সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৫

তাপমাত্রার ২ ডিগ্রি বৃদ্ধি ঠেকাতে প্যারিসে বিশ্বনেতারা

 
                     সম্মেলনে বিশ্বনেতারা              
  
বিশ্বে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি রোধে একটি আন্তর্জাতিক চুক্তির লক্ষ্যে প্যারিসে আজ থেকে শুরু হয়েছে জলবায়ু সম্মেলন।
শিল্পায়নের আগে বিশ্বের তাপমাত্রা যে পর্যায়ে ছিল, তা থেকে তাপমাত্রা যেন ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি না বাড়ে -- সেই লক্ষ্যেই একটি বোঝাপড়ায় পৌঁছানোর চেষ্টা হবে প্যারিসে।
আরো চেষ্টা হচ্ছে, চুক্তি হলে তা মানার ক্ষেত্রে যেন আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকে।
তবে সম্মেলনের শুরুতে ফরাসী প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের কণ্ঠে উদ্বেগ শোনা গেছে।
তিনি বলেছেন, তাপমাত্রা কমাতে যথেষ্ট সদিচ্ছার এখনো অভাব রয়েছে।
জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা বলেছেন, এই সম্মেলনে ১৫১ জন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান যোগ দিচ্ছেন - এবং এর ফলে এটিই হচ্ছে পৃথিবীর ইতিহাসে বিশ্বনেতাদের সবচেয়ে বড় সমাবেশ।
কোপেনহাগেনে ২০০৯ সালের সম্মেলনেও আশা করা হয়েছিল যে কার্বন নির্গমন কমানোর জন্য এমন একটি চুক্তি করা সম্ভব হবে যা পৃথিবীর সব দেশই মানতে বাধ্য থাকবে। কিন্তু তা হয় নি।
এবার অবশ্য স্বাগতিক প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলান্দ, জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা - সবার কথাতেই এই সুর স্পষ্ট যে এরকম একটা চুক্তি করা আগের চাইতে আরো বেশি জরুরি হয়ে উঠেছে - কারণ কিছু করার সময় দ্রুত পেরিয়ে যাচ্ছে।
প্রথম দিনের ভাষণে বারাক ওবামাও বলেছেন, এর আগে কিছু না করে বসে থাকার যে যুক্তি দেয়া হতো, তার দিন শেষ হয়ে গেছে।
তবে এর মধ্যে একটা আশাবাদের সুরও আছে। ফরাসী পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরাঁ ফ্যাবিয়াস বলেছেন, একটা চুক্তিতে পৌঁছানোর সম্ভাবনা এখন হাতের নাগালের মধ্যে।
চুক্তির নানা দিক নিয়ে আলোচনা হবে এই সম্মেলনে - যার লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ ২ ডিগ্রির মধ্যে সীমিত রাখা।
                           
কারণ পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি গত ১০০ বছরে এক ডিগ্রির কাছাকাছি বেড়ে গেছে এবং আগামী ১০০ বছরে যদি তা ২ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যায় তাহলে পৃথিবীর জলবায়ুতে এমন সব বিপজ্জনক পরিবর্তন ঘটতে শুরু করবে যার ফলে মানুষের জীবনযাপন খাদ্য উৎপাদন আবহাওয়া সবকিছুর ওপরই গুরুতর প্রভাব পড়তে শুরু করবে।
বিভিন্ন দেশ ইতিমধ্যেই কার্বন নির্গমন কমানোর পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছে।
সমস্যা হলো উন্নয়নশীল দেশগুলো দাবি করছে, শিল্পোন্নত দেশগুলোকে কার্বন নির্গমন কমানোর জন্য আরো বেশি পদক্ষেপ নিতে হবে।
কিন্তু ধনী দেশগুলো বলছে, নির্গমন কমানোর চাপ সবাইকে ভাগাভাগি করে নিতে হবে।
আরেকটি জরুরি বিষয় হলো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি মোকাবিলার জন্য দরিদ্র দেশগুলোকে প্রতিবছর ১০ হাজার কোটি ডলার দেবার একটি তহবিল তৈরি করা।
কিন্তু এখনো ঐকমত্য হয়নি যে এ টাকা কোথা থেকে আসবে এবং কিভাবে দেওয়া হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন