বৃহস্পতিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৫

ভিকারুননিসার ছাত্রীকে কোচিং-এ ধর্ষণ করেছিল পরিমল

 
            
চারবছর আগে একজন ছাত্রীকে ধর্ষণ করার মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষক পরিমল জয়ধরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে বাংলাদেশে ঢাকার একটি আদালত।
একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয়মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় স্কুলে ছাত্রী-ধর্ষণের ঘটনায় আদালত স্কুলের একজন সাবেক শিক্ষককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে।
২০১১ সালে সাড়া জাগানো ঐ ঘটনায় ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ভিকারুননিসা নূন স্কুলের বসুন্ধরা শাখার শিক্ষক পরিমল জয়ধরকে কারাদন্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে।
তবে ঐ মামলার দু'জন তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার তদন্তে চরম অদক্ষতা ও গাফিলতি দেখিয়েছেন বলেও রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত উল্লেখ করেছেন।
ধর্ষণের অভিযোগ প্রকাশ হওয়ার পর সে সময় ভিকারুননিসা নূন স্কুলের ছাত্রীরা বিক্ষোভে নেমেছিল। প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিল অন্যান্য স্কুলের শিক্ষার্থীরাও।
নারী অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারী বিভিন্ন সংগঠনও আন্দোলনে নেমেছিল।
ঢাকায় র্শীষস্থানীয় একটি স্কুল ভিকারুননিসা নূন স্কুলের এই ঘটনা ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছিল।
সেই পরিস্থিতির মুখে স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষক পরিমল জয়ধরকে বরাখাস্ত করে। তখনই নির্যাতিত ছাত্রীর বাবার দায়ের করা মামলায় ঐ শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়।
ধর্ষণের প্রতিবাদে ঘটনার পর বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করে                
এখন বিচারে তার জেল জরিমানা হলো।
পাবলিক প্রসিকিউটর বা পিপি ফোরকান মিয়া বলেছেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের যে ধারায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলাটি হয়েছিল, বিচারে সেই ধারা অনুযায়ী সর্ব্বোচ্চ সাজা হয়েছে।
আইন অনুযায়ী পিপি বাদীর পক্ষে মামলা পরিচালনা করেছেন। ট্রাইবুনালের রায়ে মামলাটির তদন্তে দূর্বলতা এবং গাফিলতির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ভিকারুননিসা নূন স্কুলের বসুন্ধরা শাখার বাংলার শিক্ষক পরিমল জয়ধর স্কুলের পাশে একটি বাড়িতে কোচিং করানোর সময় ঐ ছাত্রীকে প্রলোভন দেখিয়ে প্রথম ধর্ষণ করেছিলেন ২০১১সালে ২৮শে মে।
সে সময়ের ভিডিও চিত্র মোবাইলে ধারণা করা হয়েছিল। অল্প কিছুদিন পরে ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে আবারও ধর্ষণ করা হয়েছিল।
মামলায় পরিমল জয়ধরকে প্রধান অভিযুক্ত করে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের তৎকালীন অধ্যক্ষ এবং বসুন্ধরা শাখার প্রধানকেও অভিযুক্ত করা হয়েছিল।প্রথমে থানা পুলিশ এবং পরে গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে অভিযোগ থেকে দু’জনকে অব্যহতি দিয়ে শুধু পরিমল জয়ধরকে আসামী রাখা হয়েছিল।
পিপি ফোরকান মিয়া বলেছেন, দু’দফায় তদন্ত হয়েছে এবং ২৮জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। এসব কারণে সময় লেগেছে এবং বিচার কাজে বিলম্ব হয়েছে।
ঢাকায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের বসুন্ধরা শাখার শিক্ষক পরিমল জয়ধরকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা যে করা হয়েছে। জরিমানার সেই টাকা নির্যাতিত ছাত্রীকে দিতে হবে। আর জরিমানার টাকা না দিলে ঐ শিক্ষককে অতিরিক্ত ছয়মাস জেল খাটতে হবে।
এই শিক্ষকের আইনজীবী মাহফুজ মিয়া বলেছেন, তারা হাইকোর্টে আপিল করবেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে বুধবার যখন রায় হয়েছে, তখন আসামী পরিমল জয়ধরকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন