বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৫

বাংলাদেশে বিদেশী পর্যটক কমে যাচ্ছে

    bbc                 সুন্দরবন থাকে পর্যটকদের পছন্দের তালিকার মধ্যে                

বাংলাদেশে বিদেশী পর্যটকের সংখ্যা খুব বেশি না হলেও মৌসুমের শুরুতেই বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
দুইজন বিদেশী নাগরিক হত্যার প্রেক্ষাপটে এ পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। একের পর এক বুকিং বাতিল হওয়ার খবর পাচ্ছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা।
কক্সবাজারের অভিজাত হোটেল লং বিচ। দু’জন বিদেশী নাগরিক হত্যার পর চলতি মাসের জন্যই অন্তত ১০০ রুম বুকিং বাতিল হয়েছে এই হোটেলে। এদের প্রায় সবাই বিদেশী পর্যটক ছিলেন।
বাংলাদেশে সাধারণত অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত পর্যটনের মৌসুম হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এ সময় বাংলাদেশের ভেতরে অবস্থানরত বিদেশী নাগরিকরা যেমন ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেন, তেমনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে অনেকেই কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসেন।
কিন্তু এবারে পরিস্থিতি ভিন্ন। চলতি অক্টোবর এবং নভেম্বর মাসের জন্য কক্সবাজারের হোটেলগুলোতে বিদেশী পর্যটকদের যেসব বুকিং ছিল তার অধিকাংশই বাতিল হয়েছে।
লং বিচ হোটেলের কর্মকর্তা ইমরান হোসেন জানিয়েছেন, বিদেশী নাগরিকদের বাতিল হয়ে যাওয়া রুম বুকিং –এর আর্থিক মূল্য প্রায় ৩৫ লাখ টাকা।
মি: হোসেন বলেন ,যারা হোটেল বুকিং বাতিল করেছেন তারা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কথা বলেছেন।
BBC                 কক্সবাজারের একটি হোটেলের অন্তত ১০০টি রুম বুকিং বাতিল হয়েছে                 
শুধু পর্যটনের উদ্দেশ্যে কতজন বিদেশী নাগরিক বাংলাদেশে আসে তার কোন পরিসংখ্যান নেই। গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যানে দেখা যায় বিভিন্ন ধরনের কাজে বছরে গড়ে প্রায় চার লাখের মতো বিদেশী নাগরিক বাংলাদেশে এসেছে।
ঢাকার গাইড ট্যুরস বছরে গড়ে চার হাজার বিদেশী নাগরিকদের জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণের আয়োজন করে। এদের মধ্যে ৭০ ভাগই হচ্ছে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশী নাগরিক। বাকি ৩০ ভাগ শুধু পর্যটনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে আসে।
গাইড ট্যুরসের প্রধান নির্বাহী হাসান মনসুর বলেন দু’জন বিদেশী নাগরিক হত্যার ঘটনা পর্যটনকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
মি: মনসুর বলেন , “ আগামীকাল ( বৃহস্পতিবার) থেকে চারদিনের জন্য আমরা সুন্দরবনে একটি ট্যুরের আয়োজন করেছিলাম। পর্যটকদের মধ্যে ১৫ জন বিদেশী নাগরিক ছিল। সবাই তাদের ট্যুর ক্যানসেল (বাতিল) করেছে।”
আগামী নভেম্বর পর্যন্ত এ ধরনের আরো বেশ কয়েকটি ট্যুর বাতিল করা হয়েছে বলে জানান মি: মনসুর।
তবে বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড বলছে সার্বিক পর্যটনের উপর বিদেশী নাগরিক হত্যার ঘটনা বড় কোন প্রভাব ফেলবে না।
পর্যটন বোর্ডের একজন উপ-পরিচালক আখতার আহমেদ মনে করেন এই অবস্থা সাময়িক। তিনি জানান পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন জায়গায় বাড়তি নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে।
বিভিন্ন হোটেল কর্তৃপক্ষ এবং ট্যুর অপারেটররা বলছেন রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে গত দুই বছর পর্যটন ব্যবসা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এবার ব্যবসা চাঙ্গা হবার আশা করেছিলেন তারা। কিন্তু বিদেশী নাগরিক হত্যার ঘটনা পর্যটন ব্যবসাকে আবারো বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন