সম্প্রতি দুই যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড নিয়ে পাকিস্তানের ‘নির্লজ্জ হস্তক্ষেপে’ ঢাকা ‘কড়া প্রতিবাদ’ জানানোর এক সপ্তাহ পর ইসলামাবাদে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনারকে তলব করেছে দেশটি।
সোমবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২২ নভেম্বর প্রথম প্রহরে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃতুদণ্ড কার্যকর করার পর এক বিবৃতিতে উদ্বেগ জানায় পাকিস্তান।
এর আগেও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার ও যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নেতাদের সাজা নিয়ে পাকিস্তানের রাজনীতিকরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
এসবের প্রতিক্রিয়ায় ২৩ নভেম্বর পাকিস্তানের হাই কমিশনারকে তলব করে এবং কড়া ভাষায় লেখা প্রতিবাদলিপি তুলে দেয় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সোমবারের বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনারকে তলব করে জানানো হয়েছে, “২৩ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে দেওয়া প্রতিবাদলিপিতে বাংলাদেশ সরকারের ভিত্তিহীন ও ধারণাপ্রসূত দাবিগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান সরকার।”
২৫ বছরের শোষণ-বঞ্চনার পর বাঙালিদের স্বাধিকারের দাবিকে দমন করতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ নির্বিচার হত্যাকাণ্ড শুরু করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী।
তখন প্রতিরোধ যুদ্ধে নামে বাঙালিরা; নয় মাসের রক্তাক্ত সংগ্রামের পর স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয় ঘটে।
একাত্তরে বাঙালি নিধনে পাকিস্তানি বাহিনী এদেশেরই কিছু দোসর পেয়েছিল। জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ রাজনৈতিক দল হিসেবে তাতে সমর্থন দেয়; গঠন করে রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনী।
মুসলিম লীগ নেতা পাকিস্তান গণপরিষদের সাবেক স্পিকার ফজলুল কাদের চৌধুরীর ছেলে সালাউদ্দিন একাত্তরে চট্টগ্রামের ত্রাস হিসেবে কুখ্যাত ছিলেন। সালাউদ্দিন বাংলাদেশের মন্ত্রীও হয়েছিলেন।
অন্যদিকে একাত্তরে আল বদর বাহিনীর প্রধান ছিলেন মুজাহিদ। বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন তারই নেতৃত্বে হয়েছিল। তিনিও বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারেরর মন্ত্রী হয়েছিলেন।
এই দুজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনায় ইসলামাবাদের ‘গভীর নাখুশি’ প্রকাশ করে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের এই বিচারকে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ আখ্যায়িত করে বিবৃতিতে দেয় পাকিস্তান।
এর পার দেশটির মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবী আসমা জাহাঙ্গীর বলেন, এই প্রতিক্রিয়া দিয়ে ইসলামাবাদ প্রমাণ করেছে যে, এই দুজন আসলে রাজনৈতিক চর ছিল, কাজ করছিল পাকিস্তানের স্বার্থে।
প্রতিবাদলিপিতে ঢাকাও বলেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যায় দণ্ডিতদের পক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়ে পাকিস্তান ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যার সঙ্গে নিজের প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা ও সহযোগিতার বিষয়টি স্বীকার করল।
এর প্রতিবাদের জের ধরেই ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনারকে ডেকে পাঠান পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া ও সার্কের মহাপরিচালক।
ইসলামাবাদের বিবৃতিতে বলা হয়, এই তলব করার মধ্য দিয়ে অপরাধ বা যুদ্ধে বর্বরতা সংঘটনে জড়িত থাকার বিষয়ে ঈঙ্গিতকেও পাকিস্তান খারিজ করে দিয়েছে। সত্য থেকে দূরে বেশি কিছু করা যায় না।
“এটা দুঃখজনক যে, বাংলাদেশের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কোন্নয়নে আমাদের আন্তরিক আকাঙ্ক্ষার পরও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা হয়েছে।”
‘দুদেশের মানুষ বন্ধুত্বের ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে শুধু ধরে রাখতেই চায় না, উন্নতও করতে চায়’ বলে মনে করে পাকিস্তান।
‘কিন্তু বাংলাদেশ সরকার দৃশ্যত এই আবেগকে সম্মান করে না বলে’ দুঃখপ্রকাশ করে বিবৃতিতে বলা হয়, “এই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি হল-১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি।”
ওই চুক্তি নিয়ে পাকিস্তান ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে বলে বাংলাদেশ সরকারের অভিযোগের বিষয়ে বলা হয়, “এটা স্পষ্ট করা দরকার যে চুক্তির অংশ হিসেবে ‘সাধারণ ক্ষমার আওতায় বিচার না করার সিদ্ধান্ত’ নিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার।
“বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও জোরদার করার আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করছে পাকিস্তান। কারণ, আমরা বিশ্বাস করি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের জনগণের হৃদয় স্পন্দনে ঐকতান রয়েছে।
“দক্ষিণ এশীয় উপমহাদেশের মুসলিমদের জন্য স্বতন্ত্র মাতৃভূমি প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে দুই দেশের জনগণ যে ভূমিকা রেখেছে তা মনে রাখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
বিবৃতির শেষে বলা হয়, “তাই, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের জনগণের সামষ্টিক কল্যাণের জন্য শুভেচ্ছা, বন্ধুত্ব ও ঐকতানের চেতনায় সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াও নিতান্ত জরুরি।”
