বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৫

নিরাপত্তার আশঙ্কায় আগরতলা-কলকাতা বাস চলাচল স্থগিত

 
   
                 বুধবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই রুটে বাস চলাচল শুরু হওয়ার কথা ছিল
ঢাকা হয়ে আগরতলা-কলকাতা সরাসরি যে বাস বুধবার থেকে চালাবে বলে ঠিক করেছিল ত্রিপুরা সরকার, তা স্থগিত রাখা হয়েছে। ত্রিপুরা সরকারের এক অফিসার ওই বাসের পারমিট আনতে ঢাকায় গেলে তাঁর ওপরে এক বেসরকারি পরিবহন সংস্থার কর্মীরা হামলা চালান বলে অভিযোগ উঠেছে।
পরে যদিও ভারতীয় দূতাবাসের হস্তক্ষেপে নতুন পারমিট দেওয়া হয়, কিন্তু ত্রিপুরার সরকার পরিষেবা শুরুর আগে বাস এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে নিশ্চিন্ত হতে চাইছে।
ত্রিপুরা সরকার অভিযোগ করছে, এল জে রোখুম নামে তাদের এক সিনিয়র কর্মকর্তা ঢাকায় গত সোমবার যখন আগরতলা-কলকাতা রুটে বাস চালানোর পারমিট আনতে যান, তখন একটি বেসরকারি পরিবহন সংস্থার কর্মীরা তাঁকে প্রথমে বাধা দেন। পরে পারমিট নিয়ে বেরিয়ে আসার সময়ে তাঁর ওপরে হামলা হয় এবং হুমকি দিয়ে পারমিটটি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। আতঙ্কিত ওই অফিসার ভারতীয় দূতাবাসের সাহায্যে একটি ডুপ্লিকেট পারমিট যোগাড় করেন।
ত্রিপুরার পরিবহন মন্ত্রী মানিক দে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, “একটা অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে পারমিট পাওয়াকে কেন্দ্র করে। যে অফিসার গিয়েছিলেন ঢাকায়, তাঁকে প্রথমে তো পারমিট নিতেই বাধা দেওয়া হয়, তারপরে হুমকি দেওয়া হয়। লুকিয়ে থাকতে হয়েছিল ওঁকে। প্রায় মাঝরাতে তিনি সীমান্তে পৌঁছন আর মঙ্গলবার ভোরে আগরতলায় এসেছেন।“
মি. দে বলছেন, এটা তো কোনওমতেই কাঙ্ক্ষিত নয়। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস বাংলাদেশ সরকারও এই ঘটনাকে সমর্থন করবে না।“
যে বেসরকারি পরিবহন সংস্থাটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারাও দুই দেশের মধ্যে বাস পরিষেবা দেয়। ত্রিপুরার সরকারী বাসে যা ভাড়া নির্ধারিত হয়েছে, তাতে ওই বেসরকারি সংস্থার ব্যবসা মার খাওয়ার আশঙ্কা আছে। সেজন্যই তারা আগরতলা-কলকাতা রুটের বাস পরিষেবায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে বলে ত্রিপুরার পরিবহন মন্ত্রীর অভিযোগ।
মানিক দে বলছিলেন, এই রুটে বাস চালু হয়েছে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে সই করা চুক্তি অনুযায়ী, তার মধ্যে একটা বেসরকারি সংস্থা মাথা গলাবে কেন!
তবে পরিষেবা শুরু করার আগে যাতে বাস এবং যাত্রীদের নিরাপত্তার সুনিশ্চিত করা যায়, তার জন্য বিদেশ মন্ত্রণালয় আর ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসকে জানানো হয়েছে।
“যে জায়গা দিয়ে বাস যাবে, সেখানকার সংশ্লিষ্ট সরকারই বাস আর যাত্রীদের নিরাপত্তা দেবে – এটাই চুক্তিতে রয়েছে,” মন্তব্য মানিক দের।
এর আগেও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আগরতলা-ঢাকা রুটে চলাচল করা ত্রিপুরা রাজ্য পরিবহনের বাসটিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপরে দীর্ঘদিন ওই রুটে পরিষেবা বন্ধ রেখেছিল ত্রিপুরা।
কলকাতা-আগরতলা সরাসরি বাসের পরিষেবা কয়েক মাস ধরেই চলছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পরিবহনের মাধ্যমে। এবারে ত্রিপুরা সরকারও তার নিজস্ব বাস চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন