়াতির ঘটনায় একজন বিদেশি নাগরিকসহ মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বিদেশি নাগরিক পোল্যান্ডের পাসপোর্টধারী বলে জানা যাচ্ছে।
একই ঘটনায় সিটি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তাকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান নবগঠিত কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান ডিআইজি মনিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আটক হওয়া তিন কর্মকর্তা ব্যাংকের কার্ড ডিভিশনে কাজ করতেন।
মি. ইসলাম বলেন, রোববার রাতে রাজধানীর গুলশান ও অন্যান্য এলাকা থেকে ঐ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এখন তাদের আদালতে তুলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিম্যান্ড চাওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
সম্প্রতি বেসরকারি ব্যাংক ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক এবং সিটি ব্যাংকসহ ঢাকার বেশ ক'টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের এটিএম বুথে ক্লোন কার্ড ব্যবহার করে অর্থ উত্তোলনের ঘটনা ঘটেছে।
এতে অন্তত ১০০০ গ্রাহক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ব্যাংকগুলো বলছে।
কয়েকদিন আগে পুলিশ বলেছিল, ঢাকায় এটিএম বুথগুলোতে কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা ওঠানোর সাথে পূর্ব ইউরোপের কয়েকজন নাগরিক জড়িত রয়েছে।
তারা পুলিশের নজরদারিতে রয়েছেন, এবং তাদের ঘিরেই তদন্ত চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছিল পুলিশ।