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২২ নভেম্বর প্রথম প্রহরে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃতুদণ্ড কার্যকর করার পর এক বিবৃতিতে উদ্বেগ জানায় পাকিস্তান।
এর আগেও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার ও যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নেতাদের সাজা নিয়ে পাকিস্তানের রাজনীতিকরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
এসবের প্রতিক্রিয়ায় ২৩ নভেম্বর পাকিস্তানের হাই কমিশনারকে তলব করে এবং কড়া ভাষায় লেখা প্রতিবাদলিপি তুলে দেয় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সোমবারের বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনারকে তলব করে জানানো হয়েছে, “২৩ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে দেওয়া প্রতিবাদলিপিতে বাংলাদেশ সরকারের ভিত্তিহীন ও ধারণাপ্রসূত দাবিগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান সরকার।”
২৫ বছরের শোষণ-বঞ্চনার পর বাঙালিদের স্বাধিকারের দাবিকে দমন করতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ নির্বিচার হত্যাকাণ্ড শুরু করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী।
তখন প্রতিরোধ যুদ্ধে নামে বাঙালিরা; নয় মাসের রক্তাক্ত সংগ্রামের পর স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয় ঘটে।
একাত্তরে বাঙালি নিধনে পাকিস্তানি বাহিনী এদেশেরই কিছু দোসর পেয়েছিল। জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ রাজনৈতিক দল হিসেবে তাতে সমর্থন দেয়; গঠন করে রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনী।
মুসলিম লীগ নেতা পাকিস্তান গণপরিষদের সাবেক স্পিকার ফজলুল কাদের চৌধুরীর ছেলে সালাউদ্দিন একাত্তরে চট্টগ্রামের ত্রাস হিসেবে কুখ্যাত ছিলেন। সালাউদ্দিন বাংলাদেশের মন্ত্রীও হয়েছিলেন।
অন্যদিকে একাত্তরে আল বদর বাহিনীর প্রধান ছিলেন মুজাহিদ। বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন তারই নেতৃত্বে হয়েছিল। তিনিও বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারেরর মন্ত্রী হয়েছিলেন।
এই দুজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনায় ইসলামাবাদের ‘গভীর নাখুশি’ প্রকাশ করে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের এই বিচারকে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ আখ্যায়িত করে বিবৃতিতে দেয় পাকিস্তান।
এর পার দেশটির মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবী আসমা জাহাঙ্গীর বলেন, এই প্রতিক্রিয়া দিয়ে ইসলামাবাদ প্রমাণ করেছে যে, এই দুজন আসলে রাজনৈতিক চর ছিল, কাজ করছিল পাকিস্তানের স্বার্থে।
প্রতিবাদলিপিতে ঢাকাও বলেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যায় দণ্ডিতদের পক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়ে পাকিস্তান ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যার সঙ্গে নিজের প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা ও সহযোগিতার বিষয়টি স্বীকার করল।
এর প্রতিবাদের জের ধরেই ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনারকে ডেকে পাঠান পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া ও সার্কের মহাপরিচালক।
ইসলামাবাদের বিবৃতিতে বলা হয়, এই তলব করার মধ্য দিয়ে অপরাধ বা যুদ্ধে বর্বরতা সংঘটনে জড়িত থাকার বিষয়ে ঈঙ্গিতকেও পাকিস্তান খারিজ করে দিয়েছে। সত্য থেকে দূরে বেশি কিছু করা যায় না।
“এটা দুঃখজনক যে, বাংলাদেশের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কোন্নয়নে আমাদের আন্তরিক আকাঙ্ক্ষার পরও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা হয়েছে।”
‘দুদেশের মানুষ বন্ধুত্বের ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে শুধু ধরে রাখতেই চায় না, উন্নতও করতে চায়’ বলে মনে করে পাকিস্তান।
‘কিন্তু বাংলাদেশ সরকার দৃশ্যত এই আবেগকে সম্মান করে না বলে’ দুঃখপ্রকাশ করে বিবৃতিতে বলা হয়, “এই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি হল-১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি।”
ওই চুক্তি নিয়ে পাকিস্তান ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে বলে বাংলাদেশ সরকারের অভিযোগের বিষয়ে বলা হয়, “এটা স্পষ্ট করা দরকার যে চুক্তির অংশ হিসেবে ‘সাধারণ ক্ষমার আওতায় বিচার না করার সিদ্ধান্ত’ নিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার।
“বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও জোরদার করার আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করছে পাকিস্তান। কারণ, আমরা বিশ্বাস করি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের জনগণের হৃদয় স্পন্দনে ঐকতান রয়েছে।
“দক্ষিণ এশীয় উপমহাদেশের মুসলিমদের জন্য স্বতন্ত্র মাতৃভূমি প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে দুই দেশের জনগণ যে ভূমিকা রেখেছে তা মনে রাখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
বিবৃতির শেষে বলা হয়, “তাই, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের জনগণের সামষ্টিক কল্যাণের জন্য শুভেচ্ছা, বন্ধুত্ব ও ঐকতানের চেতনায় সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াও নিতান্ত জরুরি।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন