সিরিয়ার আলেপ্পো উপকণ্ঠে ইসলামিক স্টেট(আইএস) যোদ্ধারা প্রতিপক্ষ বিদ্রোহী দলগুলোর কাছ থেকে কয়েকটি গ্রাম দখল করেছে।
রাশিয়ার বিমান হামলা সত্ত্বেও সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) যোদ্ধারা প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য বিদ্রোহীদের কাছ থেকে আলেপ্পোর কাছের কয়েকটি গ্রাম দখলে নিয়েছে। সিরিয়ার যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ করা যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংগঠন সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস গতকাল শুক্রবার এ কথা জানিয়েছে।
এদিকে ফ্রান্স গতকাল বলেছে, তারা দ্বিতীয়বারের মতো সিরিয়ায় আইএসকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। খবর রয়টার্সের।
অবজারভেটরির প্রধান রামি আবদুল রহমান জানান, আলেপ্পো শহরের কাছে কয়েকটি গ্রাম অন্য বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর কাছ থেকে দখলে নিয়েছে আইএস বাহিনী। তিনি বলেন, গত আগস্টের শেষের দিকের পর এই অগ্রগতি আইএসকে বড় ধরনের সাফল্য এনে দিল। ওই গ্রামগুলো দখলের মধ্য দিয়ে আইএস উত্তর সিরিয়ার বৃহত্তম শহর আলেপ্পোর উত্তর দিকে অবস্থিত সরকারনিয়ন্ত্রিত শিল্প অঞ্চলের মাত্র দুই কিলোমিটারের মধ্যে এসে পড়ল।
১০ দিন ধরে সিরিয়ায় হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। মস্কো বলছে, তারা উত্তর ও পূর্ব সিরিয়ার বিপুল এলাকা দখল করা আইএস যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ওই অভিযান চালাচ্ছে।
এদিকে ফ্রান্স গতকাল বলেছে, তারা দ্বিতীয়বারের মতো সিরিয়ায় আইএসকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। পাশাপাশি ফ্রান্স অভিযোগ করেছে, রাশিয়া আইএসকে লক্ষ্য করে আঘাত হানতে ব্যর্থ হয়েছে। সিরিয়ায় আরও হামলা চালানো হবে বলে উল্লেখ করে ফ্রান্সের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জ্যঁ ইভ লে দ্রিয়াঁ ‘ইউরোপ-১’ রেডিওকে বলেন, দুটি রাফালে জেট আইএসের প্রশিক্ষণ শিবিরে বোমা হামলা চালিয়েছে। ওই হামলার উদ্দেশ্য পূরণ হয়েছে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর ফ্রান্স প্রথম দফায় সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় রাকা প্রদেশে আইএসের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালায়। জ্যঁ ইভ লে দ্রিয়াঁ বলেন, ‘আমরা জানি যে সিরিয়ায় বিশেষ করে রাকায় বিদেশি যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ শিবির রয়েছে। ওই বিদেশি যোদ্ধাদের লক্ষ্য আইএসের হয়ে যুদ্ধ করা নয়। তাদের উদ্দেশ্য ফ্রান্সে, ইউরোপে ফিরে এসে হামলা করা।’
সংঘাতে সম্প্রতি রাশিয়ার জড়িয়ে পড়ার সমালোচনা করে জ্যঁ ইভ লে দ্রিয়াঁ বলেন, তাঁদের বিমান হামলার ‘৮০ থেকে ৯০ শতাংশ’ আইএসকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হচ্ছে না। আইএসের বিরুদ্ধে হামলার পরিবর্তে তারা কেবল তাদের দীর্ঘদিনের মিত্র বাশার আল-আসাদের ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করছে।
ইরানি জেনারেল নিহত: এদিকে গতকাল ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আলেপ্পোর কাছে আইএস যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে পরামর্শ দেওয়ার সময় রেভল্যুশনারি গার্ডের জেনারেল হুসেইন হামেদানি নিহত হয়েছেন। গত বুধবার তিনি নিহত হন। ইরান সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের প্রধান আঞ্চলিক মিত্র। সিরিয়ার চার বছরের গৃহযুদ্ধে ইরান আসাদ সরকারকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছে।
রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ইরানে বিধ্বস্ত: গত বৃহস্পতিবার মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিরিয়ার বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুকে উদ্দেশ করে নিক্ষেপ করা রাশিয়ার চারটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ইরানে বিধ্বস্ত হয়েছে। কাস্পিয়ান সাগরে থাকা রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ থেকে ওই ক্ষেপণাস্ত্র বুধবার নিক্ষেপ করা হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে রাশিয়া এ দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেছে, কোনো হামলাই লক্ষ্যচ্যুত হয়নি। তবে এ ব্যাপারে তেহরান কোনো মন্তব্য করেনি।
prothom alo
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন