সুনামগঞ্জ জেলায় টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে ২০০৫ সালের বিস্ফোরণের জন্য সাড়ে ১২ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ আদায়ের লক্ষ্যে এক আন্তর্জাতিক সালিশের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ।
২০০৫ সালের কানাডীয় কোম্পানি নাইকো রিসোর্সেস পরিচালিত এই গ্যাসক্ষেত্রের একটি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলনের সময় জানুয়ারি ও জুন মাসে পর পর দু'দফা রিগে আগুন লেগে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের কারণে ঐ গ্যাসক্ষেত্র এবং আশেপাশের পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয় বলে সরকারের প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছিল। কর্মকর্তারা বলছেন, দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় ক্ষতিপূরণ আদায়ের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর সরকার ঢাকার একটি আদালতে মামলা করে। তবে সরকার এখন বিষয়টি নিয়ে লন্ডন-ভিত্তিক সালিশী আদালত ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটেলমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট ডিসপিউট বা ইকসিড-এ যাচ্ছে।
জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলছেন, নভেম্বর মাসের দুই তারিখে এই শুনানী শুরু হবে এবং তখন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণের অর্থ দাবী করা হবে।
মি হামিদ আরো বলেন, এই ব্লোআউট-জনিত ক্ষতির পরিমাণ আরো নির্ভুলভাবে নিরুপণের জন্য একটি রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে। তবে এ রিপোর্ট তৈরি হলে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়বে কিনা - এ প্রশ্ন করে হলে তিনি বলেন, সেটা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ।
২০০৫ সালে টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে দুই দফা বিস্ফোরণের ঘটনার দশ বছর পর ক্ষতিপূরণ আদায়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের সরকার। ওই বছরই নাইকো রিসোর্সেস পরিচালিত টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরণের জন্যে বিশেষজ্ঞরা অদক্ষ খনন প্রক্রিয়াকে দায়ী করেছিলেন। পরপর দুই দফা
এ ঘটনার পর ফেনী গ্যাসক্ষেত্রের গ্যসের দাম বাবদ নাইকোকে ২৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করার নির্দেশনা থাকলেও বাংলাদেশ তা এখনো পরিশোধ করে নি।
এ ব্যাপারে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বা বেলা হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছিল। ঐ মামলায় হাইকোর্ট টেংরাটিলার ক্ষতিপূরণের বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ফেনী গ্যাস ক্ষেত্রে থেকে সরবরাহ করা গ্যাসের দাম নাইকোকে পরিশোধ না করতে সরকারকে নির্দেশ দেয়।
নাইকো সে সময় ফেনী গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করছিল।
জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী জানান, ফেনী থেকে দেয়া গ্যাসের দাম পরিশোধের দাবী জানিয়ে নাইকো ইকসিডে গেলে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে গ্যাসের দাম পরিশোধের নির্দেশনা দেয়া হয়।
এই অর্থের পরিমান প্রায় আড়াই কোটি মার্কিন ডলার বলে জানান মি. হামিদ, যদিও বাংলাদেশ তা পরিশোধ করেনি।
জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি নিয়ে ইকসিডে আগামী ৬ই নভেম্বর পর্যন্ত শুনানী হবে। আর এ ক্ষেত্রে আইনজীবী নিয়োগ সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন