শনিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৫

ঢাকায় দুটি বেসরকারি হাসপাতাল বন্ধের নির্দেশ

 
               এ পর্যন্ত ঢাকার ৫০ টি স্বাস্থ্যসেবার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ      
          
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মকর্তারা স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ব্যর্থতার অভিযোগে আজ ঢাকায় দুটো বেসরকারী হাসপাতাল বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে, আর তিনটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে আর্থিক জরিমানা করেছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, গতকালও একই রকম অভিযানে সাতটি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল।
বেসরকারী স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর মান নিয়ে যে অভিযোগ রয়েছে, সে ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বর্তমানে যে অভিযান চালাচ্ছে, তার অংশ হিসেবে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়।
কর্মকর্তারা বলছেন, কোনভাবেই মান নিশ্চিত করতে পারছে না, গত ছয় মানে এমন প্রায় ৫০টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র‍্যাবের সদস্য নিয়ে অভিযান চালিয়েছেন মোহাম্মদপুর এলাকায়। এখানে তাদের অভিযানের মূলকেন্দ্রে ছিল একটি মানসিক হাসপাতাল, যেটি আবার মাদক নিরাময় কেন্দ্র হিসেবেও পরিচালিত হয়।
র‍্যাবের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলছেন, সেখানে গিয়ে তাঁরা নানা রকম অনিয়ম দেখতে পান, যার মধ্যে রয়েছে মেয়াদোর্ত্তীন ঔষধের ব্যবহার।
এছাড়া, হাসপাতালটিতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স নেই বলে জানান মি. খান। তিনি বলেন, কয়েকজন চিকিৎসককে চুক্তিভিত্তিক রাখা হয়েছে হাসপাতালটিকে দাঁড় করানোর জন্যে। এছাড়া, মানসিক রোগী ও মাদক নিরাময়ের জন্যে আসা দের একসাথে রাখা হয়েছে, যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
বেসরকারী স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলো বিরুদ্ধে অভিযানে ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক সামিউল ইসলাম সাদী।
তিনি বলছেন, বেসরকারী ঐ হাসপ্তালটিতে ৫২ জন রোগী থাকার কারণে তাদের আগামী তিন দিনের মধ্যে সরকারী হাসপাতালে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং এরপরই হাসপাতালটি বন্ধ করে দেয়া হবে।
আর এর মালিককে কারাদণ্ড সহ আর্থিক জরিমানাও করা হয়েছে। এছাড়া, শুক্রবার আরো একটি হাসপাতাল বন্ধের নির্দেশ ও তিনটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে জরিমানা করা হয়েছে নানা রকম অনিয়মের জন্যে। আর বৃহস্পতিবারই দুটো বেসরকারী ক্লিনিক বন্ধ ও পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয় বলে জানান সামিউল ইসলাম সাদী।
তিনি বলছেন, একটি বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে এসব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এই বিশেষ অভিযানে দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ২,০০০ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে নিরীক্ষা করে দেখা হয়েছে এবং এদের একটি বড় অংশই ত্রুটিপূর্ণ পাওয়া গেছে বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক। তিনি বলেন, ৪০০ প্রতিষ্ঠানকে এরই মধ্যে নোটিশ দেয়া হয়েছে তাদের ত্রুটি ঠিক করতে।
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান যে সারা দেশে প্রায় ৫,০০০ মতো বেসরকারী স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান রয়েছে কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি দেখা হচ্ছে, তাহলো এসব প্রতিষ্ঠানের আদৌ কোন লাইসেন্স রয়েছে কিনা। মি. মালেক বলেন, এসব প্রতিষ্ঠানকে সরকার কোন ছাড় দিতে চায় না।
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, বেসরকারী হাসপাতাল, ক্লিনিক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান যাতে সঠিক নিয়মনীতি মেনে চলে, সে জন্যে একটি নীতিমালা তৈরী করা হচ্ছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন